Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"শ্রাবণ রাতের বৃষ্টিতেশ্রাবণ রাতের বৃষ্টিতে পর্ব-৪০ এবং শেষ পর্ব

শ্রাবণ রাতের বৃষ্টিতে পর্ব-৪০ এবং শেষ পর্ব

#copyrightalert❌🚫
#শ্রাবণ_রাতের_বৃষ্টিতে
#নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_৪০
রেস্টুরেন্টে আটজন এক টেবিলে বসেছে। মুখোমুখি আর্শি ও ইরিনা। খেতে খেতে সবাই টুকটাক গল্প করছে সাথে হাসি-তামাসা তো আছেই। কিন্তু আর্শি চুপচাপ খাচ্ছে আর বারেবারে ইরিনাকে দেখছে। মেয়েটার চোখে-মুখে দুঃখের ছাঁপ বলতে নেই। এতো প্রাণোচ্ছল লাগছে তাকে। আর্শি আসার পর থেকে ইরিনাকে সামনাসামনি দেখে হাই-হ্যালো ছাড়া কিছু জিজ্ঞাসা করার সাহস অবধি পায়নি।
খাওয়া শেষে আর্শি চুপচাপ বসে আছে। তখন ইরিনা আর্শিকে বলে,
“কেন ইউ কাম উইথ মি?”

ইরিনা বিভ্রান্তির দৃষ্টিতে তাকায়। ফের মাথা দুলিয়ে উঠে যায়। দুজনে একসাথে রেস্টুরেন্টের খোলা একটা জায়গায় যায়। দুজনেই কিছুক্ষণ কোনো কথা বলে না। অতঃপর ইরিনা বলে,
“Arshi, you know, love is a beautiful feelings. But you have to move on when a loved one leaves you. Because those with weak hearts naturally experience even more pain. So, you must move on. Thus, I did. Please, don’t feel sorry for me; it was written in my destiny. And I believe that sorrow gives way to happiness.”

বলেই ইরিনা হাসলো। আর্শি এতটুকু সময়ে ইরিনাকে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বুঝলো, ‘যে নিজের জীবনের প্রতিটা ধাপ বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে এসেছে, তাকে কেউ সহজে ভেঙে গুড়িয়ে দিতে পারে না। সে ভেঙে পড়েও আবার সতেজ হয়ে ফিরে।’
আর্শি হুট করেই ইরিনাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
“May Allah give you internal happiness. And always keep you happy.”

ইরিনা খুব সুন্দর করে হাসলো। কিছু হাসি নিজ ভাগ্যের সবকিছু মেনে ভালো কিছুর আশারও হয়।

_______

দেখতে দেখতে দুটোদিন পেরিয়ে গেছে। মিসেস নেহাকে বাড়িতে আনা হয়েছে। মুশফিকাই উনার সম্পূর্ণ দেখাশোনা করছে। মিস্টার হাসান লোকমারফরত মুশফিকার বোনকেও এখানে নিয়ে এসেছেন। নাহিদের সাথে মুশফিকার বিয়ের কন্ট্রাক্ট শেষের পথে হলেও মিস্টার হাসান মুশফিকাকেই নিজের পুত্রবধূ মানতে শুরু করেছেন। যদিও কন্ট্রাক্ট পেপারে শুধু নাহিদের সাইন! মুশফিকা কৌশলেই নাহিদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সাইন করেনি। প্রথমে সে লো*ভে পড়ে এমনটা করলেও পরবর্তীতে সেও ওই রুক্ষ ও হিং*স্র মনের মানুষটাতে ভালোবেসে ফেলেছে। নাহিদের মানসিক অবস্থা খুব ভালো না। ডাক্তাররা এখন তাকে হাই ডো*জের মে*ডিসিন ও বিভিন্ন থেরাপি দিয়ে ট্রিটমেন্ট চলছে। আরিয়া ফোন করে মিসেস নেহার খোঁজখবর নেয়। এভাবেই চলছে।

আজ ছুটির দিন। আর্শি, শ্রাবণ, গ্রিণ, ইরিনা ও পিটাররা ঘুরতে বেড়িয়েছে। সবাই সময়টা উপভোগ করলেও পিটার কেমন তার স্বভাব বিরুদ্ধ নিরব থাকছে। আবার হ্যারির ছোটোবোন ক্যামেলিয়া, গ্রিণের সাথে খুব বেশি কথাবার্তা বলছে। গ্রিণ ও ক্যামেলিয়া একটু পেছনে একসাথে হাঁটছে। তা দেখেও হ্যারি নিরুত্তাপ। হ্যারিকে বললে হ্যারির জবাব এমন হয়, ‘ও নিজের মনের মানুষ খুঁজে নিয়েছে তা তো ভালো। সে এখন ১৮ বছরের। নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতেই পারে।’
কিন্তু পিটারের এই লাজুক ভাবটা আর্শি ও মোনা কিছুটা সন্দেহ করেছে। তাদের ধারণা পিটার ইরিনাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। যদিও ইরিনা পিটারের থেকে এক বছরের বড়ো!

আর্শি শ্রাবণের হাত জড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলে,
“যাক, কানাডায় এসে আমার সিঙ্গেল বন্ধুটাও তার মনের মানুষ পেয়ে গেছে। গ্রুপে এখন একজনও সিঙ্গেল থাকবে না।”

শ্রাবণ হেসে ফেলে। তারপর শুধায়,
“কার কথা বলছো?”

“আর কার? পিটারের কথা। বেচারা চার বছর আগে নাকি এক মেয়েকে প্রপোজ করে থাপ্প-ড় খেয়ে সিঙ্গেল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এখন সে বোধহয় ইরিনাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। দেখুন, দেখুন, কীভাবে তাকাচ্ছে!”

শ্রাবণ চেয়ে দেখলো, সত্যি তাই। পিটার আড়নয়নে বারবার ইরিনাকে দেখছে। ইরিনা মোনা ও হ্যারির সাথে কোনো একটা বিষয়ে কথা বলতে বলতে খুব হাসছে। আর পিটার চুপ করে কিছুক্ষণ পরপর ইরিনার হাস্যজ্জ্বল মুখের দিকে চেয়ে মিটিমিটি করে হাসছে। আর্শি বলে,

“পিটার নিজের ফ্রেন্ডদের প্রতি যদি যত্নশীল হয় তবে ভাবুন, নিজের লাইফ পার্টনারের প্রতি কতোটা যত্নশীল হবে? তাছাড়া পিটারের মা ও দাদী অনেক ভালো।”

“তা বুঝলাম কিন্তু ইরিনা কী সিদ্ধান্ত নিবে সেটা ইরিনার উপর। আমরা তাতে কিছু বলতে পারি না।”

“হু!”

আর্শি খানিক মন খারাপ করে শ্রাবণের কাঁধে মাথা রেখে চলতে লাগলো। পথে আইসক্রিম দেখে, এই ঠান্ডার মধ্যেও তার আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করে! কিন্তু শ্রাবণ মোটেও আর্শিকে আইসক্রিম খেতে দিবে না। সবাই খেতে পারলেও আর্শি খেতে পারবে না। অতঃপর শ্রাবণের জেদের কাছে হার মেনে আর্শির আর আইসক্রিম খাওয়াও হয় না।

_______

দেখতে দেখতে দুই মাসের কিছু বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। মার্চ মাস চলছে এখন। কানাডায় এখন বসন্তরানীর রাজত্বকাল। আর্শি ইটালি ফিরে যায়নি এখনও। এক কথায় শ্রাবণ যেতে দেয়নি। বলেছে তিন মাস থাকতে পারবে(আমার জানামতে ৩মাস থাকতে পারে) তাই শ্রাবণ চায়নি আর্শি এই তিন মাসে জার্নি করুক। তার চোখের সামনে থাকুক। আর্শির রিসার্চের লেখার ভুল-ত্রুটি এসব ফ্যাকাল্টির কাছে অনলাইনে দেখাচ্ছে। প্রেগনেন্সি ইস্যুর জন্য ফ্যাকাল্টিও রাজি হয়েছে। আর্শির এখন ৩০ সপ্তাহ পেরিয়েছে। মাঝেমাঝেই তার পেটে ব্যাথা হয়। আজও ব্যাথা হচ্ছে। শ্রাবণকে বলবে বলবে করে বলা হচ্ছে না। তিনদিন আগে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানোর পর ডাক্তার বলেছিল বেবি হেলদি আছে। বেবির গ্রোথও ভালো হচ্ছে। কিন্তু আজকে হঠাৎ করেই আর্শি খুব ঘামছে। এই শিতল পরিবেশেও তার অস্থির লাগছে। ক্রমশ ব্যাথা বাড়ছে। বারবার শ্বাসেও টান পড়ছে। সে শ্রাবণের নাম্বারে কল করে। শ্রাবণ অফিসে গেছে সবে দুই ঘণ্টা হলো। এখন এই সময় আর্শির কল আসাতে শ্রাবণ কিছুটা বিচলিত হয়। কল রিসিভ করতেই আর্শি বলে উঠে,

“আমার খুব খারাপ লাগছে। তুমি প্লিজ আসো।”

এটুকু বলতেই শ্রাবণ আর কিছু জিজ্ঞাসা করলো না। চটচজলদি ছুটি নিয়ে বেরিয়ে গেছে। শ্রাবণের সাথে ইরিনাও ছুটি নিয়েছে। অতঃপর দুজনে আধঘণ্টারও কম সময়ে আর্শির কাছে পৌঁছায়। ইরিনা আগে থেকেই অ্যাম্বুলেন্সে কল করে জানিয়ে দিয়েছিল, অ্যাম্বুলেন্সও চটজলদি চলে এসেছে।
(কানাডায় জমজ বাচ্চা জন্মের খবরটা দেখেছিলাম। যা ৪০ সপ্তাহের মধ্যে ১৮ সপ্তাহ আগে জন্ম নিয়েছে।
________

প্রায় ঘণ্টাখানেক পর, নার্স এসে শ্রাবণকে জানায় সে কন্যা সন্তানের পিতা হয়েছে। শ্রাবণ খবরটা শুনে সেখানেই বসে কাঁদতে শুরু করে। ইরিনা এই আনন্দের খবরটা সবার আগে পিটারকে মেসেজ করে জানায়। ইটালিতে আর্শির লেবার পেইনের খবর পৌঁছানো মাত্র ওরা খুব চিন্তিত ছিল। পিটারের সাথে ইরিনার এখন বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে। ইরিনা বুঝতে পারে পিটার তাকে পছন্দ করে। তবে সে কিছুটা সময় নিতে চায় বলে বন্ধুত্বেই আটকে আছে।
কিছুক্ষণ পর শ্রাবণ আর্শির কাছে যায়। আর্শি চোখ বন্ধ করে আছে। শ্রাবণের উপস্থিতি টের পেয়ে চোখ মেলে কিঞ্চিত হাসে। শ্রাবণও আর্শির কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে ওর হাতের আঙুল ধরে বসে থাকে। একটু পর নার্স তোয়ালেতে মুড়ানো ওদের সদ্যজাত কন্যাকে নিয়ে আসে। শ্রাবণ তার মেয়েকে কোলে নিয়ে বেশ আপ্লুত। বাচ্চাটা তার বাবার কোল পেয়ে হাসছে। শ্রাবণ বলে,
“দেখো তোমার মতো হয়েছে।”

আর্শি বলে,
“চোখ দুটো তোমার মতো।”

“হুম।”

শ্রাবণ মেয়ের দিকে অপলক চেয়ে রয়। বাংলাদেশে মিসেস আশালতা ও মিসেস সন্ধ্যার কাছে হোয়াটসএপ গ্রুপ ক্রিয়েট করে ভিডিওকল করে। সবাই খুব খুশি। মিসেস সন্ধ্যা তার স্বামীকে বলে মসজিদে মিষ্টি বিতরণ করান। মিসেস আশালতাও। আরিয়া খুশি হয়েও মুখ ফুলিয়ে রেখেছে। তার বেবি আগে হওয়ার কথা ছিল, তারপর সে নিজের ছেলের সাথে আর্শির মেয়ের বিয়ে দিবে! কিন্তু এখন আর্শির মেয়ে আগে জন্ম নিয়ে নিয়েছে।

আরিয়া মুখ ফুলিয়ে বলে,
“এখন আমার ছেলের কী হবে বলোতো? বেচারার বউ তার আগে পৃথিবীতে চলে এলো!”

আর্শি হেসে বলে,
“তোর এই বাচ্চামো গেলো না! তোর ছেলে সুস্থ ভাবে আসুক। তারপর যদি বড়ো হয়ে তার যাকে পছন্দ হবে বিয়ে করবে।”

আরিয়া বলে,
“এখন তো আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে বেবির জে*ন্ডার বলে না। তবে পেটের গড়নে আমি বুঝে গেছি আমার ছেলে হবে। এখন ভাগ্যে যা আছে হবে।”

আর্শি ফের হাসলো। তার ঘুম পাচ্ছে। নার্স এসেও বলে গেছে আর্শিকে ঘুমাতে। বেবিকেও নিয়ে যাওয়া হয়।
(৩০ সপ্তাহে জন্ম নেওয়া বেবিকে প্রিম্যাচিওর বেবি বলে। তাদের চোখ না ফু*টলে মাতৃগর্ভের মতো পরিবেশে রাখা হয়। অনেক সময় বেবির চোখ ফু*টলেও জন্ডিস বা কোনো অসুখ হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে না।)

_______

সময় খুব জলদি পেরোয়। এইতো সেদিন আর্শির মেয়ে হলো। তার এক মাস পর আজ আরিয়ার ছেলে হলো। মিসেস আশালতা ও রিয়াজউদ্দীন দুই মেয়ের ঘরে নাতি-নাতনির মুখ দেখে মহা খুশি। আদিব ও কলি কানাডা গিয়েছে আর্শি ও শ্রাবণের মেয়ে ‘বারিশ’ কে দেখতে। তাছাড়া আদিব কানাডাতে জব এপ্লাই করে পেয়ো গেছে। তাতে শ্রাবণ বেশ হেল্পও করেছে।
আশিক তার ছেলেকে ভয়ে কোলে নিচ্ছে না। মিস্টার হাসান নাতি কোলে নিয়ে পুরো হসপিটালে মিষ্টি বিলিয়েছেন। রিয়াজউদ্দীন মেয়ের মাথার কাছে কিছুক্ষণ বসে থেকে চোখ মুছতে মুছতে উঠে গেছে। মিস্টার হাসান বলেন,
“আপনার বড়ো মেয়ের ঘরের নাতনিকে যদি আপনার ছোটো মেয়ের ঘরের নাতির পছন্দ না হয় তবে আমার ছেলের ঘরে মেয়ে হলে কিন্তু বিয়ে দিতে হবে!”

মিস্টার রিয়াজউদ্দীন হাসেন। ভবিষ্যতের কথা তিনিও বা কী বলবেন!
হ্যাঁ মুশফিকা তিন মাসের প্রেগন্যান্ট। মুশফিকা চেয়েছিল নাহিদের সন্তানের মা হতে। তাই নাহিদ শেষবার তার কাছে আসার সুযোগটা সে নিয়ে নিয়েছে। এখনও সে নাহিদের সুস্থ হয়ে ফিরে আসার আশা দেখে। যেখানে ডাক্তার বলেছে, নাহিদের সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার চান্স খুব কম। অবস্থার অবনতি হচ্ছে। মিসেস নেহার অবস্থারও কোনো পরিবর্তন নেই।

আর্শি এখন ইটালিতে আছে। দুইদিনের জন্য এসেছে। শুধু রিসার্চ বুক সাবমিট করবে। তারজন্য খুব সাহস করে মেয়েকে কলির কাছে রেখে এসেছে। মেয়ে আবার বাবা ভক্ত। সে তার বাবাকে দেখলে মা-কে যেন ভুলেই যায়! যদিও মেয়ের ব্রে*স্টমি*ল্ক ফিড করাতে সমস্যা হবে না। সে ব্রে*স্টমি*ল্ক পাম্প করে এয়ারটাইট প্যাকেটে ফ্রিজে রেখে এসেছে। (এটা নিয়ে অফে*নসিভ হবেন না। এখন বাহিরের দেশ গুলোতে এভাবে ব্রে*স্টমি*ল্ক সংরক্ষণ করে রাখা হয়।) কলি সেখানে থাকাতে বেবির দেখাশোনার দায়িত্ব কলির। ইটালিকে এসেই যে আর্শি তার ছোটোবোনের এই সুখবর শুনবে তা কল্পনাও করেনি। আরিয়ার ডেলিভারির ডেট ডাক্তার আরও দশদিন পর দিয়েছিল। কিন্তু আগেই হয়েছে। আর্শি আরিয়ার সাথে কথা বলার সময় আবারও একই কথা,

“এই আপু, আমার ছেলের বিয়ের কী হবে?”

আর্শি বুঝে না, তাে বোনের মাথা থেকে তার ছেলের বিয়ের ভূ*ত কেন নামছে না! আর্শি জবাবে বলে,
“মুশফিকার যদি মেয়ে হয়, তবে তোর ছেলের কাছে দুটো অপশন। যাকে পছন্দ হয় বিয়ে করবে। তাও তুই এতো চিন্তা করিস না। রেস্ট নে।”

“মুশফিকা আপুর যদি ছেলে হয়?”

“উফ! থাম তুই। আশিক কই?”

পাশ থেকে আশিক অসহায়ের মতো বলে,
“এইযে!”

“এই তোমার বউকে বুঝাও।”

“বুঝে না আপু! আমাকে ধ*মকে চুপ করিয়ে দেয়!”

এই কথা শুনে আর্শি হেসে ফেলে। সাথে আরিয়াও। আশিক বোকার মতো চেয়ে থাকে।

আর্শি নিজের কাজ শেষে ইটালিতে নিজের পড়ালেখার পাট চুকিয়ে ফেলেছে। সোহা বাংলাদেশে ফিরে গেছে সপ্তাহখানেক আগে। তাই আর্শির সাথে দেখা হয়নি। আজ আর্শি কানাডাতে ফিরবে তবে একা না। মোনা, লিসা, পিটারের মা-বাবা, ভাই ও দাদি, হ্যারির মা-বাবা ও বোন সবাই আজ আর্শির সাথে যাবে। কারণ পিটারের সাথে ইরিনার বিয়ে ও ক্যামেলিয়ার সাথে গ্রিণের বিয়ে হবে।

পরিশিষ্টঃ
অনাড়ম্বর ভাবেই একইদিনে চার্চে গ্রিণ-ক্যামেলিয়া ও পিটার-ইরিনার বিয়ে হয়। সবাই ওদের বিয়ে পরবর্তী রিচুয়াল উপভোগ করছে। এদিকে শ্রাবণ ও আর্শি মেয়েকে কোলে নিয়ে হাঁটছে। সামান্য রোদ উঠেছে। রাস্তার ধারে গাছগুলোতে ফুটে আছে গোলাপি, ল্যাভেন্ডার রঙের হরেক ফুল। মনোমুগ্ধকর আবহাওয়া। গাছের নিচেও ফুলের ছড়াছড়ি। শ্রাবণ মেয়েকে নিয়ে একটা বেঞ্চে বসলো। আর্শি দাঁড়িয়ে আছে। সে চোখ বন্ধ করে প্রশান্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,

“আজকের দিনটা খুব সুন্দর না?”

শ্রাবণ প্রত্যুত্তর করে,
“আমার কাছে তোমাদের সাথে কাটানো প্রতিটা দিন সুন্দর।”

আর্শি হেসে ফিরে তাকায়। অতঃপর শ্রাবণের পাশে বসে বাহু জড়িয়ে ধরে। বারিশ তার বাবার কোলে থেকেই হেসে উঠে।
দুঃখের পর সুখ বুঝি এতো মধুর ভাবে ধরা দেয়? যেমনটা রাতের ঝড়ের তাণ্ড*বের পর সূর্য স্নিগ্ধতার পরশ নিয়ে আসে।

সমাপ্ত
গল্পটা আর বাড়াচ্ছি না। কোনো ভুল-ত্রুটি থাকলে ক্ষমা করবেন। গল্পের নামের সাথে সম্পূর্ণ মিলেছে কী-না আপনারাই বলবেন। এখানে লিড জুটি একটা আবার একাধিকও। কারণ পার্শ্বচরিত্রই প্রধান চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে সহায়তা করে। আরিয়া ও আশিক এই জুটিটাও শ্রাবণ ও আর্শি জুটির মতোই গুরুত্বপূর্ণ। নাহিদকে অনেকে ভালো হয়ে গিয়েছে দেখতে চেয়েছিলেন। সবার জীবনে পূর্ণতা হাত ভরে আসে না।

এডিটঃ আমি ৩০ সপ্তাহে বেবি জন্ম নেওয়া নিয়ে বেশি কিছু লিখিনি। আর বেবি জন্মের পর একদম সুস্থ সেটাও উল্লেখ করিনি। মূলত কানাডাতে জমজ বাচ্চা নির্ধারিত ৪০ সপ্তাহের ১৮ সপ্তাহ আগে জন্ম নেওয়ার খবরটা দেখে আমি আর্শির তিন মাস কানাডাতে স্টে করতে পারবে মিলিয়ে লিখেছি।
৩০ সপ্তাহে জন্ম নেওয়া বেবিকে প্রিম্যাচিওর বেবি বলে। তাদের চোখ না ফু*টলে বা কোনো অর্গান পুরোপুরি ডেভলপ না হলে মাতৃগর্ভের মতো পরিবেশে রাখা হয়। অনেক সময় বেবির চোখ ফু*টলেও জন্ডিস বা কোনো অসুখ হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে না।
(তারপরও আমার ভুল হতেই পারে। তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।)

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ