Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রোমান্টিক ডাক্তাররোমান্টিক_ডাক্তার পার্ট: ৩০/অন্তিম পর্ব

রোমান্টিক_ডাক্তার পার্ট: ৩০/অন্তিম পর্ব

রোমান্টিক_ডাক্তার
পার্ট: ৩০/অন্তিম পর্ব

লেখিকা: সুলতানা তমা

সন্ধ্যা নেমে এসেছে এখনো হসপিটালের বেডে শুয়ে আছি, কি করবো কোথায় যাবো ভেবে পাচ্ছি না। তিশার কাছে ফিরে যাবো কিন্তু ও তো কাব্য’দের বাসায় আছে। বাসায় ফিরে যাওয়া তো সম্ভব না কাব্য তো আমার মুখও দেখতে চায় না, অন্য কোথাও নাহয় চলে যাবো কিন্তু এখানে আর না, যেকোনো সময় আম্মু চলে আসতে পারেন। আশেপাশে চোখ বোলালাম কোনো নার্স নেই দেখে আস্তে আস্তে উঠে বেরিয়ে পড়লাম।
আম্মু: কোথায় যাচ্ছ? (কেবিনের বাইরে আসতেই আম্মুর সামনে পড়ে গেলাম এখন কি বলবো)
আম্মু: কথা বলছ না কেন?
আমি: আম্মু চলে যাচ্ছি আমি।
আম্মু: চলো আমার সাথে।
আমি: আম্মু কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? (আম্মু আমার হাত ধরে টেনে এনে গাড়িতে বসালেন)

গাড়িতে আম্মুর পাশে চুপচাপ বসে আছি, কোথায় যাচ্ছি কিছুই বুঝতে পারছি না। আশেপাশের এলাকা দেখে তো মনে হচ্ছে শহর থেকে দূরে কোথাও আছি কিন্তু এখন যাচ্ছি কোথায় কাব্য’র কাছে নাতো?
আমি: আম্মু আমরা কোথায় যাচ্ছি?
আম্মু: (নিশ্চুপ)
আমি: আম্মু আমি কাব্য’র কাছে ফিরে যেতে চাই না।
আম্মু: সে সিদ্ধান্ত কিছুক্ষণ পর নিও এখন চুপ হয়ে বসো। (আর কথা বাড়ালাম না চুপচাপ বসে রইলাম)

গাড়ি এসে পুলিশ স্টেশনে থামলো, আম্মু আমাকে এখানে নিয়ে আসলেন কেন?
আমি: আমরা এখানে এসেছি কেন?
আম্মু: চলো আমার সাথে (আম্মুর পিছন পিছন হাটতে শুরু করলাম)

অন্ধকার একটা রুম ছোট্ট একটা টেবিল আর টেবিলে আধোআধো করে জ্বলছে একটা মোমবাতি, টেবিলের একপাশে একটা খালি চেয়ার অপর পাশের চেয়ারে কেউ একজন বসে আছে। কাছে আসতেই দেখলাম আরশি বসে আছে। ভয়ে আতকে উঠলাম আরশিকে দেখে, ওর সারা শরীরে আঘাত এর চিহ্ন মনে হচ্ছে ওকে কেউ টর্চার করেছে। অবাক হয়ে তাকালাম আম্মুর দিকে, আম্মু ইশারা দিয়ে খালি চেয়ারটায় বসতে বললেন। চুপচাপ চেয়ারে বসে পড়লাম।
আম্মু: আরশির পাপ সীমা ছাড়িয়ে গেছে তো তাই ওকে এখানে আনতে হলো আর কোনো অপরাধী তো নিজে থেকে তার অপরাধ স্বীকার করে না তাই পুলিশকে একটু কষ্ট করতে হয়েছে। (কষ্ট হচ্ছে আপুকে এই অবস্থায় দেখতে কিন্তু কিছু করার নেই আপু যা পাপ করেছে তার শাস্তি ওকে পেতেই হবে)
আম্মু: কাব্য’কে ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরশির সাথে একবার কথা বলে নাও তারপর নাহয় সিদ্ধান্ত নিও।
আমি: (নিশ্চুপ)
আম্মু: আরশি সব সত্যি বলো।
আরশি: হুম।

টেবিলের একপাশের চেয়ারে আমি বসে আছি অন্যপাশে আরশি আর একটু দূরে আম্মু পায়চারী করছেন। অন্ধকার রুম আশেপাশে কেউ নেই, আরশি বলতে শুরু করলো।
আরশি…
কাব্য’র কোনো দোষ নেই সবকিছু আমি করেছি। কাব্য আমাকে সত্যি ভালোবাসতো কিন্তু আমি ওকে সবসময় ঠকিয়েছি। কাব্য’কে আমি যা বলতাম তাই ও শুনতো কারণ ও আমাকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করতো। কিন্তু আমি অন্য কাউকে ভালোবাসতাম আর তাই কাব্য’র সমস্ত সম্পত্তি নিজের নামে করে নিতে চেয়েছিলাম। কাব্য’র মনে কিছুটা সন্দেহ ছিল আমি ওকে পরে বিয়ে করবো কিনা আর ওর এই সন্দেহ দূর করার জন্য আমি নিজে থেকেই ওর সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন গড়ে তুলি, কারণ কাব্য আমাকে সন্দেহ করলে ওর সম্পত্তি গুলো হাতছাড়া হয়ে যেতো। কাব্য চায়নি আমি জোড় করেছিলাম। সেসময় আমি কিছু পিক তুলে রেখে দেই কাব্য কখনো আমার কথা না শুনলে যেন ব্ল্যাকমেইল করতে পারি। আমাকে ওরা জেলে দেওয়ার পর যাকে আমি ভালোবাসতাম সে আমাকে ছেড়ে চলে যায়, একা হয়ে যাই আমি। জেল থেকে বেরিয়ে আমি কাব্য’র উপর প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম আর যখন প্রতিশোধ নিতে চাইলাম তখন জানতে পারি কাব্য’র বউ আর কেউ নয় তুই। দুজনের উপর একসাথে প্রতিশোধ নেওয়া যাবে ভেবে আমি তোকে মেরে ফেলার চেষ্টা করি কিন্তু তুই বেঁচে গেছিস মারা গেছে তোর বাচ্চাটা। প্রথমে কাব্য’র সম্পত্তির উপর আমার লোভ থাকলেও জেল থেকে ফিরে আসার পর আমি সিদ্ধান্ত পাল্টে নেই, ভেবে নেই তোকে সরিয়ে কাব্য’কে আমি বিয়ে করবো। কাব্য’র সাথে যোগাযোগ করি কিন্তু ও সবসময় বলেছে ও তোকে ভালোবাসে। অসহ্য লাগতো তোর প্রতি ওর ভালোবাসা দেখে আর তাই ওকে পিক গুলো দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করি। কাব্য তোকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসে তোকে হারানোর ভয় ওকে সবসময় তাড়া করে বেড়ায়, দুর্বল ছিল কাব্য তোর প্রতি আর আমি ওর এই দুর্বলতাকে তোকে হারানোর ভয়টাকে কাজে লাগাই। আমার সাথে কাব্য’র ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল জানার পর যদি তুই ওকে ছেড়ে চলে যাস তাই কাব্য ভয়ে আমার বিষয় তোর থেকে লুকিয়ে রাখতো। শুধুমাত্র পিক গুলোর ভয়ে কাব্য তোকে কিছু বলতে পারতো না। সেদিন ছাদে কাব্য আমার হাত ধরেনি আমিই ওর হাত ধরে ছিলাম আর তোকে দেখেই কাব্য’র বুকে মাথা রেখেছিলাম, এর কিছুক্ষণ আগেই আমি কাব্য’কে পিক গুলো দেখিয়েছিলাম তাই ও কি করবে ভেবে পাচ্ছিল না।
রুমটা তোর ছিল তুই যেকোনো সময় রুমে চলে আসবি আমি জানতাম তাই ইচ্ছে করে জোড় করে কাব্য’কে কিস করেছিলাম আর ওর শার্টে লিপস্টিক এর দাগ লাগিয়েছিলাম যেন তুই দেখে ওকে ভুল বুঝিস। সবকিছু করেছিলাম তোদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি করার জন্য কিন্তু তাতেও যখন কাজ হয়নি তখন আমি অন্যকিছু ভাবি, গতরাতে হসপিটালের ইমারজেন্সি থেকে নয় আমিই ওকে ফোন করেছিলাম। কাব্য বুঝতে পারেনি, হসপিটালে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে আর গাড়িতে আমি আগে থেকেই বসে ছিলাম। কাব্য’র মাথার মধ্যে আঘাত করে ওকে অজ্ঞান করে দেই তারপর দুঘন্টার ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দেই। তোকে ফোন করে কাব্য’র শহরের বাইরের বাসায় যেতে বলি। আর আমি কাব্য’কে সেই বাসায় নিয়ে গিয়ে ওর শার্ট খুলে ফেলি যেন তুই দেখে ওকে ভুল বুঝিস, রাগের বশে তুই লক্ষ করিসনি কাব্য যে অজ্ঞান ছিল আর কাব্য নয় আমি ওকে জরিয়ে ধরেছিলাম। সবকিছুই করেছিলাম তোকে দূরে সরিয়ে কাব্য’র বউ হওয়ার জন্য, কাব্য’র সমস্ত সম্পত্তির মালিক হওয়ার জন্য কিন্তু…

চুপ হয়ে গেলো আরশি, আমিও চুপচাপ বসে রইলাম, ওর মতো মেয়ের সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাধছে।
আরশি: কাব্য বাবা মায়ের ভালোবাসা পায়নি আমি ছিলাম ওর প্রথম ভালোবাসা আর আমাকে হারানোর পর ও মানুষিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। তোকে পেয়ে কাব্য নতুন করে বাঁচতে শিখেছিল, তোকে হারানোর কথা কাব্য ভাবতেও পারতো না আর তাই ও সবসময় কথা লুকাতো, মিথ্যে বলতো তোর কাছে। কাব্য তোকে সত্যি ভালোবাসে।
আমি: চুপ করো ভালোবাসার তুমি কি বুঝ নষ্টা মেয়ে একটা। তোমার ভিতরে তো ভালোবাসা বলতে কিছু ছিল না যা ছিল সব লোভ। লোভেরও একটা সীমা থাকে তুমি তো নারী জাতিরও কলঙ্গ যে কিনা সামান্য কিছু সম্পত্তির জন্য নিজের সর্বশ… ছিঃ
তুমি আমার বোন এইটা ভাবতেও আমার ঘৃণা হচ্ছে তারচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে এইটা ভেবে যে তুমি একজন নারী। আরে একজন নারীর কাছে তো তার নিজের ইজ্জত সবার উপরে থাকে আর তুমি তো সামান্য সম্পত্তির কাছে নিজের ইজ্জত বিক্রি করে দিলে, এতো লোভ তোমার?
আম্মু: বৌমা ওর সাথে কথা না বাড়ানোটাই ভালো। সবকিছু তো শুনেছ কাব্য’র কোনো দোষ নেই, এখন ভেবে নাও কি করবে। আমি বাইরে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য। (আম্মু চলে যেতেই উঠে আরশির কাছে এসে দাঁড়ালাম)
আমি: আমার এখন কি ইচ্ছে হচ্ছে জানো? তোমাকে মেরে ফেলি আর এতো কষ্ট দিয়ে মারি যে আমার সন্তানের খুনের প্রতিশোধ নেওয়া হবে। সবাইকে এতো কষ্ট দেওয়ার শাস্তি তোমাকে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে, আফসোস এইটা থানা। (আরশি আমার দিকে তাকালো এইটা থানা না হলে হয়তো ও এখন আমাকেই মেরে ফেলতো)
আমি: তোমার এই রাগি চোখদুটো দেখে ইচ্ছে হচ্ছে তোমাকে টাটিয়ে দুইটা থাপ্পড় দেই কিন্তু তোমার গায়ে হাত তুলতেও আমার ঘৃণা হচ্ছে। সুযোগ পেয়েছ নিজেকে শুধরানোর শুধরে নাও নিজেকে এখনো সময় আছে ভালো হয়ে যাও। (এখনো আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে দেখে আমার রাগ আরো বেড়ে গেলো। থানায় আছি নাহলে ওকে এখনি…)
আরশি: তিলোত্তমা আমি কিন্তু একদিন বেরুবো তখন কিন্তু…
আমি: থুঃ (থুথু চিটিয়ে দিলাম ওর মুখের উপর)
আমি: তুই যেন জেলেই বুড়ি হয়ে মারা যাস আমি আর কাব্য সেই ব্যবস্থাই করবো।

বেরিয়ে আম্মুর কাছে চলে আসলাম, আম্মু গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছেন আমার জন্য। কাব্য তো একেবারে নির্দোষ না যথেষ্ট অন্যায় করেছে ও তাহলে আমি ওর কাছে ফিরে যাবো কেন? যদি যেতেই হয় যাবো কিন্তু একেবারে না, ওকে ছেড়ে চলে আসার জন্য যাবো।
আম্মু: বৌমা এসো।
আমি: আসছি।

বাসায় এসে অবাক হয়ে গেলাম, হিয়ার বিয়ে এখনো হয়নি। সবাই বসে বসে কার জন্য যেন অপেক্ষা করছে। কাব্য’র দিকে চোখ পড়লো একপাশে দাঁড়িয়ে আছে মাথায় ব্যান্ডেজ। হিয়া আর আকাশকে বিয়ের সাজে বসে থাকতে দেখে ওদের কাছে চলে আসলাম। হিয়া আমাকে দেখেই উঠে এসে জরিয়ে ধরলো।
হিয়া: ভাবি তুমি ঠিক আছ তো তোমার মাথায় ব্যান্ডেজ কেন?
আমি: আগে বলো তোমরা এখনো এখানে কেন?
হিয়া: বিয়ে হয়নি তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
আমি: আরে পাগলী রাত হয়ে গেছে সে খেয়াল আছে?
হিয়া: হউক তাতে কি? যে আমার সবকিছু ফিরিয়ে দিলো সে আমার বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকবে না তা কি করে হয়।
আমি: ঠিক আছে এখন অন্তত বিয়ের কাজ শুরু করো।
আব্বু: আমার বৌমা ফিরে এসেছে এখন তো শুরু হবেই। (হিয়ার দিকে আবার চোখ পড়তেই মনে পড়লো ও যে সুইসাইড করার চেষ্টা করেছিল। হিয়ার হাত ধরে টেনে সবার থেকে একটু দূরে নিয়ে আসলাম ওকে)

হিয়া: ভাবি কি হয়েছে?
আমি: তুমি সুইসাইড করতে চেয়েছিলে?
হিয়া: (নিশ্চুপ)
আমি: অন্যায় করলে তোমার ভাইয়া করেছে তার শাস্তি তুমি নিজেকে কেন দিতে চেয়েছিলে? যদি কিছু একটা হয়ে যেতো তোমার?
হিয়া: হয়নি তো, আমাকে রুমে যেতে অয়ন ভাইয়া দেখে ফেলেছিল তাই কিছু করতে পারিনি। করলে তো খুব বড় ভুল হতো কারণ ভাইয়া তো অন্যায় করেনি। আরশি সবকিছু এখানে বলে গেছে। হ্যাঁ ভাইয়া আগে খারাপ ছিল আর সেটা আরশির প্রেমে অন্ধ হয়ে কিন্তু এখন ভাইয়া তোমাকে পেয়ে অতীত ভুল গেছে ভালো হয়ে গেছে ভাইয়া।
আমি: হিয়া একটা কথা মনে রেখো সুইসাইড কখনো কোনো কিছুর সমাধান করে দিতে পারেনা।
হিয়া: সরি ভাবি আর কখনো এমন ভুল হবে না। তোমার কাছে অনুরোধ করছি প্লিজ ভাইয়াকে ছেড়ে যেও না ভাইয়া তোমাকে সত্যি ভালোবাসে। ভাইয়ার আগের ভুলগুলো সব ক্ষমা করে দাও নতুন করে শুরু করো সবকিছু।
আমি: চলো অনেক রাত হয়ে গেছে বিয়ের কাজ শেষ করতে হবে।

হিয়া আর আকাশের বিয়ে সম্পন্ন হলো, ওদের বিদায় দিয়ে কাব্য’র সাথে কথা বলার জন্য আসলাম। কিন্তু কাব্য তো ড্রয়িংরুমে নেই গেল কোথায়?
ভাবি: তিলোত্তমা কাকে খুঁজছিস?
অয়ন: কাকে আবার উনার ডাক্তারবাবুকে।
আম্মু: কাব্য ছাদে আছে তোমার সাথে কথা বলতে চায়। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভেবেচিন্তে নিও। (আব্বু আম্মু দুজন আলাদা বসে আছেন দেখে আব্বুর কাছে আসলাম)
আব্বু: আরে বৌমা আমাকে টেনে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ? (আব্বুকে এনে আম্মুর পাশে বসিয়ে দিলাম। আব্বুর হাতের মুঠোয় আম্মুর হাতটা পুরে দিলাম)
আমি: এখন দেখো তো কতো সুন্দর মানিয়েছে। সবসময় এভাবে থাকবে বুঝেছ? সব কষ্ট ভুলে নতুন করে আবার সবকিছু শুরু করো।
আব্বু: আমাদের মা বলেছে তাহলে তো শুনতেই হবে।
আম্মু: শুধু আমাদের নতুন করে শুরু করতে বলছ তুমি…
আমি: আসছি আম্মু।

কাব্য এক হাতে ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে অন্যহাতে গীটার নিয়ে চুপচাপ দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
কাব্য: তিলো…
আমি: তুমি তো এদিকে তাকাওনি আমি এসেছি বুঝলে কিভাবে?
কাব্য: তুমি আমার আশেপাশে থাকলে আমি এমনিতেই বুঝতে পারি দেখতে হয়না তোমাকে।
আমি: উঁহু সত্যিটা হচ্ছে তুমি আমার মুখ দেখতে চাও না।
কাব্য: হিয়া এমন একটা কান্ড করেছিল তো মাথা ঠিক ছিল না রাগের বশে উল্টাপাল্টা কথা বলেছি মন থেকে বলিনি। আর সত্যিই তুমি আমার আশেপাশে থাকলে আমি বুঝতে পারি, এইটা কিসের জন্য হয় জানো? ভালোবাসার জোরে।
আমি: ভালোবাসা? ভালোবাসার কি বুঝ তুমি? শুধু মিথ্যে বলা ঠকানো এসব ছাড়া তো কিছুই জানোনা।
কাব্য: হ্যাঁ আমি মিথ্যে বলেছি কিন্তু ঠকাইনি তোমাকে। তোমাকে হারানোর ভয়ে মিথ্যে বলেছি আমি কারণ আমার একটা নোংরা অতীত ছিল, তুমি এসব জানলে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে।
আমি: যাবো তো আমি ঠিকি। (এতোক্ষণে কাব্য আমার দিকে তাকালো, অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে)
আমি: শুধু আমি না এসব শুনলে যেকোনো মেয়েই ছেড়ে চলে যাবে। একটা কথা জানো তো মেয়েরা সব কষ্ট সহ্য করতে পারে কিন্তু নিজের প্রিয় মানুষটিকে অন্যকারো সাথে ভাগ করার কষ্ট সহ্য করতে পারে না। হয়তো এইটা তোমার অতীত ছিল কিন্তু আমি তো তোমাকে আরশির সাথে পিকে দেখেছি, তুমি আরশির ছিলে এটাই তো সত্যি? এই সত্যিটা আমি কিভাবে মেনে নিবো বলতে পারো?
কাব্য: কথায় আছে পাপ কখনো পিছু ছাড়েনা আমার পাপও আমার পিছু ছাড়েনি। ভুল তো মানুষই করে আমিও করেছি প্লিজ ক্ষমা করে দাও।
আমি: এইটা ভুল না অন্যায় করেছ তুমি, পাপ করেছ আর জেনে শুনে পাপ করলে তার কোনো ক্ষমা হয়না। তুমি তো অবুঝ নও তাহলে আরশির কথামতো চলতে কেন? কি ছিল আরশির মধ্যে যে বিয়ের আগে ফিজিক্যাল রিলেশন পাপ জেনেও তোমাকে আরশির কথামতো পাপ কাজ করতে হলো? হ্যাঁ মানছি আম্মু আব্বু তোমার পাশে ছিলেন না তাই তুমি আরশির ভালোবাসায় অন্ধ ছিলে তাই বলে এতোটা? এতো জঘন্য কাজ করতে পারলে?
কাব্য: (নিশ্চুপ)
আমি: আরশি তো তোমাকে ভালোই বাসতো না মোহে আটকে ছিলে তুমি। যে সত্যি ভালোবাসে সে কখনো বিয়ের আগে এসব করে ভালোবাসার মানুষটিকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয় না। আরশি তো নিজেও পাপ করেছে তোমাকে দিয়েও করিয়েছে এইটা বুঝতে পারনি?
কাব্য: তখন আমি সত্যি বুঝতে পারিনি অন্ধ ছিলাম আরশির ভালোবাসায়, প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও।
আমি: ক্ষমা? একটা কথা বলতো তুমি যদি অন্য একটি ছেলের সাথে আমাকে এমন অবস্থায় দেখতে তাহলে কি আমাকে ক্ষমা করতে?
কাব্য: তিলো…
আমি: অবাক হচ্ছ কেন? তখন তুমি কষ্ট পেতে, আমি কি এখন কষ্ট পাচ্ছি না। আমারো কষ্ট হচ্ছে ডাক্তারবাবু খুব কষ্ট হচ্ছে। একটা মেয়ে পৃথিবীর সব কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা রাখে শুধু এই একটা কষ্ট ছাড়া।
কাব্য: প্লিজ এভাবে কেঁদো না তোমার যা শাস্তি দিতে হয় আমাকে দাও আমি তোমার সব কথা শুনবো।
আমি: নতুন করে আর কি বলবো তোমাকে যে তুমি আমার কথা শুনবে, শুনেছ কখনো আমার কথা? আরশির কথা যদি আমাকে আগেই বলে দিতে তাহলে আজ এতোকিছু হতো না। তোমাকে বারবার বুঝানোর পরও তুমি আমার থেকে কথা লুকিয়েছ মিথ্যে বলেছ আমাকে আ…
কাব্য: হ্যাঁ মিথ্যে বলেছি কথা লুকিয়েছি আর সবকিছু করেছি শুধুমাত্র তোমাকে হারানোর ভয়ে। খুব ভয় হতো এসব জানার পর যদি ছেড়ে চলে যাও। তুমিই বলো ভালোবাসার মানুষকে হারানোর ভয় পাওয়াটা কি অস্বাভাবিক কিছু?
আমি: না ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু এতোটা ভয় ভালো না যে ভয় খারাপ হতে বাধ্য করে।
কাব্য: আমি খারাপ আমি অন্যায় করেছি এখন যা শাস্তি দেওয়ার দাও আমি রা…
আমি: তোমার শাস্তি একটাই আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি।
কাব্য: এমনটা করোনা প্লিজ আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। তুমি তো আমায় ভালোবাস তাহলে আমার অন্যায় গুলো ক্ষমা করতে পারছ না কেন? তিলো প্লিজ…
আমি: আসি।

কাব্য হাটু গেড়ে বসে পড়লো, আর পিছন ফিরে তাকালাম না চলে আসলাম। কাব্য’কে শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন অনেক অন্যায় করেছে অনেক কষ্ট দিয়েছে আমায়।
আম্মু: বৌমা কোথায় যাচ্ছ?
আমি: চলে যাচ্ছি।
তিশা: তমা পাগল হয়েছিস কি বলছিস এসব?
আমি: যে কথায় কথায় মিথ্যে বলে, নিজের স্ত্রীর থেকে কথা লুকায় তার সাথে থাকা সম্ভব না।
আব্বু: মারে কাব্য তো এসব তোমাকে হারানোর ভয়ে করেছে বড্ড ভালোবাসে যে তোমায়।
আম্মু: আচ্ছা বৌমা তুমি তো আমার ছেলেকে ভালোবাস তাহলে ছেড়ে যেতে কষ্ট হচ্ছে না তোমার? কেন ওর অন্যায়টা ক্ষমা করতে পারছ না? ভালোবাসা তো ছেড়ে যেতে শিখায় না ক্ষমা করতে শিখায়।
আমি: ভালোবাসি না আমি ওকে, শুনতে পেয়েছেন আমি আপনার ছেলেকে ভালোবাসি না। খুব খারাপ ও আর আমি কোনো খারাপ মানুষকে ভালোবাসি না।
তিশা: তমা আস্তে প্লিজ, এভাবে কান্নাকাটি করলে কিন্তু তোর বাচ্চার ক্ষতি হবে। (তিশার কথা শুনে আম্মুর দিকে তাকালাম, তাহলে আম্মু সবাইকে বলে দিয়েছে আমি যে প্রেগন্যান্ট)
আম্মু: সবাইকে বলেছি শুধু কাব্য’কে ছাড়া, ভেবেছিলাম এতো বড় খুশির খবরটা তুমি নিজে কাব্য’কে দিলে কাব্য বেশি খুশি হবে কিন্তু…
আব্বু: বৌমা আমার অপদার্থ ছেলেটাকে ক্ষমা করে দাও অন্তত আমাদের বংশের নতুন মেহমানের জন্য।
আম্মু: আর ক্ষমা করতে হবে না। আসলে কাব্য ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওর মরে যাওয়াই উচিত।
আমি: মানে? মরে যাওয়া উচিত মানে?
আম্মু: তুমি তো আমার ছেলেকে ভালোবাস না তাহলে তুমি জেনে কি করবে?
আমি: কে বললো ভালোবাসি না খুব ভালোবাসি তো…
আম্মু: কাব্য ভেবে নিয়েছে তুমি ওকে ক্ষমা না করলে ও সুইসাইড করবে আর ওর পকেটে বিষের বোতলও দেখেছি আমি।
আমি: কি?
ভাবি: আরে তিলোত্তমা আস্তে যা পড়ে যাবি।

দৌড়ে ছাদে আসলাম কাব্য বসে বসে গীটার বাজাচ্ছে আর কাঁদছে। গীটার কেড়ে নিয়ে ওর শার্ট খামছে ধরে ওর শার্টের পকেটে হাত দিলাম।
কাব্য: আমি জানতাম তুমি ফিরে আসবে কিন্তু এসেই যে আমার পকেটে…
আমি: এইটা কি?
কাব্য: কি এইটা?
আমি: তোমার পকেটে বিষের বোতল কেন?
কাব্য: আমি তো জানিনা।
আমি: জানোনা? সুইসাইড করতে চাও আমাকে একা রেখে মরে যেতে চাও।
কাব্য: আরে মারছ কেন লাগছে তো।
আম্মু: আস্তে কিল দেরে মা আমার ছেলেটা ব্যথা পাচ্ছে। (আম্মুর কন্ঠ শুনে কাব্য’কে ছেড়ে দিলাম, সবাই ছাদে চলে এসেছে দেখে চুপচাপ দূরে দাঁড়িয়ে রইলাম)
আম্মু: এই বোতলের ব্যাপারে কাব্য কিছু জানেনা বোকা ছেলে তো বোতলটা কখন ওর পকেটে রেখেছি বুঝতেই পারেনি।
কাব্য: আম্মু তুমি?
আম্মু: ছেলে আর ছেলের বউকে এক করার জন্য এইটুকু করতে হলো আর বৌমা ভয় পেয়ো না বোতলে বিষের বদলে মধু রাখা আছে। (আম্মুর চালাকি দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম সবাই হাসতে হাসতে চলে গেলো)
কাব্য: তিলো পাগলী ক্ষমা করে দাও প্লিজ আর কখনো মিথ্যে বলবো না কথা লুকাবো না এইযে কান ধরছি।
আমি: উফফ লাগছে ছাড়ো আমার কান ধরেছ কেন?
কাব্য: কারণ তোমার কান মানে আমার কান আর আমা… (কাব্য’র একটা হাত এনে আমার পেটের উপর ধরলাম, ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে)
আমি: কি বিশ্বাস হচ্ছে না?
কাব্য: সত্যি বলছ আমি আব্বু হবো আর তুমি আম্মু হবে?
আমি: জ্বী সত্যি বলছি। (কাব্য খুশিতে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে কোলে তুলে নিলো)

কাব্য খুশিতে আমাকে কোলে করে নিয়ে ছাদের এপাশ থেকে ওপাশে হাটছে আর আমি দুহাতে ওর গলা জরিয়ে ধরে ওর দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ নয়নে ওর খুশি দেখছি।
আমি: অনেক হয়েছে এবার ছাড়ো।
কাব্য: দাঁড়াও। (কাব্য আমাকে দাড় করিয়ে দিয়ে হাটু গেড়ে বসে পড়লো)
আমি: কি করছ?
কাব্য: আমার আম্মুর সাথে কথা বলছি। (কাব্য আমার কোমর জরিয়ে ধরে আমার পেটের মধ্যে মুখ ঘষছে)
কাব্য: ও আম্মু তোমার মামুনিকে বলো তো আমাকে ক্ষমা করে দিতে। এইযে আমি তোমার কাছে প্রমিজ করছি তোমার মামুনিকে আর কখনো কষ্ট দিবো না। (কাব্য’র পাগলামি দেখে সব কষ্ট ভুলে গেলাম। কাব্য’র পাশে বসে ওর কাধে মাথা রাখলাম)
আমি: আচ্ছা তুমি জানো কিভাবে আমাদের মেয়ে হবে?
কাব্য: আমার মন বলেছে আর আমি তো আমার আম্মুর নামও ঠিক করে ফেলেছি।
আমি: তাই কি নাম শুনি।
কাব্য: নওমি।
আমি: কাব্য-তিলোত্তমা-নওমি খুব সুন্দর। (কাব্য আমার একটা হাত ওর হাতের মুঠোয় নিয়ে আমার গলায় নাক ঘষতে শুরু করলো)
আমি: কি করছ ছাড়ো।
কাব্য: আদর করছি ছাড়া যাবে না।
আমি: এই তুমি রোমান্টিক ডাক্তার থেকে বলদ হইলা কবে? আমার পাঠক/পাঠিকারা তো তোমাকে বলদ ডাকে হিহিহি…
কাব্য: কি? (কাব্য আমাকে ছেড়ে দিলো, আমি গীটারের দিকে তাকিয়ে আছি দেখে ও উঠে গিয়ে গীটারটা নিয়ে আসলো)
আমি: কি ডাক্তারবাবু আপনার গীটারে কি এখন…
কাব্য: রোমান্টিক সুর বাজবে বুঝেছ, আমি যে রোমান্টিকই আছি প্রমাণ করে দিবো হু।
আমি: তাই?

কাব্য গীটার বাজাচ্ছে আমি ওর কাধে মাথা রেখে মুগ্ধ হয়ে শুনছি। কাব্য আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে গান ধরলো…

তুমি আমার এমনি একজন
যারে একজনমে ভালোবেসে
ভরবে না এ মন….

এক জনমের ভালোবাসা এক জনমের কাছে আসা
এক জনমের ভালোবাসা এক জনমের কাছে আসা
একটি চোখের পলক পড়তে লাগে যতক্ষণ।

তুমি আমার এমনি একজন
যারে এক জনমে ভালোবেসে
ভরবে না এ মন…

ভালোবাসার সাগর তুমি ভালোবাসার সাগর তুমি
বুকে অতৈ জল…
তবু পিপাসাতে আঁখি তবু পিপাসাতে আঁখি
হয়রে ছলছল হয়রে ছলছল।
তোমার মিলনে বুঝি গো জীবন বিরহে মরণ বিরহে মরণ।

তুমি আমার এমনি একজন
যারে একজনমে ভালোবেসে
ভরবে না এ মন….

সমাপ্ত???

(গল্পের পুরো কাহিনী, চরিত্র সবকিছু কাল্পনিক ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার সাথে থেকে আমাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য। সবাই সবার মতো করে মন্তব্য করেছ আমাকে উৎসাহ জাগিয়েছ, আমার তো মনে হচ্ছিল এই গল্পের মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে একটি পরিবার হয়ে গেছি। আশা করি আমার সব গল্পে এভাবেই সবাই পাশে থাকবে টাটা)

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ