My_Mafia_Boss পর্ব-৩০

0
5618

My_Mafia_Boss পর্ব-৩০
Writer:Tabassum Riana
রুহী দৌড়ে পাশের রুমে চলে এলো।তার ছোঁয়া গুলো এমন কেন?পাগল হয়ে যাই আমি।কেমন যেন টান কাজ করে তার প্রত্যেকটা ছোঁয়ায়।রুহী চোখ বন্ধ করে ওর গলায় হাত লাগায়।চোখের সামনে সেই দৃশ্যটি ভেসে উঠে বুকের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রুহীর।দরজায় নকের শব্দ পেয়ে চোখ খুলে তাকায়।ম্যাম স্যারের কফি দিতে বলেছেন লোকটি দরজা অল্প করে খুলে বলল।ওহ ভুলে গেছি আমি।এখন কি হবে?ওনি তো মেরেই ফেলবেন আজ ভাবতেই ভয়ে শিউরে উঠলো রুহী।লোকটি চলে যেতেই ও বেরিয়ে নিচে এলো।পাকঘরে এসে রেয়েনের কফি বানিয়ে ফেলল ঝটপট।রুহী!!!!আমার কফি কই???উপর থেকে চিৎকার করে ডাকছে রোয়েন।আসছি একটু জোরে বলল রুহী।কফি নিয়ে দ্রুত রোয়েনের রুমের দিকে এগোলো।দরজার কাছে যেতেই রুহীর হাত থেকে কফির মগটি পড়ে গেলো।এমা ছিইইইই বলে চোখ বন্ধ করে নিলো রুহী। রোয়েন প্যান্ট উঠানোর কথা ভুলে রাগান্বিত চোখে পিছে তাকালো।রুহী পিছনে ফিরে বলল সরি সরি আ আব আব আবার আনছি বলে দৌড়ে নিচে চলে এলো রুহী।রোয়েন দ্রুত প্যান্ট পরে ভাঙ্গা মগের দিকে তাকালো।রুহী নিচে এসে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।কি দেখলো সে?মুখে পানির ছিটা দিয়ে আবার ও কফি বানিয়ে রোয়েনের রুমে এলো রুহী।
ল্যাপটপে কাজ করছে রোয়েন।রুহী ধীর পায়ে রোয়েনের দিকে এগিয়ে এলো।খুব লজ্জা হচ্ছে রোয়েনের দিকে তাকাতে।অন্যদিকে তাকিয়ে কফি ধরলো রোয়েনের সামনে নিন আপনার কফি।ল্যাপটপ থেকে মুখ তুলে কফিটা হাতে নিয়ে রুহীর হাত ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে কোলের ওপর বসালো রোয়েন।রুহী চোখ বড় করে ফেলেছে।উঠতে চাইলে রোয়েন ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাগী চোখে তাকালো রুহীর দিকে।রুহী অগত্যা বসে থাকলো রোয়েনের কোলে।কেমন অস্বস্তি লাগছে এভাবে রোয়েনের কোলে বসে থাকতে।লোকটা এমন কেন?ভেবে উঠতে পারেনা রুহী।

রোয়েন কিছুক্ষন ছেড়ে দিলো রুহীকে।রুহী উঠে পড়েছে।রোয়েন ও উঠে আলামরি থেকে লাগেজ বের করে নিলো।রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন শুনো জামা কাপড় গুছিয়ে নাও।জি রুহী মাথা নিচু করে বলল।লাগেজ নিয়ে রুমে চলে এলো রুহী।কিছুক্ষন পর দরজার সামনে রোয়েন এসে দাঁড়ালো। হাতে দু তিনটে ব্যাগ।রুহী!!!রোয়েন গম্ভীর গলায় ডাকলো।জি!!!!! পিছনে তাকালো রুহী।রুহীর দিকে এগিয়ে এসে ওর হাতে ব্যাগ গুলো ধরিয়ে দিলো রোয়েন।এগুলো নিয়ে নাও।ঐখানে অনেক শীত।এক নাগাড়ে বলে ফেলল রোয়েন।মাথা নিচু করে ঝাঁকালো রুহী।রোয়েন বেরিয়ে গেল।রুহী প্যাকেট গুলো একে একে খুলল।ভিতরে লেডিস কোট জ্যাকেট,লম্বা হাতা ওয়ালা গেঞ্জী,কানটুপি আর জিনসপ্যান্ট।জামা গুলো লাগেজে ঢুকিয়ে নিলো রুহী।
রোয়েন ও নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিলো।কাল সকাল ৮টায় ওদের ফ্লাইট।রুহীকে নিয়ে ডিনার করে রুমে চলে এলো ওরা।লাগেজ আরেকবার চেক করে নিলো রোয়েন।আলমারির দিকে এগিয়ে এলো রোয়েন। লকারের ভিতর থেকে অস্ত্র গুলো চেক করছে।রুহী রোয়েনকে একবার দেখছে আবার অস্ত্র গুলো দেখছে।
দুতিনেকবার ঢোক গিললো রুহী।এ এ এগুলো দিয়ে ক ক কি হবে?ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো রুহী।রোয়েন বন্দুক একটা উঠিয়ে সেটার দিকে তাকিয়ে বলল মানুষ মারবো।ঐ খানে ও এমন ক করবেন?কাঁপা কাঁপা গলায় প্রশ্ন করলো রুহী।ভ্রু কুঁচকে রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন।ধমক দিয়ে বলল এতো প্রশ্ন করো কেন?দরকার পড়লে করবো। বন্দুক গুলো আলাদা একটি ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলো রোয়েন।এ এ একটা প্রশ্ন ক ক করতে পা প পারি?কি?গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।ব ব বিয়ে করছেন কব বে?বলেই মাথা নিচু করে ফেলল রুহী।রোয়েন এবার চোখ ছোট করে রুহীর দিকে তাকিয়ে ওর দিকে এগিয়ে এসে খুব কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।রোয়েন হাত উঠাতেই রুহী কেঁপে উঠলো।বুক ধড়ফড় করছে ওর।রোয়েন মুচকি হেসে রুহীর মুখের সামনের থেকে আলতো হাতে চুল সরিয়ে দিয়ে বলল অস্ট্রিয়া থেকে আসার সপ্তাহখানিক পর বিয়ে করবো মায়া দিয়ে বলল রোয়েন।রুহীর খুব ভালো লাগলো এতো মায়া দিয়ে কথা বলছে রোয়েন।রুহীর কপালে ছোট্ট করে চুমু খেলো রোয়েন।শুয়ে পড়ো সকালে বের হতে হবে। মাথা নিচু করে ঝাঁকালো রুহী।রোয়েন রুহীকে বুকে টেনে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
পরদিন সকালে নাস্তা সেরে রুহী রোয়েনের পাশের রুমে চলে এলো।রোয়েন ও ওর পিছু পিছু এলো।কি পরে যাবা? ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো রোয়েন।একটা স্যালোয়ার কামিজ দেখাতেই রোয়েন সেটা নিয়ে নিলো ওর হাত থেকে।লাগেজ খুলে কালো কোট, প্যান্ট আর কানটুপি দেখিয়ে বলল ওটা ঐখানে পৌছে পরে নিও।আপাদত এগুলো পরে নাও।রুহী কোট প্যান্টের দিকে এক নজর তাকিয়ে রোয়েনের দিকে তাকালো অসহায় চোখে।রোয়েন রক্তচক্ষু দিয়ে প্রশ্ন করলো কি হয়েছে(ধমক দিয়ে)?এগুলো পরে নাও কেউ দেখবেনা তোমায়।রুহী মাথা নিচু করে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো।রোয়েন নিজে ও ড্রেস পাল্টে নিলো।কালো লম্বা একটি কোট সাথে কালো বুট পরেছে পায়ে।চোখে সানগ্লাস।পুরোই সেরকম লাগছে রোয়েনকে।রুহী বেরিয়ে এলো ওয়াশরুম থেকে।চুল গুলো পিঠের ওপর ছড়িয়ে দিলো।চোখের নিচে কাজল লাগালো।ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে রুহী।পুরো অন্যরকম লাগছে।কোটটা বেশ লম্বা একদমই খারাপ লাগছেনা।রুহী!!!!দরজার সামনে এসে ডাকলো রোয়েন।রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।উফ আজ এই তিতা করলা এতো হ্যান্ডসাম লাগছে বলার মতো না।রুহীর এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রোয়েন জোরে গলা পরিষ্কার করলো।রুহীর ঘোর কাঁটলো।রোয়েন রুহীর হাত ধরে নিচে চলে এলো।কাজের লোকগুলো লাগেজ উঠিয়ে দিয়েছে গাড়িতে।রোয়েন রুহী এক গাড়িতে উঠেছে।অপর গাড়িতে বডিগার্ড রা।রোয়েন রুহীর হাত গিয়ারের ওপর রেখে ড্রাইভিংয়ে মন দিলো।রুহী ওদের হাত জোড়ার দিকে বারবার তাকাচ্ছে।কি যে এক অদ্ভুত সুন্দর লাগছে।যেন হাত দুটো একে অপরের জন্য তৈরি।রোয়েনের ফর্সা হাত ভরা পশম।এতেই অন্যরকম সুন্দর লাগে।রুহী কি ওর মনের কথা বলবে রোয়েনকে?যদি ওনি কিছু মনে করেন?নাহ বলা ঠিক হবেনা।জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালো রুহী।রোয়েন পাশে বসে থাকা রুহীর দিকে তাকিয়ে আবার ও সামনে তাকালো।মায়াবতী কে আজ একদমই অন্যরকম লাগছে।একটু বেশিই সুন্দর লাগছে।তবে মায়াবতী যেদিন লাল শাড়ীতে বৌ সেজে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে হেঁটে ওর কাছে এসে দাঁড়িয়ে রোয়েনের বুকে মাথা রাখবে সেদিন ওর সবচেয়ে বড় পাওয়া হবে।নাহ আর অপেক্ষা হচ্ছে না রোয়েনের।রুহীকে বিয়ে করে একান্তভাবে নিজের করে পেতে চায়।বাচ্চা মেয়েটাকে একটু বেশিই ভালোবেসে ফেলেছে ও।বাচ্চাটাকি ভালবাসতে পারবে রোয়েনের মতো করে?ভাবতে থাকে রোয়েন।কিছুসময়ের ব্যাবধানে এয়ারপোর্টে পৌছে যায় ওরা।
চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে