পার্ট: ১০
কাব্য: তিলো উঠো (কাব্য আমার চুলে হাত বুলাচ্ছে আর ডাকছে, ঘুম ঘুম চোখে ওর দিকে তাকালাম। কাব্য’র বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছি আর ও আমার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে দেখে ওকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম)
কাব্য: উঠো বলছি।
আমি: উঁহু পরে।
কাব্য: কাল তো দেখলাম পাঁচ ওয়াক্তই নামাজ পড়েছ আজ পড়বে না..?
আমি: কয়টা বাজে..?
কাব্য: একটু আগেই ফজরের আজান পড়েছে কয়টা বাজে দেখতে হবে না যাও নামাজ পড়ে এসো। (কাব্য’র বুকে তুতুনি রেখে ওর দিকে তাকালাম)
আমি: আপনি নামাজ পড়বেন না..?
কাব্য: আমার দ্বারা নামাজ পড়া হবে না।
আমি: আমি বললেও পড়বেন না..?
কাব্য: না মানে আসলে…
আমি: না মানে আসলে কিছুই বলতে হবে না উঠুন নাহলে কিন্তু… (কাব্য আমাকে জরিয়ে ধরে চোখের দিকে তাকালো)
কাব্য: রাতে আমার বাসর নষ্ট করে দিয়ে এখন আবার শাসানো হচ্ছে।
আমি: বাসর নষ্ট কিভাবে করলাম।
কাব্য: এখন তো কিছুই মনে পড়বে না ঘুম পাগলী কোথাকার (ঘুম পাগলী বলাতে মনে পড়লো রাতে কাব্য’র বুকে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তারপর তো আর কিছু মনে নেই)
আমি: রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তারপর…
কাব্য: তারপর আর কি আপনাকে কোলে করে বাসায় নিয়ে আসছি।
আমি: এতো দূর থেকে…
কাব্য: কোলে করে নিয়ে আসছি এজন্য তো কষ্ট হয়নি কিন্তু তুমি যে আমার বাসর রাত মাটি করে দিলে…
আমি: এজন্য কষ্ট হচ্ছে বুঝি ইশশ।
কাব্য: হাসো হাসো যতো খুশি হাসো, আজ রাতে কিন্তু অসম্পূর্ণ বাসর সম্পূর্ণ করবো (কাব্য আমার চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিলো)
আমি: দ্যাত ফাজিল কোথাকার, উঠুন একসাথে নামাজ পড়বো।
কাব্য: উঁহু।
আমি: নামাজ না পড়লে কিন্তু শাস্তি দিবো, আর কি কি শাস্তি দিবো তা কি বলবো..?
কাব্য: বলতে হবেনা উঠে পড়েছি।
কাব্য আর আমি একসাথে নামাজ পড়ে নিলাম। রুম থেকে বেরুতে যাবো তখনি কাব্য আমার হাত ধরে টান দিয়ে ওর কাছে নিয়ে গেলো। কাব্য আমার দুগালে ধরে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে, ওর দুচোখে পানি ছলছল করছে।
কাব্য: জানো তিলো আজ তুমি যে ভাবে আমাকে শাসিয়ে নামাজ পড়ালে ঠিক এইভাবে দশ বছর আগে হুমায়রা চৌধুরী আমাকে শাসিয়ে নামাজ পড়াতো কিন্তু… (কাব্য আর কিছু না বলে কাঁদতে কাঁদতে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। আমি অবাক হয়ে ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। মানুষটার ভিতরে এতো কষ্ট কিন্তু সবসময় কষ্টগুলো আড়াল করে রেখে হাসিখুশি থাকে)
ভাবি: তিলোত্তমা কি হয়েছেরে (ভাবি এসেছেন দেখে তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে নিলাম, কাব্য’কে কাঁদতে দেখে নিজেও যে কখন কেঁদে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি)
ভাবি: কি হলো।
আমি: কিছুনাতো।
ভাবি: কাব্য’কে দেখলাম কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে গেলো।
আমি: একসাথে নামাজ পড়েছিলাম হুট করে ওর আম্মুর কথা বললো তারপর কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে গেলো।
ভাবি: ওহ।
আমি: ভাবি তুমি আমাকে বলো প্লিজ কি এমন রহস্য আছে যার জন্য ডাক্তারবাবু নিজের বাবা মাকে নাম ধরে ডাকে..?
ভাবি: বেশি কিছু জানিনা এইটুকু বলতে পারবো, কাব্য ওর বাবা মায়ের উপর রেগে আছে কেন রেগে আছে তাও জানিনা। ওর তখন পনেরো বছর আর হিয়া সাত বছরের, বাবা মায়ের উপর রাগ করে বাসা থেকে বেড়িয়ে এসেছিল। আর কিছু জানিনারে, ওদের তিনভাই কে এসব নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলেই রেগে যায়।
আমি: হুম।
ভাবি: চল।
ভাবি কিচেনে নাশতা বানাচ্ছেন দেখে আমিও গেলাম।
আমি: ভাবি আমি হেল্প করবো..?
ভাবি: একটু পর বৌভাত আর এখন আগুনের কাছে আসবি পাগল হয়েছিস।
আমি: তাতে কি হয়েছে..?
ভাবি: আমার বোনের চেহারা…
আমি: হয়েছে হয়েছে আর বলতে হবে না আমি তো এমনিতেই কালো।
ভাবি: কি বললি..? (ভাবির রাগি চোখ দেখে সাথে সাথে ভাবিকে জরিয়ে ধরলাম)
আমি: তোমরা সবাই খুব ভালো আমাকে এতো তাড়াতাড়ি আপন করে নিলে।
ভাবি: একটা কথা বলবো..?
আমি: হ্যাঁ বলো জিজ্ঞেস করার কি আছে।
ভাবি: এখন যে মানুষ গুলোকে ভালো ভাবছিস সে মানুষ গুলোর সম্পর্কে কখনো খারাপ কিছু শুনলে ভুল বুঝিস না।
আমি: খারাপ কিছু ভুল বুঝা কি বলছ এসব..?
ভাবি: কিছুনা।
তিশা: তমা চলতো আমার সাথে (তিশা এসেই আমার হাত ধরে টানতে টানতে ওর রুমে নিয়ে আসলো)
তিশা: কিরে বাসর রাত কেমন কাটলো (তিশা হাসছে কিন্তু ওর দিকে আমার কোনো নজর নেই, আমি শুধু ভাবছি ভাবি কিসের খারাপ কথা ভুল বুঝার কথা বললো)
তিশা: কিরে কি ভাবছিস..?
আমি: কিছু না।
তিশা: কি হয়েছে তোর..?
আমি: কিছু হয়নি।
আন্টি: তিশা দেখে যা।
তিশা: আসছি।
তিশা চলে যেতেই স্টোররুমের দিকে আস্তে আস্তে এগুলাম। এখন তো কাব্য বাসায় নেই দেখি কিছু পাই কিনা।
স্টোররুমের দরজায় তো তালা দেওয়া এখন কি করি, আমার কাছে যে চাবিগুলো আছে এগুলো তো এই তালার না আমি…
অয়ন: ছোট ভাবি এখানে কি করছ (হয়েছে একজন না একজন দেখে ফেলেই)
আমি: কিছু নাতো এমনি বাসাটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম।
অয়ন: আর দেখতে হবে না চলো নাশতা করবে।
আমি: হুম (আমার আর স্টোররুম দেখার সখ পূরণ হবে না)
ভাবি: তিশা একটু পর মেহমানরা আসতে শুরু করবে নাশতা করে তিলোত্তমাকে সাজিয়ে ফেলো।
তিশা: ওকে ভাবি। (সেই কখন থেকে লক্ষ করছি নাশতা খেতে খেতে আদনান ভাইয়া বার বার তিশার দিকে তাকাচ্ছে, তিশাও আড়চোখে তাকাচ্ছে তাহলে কি…)
ভাইয়া: তিলোত্তমা কাব্য কোথায় নাশতা করতে তো আসেনি..?
ভাবি: কাব্য একটু বাইরে গেছে চলে আসবে (তাই তো ডাক্তারবাবু তো বাসায় নেই, এতো বেলা হয়ে গেলো এখনো কিছু খায়নি। এই মানুষটার কষ্ট যে আমি কিভাবে দূর করবো)
আমি: এই সরি সরি সরি।
কাব্য: সরি বলার কি আছে..?
আমি: আপনি শার্ট পড়ে নিন আমি পরে আসছি (আনমনে হয়ে রুমে ঢুকে পড়েছিলাম, কাব্য কখন বাসায় আসলো দেখিই’নি, এসেছে তো আবার খালি গায়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে)
কাব্য: তিলো যেও না শুনো (কাব্য আমার হাত ধরে টেনে ওর একদম কাছে নিয়ে আসলো)
কাব্য: আজব মেয়ে তো তুমি, তিলো তুমি আমার বউ তোমার সামনে…
আমি: শার্ট পড়তে বলেছি পড়ে নিন।
কাব্য: পড়বো না দেখি তুমি কতোক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকতে পারো।
আমি: ডাক্তারবাবু…
কাব্য: আজ তো তোমার লজ্জা ভাঙাবো (কাব্য আমাকে ওর বুকের সাথে জরিয়ে ধরলো। ওর বুকের লোমগুলো আমার চোখেমুখে লাগছে)
কাব্য: কি হলো তুমি আমাকে জরিয়ে ধরবে না (একটা হাত কাব্য’র কোমরে রেখে আরেকটা হাত ওর বুকে রাখলাম। ওর হার্টবিট বাড়ছে আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি। আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম, কাব্য’র ফর্সা বুকে লোমগুলো খুব সুন্দর লাগছে)
তিশা: ইহহ সরি (দ্যাত এইটা কি হলো, তিশাকে দেখেই তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়ালাম)
কাব্য: লজ্জা পেয়ো না বউ তিশাই আসছে অন্য কেউ না, আর এইযে মেম নবদম্পতির রুমে আসলে নক করে আসতে হয়।
তিশা: নবদম্পতি যদি দরজা খুলা রেখে রোমান্স করে তাহলে কি সেটা আমার দোষ..?
কাব্য: না সেটা আমার কপালের দোষ।
তিশা: হয়েছে যাও তোমার বউকে সাজাবো।
কাব্য: পরীর মতো সাজাবে বুঝেছ।
তিশা আমাকে সাজিয়ে দিচ্ছে আর আমি চুপচাপ বসে কাব্য’র কথা ভাবছি।
তিশা: হয়েছে তো পরীর মতো সাজানো।
আমি: হুম হয়েছে।
তিশা: এবার নিচে চল।
আমি: ওকে।
তিশা: এই শাড়ির কুচিগুলো তো এলোমেলো করে ফেলেছিস (আমি শাড়ি সামলে রাখতে পারি না আর আমাকে শাড়ি পড়িয়ে পরীর মতো সাজায়)
তিশা: হাসছিস আবার বাচ্চাই রয়ে গেলি।
আমি: ওই আমি বাচ্চা না আমার বিয়ে হয়ে গেছে হু।
তিশা: হ্যাঁ আপনি বড় হয়ে গেছেন, তো আপনার ডাক্তারবাবু কেমন..?
আমি: ডাক্তারবাবু তো সবদিকে সেরা, ভালো মানুষ সাথে হ্যান্ডসাম আর ওর ফর্সা চেহারা, গোল গোল চোখ দুটু, ফর্সা মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি, এলোমেলো চুল সবকিছু আমাকে পাগল করে দেয়। আর ওর ফর্সা বুকের লো…(যাহ বাবা কিসব বলে দিলাম)
তিশা: সব তো বলেই ফেলেছিস এখন আর জিহ্বায় কামর দিয়ে কি হবে পাগলী কোথাকার।
শুভ্রা: ফর্সা বুকে লোমগুলো দেখতে খুব সুন্দর তাই না..? (আরে এই বজ্জাত মেয়ে কোথা থেকে আসলো, কাব্য ওকে ইনভাইট’ই বা করতে গেলো কেন)
শুভ্রা: কি হলো বললে না যে কাব্য’র ফর্সা বুকের লোমগুলো দেখতে কেমন..?
আমি: এইটা শুধু আমারই জানার অধিকার আছে বুঝেছেন..?
শুভ্রা: অধিকার হাহাহা আমিও দেখবো এই অধিকার কতোদিন টিকে থাকে।
তিশা: এই মেয়েটা কেরে..?
শুভ্রা: তিলোত্তমা এবং কাব্য’র শুভাকাঙ্ক্ষী।
আমি: এই যান তো এখান থেকে।
শুভ্রা: যাচ্ছি তবে এইটাও জানিয়ে যাচ্ছি কাব্য’র বুকের জমিনের অধিকারটা তোমার থেকে খুব তাড়াতাড়িই কেড়ে নিবো।
আমি: তোকে আমি খুন করবো।
তিশা: তমা শান্ত হ।
আমি: কি বলে গেলো শুনলি তো।
তিশা: বলুক না কাব্য তো শুধু তোরই।
আমি: যা তো ওকে গিয়ে বল রুমে আসতে।
তিশা: যাচ্ছি আজ মনে হয় ডাক্তার সাহেবের কপালে দুঃখ আছে।
রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে কতো বড় সাহস ওই বজ্জাত মেয়েটার।
কাব্য: তিলো কি হয়েছে..?
আমি: ওই কাকে জিজ্ঞেস করে বজ্জাত মেয়েটাকে ইনভাইট করেছেন..?
কাব্য: ওরে বাবারে আস্তে কিল দাও লাগছে, আমাদের দুজনের প্রেম দেখানোর জন্যই তো ওকে ইনভাইট করেছিলাম। তোমাকে হিংসে করে তো তা…
আমি: ও যে বলে গেলো…
কাব্য: তিশা আমাকে সব বলেছে, এতো সহজ নাকি আমি তো শুধু তোমারই।
আমি: হুম।
কাব্য: বাব্বাহ্ এই প্রথম আমার বউ আমাকে নিজের ইচ্ছায় জরিয়ে ধরলো।
আমি: হুহ।
কাব্য: তিলো দেখি তোমার কপালের টিপ তো…(আমি ওর দিকে তাকাতেই আমার ঠোঁটে ওর ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো, কি চালাক মানুষ। অনেক চেষ্টা করেও ছাড়াতে পারলাম না কিছুক্ষণ পর নিজেই ছাড়লো)
কাব্য: ইহহ তিলো তোমার ঠোঁটের লিপস্টিক কোথায় গেলো..?
আমি: গেছে তো আপনার পেটে এখন তিশা জিজ্ঞেস করলে কি বলবো..?
কাব্য: তিশা এসব বুঝে ও তোমার মতো পিচ্ছি না (কাব্য হাসতে হাসতে চলে গেলো, পাগল একটা। শুভ্রা কেন কেউ আমার থেকে এই পাগলটাকে আলাদা করতে পারবে না)
বৌভাতের অনুষ্ঠানের জামেলায় সারাদিন কেটে গেলো। মেহমানরা একে একে সবাই চলে যাচ্ছে। কাব্য কোথায় গেলো খুঁজেই পাচ্ছি না, একা একা ভালো লাগছে না তাই বাগানের দিকটায় এসে দাঁড়ালাম।
তিশা: তমা তুই এখানে আর আমি তোকে খুঁজে মরছি।
আমি: কেন..?
তিশা: চলে যেতে হবে তো আব্বু আম্মুরা বসে আছেন।
আদনান: আজ না গেলে হয় না (হঠাৎ আদনান ভাইয়া কোথা থেকে আসলো তারমানে আমি যা ভাবছি তাই)
তিশা: না মানে…
শুভ্রা: তিলোত্তমা সরি (শুভ্রাকে দেখেতো আমার চোখ কপালে উঠে গেছে, এই মেয়ে আমাকে সরি বলছে)
কাব্য: তিলোত্তমা নয় ভাবি বলো।
শুভ্রা: হুম ভাবি আগের কথার জন্য সরি (বিষয়টা কি হলো কাব্য আর শুভ্রা একসাথে কোথা থেকে আসলো আবার সরি বলছে)
কাব্য: তিলো কিছু বলছ না কেন ও তো সরি বলছে।
আমি: সরি ও মুখে বলছে কিন্তু চোখে টিকি রাগ…
শুভ্রা: একদম ঠিক ধরেছ আমি শুধু মুখেই সরি বলছি। কাব্য তুমি কি মনে করেছ, তুমি আমাকে ভয় দেখাবে আর আমি ভয় পেয়ে তোমাকে ভুলে যাবো। আমি তোমাকে ভালোবাসি কাব্য।
আমি: ওই আস্তে, কিসের ভালোবাসা হ্যাঁ..? কাব্য আমাকে এবং আমি কাব্য’কে দুজন দুজনকে ভালোবাসি আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে ভুলে গিয়েছ নাকি..?
শুভ্রা: ভুলিনি তবে…
আমি: তবে কি..? আলাদা করবে আমাদের দুজনকে..? পারবে না, আগে কি যেন বলছিলে কাব্য’র বুকের জমিনের অধিকার কেড়ে নিবে, ভালো করে দেখে যাও কাব্য’র এই বুকটা না শুধু আমারই আর কাব্যও শুধু আমার (সবার সামনেই আমি কাব্য’কে জরিয়ে ধরলাম, কাব্য আমাকে জরিয়ে ধরে কপালে একটা চুমু দিলো। শুভ্রা এসব দেখে রাগে বেলুনের মতো ফুলছে)
কাব্য: শুভ্রা দেখেছ আমাদের দুজনের ভালোবাসা… (শুভ্রার হাতে জোসের গ্লাস ছিল রাগে সব জোস কাব্য আর আমার উপরে ছুড়ে মারলো তারপর গ্লাসটা আছাড় দিয়ে ভেঙে চলে গেলো)
আদনান: উচিত শিক্ষা পেয়েছে ভাবি।
তিশা: তমা শাড়িতে দাগ লেগে যাচ্ছে যা ফ্রেশ হয়ে নে, আর কাব্য তুমিও যাও ফ্রেশ হয়ে নাও।
কাব্য: হ্যাঁ যাচ্ছি তোমরা প্রেম করো।
আদনান: কি বললি..? (কাব্য আমার হাত ধরে দৌড়ে চলে আসলো তারমানে আমি যা লক্ষ করছি তা ডাক্তারবাবুও লক্ষ করছে)
কাব্য রুমে এসে দফ করে বিছানায় বসে পড়লো।
কাব্য: আমার মনে হয় আদনান আর তিশা একে অপরকে পছন্দ করে কিন্তু কেউ তা বলতে পারছে না।
আমি: আমিও লক্ষ করেছি।
কাব্য: আরে কোথায় যাচ্ছ..?
আমি: কেন ফ্রেশ হবো।
কাব্য: আমি আগে ফ্রেশ হবো।
আমি: উঁহু আমি আগে (কাব্য কিছুক্ষণ কি যেন ভাবলো তারপর উঠে এসে আমাকে কোলে তুলে নিলো)
আমি: কি করছেন..?
কাব্য: একসাথে ফ্রেশ হবো।
আমি: মানে কি (কাব্য কিছু না বলে আমাকে কোলে করে এনে শাওয়ারের নিচে দাড় করালো তারপর শাওয়ার ছেড়ে দিলো)
আমি: এইটা কি হলো ভিজে যাচ্ছি তো।
কাব্য: ভিজার জন্যই তো শাওয়ার ছেড়ে দিলাম (কাব্য আস্তে আস্তে আমার একদম কাছে চলে আসলো, দুজনেই ভিজে যাচ্ছি। কিযে করে ও)
আমি: কি হলো এভাবে তাকাচ্ছেন কেন..?
কাব্য: শুভ্রা রাগের বসে জোস ছুড়ে দিয়ে ভালোই করেছে।
আমি: মানে..?
কাব্য: আমাদের অসম্পূর্ণ বাসর সম্পূর্ণ করার সুযোগ করে দিয়েছে।
কাব্য আমার একদম কাছে চলে এসেছে দেখে চোখ বন্ধ করে ফেললাম, ও এক হাত দিয়ে আমার কোমর জরিয়ে ধরলো অন্যহাত আমার ঘাড়ের কাছে নিয়ে আমার ডান চোখের পাতায় আলতো করে চুমু খেলো। কাব্য’র স্পর্শে কেঁপে উঠে ওর বুকের শার্ট খামছে ধরলাম। কাব্য আমার গালে একটা আঙ্গুল দিয়ে স্পর্শ করছে, ওর চোখের দিকে তাকালাম কাব্যও আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। শাওয়ার থেকে পানি আমার মাথায় পড়ছে আর মাথা থেকে বেয়ে বেয়ে গালে ঠোঁটে পড়ছে, কাব্য কিছুক্ষণ আমার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর পাগলের মতো ঠোঁট চুষতে শুরু করলো। কাব্য’র এমন নেশা ধরানো স্পর্শে থাকতে না পেরে ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম।
চলবে?