#MR AND MRS WHATEVER
পর্ব:11
#লেখিকা-Arshi khan
কলিং দেওয়ার সাথে সাথেই আশরাফুল এসে গেট খুলে একটা ডেভিল লুক দিল।দূর ছাই এই খবিশ এখন এখানে কি করে।ঘুমায়নি কেন?এখন আমি শেষ।(মনে মনে নুসরাত)
কি হল মেডাম আসুন ভেতরে আসুন আপনার জন্য এইতো অপেক্ষা করছিলাম। আরে আসুন না মেডাম কি হল লজ্জা পাচ্ছেন কেন?আপনার এই শশুর বাড়ি ভাবুন না!উপস এটাতো আপনার শশুর বাড়ি এই ।আর আমি জানি আপনার কি লাগি?(নুসরাত কে ধরে ঘরের ভেতর এনে আশরাফুল)
নিশ্চুপ (মাথা নিচু করে নুসরাত)
কি হল কি উত্তর দিচ্ছেন না কেন?ও উত্তর দিবেন এই বাড়ির কিভাবে?ঘরে অসুস্থ শাশুরী ,স্বামী ঢাকার বাইরে আর এই সুযোগ এ এই রাত বিরাতে বাইরে গেছেন উত্তর দিবেন এই বাড়ির কিভাবে?আর এখন ধরা পড়ে চুপ করে আছেন তাইনা!(আশরাফুল দাঁতে দাঁত চেপে )
কি বলতে চাইছ সরাসরি বল এত্ত কাহিনি করে আপনি করে বলছ মনে হচ্ছে কত্ত সম্মান কর আমার?(নুসরাত আঙ্গুল তুলে)
আজকে তুই শেষ।কত্ত বড় সাহস আমার সামনে উচ্চ গলায় কথা বলিস!বাইরে গিয়ে ছেলেদের সাথে রাত পার করতে পারবি আর আমি জিজ্ঞেস করলেই তোর খারাপ লাগবে কেন?অনেক বার বেরে গেছিস আজকে তোর এমন হাল করব যে বাইরে যাওয়ার কথা মাথায় ও আনবিনা।(নুসরাতের হিজাব সহ চুল ধরে আশরাফুল)
তুমি ঠিক কি বলছ একটু বুঝিয়ে বল?(চিৎকার করে নুসরাত আশরাফুল এর হাত ধরেই)
বলছি আমি থাকতে তুই বাইরে এই রাতে ছেলেদের সাথে ___
আর বলতে পারিনি এর আগেই আমার হাত ছাড়িয়ে নুসরাত আমার গালে ঠাটিয়ে একটা চর মেরে দিয়ে আমার কলার চেপে ধরেছে।আমি শকড কারণ একটা মেয়ের হাতে এত্ত জোর থাকতে পারে তা আমার ধারণার বাইরে।আমার রাগে শরীরের রগ গুলো দাড়িয়ে গেছে।রক্ত গরম হয়ে কান থেকে ধোয়া বের হচ্ছে। ওর চর এর থেকে ওর কথা গুলো যেন আরো বিষাক্ত। যা পুরো কলিজার মধ্যে গিয়ে লেগেছে।আমি শুধু স্তব্ধ হয়ে ওর কথা শুনছি।(আশরাফুল মনে মনে)
খবরদার আমার চরিত্রের উপর হাত তুলবানা।সব সহ্য করেছি শুধু মাত্র স্বামী বলে। নাহলে কবেই তোমার করা অত্যাচার এর জবাব দিয়ে দিতাম। আর এইযে অত্যাচার গুলো করছ বিনা দোষে আমাকে শাস্তি গুলো দিচ্ছ না এর ফল ঠিক একদিন তুমি পাবে।আর সেইদিন কেদেও কুল পাবেনা কি জন্য অত্যাচার করেছিলে ভেবে?আর নেক্সট টাইম খবরদার আমার শরীরে কোন রকম অত্যাচার করা হবে তাহলে I swear তোমাকে আমি নারী নির্যাতন এর কেসে জেলে ভরে দিব।এখন সর আমি ফ্রেস হব আমার ঘুম পাচ্ছে।
(বলেই হাটা দিলাম অনেক সহ্য করেছি আর না।আমি কোন ফেলনা না যে যার মন চাইবে ব্যবহার করবে,অত্যাচার করবে,কষ্ট দিবে আমি সব মেনে নিব।আমি সেই ছোট থেকেই অন্যায় এর প্রতিবাদ করে এসেছি।আর আমার কপালে শেষে এমন একজন এসে জুটল।আমি রুমে এসে সোজা ওয়াশরুম চলে আসলাম ফ্রেস হয়ে নিলাম। বোরখা খুলে আমি বাইরে আসতেই হঠাৎই আশরাফুল ঝড়ের গতিতে আমাকে দেওয়ার এর সাথে চেপে ধরল ওর ঠোঁটে সিগারেট থাকায় আমি একটু ভরকে গেলাম। ও ওর হাত জোড়া দিয়ে আমার হাত চেপে ধরার কারণে আমি পা দিয়ে জোরে ওর পায়ে একটা পাড়া দিয়ে বসলাম। এতে ও আরো রেগে গেল মনে হয়।ওর চোখ গুলো রক্ত লাল হয়ে আছে।ও সিগারেট খাওয়া অবস্হাতেই আমার উপর ধোঁয়া ছাড়ছে।আমি আরেকটু ভয় পেলাম। পা আস্তে সরিয়ে নিতেই ও হঠাৎই আমাকে ছেড়ে সিগারেট টা একহাতে নিয়ে পাগলের মত হাসতে হাসতে আমার দিকে তাকিয়ে একটু ভাব নিয়ে পাশের একটা চেয়ার আমার সামনে টেনে বসল।আমি ডান দিকের থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে ও ওর পা দিয়ে দেয়।এরপর আমি বাম দিকের থেকে আসতে নিলেও পা দেয়।তাই আমি ওর পা ডেঙ্গিয়ে যেতে চাইছিলাম।হঠাৎই ও আমাকে টেনে ওর কোলে বসিয়ে দিল। আমার রাগে ওর মাথা ফাটায় দিতে মন চাইছে।কিন্ত না পারছিনা হাতটা একটু জোরে চেপে জড়িয়ে রেখেছে।আর আমি ওর সাথে এভাবে বসে থাকতে একদম এই প্রস্তুত না।
কি সমস্যা এমন করে ধরে রেখেছ কেন?ছাড় আমি আম্মুর রুমে যাব।(নুসরাত রাগি সুরে )
বেবি অত্যাচার করলে কেস করে জেলে ভরার আইন আছে।বাট বাট বাট বউকে আদর করার জন্য তো কোন শাস্তি এই দুনিয়ার মধ্যেই সৃষ্টি হয়নি।অত্যাচার এর কারণে ট্রেট করতে পারছ কিন্তু তোমার সাথে রোমান্স করলে তো আর কোন অন্যায় হবে না তাইনা!এখন তাহলে চল রোমান্স টা সেরে ফেলি।আমার এত্ত সুন্দর বউ টার প্রতি বেশিই অন্যায় করেছি এখন আদর করে পুশিয়ে দিব আস।
বলেই ওকে কোলে নিয়ে খাটের উপর ফিকে মারলাম। খুব শখ আমাকে জেলে দেওয়ার। এখন থেকে বুঝবা কত্ত ধানে কত্ত চাল!আশরাফুল ইসলাম এর সাথে লাগতে আশার জন্য রেডি হয়ে নাও। এখন থেকে এই রোমান্টিক অত্যাচার এই হবে তোমার জন্য সবচেয়ে বড় শাস্তি। আর আমার প্ল্যান অনুযায়ী খুব তাড়াতাড়ি কিছু করতে হবে।যাতে ওকে আরো কষ্ট পেতে দেখে আমার ভাইটা খুশি হতে পারে।শুধুমাত্র ওর জন্য ও মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছিল।এসব ভাবতে ভাবতে ওর সামনে গিয়ে বসলাম। (আশরাফুল ডেভিল লুক দিয়ে)
এই বেটার আবার কি হল এমন করছে কেন?অন্য কোন ভাবে আমাকে জব্দ করতে চাইছে নাতো!নাকি পুলিশের ভয়ে না ও তো ভয় পাওয়ার লোক না।নিশ্চিত আমাকে ইউস করার নতুন ফন্দি। কিন্ত আমি আর চাইনা ওকে এমন ভাবে।যেই স্বামীর ছোয়াতে একরাশ ঘৃণা থাকে সেই স্বামীর ছোয়া আমার জন্য নিষিদ্ধ। আমি চাইনা ও আমাকে ঘৃণার পাত্র হিসাবে শুধু ব্যবহার করেই যাবে।আমি ওর ভালোবাসা ও চাইনা।আমি শুধু চাই ও ওর ভুলটা বঝুক! আমাকে নিয়ে ওর মনের ভ্রম টা ভাঙ্গুক।কিন্ত এই মুহূর্তে ওর থেকে পালানোর একটা ফন্দি আটতেই হবে।কারণ ও রোমান্স এর নামেই অত্যাচার করবে।তবে আমি আর যাইহোক এসব সহ্য করব না।আমি সোঝা হয়ে বসে পড়লাম। ও আমার পাশেই বসে মাত্র হাত ধরে টেনে ওর কাছে নিয়েছে হঠাৎই আমার ফোনটা বেজে উঠল। ফোনটা চার্জে বসানো। এই সুযোগ ওর থেকে পালানোর।
কে জানি কল করেছে আমি দেখে আসি?(নুসরাত আশরাফুল এর উদ্দেশ্য)
এখন না দেখলেও চলবে।(আশরাফুল নুসরাত এর চুলে মুখ গুজে)
দুর ছাতার মাথা সরো তো এই ছিপকাছিপকি পছন্দ না আমার। খবরদার আর আমার পারমিশন ছাড়া আমাকে ধরবেনা।(বলেই উঠে ফোনটা হাতে নিয়েছি নুসরাত)
অত্যাচার করলে না এমন কাহিনী করলে মানাইতো।এখন তো স্বামীর অধিকার এ তোর কাছে আসছি তাও ওর কষ্ট।
কেন ভাল লাগে না?(নুসরাত কে সামনে এনে আশরাফুল )
হুম কি হয়েছে।
আমি অলরেডি কল ধরে ঐপাশের কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেছি।আর এদিকে আমার স্বামী নিজের দিকেই খেয়াল করতে ব্যস্ত। সে তার চাহিদার জন্য আমাকে কাছে চাইছে ঠিক আছে আজ নাহয় আরেকবার নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলাম। আমি চুপচাপ গিয়ে খাটে বসে পড়লাম। ফোনের অপর পাশের চিৎকার এখন ও আমার কানে বাজতেছে।আমি এই মুহূর্তে কি রিয়াকশন দিব ভুলে গেছি।আশরাফুল ঠিক বুঝল না কেন আমি ওখানে বসে আছি।আমি ওর দিকে তাকিয়ে ।
কি হল আসুন আপনার স্ত্রী বলে কথা আপনার কথা না সুনলে তো আবার মনে করবেন কাউকে ভালোবাসি সেই জন্য আপনার থেকে দূরে থাকি।(নুসরাত আশরাফুল এর উদ্দেশ্য)
রাত সাড়ে তিনটা
আমি উঠে ওয়াশরুম চলে আসলাম। আশরাফুল শুয়ে গেম খেলছে।আমি কল ছেড়ে জোরে চিৎকার করে কেদে উঠলাম।
আব্বু আমি চাইনি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও,আমি চাইনি তোমাকে এত্ত কষ্ট দিতে যার ফলে তুমি না ফেরার দেশে চলে যাও,আমিতো চাইছিলাম তোমার ভালোবাসা। কেন তা না দিয়েই চলে গেল?(চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে নুসরাত)
প্রায় এক ঘন্টা হতে চলল ও ওয়াশরুম গেছে।এখন ও বের কেন হচ্ছে না?আমি উঠে ওয়াশরুম এর গেটে নক করলাম।
কী হল এত্তক্ষণ লাগে নাকি জলদি বের হয়ে আস।(আশরাফুল নুসরাত এর উদ্দেশ্য)
আমি বের হয়ে আসলাম চোখ মুছে।
তুমি শাওয়ার টা নিয়ে নাও জলদি।আমাদের এখনি বের হতে হবে।(নুসরাত উৎকন্ঠা কন্ঠে)
এত্ত রাতে কোথায় যাব আজিব!আমি যাবনা আর না তুমি যাবে।আর এত্ত রাতে শাওয়ার নিলে ঠান্ডা লাগবে।(আশরাফুল বিরক্তিকর কন্ঠে)
আব্বু অসুস্থ আম্মু যেতে বলেছে।তুমি যাও বা না যাও।আমি যাচ্ছি সাথে আম্মুকে নিয়ে।(নুসরাত প্রায় কান্না করবে এমন ভাব)
আমি আঙ্কেল এর অসুস্থ হওয়ার কথা শুনে জলদি শাওয়ার নিতে গেলাম। শাওয়ার শেষে জলদি রেডিও হয়ে নুসরাত কে আর আম্মুকে নিয়ে ঐ বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম ।কিন্ত ঐবড়িতে গিয়ে আমি শকড হয়ে নুসরাত এর দিকেই তাকিয়ে রইলাম। (আশরাফুল শকড)
আমি চুপচাপ গিয়ে আম্মুর পাশে বসলাম। তেমন কেউ আসেনি।আম্মুকে রেখে আমি সবার দিকে তাকিয়েই ছিলাম তারা আম্মুকে শান্তানা দিচ্ছে। আমি চুপচাপ এই রইলাম। মানুষ এর জীবন বরোই অদ্ভুত। এইযে মারা যেতে দেরি বালিশ আর খাটের থেকে নামাতে কি দেরি করেনাই।(নুসরাত)
কিরে মা তুই আগে কেন আসলিনারে মা?তোর বাবার শেষ ইচ্ছে হচ্ছিল তোকে একবার একটু দেখবে।মানুষটা তাও পারলো না রে মা ওরে নুসরাত কেন তুই আসলিনা রে মা।(চিৎকার করে রিতা বেগম কান্না করে)
আমি সব কিছু দেখে শকড!(নুসরাত মনে মনে)
**********(চলবে)*********