স্বপ্ন ?পর্ব_১০/১১/১২

0
906

স্বপ্ন ?পর্ব_১০/১১/১২
#অনামিকা_সিকদার_মুন

.
.
.
অনু নিশি আর আযানের সাথে ফুচকার দোকানে এসে দাড়ায় । ওদের সাথে দুষ্টমি করতে করতেই খিলখিল করে হাসছিল । অনু তো জানে না যে একজোড়া চোখ ওর দিকে কত গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । জানলে হয়তো ওর হাসিরা থেমে যেত ।
নীল একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অনুর দিকে । অনু খিলখিল করে হাসতে হাসতে হাত দিয়ে আযানের বাহুতে মারছে । ওর সামনের ছোট ছোট অবাধ্য চুলগুলো বার বার এসে ওর কপালে এলিয়ে পড়ছে । কথার ফাঁকে ফাঁকে অনু সেই চুলগুলোকে কানের পাশে গুজে আটকে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে । নীলের কাছে এই মুহুর্তে মনে হচ্ছে পৃথিবীতে যদি কোনো মনোমুগ্ধকর দৃশ্য থেকে থাকে তাহলে তার মধ্যে অনুর বৃষ্টির মতো রিমঝিম হাসি আর অবাধ্য চুলগুলোকে বাধ্য করার ব্যর্থ চেষ্টার এই দৃশ্য সবচেয়ে সুন্দর । কার চোখে কেমন সৌন্দর্য সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর তা নীলের জানা নেই । কিন্তু ওর কাছে এই সৌন্দর্য সবচেয়ে চোখ ধাঁধানো মনে হচ্ছে । নীল অনুকে দেখায় এতটাই মত্ত হয়ে গিয়েছিল যে ওর পুরো পৃথিবী থমকে ছিল । যেন পৃথিবী থেকে কোনো অন্য এক জগৎয়ে পদাচরণ করেছে নীল । তাই তো পাশ থেকে বার বার নিহার প্রায় চিৎকার করার মতো ডাকও নীলের কান অবধি পৌঁছায় নি । কিন্তু হঠাৎ মাথায় কেউ গাট্টা মারায় সেই অন্য জগৎ থেকে বেরিয়ে বাস্তবে ফিরে আসে নীল । কে ওর মাথায় মারলো সেটা দেখার জন্য তাকাতেই দেখে নিহা রাগী চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে । নীল ওর দৃষ্টি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে উল্টো রাগ দোখিয়ে বললো,
—মাথায় মারলে কেন?
নিহা রাগান্বিত কণ্ঠে বললো,
—ওদিকে তাকিয়ে কি দেখছো?
নীল ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
—সেটা জেনে তুমি কি করবে? ইট’স নন অফ ইউর বিজনেস ।
এটা শুনে নিহা ক্ষেপে গিয়ে নীলের সাথে তর্ক শুরু করে দেয়। নীলও নিহাকে কোনো ছাড় না দিয়ে নিহার প্রতিটা কথার জবাব দিতে থাকে ।
অনু কারো তর্ক করার আওয়াজ পেয়ে সেদিকে তাকাতেই দেখে সেদিনের ওই ছেলেটা । সাথে একটা মেয়ে আছে । সেই মেয়েটাই ওই ছেলেটার সাথে তর্ক করছে । অনু কিছু না বলে চুপচাপ তাকিয়ে রইলো ওদের দিকে । কেন তাকিয়ে আছে সেটা অনুরও অজানা । কিন্তু একটা কথা অনুর জানা । সেদিন ওই ছেলেকে প্রথম দেখাতেই কেন জানি অনুর ভালো লেগেছিল। তাই সেদিন আর একটু কাছ থেকে দেখতে নিশির পাশে গিয়ে অনুও দাড়িয়ে ছিল। কিন্তু নিশি যেভাবে ঝগড়া করছিল । তখন নিশিকে থামাতে গিয়ে আর ভালো করে দেখা হয় নি ওর । অবস্থা বেগতিক দেখে নিশিকে নিয়ে চলে এসেছিল । সেদিন রাতে অনুর মাথায় বার বার একটা কথা ঘুরছিল । “ইসস যদি আবার দেখা হতো ছেলেটার সাথে । ”
ঐদিন নীল যখন গাড়ি থেকে বের হয়ে পকেটে হাত দিয়ে দাড়িয়ে ছিল তখনই অনুর চোখ আটকে গেছিলো নীলের উপর । সেদিন বাসায় যাওয়ার পর অজানা কারণেই অনু বার বার ভাবছিল, যদি নীলের সাথে দেখা হয়ে যেত । নীলের মুখটা যেনো ওর চোখের তারায় ভাসছিল ।
আর আজই আবার দেখা হয়ে গেলো । প্রথমে অনু খুশি হলেও নীলের সাথে একটা মেয়েকে দেখে অনুর মন খারাপ হয়ে যায় । এই মন খারাপের কারণ অনুর অজানা । নীলের দিকে তাকিয়েই গতকাল রাতের কথা ভাবছিল অনু কিন্তু হঠাৎ আযানের কথায় অনুর ভাবনার ছেদ ঘটে ।
—অন্যের বয়ফ্রেন্ডর দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে নেই ।
আযানের কথায় বেশ লজ্জা পেল অনু । তাই সাথে সাথেই অনু নীলে দিক থেকে ওর দৃষ্টি ফিরায়ে নেয় । মাথা নিচু করে চামচ দিয়ে টকের গ্লাসে নাড়া চারা করতে লাগলো । অনুকে লজ্জা পেতে দেখে আযান আবার বললো,
—অবশ্য তোর জন্যই বেচারাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি হয়েছে ।
এবার আযানের কথা শুনে অবাক হয়ে আযানের দিকে তাকায় অনু । জিজ্ঞেস করে,
—মানে?
মাঝখানে নিশি বলে উঠে,
—তোদের দু’টার কোনো কথাই আমি বুঝতে পারছি না । কি বলছিস এসব? অনু আবার কার দিকে তাকিয়ে থাকলো?
আযান নিশির কথার জবাব না দিয়ে অনুকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—তোর দিকে তাকিয়ে ছিল ছেলেটা তাই মেয়েটা তর্ক করছে ছেলেটার সাথে ।
অনু আগের চেয়ে আরো বেশি অবাক হয়ে যায় । ওর দিকে তাকিয়ে ছিল?? মানে?? অনু আযানের কথা শুনে আবার নীলের দিকে তাকাতেই দেখে নীলের চোখে চোখ পড়ে যায় । নীলের চোখে চোখ পড়তে অনুর বুকের ভিতর যেন ধাক্কা লাগে । কেন যেন নীলের চোখ থেকে চোখ সরাতে ইচ্ছে করছে না অনু । বেহায়া হয়ে এভাবেই তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে ।
নীল নিহার সাথে তর্ক করছিল তখন হঠাৎ ওর মনে হচ্ছিল যে অনু ওর দিকে তাকিয়ে আছে । তাই তড়িৎ গতিতে অনুর দিকে ফিরে তাকায় নীল । দেখে অনু ওর দিকে তাকিয়ে নেই । কিন্তু ওর মনে হচ্ছিল যে এতক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে ছিল অনু । মনের ভুল ভেবে যেই চোখ ফিরাতে যাবে তখনই দেখে যে অনু ওর দিকে তাকিয়েছে । অনুকে তাকাতে দেখে আর দৃষ্টি ফেরায় নি নীল । ওভাবেই তাকিয়ে থাকে অনুর দিকে । অনুর দিকে তাকিয়ে থেকেই বসা থেকে উঠে দাড়ায় নীল । নীলের সাথে সাথে অনুও দাড়িয়ে যায় । নীল এককদম সামনে আগায় । নীলকে আগাতে দেখে অনুর হৃৎস্পন্দন কয়েক গুণ বেড়ে গিয়ে দ্রুত গতিতে দৌড়াতে থাকে । নিশি অনুকে হুট করে দাড়াতে দেখে অনুর হাত ধরে বলে,
—কিরে অনু দাড়িয়ে গেলি যে??
কিন্তু নিশি কথা অনুর কান অবধি পৌঁছায় নি । এই মুহুর্ত অনুর কানে দুনিয়ার কোনো আওয়াজই আসছে না । ও তো শুধু দেখছে নীলকে । অনুর হৃদস্পন্দের গতি এমন হারে বেড়েছে যে স্পন্দনের ধুকধুক ধুকধুক শব্দটা ও নিজেই শুনতে পারছে । অনু দাড়িয়ে দাড়িয়ে থাকতে পারছিল না । হাত পা কাঁপছিল । অনু নিশি হাত ছাড়িয়ে
—আমি বাসায় যাচ্ছি আপু..
বলেই এক দৌড় লাগায় । পিছন থেকে নিশি “অনুওওওও” বলে ডাক দেয় কিন্তু অনু নিশির ডাকে সারা দেয় নি । দিবেই বা কিভাবে কারণ ততক্ষণে অনু দৌড়ে অনেকটা দূরে চলে গেছে । অনুর যাবার পানে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে নিশি আর আযান ।
.
বাসায় এসে কোটটা খুলে বিছানায় ছুড়ে ফেললো নীল । রাগে নিজের চুল টেনে ধরেছে নীল । এবারও মিস করে গেলো । গতকাল রাতে অনুকে দেখেও পরে আর খুঁজে পায় নি । আজ আবার দেখেও শেষ পর্যন্ত আবার হারিয়ে ফেললো । অনুকে দৌড়ে যেতে দেখে ওর পিছনে নীলও দৌড়ে গিয়েছিল । কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় নি । খুঁজে পায় নি অনুকে । হঠাৎ কি মনে হতেই নীল ল্যাপটপটা নিয়ে বসে পড়ে । ফেসবুকে ঢুকে অনু নাম লিখে সার্চ দেয় । অনু দৌড়ে চলে যাওয়ার সময় নিশি যখন অনুর নাম ধরে ডেকেছিল তখন নীল শুনেছিল ।
সার্চ দেওয়ার পর এত আইডি দেখে নীলের মাথা ঘুরতে শুরু করে । তারপরও নীল ধৈর্য নিয়ে আইডি খুঁজতে থাকে । খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ নীলের একটা আইডিতে চোখ পড়ে । প্রোফাইলে অনুর ছবি দেখতেই নীল খুশি হয়ে গেলো । ঐ আইডিতে ডুকলো নীল । প্রোফাইল ঢুকে অনুর তেমন কোনো ইনফরমেশন পেলো না নীল । শুধুমাত্র অনুর কয়েকটা ছবি দেয়া । আর অনুর লেখা গল্প পোষ্ট করা । অনুর প্রোফাইল ঘাটতে ঘাটতে নিশির আইডি পেয়ে যায় নীল । কোনো ইনফরমেশনের আশায় নীল নিশির আইডিতে ডুকে । নিশির আইডিতে ডুকতেই ওরা কোথায় পড়ে, কোথায় থাকে ইত্যাদি কিছু ইনফরমেশন পায় নীল । তখনই নীলের রুমে নিঝুম প্রবেশ করে । রুমে ঢুকে দেখে নীল বিছানায় উপর হয়ে শুয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসে কি জানি করছে । নিঝুম নীলের কাছে এসে নীলকে ডাক দিতে যাবে তখনই নিঝুমের চোখ পড়ে নীলের ল্যাপটপের স্ক্রীনে । স্ক্রিনের চোখ পড়তেই আঁতকে উঠে……
.
.
.
চলবে?
(বি.দ্র. ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন)
.

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


#স্বপ্ন ?
#অনামিকা_সিকদার_মুন
#পর্ব_১১
.
.
.
স্ক্রিনে চোখ পড়তেই আঁতকে উঠে নিঝুম । “ওর ছবি নীলের ল্যাপটপে কোথা থেকে এলো!! ” নিঝুম মনে মনে বললো । নীলের ল্যাপটপে নিশির ছবি দেখে নিঝুম ধরেই নিয়েছে যে নীল ওকে যেই মেয়ের কথা বলেছে সেটা হয়তো নিশি । কিন্তু কিভাবে সম্ভব? দুজনেই একজনকে!! নিঝুমের মাথায় সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে । কারণ ওর স্বপ্নকন্যা যদি নীলের দেখা মেয়েটি হয় তাহলে তো বিপদ । শুধু বিপদ না মহা বিপদ ।
নীলকে ডাকতে এসে এক বিরাট ভাবনায় পড়ে গেল নিঝুম । নীলকে ডাক না দিয়েই নিঝুম ফিরে যাচ্ছিল তখন নীল নিঝুমকে দেখে ফেলে । নিঝুম উল্টো ফিরে যাওয়া ধরলেই নীল পিছন থেকে নিঝুমকে ডেকে উঠে । নীলের ডাক শুনে থমকে দাড়ায় ও । বিচলিত ভাবে পিছন ফিরে তাকিয়ে নিঝুম বলে,
—কিছু বলবি?
—এটা তো আমার তোকে জিজ্ঞেস করার কথা ভাইয়া । তুই রুমে এসে কিছু না বলেই চুপচাপ চলে যাচ্ছিস যে । কিছু বলতে এসেছিলি??
নিঝুম এবার তো তো করতে লাগলো । কারণ ও যে কেন নীলের রুমে এসেছিল সেটাই ভুলে গেছে । তাও কোনোমতে সেই কথাকে চাপা দিয়ে বললো,
—কেন রে!! কোন কারণ ছাড়া এমনি বুঝি তোর কাছে আসতে পারি না?
নীল বিচলিত কণ্ঠে বললো,
—আমি তাই বলেছি নাকি? শুধু জানতে চাইলাম এমনি এসেছিস নাকি কোন দরকারে । তাতেই দোষ হয়ে গেলো ভাইয়া?
নিঝুম কোনো উত্তর দিল না । চুপ করে দাড়িয়ে রইলো । নিঝুমকে চুপ করে দাড়িয়ে থাকতে দেখে নীল নিজের জায়গা থেকে একটু সরে বসে নিঝুমের জন্য জায়গা করে দেয় বসার জন্য । নিঝুমকে ইশারা করে বলে,
—এখানে এসে বস ভাইয়া ।
নীলের কথা শুনে নীলের দিকে তাকায় নিঝুম । ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে নীলের পাশে বসে পড়ে । নিঝুম আর নীল দুজনেই চুপ করে আছে । কারো মুখে এখন কোনো কথা নেই ।
রাত প্রায় ১২টা বাজে । সেই সুবাদে চারপাশে নীরবতা দিয়ে ঘেরা । আর নীলের রুমে তো এখন পিনপতন নীরবতা । এই নীরবতায় কেমন জানি অস্বস্তি লাগছে নিঝুম নীল দুজনেরই । তাই নীবরতা ভাঙতে নীলই প্রথম মুখ খুললো,
—ভাইয়া…
নিঝুম ছোট্ট করে উত্তর দিল,
—হু
নীল জানি কি বলতে চাচ্ছে কিন্তু বলতে পারছে না। কেমন জানি ইতস্তত করছে কথা বলতে সেটা নিঝুমের চোখে পড়ায় নিঝুম বলে,
—কি বলতে চাইছিস বলে ফেল । এত ইতস্তত করছিস কেন?
নীল চুপ করে রইল । নীলকে চুপ থাকতে দেখে নিঝুম বললো,
—ঐ মেয়ের সম্পর্কে কিছু জানতে পেরেছিস??
নিঝুম এমন ভাবে জানতে চাইলো যাতে নীল কিছু বুঝতে না পারে । আর দেখতে চাইছিল যে নীল ওকে নিজের থেকে কিছু বলে কিনা । নিঝুমের প্রশ্নে নীল যেন একটু খুশিই হলো । কারণ ও নিঝুমকে অনুর ব্যাপারে সবটা খুলে বলতে চাইছিল । কিন্তু বলবে কি বলবে না এটা নিয়েই এতক্ষণ ইতস্তত করছিল । কিন্তু এখন নিঝুম নিজে থেকে জানতে চাওয়ায় নীলের জন্য ব্যাপারটা একটু সহজ হয়ে গেলো যেন । নীল মুখে হাসির ঝিলিক ফুটিয়ে বললো,
—হ্যা ভাইয়া জানতে পেরেছি কিছু ইনফরমেশন ।
নিঝুম নীলের দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো । যার মানে হলো, “কি জানতে পেরেছিস?? ”
নীল ওর ল্যাপটপটা হাতে নিল । তখন নিঝুম আসায় ল্যাপটপ অফ করে ফেলেছিল । নীলের হাতে ল্যাপটপটা নিতে দেখেই নিঝুমের বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠল । নিঝুম মনে হচ্ছে এখনই উঠে চলে যাক । কারণ নিজের চোখে সামনে ওর স্বপ্নকন্যাকে ওর ভাই বলবে যে সে তার স্বপ্নকন্যা এটা সহ্য করা নিঝুমের জন্য কঠিন থেকেও কঠিনতর । হতে পারে সে তার স্বপ্নকন্যাকে বাস্তবে মাত্র একবার দেখেছে । কিন্তু গত দু’বছর ধরে এমন কোনো রাত নিঝুম কাটায় নি যেদিন ও ওর সেই স্বপ্নকন্যাকে দেখে নি, তাকে নিয়ে ভাবে নি । আর সেদিন দেখার পর ওর স্বপ্নকন্যার প্রতি ওর মায়াটা যে আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে । সেই মায়া হয়তো কিছুদিন পরে রূপ নিবে অন্য কিছুতে। নিঝুম মনে প্রাণে চাইছে ওর স্বপ্নকন্যাই যেন ওর ভাইয়ের দেখা সেই মেয়েটি না হয় । আবার ভাবছে এটা হয়তো হবে না কারণ ও নিজেই একটু আগে দেখেছে নীলকে ল্যাপটপে ওর স্বপ্নকন্যার ছবি দেখতে । নিঝুম এসব ভাবছিল তখন নীল ল্যাপটপে অনুর ছবি বের করে নিঝুমের দিকে ল্যাপটপটা ফিরিয়ে বললো,
—ভাইয়া এই সেই মেয়েটা ।
নিঝুমের ইচ্ছে করতে না দেখতে আবার না দেখেও পারছে না । কারণ ও নিজেই একটু আগে নীলের কাছে জানতে চেয়েছে মেয়েটাকে নিয়ে । এখন নিঝুমের নিজের উপরই রাগ লাগছে এই ভেবে যে ও কেন নীলকে ঐ কথা জিজ্ঞেস করতে গিয়েছিল । এখন কিছু করারও নেই । অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিঝুম ল্যাপটপের দিকে তাকালো । কিন্তু ল্যাপটের দিকে তাকাতেই নিঝুমের ভয় রাগ কেটে গিয়ে মুখে একরাশ হাসি ফুটে উঠে । কারণ ল্যাপটপের স্ক্রিনে ওর স্বপ্নকন্যার না অন্য কোনো মেয়ের ছবি । কিন্তু ওর স্বপ্নকন্যার চেহারার সাথে অনেক মিল আছে । কিন্তু কেন??
নিঝুম ছবির দিকে থেকে চোখ সরিয়ে নীলের দিকে তাকাতেই দেখে নীলও ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে । নীল সেখানেই নিজের চোখ স্থির রেখে বললো,
—ওর নাম অনু । ওর একটা বড় বোন আছে । ওরা দুজনেই ঢাকা ভার্সিটিতে হিসাব বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছে । এবার অনার্স থার্ড ইয়ারে।
নিঝুম নীলকে বললো,
—ঐ ধানি লঙ্কা কি ওর সেই বড় বোনই নাকি??
নীল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
—হুম
নীলের এভাবে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হুম বলা দেখে নিঝুম শব্দ করে হেসে উঠলো । নীল নিঝুমকে হাসতে দেখে অসহায় দৃষ্টি নিয়ে নিঝুমের দিকে তাকায় । তারপর বলে,
—ভাইয়া তুই আবার আমার মজা উড়াচ্ছিস??
নিঝুম নিজের হাসি থামিয়ে নিজের মুখে সিরিয়াস ভঙ্গিতে এনে বললো,
—না না একদম না ।
নিঝুম হাসি আটকে রাখতে যেয়েও পারল না ফিক করে আবার হেসে দিল । নীল কপাট রাগ দেখিয়ে বললো,
—হ্যা হাস হাস বেশি করে হাস হাহ্…
নিঝুম অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে বললো,
—আচ্ছা হাসবো আবার পরে । বাট তার আগে সেই ধানি লঙ্কাকে দেখা যে এই হাসির মেইন কারণ ।
নীল নিঝুমের দিকে তাকিয়ে মুখ বাকালো । তারপর ল্যাপটপটা নিয়ে অনুর ছবির সাথে নিশির একসাথে একটা ছবি বের করলো । নীল নিঝুমের হাতে ল্যাপটপটা দিল । নিঝুম অনুর সাথে নিশির ছবি দেখেি বড়সর একটা ধাক্কা খেল । নিঝুমের চোখ বড় বড় হয়ে গেল । নিঝুমকে এভাবে বড় বড় চোখ করে তাকাতে দেখে নীল জিজ্ঞাসা করল,
—কি হয়েছে?? ওভাবে চোখ রসগোল্লার মতো করে রেখেছিস কেন??
নিঝুম ল্যাপটপের স্ক্রিনে হাত রেখে অস্ফুট ভাবে বললো,
—স্বপ্নকন্যা!!!!!!!
নিঝুমের বলা কথাটা নীলের কানে গেলো ঠিকই যদিও নিঝুম অনেক আস্তে করেই বলেছে । নীল নিঝুমের দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হয়ে বললো,
—কি বললি ভাইয়া?? এটাই কি তোর সেই…….
নীল সম্পূর্ণ কথা শেষ করার আগেই নিঝুম বললো,
—হুম
নীল থ মেরে রইলো নিঝুমের কথা শুনে ।
.
.
.
চলবে??
(বি.দ্র. অনেক দেরি করে এবার গল্প দিয়েছি । কিছুদিন খুব ব্যস্ত ছিলাম । এজন্য ঠিকমতো গল্প দিতে পারি নি । আরও একটা কারণ আছে দেরি করে দেওয়া । কষ্ট করে লিখার পর যখন কোনো রেসপন্স পাই না তখন খুব খারাপ লাগে । লিখার ইচ্ছেটা তখন মরে যায়। গল্পটা ভালো হচ্ছে না বুঝতেই পেরেছি । তাই খুব জলদিই শেষ করে দিব এই গল্পটা । বড় করে লিখার ইচ্ছে ছিল । কিন্তু এখন সেই ইচ্ছে বাদ দিতে বাধ্য হলাম । আর নিয়মিত গল্প দিতাম যদি রেসপন্স পেতাম । যাও করেকজন কমেন্ট আসে সেটা নাইস ওয়াও পর্যন্ত সীমাবদ্ধ । আচ্ছা এই কি বাজে হয় আমর লিখা??
আর সাইলেন্ট রিডার!!! তাদের কথা তো বললামই না। তারা ইনবক্সে নক দিয়ে গল্প দেওয়ার জন্য তাড়া দেয়। আর গল্প দেওয়ার পর আর কোনো হদিস থাকে না তাদের । এই জিনিসটা খুব খারাপ লাগে । আবার অনেকে গল্প পড়বে বলে ফ্রেন্ডলিস্টে এড হয় তারপর আর তাদের কোনো খবর নেই । এমনটা কেন করেন আপনারা??
এতগুলো কথা বলতাম না । কিন্তু বলতে বাধ্য হলাম । এই কথাগুলোর পর হয়তো কয়েকদিন একটু ঠিক থাকবে তারপর আবার যেই সেই । এমনকি সেটাও না হতে পারে । যেহেতু আমার গল্প লিখাটা ভালো হয় না আর যখনই দেই তাতে কোনো প্রবলেম নেই তাহলে আমার যখন খুশি দিব এখন থেকে । কারণ তাতে তো কোনো প্রবলেম নেই রিডারদের । লিখবো । বাদ দিব না। কিন্তু আগেই সেই ইচ্ছেটা আর নেই । সরি এতগুলো কথা বলার জন্য । আমার কথা কারো খারাপ লাগলে তার জন্য সরি।
ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন)
হ্যাপি রিডিং ?

#স্বপ্ন?
#অনামিকা_সিকদার_মুন
#পর্ব_১২
.
.
-স্বপ্নকন্যা!!!!!!!
নিঝুমের বলা কথাটা নীলের কানে গেলো ঠিকই যদিও নিঝুম অনেক আস্তে করেই বলেছে । নীল নিঝুমের দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হয়ে বললো,
-কি বললি ভাইয়া?? এটাই কি তোর সেই…….
নীল সম্পূর্ণ কথা শেষ করার আগেই নিঝুম বললো,
-হুম
নীল থ মেরে রইলো নিঝুমের কথা শুনে । অতঃপর আবার সেই নিরবতা কিছুক্ষণ আগের মতো । নীল নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
-ভাইয়া তুই কি সিউর যে নিশিই তোর….
নীলকে থামিয়ে দিয়ে নিঝুম বললো,
-ওর নাম নিশি???
নিঝুমের পাল্টা প্রশ্নে নীল বুঝে যায় যে নিশিই নিঝুমের স্বপ্নকন্যা । তাই আর নীল এ নিয়ে কিছু বললো না । উল্টো নিঝুমের সাথে মজা নিয়ে বললো,
-নাহহ্ ওর নাম ধানি লঙ্কা। কিছু দিন পর মিসেস নিঝুম লঙ্কা হবে ।
একথা বলেই নীল হাসতে লাগলো । নীলের কথায় নিঝুম বুঝে গেলো যে এবার নিঝুম শেষ । কারণ এই দুদিন নিঝুম নীলকে জ্বালিয়েছে । এখন নীলের পালা ওকে জ্বালানোর । নীল একনাগারে হেসেই যাচ্ছে আর বলছে,
-ভাইয়া দুনিয়ায় আর মানুষ পেলি না । একে নিয়েই তোর স্বপ্ন দেখতে হলো?? এর যেই ঝাঁঝ রে বাবা ।
নিঝুম নীলের দিকে তেড়ি চোখে তাকালো। নিঝুমের এভাবে তাকানো দেখে নীলের হাসি তো থামলোই না উল্টো বেড়ে গেলো । নিঝুম বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে নীলের দিকে বললো,
-তুই বসে বসে হাসতে থাক । আমি যাচ্ছি আমার রুমে ।
বলে নিঝুম নীলের ল্যাপটপটা নিয়ে চলে যাওয়া ধরতেই নীল সেটা দেখে একলাফ দিয়ে বিছিয়ে থেকে নেমে দৌড়ে নিঝুমকে ধরে । বললো,
-ভাই এই কাজ করিস না প্লিজ । আমার ল্যাপটপটা দিয়ে যা । কাজ আছে ।
-কেনো?? তুই তো হাসছিলি । তো গিয়ে হাস না । আর আমি ভাবছি নিহাকে রুমে গিয়ে একটা কল দিব ।
নিহার নাম শুনেই নীল ভ্রু কুঁচকে তাকালো । নীলে ওভাবে তাকানো দেখে নিঝুমের প্রচুর হাসি পাচ্ছে । কিন্তু নিঝুম না হেসে হাসি চাপিয়ে রাখলো । নীল কিছু না বলে নিঝুমের হাত থেকে ল্যাপটপটা খপ করে টান দিয়ে নিয়ে গেলো । তারপর আবার গিয়ে নিজের জায়গায় মানে খাটে বসে পড়লো । নিঝুম নীলের দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে চলে যেতে নিলেই নীল পিছন থেকে বলে উঠল,
-নিঝুম নিশির তারা ।
নীলের কথা শুনে নিঝুম পিছন ফিরে তাকালো । নিঝুমকে ফিরে তাকাতে দেখে নীল একটা দুষ্ট হাসি দিয়ে বললো,
-মিসেস নিঝুম লঙ্কার আইডির নাম ।
নিঝুম কিছু বললো না । নীলের দুষ্ট হাসির বিনিময়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে গেলো । নিঝুম যেতেই নীল ল্যাপটপটা নিয়ে খাটের সাথে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে বসলো । অনু নিচু হয়ে পায়ে নুপুর পড়ছে । ওর উন্মুক্ত চুলগুলো এলো হয়ে ওর মুখে পড়ে আছে । হালকা বাতাসে সেই চুলগুলো উড়ছে । এমন একটা ছবির দিকে তাকিয়ে আছে নীল । অনু আইডিতে অনুর কয়েকটা ছবি থাকলেও নিশির আইডিতে নিশি অনেক ছবি দেয়া । সাথে অনুরও অনেক ছবি দেয়া । নীল অনুর যেই ছবিটা দেখছে সেটাও নিশির আইডি থেকে পোস্ট করা । হঠাৎ কি মনে করে নীল অনুর আইডিতে ডুকলো । তারপর কি জানি ভেবে একটা মুচকি হাসি দিয়ে অনুর আইডি হ্যাক করতে বসে গেলো । নিজের কাজে নিজেই অবাক হলো নীল । কারণ ও সাধারণত দরকার ছাড়া কারো আইডি হ্যাক করে না । আজ অনুর আইডি ও কেনো হ্যাক করছে সেটা ওর নিজেরও অজানা । একবার ভাবলে থাক কি দরকার । মুহুর্তেই মধ্যেই আবার ভাবলো যা হবার হোক ।
ঠিক মিনিট বিশের মধ্যে অনুর আইডি হ্যাক করে ফেলে নীল । আইডি হ্যাক করে নীল ম্যাসেজ বক্সে ডুকলো । কার কার সাথে অনু চ্যাটিং করে শুধু সেই আইডি গিলোর নাম দেখলো । কিন্তু কোনো ম্যাসেজ পড়ে নি । ম্যাসেজ বক্স থেকে বেড়িয়ে নীল অনুর আইডির ফটো এলবামে ডুকে । এলবামে ডুকতে নীলে মাথা যেন চক্কর দিয়ে উঠে । কারণ অনুর ছবির অভাব নেই সেখানে কিন্তু সবই অনলি মি করা । নীল একটা একটা করে অনুর সব ছবি সেভ করতে লাগলো । অনুর একটা ছবি নীলের সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে বলতে গেলে যেনো ওর হৃদয়ে আটকে যায় । অনু একটা লাল শাড়ি পড়া শাড়ির আঁচলটা টেনে মাথায় এমন ভাবে দিয়েছে যেমনটা নতুন বউ দেয় । অনুর মাথা একটু নিচের দিকে ঝুঁকানো । চোখগুলো নিচের দিকে। চোখের বড় পাপড়ি গুলো এমন লাগছে দেখতে যেন আলাদা করে সেই পাপড়ি লাগানো হয়েছে । মুখে মেকাপের ম ও নেই। সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে । তারউপর মুখ জুড়ে রয়েছে এক মুচকি হাসি । যেই হাসিটা নীলের বুকে গিয়ে লাগছে । নীল ঐ ছবিটা শুধু সেভ না একদম ওর ল্যাপটপের সামনের স্ক্রিনে সেভ করে । মুচকি একটা হাসি দিয়ে অনুর নাম্বারটা মোবাইলে সেভ করে মিষ্টি অনু ।
.
.
বসে আছি অপেক্ষায়,
তুমি আসবে তাই ।
বসন্তী ফুলের ঘ্রাণে নয় কোন এক গ্রীষ্ণের পড়ন্ত বিকেলে,
আসবে তুমি ঘমাক্ত চোয়ালে,
মুছবো ঘাম আমার আঁচলে ।
তোমার ঐ চিবুকে,
খুঁজে নেবো অন্ধকারের মাঝেও আলো ।
জোৎসনা বিলাস নই অন্ধকারে হাটবো দুজন,
খেলবো আলোর খেলা জোনাকির আলোতে ।
আছি বসে তাই এই ঝুম নিরবতায়,
হঠাৎ তুমি আসবে,
কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে তাই……..
(Mushfiqur Rahman কবিতার অংশটুকু উনার লিখা)

এতটুকু লিখেই ডায়েরিটা বন্ধ করে দিল অনু । ডায়েরিটা বুকে জড়িয়ে চোখ বন্ধ করলো । মনে করতে লাগলো আজকের ঘটনা ।
নীলকে দেখে কেনো জানি এক কম্পন সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিলো ওর মাঝে । ও যেন আর নিজের মাঝে ছিল না । হারিয়ে গিয়েছিল অন্য কিছুতে । নীল যখন একটু একটু করে আগাচ্ছিল তখন ওর হৃদস্পন্দন এত দ্রুত গতিতে দৌড়াতে শুরু করেছিল যে আর দাড়িয়ে থাকতে পারছিল না অনু । তাই দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে এসেছিল । এক দৌড়ে বাস স্টপে এসে দাড়িয়েছিল । রীতিমতো হাঁপাচ্ছিল অনু । হাঁপাতে হাঁপাতে চোখটা আবার পেছনের রাস্তায় যেখান দিয়ে ও এসেছে সেদিকে যেতেই দেখে কেউ একজন দৌড়ে আসছে । সেই কেউটা আর অন্যকেউ না নীল ছিল । নীলকে ওভাবে দৌড়ে আসতে দেখে অনু প্রথমে থ হয়ে গেলেও পড়ে আবার নীলের থেকে লুকাতে ওখান থেকে সরে গিয়ে এক সিএনজি ডেকে তাতে উঠে পড়ে । কিন্তু সিএনজি ওখানেই দাড় করিয়ে রাখে । নীল দৌড়ে এসেই এদিক সেদিক খুঁজতে শুরু করে দেয় । বলতে গেলে একপ্রকার হন্য হয়ে খোঁজা যাকে বলে । অনু চুপচাপ সিএনজিতে বসে থেকে দেখছিল নীলকে । নীল যতক্ষণ ছিল ততক্ষণ অনুও ছিল । যখন নীল অনুকে না পেয়ে সেখান থেকে চলে যাচ্ছিল তখনও অনু এক ধ্যানে তাকিয়ে ছিল নীলের দিকে । যতক্ষণ নীলকে দেখা যাচ্ছিল ততক্ষণ অনু নীলের দিকে তাকিয়ে ছিল। নীল চলে যেতেই অনুও সিএনজি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসে । এক অচেনা অজানা ছেলের জন্য ওর এমন অদ্ভুত অনুভূতির কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না অনু । প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যাওয়াটা অনু কেনো কালেই বিশ্বাস করতো না । তাই ঐ ছেলের প্রেমে পড়েছে এটা অনু মানতে নারাজ । তবে? অন্য কি বা কারণ হতে পারে? এতদিন পর্যন্ত কত মানুষের সাথে মিশেছে । কিন্তু কোনোদিন কারো প্রতি এমন অনুভূতি তো হয় নি । তাহলে আজ কেনো? এই অনুভূতির কি নাম দিবে তা অনুর অজানা । আচ্ছা তাহলে কি ঐ অজানা ছেলের প্রেমে পড়লো অনু?? নাহ্ সেটা কিভাবে সম্ভব!!
চোখ বন্ধ করে এসবই ভাবছিল অনু । ঘুমও আসছে না যে ঘুমাবে । মনে মনে ঘুমকে একশ কুড়ি বকাঝকা করলো অনু । সব ভাবনা মাথা থেকে ঝেরে যেই ঘুমাতে যাবে ভাবে ঠিক তখনই দিনের ঘটে যাওয়া কাহিনী গুলো মাথার এপাশ থেকে ওপাশ পায়চারী করতে শুরু করে । এই করতে করতে প্রায় রাত তিনটা বেজে গেছে । নিজের উপরই বিরক্ত হলো অনু । “এই সিম্পল বিষয় নিয়ে এত ভাবছিস কেনো তুই? আজিব!!” বলে নিজেকে নিজেই ঝারি দিল অনু । তখনই হঠাৎ করে ফোনের ম্যাসেজ টোন বেজে উঠে । চমকে উঠে অনু ।
-“এতরাতে কে ম্যাসেজ দিল!!”
মনে মনে একথা বলতে বলতে ফোনটা হাতে নেয় অনু । ম্যাসেজটা অপেন করতেই আরেকবার চমকে উঠলো অনু………
.
.
.
চলবে??
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন)
.
.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে