Monday, October 6, 2025







শীতল অনুভবে তুমি পর্ব-০৯

#শীতল অনুভবে তুমি
#লেখনীতে মারিয়া
#পর্ব ৯

কুহুদের ক্যাম্পাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে আহিল।উদ্দেশ্য কুহুকে দেখার।কাল থেকেই মনে শান্তি পাচ্ছে না।কুহুকে দেখার জন্য মন টা ছটফট করছে।অনেক্ষণ যাবত দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কুহুর দেখা নেই।এদিক দিয়েই আদ্র,রাহিন,ইহান,আবিদ আর ফারাবী যাচ্ছিল।আহিলকে দেখে আদ্র ভ্রু কুঁচকে তাকায়।এদিকে ইহানদের খেয়াল নেই।তারা নিজেদের মধ্যে হাসতে ব্যস্ত।সে দাঁড়িয়ে আহিলের মনোভাব বুঝার চেষ্টা করে।আদ্রকে দাঁড়িয়ে যেতে দেখে ইহানও দাঁড়িয়ে যায়।

” কি হলো?দাঁড়িয়ে গেলি কেন?” ইহান আদ্রর কাঁধে হাত দিয়ে বলল।

আদ্র আহিলকে ইশারা করে বলল,

” এ এখানে কি করছে?”

” আরে!ও তো কালই এলো।আজ আবার কেন এসেছে।তোকে বলেছে নাকি?”

” নাহ্ তো!বলে নি।”

দুজন এগিয়ে গেল।আহিলের পানে।

” আহিল!তুই এখানে কি করছিস?”

আহিল চমকে পেছন ফিরে তাকায়।আদ্রকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠে।আমতা আমতা করে বলল,

” ওহ্….আসলে….”

” কি?” আদ্র বলল।

” এসেছিলাম…আরকি….”

” তোকে কেন সেটা জিজ্ঞাস করেছি।”

আদ্র ভালোই বুঝতে পারল আহিল কুহুর জন্যই এসেছে।আহিল এবার গলা নামিয়ে বলল,

” ইয়ার কাল যে মেয়েটার সাথে দেখা হলো তার জন্যই এসেছি।”

” কেন?ওই মেয়েটার সাথে তোমার কি?” ইহান বলল।

” ওকে খুব ভালো লাগে আমার।তাই!”

” দেখেছো এখনো কয়দিন হচ্ছে যে ভালো লাগবে?” ইহান ভ্রু কুঁচকে বলল।

” আরে ভাই তুমি বুঝবে না।”

” আহিল!মেসে চলে যা।” আদ্র বলল।

” কিন্তু…”

” আহিল যা!” কড়া গলায় বলে আদ্র।

আহিল বিরক্ত হয়ে কপাল কিঞ্চিত কুঁচকিয়ে চলে গেল।কিন্তু সে হোস্টেলে যায় না।একটা কোণে দাঁড়িয়ে থাকে।আদ্র সেটা লক্ষ করল কিন্তু কিছু বলেনি।আর এদিকে কুহু,ইকরা,নাবিলা আর বুশরা বেরিয়ে এলো।ইহান তো ইকরাকে দেখেই হাত নাঁড়িয়ে বলল,

” হেই পিচ্চি!”

ইকরা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে।দাঁত কটমট করে বলল,

” বুইড়া!”

তাদের কাছে আসতেই কুহু বলল,

” কি ব্যাপার?আপনারা এখানে?”

” ওই..এমনি হাটছিলাম আরকি!” আদ্র বলল।

” আপনি একা হাটেন তবু এই বুইড়ার সাথে হাটবেন না।”

ইহান চোখ বড় বড় করে বলল,

” আমার মতো সুদর্শন যুবক কে তুমি বুইড়া বলছো?”

” আর আমার মতো অনার্স পড়ুয়া মেয়েকে আপনি পিচ্চি বলছেন?”

” পিচ্চিকে তো পিচ্চিই বলব।”

” স্টপ ইট!বুইড়া!”

” পিচ্চি!”

” আহ্ চুপ কর তোরা!” আদ্র বিরক্ত হয়ে বলল।তারপর কুহুদের উদ্দেশ্য করে বলল,

” ঠিক আছে তোমরা যাও।কাল দেখা হবে।”

” আচ্ছা!”

বলেই কুহুরা যেতে নিলে আদ্র বলে উঠে,

” আর শুনো!”

তারা থেমে যায়।আদ্র আবার বলল,

” কাল সায়েন্স গ্রুপের একটা পার্টি আছে।মেডিক্যাল স্টুডেন্টদের জন্য।তোমরা এসো কিন্তু।”

কুহু ভ্রু কুঁচকে বলে,

” কার পক্ষ থেকে?”

” আমার আর আদ্রর!” আদ্রর কাঁধে হাত দিয়ে বলল ইহান।

” ওয়াও!কয়জনকে ইনভাইট করা হয়েছে?”

” এই তো ২০-৩০ জনকে।”

” আর তোমার মতো একটা পিচ্চিকে।” ইহান বলল।

” হোয়াট দ্যা…”

” স্টপ স্টপ আবার শুরু করিস না।” কুহু ইকরার মুখ চেঁপে বলল।

” ওকে গুড বায়!ইদ্রানদের বলে দিও।”

” ওকে ভাইয়া!” কুহু বলল।

” ওকে বায়!”

” বায়!”

বলেই কুহু,ইকরা,নাবিলা আর বুশরা বেরিয়ে যেতে থাকে।আর আদ্র আর ইহান একটা সাইডে গিয়ে বসল।আর আহিলকে লক্ষ করল।এদিকে কুহুরা বের হতেই আহিল কুহুদের কাছে এলো।কুহু প্রথমে খেয়াল করেনি।সে ইকরাদের সাথে কথা বলছিল।তখনই আহিল পথ আগলে দাঁড়ায়।

” হেই বিউটি!”

কুহু আহিলের দিকে তাকাল।বিরক্তিতে কপাল কুঁচকে ফেলে সে।

” আমাকে বলছেন?”

” হুম!কেমন আছো?”

” ভালো!”

” তা আমি কেমন আছি জিজ্ঞাস করবে না?”

” আপনি তো ভালোই আছেন।আপনার তো আর হাত পা ভাঙা নেই যে জিজ্ঞাস করব কেমন আছেন।দেখতেই তো পাচ্ছি আপনি সুস্থই আছেন।”

দূর থেকে আদ্র আর ইহান সব শুনতে পাচ্ছিল।তারা কুহুর এমন জবাবে দূর থেকে হেসে কুটিকুটি হয়ে গেল।ইহান হাসতে হাসতে বলল,

” ওহ্ মাই গশ!কি ইয়ার!কুহু তো…আর কি বলব?জাস্ট ওয়াও!”

” ওহ্ লর্ড!এত কিছু?” আহিল হেসে বলল।

” আপনার প্রলাপ শেষ হয়েছে?”

” ওহ্ না না।এখন তো সবে শুরু।”

” কি বলবেন বলুন।”

” আরে এত তাড়া কেন?ধীরে ধীরে সব হবে।”

” সব হবে মানে?” ভ্রু কুঁচকে বলে কুহু।

” কুল ডাউন বেবি!”

” হেই ইউ!ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট মিক্সার গিরগিটি!সমস্যা টা কি হ্যাঁ?কখন থেকে পেঁচার মতো প্যাকপ্যাক করে যাচ্ছেন?” বুশরা রেগে বলল।

” এন্ড হোয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট টু মিন বাই বেবি?ওকে দেখে কি বেবি মনে হয় আপনার?” ইকরা বলল।

” তোমরা কারা আবার?আমি তো কুহুর সাথে কথা বলছি।এতে তোমরা কেন মাথা ঢুকাচ্ছো?”

” আগে আপনি বলুন আপনি কোন উপগ্রহের এলিয়েন?” ইকরা বলল।

” হোয়াট!?”

আর কিছু বলার আগেই আদ্র আর ইহান এসে পড়ল।আদ্রকে দেখে আহিল চমকে যায়।আদ্র চোখ রাঙিয়ে বলল,

” বলেছিলাম কি শুনিস নি?তুই এখানে কি করছিস?”

” কি আর করবে এখানে এসে বকবক করবে।” নাবিলা বলল।

” যা আহিল!”

আহিল কিছু না বলে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে চলে যায়।আদ্র বলল,

” শুনো কুহু!ওর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবে।ও গায়ে পড়া স্বভাবের ছেলে।”

” হুম তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।লুজ ক্যারেক্টার।” কুহু বলল।

” হুম!”
______________

” দেখ তো কোনটা পড়লে ভালো হবে?”

কুহু কয়েকটা কাপড় বিছানার উপর রেখে তাসনিকে উদ্দেশ্য করে বলল।তাসনি বেঁছে বেঁছে বড়ই পাতা রঙ,গোলাপি রঙ আর সাদা রঙের মিশ্রণের একটা থ্রি-পিস নিয়ে বলল,

” এটাতে তোমাকে একদম কিউট দেখাবে।”

কুহু কাপড়টা হাতে নিল।মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,

” আমারও পছন্দ হয়েছে।”

” তো কই যাচ্ছো?” তাসনি প্রশ্ন করল।

” সায়েন্স গ্রুপের একটা পার্টি আছে।ভাদ্রদের পক্ষ থেকে।”

অগোচরে আদ্রকে এই নামেই ডাকে কুহু।
তাসনি বলল,

” এক্টর ভাইয়ারা পার্টি দিয়েছে?”

” হুম..!”

” আচ্ছা তুমি নাকি আজকাল এক্টর ভাইয়ার সাথে ফ্রি হয়ে গেছো?”

কুহু ভ্রু কুঁচকে বলে,

” তোকে কে বলল?”

” ইকরা আপু বলেছে!” হেসে বলল তাসনি।

” হুম আজকাল ঝগড়া করার কারণই খুজে পাই না।”

কাপড় টা ইস্ত্রি করতে করতে বলল।

” যাক বাবা!তোমরা তো সারাক্ষণ ঝগড়া ঝগড়া।এখন একটু রোমান্টিক হয়েছো!”

কুহু ইস্ত্রি করা বাদ দিয়ে তাসনির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাল।তাসনি হেসে আমতা আমতা করে বলল,

” আহ্…..মানে….তোমরা সবসময় ঝগড়া করো..এখন একটু কমেছে এটাই বলতে চাইছি।হিহি!”

কুহু হেসে নিজের কাজে মন দিল।তারপর ইস্ত্রি করা শেষ হতেই তাসনি কথা বলে বেরিয়ে যেতে নিলেই কুহু পেছন থেকে বলল,

” তুই চাইলে যেতে পারিস।”

তাসনি যেন এটারই অপেক্ষা করছিল।পেছন ফিরে উৎফুল্ল হয়ে বলল,

” সত্যি?আমাকে নিবে?”

” চাইলে আয়!ওখানে সব মেডিক্যাল স্টুডেন্ট রা আসবে।মানে সিনিয়রদের মধ্যে ইশানও আসবে।তুই তো কথার মাধ্যমেই সবাইকে ফাঁসিয়ে দিতে পারিস।”

” উফ!থ্যাংক ইউ আপু।লাভ ইউ!”

বলেই নিজের রুমের দিকে দৌড়ে গেল।তারপর কিছুক্ষণের মাঝেই রোদেলা আহমেদ কে মানিয়ে রেডি হয়ে চলে এলো।এখন সন্ধ্যা ৬ টা।তাদের সন্ধ্যার আগেই পৌছে যেতে বলেছিল।

” হ্যালো ইকরা!তুই রেডি?”

” হ্যাঁ হ্যাঁ একটু পরেই বের হচ্ছি।”

” আরে কুটনি এখন বের হ!”

” আচ্ছা আচ্ছা!”

কুহু রেডি হয়ে তাসনিকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল।গায়ে সেই বড়ই পাতা রঙ,গোলাপি রঙ আর সাদা রঙের মিশ্রণের থ্রি-পিস।খোলা চুল।মুখে কোন মেক-আপ নেই।কুহুকে এতেই অপরুপ লাগছে।
ইকরার বাসা কুহুর বাসা থেকে খুব একটা দূরে না।১০ মিনিটের দুরত্ব।আর ইকরার বাসার সামনে দিয়েই যাবে।পার্টি হবে একটা বাড়িতে।ভাড়া করেছিল আদ্ররা।কুহু ইকরার বাসার সামনে এসে তাকে ফোন করল।ইকরা বেরিয়ে এলো।

” কি?এতক্ষণ কি?” কুহু চোখ পাকিয়ে বলল।

” আরে সরি!চল এবার।আরে তাসনি!তুমিও যাচ্ছো?”

তাসনি হেসে বলল,

” হুম আপু!”

” সেফটির জন্য নিয়ে যাচ্ছি।কথায় যে পাঁকা,যে কাউকেই মুহুর্তে ফাটিয়ে দিতে পারবে।কেউ বিরক্ত করলে তাসনিকে দিয়ে একশন নিব।”

” হুম সাইন্টিস্ট এর সাথে সাথে পাকনিও।”
_____________

বিলাশবহুল সেই বাড়িতে প্রবেশ করল কুহু,ইকরা আর তাসনি।আগে থেকেই অনেকে ছিল।সবাইই কুহুর ভার্সিটির স্টুডেন্ট।ভেতরে ঢুকতেই দেখা হলো আদ্রর সাথে।আদ্র এগিয়ে এসে হাসিমুখে বলল,

” আরে তোমরা এসে গেছো?এত দেরিতে যে?”

” আসলে রেডি হতে দেরি হয়ে গেছে।” ইকরা বলল।

” ওহ্!হুম..!তোমাদের বাকিদের চেয়েও ভালো লাগছে।”

কুহু আর ইকরা হাসল।এর মাঝে আদ্রর নজর পড়ল তাসনির দিকে।

” আরে তাসনি!ওয়াও!বেস্ট কিপার আমাদের।হাহা!”

” যাহ্ ভাইয়া কি যে বলেন না।আমি বেস্ট কিপার হতে যাবো কেন?” তাসনি হেসে বলল।

” তা নয়তো কি?ওইদিন কি সুন্দর খেলেছো।” আদ্র বলল।

” হিহি!” তাসনি হাসে।

” চলো খাওয়া দাওয়া করে নাও।”

ইকরা,কুহু আর তাসনি খাওয়া দাওয়া করল।তারপর আদ্রের বলা একটা রুমে গেল।সেখানে সবাইই বসে ছিল।কুহুদের দেখে নিশি,অহনা,ফারাবী,রাহিন,ইরা হাত উঠিয়ে বলল,

” হাই!”

” হ্যালো!”

আদ্র সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,

” ফ্রেন্ডস!এ হলো তাসনি।তোরা তো চিনিসই!”

” ওয়াও সেরা একটা খেলোয়াড়!” ফারাবী বলল।

” সবাই আমায় খেলোয়াড় খেলোয়াড় করা বন্ধ করুন তো।” তাসনি বলল।

” শুনলাম তুমি নাকি খুব মেধাবী স্টুডেন্ট।আর পড়াকু?” ইরা বলল।

” ধুর এমন তো সবাইই হয়।” তাসনি হেসে বলল।

” উহু!ভুল।তোমার ব্যাপারে আমরা সবাই শুনেছি।গ্রেট!এমন স্টুডেন্ট বিরল।” অহনা বলল।

সবাই আড্ডা জুড়ে দিল।কিন্তু ইকরার দুই আঁখি শুধু একজনকেই খুজে চলেছে।ইহান!কেন যেন শূন্যতা অনুভব করছে এতজনের মাঝে তাকে ছাড়া।শেষে আর না পেরে বলেই দিল,

” কি ব্যাপার আদ্র ভাইয়া!বুইড়া টা কোথায়?”

তার এমন কথাতে সবাই না হেসে পারল না।আদ্র বলল,

” বুইড়া বুড়ির সাথে কথা বলতে গেছে।”

কিন্তু কথাটা শুনেই ইকরার মুখে আঁধার নেমে এলো।বুড়ি কি তার গার্লফ্রেন্ড কে বলছে?তা নজর এড়ায় নি সবার।তারা বুঝতে পারল ইকরার অবস্থা।মুখ টিপে হাসল সবাই।
নিজেদের মাঝে সবাই কথা বলছে।ইকরা ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য উঠল।তারপর ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে রুমে ঢুকতেই বাড়ির বারান্দার দিকে নজর পড়ল।খুব সুন্দর জায়গাটা।তাই লোভ সামলাতে না পেরে সেদিকে চলে গেল।বাহিরের সব’ই দেখা যাচ্ছে এই বারান্দা দিয়ে।ইকরা দাঁড়িয়ে অনুভব করতে থাকে স্নিগ্ধ বাতাস গুলো।তখন পাশেই কারো উপস্থিতি টের পায় সে।পাশ ফিরে দেখে ইহান তার পাশে দাঁড়িয়েছে।কানে ফোন।তার মানে তার বুড়ির সাথে কথা বলছে।

” হুম কাল’ই!তুই থাকবি?”
……….

” আরে না।আম্মুকে বলিস বিরিয়ানি রাঁধতে।”
……..

” হাহা!ওকে!হুম..!বায়।লাভ ইউ!”

বলেই ফোন কট করে কেটে দিল।এদিকে ইকরা ভাবতে থাকে,গার্লফ্রেন্ড কে তুই করে।ভাবতেই হাসি পাচ্ছে।

” কি পিচ্চি?এখানে কি করছো?”

” পিচ্চামি করছি দেখছেন না?”

” পিচ্চামি?এটা আবার কি?”

” বাচ্চাদের বাচ্চামো হলে পিচ্চিদের পিচ্চামিই তো হবে তাই না?”

” বাপরে!হুম..!খাওয়া দাওয়া হয়েছে?”

” হুম আপনার?”

” হুম…!”

আর কিছু বলার আগেই তাদের ডাক পড়ল।
____________

” এখন আমাদের মাঝে গান নিয়ে আসছে……’মৃদুলা’!”

গানের অনুষ্টান শুরু হলো।সবাই গানের তালে নাঁচছে আর গান গাইছে।নাবিলা,বুশরা,অহনা,নিশি আর ইরাও নাঁচছে।ইতোমধ্যে লাজ লজ্জা ফেলে ইকরাও শুরু করে দিয়েছে নাচানাচি।বাকি রইল ফারাবী,রাহিন,ইহান,আদ্র,তাসনি আর কুহু।তারপর গান গাওয়ার জন্য উঠল ইহান।তার গলাও আদ্রর মতোই।

~♪ চুপচাপ বসে তুমি,
মেঘের আড়ালে,
দূতেরা,তোমায় নিয়ে,
গান লিখে যাবে।
তোমার পথ চেয়ে,
সারাটা জীবন
আমার দিন রাত আজ,
হয়েছে পাগল।
এই মন,কিছু বুঝেনা,
জীবন,তোমাকে ছাড়া।
ঝরিয়ে দাও,,,অসীম অগোচরে।
ঝরিয়ে দাও,বৃষ্টির সুর ধরে।
ঝরিয়ে দাও,,,,,,
তোমার শীতল প্রেমে। ♪~♥

শুরু হলো করতালি।ইকরা মনে মনে ভাবল,গানের গলা টা তো খুব মিষ্টি।হঠাৎ ইকরা দেখল ইহান তার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ মেরেছে।যা দেখে কপাল কুঁচকে তাকিয়ে রইল ইহানের পানে।ইহান স্পিকার রেখে নিচে নেমে এলো।এসে ইকরার সামনে দাঁড়িয়ে তার চোখের সামনে হাত নাড়িয়ে বলল,

” কি পিচ্চি?কি দেখছো এভাবে?ভয় লাগে তো।”

ইকরা মুখ ঘুরিয়ে চলে গেল।ইহান হেসে ফেলল।তারপর আদ্রকে বলল,

” কিরে ভাই!তুই গাবি না?”

” আরে নাহ্!”

কুহু বলল,

” গান না!আপনার গানের গলা খুব ভালো।”

তাসনি বলে উঠল,

” হুম এক্টর ভাইয়া!আপুর থেকে শুনেছি আপনি গান গাইতে পারেন খুব ভালো।প্লিজ আজকে আমার জন্য গান।”

আদ্র তাদের কথা রাখতে গিয়ে স্টেজে উঠল।সুমিষ্ট মোহনীয় কণ্ঠস্বরে চারদিক টা ভরে গেল।

~♪ দীর্ঘশ্বাস তোমার রুহ্ম দেয়াল ছুয়ে
বিবর্ণ রাত্রি কাটে বিমূর্ত সময়,
প্রার্থনা তোমার হারিয়ে যায় অন্ধকারে
স্তব্ধ এই বদ্ধঘরে অস্পষ্ট স্বরে,
নিঃসঙ্গ একা তুমি ক্লান্ত জীর্ণ তুমি
অন্ধ দেয়াল জুড়ে দুঃস্বপ্ন আছড়ে পড়ে

পারবে কি ভেঙে দিতে এই দেয়াল
পারবে কি ছেড়ে যেতে এই বাধন,
ধুলোমাখা জানালার আলো ছাড়িয়ে
পারবে কি ফিরে যেতে আবার।

আর্তনাদ তোমার বিদগ্ধ এ মন জুড়ে
প্রতিধ্বনি করে চুপিসারে,
স্বপ্নগুলো কেন জড়িয়ে যায় এ মায়াজালে
দুঃসহ যন্ত্রনাতে অশান্ত ঝড়ে,
নিঃসঙ্গ একা তুমি ক্লান্ত জীর্ণ তুমি
অন্ধ দেয়াল জুড়ে
দুঃস্বপ্ন আছড়ে পড়ে।♪~♥

আশা ওয়াহিদ ফোন দেওয়ায় কুহু বারন্দায় গেল কথা বলতে।কথা শেষে পেছন ফিরতেই মুখোমুখি হলো সেই বিপদের।
আহিল!!!
কুহু পাশ কাটিয়ে চলে আসতে নিলেই আহিল পথ আগলে দাঁড়ায়।কুহু বিরক্ত হয়ে কপাল কিঞ্চিত কুঁচকিয়ে বলল,

” সমস্যা টা কি?এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?সরে দাঁড়ান।”

” আরে আরে!কুল বেবি!একটু দাঁড়াও।”

” হোয়াট দ্যা..!এসব কোন ধরনের শব্দ?”

” আরে বাদ দাও।শুনো না!আসো ওদিকটায় একটু হাটি।”

” আপনি হাটুন আমাকে কেন টানছেন স্ট্রেঞ্জ!”

” তোমাকে নিয়েই হাটবো।চলো!”

” আমি পারব না।সরুন।”

” আরে চলোই না।”

” মুভ ওকে?”

” নোপ!প্লিজ চলো।”

” হোয়াট ইজ ইট!পথ ছাড়ুন বলছি!”

” কি হচ্ছে এখানে?”

হঠাৎ আদ্রের কন্ঠস্বর শুনতে পায় তারা।কুহু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।পেছনেই আদ্র আর তাসনি দাঁড়িয়ে আছে।আহিল বলল,

” আরে কিছুই না।এমনি!”

” এমনি কি?”

” একচুয়ালি ওর সাথে একটু গল্প করতে চাইছিলাম।”

” কেন?ওর সাথে আবার কিসের গল্প?তোর ফ্রেন্ড আমরা!আমাদের ছেড়ে তোর ওর সাথে কেন গল্প করতে মন চাইল?”

” আব…তো সমস্যা কি?”

তাসনি এবার মুখ খুলল,

” ভাইয়া!এত গুলা ফ্রেন্ড থাকতে,,মেয়েদের সাথে গল্প করতে আসা কি ঠিক?তাও আবার একটা বিবাহিত মেয়ের সাথে?”

অবিশ্বাস্যের সাথে আহিল বলে উঠে,

” বিবাহিত?”

এদিকে আদ্র আর কুহুও অবাকের সহিত তাসনির দিকে তাকায়।আর তার মনোভাব বুঝার চেষ্টা করতে থাকে।

” হুম বিবাহিত।এখন তার স্বামী যদি জানতে পারে আপনি একান্ত তার সঙ্গে গল্প করছেন,হাটাহাটি করছেন।ব্যাপার টা কি দাঁড়ায়?”

আহিল কিছু না বলে কুহুর দিকে তাকিয়ে থাকে।আদ্র হেসে বলল,

” কি বুঝেছিস?”

আহিল কিছু না বলে মুখ শক্ত করে তাদের পাশ কাটিয়ে চলে গেল।সাথে সাথেই তিনজন হেসে দেয়।আদ্র বলল,

” ওয়াও তাসনি!তুমি আসলেই পারো বটে।”

” হিহি!আসলে এদের জ্বালাতে খুব ভালো লাগে।” তাসনি বলল।

কুহু হেসে বলল,

” এজন্যই ওকে নিয়ে এসেছি।যাতে সে কথার মাধ্যমে এদের ফাঁসাতে পারে।”

” হাহা!আসলেই!ইউ আর ওয়ান্ডারফুল!” আদ্র বলল।

আর তখন……

চলবে,,,,,

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ