My_Mafia_Boss পর্ব-১১
Writer:Tabassum Riana
বিরিয়ানী চলে এলো।এর গন্ধে রুহীর খিদে যেন বেড়ে গেছে আরো।কিন্তু খেতে পারছেনা কারন সামনে রোয়েন বসে আছে।বিরিয়ানীর দিকে একবার তাকিয়ে রোয়েনের দিকে অসহায় চোখে তাকায় রুহী।
বিরিয়ানীর প্লেট রুহীর দিকে এগিয়ে দিলো রোয়েন খাও।
মাথা নিচে নামিয়ে রুহী বলল খিদে নেই আমার।
রুহী আরেকটা কথা বললে এমন চড় দিবো তখন কিছু খাওয়ার শক্তি থাকবেনা।জলদি খেয়ে নাও নাহলে জানো কি করতে পারি আমি দাঁতে দাঁত চেপে রোয়েন বলল।
রুহী চারপাশে তাকিয়ে দেখে সবাই ওর দিকে কেমন ভ্যাবলার মতো চেয়ে আছে।কেউ কেউ হাসছে ও।খুব কান্না পাচ্ছে রুহীর।এখন খেয়ে নেয়া টাই ভালো মনে হচ্ছে ওর।প্লেট কাছে নিয়ে খেতে শুরু করলো রুহী। রোয়েনের ভীষন রাগ হচ্ছে ওর।
রোয়েন কফিতে চুমুক দিচ্ছে আর পলক হীন ভাবে রুহীকে দেখছে।(এভাবে বলা ঠিক হয়নি।কিন্তু কি করবে রাগটাকে সামলানো বড় কঠিন।রুহী পর কথা প্রথমে শুনলে বকা শুনতে হয়না ওকে।)
রুহীর খাওয়া শেষে বিল চুকিয়ে বেরিয়ে এলো ওরা।রোয়েন রুহীর হাত ধরে গাড়ির কাছে নিয়ে এসেছে।গাড়ি খুলুন রুহী আস্তে করে বলল।
পিছনেরটা খুলুন নিচে তাকিয়ে বলল রুহী।
গাড়ির সাথে রুহীকে চেপে ধরলো রোয়েন আমার সহ্যের পরীক্ষা নিচ্ছো?কেন কথা শুনোনা আমার?বারবার রাগাতে বাধ্য করো কেন? চিৎকার করে বলল রোয়েন।
রুহী এবার চোখের পানি আটকাতে পারলোনা কেঁদেই দিলো।ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলো।
উফ আবারো সেই ড্রামা।পিছনের দরজা খুলে দিলো রোয়েন বসো।
রুহী কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো।
রোয়েন ড্রাইভিং সিটে বসে রুহীর দিকে টিস্যু ধরলো।চোখ মুছো (দাঁতে দাঁত চেপে)।
রুহী টিস্যু নিয়ে চোখ মুছলো সারা রাস্তায়।
সামনের লুকিং গ্লাসটা রুহীর দিকে ঘুরিয়ে দিলো রোয়েন।মায়াবতী কে দেখছে ও ড্রাইভিংএর ফাঁকে।
ঘরে ফিরতেই রুহী দৌড়ে রুমে চলে এলো।কোলবালিশ বুকে চেপে কাঁদছে ও।
আনিলা বেগম দরজার কাছে আসতেই রোয়েন ওনার হাতে টাকার একটি ব্যাগ ধরিয়ে বলল ওর যেন কোন ক্ষতি না হয়।
হ্যা বাবা কোন ক্ষতি হবেনা হেসে বলল আনিলা বেগম।রোয়েন বেরিয়ে যেতেই আনিলা বেগম তৎখনাৎ রুহীর রুমে গিয়ে ওর চুল ধরে উঠালো এএএএহ ঘুরে ফিরে ঘুমানো হচ্ছে ম্যাডামের?বাসন আছে ওগুলো মেজে নে।
যাচ্ছি।বলে উঠে পাকঘরে চলে এলো রুহী।চোখের পানি মুচ্ছে আর প্লেট ধুচ্ছে।পুরো দিনের প্লেট বাটি জমানোছিলো বেশ কয়েকটা পাতিল কড়াই ও ছিলো।হাঁচি দিচ্ছে রুহী।
আনিলা বেগম পাকঘরে এসে রুহীর গালে চড় বসিয়ে দিলেন।এখন ও শেষ হয়নি কেন শুনি?বাকি কাজ করে করবে তোর মা?
মার নিবেন না মামী (কাঁদতে কাঁদতে)
চুপ থাক।মার নাম নিবেন না মামী মুখ ভেংচিয়ে বললেন আনিলা বেগম।যা আমার টা আর কমন বাথরুটা ধুয়ে নেয় এগুলো ধোয়া শেষ হলে।
মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানায় রুহী।কাজ শেষ করতে করতে রাত দুটো বেজে যায়।গোসল সেরে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয় রুহী। শরীরটা বেশি সুবিধের মনে হচ্ছে না।ঘাড় মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে।কিছুক্ষন পরই গা কাঁপিয়ে জ্বর চলে আসে রুহীর।সারারাত ঘুম হয়নি ওর।এপাশওপাশ করতে করতে পুরো রাত পার করে দিয়েছিলো ও।
পরদিন সকাল
আনিলা বেগম রুহীর রুমে এসে চিৎকার শুরু করে দেয়। মহারানীর ঘুম এখন ও ভাঙ্গে নাই?উঠ কাজ যে পড়ে আছে সেটার কি খেয়াল আছে তোর?
মামী আজ মিনা কে দিয়ে করিয়ে নিন না প্লিজ খুব জ্বর এসেছে আমার।শোয়া থেকে উঠে বসতে বসতে বলল রুহী।
মুখে মুখে কথা বলছিস কেন?যা বলছি কর।উঠ।
রুহী চুপচাপ উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।ফ্রেশ হয়ে বের হতেই মামী নাস্তা বানাতে বলল।নাস্তা বানাতে চলে যায় রুহী।এক হাতে রুটি বেলছে অপর হাতে ভাজি নাড়ছে।হঠাৎ ধাক্কা লেগে ভাজির কিছু তেল রুহীর হাতের ওপর পড়লো।হাত নিয়ে কলের কাছে এসে পানি ছেড়ে দিলো।পানি পড়াতে আরো বেশি জ্বলছে।ঠোঁটে ঠোঁট চেপে দাড়িয়ে আছে রুহী।
কিরে জমিদারনী নাস্তা দিবিনা নাকি?
দিচ্ছি মামী।জলদি করে নাস্তা আনিলা বেগমের সামনে রাখলো রুহী।
যা ঘর মুছ।
রুহী আনিলা বেগমের দিকে অবাক চোখে চেয়ে আছে।এমন কেন মামীটা।এতোটুকু দয়া কি নেই তার?
কি হলো দাঁড়িয়ে এভাবে কি দেখছিস?যা ঘর মুছ।
রুহী চুপচাপ ঘর মুছতে চলে গেল।মাথা ঘুরাচ্ছো ভোঁভোঁ করে। মুছতে হঠাৎ কাপড়টাকে কালো চকচকে এক জোড়া জুতো আটকে ধরলো।রুহী বারবার কাপড়টাকে টানছে কিন্তু জুতোটা ছাড়ছে না।বিরক্তি নিয়ে উপরে তাকাতেই রুহীর মুখের রং উড়ে গেল।ঢোক গিলতে থাকলো।আ আ আপনি??
রোয়েন রক্তবর্ন চোখে রুহীর দিকে তাকিয়ে চা গিলতে থাকা আনিলা বেগমের দিকে তাকালো।মহানন্দে চা গিলছেন মহিলা।আনিলা বেগমের কাছে গিয়ে চা কাপ ধরে উপুড় করে ওনার মুখে ঢেলে দিলো রোয়েন।
আহ জ্বলছে জ্বলছে!!কি করলা বাবা এটা?
রোয়েন পিছনে ফিরে রুহীর হাত ধরতেই চিৎকার করে উঠলো রুহী। রোয়েন হাত ছেড়ে দিলো রুহীর।হাতের একপাশ লাল হয়ে ফোসকা পড়ে গেছে।অপর হাত ধরে অনূভব করলো প্রচন্ড গরম রুহীর শরীর।ওর কপালে স্পর্শ করলো রোয়েন জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে রুহীর।।রুহীকে আনিলা বেগমের কাছে আনলো রোয়েন এসব কি?কি চান আপনি?ওকে এতো টা কষ্ট দেয়ার মানে কি?মানুষ না আপনি?জানোয়ার থেকে নিচু পর্যায়ে চলে গেছেন।রুহী যাও প্যাক করো।
যাবোনা আমি।
রোয়েন ওর হাতে জোরে চাপ দিলো।যাও বলছি।
রুহী দ্রুত হাত ছাড়িয়ে রুমে চলে গেল।
চলবে