My_Mafia_Boss পর্ব-১৯

0
5949

My_Mafia_Boss পর্ব-১৯
Writer:Tabassum Riana

রুহীর থেকে একটু সরে এলো রোয়েন।রুহী এখন ও রোয়েনের ঠোঁটের দিকে চেয়ে আছে।কারন হয়ত এই জিনিসটার ছোঁয়া পেতে ইচ্ছে হচ্ছিলো খুব। তবু ও বিষয়টা বেহায়ার মধ্যেই পড়ে।তাই দ্রুত চোখ সরিয়ে নিলো রুহী। রোয়েনের হাত ধরে খাটে বসিয়ে দিলো রুহী।রুহীর মুখে বেদনার ছাপ ফুঁটে উঠেছে। ইসসস কি অবস্থা হয়েছে!!!!বলে উঠলো রুহী নিজের অজান্তেই।আপনি বসুন আমি আসছি।রুহী পানি আর ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে রোয়েনের সামনে এসে বসলো।রোয়েনের হাত কোলের ওপর রেখে কাপড় পানিতে ভিজিয়ে রক্ত পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিলো রুহী। রোয়েন ওর মায়াবতীর দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে।রোয়েনের তাকানোয় খানিকটা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করলো রুহী।রোয়েন উঠে শার্ট পাল্টিয়ে বেরিয়ে গেল।রুহী রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।

রোয়েন গাড়ির সামনে এসে দাড়িয়ে ভাবছে মায়াবতীকে কি উপহার দেয়া যায়?মায়াবতীর কি দিনটির কথা মনে আছে?আজ কতো স্পেশাল একটি দিন ওর মায়াবতীর।আঠারো বছর পূর্ন হবে আজ ওর মায়াবতীর।গাড়িতে ঢুকে বসলো রোয়েন।
রুহী রোয়েনের যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো।রোয়েন চলে যেতেই উঠে দাঁড়ালো।স্কুল ছুটি ঘরে ও কাজ নেই কোন।রুহী একটা ম্যাগাজিন হাতে নিয়ে শুয়ে পড়লো।ম্যাগাজিন খুলতে চোখ কপালে তুলল রুহী। কিছু বৃদ্ধাশ্রমের ছবি আছে।যেখানে রোয়েন কিছু বয়স্ক বৃদ্ধ বৃদ্ধার সাথে ছবি তুলেছে।রুহীর মনে বেশ কিছু প্রশ্ন আসতে থাকে কে এই রোয়েন?কি চায় সে?হঠাৎ কেউ ওর হাত থেকে ম্যাগাজিন টি টেনে নিয়ে নিলো। রুহী ধড়ফড় করে উঠে বসেছে।রোয়েন ওর সামনে ভ্রু কুঁচকে দাঁড়িয়ে আছে।আ আ আসলে কিছু করার ছিলোনা বলেই মাথা নোয়ালো রুহী।

হুহ রোয়েন ম্যাগাজিনটিকে আগের জায়গায় রাখলো।আমার পারমিশন ছাড়া আমার কোন কিছুতে হাত দেবে না দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন। নিচে আসো আমার সাথে রাগী গলায় বলে উঠলো রোয়েন।রুহীর হাত টেনে নিচে নেমে যেতে লাগলো রোয়েন।বাগানে এসে পৌছালো ওরা।রুহীকে উদ্দেশ্যে করে রোয়েন বলল সামনে দেখো একটা মানুষ।

রুহী সামনে তাকায় কোন মানুষ তো নেই তবে কাগজ দিয়ে মানুষ আকৃতির কিছু একটা বানানো আছে।রুহী হেসে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে বলল এটা মানুষ??হি হি হি।

রুহী আজ প্রথম রোয়েনের দিকে তাকিয়ে হাসলো।রোয়েনের বুকের এক কোনে চিন চিনে ব্যাথা অনূভব করছে।রুহীর কাছে এগিয়ে এসে একটা বন্দুক ওর হাতে ধরিয়ে দিলো রোয়েন।রুহীর পিছনে দাঁড়িয়ে বলল এর কপালে আমাদের সুট করতে হবে।বন্দুকের ওপরে যে গোল ছিদ্র টা আছে ঐটা দিয়ে কপাল টাকে দেখো।

রুহী খুব কাছে চলে এসেছে রোয়েনের।রোয়েনের দিকে বারবার চোখ পড়ছে রুহী।ঠোঁটের কোনে মিষ্টি হাসি ফুঁটে উঠলো ওর।

কাগজের মানুষটির দিকে তাকিয়েই রোয়েন বলল আমাকে না কাগজের লোকটির দিকে তাকাও।

রোয়েনের কথায় লজ্জা পেয়ে সামনে তাকায় রুহী।গোল ছিদ্রটি দিয়ে কাগজের লোকটিকে দেখার চেষ্টা করে। রোয়েন বলে উঠলো সুট করো।রুহী সুট করে দিলো সাথে সাথে কাগজের লোকটি নিচে পড়ে গেল।
গুড জব রোয়েন সরে এসে বলল। রুহী এতক্ষন চোখ বুজে ছিলো রোয়েনের কথায় চোখ খুলল।বুক ভীষন ভাবে কাঁপছে ওর। রোয়েন রুহীর কাছে এসে ওর দুগালে দুহাত রেখে বলল ভালো করেছো।রুহীর কপালে আলতো করে ভালবাসার পরশ বুলিয়ে ভিতরে চলে গেল রোয়েন।

রুহী রোয়েনের পিছু পিছু ভিতরে এলো।গোসল সেড়ে লাঞ্চ করে নিলো ওরা।রোয়েন কালো কোট আর সানগ্লাস পরে নিলো।রুহীর কাছে এই লুকটা ভীষন পছন্দ।পুরো বাজিগারের শাহরুখ খানের মতো লাগে রোয়েনকে হয়ত তার থেকে ও বেশি সুন্দর লাগে।

রুহী(গম্ভীর গলায়)

জি (মাথা নিচু করে)

আজ রাতে ঘরে ফিরবোনা।

রুহী একনজর রোয়েনের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করলো আবার।আজকের দিন টা একটু রোয়েনের সাথে কাঁটাতে চাইছিলো নিজের অজান্তেই। কিন্তু ওনি থাকবেন না।জি আস্তে করে বলল রুহী।

হুম।রোয়েন রুহীকে পাস করে বেরিয়ে পড়লো।

রুহীর চোখ ভরে উঠলো।কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়ে শুয়ে পড়লো। রোয়েনকে না চাইতে ও কাছে চাইছিলো রুহী।চোখের পানি বাঁধা মানছিলোনা।শুয়ে শুয়ে খুব কাঁদছিলো রুহী।

রোয়েন গাড়িতে বসে ল্যাপটপ অন করলো শুধু মাত্র মায়াবতীকে একপলক দেখার জন্য।সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো পুরো ঘরে। রুহীকে দেখছে রোয়েন।উপুড় হয়ে শুয়ে আছে মেয়েটা। মাঝে মাঝে কেঁপে কেঁপে উঠছে রুহী।রোয়েনের বুঝতে সময় লাগলোনা যে রুহী কাঁদছে।রোয়েনের ভিতরটা কেমন হুহু করে উঠে।কি হয়েছে ওর মায়াবতীর?আজ রাতে জিজ্ঞেস করবে রুহী কাঁদার কারন টা কি?

সন্ধ্যায় ঘুম ভাঙ্গলো রুহীর। পুরোটা সময় রুমেই বসেছিলো।টিভি দেখতে ও ভালো লাগছেনা।সময়তো থেমে আছে যেন।আলমারির কাপড় গুলো এলোমেলোভাবে বের করে আবার ভাজ করতে লাগলো।পাকঘরে গিয়ে ঝাড়ু এনে পুরো বাড়িটা ঝাড়ু দিয়ে নিলো রুহী।

রোয়েন হাসছে মায়াবতীর কান্ডকারখানা দেখে।সময় কাঁটাতে কি করছে এসব পাগলীটা।মুখ টিপে হাসলো রোয়েন। আজ মায়াবতীর জন্য কি অপেক্ষা করছে তা হয়ত ও ভাবতে ও পারবেনা।

এভাবে রুহী বিভিন্ন কাজ করে সময় কাঁটাতে লাগলো।রাত ১১.৩০ এ হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠে তারপর…..

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে