contract_marriage★
part: 15
writer-Jubaida Sobti♥
নিলা আর সৌরভ কথা বলছে।আবির তাদের পাশে গিয়ে।
আবির : Excuse me!
এই বলে নিলাকে টেনে একপাশ নিয়ে আসে আবির।
নিলা : কি হয়েছে?
আবির : (কনফিউজড হয়ে) কি কথা বলছো ওর সাথে….?
নিলা : বলছি আরকি অনেক কিছু।তা আপনাকে বলতে হবে নাকি??
আবির : বলতে হবে মানে…..শোনো নিলা তুমি যতদিন আমার সাথে আছো ততোদিন তুমি আমার responsibility…
নিলা : হে হে…..তারপর!…..
আবির : তারপর মানে……
নিলা : তারপর মানে..?.. তারপর মানে এটা বলছেন না কেনো যে…..আপনি jealous হচ্ছেন।
আবির : what the f…….?
নিলা : ইডিয়ট….?(নিলা চলে যাচ্ছে)
আবির : (রেগে গিয়ে…নিলাকে আবার হাতে ধরে টেনে আনে।) কি কথা বলছি দেখছো না। আমার কথা শেষ হয়নি।
নিলা : আমার আপনার কথা শোনার কোনো interest নেই।?
আবির : ওহ i got it….এখন তো সৌরভের কথা interest লাগছে তাই না?
দাঁড়াও ঐ সৌরভের বাচ্চা সৌরভ কে আজ আমি……?(আবির দৌড়ে যাচ্ছিলো….)
নিলা : আবির! (আবিরের হাত ধরে ফেলে নিলা) সমস্যা কি আপনার আমি কি আপনার বউ? যে আমাকে অন্য ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলে আপনি প্রতিবাদ করবেন। আপনি হয়তো ভুলে গেছেন আবির। ৬মাস পরে আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। আর আমিতো আপনাকে তারার সাথে দেখলে এমন করিনা…. তবে আপনি কেন এমন করছেন?
আবির কিছুক্ষণ পরে একটু ভেবে নরম কন্ঠে) নিলা! আসলে…. আমার কিছু আসে যায় না।অবশ্য তোমার ও ভবিষ্যৎ আছে তোমার যদি ওকেই ভালো লাগে তাহলে তুমি তোমার ভবিষ্যৎ গড়তে পারো ওর সাথে।?
এই বলে আবির চলে গেলো।
নিলা: (দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে কিছুটা ফিলিংস তো আছে আমার জন্য)☺ হাদারাম কোথাকার শিকার করে না তবু ও।?
আবির সৌরভকে এক পাশে একা দেখে সৌরভের কাছে গেছে।
সৌরভ : কেমন চলছে তারার সাথে….?
আবির : মনে হয় সব জানিস।
সৌরভ : জানবো না কেনো…. যে ছেলের জন্য ক্লাসে এতো মেয়ে পাগল ছিলো…..এইরকম একটা হ্যান্ডসাম ছেলের বউ থাকা সত্ত্বেও গার্লফ্রেন্ড থাকবেনা এটা কি মেনে নেওয়া যায়।
আবির : নিলার সাথে এতো ভাব কিসের তোর…?
সৌরভ : নিলা! she is awesome….?
আবির : (রেগে গিয়ে) নিলা কেমন সেটা জানতে চাইনি আমি… বলেছি নিলার সাথে এতো ভাব নিচ্ছিস কেনো….?
সৌরভ : আরে আরে…. রেগে যাচ্ছিস কেনো? আমি জানি নিলা তোর কাজিন সিস্টার….. কাজিন সিস্টার মানে তোর ভোনের মতো…. তাই হয়তো তোর…?
আবির :সৌরভ তুই ভালো করে জেনেছিস নিলা আমার কে..!.
সৌরভ : হ্যাঁ …হ্যাঁ নিলা তোর কন্ট্রাক্ট করা বউ….৬ মাস পরে তোদের ডিভোর্স হয়ে যাবে… তারার ডাক্তারি পরা শেষ হলে তুই আর তারা বিয়ে করে নিবি।
আবির : (কিছু বলছে না চুপ করে রাগান্বিত চোখে সৌরভকে চেয়ে আছে)।
সৌরভ : নিলার উপর অধিকার খাটাতে আসিস না… নিলাকে তো ডিভোর্স দিয়ে দিবি। তারপর নিলার ভবিষ্যৎ আছে তাই ভবিষ্যৎ এ নিলার দায়বদ্ধ আমি নিতে চায়।
আবির কিছু না বলে সোজা রুমে চলে গেলো।
আর রুমে এদিক ওদিক হাটছে খুব জোরে জোরে শ্বাঃস ফেলছে।
আবির : (মনে মনে) ঠিকি তো বলেছে নিলা। তার ও ভবিষ্যৎ আছে। হয়তো সৌরভকে নিলার ভালো লেগেছে। তবে আমার কি…. আমি কেনো টেনশন করছি। আমিতো তারাকে ভালোবাসি তারা আমার সব।
রাতে সবাইকে বিদায় দিয়ে আবির নিলা দুজন ঘুমাতে আসে।
কেউ কারো সাথে কথা বলেনি। যে যার বিছানায় শুয়ে পড়ে।
হঠাৎ নিলার ফোন বেজে উঠে।
নিলা উঠে দেখে সৌরভ।
নিলা : (আবিরকে শুনিয়ে শুনিয়ে.!..)? হে সৌরভ বলো….?
আবির : তুমি সৌরভকে তোমার নাম্বার ও দিয়েছ??
নিলা : (আঙুল দিয়ে ইশারা করে আবিরকে চুপ করতে বলে)
আবির : (মনে মনে ভাবছে) আমাকে আপনি করে বলে আর একদিনে সৌরভকে তুমি…..?
নিলা রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় গেলো ফোনে কথা বলতে বলতে।
নিলা : সৌরভ দেখো এটাকি ঠিক হচ্ছে।?
সৌরভ : একদম ঠিক হচ্ছে। তুমি আবিরকে যদি তোমার করে নিতে চাও তাহলে এটাই একটা রাস্তা।?
নিলা : কিন্তু অনিতো তারাকে ভালোবাসে।
আমি ওনাকে ভালোবাসি কিন্তু অনি আমাকে ভালোবাসে না।
সৌরভ : সেটা ও বেরিয়ে আসবে। আচ্ছা তুমি দেখেছো আজ আমার সাথে কথা বলার সময় আবির কিভাবে জলছিলো।
নিলা : হা_হা_হা…. হ্যাঁ দেখেছি। তবে হ্যাঁ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার এই সাহায্য গুলো কখনো শোধ করতে পারবোনা।
সৌরভ : বন্ধু বলেছো না আমাকে। তাহলে এখানে ঋণ শোধের কথা বলছো কেন।
আচ্ছা শোনো আবির আবার এসে শুনে যাবে। এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পরো।
নিলা : ওকে বাই।?
সৌরভ নিলাকে পছন্দ করেছিল কিন্তু যখন নিলার সাথে কথা বলে তারপর সে বুঝতে পেরেছে আবির যদিও নিলাকে ডিভোর্স দিয়ে দেই তাহলে নিলা এরপর আর কাউকে বিয়ে করবে না। সে আবিরকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসবে না। তাই সৌরভ ও নিলাকে বলেছে….
সৌরভ : তবে নিলা তুমি যদি আবিরকে চিরদিনের জন্য পেতে চাও আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি। অবশ্য গ্যারেন্টি দিয়ে বলতে পারবো না তবে হে ট্রাই করে দেখতে পারো।
নিলা ও সৌরভের কথা না রেখে পারেনি।কারন নিলা যে আবিরকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে।
পরদিন সকালে…..
আবির বসে আছে…
আবিরকে তারা ফোন দিলো আবির তারার সাথে দেখা করতে গেলো।
তারা আবিরের জন্য খুব সুন্দর করে ডেট সাজালো। আবির ভাবতে ও পারছে না সে তারা থেকে এতো সুন্দর সারপ্রাইজ পাবে।
তারা : আবির…. তুমি হয়তো অবাক হয়ে গেছো। আমি এমন কিভাবে হলাম আসলে আবির আমি বুঝতে পারিনি তোমার ভালোবাসাটাকে অবহেলা করেছি। আর তুমি আমাকে ভালোবেসেই গিয়েছো।
আবির : তারা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি….
তারা : মুচকি হেসে… আচ্ছা তোমার জন্য তোমার বাবা মা যে বিয়েটা ঠিক করেছিল ওটা কি করেছো।রিজেক্ট করে দিয়েছো তো….
আবির : মনে মনে তারা আমাকে সত্যি ভালোবাসে তার কাছ থেকে লুকানোটা ঠিক হবে না।) তারা আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।
আমি জানিনা এটা শোনার পরে তোমার রিয়েক্ট কেমন হবে। তবে জানাটা তোমার অধিকার আছে।
তারা : কি কথা?
আবির : তারা আমি নিলাকে বিয়ে করে ফেলেছি।?
তারা : (এমন কথা শুনবে আবির থেকে এক্সপেক্ট করেনি…তারার মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পরেছে।) আবির… তুমি একটা বছর অপেক্ষা করতে পারোনি আরো বলছো তুমি আমাকে ভালোবাসো….কোন চেহেরা নিয়ে তুমি আমার সামনে এসেছ?
আবির : নিলা আমার পুরা কথাটা তো শোনো!!
তারা : আরো কিছু বলার বাকি আছে তোমার…
আবির : (তারাকে আবির আর নিলার সব কথা খুলে বললো আবির)….
তারা : তোমরা একরুমে থাকো আর তুমি বলছো আমি এটা মেনে নিবো তোমাদের মাঝে এখনো কিছু হয়নি।
আবির : তারা তোমার আমার প্রতি বিশ্বাস নেই?
তারা : আছে তবে….
আবির : তবে কি….
তারা : আচ্ছা ঠিকাছে।তুমি তাড়াতাড়ি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দাও।আমি কিন্তু বাবার সাথে ও কথা বলে ফেলেছি।
আবির : বাহ! তারা তুমি তো আমার চেয়ে স্পিড বেশি হয়ে গেছো।
তারা : (একটু লজ্জা পেয়ে।) আবির আমি এসব কিছু মেনে নেওয়ার কারন কি জানো আমি সত্যি তোমার প্রেমে পরে গেছি।
আবির : আই রিয়েলি লাভ ইউ তারা
তারা : আই লাভ ইউ টু…. (একটু হেসে)
তারা আর আবির একসাথে লাঞ্চ করেছে।
আবির দুপুরে বাসায় আসে।
নিলা : আপনাকে খাবার দিবো?
আবির : খেয়ে এসেছি….. ও হে তারার সাথে….
নিলা : নাক ফুলিয়ে রুমে চলে গেলো।
কিছুক্ষন পরে আবির ও এলো রুমে।
আবির: সব ঠিকটাক হয়ে গেছে। তারা ও বিয়েতে রাজি। শুধু একমাত্র তোমার কারনে আমি কিছু করতে পারছি না।
নিলা : তো করেন আপনাকে কি আমি ধরে রেখেছি নাকি…
আবির : এতো সহজে কি কি তুমি আমাকে ছাড়ছো…. তুমি আমাকে তোমার চাকর বানিয়ে রেখেছো।
হঠাৎ নিলা এসে আবিরকে জড়িয়ে ধরলো….
নিলা হয়েছে এতো রাগ করতে হয়…আপনি আমাকে অনেক ভালোবাসেন আমি জানি।রাগ করে বলছেন এসব আমি বুঝতে পেরেছি।
আবির কিন্তু কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি।হঠাৎ এসে নিলা এভাবে ঝরিয়ে ধরলো…তার মাঝে এসব কি বলছে ও আমি ওকে ভালোবাসি।
নিলা:( খুব আস্তে আস্তে কন্ঠে) আপনার কিছু খেয়াল আছে দাদী সব শুনছে। দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে।
আবির ও আর বেশী কিছু না ভেবে নিলাকে জরিয়ে ধরলো….(আগে বাচা দরকার আবার দাদী জানলে মহামুশকিল)
নিলাও হেসে ওঠে আবির ও হেসে ওঠে।দুজন দুজনকে ঝরিয়ে ধরে। মুখের কোনে মুচকি হাসি ফুটে।
দাদী ও তাদের দেখেছে ঝগড়া করতে কিন্তু দাদী বেশী কিছু শুনেনি। জামাই বউ এর মধ্যে তো এরকম টুকটাক ঝগড়া হয়ে থাকে। দাদী তাদের ঝরিয়ে ধরে রাখতে দেখে মনে মনে তাদের জন্য দোয়া করে চলে গেলো।
চলবে….☺