Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"স্বপ্ন ?স্বপ্ন?পর্ব_১৬/১৭/১৮

স্বপ্ন?পর্ব_১৬/১৭/১৮

স্বপ্ন?পর্ব_১৬/১৭/১৮
#অনামিকা_সিকদার_মুন

.
.
.
প্রায় একঘন্টার মতো সময় ধরে অপেক্ষা করছে অনু । কিন্তু যার অপেক্ষায় বসে আছে তার আসার নামগন্ধ নেই । কেমন এক অস্থিরতা কাজ করছে অনুর ভেতরে । সাথে ভয়ও । আর মাথায় ঘুরছে হাজার রকমের চিন্তা ।
ঘড়ির দিকে তাকালো অনু । এই পর্যন্ত যে কতবার ঘড়ির দিকে তাকিয়েছে হিসেব নেই ।
– “এত অস্থির লাগছে কেনো!!! আজব!! ”
মনে মনে বললো অনু । নিজের উপর নিজেই বিরক্ত হয়ে গেলো । পাশে ঘড়ির দিক থেকে চোখ সরিয়ে সামনের দিকে তাকাতেই অনু যেন বরফ হয়ে গেলে । বসা থেকে দাড়িয়ে পড়লো অনু । কারণ ওর সামনে যে এসেছে সে আর কেউ না । নীল……. । নীল এসেই ওর সবসময়ের সেই ঘায়েল করা মুচকি হাসি দিয়ে অনুর দিকে তাকায় ।
অনু বিষ্ময়ে কথা বলতে পারছে না । নীল একদম অনু কাছে এসে দাড়ায় । একহাত দূরত্বও মনে হয় নেই । নীল অনুর চোখের দিকে তাকিয়ে আছে ।
ধরফর করে শোয়া থেকে উঠে বসে অনু । বুক এখনো কাঁপছে ওর । ধুকধুক ধুকধুক আওয়াজটা এত জোড়ে হচ্ছে যে পাশে কেউ অনায়েসে তা শুনতে পাবে বলে অনু মনে হচ্ছে । কোথায় আছে সেটা দেখার জন্য মাথা ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকালো অনু । খুব পরিচিত জায়গাটা । নিজের রুমেই আছে দেখে একটু শান্ত হলো অনু । পাশে চোখ পড়তেই দেখে নিশি এলোমেলো ভাবে ঘুমুচ্ছে । অনুর বুকের ধুকপুকানি এখনো পুরোপুরি থামে নি । নিজেকে আরেকটু শান্ত করতে ডান হাত বুকে চেপে ধরে প্রথমে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আবার দীর্ঘশ্বাস ফেললো । তারপর বালিশের পাশ থেকে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো ছয়টার বেশি বাজে । অনু জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকাতেই দেখে অন্ধকার কেটে গিয়ে ভোরের আলো পুরোপুরি ফুটে উঠেছে । সেই সাথে পাখির কিচির মিচির শব্দ শোনা যাচ্ছে । অনু নিশি গায়ে চাদরটা ভালো করে টেনে দিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেল । যাওয়ার সময় সাথে করে হেডফোনটাও নিয়ে গেলো । ব্যালকনিতে রাখা রকিং চেয়ারটায় বসে অনু । হেডফোনটা কানে লাগিয়ে অটো কল রেকর্ডিংয়ে কালরাতে ঐ আননোন নাম্বারে সাথে কথা হওয়া রেকর্ডিংটা অন করে অনু । চোখ বন্ধ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে দুলতে দুলতে কাল রাতের হওয়া কথাগুলো শুনতে লাগলো ।
-হ্যালো
(কিছু সময় নিরবতার পর)
-কি ব্যাপার আজ তুমি চুপ যে?
অনুর উত্তর না পেয়ে অপর পাশ থেকে আবার বলতে লাগলো,
-অনু আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই।
এবার অনু জবাব দেয়,
-আপনার কণ্ঠ চেনা চেনা মনে হচ্ছে । সত্যি করে বলুন তো কে আপনি?
ওপাশ থেকে হাসির শব্দ শোনা গেল । হাসির আওয়াজ কানে আসতেই হালকা কেঁপে উঠেছিল অনু । মনে মনে বলছিল,
-” ইস এমন পাগল করা হাসি কেনো দিচ্ছে উনি । হাসির আওয়াজটা এমন পাগল করা না জানি সরাসরি দেখতে কেমন । মনে হয় পুরাই কিলার স্মাইল…. ”
-কি ব্যাপার আবার চুপ হয়ে গেলে যে??
অনুকে চুপ থাকতে দেখে ওপাশ থেকে বলে উঠে। অনু আমতা আমতা করতে করতে বলে,
-না মা….মানে…ইয়ে…
অনুর এভাবে না মানে ইয়ে শুনে আবার হেসে দেয়। বললো,
-কালকে আসবে তো??
কিছুক্ষণ চুপ থেকে অনু বললো,
-কোথায় আসবো?
-ম্যাসেজ করে ঠিকানা পাঠিয়ে দিচ্ছি। আর একটা রিকোয়েস্ট একা এসো প্লিজ ।
অনুকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কল কেটে দেয় । অনু কিছুক্ষণ ফোন হাতে নিয়ে ওভাবেই বসে ছিল ।
রেকর্ডিং শেষ হতেই চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালো অনু । কালকের পাঠানো ম্যাসেজটা অপেন করে ঠিকানাটা দেখতে লাগলো অনু । আর ভাবতে লাগলো যাবে কি যাবে না ।
.
.
নিশি রেস্টুরেন্টের বাহিরে দাড়িয়ে ভাবছে ভিতরে যাবে না কি যাবে না । আধঘন্টা ধরে নিশি বাহিরে দাড়িয়ে এটাই ভাবছে । অনু জোর করে নিশিকে পাঠিয়েছে নিঝুমের সাথে দেখা করতে । প্রথমে নিশি সাহস করে নিঝুমকে ফোন করে দেখা করার কথা বললেও এখন নিশির সাহস হচ্ছে না নিঝুমের সামনে যাওয়ার । নিশি দোমনাতোমনা করছে তখনই নিশির ফোন বেজে উঠে । ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে অনু ফোন করেছে । নিশি ফোন রিসিভ করলো,
-হ্যালো
-আপি কই তুই?
-আ…আমি..আমি এ…এসে পড়েছি ।
-কি বলিস কই এসে পড়েছিস?
-রে…রে…রেস্টুরেন্টে…
-ওমন ভাবে কথা বলছিস কেনো?? আর তুই ভিতরে না গিয়ে বাহিরে দাড়িয়ে আছিস কেনো??
-আমি বাহিরে দাড়িয়ে আছি তুই জানলি কিভাবে?
-নিঝুম ভাইয়া ফোন দিয়েছিল আমাকে ।
-ওহহ
-কি ওহহ??? ভিতরে যাচ্ছিস না কেনো তুই??
-এই তো যাবো এখনই।
-হুম তো যা। দাঁড়িয়ে আছিস কেনো??
-হুম
ফোন কেটে দেয় নিশি । একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভিতরে ঢুকলে ।
নিঝুম তখন থেকে সময় দেখে যাচ্ছে । শেষে আর না পেরে অনুকে কল দিয়ে জানায় নিশির কথা । নিশিকে নিঝুম অনেক আগেই দেখেছে রেস্টুরেন্টের বাহিরে দাড়িয়ে কি যেন ভাবছে । কিন্তু ভিতরে আসছে না । তাই উপায় অন্তর না পেয়ে অনুকে কল দিয়ে ব্যাপারটা জানায় নিঝুম । নিঝুম নিচের দিকে তাকিয়ে ভাবছিল নিশি কেনো ওর সামনে আসতে চায় না । হঠাৎ নিঝুম মাথা উঠিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে নিশি আসছে । নিশি মাথা নিচু করে হেঁটে আসছে । নিশিকে দেখে নিঝুম হা হয়ে যায় । ওর সামনে নিশি নাকি কোনো অপ্সরী হেঁটে আসছে বুঝতে পারছে না । নিশি একটা সোনালী পাড়ের লাল রংয়ের শাড়ি পড়েছে । নিতম্ব সমান বাঁকা চুলগুলো খোলা । নিশি কদম ফেলার সাথে সাথে চুলগুলো দুলছে । মাঝে মাঝে সামনের কাটা চুলগুলো কপালের উপর এসে পড়ছে । আর নিশি সেই চুল হাত দিয়ে কানের পিছনে গুঁজে দিচ্ছে । চোখ ভর্তি করে দেয়া কাজলে নিশির চোখকে যেন এক মায়ার সাগর মনে হচ্ছে । ওষ্ঠে দেয়া লাল রংয়ের লিপস্টিক । হাতে কাচের লাল সোনালি চুড়ি । নিঝুম যেন নিজের মাঝে নেই । হারিয়ে গেছে নিশিতে । নিশিকে দেখায় নিঝুম এতটাই মত্ত হয়ে গিয়েছিল যে নিশি ওর সামনে এসে বসেছে সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই নিঝুমের । ও তো শুধু নিশিকে দেখায় ব্যস্ত হয়ে আছে । নিশি নিঝুমকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে লজ্জা পেয়ে গেলো । নিঝুমকে যে ডাক দিবে সেটাও পারছে না নিশি । হঠাৎ ফোনের রিংটোন বেজে উঠায় ঘোর কাটে নিঝুমের……..
.
.
.
চলবে?
(দেরি করে গল্প দেওয়ার জন্য সরি। ?
ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন)
.

<strong><span style=”color: #0000ff;”>এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।</span></strong>
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের <span style=”color: #000000;”>জন্য</span> থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

<span style=”color: #800000;”><strong>গল্পপোকার এবারের আয়োজন</strong></span>
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

<span style=”color: #ff0000;”>◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা</span>
<span style=”color: #ff0000;”>◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।</span>

<span style=”color: #0000ff;”>আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন:</span> <a href=”https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share” target=”_blank” rel=”noopener noreferrer”>https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share</a>

<a href=”https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share”><img class=”size-medium wp-image-26878 aligncenter” src=”https://golpopoka.com/wp-content/uploads/2020/05/20200510_052045-300×300.jpg” alt=”” width=”300″ height=”300″ /></a>

#স্বপ্ন?
#অনামিকা_সিকদার_মুন
#পর্ব_১৭
.
.
.
নিশি একটা সোনালী পাড়ের লাল রংয়ের শাড়ি পড়েছে । নিতম্ব সমান বাঁকা চুলগুলো খোলা । নিশি কদম ফেলার সাথে সাথে চুলগুলো দুলছে । মাঝে মাঝে সামনের কাটা চুলগুলো কপালের উপর এসে পড়ছে । আর নিশি সেই চুল হাত দিয়ে কানের পিছনে গুঁজে দিচ্ছে । চোখ ভর্তি করে দেয়া কাজলে নিশির চোখকে যেন এক মায়ার সাগর মনে হচ্ছে । ওষ্ঠে দেয়া লাল রংয়ের লিপস্টিক । হাতে কাচের লাল সোনালি চুড়ি । নিঝুম যেন নিজের মাঝে নেই । হারিয়ে গেছে নিশিতে । নিশিকে দেখায় নিঝুম এতটাই মত্ত হয়ে গিয়েছিল যে নিশি ওর সামনে এসে বসেছে সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই নিঝুমের । ও তো শুধু নিশিকে দেখায় ব্যস্ত হয়ে আছে । নিশি নিঝুমকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে লজ্জা পেয়ে গেলো । নিঝুমকে যে ডাক দিবে সেটাও পারছে না নিশি । হঠাৎ ফোনের রিংটোন বেজে উঠায় ঘোর কাটে নিঝুমের । চমকে উঠে নিঝুম । যখন বুঝতে পারে যে ওর কল এসেছে তখন তড়িঘরি করে ফোন হাতে নেয় নিঝুম । ততক্ষণে কল কেটে গেছে । কে কল দিয়েছে দেখার জন্য কল লিস্ট চেক করতেই দেখে নিশি কল দিয়েছে ।
– ” সামনে বসে থেকে নিশি কল দিল কেনো? ”
মনে মনে বললো নিঝুম । আড়চোখে নিশির দিকে তাকাতেই দেখে নিশি মাথা নিচু করে বসে আছে । ওর মুখে মুচকি হাসি । গালে হালকা গোলাপি আভা । নিশি লজ্জায় এমন কুঁকড়ে বসে আছে । হঠাৎ নিঝুমের মনে পড়ে যে ও একটু আগেই কেমন বেহায়ার মতো তাকিয়ে ছিল নিশির দিকে । হয়তো তাই নিশি লজ্জা পেয়েছে । কিন্তু ওর-ই বা কি করার । নিশিকে দেখে চোখ ফেরানো যাচ্ছিল না । তাই তো ওভাবে দিন দুনিয়া ভুলে তাকিয়ে ছিল নিশির দিকে ।
দু’জনই চুপ করে আছে । কেউ-ই বলার মতো কিছু খুঁজে পাচ্ছে না । দু’জনই বলার জন্য কথা খুঁজে চলেছে । কিন্তু পাচ্ছে না ।
নিঝুম হালকা কৃত্রিম কাশি দিল । কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল । তারপর নিঝুম বললো,
-কেমন আছো?
ঠিক তখন নিশিও বলে উঠলো,
-কেমন আছো?
দু’জন একসাথে কেমন আছো বলে উঠায় নিঝুম নিশির দিকে তাকায় । তখন নিশিও নিঝুমের দিকে তাকায় । এজন্য দু’জনের চোখে চোখ পরে যায় । নিশি সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নেয় । কিন্তু নিঝুম নিশির থেকে চোখ সরায় নি । ও তাকিয়ে আছে নিশির মায়াভরা মুখটার দিকে । যেই মুখে এখন লজ্জা এসে ভর করায় নিশিকে লজ্জার রাণী লাগছে । যা ওর সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ।
নিশি মাথা নিচু রেখেই উত্তর দিল,
-ভালো আছি ।
ঠিক তখন নিঝুমও একই জবাব দিল । এবার দু’জন দু’জনের দিকে তাকিয়ে একসাথে হেসে দিল । নিঝুম হাসলেও ওর নজর ছিল নিশির হাসির দিকে । মনে মনে নিঝুম তখন বলছিল,
-“ইসস্ স্বপ্নেও তুমি এমন হাসি দিতে মাঝে মাঝে । তোমার ঐ হাসি দিয়ে কি আমায় খুন করতে চাও তুমি? যদি তাই হয় তবে তোমার ঐ হাসি দেখে খুন হতেও আপত্তি নেই আমার!! ”
নিঝুম যে নিশির দিকে তাকিয়ে আছে সেটা নিশির নজর এড়ায় নি । নিঝুমের দৃষ্টিতে এক মুগ্ধতা খুঁজে পাচ্ছিলো নিশি । সাথে অন্য কিছু । সেই অন্য কিছুটা কি তা নিশির জানা নেই । কিন্তু কিছু একটা যে আছে সেটা নিশি ঠিকই বুঝতে পেরেছে ।
নিঝুম মেন্যু কার্ডটা নিশির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
-অর্ডার করো ।
নিশি কার্ড হাতে না নিয়ে একটু ইতস্তত করে বললো,
-অন্য কোথাও গেলে হতো না?
নিঝুম নিশির দিকে তাকিয়ে নিশি ইতস্তততা বুঝতে পেরে বললো,
-যেখানেই যেতে চাও নিয়ে যাব । তার আগে কিছু একটা অর্ডার করো ।
নিশি আর কথা বাড়ালো না । একটা ব্লাক কফি অর্ডার করলো শুধু । নিঝুমও শুধু কফিই অর্ডার করলো ।
.
অনু ফোন হাতে নিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে । নিশিকে রেডি করিয়ে নিঝুমের সাথে দেখা করতে পাঠিয়ে দিয়ে সেই যে বসেছে এখনো ঠিক তেমন ভাবেই বসে আছে । একদম ভাবলেশহীন ভাবে । ভার্সিটিতে যাবে যাবে করেও আর যায় নি । আযান কল দিয়েছিল তখন ওকে বলে দিয়েছে যে আজ ও যাবে না ভার্সিটিতে । অনুর মা-ও আজ জলদি বেরিয়ে গেছেন । উনারও আজ আসতে দেরি হবে । তাই বাসায় এখন শুধু অনু একা । অনেক ভেবেও অনু সিদ্ধান্ত নিতে পারে নি যে ও দেখা করতে যাবে নাকি যাবে না । যখন অনুর মনে হয় যে একটা অপরিচিত লোক তাকে চেনে না জানে না এমনকি নামটা পর্যন্ত জানে না তখনই মনে হয় যে ও যাবে না । আবার পরক্ষণেই যখন ওর সেই অচেনা ব্যাক্তির হাসির শব্দটা কানে বাজে তখন মনে হয় ওর চেনা…. খুব চেনা কেউ এই অচেনা ব্যাক্তিটা । তখন আবার অনুর যেতে ইচ্ছে করে । অনুর বিবেক বলে, “অনু যাস না । ” আর অনুর মন বলে, “গিয়ে একবার দেখই না । কি আর এমন হবে গেলে ।”
মন আর বিবেক কার কথা শুনবে অনু । এটা ভাবতে ভাবতে যাওয়ার সময় হয়ে আসে । একবার ঘড়ির দিকে চোখ বুলিয়ে সময় দেখে যাবে না বলে মনকে একটা ধমক দেয় অনু । কিন্তু অনুর মন তখন ওকে আরও দুগুন বড় ধমক দিয়ে যেতে বলে । এদিকে সময় এক এক মিনিট করে চলে যাচ্ছে । বসা থেকে উঠে দাড়ালো অনু । শেষমেষ মনের কাছে হার মেনে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তই নিল ও । আলমারি খুলে ভাবতে লাগলো কি পরে যাবে । হঠাৎ চোখ আটকে যায় নীল রংয়ের শাড়িটায় । অনু সচরাচর নীল রং খুব কম পড়ে । যদিও ওর নীল রংটা খুব পছন্দ তবুও পড়ে না । কারণ শুনেছে বেদনার রং নাকি নীল হয় । ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়ে এমনিতেই জীবনটা কালো মেঘে ছেঁয়ে অন্ধকারে ডুবতে যেয়েও মায়ের জন্য একটু খানি আলোর দিশা পেয়েছে । সেই থেকে আজ এখন এতটুকু আসতে পেরেছে । নাহলে হয়তো অনেক আগেই ডুবে যেত অন্ধকারে । তাই অনু চাইত না আবার কোনো নীল বেদনা আসুক ওর জীবনে তাই নিজেকে নীল রং থেকে দূরে দূরে রাখত । কিন্তু আজ কোনো অজানা কারণে ওর নীল শাড়িটাই পড়তে ইচ্ছে হলো । মনে মনে ভাবলো,
“থাক না । একদিন পড়লে কি আর ক্ষতি হবে । ”
শাড়িটা পড়ে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ায় অনু । নিজের প্রতিচ্ছবি একবার দেখে নেয় আয়নায় । এতটাও খারাপ লাগছে না । নিশির মতো অনু অতটা সুন্দরী না । নিশি দেখতে একদম মায়ের মতো । ফরসা যেন দুধে আলতা গায়ের রং । আর তেমনি মায়াবী । টানা টানা চোখ । একপলক তাকালে তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছে হয় । অপর দিকে অনুর নিশির মতো দুধে আলতা গায়ের রং না । অনুর দেখতে শ্যাম বর্ণের । কিন্তু ওর মুখটায় যেন পৃথিবীর সব মায়া উজার করে ঢালা । কালো মেয়েদের মুখে আল্লাহ মনে হয় একটু বেশিই মায়া দেন । এইজন্যই বোধ হয় কালো মেয়েদের বলা হয় মায়াবতী । কেউ যদি একবার এই মায়াবতীর মায়ায় জড়িয়ে যায় তাহলে সেই মায়াজাল কেটে সহজে উঠে আসতে পারে না । অনুর নিজের গায়ের রং নিয়ে কোনো আফসোস নেই । ও মনে করে ও দেখতে যেমনই হোক সৃষ্টি তো আল্লাহ-ই করেছেন । আর আল্লাহর কোনো সৃষ্টিই অসুন্দর না । অনু খুব কম সাজে । সাজ বলতে কাজল আর একটা ছোট্ট টিপ এই । এর বেশি অনু কখনো সাজে না । এইটুকুই সাজে কোনো অনুষ্ঠান হলে । নাহলে আর না ।
কিন্তু আজ অনু নিজেকে সাজালো । হরিণী নয়না দু’চোখ ভর্তি করে কাজল দিল । কপালে একটা ছোট্ট কালো টিপ পড়লো । হাতে অল্প কিছু নীল কাঁচের চুড়ি । চুলগুলো পিছনে ছেড়ে দিয়ে কাঁধের একপাশে এনে রাখলো । আয়নায় নিজেকে দেখে মুচকি হাসলো অনু । পরক্ষণেই আবার ভাবলো,
– “আরেহহহ্ আমি হাসছি কেনো!!!! ”
অনু নিজের কাজে অবাক হলো । কারণ ও যেই কাজ সহজে করে না আজ ওর অজান্তেই ও সেগুলো করতে ইচ্ছে করছে । এমনকি করছেও । যেমন হুট করেই শাড়ি পড়লো। তাও আবার নীল রংয়ের ।
বাসা থেকে বের হওয়ার সময় অনুর ফোনে ম্যাসেজ এলো । ম্যাসেজ আসতেই তড়িঘড়ি করে ম্যাসেজ ওপেন করলো অনু।
– ” mishti anu….tmr opekkhay achi… ”
সেই আননোন নাম্বার থেকে এসেছে ম্যাসেজটা । ম্যাসেজটা পড়ে মুচকি হাসি দিল অনু । ওর কেনো জানি বার বার মনে হচ্ছে এই অচেনা ব্যাক্তিটা আর কেউ না । সেদিনের ঐ কিলার স্মাইলওয়ালা মানে নীল । নীলের নাম অনুর জানা না তাই ওকে এই নামটাই দিয়েছে অনু ।
.
অনু ম্যাসেজ করে দেয়া ঠিকানায় পৌঁছে যায় সময়ের আরও মিনিট পাঁচেক আগে । এখানে অনু আগেও ঘুরতে এসেছে । ধানমন্ডি লেকে নিশিকে নিয়ে প্রায়ই আসত অনু । অনু ভিতরে গিয়ে ব্রিজের উপরে দাড়ায় । তারপর ফোন বের করে কল দিয়ে জলদি আসতে বলার জন্য । অনু কল দিতেই শুনতে পায় ওর পিছনে কারো ফোন বাজছে । অনু পিছন দিকে ফিরে তাকায় । দেখে…….
.
.
.
চলবে?
(বি.দ্র. রেসপন্স অবস্থা আবার সেই আগের মতো ।? ফ্রেন্ডলিস্ট পরিষ্কার করার টাইম এসে গেছে । সাইলেন্ট রিডার আমার দরকার নেই । যারা গল্প পড়ে নিজেদের মতামত জানায় আমাকে উৎসাহ দেয় তাদেরকেই ফ্রেন্ডলিস্টে রাখবো । ?
আমার কথায় খারাপ লাগলে সরি । বাট এখন এটাই করবো আমি । ?
ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন?)

#স্বপ্ন?
#অনামিকা_সিকদার_মুন
#পর্ব_১৮
.
.
.
অনু ম্যাসেজ করে দেয়া ঠিকানায় পৌঁছে যায় সময়ের আরও মিনিট পাঁচেক আগে । এখানে অনু আগেও ঘুরতে এসেছে । ধানমন্ডি লেকে নিশিকে নিয়ে প্রায়ই আসত অনু । ভিতরে গিয়ে ব্রিজের উপরে দাড়ায় ও । তারপর ফোন বের করে কল দিয়ে জলদি আসতে বলার জন্য । অনু কল দিতেই শুনতে পায় ওর পিছনে কারো ফোন বাজছে । অনু পিছন দিকে ফিরে তাকায় । দেখে একটা হাসি হাসি মুখ ওর দিকে তাকিয়ে । অনু ফোন কানে ধরে রেখেছে । ওভাবেই ফোন কানের সাথে লাগিয়েই তাকিয়ে থাকে সামনের মানুষটার দিকে । এক কদম দুই কদম করে সামনের দাড়ানো মানুষ এগিয়ে আসছে তার দিকে । তার মুখে তার সেই হাসিটা লেগেই আছে । অনুর মুখ দেখে ওর রিয়েকশন বোঝা গেলো না । হঠাৎ অনুর মাথা চক্কর দিতে লাগল । চোখের সামনে সব কিছু হুট করেই ঝাপসা হতে অন্ধকার হয়ে এলো । সামনের মানুষটা মাত্র কয়েক হাত দূরে ঠিক তখনই অনু মাথা ঘুরে পরে যায় ।
.
ঠিক কতক্ষণ পরে অনুর জ্ঞান ফিরলো সেটা ও জানে না । যখন ও চোখ খুলে তাকায় তখন দেখলো একজোড়া চোখ গভীর ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে । চেনা….খুব চেনা চোখ জোড়া । অনু আটকে গেলো সেই চোখের মাঝে । মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো অনু । আশেপাশে তাকিয়ে কোথায় আছে সেটা দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো । শোয়া থেকে উঠে বসতে চাইলে বাঁধা পেয়ে আবার তাকায় নীলের দিকে । হুম নীল । তখন নীলের সাথেই দেখা হয়েছিল অনুর । কিন্তু হঠাৎ করে অনু অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল । অনু নীলের দিকে তাকালে দেখে নীল ওর দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।
-উঠো না শুয়ে থাক ।
নীলের কথা শুনে অনু আর কিছু বললো না । চুপ করে শুয়ে রইল । আশেপাশে তাকিয়ে বুঝতে পারলো যে ও হসপিটালে । অনুকে চুপচাপ দেখে নীলও কিছু বলার মতো খুঁজে পেল না । মনে মনে ভাবতে লাগলো কয়েক ঘন্টা আগের ঘটে যাওয়া কাহিনি ।
নীল অনুর কল রিসিভ না করে একেবারে ওর সামনে গিয়ে দাড়ায় । ও দেখতে চাচ্ছিল অনু ওকে দেখে কেমন রিয়েকশন দেয় । অনু তখন ওকে দেখে একদম স্বাভাবিক ছিল। ওর মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিল না যে ওর মনে মনে ঠিক কি ভাবছে । তবে নীল এটা ঠিক বুঝেছিল যে অনু খানিকটা হলেও চমকে গেছে । কারণ অনু কানে ফোন লাগিয়ে যেভাবে ওর দিকে তাকিয়ে ছিল তাতেই বোঝা যাচ্ছিল যে মেয়েটা ভিতরে ভিতরে ওকে দেখে ঠিকই চমকে গেছে । হয়তো ভাবতে পারে নি যে ও যেই ছেলেটার সাথে দেখা করবে সে-ই নীল।
নীল ওর দিকে হাসি মুখেই এগিয়ে যাচ্ছিল । কিন্তু হঠাৎ করে দেখলো যে অনু পড়ে যাচ্ছে । তখনই এক দৌড়ে অনুর কাছে এসে ওকে ধরে ফেলে নীল । যদি আর সেকেন্ড খানিক লেট হতো তাহলেই অনু মাটিতে পড়ে যেত ৷ নীল অনুকে ধরে দেখে অনু জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে । কয়েকবার গালে আলতো করে বারি দিয়ে অনুকে ডাকলো নীল । কিন্তু কোনো সারা নেই । তখন ঘাবড়ে যায় ও । সাথে সাথে অনুকে কোলে উঠিয়ে নেয়। গাড়ির কাছে এসে অনুকে পেছনের সিটে শুইয়ে দিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে তাড়াতাড়ি গাড়ি র্স্টাট দেয় । তারপর হসপিটালে নিয়ে আসে ।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নীল । এতক্ষণ অনুর মুখের দিকে তাকিয়ে একটু আগের কাহিনীই মনে মনে আওড়ে নিল নীল। কিন্তু নীল বুঝতে পারলো না যে হঠাৎ করে অনু ওভাবে অজ্ঞান কেন হয়ে গেলো । প্রশ্নটা মনে মধ্যে চেপে রাখতে না পেরে অনুকে জিজ্ঞেস করে বসে,
-তুমি হঠাৎ করে ওভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়লে কেনো??
প্রশ্ন শুনে অনু নীলের দিকে কেমন এক দৃষ্টি নিয়ে তাকালো । অনুকে চুপ থাকতে দেখে নীল আবার বললো,
-বলো?
অনু এবারও কিছু বললো না। শুধু তাকিয়েই রইলো নীলের দিকে । নীলও তাকিয়ে রইলো উত্তরের আশায় ।
– “শেষে আমার স্বপ্নটাই সত্যি হলো!!! আপনিই তাহলে এতদিন আমার সাথে আড়ালে থেকে কথা বলতেন!!! কেন বলতেন?? আমার মন তাহলে আমাকে সত্যিই বলতো এতদিন!!!
আপনাকে দেখে যেমন অবাক হয়েছি তেমনি খুশিও লাগছিল । খুশির মাত্রা যে এতটা হবে জানা ছিল না । কিন্তু সে কথা আপনাকে কিভাবে বলি??? ”
অনু নীলের দিকে তাকিয়ে মনে মনে কথাগুলো বলছিল। আর নীল অনু দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আবার ডুবে গেলো অনুর মুখটাতে। ঠিক যেমন অনুর জ্ঞান ফিরার আগে ওর মুখটায় দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ডুবে গিয়েছিল । মেয়েটা অসম্ভব মায়াবতী । চোখদুটো আর হাসিটা মারাত্মক । যে কাউকে ঘায়েল করে ফেলতে পারবে ঐ হাসি আর চোখের গভীর চাহনি দিয়ে । কপালের টিপ টা যেন খুব করে কাছে টানে । অনুকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেছিল নীল । ওর শ্যামবর্ণ রংয়ের গায়ের উপর নীল রংটায় খুব মানিয়েছে ওকে । পছন্দের মানুষটাকে তার পছন্দের রংটাই পরে আসতে দেখে মনের কোনো এক কোণে একটা আলাদা খুশি কাজ করছিল নীলের । তারপর আবার শাড়ি। নীলের বরাবরই শাড়ির উপরে একটা দূর্বলতা আছে । অনুর কাজল কালো চোখ দু’টোয় নিজেকে হারিয়ে ফেলতে খুব ইচ্ছে করছিল নীলের । খুব করে ইচ্ছে করছিল অনুর কপালের মাঝখানটা ঠোঁট ছোঁয়াতে । নীল নিজের মতো ওর ভাবনায় ডুবে গিয়েছিল । হঠাৎ করে অনু নীলের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিল । নীল সেটা দেখলো কিন্তু ও ওভাবেই তাকিয়ে রইলো । নীলের ওভাবে তাকিয়ে থাকায় অনুর কেমন লজ্জা লাগছিল । কিন্তু ওর তো অস্বস্তি লাগার কথা । অস্বস্তি না লেগে লজ্জা লাগছে কেনো এটা ভেবেও অনু লজ্জা পাচ্ছিলো ।
– উহুম উহুম
নীলর দৃষ্টি সরাতে অনু আওয়াজ করলো । কিন্তু নীল তো একধাপ এগিয়ে। ও অনু দিক থেকে চোখ না সরিয়েই বললো,
-কিছু বলবে?

-” ইয়া আল্লাহ কোন মুসিবতে পড়লাম । উনি এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো । এভাবে তাকিয়ে থাকলে কি কথা বলা যায় । প্লিজ আপনি চোখ সরান আমার দিক থেকে । ”
কথাগুলো অনু মনে মনেই বললো । কারণ সরাসরি বলার মতো সাহস অনুর হচ্ছে না । অন্য কেউ হলে ঠিকই বলতে পারতো । অনু শোয়া থেকে উঠে বসে পড়লো । এবার আর নীল কিছু বললো না । চুপচাপ দেখতে লাগলো অনু কি করে ।
-আমি বাসায় যাব । বাসায় হয়তো মা আপি চিন্তা করছে আমার জন্য ।
অনু বেড থেকে নামতে নামতে বললো । ও নিচের দিকে তাকিয়ে আছে । নীলও বসা থেকে উঠে দাড়ালো। বললো,
-চলো ।
.
গাড়ি ড্রাইভ করছে নীল । পাশে বসে আছে অনু । দু’জনই চুপ করে আছে । যেন নিরবতা পালন করছে । গাড়িতে উঠার পর কেউই কোনো কথা বলে নি । অনেকক্ষণ পর নীলই কথা বললো,
-অনু…
-আপনি আমার নাম জানেন কি করে?
নীল বাঁকা একটা হাসি দিল । অনু আড়চোখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখলো সেই হাসি ।
-আড়চোখে দেখছো কেনো?? সোজা হয়ে ঘুরেই তাকিয়ে দেখো । কেউ তো বারণ করছে না।
অনু বেশ হকচকিয়ে গেল । কিন্তু মুখের ভঙ্গি স্বাভাবিকই রাখলো । বললো,
-আমি মোটেই আপনাকে আড়চোখে দেখি নি ।
-অবশ্য আড়চোখে তাকালে তোমায় সুন্দরই লাগে ।
অনু কথা পাল্টে বললো,
-বললেন না যে আপনি আমার নাম কিভাবে জানেন??
– নিশি আপু কিন্তু এখনো বাসায় যায় নি । নিঝুম ভাইয়ার সাথেই আছে ।
এবার অনু একটু না অনেক বেশি অবাক হয়ে গেল । ওর মুখটা হা হয়ে গেছে ।
– ” উনি আমার নাম আপির নাম জানে কিভাবে?? নিঝুম ভাইয়ার কথাই বা কিভাবে জানলো? আমি তো উনার নামটাও জানি না। আর উনি!!!!! ”
মনে মনে ভাবছিল অনু । তখন নীল আবার বললো,
-ভাবছো যেখানে তুমি আমার নামটাই জানো না সেখানে আমি কিভাবে তোমার এত কিছু জানি?
অনু মনে মনে বললো,
– ” মাইন্ড রিডার । ”
কিন্তু বাহিরে চুপ করে রইলো । একটা টু শব্দও করলো না ।
-হ্যা আমি মাইন্ড রিডারই ।
-প্লিজ আপনি আর একটা কথাও বলবেন না ।
নীল এবার কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো । বললো,
-আচ্ছা বলবো না যাও ।
অনু ঠোঁট ফুলিয়ে বসে রইলো । মাত্র কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকেই নীল আবার বললো,
– নাম জানতে চাইবে না আমার?
অনু কিছু বললো না । শুধু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো নীলের দিকে।
-নীল….
-কি!!!
-আমার নাম…
অনুর কাছে নামটা চেনা চেনা মনে হলো । কোথাও শুনেছে মনে হচ্ছে । কিন্তু কোথায় শুনেছে ঠিক মনে করতে পারলো না ।
-কি ভাবছো?
-আপনি না মাইন্ড রিডার । তো রিড করেই বলুন যে কি ভাবছি ।
এবার অনুও বাঁকা উত্তর দিল । নীল হাসতে হাসতে উত্তর দিল,
-নামটা চেনা চেনা মনে হচ্ছে । কিন্তু কোথায় শুনেছ মনে করতে পারছো না । আ’ম আই রাইট?
এবার অনু ক্ষেপে গেলো । বললো,
-এই এই এই আপনার প্রবলেম কি হ্যাঁ? খালি বাঁকা বাঁকা কথা বলেন ।
এবার নীল কিছু বললো না । শুধু হাসতে থাকলো । অনু গাল ফুলিয়ে গাড়ির জানলা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে রইলো । আর নীল আড়চোখে তাকালো অনুর দিকে । মনে মনে বললো,
– “ইসসস্ কিভাবে বাচ্চাদের মতো গাল ফুলিয়ে রেখে দেখো । ”
গাড়ির কাঁচ নামানো থাকায় বাহির থেকে বাতাস আসছে । সেই বাতাস অনুর খোলা চুলগুল এলোমেলো করে দেয়ার চেষ্টা করছে । অনুর অবাধ্য চুল গিয়ে নীলের মুখে বারি খাচ্ছে বার বার । নীল চুলগুলো সরালো না । চুপচাপ অনুভব করতে লাগলো । অনুর চুল থেকে একটা সুন্দর ঘ্রাণ আসছে । কেমন একটা মাদকতা আছে সেই ঘ্রাণে । নীল গাড়ি ড্রাইভ করা অবস্থায়ই বার বার আড়চোখে তাকাচ্ছে অনুর দিকে ।
-সামনের তাকিয়ে গাড়ি চালান । এত জলদি মরার শখ নেই আমার ।
চুলগুলো সরাতে সরাতে বললো অনু । অনুর কথা শুনে মনে মনে হাসলো নীল । একটু খারাপও লাগলো অনুর চুল সরিয়ে নেওয়ায় । কি এমন হতো চুলোগুলো ওভাবে অবাধ্য হয়ে উড়তে দিলে । কিন্তু মুখে কিছুই বললো না । আচমকা নীল……
.
.
.
চলবে??
(ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন)
.

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ