বাজির প্রেম পাঠঃ ২/শেষ

6
3017

বাজির প্রেম পাঠঃ ২/শেষ

লেখকঃ তৌহিদুল ইসলাম
ও কেমন যেন পাল্টে যাচ্ছে। তো আজকে ভার্সিটিতে গিয়ে দেখি নিলীমা ওর বান্ধবীদের সাথে কথা বলছে আর হাসাহাসি করছে। তাই আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম
আমিঃ নিলীমা একটু এদিকে আসবা
নিলীমাঃ হুম বল( আমার সামনে এসে)
আমিঃ তোমার কি হয়েছে। আমাকে এমন অবহেলা করছ কেন
নিলীমাঃ তোমাকে আমি আবার কখন অবহেলা করলাম।
আমিঃ অবহেলা যদি না ই করে থাক তাহলে আমার সাথে ঠিকমত কথা বলছ না কেন ফোন দিলে ফোন ধর না কেন।
নিলীমাঃ দেখ আমি এই বিষয় নিয়ে এখন কথা বলতে চাই না। আমার একটু কাজ আছে।পরে কথা হবে। বায়
একথা বলে নিলীমা আমার উত্তরের আশা না করে ওর বান্ধবীদের কাছে চলে গেল।
আমার খুব খারাপ লাগলো। কিছুদিন আগেও ও আমাকে কত গুরুত্ব দিত আর এখন অবহেলা করছে।
তাই আমি মন খারাপ করে বন্ধুদের আড্ডায় গেলাম। কারন ওদের কাছে গেলে এমনিতেই মন ভাল হয়ে যাবে।
এভাবে বেশ কয়েক দিন চলে গেল। নিলীমা আমার সাথে দেখা হলেও কথা বলে না। আর আমার নাম্বার ব্লাক লিষ্টে রেখেছে তাই আমি ওকে ফোনও দিতে পারি না।
আমি এগুলা সহ্য করতে পারছিলাম না। তো আজ ভার্সিটি গিয়ে দেখি নিলীমা ওর বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে তাই আমি সোজা ওর কাছে চলে গেলাম। ওদের কাছে গিয়ে আমি বললাম
আমিঃ নিলীমা তুমি আমার সাথে এমন করছ কেন
নিলীমাঃ কেমন করছি।
আমিঃ দেখ নিলীমা আমি আর নিতে পারছি না।
নিলীমাঃ জয় আসলে আমি স্যরি।
আমিঃ স্যরি কেন
নিলীমাঃ আসলে আমি তোমাকে কখন ভালবাসিনি। আমরা বাজি ধরেছিলাম যে তোমার সাথে আমি প্রেম করব। আর যদি তোমার সাথে আমি প্রেম করতে পারি তাহলে আমি পাচ হাজার টাকা পাব। আর যদি না পারি তাহলে আমাকে পাচ হাজার টাকা দিতে হবে।
আমিঃ তারমানে তুমি আমার সাথে গেম খেলেছ।
নিলীমাঃ হুম। আর এই দেখ আমি পাচহাজার টাকা জিতেছি(ব্যাগ থেকে টাকা বের করে)
আমিঃ কিন্তু নিলীমা আমিতো তোমাকে সত্যিই ভালবেসেছি।
নিলীমাঃ তুমি বেসেছ আমি তো আর বাসিনি।
আমিঃ নিলীমা আমি তোমাকে ছারা থাকতে পারব না(ওর হাত ধরে)
নিলীমা এক ঝটকায় আমার হাত ছারিয়ে নিয়ে বলল
নিলীমাঃ ঐ কোন সাহসে তুই আমার হাত ধরিস। আর তোর কানে যায় না আমি তোকে ভালবাসিনি।
নিলীমার এক বান্ধবী বলল
বান্ধবীঃ চলতো এখান থেকে।
তারপর ওরা সবাই চলে গেল আর আমি দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে সেখানেই বসে পরলাম।
পরদিন আমি ভার্সিটির গেইট দিয়ে ঢোকার সময় দেখলাম নিলীমাও একা আসছে তাই আমি নিলীমার কাছে গিয়ে বললাম
আমিঃ নিলীমা তুমি কি আমাকে একটুও ভালবাস না।
নিলীমাঃ দেখ যা বলার আমি কাল বলে দিয়েছি।
আমিঃ কিন্তু নিলীমা আমিতো তোমাকে অনেক ভালবাসি। তোমাকে ছারা আমি থাকতে পারব না।
নিলীমাঃ দেখ জয় আমি তোমাকে ভাল বাসি না।
আমিঃ প্লিজ তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না।প্লিজ প্লিজ।
নিলীমাঃ ঐ তোকে সোজা ভাবে বলছি কানে যায় না। আর তুই ভাবলি কি করে যে আমি তোর মত ছেলেকে ভালবাসব। আর এরপর যদি তুই আমাকে এই ভালবাসার কথা বলিস তাহলে আমি আব্বুর কাছে বলে তোর টিসির ব্যবস্হা করব।
ওর কথা শুনে আমি পুরাই অবাক হয়ে গেলাম। ও একথা বলবে আমি কখনও ভাবতেও পারি নি।
তারপর আমি নিলীমাকে বললাম
আমিঃ আসলে নিলীমা আমরা মধ্যবিত্তরা যাকে ভালবাসি না তাকে মন থেকেই ভালবাসি। আর তোমাকেও আমি মন থেকেই ভালবাসতাম।এমনকি তুমি আমাকে প্রপোজ করার আগে থেকেই। আর আমি কখনও ভাবতেও পারি নি যে তুমি আমার সাথে এমন করবে। আর আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম যে তোমাদের বড়লোকদের কাছে এটা একটা কমন ব্যাপার। আচ্ছা ভাল থেক তোমাকে আর ডিষ্ট্রাব করব না। নিজের যত্ন নিও। গুড বায়।
একথা বলে আমি ভার্সিটিতে না ঢুকে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় আসার পর আমার নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে। যাকে এত ভাল বেসেছিলাম সেই আমার সাথে অভিনয় করল।
কিন্তু চাইলেই কি নিজেকে শেষ করা যায়। আমাকে তো ভালবাসার আর মানুষ আছে যারা নিজের চেয়ে আমাকে বেশি ভালবাসে। আমিই তাদের সব। তারা হলো আমার বাবা মা। তাই আমি নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করলাম।
নিলীমা সেদিন এই জন্যই বলেছিল আগে বিয়ে হয়ে নিক।
আমার মন খারাপের কারনে দুইদিন ভার্সিটিতে যাই নি। আম্মু ঠিকি বুঝে ফেলেছে আমার মন খারাপ। আম্মু আমাকে কালকে বলেছিল
আম্মুঃ কিরে বাবা তোর মন খারাপ
আমিঃ না তো আম্মু।
আম্মুঃ আমার সাথে মিথ্যা বলিস কেন বাবা
আমিঃ আসলে আম্মু
আম্মুঃ টেনশন নিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।
একথা বলে আম্মু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে গেল।
আজ দুইদিন পর আমি ভার্সিটিতে আসলাম। এসে দেখি সবাই সবার মত ব্যস্ত। তাই আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে গেলাম।
এভাবেই দুইদিন চলে গেল। তো পরদিন আমি ভার্সিটির আমগাছের নিচে একা বসে আছি এমন সময় একটা মেয়ে এসে আমার পাশে বসল।
মেয়েঃ হাই জয়
আমিঃ হেল
মেয়েঃ কেন আছ
আমিঃ ভাল কিন্তু আপনি কে
মেয়েঃ আমি তিশা। তোমার ফেন
আমিঃ মানে
তিশাঃ তুমি ফেসবুকে গল্প লিখ তাই না
আমিঃ হুম তো
তিশাঃ আমি তোমার গল্পের ভক্ত। মানে তোমার প্রত্যেকটি গল্প আমি পরেছি
আমিঃ ওহ।
তিশাঃ আচ্ছা আমি কি তোমার বন্ধু হতে পারি
আমিঃ ইয়ে মানে
তিশাঃ কি মানে মানে করছ। আজ থেকে আমরা বন্ধু।
আমিঃ আচ্ছা।
আমি ওর সাথে কথা বলছি তখনি দেখলাম নিলীমা আমাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছে আর আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর চোখে চোখ পড়ায় আমি ওর দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম।
পরদিন আমি ভার্সিটির গেইট দিয়ে ঢুকব তখন দেখি তিশা আমার জন্য দাড়িয়ে আছে। আমি ওকে দেখা মাএই বললাম
আমিঃ হাই দোস্ত কেমন আছিস
তিশাঃ ভাল তুই
আমিঃ এইত ভাল। চল ক্যাম্পাসে যাওয়া যাক।
তিশাঃ হুম চল।
তারপর আমরা ক্যাম্পাসে আসলাম। একটুপর তিশা বলল
তিশাঃ দোস্ত চল না ফুচকা খেয়ে আসি
আমিঃ নারে দোস্ত আমি ফুচকা খাই না
তিশাঃ তোর খাওয়া লাগবে না। আমি খাব চল
তারপর আর কি করার ওর সাথে যেতেই হলো।
তিশা ফুচকা খাচ্ছে আর আমি পাশে দাড়িয়ে আছি তখনি নিলীমাও ফুচকার দোকানে আসল আর ফুচকার অর্ডার করল।
আমি দাড়িয়ে আছি এমন সময় তিশা বলল
তিশাঃ দোস্থ হা কর
আমিঃ কেন
তিশাঃ হা করতে বলেছি হা কর।
ওর জোরাজুরিতে হা করলাম আর ও আমাকে ফুচকা খাইয়ে দিল।
আমি ফুচকা খেয়ে নিলীমার দিকে তাকানো মাএই দেখলাম ও আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। তাই আমি ওর দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম।
এভাবে তিশা আর কয়েকবার আমাকে খাইয়ে দিল আর নিলীমা আমার দিকে চেয়েই ছিল।
বিল দেয়ার সময় যখন আমি বিল দিতে যাব তখন তিশা বলল
তিশাঃ ঐ তুই বিল দিচ্ছিস কেন
আমিঃ আরে তুই মেয়ে হয়ে কি বিল দিবি নাকি
তিশাঃ হুম দিব। আর ফুচকা খেতে আমি তোকে নিয়ে আসছি তুই আমাকে আনিস নি।
আমিঃ তবুও
তিশাঃ চুপ কোন কথা বলবি না।
একথা বলে তিশা নিজেই বিল দিয়ে দিল।
এখন তিশা আমার ভাল একটা বন্ধু হয়ে গেছে। আমার খুব কেয়ার করে আমার সমস্যা হলে তা সমাধানের চেষ্টা করে।
বেশ কিছুদিন ধরে নিলীমা আমাকে ফলো করছে।কিন্তু কেন ফলো করছে তা আমি জানি না।
আজ আমি ও তিশা পুকুর ঘাটে বসে আছি একটুপর দেখলাম নিলীমাও ওর এক বান্ধবিকে নিয়ে আমাদের একটু দূরে বসল।
তারপর তিশা আমাকে বলল
তিশাঃ আচ্ছা তুই কি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিস
আমিঃ কি
তিশাঃ ঐ যে দেখ মেয়েটা ও তোকে ফলো করে
আমিঃ তুই কিভাবে বুঝলি
তিশাঃ আরে তুই যেখানেই যাস দেখি ও সেখানেই।
আমিঃ এটা ওতো হতে পারে যে ও আগে থেকেই সেখানে থাকে
তিশাঃ তুই আসলেই একটা গাধা।
আমিঃ ঠিক বলেছিস রে গাধা না হলে কি আর ওর কাছে ধোকা খেতাম।
তিশাঃ মানে।
তারপর আমি তিশাকে সব খুলে বললাম।
আমার কথা শুনে তিশার মনটা খারাপ হয়ে গেল তারপর বলল
তিশাঃ মেয়েটা আসলেই একটা বুল করেছে রে।
আমিঃ হুম।
তিশাঃ তুই খুব কষ্ট পেয়েছিস তাই না
আমিঃ তখন পেয়েছিলাম। এখন সব ভুলে গেছি।
তিশাঃ জয় আমার মনে হয় মেয়েটা তোকে এখন ভালবাসে
আমিঃ কচু বাসে। চল তো এখান থেকে।
তারপর আমরা দুজন চলে আসলাম।
এখন নিলীমা আমার দিকে কেমন যেন করুন চোখে তাকিয়ে থাকে।
পরদিন আমগাছের নিচে তিশার জন্য অপেক্ষা করছি তখনি দেখালাম নিলীমা আমার দিকে আসছে।
তাই আমি উঠে চলে যাব তখনি নিলীমা আমাকে ডাক দিল
নিলীমাঃ জয় দাড়াও
আমিঃ হুম বল
নিলীমাঃ জয় আমি তোমাকে ভালবাসি।
আমিঃ হুম
নিলীমাঃ তুমি কিছু বলবে না
আমিঃ এবার কত বাজি লাগছেন
নিলীমাঃ মানে আর তুমি আমাকে আপনি করে বলছ।
আমিঃ আপনারা বড়লোক মানুষ তুমি বললে যদি রাগ করেন। আর এবার কি দশহাজার বাজি লাগছেন।
নিলীমাঃ দেখ জয় আমি আগেরবারের জন্য স্যরি। কিন্তু এবার আমি তোমাকে সত্যিই ভালবাসি।
আমিঃ একটা কথা আছে না ন্যারা একবার বেলতলায় যায় বার বার যায় না। তাই আমি ও একই ভুল দুইবার করতে চাই না।
নিলীমাঃ বিশ্বাস কর জয় আমি তোমাকে সত্যিই ভালবাসি।
আমিঃ হুম আমি বুঝেছি। বায়।
একথা বলে আমি চলে গেলাম।
পেয়েছে কি মেয়েটা। আমি মধ্যবিও বলে কি আমার কোন ইমশন নেই। আমাকে নিয়ে বার বার খেলতে চায়। না এবার আমি ওর খেলার পাএ হব না।
একথা যখনি ভাবছি তখনি কোথা থেকে যেন তিশা এসে বলল
তিশাঃ কি রে কি ভাবছিস
আমিঃ কিছু না রে
তিশাঃ তাহলে মন খারাপ কেন
আমিঃ এমনি।
তিশাঃ আচ্ছা চল কোথাও বসি
আমিঃ আচ্ছা।
তারপর তিশার সাথে কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে এলাম।
এখন প্রতিদিনি নিলীমা আমার সাথে কথা বলতে চায় বাট আমি বলি না।
আজকে নিলীমা আমার কাছে এসে বলল
নিলীমাঃ জয় আমি তোমাকে সত্যিই ভালবাসি। তোমাকে ছারা আমি বাচব না
আমিঃ দেখেন এত ড্রামা করার কিছু নেই কত টাকা বাজি ধরেছেন বলেন আমি আপনাকে জিতিয়ে দিব।
নিলীমাঃ তুমি কেন আমাকে বিশ্বাস করছ না।
আমিঃ ম্যাডাম মধ্যবিওরা কাউকে একবারি বিশ্বাস করে বারবার না।
নিলীমাঃ তার মানে তুমি আমাকে ভালবাসবে না।
আমিঃ প্রশ্নেই আসে না।
নিলীমাঃ তুমি যদি আমাকে ভাল না বাস তাহলে আমি তোমার নামে আব্বুর কাছে কমপ্লেন করব। তোমাকে টিসি দিতে বলব
আমিঃ তুমি কি ভেবেছ আমি টিসির কথা শুনে ভয় পাব। হা হা হা। পারলে দিও আমাকে টিসি। আর না পারলে আমিই নিয়ে নিব। তোমার এই টর্চার আমি আর সহ্য করতে পারছি না।
আমার কথা শুনে নিলীমা মাথা নিচু করে রাখল।
তারপর আমি সেখান থেকে চলে এলাম। আমাদের সব কথা তিশা শুনেছিল তাই তিশা আমাকে বলল
তিশাঃ মনে হয় মেয়েটা তোকে সত্যিই ভালবাসে
আমিঃ তো আমি কি করব
তিশাঃ তুই মেয়েটাকে ফিরিয়ে দিস না।
আমিঃ দেখ একসময় আমিও ওর পিছু পিছু ঘুরেছি কিন্তু ও আমাকে একটুও পাত্তা দেয় নি।
তিশাঃ তো তুই কি এখন তার প্রতিশোধ নিচ্ছিস।
আমিঃ হয়তো।
তারপর আমি বাসায় চলে এলাম। এভাবে বেশ কিছুদিন চলে গেল। এখন নিলীমাকে দেখলে মনে হয় ও ঠিকমত ঘুমায় না খায় না। ওর চোখের নিচে কালি পরেছে। মেয়েটাকে একটু দুর্বল লাগে।
আজকে ক্যাম্পাসে বসে আছি এমন সময় নিলীমার কিছু বান্ধবী এসে বলল
একজনঃ তুমি নিজেকে কি ভাব
আরেকজনঃ তোমার জন্য মেয়েটা অসুস্হ্য হয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ ষ্টপ ষ্টপ। আমার জন্য নাকি টাকার জন্য
প্রথমজনঃ মানে
আমিঃ মানে বোঝেন না। এবার কত টাকা বাজি ধরেছেন আমার সাথে প্রেম করার জন্য
দ্বিতীয় জনঃ দেখ তুমি ভুল বুঝছ। নিলীমা তোমাকে সত্যিই ভালবাসে।
আমিঃ বুঝেছি। আর এর জন্য আপনাকে দালালি করতে হবে না।
একজনঃ মানে কি বলতে চাইছ তুমি
আমিঃ কিছু না।
একথা বলে আমি সেখান থেকে চলে এলাম।
এখন আমারও নিলীমার জন্য খারাপ লাগে। মেয়েটা দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে।আগের নিলীমার সাথে এই নিলীমার কোন মিল নেই।
আজকে পুকুরঘাটে একা বসে আছি তখনি নিলীমা আমার কাছে এসে আমাকে ডাক দিল
নিলীমাঃ জয়।
আমিঃ আমি ওকে দেখে উঠে চলে যাব তখনি নিলীমা আমার হাত ধরে ফেল্ল
আমিঃ হাত ছার নিলীমা
নিলীমাঃ কেন হাত ছারব। আমার মাঝে কি নেই যে তুমি এখন আমাকে ভালবাসতে পারবে না (কান্না করে)
আমিঃ বিশ্বাস নেই।
নিলীমাঃ মানছি আমি তখন তোমার সাথে অন্যায় করেছি কিন্তু এখনতো আমি তোমাকে ভালবাসি আর আমার ভুল আমি শিকার করছি।
আমিঃ দেখ নিলীমা আমি আগে তোমাকে খুব ভালবাসতাম কিন্তু এখন আমি তোমাকে ভাল বাসি না।
নিলীমাঃ জান তোমার সাথে যেদিন সব শেষ করেছিলাম তার কিছুদিন পর্যন্ত আমি খুব ভাল ছিলাম। কিন্তু কিছুদিন পর আমি তোমাকে মিস করতে শুরু করি। তোমার সাথে পার্কে বসে বাদাম খাওয়া। বিকেলে নদীর পারে হাটা। সকালে শিশির ভেজা ঘাসে তোমার হাত ধরে হাটা সবকিছুই আমি মিস করতে শুরু করি। এগুলা যতই ভুলতে চেষ্টা করি ততই বেশি মনে পরে। তারপর আস্তে আস্তে তোমাকে ভালবাসতে শুরু করি।
আমিঃ তো
নিলীমাঃ তোমাকে ছারা আমি থাকতে পারব না জয়।
আমিঃ দেখ আমি তোমাকে বিশ্বাস করি না
নিলীমাঃ আচ্ছা কি করলে তুমি আমাকে বিস্বাস করবে
আমিঃ কিছু না।
নিলীমাঃ আমি যদি তোমাকে বিয়ে করি তাহলে তো বিশ্বাস করবে
আমিঃ কি বল এইসব।
নিলীমাঃ আমি এত কিছু বুঝি না। আজকেই তোমাকে বিয়ে করব(আমাকে জড়িয়ে ধরে)
আমিঃ কিন্তু
নিলীমাঃ কোন কিন্তু নয় চল
একথা বলে নিলীমা আমাকে জোর করে নিয়ে গেল উদ্দেশ্য কাজী অফিস।
নিলীমা ওর ফ্রেন্ডদের ওখানে আসতে বলল।
তারপর আমরা দুজন বিয়ে করে নিলাম।
এই মুহুর্তে আমরা রিক্সায় বসে আছি। রিক্সা তার আপন গতিতে চলছে।
একটুপর নিলীমা বলল
নিলীমাঃ তুমি আমাকে বিয়ে করেছ বলে আবার আমাকে টাচ করতে এসো না
আমিঃ কেন। আমার বউকে আমি টাচ করব না তো কে করবে
নিলীমাঃ উহম এখন আসছে দরদ দেখাতে।
আমিঃ আমার বউকে আমি দরদ দেখাতেই পারি।
নিলীমাঃ তোমাকে আমি বিয়ে করেছি এটাও কিন্তু একটা বাজি ছিল।
আমিঃ কিহহহ। তারমানে তুমি আমাকে ধোকা দিলে
নিলীমাঃ জী না স্যার। এই বাজির মধ্যে একটা সত্য আছে।
আমিঃ কি
নিলীমাঃ সেই সত্যটা হলো আমি তোমাকে ভালবাসি। হি হি হি।
আমিঃ সত্যিতো
নিলীমাঃ হুম।
একথা বলে নিলীমা আমার হাত টা জড়িয়ে আমার কাধে মাথা রাখল। আর আমিও ওর হাতের ওপর আমার হাত রাখলাম।
ভাল আছি আমরা। আপনারাও ভাল থাকবেন।
সমাপ্ত।

6 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে