Monday, October 6, 2025







রোমান্টিক_ডাক্তার পার্ট: ৮

রোমান্টিক_ডাক্তার

পার্ট: ৮

লেখিকা: সুলতানা তমা

সকালে মৃদু রোদের আলো চোখেমুখে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম ঘুম চোখে রুমের চারপাশে চোখ বোলালাম কিন্তু কাব্য তো কোথাও নেই। হয়তো বারান্দায় আছে ভেবে বারান্দায় আসলাম কিন্তু বারান্দাতেও তো নেই গেলো কোথায়..? আমাকে ঘুমে রেখে এভাবে হুট করে কোথায় চলে গেলো…
কাব্য: আরে কান্না করো না আমি চলে এসেছি (পিছনে তাকিয়ে দেখি কাব্য হাসছে ইচ্ছে হচ্ছে এখন)
কাব্য: হাহাহা একটু সময় চোখের আড়াল হতেই কান্না করে দিচ্ছ।
আমি: কোথায় কান্না করলাম..?
কাব্য: এখনো কান্না করনি কিন্তু আর একটু হলেই তো চোখে ছলছল করা পানি গুলো টুপটুপ করে গাল বেয়ে পড়ে যেতো।
আমি: মোটেও না।
কাব্য: ওকে তাহলে আবার চলে যাই।
আমি: এই না না।
কাব্য: কি ব্যাপার এখন তো আমাকে চোখে হারাও (আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বললো)
আমি: আমাকে ঘুমে রেখে কোথায় গিয়েছিলেন..?
কাব্য: খাবার আনতে, ভেবেছিলাম তুমি ঘুমে থাকতেই চলে আসতে পারবো কিন্তু একটু দূর যেতে হয়েছিল তাই দেরি হয়েছে।
আমি: বাসায় যাবেন না..?
কাব্য: উঁহু ভাবছি বিয়ে করে এখানেই টুনাটুনির সংসার শুরু করবো।
আমি: টুনাটুনির সংসার হিহিহি।
কাব্য: হুম আপাতত টুনাটুনি একা সংসার শুরু করবে তারপর একটা বাচ্চা হবে, দুটু বাচ্চা হবে একসময় অনেক গুলো বাচ্চা হবে।
আমি: অনেক গুলো বাচ্চা..? (কাব্য’র এসব কথা শুনে তো আমি হাসি থামাতে পারছি না)
কাব্য: যখন তুমি হাসো তখন যেন পৃথিবীর সব সৌন্দর্য তোমার উপর এসে নিহিত হয়। (কাব্য আমার পেটে ওর হাত রেখে কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, আমি যেন কোনো এক সুখের রাজ্যে হারিয়ে যাচ্ছি। এতোটা ভালো কেউ বাসতে পারে ভাবতেই পারছি না)
কাব্য: কি টুনাটুনির সংসার শুরু করবে না..?
আমি: করবো কিন্তু এখানে না।
কাব্য: কেন..?
আমি: পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে থাকার যে আনন্দ সেটা কি একা একা সংসার করে পাবো..?
কাব্য: আমি এটাই শুনতে চেয়েছিলাম।
আমি: তাই বুঝি।
কাব্য: জ্বী, আমিও চাই সবাই একসাথে থাকবো আমরা। এখন চলো ফ্রেশ হয়ে খেতে এসো।
আমি: ওকে।

খাবার সামনে নিয়ে কাব্য বসে আছে কিন্তু খাচ্ছে না। আবার কিসের জন্য রেগে গেলো কে যানে, ওর রাগটাকে কেন যেন খুব ভয় পাই।
আমি: কি হলো খাচ্ছেন না কেন..?
কাব্য: খাবো না।
আমি: ওমা কেন..?
কাব্য: রাতে আমি তোমাকে খাইয়ে দিয়েছি কিন্তু তুমি তো দাওনি।
আমি: ওহ এই ব্যাপার ঠিক আছে আমি এখন খাইয়ে দিচ্ছি।
কাব্য: সত্যি..?
আমি: হ্যাঁ।
কাব্য বোধহয় একটু বেশিই ভালোবাসার কাঙ্গাল, একটুখানি ভালোবাসা পেলেই আনন্দে ওর দুচোখ দিয়ে পানি ঝরে। যেমনটা এখন ঝরছে, আমি খাইয়ে দিচ্ছি আর কাব্য এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর কাঁদছে। কাব্য’কে দেখে মনে হয় ওকে কখনো কেউ এতো ভালোবাসা দেয়নি তাই একটুখানি ভালোবাসা পেলেই ছোট্র বাচ্চাদের মতো কাঁদে। কাব্য’র এমন বাচ্চামি, আব্বু আম্মুর কথা জিজ্ঞেস করলে রেগে যাওয়া সবকিছুর পিছনে তো একটা রহস্য আছেই, কি রহস্য আছে সেটা আমি খুঁজে বের করবোই। কিন্তু এসব রহস্য খুঁজে বের করতে হলে তো আগে ওদের বাসায় যেতে হবে।
আমি: ডাক্তারবাবু আমরা বাসায় কবে যাচ্ছি।
কাব্য: এক্ষণি যাবো, তোমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আমাকে হসপিটালে যেতে হবে।
আমি: শুভ্রার কাছে হিহিহি।
কাব্য: দেখো এই মেয়েটার নাম নিবা না অহংকারী মেয়ে একটা আ…
আমি: ওকে ওকে আর ওর নাম মুখে নিবো না।
কাব্য: আলমারিতে একটা শাড়ি রাখা আছে পড়ে রেডি হয়ে নাও।
আমি: আলমারিতে শাড়ি..?
কাব্য: এখন এনেছি তোমাকে এই শার্ট পড়া অবস্থায় বাসায় নিয়ে যাবো নাকি, সবাই তো হাসবে।
আমি: কিন্তু…
কাব্য: আবার কি..?
আমি: উঁহু কিছুনা। (কি করে বলি আমি যে শাড়ি পড়তে পারিনা। বললে হয়তো নিজেই চলে আসবে শাড়ি পড়াতে আর ও যা দুষ্টু ছেলে শাড়ি পড়াতে এসে আবার কিনা কি কান্ড করে বসে তারচেয়ে বরং নিজেই ট্রাই করি)

শাড়ি পড়ে এসে কাব্য’র সামনে দাঁড়ালাম, ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
আমি: কি হলো..?
কাব্য: ভাবছি আমার বউতো খুব গুণবতী, এতোটাই গুণবতী যে নিজের শাড়িটাও ঠিক করে পড়তে পারে না। (ওর কথা শুনে ইচ্ছে হচ্ছে শাড়িটাই খুলে ফেলে দেই, এতো কষ্ট করে পড়েছি কোথায় বলবে সুন্দর লাগছে তা না বদনাম গাইছে)
কাব্য: আমি ঠিক করে পড়িয়ে দেই..?
আমি: আপনি পড়িয়ে দেওয়ার জন্য বদনাম করছেন আমার।
কাব্য: আরে না তো, শাড়ির কুচি ছুটে যাচ্ছে নিজেই দেখো (সত্যিই তো শাড়ির কুচিগুলো এলোমেলো হয়ে ছুটে যাচ্ছে)
কাব্য: কি হেল্প করবো..?
আমি: হুহ লাগবে না আমি একাই ঠিক করতে পারবো।
কাব্য: আমি হেল্প করলে সমস্যা কোথায়..?
আমি: আপনি যা দুষ্টু ছেলে ভয় করে।
কাব্য: এই আস্তে আস্তে কি বলছ..?
আমি: কিছু নাতো।
তাড়াতাড়ি রুমে চলে আসলাম। কোনোভাবে শাড়িটা ঠিক করে নিলাম। কেন যে এতোদিন শাড়ি পড়া শিখিনী।

আমি: চলুন
কাব্য: (কিছুনা বলে আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে)
আমি: এখন তো আগের চেয়ে ভালো হয়েছে তাহলে হাসছেন কেন..?
কাব্য: কোথায় আমি হাসিনি তো চলো।
আমি: উহহ (একটু হাটতেই শাড়ির কুচির মধ্যে প্যাচ লেগে পায়ে হুচট খেলাম)
কাব্য: জানতাম এমন কিছুই হবে (কাব্য এসে আমাকে কোলে তুলে নিলো)
আমি: কি করছেন..?
কাব্য: একদম চুপ। (কাব্য আমাকে কোলে করে গাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছে, আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি দেখে ভ্রু কুঁচকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিলো)
কাব্য: শাড়ি পড়লে তোমাকে খুব সুন্দর লাগে, মনে হয় কোনো এক মায়াবতী আ…(কাব্য’র গলা জরিয়ে ধরে অন্যমনস্ক হয়ে ছিলাম, কাব্য’র এমন কথা শুনে ওর দিকে তাকালাম। কাব্য আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে ও আমার চোখের ভাষাগুলো পড়ছে)

কাব্য: আমরা আগামীকাল বিয়ে করছি (কাব্য গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে বললো, আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি)
কাব্য: অবাক হবার কিছু নেই আর দেরি করতে পারবো না।
আমি: তাই বলে কালকেই।
কাব্য: হ্যাঁ কাল সাধারণ ভাবে বিয়ে হবে পরশুদিন বড় করে বৌভাত এর অনুষ্ঠান হবে।
আমি: হুম।
কাব্য: রাগ করেছ..?
আমি: নাতো রাগ করবো কেন..?
কাব্য: তাহলে এরকম মুখ গোমড়া করে দূরে বসে আছ কেন..?
কাব্য’র পাশে এসে ওর কাধে মাথা রেখে একটা হাত দিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে বসলাম। কাব্য যেন এটাই চাইছিল তাই ওর মুখে এতোক্ষণে হাসি ফুটেছে।

গাড়ি থেকে নেমে তো আমি অবাক। সবাই আমাদের জন্য দরজায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে, পুরো বাসাটা সাজানো। মনে হচ্ছে কাব্য বিয়ে করে নতুন বউ নিয়ে এসেছে, আর সেই বউটা আমি।
–কাব্য চলে আসছ যে নতুন বউকে আনবে না (উনি মনে হয় কাব্য’র ভাবি কিন্তু নতুন বউ বলছে কেন আমাদের তো বিয়ে হয়নি)
কাব্য: তিলো এসো।
ভাবি: আসবে মানে যাও কোলে করে নিয়ে এসো।
কাব্য: হুহ এই মুটকি কে বার বার কোলে নিতে পারবো না।
আমি: কি বললেন আমি মুটকি।
অয়ন: আরে ভাবি কান্না করো না ভাইয়া তো ফাজলামো করে বলেছে, তোমার মতো শুকনিকে কোন পাগলে মুটকি বলবে হাহাহা।
ভাবি: থামবি তোরা। (কাব্য এসে আমাকে কোলে তুলে নিলো ইচ্ছে হচ্ছে বুকে কয়েকটা কিল দেই)
কাব্য: ভাবি আমাকে হসপিটালে যেতে হবে।
ভাবি: হ্যাঁ যাও তবে আজকেই শেষ, দু সপ্তাহের ছুটি নিয়ে নাও।
কাব্য: আগে কাজ তারপর অন্যকিছু তাই দু সপ্তাহের ছুটি নেওয়া সম্ভব না (ভাবি কাব্য’কে মুখ ভেংচি দিয়ে কিচেনের দিকে চলে গেলেন। আমি বসে বসে ওদের সবার কথা শুনছি)
কাব্য: আজকে বাসায় ফিরবো না (কাব্য আচমকা এসে আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, ফিরবে না শুনেই তো ভয় পেয়ে গেলাম। এখানে নতুন এসেছি কাব্য না থাকলে আমি একা থাকবো কিভাবে)
আমি: কেন..?
কাব্য: এমনি আসি।
ভাবি: কাব্য দাড়াও মিষ্টি খেয়ে যাও।
কাব্য: কিসের মিষ্টি..?
ভাবি: বাসায় নতুন বউ এসেছে ভুলে গিয়েছ নাকি..?
কাব্য: তাড়াতাড়ি দাও। (কাব্য ভাবির হাত থেকে একটা মিষ্টি নিয়ে আমার দিকে একবার তাকিয়ে বেড়িয়ে গেলো)
ভাবি: এই কাব্য আর ফারাবী দুটুই একরকম, সারাদিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আজ ফারাবীকে কতো করে বললাম বাসায় নতুন বউ আসবে অফিসে যেও না, শুনলো না। বললো রাতে এসে তোমার সাথে কথা বলে নিবে। তুমি ওদের কাজে কষ্ট পেওনা, নাও মিষ্টি খাও। (ভাবি আমার মুখে একটুখানি মিষ্টি দিলেন, অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি উনার দিকে। ওরা সবাই এতো ভালো কেন। আমার তো মনে হচ্ছে এখানে এসে আমি আরেকটা তিশা পেয়ে গেছি)
অয়ন: ভাবি চিন্তা করোনা আমি সারাদিন বাসায় থাকি আমার কোনো কাজের ব্যস্ততা নেই সারাদিন আড্ডা দিতে পারবো।
ভাবি: আসছে পড়াচোর একটা, পড়াশোনায় মন নেই সারাদিন ঘুরে বেড়ানো।
অয়ন: আচ্ছা ছোট ভাবি তুমিই বলো বড় দুভাই যদি আমাকে সবকিছু দেয় তাহলে আমি পড়াশোনা কেন করবো।
আমি: হ্যাঁ তাই তো।
ভাবি: হলো দুজনের ভাবনা মিলে গেছে এখন দুজন মিলে আড্ডা দাও।
ভাবি কিচেনে চলে গেলেন।

অয়নের সাথে অনেক গল্প করলাম, খুব টায়ার্ড লাগছে ইচ্ছে হচ্ছে এখানেই শুয়ে পড়ি কিন্তু ড্রয়িংরুমে তো শুয়া সম্ভব না। আস্তে আস্তে ভাবির কাছে আসলাম।
ভাবি: কিছু বলবে..?
আমি: ফ্রেশ হবো কিন্তু…
ভাবি: কোন রুমে যাবে ভেবে পাচ্ছ না তাই তো। আজকে কষ্ট করে অন্য রুমে থাকো কাল থেকে তো আমার দেবরের বুকেই…
আমি: ভাবি…
ভাবি: আরে লজ্জা পেওনা ফাজলামো করলাম।
আমি: আপনি তো দেখছি ডাক্তারবাবুর মতোই লজ্জা নেই।
ভাবি: এখনো ডাক্তারবাবু ডাকো কাব্য তো তোমার মুখে ডাক্তারবাবু শুনেই পাগল হয়ে গেছে।
আমি: আপনাকে সব বলেছে..?
ভাবি: হ্যাঁ ও আমার কাছে সবকিছু বলে এই পরিবারে আমরা সবাই ফ্রি। আর শুনো আপনি করে বলোনা তো পর মনে হয়, তুমি করে বলবা তাহলে দুজন জা নয় বোন মনে হবে।
আমি: আপনারা সবাই এতো ভালো কেন..?
ভাবি: আবার আপনি..
আমি: না না তুমি (ভাবি রাগি চোখে তাকাতেই এসে জরিয়ে ধরলাম, আমি সত্যি ভাগ্যবতী নাহলে তিশার মতো বান্ধবী আর ভাবির মতো জা পাই)
ভাবি: এখন রুমে চলো।
আমি: ওকে।

ভাবি উপরের একটা রুমে আমাকে দিয়ে চলে যেতে চাইলেন।
আমি: ভাবি ডাক্তারবাবুর রুম কোনটা..?
ভাবি: ওইযে পাশের রুমটাই। অবশ্য এইটা ওর রুম বললে ভুল হবে, ও তো এখানে থাকেই না। একা একা শহরের বাইরে অদ্ভুত বাড়িটায় থাকে। আজকে বাসায় ফিরবে কিনা কে জানে..?
ভাবি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে গেলেন। খুব টায়ার্ড লাগছে তাই ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পড়লাম।

ঘুম ভাঙতেই দেয়াল ঘড়িতে তাকালাম সন্ধ্যা সাতটা বাজে। সেই দুপুরবেলা ঘুমিয়ে ছিলাম আর কেউ ডাকলো না।
ভাবি: ঘুম ভেঙেছে তাহলে। দুপুরে খাওয়ার জন্য কতো ডাকলাম উঠনি।
আমি: খুব ক্লান্ত লাগছিল তাই।
ভাবি: ঠিক আছে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও।
ভাবি চলে যেতেই এক দৌড়ে কাব্য’র রুমে চলে আসলাম। সবকিছুর রহস্য তো আমি খুঁজে বের করবোই।

কাব্য’র সারা রুম খুঁজলাম কিন্তু কিছুই তো পেলাম না। কাব্য’র মা বাবার কোনো ছবি বা কোনো ডায়েরি, কাব্য’র মায়ের কোনো স্মৃতি কিছুই পেলাম না। ওই বাসায় আলমারিতে যে ছবিটা পেয়েছিলাম সেটা তো সাদা সাদা দাগ পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে কাউকে চেনা যায় না, ভালো একটা ছবি প্রয়োজন। কিছু না পেয়ে চলে আসতে চাইলাম হঠাৎ টেবিলের ড্রয়ারে চোখ পড়লো, ড্রয়ারে তো খুঁজা হয়নি। ড্রয়ার খুঁজে শুধু দুটু চাবি পেলাম কিন্তু কিসের চাবি এগুলো…?
অয়ন: ছোট ভাবি নিচে এসো।
আমি: আসছি।

ড্রয়িংরুমে এসে দেখি অয়ন আর ভাবি বসে আছেন। উফফ এখন আবার ডাকতে গেলো কেন, চাবিটা কিসের সেটা তো খুঁজতে হবে।
ভাবি: তিলোত্তমা এসেছ। ফারাবী আসতে দেরি হবে আর কাব্য আসবে কিনা ঠিক নেই তো, তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো (বলে কি এতো তাড়াতাড়ি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বো)
ভাবি: আরে কাল তোমাদের বিয়ে অনেক জামেলা আছে তাই বলছি আজ তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়ো।
আমি: ঠিক আছে।
অয়ন: আমার সুইট ভাবিরা আমি কবে বিয়ে করছি..?
ভাবি: পড়াশোনা শেষ কর তারপর।
অয়ন: আটকে দিলে তো, এই পড়াশোনাটাই তো আমার ভালো লাগে না।
আমি: তাহলে কাউকে পছন্দ করো তখন নাহয় বিয়েটা করিয়ে দিবো।
অয়ন: দেখেছ ভাবি ছোট ভাবির সাথে আমার সব ভাবনা মিলে যায় হাহাহা।
কিছুক্ষণ ওদের সাথে আড্ডা দিয়ে খাবার খেয়ে রুমে চলে আসলাম।

রুমের মধ্যে পায়চারী করছি আর চাবি দুটু দেখছি, কিসের চাবি হতে পারে..? আচ্ছা চাবি দুটু তো খুব পুরনো তাহলে কি এগুলো স্টোররুমের চাবি…?

বাসায় নতুন এসেছি স্টোররুম কোনদিকে সেটাই বুঝতে পারছি না তাও আন্দাজি হাটছি।
কাব্য: কোথায় যাচ্ছ তিলো (আচমকা কাব্য’র কন্ঠ শুনে চমকে উঠলাম, ও কোথা থেকে আসলো)
আমি: কোকোকোথাও নানানাততো।
কাব্য: তোতলাচ্ছ কেন..?
আমি: নাতো।
কাব্য: চলো আমার সাথে। (কাব্য আমার হাত ধরে টেনে ওর রুমে নিয়ে আসলো। কাব্য চাবিগুলো দেখে ফেলার আগেই লুকিয়ে ফেললাম)
কাব্য: আসবো না বলেও এসেছিলাম তোমাকে সারপ্রাইজ দিবো ভেবে কিন্তু এসে আমি নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গেছি।
আমি: মানে।
কাব্য: এসেই গোয়েন্দাগিরি শুরু করে দিয়েছ..?
আমি: গোয়েন্দাগিরি তাও আমি কি বলছেন এসব..?
কাব্য: তোমার ডাক্তারবাবুর চোখকে ফাকি দেওয়া এতো সহজ না (কাব্য আমার হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে আমাকে ওর বুকের সাথে জরিয়ে ধরলো, খুব রেগে গেছে বুঝতে পারছি কিন্তু আমি যে রহস্য খুঁজছি সেটা ওকে বুঝতে দেওয়া যাবে না)
আমি: কিসব আবোলতাবোল বকছেন।
কাব্য: তিলো আমি তোমাকে ভালোবাসি এমন কোনো কাজ করোনা যেন তোমার প্রতি আমার এই ভালোবাসাটা ঘৃণায় পরিণত হয়ে যায়।
আমি: মানে..?
কাব্য: আর কখনো স্টোররুমে যাওয়ার দুঃসাহস করো না বুঝেছ (তারমানে আমি যেদিকে যাচ্ছিলাম সেদিকেই স্টোররুম…? কিন্তু কাব্য স্টোররুমে যেতে নিষেধ করছে কেন..? কি আছে ওই স্টোররুমে..?)
কাব্য: খেয়েছ..?
আমি: হুম।
কাব্য: যাও ঘুমিয়ে পড়ো আর হ্যাঁ যা বলেছি তা মাথায় রেখো।

রুমে এসেই চাবি দুটু লুকিয়ে রাখলাম। কাব্য নিষেধ করলে কি হবে, ওই স্টোররুমে কি আছে তা তো আমি দেখবোই আর সব রহস্যও আমি বের করবো।
কাব্য: কি করছ বউ (বিছানায় শুয়ে শুয়ে এসব ভাবছিলাম হঠাৎ কাব্য’র কথা শুনে ভয়ে এক লাফে উঠে বসে পড়লাম)
কাব্য: আরে আমি ভয় পাচ্ছ কেন..?
আমি: লাইট অফ করা এমন অন্ধকার রুমে হুট করে ঢুকে কেউ কানের কাছে এসে কথা বলে..?
কাব্য: ওকে লাইট জ্বালিয়ে দিচ্ছি।
আমি: না থাকুক ডিম লাইটই ভালো।
কাব্য: আমার বউ কতোটা সাহসী আজ প্রমাণ হয়ে গেলো হাহাহা (কাব্য’র হাসি দেখে রাগ করবো নাকি অবাক হবো ভেবে পাচ্ছি না। একটু আগে যে এতো রেগে ছিলো সে এখন দিব্বি হাসছে)
কাব্য: সরি সোনা অনেক বকা দিয়েছি আর হবে না (যাক বাবা আমি তো কিছুই বললাম না নিজেই সরি বলছে, আসলে এই ডাক্তারবাবুর ভিতরে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে)
কাব্য: এই পাগলী কাল আমাদের বিয়ে মনে আছে..?
আমি: হুম মনে আছে তো..?
কাব্য: কাল যেহেতু বিয়ে তারমানে কালরাতে আমাদের বাসর (চুপচাপ আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো, ভাবকানা এমন যে বিয়ে অনেক আগেই হয়ে গেছে)
আমি: ডাক্তারবাবু কি করছেন..?
কাব্য: একদম চুপ।
কাব্য উঠে আমার সামনে বসে পড়লো তারপর আমার দুগালে আলতো করে ধরে আমার ঠোঁটের দিকে ওর ঠোঁট এগুতে শুরু করলো। কাব্য আমার এতো কাছে এসেছে যে আমাদের দুজনের নিঃশ্বাস ভারী খাচ্ছে। আমি কাব্য’কে দূরে সরিয়ে দিতে চাইলাম সাথে সাথে কাব্য আমার ঠোঁটের মধ্যে ওর ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।

চলবে?

 

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ