My_Mafia_Boss পর্ব-৩১
Writer:Tabassum Riana
রোয়েন আর রুহী পাশাপাশি দুটি চেয়ারে বসে পড়লো সকল ফর্মালিটিস পূরন করে।রুহী চারদিকে মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে।হঠাৎ খেয়াল করলো তিনটি মেয়ে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে হাসছে আর কানাকানি করছে।রুহীর খুব রাগ লাগলো। মেয়ে গুলোর তো সাহস কম না।রোয়েনের দিকে এক নজর তাকালো রুহী।রোয়েন সোজা একদিকে তাকিয়ে আছে। আশেপাশের কোন খেয়াল নেই।রুহী মেয়ে গুলো কে দেখিয়ে রোয়েনের কাছে গিয়ে বসলো।গায়ে ছোঁয়া লাগায় রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন কি হলো?গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো।মাথা নিচু করে অসহায় চোখে রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।রোয়েনের ভীষন হাসি পায় যখন রুহী মাথা নিচু করে এভাবে ওর দিকে তাকায়।রোয়েন পিছনে তাকিয়ে মেয়ে গুলো কে দেখে পকেট থেকে বন্দুক বের করে একটু নাড়াচাড়া করে আবার পকেটে ঢুকিয়ে নিলো।মেয়ে গুলো সরে গেছে সে জায়গা থেকে।রোয়েন রুহীর হাতের ওপর হাত রেখে বসে থাকলো।কিছুক্ষণ পর ওরা প্লেনে গিয়ে বসে পড়লো নিজেদের সিটে।রুহীর সিট জানালার পাশে পড়েছে আর পাশে রোয়েন। রুহী চোখ বন্ধ করে কোটটিকে খামচে ধরে আছে।চোখ বেয়ে অনবরত অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে ওর।রোয়েন রুহীর দিকে একনজর তাকালো।প্লেন চলতে আরম্ভ করেনি আর এই মেয়ে এক্ষুণি কান্না শুরু করেছে?রোয়েন রুহীর গালে আলতো হাতে চড় দিলো।এই মেয়ে প্লেন এখন ও চলতে শুরু করেনি। কি করছো এসব? ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।চোখ খুলে রুহী রোয়েনের বকা শুনে।প প পৌছে গেছি আমরা?রোয়েনের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল রুহী।রোয়েন চোখ বন্ধ করে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলো। না রাগী গলায় বলে অন্যদিকে তাকালো রোয়েন।প্লেন আস্তে আস্তে আগাতে লাগলো।রুহী বেশ আনন্দ নিয়ে চারপাশে তাকাচ্ছে।প্লেন যেন টেক ওভার করতেই রোয়েনকে জাপটে ধরলো রুহী।খ খুব ভয় করছে আমার।রোয়েন রুহীর মাথায় আস্তে করে হাত রাখলো।পুরো জার্নিতে তেমন কোন কথা হয়নি ওদের।দুদিনের জার্নি শেষে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা শহরে এসে পৌছালো।রুহী থরথর করে কাঁপছে।তোমার কান টুপি কই? গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।ল ল লাগেজে মাথা নিচু করে বলল রুহী।খুব ভালো করেছো।তোমাকে বলেছিলাম সাথে রাখতে?ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।
রুহীর চোখ জোড়া ভিজে যায়।কাঁদো কাঁদো চেহারা নিয়ে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করলো রুহী।
রোয়েন নিজের কানটুপি রুহীকে পরিয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো রুহীকে।এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে এলো ওরা।কালো চকচকে একটি গাড়ি ওদের জন্য অপেক্ষা করছে।ফরেইনার একজন ড্রাইভার বেরিয়ে এলো।
Hello Sir.
What’s up jack রোয়েন লোকটির কাঁধে হাত রেখে বলল।
Fine sir.Your Wife??রুহীর দিকে তাকিয়ে বলল।
Yes. She is Ruhi my wife.
রোয়েনের মুখে ওয়াইফ শুনে রুহী অবাক চোখে রোয়েনের দিকে তাকালো।
Please Madam get in(Jack).রুহীর হাত ধরলো রোয়েন।কি হলো ঢুকো।রুহী গাড়িতে ঢুকে বসলো।ওরা প্যাসেঞ্জার সিটে বসেছে।আর সামনে ড্রাইভার।রুহী ভাবছিলো রোয়েন ওকে ওয়াইফ বলেছে।আলাদা এক অনুভূতি লাগছে আজ।কিছুক্ষণ পর ওরা রোয়েনের বাংলোর সামনে চলে এলো।বাগান বাড়ি টা ভীষন সুন্দর।সামনে সুইমিংপুল, ফুলের গাছ,ফাউটেইন।ফাউনটেন টা থেকে নানান রং এর পানি পড়ছে।লাল নীল সবুজ গোলাপী আরো অনেক কালার।সুইমিংপুলের ওপর দুটি চেয়ার পাশাপাশি রাখা।রুহী চারপাশে তাকিয়ে দেখছে।ভীষন পছন্দ হয়েছে ওর।এ বাসাটা কার?হঠাৎ জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
রোয়েন চোখ রাঙ্গিয়ে তাকালো কি মনে হয় আমরা আরেকজনের বাসায় আসবো? দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।একটু কেঁপে উঠলো রুহী তা ত তাহলে? এতো জানতে হবেনা ভিতরে এসো। রুহীর হাত টানতে টানতে ভিতরে নিয়ে গেল রোয়েন।
রুহীকে রুমে নিয়ে এলো রোয়েন।বেশ বড় রুমটি।কালো লোমশ বড় একটি পাপশ আছে।হঠাৎ রোয়েন চিৎকার করে উঠলো হাজার্ড!!!!!!রুহী কিছুটা ভয় পেয়ে চারপাশে তাকাতে লাগলো।হঠাৎ কোথা থেকে যেন কালো লোমশ বেশ বড় একটি কুকুর রোয়েনের কাছে এসে গা ঘষতে লাগলো।রোয়েন কুকুরটি র সামনে বসে আদর করছে।ক ক কুকুর???ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠলো রুহী।রোয়েন কুকুরটিকে নিয়ে রুহীর কাছে এলো হ্যাজার্ড সি ইজ রুহী।কুকুরটা রুহীর দিকে এভাবে তাকালো যেন সে সব বুঝতে পেরেছে।প্লিজ সরান এটাকে ভ ভয় করছে আমার।রুহী কিছু হবেনা ধরো রোয়েন বলে উঠলো।না না প্লিজ আমি পারবোনা। রোয়েন জোর করে রুহীর হাত ধরে কুকুরটার গলায় লাগালো দেখো কি সফ্ট।চোখ খুলে আস্তে করে তাকালো রুহী আসলেই তো।রুহী আলতো করে হাত বুলালো হাজার্ডের গলায়।হাজার্ড ইউ সুড গো নাউ কুকুরটির গলায় হাত ছুইয়ে বলল রোয়েন।হাজার্ড দাৌড়ে বেরিয়ে গেল।আপনার কথা অনেক বুঝে আস্তে করে বলল রুহী।
উঠে দাঁড়িয়ে রোয়েন বলল হুহ তোমার থেকে ও বেশি বুঝে।রুহী রোয়েনের দিকে অসহায় চোখে তাকিয়ে মাথা নিচু করলো।(সবসময় শুধু অপমান করে। কি মনে করে নিজেকে মাফিয়ার বাচ্চা।তিতা করলার মতো তিতা তিতা কথা বের হয়)ভাবছিলো কথা গুলো। রোয়েন রুহীর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাতে তাকাতে ওয়াশরুমে চলে গেলো।রুহী খেয়াল করলো রোয়েনের বাংলাদেশের বাসায় তেমন কোন ফার্নিচার নেই কিন্তু এখানে সব আছে। বেশ সৌখিন মানুষ বুঝাই যাচ্ছে।তবে সব কিছুই কালো।ফার্নিচার ও কালো ওনার প্রত্যেকটা শার্ট কোট কালো।কালো রং ওনার পছন্দ মনে হয়।চারপাশে তাকাতে রুহী ভাবছিলো কথা গুলি।
রোয়েন বেরিয়ে এসে রুহীর দিকে তোয়ালে এগিয়ে দিলো মাথা মুছো।রুহী তোয়ালে হাতে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালো।রোয়েন খাটে বসে আছে।রুহী মাথায় তোয়ালে লাগাতেই রোয়েন ওর হাত ধরে হ্যাঁচকা টেনে কোলে বসিয়ে দিলো।এবার মুছো রাগী গলায় বলল রোয়েন।রুহী রোয়েনের চুল মুছে দিলো।রোয়েন এখন ও রুহীকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে।রুহী উঠে যেতে পারছেনা।রোয়েন পলকহীন ভাবে ওর মায়াবতী কে দেখছে।রুহী রোয়েনের দিকে একনজর তাকিয়ে মাথা নিচু করে ফেলল।রোয়েন মায়াবতীর মায়াজালে এতোটাই জড়িয়ে পড়েছে এখন কিছুতেই নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়া সম্ভব নয়।রোয়েন তো মায়াবতীর জালে যুগে যুগে নিজেকে বেঁধে রাখতে চায়।রোয়েনের হাত রুহীর কোটের গলায় চলে গেল।কোটের দু তিনটে বোতাম খুলে ফেলেছে ও রুহীকে দেখতে দেখতে।
রোয়েন রুহীর কানের পিছনে চুমু খাচ্ছে।রোয়েনের একেকটা নিশ্বাস রুহীকে রোয়েনের নেশায় মাতাল করে দিচ্ছে।রুহী রোয়েনের গেঞ্জীর কলার খামচে ধরেছে।রোয়েন রুহীর হাতের কুনুই ধরেছিলো ধীরে ধীরে রোয়েনের হাত রুহীর কনুই ছাড়িয়ে দুকাঁধ চেপে ধরলো।রোয়েন রুহীর থেকে একটু সরে এসে ওর গলায় মুখ ডুবালো। উষ্ণ ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে রোয়েন ওর মায়াবতী কে।যেদিন পিকনিকে ওর মায়াবতীকে প্রথম দেখেছিলো সেদিন মায়াবতীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো।রোয়েন ভেবে পায়না বাচ্চা মেয়েটার মাঝে এমন কি পেয়েছে যেটা ওকে এভাবে আকর্ষণ করেছে।রোয়েনের ভালোবাসা গুলো আরো গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।কিছুক্ষণ পর রোয়েন সরে এলো।রুহীর হাত আলগা করতেই ও উঠে দাঁড়িয়ে গেল।রোয়েন রুহীর দিকে এক নজর তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।ফ্রেশ হয়ে নাও গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।
মাথা নিচু করে কাপড় নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল রুহী।
চলবে