শূন্যতায় পূর্ণতা পর্ব-০৭

0
577

#শূন্যতায়_পূর্ণতা
#হীর_এহতেশাম

||পর্ব-৭||


“-আমি ফারহিন কে বিয়ে করতে পারবো না মা! তোমার কথায় আমি রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে আজীবন একসাথে থাকার মত সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারছি না। আর আমি ফারহিন কে ভালোবাসি না। পারলে আমাকে ক্ষমা করো। আমি আসবো না আজ বিয়েতে। খালামনি, বাবাইকে আমার তরফ থেকে সরি বলে দিও।

ফারহিন ধীর গতিতে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে আছে। চোখ থেকে টুপ করে গড়িয়ে পড়লো এক ফোটা পানি। ফারহিন জানতো তীব্র কখনো ফারহিনের ভালোবাসা বুঝবেনা। যদি এমনই হওয়ার ছিলো বিয়ে নামক এই নাটকের কি প্রয়োজন ছিলো। মাঝখানে এত গুলো দিন কেন তীব্র ফারহিনকে এটা বোঝানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলো যে, যে ফারহিনকে ভালোবাসে। ফারহিনের চোখ নোনাপানিতে টইটম্বুর হয়ে আছে। পলক ফেলতেই চোখের পানি গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে। ভরা মজলিসে, এত মানুষের সামনে ফারহিন আবার অপমানিত হলো তীব্রের কাছে। এবার শুধু ফারহিন না ফারহিনের পুরো পরিবারই হেনস্তা শিকার হলো। তীব্র বিয়েতে আসতে লেট করছিলো বলে রফিক চৌধুরী বার বার ফোন করছিলো। তীব্র ফোনের রেসপন্স করেনি। হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস নোট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিলো সে আসবেনা। সে বিয়ে করবেনা, ফারহিনকে তার পছন্দ না। নিজের ছেলের উপর প্রচন্ড রাগ হলো রাশেদার। রফিক সাহেব লজ্জায় মাথা হাত দিয়ে বসে পড়লো৷ দিদার হাসান রাগে গজগজ করতে বলল –
“-এসব কি ছেলে মানুষী আপা? তীব্র এসব কি বলছে?
“-আমি বুঝতে পারছিনা। ও তো ঠিকই ছিলো..
“-এক্ষুনি ওকে ফোন করো, আমি এমন ঠাট্টা একটুও পছন্দ করি না।
দিদার হাসানের কথায় রফিক সাহেব আবারো ফোন করলো। তীব্রের ফোন বন্ধ আসছে। সালমা ফারহিনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। প্রাণহীন এর মত শক্ত হয়ে আছে ফারহিন। তার মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। দিদার হাসান এগিয়ে গিয়ে রফিক সাহেবের কলার ধরে ফেলল, বলল-
“-নিজের ছেলের মতামত না নিয়ে আমার মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে কে বলেছিলো? আমি আমার মেয়ের বেইজ্জতি মেনে নেব না। আত্মীয় বলে আমি তোমাদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছিলাম এখন ভরা মজলিসে আমার মেয়েকে এভাবে হেনস্তা করার সাহস কি করে হলো?
কাদের শিকদার পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে গেল। দিদার হাসানের কাছ থেকে রফিক চৌধুরী কে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
“-এখন এসব করে লোক হাসাবি নাকি? পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে আমাদের।
“-কি সামাল দেব আমি? আমার মেয়ে এখানে অপেক্ষা করছে আর ওই বদমাইশের বাচ্চা কি না নিজের মতামত এখন জানাতে এসেছে? একটা মাস ওর হাতে সময় ছিলো ও কেন তখন জানালো না? আমি ওকে মেরেই ফেলবো। কোনো সম্পর্কের গন্ডি আমি আর মানবো না।
“-দিদার শান্ত হ! কি করছিস? দেখ আমি বুঝতে পারছি তোর অবস্থা কিন্তু ফারহিনের দিকে তাকা। মেয়েটা শকে আছে তুইও এভাবে পাগলামী করলে হবেনা।
“-আমি এই মুহুর্তে কি করবো? আমি নিজেকে এত অসহায় কখনো পাইনি যতটা আজ পেয়েছি।
“-দিদার! তুই যদি রাজি থাকিস আমি ফারহিনকে আরশের জন্য নিয়ে যেতে পারি।
দিদার হাসান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।
“-দয়া দেখাচ্ছিস? লাগবেনা তোর দয়া।
“-তুই ভুল বুঝছিস। ফারহিনকে আমি অনেক আগে থেকেই পছন্দ করতাম আরশের জন্য, কিন্তু আমি বলার আগেই তুই ওর বিয়ে অন্যত্র ঠিক করে দিয়েছিলি বলে বলা হয়নি।
ভ্রু কুঁচকে তাকালো দিদার হাসান। কাদের শিকদার ইশারায় সম্মতি প্রদান করলো৷
“-কিন্তু আরশ?
“-আরশের কথা চিন্তা করিস না! আমি তোকে পরে সব বলবো আপাতত পরিস্থিতি সামাল দে ভাই।

আরশের গাড়ি এসে গেইটে থামতেই কাদের শিকদার তাকালো। আরশ গাড়ি থেকে নেমে হাতে লাল গোলাপের ফুলের তোড়া নিলো। কালো রঙের স্যুট পরেছে সে। মার্জিত পোশাকে বেশ মানিয়েছে। ফুলের তোড়া হাতে বাবার সামনে এসে দাঁড়ালো।
“-হাই বাবা!
কাদের শিকদার দিদার হাসানের দিকে তাকালো। দিদার হাসান অন্য দিকে তাকালো। চরম লজ্জার মুখে পরেছে সে। কাদের শিকদার বুঝতে পারলো, তিনি কঠিন কন্ঠে সরাসরি ভাবেই প্রশ্ন করলেন-
“-ফারহিন কে বিয়ে করবে?
আরশ থতমত খেল।
“-এসব কি ধরনের মজা করছো বাবা?
“-আমি যা জিজ্ঞেস করেছি তার হ্যাঁ বা না তে উত্তর দাও। মনে রেখো, আজ তোমার উত্তরের উপর আমার আর তোমার আঙ্কেলের মান সম্মান নির্ভর করছে।
আরশ দিদার হাসানের দিকে তাকালো। তারপর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল-
“-বাবা!
“-আরশ..! হ্যাঁ বা না..
আরশ ফারহিনের দিকে তাকালো। ফারহিনের মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে আরশ বলল-
“-হ্যাঁ করবো।

★সমস্ত ধর্মীয় নিয়মকানুন মেনে বিয়ে সম্পন্ন হলো আরশ আর ফারহিনের। কবুল বলার সময় ফারহিন আরশের দিকে তাকিয়ে ছিলো। আরশের চোখাচোখি হওয়ার পরও ফারহিন চোখ সরালো না। চোখ ভর্তি পানি, লাল হয়ে যাওয়া নাকের ডগা। আরশকে বার বার বিব্রত করছিলো। এই চেহারায় এই রুপ দেখতে সে অভ্যস্ত নয়। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বিদায় হওয়ার সময় ও চুপ ছিলো ফারহিন। তীব্রের করা আঘাত, অপমান ফারহিনকে সব ভুলিয়ে দিয়েছিলো। ফারহিন শক্ত প্রাণহীন পাথরের মত ঠাঁই দাঁড়িয়ে ছিলো।
আরশের গাড়ি বাড়ির সামনে থামলো। আরশ গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির দরজা খুলে দিলো৷ ফারহিন তখনও অন্যমনস্ক হয়ে বসে ছিলো। আরশ বুঝতে পেরে ডাকলো-
“-ফারহিন! বাড়ি এসে গেছি..
আরশের ডাকে ফারহিনের ঘোর কাটলো। আরশের দিকে তাকাতেই দেখলো আরশ হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ফারহিন হাত দিলো না। নিজে নিজে নামার চেষ্টা চালালো। কিন্তু ভারী লেহেঙ্গায় ফারহিন পেরে উঠলো না। লেহেঙ্গা পায়ের সাথে আটকে পড়ে যেতে নিলেই আরশ ধরে নিলো। দুজনে মুখোমুখি হলো। আরশ বলল-
“-এই কারণে বলেছিলাম আমার কথা শোনো। আমার কথা শুনলে এমন হতো না।
ফারহিন নেমে দাঁড়ালো। আরশের হাত থেকে হাত সরিয়ে নিলো।
আরশের বাড়ির দরজায় গিয়ে দাঁড়াতেই আরশ ফারহিনের দিকে তাকালো। ফারহিনের হাত ধরে নিলো। ফারহিন তাকাতেই হালকা হেসে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো। ফারহিন কে ড্রয়িংরুমে বসালো। কাদের শিকদার এসে বসলো।
“-তোমার কোনো অসুবিধে হলে আমাকে বলবে। আমি তোমার বাবার মতই। আর একদম লজ্জা পাবেনা কিছুতে। তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও। ওখানে তো কিছু খাওয়া হয়নি, আমি রুমে খাবার পাঠিয়ে দেব কারো হাতে।
“-লাগবে না। আমার খিদে নেই।
“-ফারহিন! বিয়েটা যেভাবেই হোক হয়েছে। আমি তোমার জন্য বেশি কিছু করতে পারিনি, আমার বাড়িতে কোনো মেয়ে মানুষ ও নেই, তবে আমি তোমার যত্নের ক্রুটি রাখবোনা। তুমি নিশ্চিন্তে থাকো। এখন যাও মা ফ্রেশ হয়ে নাও। আর কিছু মনে ধরে রেখো না। এটা তোমারই বাড়ি। আমরা কাল সকালে কথা বলবো, আজ তো অনেক রাত হয়ে গেছে তোমার রেস্টের প্রয়োজন।
“-আচ্ছা।
“-আরশ! ওকে নিয়ে যাও।
আরশের দিকে তাকিয়ে বলল কাদের শিকদার। কথা শেষ করে কাদের শিকদার চলে গেলেন। আরশ হাত বাড়িয়ে দিলো। ফারহিন সেটা এড়িয়ে উঠে দাঁড়াতেই আরশ মুখোমুখি দাঁড়ালো। বলল-
“-এখন থেকে এই হাত ধরেই চলতে হবে। তাই অভ্যাস করো আস্তে আস্তে। কাম অন।
আরশ হাত আবারও বাড়িয়ে দিলো। ফারহিন হাতের দিকে তাকিয়ে আরশের দিকে তাকালো। তারপর কঠিন কন্ঠে বলল-
“-কারো উপর ভরসা করতে নেই। সুযোগ পেলে ধোকা সবাই দেয়।
“-আমার উপর করো, বিশ্বাস রাখো। পুরো দুনিয়া বেইমানি করলেও আরশ শিকদার তোমার সাথে বেইমানি করবেনা।
তোমাকে আরশ কখনো ধোকা দেবেনা।
“-সান্ত্বনা দিচ্ছেন?
“-আমার সান্ত্বনা দেওয়ার অভ্যাস নেই।
“-তাহলে..?
“-আস্তে আস্তে তুমি সব বুঝে যাবে। এবার রুমে যাওয়া যাক?
ফারহিন আরশকে এড়িয়ে সামনে পা বাড়ালো। আরশ পিছু পিছু গেল। দোতালায় উঠে ফারহিন দাঁড়ালো। কোনটা আরশের রুম তা ফারহিন তো চেনেই না। ফারহিন কে দাঁড়িয়ে যেতে দেখে আরশ হাসলো, বলল-
“-আগেই বলেছিলাম শুনলে না।
আরশ এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। ফারহিন রুমের দরজায় পা বাড়াতেই আরশ থামিয়ে দিলো। বলল-
“-কোথায় যাচ্ছো?
“-রুমে..
“-ইউ নো! আমার ইচ্ছে ছিলো আমার বউ এই রুমে আমার হাত ধরেই আসবে। নাও ধরো..
আরশ আবারও হাত বাড়িয়ে দিলো। ফারহিন মুখ ফিরিয়ে নিতেই আরিশ খপ করে ফারহিনের হাত ধরলো। ফারহিন আচমকা এমন হওয়ায় চমকালো। আরশ হাত ধরে রুমে প্রবেশ করালো। বলল-
“-ওখানে কাবার্ড আছে, বাথরোব, টাওয়েল সব পাবে। ফ্রেশ হয়ে যাও।
“-আমার জামা কাপড়?
“-নিয়ে আসোনি?
“-না। আমিতো..
“-বুঝতে পেরেছি। ভালো করেছো নিয়ে আসোনি। এখানে রাখা আছে যেটা ইচ্ছে পরে নিও। আর হ্যাঁ রঙ নিয়ে কথা বলবেনা। সব আমার পছন্দের রঙেই কেনা।
কাবার্ডের দিকে ইশারা করে বলল আরশ। ফারহিন ভ্রু কুঁচকালো। বিস্ময়ের চরম শিখরে পৌঁছে বলল-
“-আপনার মানে? কার জন্য কিনেছেন।
“-তোমার জন্য। বলেই আরশ ওয়াশরুমের দিকে হাটা দিলো। ফারহিন হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
“-আমার জন্য মানে?
ফারহিন কাবার্ড খুলতেই দেখলো কাবার্ড ভর্তি শাড়ি। ফারহিনের মুখ আপনা আপনি হা হয়ে গেল। এত শাড়ি? কালো, অ্যাশ, খয়েরী, ব্লু। এই চারটা রঙের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আরশ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো কাবার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ফারহিন। মাথা মুছতে মুছতে বলল-
“-দেখা শেষ হলে যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।
“- এত শাড়ি..
“-তোমার জন্য বললাম না? যাও..
“-আপনি একটু বাহিরে যাবেন?
“-কেন? ভ্রু কুঁচকালো আরশ।
“-ওয়াশরুমে শাড়ি পরা যাবেনা।
“-ওখানে নিচের তাকে কিছু সালোয়ার স্যুট আছে রাতে পরার জন্য। তুমি রাতেও শাড়ি পরে থাকবে নাকি? যাও ওখান থেকে পরো। আশাকরি ফিট হবে।
“-আপনি তারপরও বাহিরে যান। আমি কমফোর্ট ফিল করছিনা।
“-অভ্যাস করে নাও। আজ যাচ্ছি প্রথম ও শেষ বারের মত।

বলেই আরশ বেরিয়ে গেল। আরশের আচরণ, কথাবার্তা সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে ফারহিনের। হঠাৎ বিয়ে হওয়ায় মাথার প্রেশার পড়েনি তো?

★সিগারেট মুখের কাছে এনে টান দিলো আরশ। সিগারের ছাই ঝেড়ে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। হাসতে হাসতে ছাদে থাকা চেয়ারে বসে পড়লো। সিগারেটের দিকে তাকিয়ে বলল-
“-জীবন কত অদ্ভুত! মানুষ নিজের জন্য কতকিছু করে। আমিও তাই করেছি। এক জীবনের একটা চাওয়া যদি পূরণ না হয় তাহলে কি লাভ জীবন রেখে? আমি জানতাম ফারহিন তুমি আমারই হবে। মাঝখানে পড়ে তোমাকে একটু কষ্ট দিতে হলো, কিন্তু কি করতাম বলো, তোমার সাথে তীব্রের বিয়েটা আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। যখন থেকে জানলাম তীব্রের সাথে তোমার বিয়ে হবে তখন থেকেই আমার মেজাজ আগুনের লাভার মত বুদবুদ করছিলো। আমি এতটা মহান নই যে নিজের বন্ধুত্বের জন্য ভালোবাসা কোরবানি দিবো। আমি সেসব মানুষের কাতারে পড়িই না যারা অন্যের কথা ভাবে। আমি প্রচুর স্বার্থপর। তোমার জন্য, তোমার ক্ষেত্রে আমি কোনো কম্প্রমাইজ করবো না। তাই নিজের এই অস্থির ব্রেইন টাকে সামান্য কাজে লাগালাম। তোমার জন্য আমি তীব্রের মত বন্ধু কেন হাজারটা মানুষ কে ত্যাগ দিতে পারি। আমি তীব্রের মত এত মহান মোটেও নই ফারহিন, যে বন্ধুর জন্য নিজের ভালোবাসা ত্যাগ দেব। এমন ভালোবেসে কি লাভ যে ভালোবাসা ত্যাগ দিতে দুবার ভাবে না মানুষ? ওটাকে আমি ভালোবাসা মনেই করিনা। ভালোবাসা হতে হবে শ্বাসরুদ্ধকর, ভালোবাসা হওয়া চাই বিনাস্বার্থ, সব সম্পর্কের উর্ধে। তুমি আমার সব কিছুর উর্ধে ফারহিন। তোমার আগে আমার জীবনে কেউ না, আমি নিজেও না। অবশেষে, তুমি আমার। তোমার উপর শুধু আমার অধিকার, আমার হক, আমার সব।

বলেই হাসলো আরশ। সিগারেট শেষ করে মাথা এলিয়ে দিলো। ঘনকালো আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল এক দৃষ্টিতে।

চলমান….

||ভুল ক্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে