Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রোমান্টিক ডাক্তাররোমান্টিক_ডাক্তার পার্ট: ২৩

রোমান্টিক_ডাক্তার পার্ট: ২৩

রোমান্টিক_ডাক্তার

পার্ট: ২৩

লেখিকা: সুলতানা তমা

চুপচাপ অয়নের পিছনে দাঁড়িয়ে আছি, আগের কথা গুলো ভেবে গাঁ শিউরে উঠছে আমার।
অয়ন: ভাবি প্লিজ ভয় পেয়ো না।
আমি: এখন কি হবে?
–কিছুই হবে না আমাদের কাজ হয়ে গেছে চলে যাচ্ছি। (লোকটার কথা শুনে অয়নের দিকে অবাক হয়ে তাকালাম)
অয়ন: মানে?
–মানে আমাদের কাজ হয়ে গেছে। (লোক দুটু চলে যাচ্ছে আমরা দুজন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কি হলো এইটা?)
অয়ন: ভাবি তোমার মাথায় কিছু ঢুকেছে আমার মাথায় কিন্তু কিছুই ঢুকেনি।
আমি: এই সময়ে তুমি আবার হাসছ, চলো সন্ধ্যা নেমে এসেছে এখানে থাকা ঠিক হবে না।
অয়ন: লোক দুইটার সাথে হাত মিলানো দরকার ছিল।
আমি: অয়ন ঠাট্টা রাখো চলো এখন।
অয়ন: ওকে চলো।

গাড়িতে বসে বসে ভাবছি বিষয়টা কি হলো, লোক দুইটা আমাদের কোনো ক্ষতি করলো না কেন? উল্টো বললো ওদের কাজ হয়ে গেছে কি কাজ হয়েছে ওদের?
অয়ন: ভাবি আমি কিন্তু এখন ঠাট্টা করছি না সিরিয়াসলি বলছি বিষয়টা কি হলো বলতো।
আমি: জানিনা বুঝতে পারছি না।
অয়ন: আচ্ছা লোক দুইটা কে?
আমি: ওরাই তো কক্সবাজার আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল।
অয়ন: ওরা তোমাকে মারতে চায় কেন?
আমি: আরশি টাকা দিয়ে করাচ্ছে এসব।
অয়ন: আআআররশি…(অয়ন হঠাৎ করে গাড়ি থামিয়ে দিলো, কি ব্যাপার ও আরশির নাম শুনে কেঁপে উঠলো কেন)
আমি: কি হলো অয়ন?
অয়ন: হুম কিছুনা।
আমি: আরশির নাম শুনে তুমি এমন কেঁপে উঠলে কেন?
অয়ন: কোথায় নাতো।
আমি: হুম চলো। (অয়ন এখনো কি যেন ভাবছে, আচ্ছা এমন নয় তো ওরা সবাই আরশির বিষয়ে আমার থেকে কিছু লুকুচ্ছে)
অয়ন: ভাবি তোমার এখানে আসাটা কিন্তু সার্থক হয়েছে।
আমি: কিভাবে?
অয়ন: ওই ঠিকানায় রেজাউল চৌধুরী মানে ভাইয়ার আব্বু থাকেন।
আমি: সত্যি বলছ?
অয়ন: হ্যাঁ আমি ওখানকার একজন লোককে জিজ্ঞেস করেছিলাম।
আমি: তারমানে আব্বুকে আমি পেয়ে গেছি এখন শুধু ওদের ভুল বুঝাবুঝি মিটিয়ে বাসায় নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা।
অয়ন: হুম।
আমি: কিন্তু আম্মু?
অয়ন: পেয়ে যাবে দেখো।
আমি: হুম।

বাসায় ফিরতে আটটা বেজে গেলো, কাব্য হয়তো চলে এসেছে। কলিংবেল বাজাতেই কাব্য এসে দরজা খুললো। ড্রয়িংরুমে ভাইয়া আর ভাবি বসা।
ভাইয়া: তিলোত্তমা কোথায় গিয়েছিলে?
আমি: একটু কাজ ছিল।
কাব্য: রাত আটটার সময় বাসায় ফিরেছ তা কি এমন কাজ ছিল জানতে পারি?
আমি: এভাবে কথা বলছ কেন?
কাব্য: তো কিভাবে বলবো? (বাহ্ শুভ্রার পাতানো জালে তো কাব্য আটকে গেছে)
অয়ন: ভাইয়া আমি বল…
আমি: অয়ন চুপ করো কিছু বলতে হবে না যাও রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।
কাব্য: তুমি কোথায় যাচ্ছ?
আমি: রুমে যাচ্ছি ফ্রেশ হবো।
কাব্য: আমার প্রশ্নের উত্তর পাইনি।
হিয়া: আমি দিচ্ছি তোমার প্রশ্নের উত্তর। (হিয়া নিচে নেমে আসছে, কি বলবে ও। হিয়া তো জানেইনা)
হিয়া: ভাবিকে আমি একটা কাজে পাঠিয়েছিলাম।
কাব্য: আর অয়ন?
হিয়া: ভাবিকে একা পাঠাবো নাকি তাইতো ছোট ভাইয়াকে সাথে পাঠিয়েছিলাম।
কাব্য: কিন্তু তু…
হিয়া: উত্তর তো পেয়ে গেছ তাহলে আর কথা কিসের। (কাব্য চুপচাপ রুমে চলে গেলো, আমিও চলে আসলাম)

ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি কাব্য মাথা নিচু করে বিছানায় বসে আছে। কাব্য কি সত্যি শুভ্রার পাতানো জালে পা দিলো নাকি?
আমি: হিয়ার বিয়ের কি হলো?
কাব্য: কাল ওরা আসবে তারিখ ঠিক করে যাবে।
আমি: রেগে আছ?
কাব্য: আমি রাগ করার কে?
আমি: বাব্বাহ্ আমার ডাক্তারবাবুটা একটু বেশিই রাগ করে ফেলেছে দেখছি।
কাব্য: তিলো ভালো লাগছে না একা থাকতে দাও। (কাব্য চুপচাপ বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো)
আমি: খাবে না?
কাব্য: খিদে নেই।
আমি: ওকে আমিও খাবো না।
কাব্য কোনো উত্তর দিচ্ছে না দেখে ফোনটা হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে আসলাম। তিশাকে ফোন দিলাম।
তিশা: আমাকে তো ভুলেই গেছিস।
আমি: যা রহস্যের জালে আটকা পড়েছি আমি ভুলবোই তো।
তিশা: কি হয়েছে?
আমি: আমাকে মারার চেষ্টা করেছিল কাব্য’র এক্স জিএফ আর ও এখনো সবার ক্ষতি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিশা: কাব্য তো কখনো আমাকে ওর জিএফ সম্পর্কে কিছু বলেনি।
আমি: জানিস ওরা সবাই আমার থেকে কি যেন লুকিয়ে রাখছে।
তিশা: কি লুকুবে?
আমি: জানিনা।
তিশা: কাব্য’কে বলে মেয়েটার একটা ব্যবস্থা কর আর এসব নিয়ে ভাবিস না।
আমি: হুম। তোরা বিয়ে করছিস কবে?
তিশা: আমার পড়াশোনা শেষ হলে এখন তো… (হঠাৎ শুনতে পেলাম কাব্য কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে অনেকটা রেগে)
আমি: তিশা এখন রাখছি।
তিশা: ওকে।

ফোন রেখে রুমে আসলাম, আমাকে দেখে কাব্য ফোন কেটে দিলো। রাগে ওর চোখ দুটু লাল হয়ে আছে।
আমি: কি হয়েছে?
কাব্য: (নিশ্চুপ)
আমি: কি হলো আমার সাথে কথা বলছ না কেন?
কাব্য: (নিশ্চুপ)
আমি: দেখি তোমার ফোনটা দাও। (হাত বাড়াতেই কাব্য ফোনটা সরিয়ে ফেললো, তারমানে কাব্য শুভ্রার কথা বিশ্বাস করেছে। এখন ও রেগে আছে যাই বলি আরো রেগে যাবে পরে বুঝিয়ে বলতে হবে)
আমি: আপনজনদের উপর বিশ্বাস হারানো ঠিক না পরে পস্তাতে হয়। (কথাটা শুনে কাব্য আমার দিকে তাকালো। চুপচাপ এসে শুয়ে পড়লাম)

আমার তো বিশ্বাই হচ্ছে না যে কাব্য আমাকে আর অয়নকে সন্দেহ করছে সামান্য শুভ্রা মেয়েটার কথায়। অয়ন তো আমার ছোট ভাইয়ের মতো আর কাব্য কিনা ছিঃ।

সকালে ঘুম ভাঙতেই পাশ ফিরে তাকালাম, কাব্য তো পাশে নেই। কাব্য এতোটা চেঞ্জ হয়ে গেলো যে আজ আমাকে ডেকে তুললো না। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি আটটা বাজে, ইসস অনেক বেলা হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলাম।

কাব্য তো ড্রয়িংরুমেও নেই গেলো কোথায়?
ভাবি: চলে আসবে চিন্তা করিস না। (ভাবির কথা শুনে কিচেনের দিকে এগিয়ে গেলাম)
ভাবি: কিছু খেয়ে নে রাতেও তো কিছুই…
আমি: ডাক্তারবাবু খেয়েছে?
ভাবি: তোকে ছাড়া কখনো খায়?
আমি: বাদ দাও তো।
ভাবি: না খেলে কিচেন থেকে চলে যা আমাকে হেল্প করতে হবে না।
আমি: এতো মেহমানের রান্না তুমি একা করবে?
ভাবি: হুম পারবো।
আমি: ডাক্তারবাবু আসলে খেয়ে নিবো।
ভাবি: ঠিক আছে।

ভাবিকে রান্নায় হেল্প করছি আর বার বার দরজার দিকে তাকাচ্ছি কাব্য তো এখনো আসলো না অনেক বেলা হয়ে গেছে তো। এই শুভ্রা আর আরশির ব্যবস্থা এখন করতেই হবে নাহলে শান্তিতে থাকতে পারবো না।
হিয়া: ভাবি বার বার ওদিকে কি দেখছ ভাইয়াকে ছাড়া বুঝি ভালো লাগছে না। (হিয়ার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলাম। সত্যিই তো ভালো লাগছে না, ওকে ছাড়া সবকিছু কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগে)
হিয়া: চিন্তা করো না এখন না আসলে একটু পর তো বাসায় আসতেই হবে মেহমান আসবে না?
আমি: আচ্ছা হিয়া গতকাল তুমি মিথ্যে বললে কেন?
হিয়া: এইটা না বললে ভাইয়া তোমাকে বকা দিতো আরো অনেক প্রশ্ন করতো। আমি জানি তুমি আমাকে যে কথা দিয়েছ সে কথা রাখতেই কোথাও গিয়েছিলে।
আমি: হুম।
হিয়া: কথাটা কিন্তু রেখো ভাবি।
আমি: কথা যখন দিয়েছি রাখবো। তোমরা আমাকে একটা হেল্প করো।
হিয়া: কি?
আমি: আরশির বিষয়ে আমাকে সবকিছু বলো।
ভাবি: আআররশি ওর কথা তুই জানলি কিভাবে?
আমি: আচ্ছা এই নামটা শুনলে তোমরা সবাই এতো ভয় পাও কেন?
হিয়া: ভয় তো পাবোই ও যা…
কাব্য: তিলো রুমে এসো। (কাব্য চলে এসেছে দেখে চুপচাপ রুমে চলে আসলাম)

কাব্য দাঁড়িয়ে আছে জানি আজ অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে, কিন্তু আরশির কথা সবকিছু না বললে আমিও কোনো প্রশ্নের উত্তর দিবো না।
কাব্য: গতকাল কোথায় গিয়েছিলে?
আমি: তার আগে তোমার ফোনটা আমার হাতে দাও সব প্রশ্নের উত্তর দিবো। (কাব্য ফোনটা আমার হাতে দিয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। যা সন্দেহ করেছিলাম তাই, শুভ্রা কাব্য’কে মেসেজ তো করেছেই সাথে অয়ন আর আমার পিক দিয়েছে। ভয় পেয়ে অয়নের হাত চেপে ধরেছিলাম, আমাদের দুজনের এই হাতের পিক। এখন বুঝলাম লোক দুটু কাজ হয়ে গেছে বলেছিল কেন)
আমি: আব্বুকে খুঁজতে গিয়েছিলাম এর বেশি কিছু এখন জানতে চেয়ো না। পিক নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলে অনেক কথা বলতে হবে, বাড়িতে মেহমান আসছে কোনো অশান্তি চাই না।
কাব্য: মনে রেখো মেহমান চলে যাওয়ার পর আমি আবারো প্রশ্ন করবো তখন কিন্তু এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে না।
আমি: কখোনোই এড়িয়ে যাইনি তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত আছি। আর হ্যাঁ তুমিও প্রস্তুত থেকো কারণ আমাকে প্রশ্ন করলে আগে তোমার অতীত গুলো সামনে আনতে হবে। (কাব্য’কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম)

হিয়াকে সাজাচ্ছি কিন্তু কোনো কিছুতে মন বসছে না সবকিছু অসহ্য লাগছে, কাব্য আমাকে সন্দেহ করেছে তাও একটা বাইরের মেয়ের কথায় এইটা ভেবেই কান্না পাচ্ছে। যদি একটু কাঁদতে পারতাম তাহলে হয়তো কিছুটা হালকা লাগতো নিজেকে।
হিয়া: ভাবি কি হয়েছে?
আমি: আচ্ছা হিয়া প্রিয় মানুষ সন্দেহ করলে এতো কষ্ট হয় কেন?
হিয়া: হঠাৎ এই প্রশ্ন করছ কেন কিছু হয়েছে কি (আনমনে কি বলে ফেললাম, ওরা এসব জানলে তো কষ্ট পাবে)
আমি: এমনি বলেছি চলো।

হিয়া মেহমানের সামনে বসে আছে আর আমি ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছি, ইচ্ছে হচ্ছে রুমে চলে যাই কোনো কিছুতে মন বসাতে পারছি না। শুভ্রা যা বলেছে সব তো মিথ্যে কিন্তু কাব্য আমাকে সন্দেহ করলো কিভাবে, ও না আমায় ভালোবাসে, এই ওর ভালোবাসা এই ওর আমার প্রতি বিশ্বাস।
ভাইয়া: হিয়া তোর মতামত কি (হঠাৎ ভাইয়ার কথায় ভাবনায় ছ্যাদ পড়লো)
অয়ন: ভাবি হিয়াকে জিজ্ঞেস করো আকাশকে পছন্দ হয়েছে কিনা।
আমি: ওকে বরং রুমে নিয়ে যাই তারপর ওর মতামত জেনে জানিয়ে দিবো।
ছেলের বাবা: ঠিক আছে মা।

হিয়াকে নিয়ে রুমে আসলাম পিছু পিছু ভাবিও আসলেন।
ভাবি: হিয়া কি বলবো ওদের আকাশকে পছন্দ হয়েছে?
হিয়া: পছন্দ তো হয়েছে কিন্তু ছোট ভাবি…
আমি: চিন্তা করোনা আমার কথা আমি রাখবো।
হিয়া: ওকে ভাইয়াদের গিয়ে বলো আমি রাজি।
ভাবি: তিলোত্তমা চল।
আমি: তুমি যাও আমার শরীর ভালো লাগছে না রুমে যাচ্ছি।

দৌড়ে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলাম। আর পারছি না খুব কষ্ট হচ্ছে। কাব্য আমাকে এতোটাই সন্দেহ করেছে যে আজ একবারো আমার দিকে তাকায়নি অথচ অন্যদিন…

হঠাৎ দরজায় ধাক্কার শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে গেলো, কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। দরজা খুলে কাব্য’কে দেখে আবার বিছানায় এসে বসে পড়লাম।
কাব্য: কি হয়েছে তোমার নিচে যাওনি কেন, আকাশের মা তোমাকে খুঁজেছে।
আমি: চলে গেছে ওরা?
কাব্য: কয়টা বাজে দেখো তাহলেই বুঝতে পারবে। (ওর কথা শুনে ঘড়ির দিকে তাকালাম রাত নয়টা বাজে, এতোক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি)
কাব্য: তোমার চোখ লাল হয়ে আছে কেন, এতো সময় কান্না করেছ তাইনা?
আমি: প্রিয় মানুষ যখন সন্দেহ করে তখন তো কান্না পাবেই।
কাব্য: (নিশ্চুপ)
আমি: তোমার প্রশ্ন গুলো করবে না? অয়নের সাথে আমার কিসের সম্পর্ক জিজ্ঞেস করবে না? অয়নের সাথে কোথায় লং ড্রাইভে গিয়েছিলাম জিজ্ঞেস করবে না? অয়নের হাত চেপে ধরেছিলাম কেন জিজ্ঞেস করবে না?
কাব্য: হুম বলো।
আমি: তার আগে তুমি আমাকে বলো, তুমি কাকে বেশি বিশ্বাস করো আমাকে নাকি আরশি আর শুভ্রাকে? (সবাই যেমন আরশি নাম শুনে কেঁপে উঠে কাব্যও তেমনি কেঁপে উঠলো)
কাব্য: আরশির ব্যাপারে তুমি জানলে কিভাবে?
আমি: সামান্য নাম জানতে চেয়েছিলাম তাতেই রাগ করে আমার থেকে একরাত একদিন দূরে থেকেছ আর আজ এই আরশির জন্যই আবার আমাকে সন্দেহ করছ।
কাব্য: সন্দেহ করার জন্য যথেষ্ট কারণ আছে তাই করেছি।
আমি: হুম তোমার এক্স জিএফ তোমাকে পিক দিয়েছে যেহেতু তাহলে তো তুমি নিজের বউকে বিশ্বাস না করে এক্স জিএফ কেই বিশ্বাস করবে।
কাব্য: তিলো ত…
আমি: আমি কিন্তু তোমাকে আগেই বলেছিলাম আমার থেকে কিছু লুকাবে না কিন্তু তুমি লুকিয়েছ। আরশির কথা আমাকে বললে কি হতো আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যেতাম? একটা মানুষের কিছু অতীত থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক এইটা লোকানোর কি আছে।
কাব্য: আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।
আমি: আব্বুকে খুঁজতে গিয়েছিলাম একা এতো দূর যাওয়া সম্ভব ছিল না তাই অয়নকে সাথে নিয়েছিলাম, সেখানে তোমার আরশির লোক আমাদে…
কাব্য: আমার আরশি মানে?
আমি: হ্যাঁ তোমারই আরশি আমি তোমার কেউ না কারণ তুমি আমাকে নয় আরশিকে বিশ্বাস করেছ। লোক দুটুকে দেখে আমি ভয় পেয়ে অয়নের হাত চেপে ধরেছিলাম। অয়নকে আমি অন্য কিছু ভেবে ওর হাত চেপে ধরিনি ছোট দেবর ভেবেই ধরেছিলাম আর ছোট দেবর কেমন হয় জানো? ছোট ভাইয়ের মতো হয়। এতো ভয় পেয়েছিলাম কেন জানো কারণ ওরাই আগে আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল আমার বাচ্চাটাকে খুন করেছিল। আর আরশি এই সময়টার সুযোগ নিয়েছে, পাত পেতেছে ওরা আর তুমি বোকার মতো ওদের পাতানো ফাদে পা দিয়েছ আমাকে অবিশ্বাস করেছ নিজের ছোট ভাইকে অবিশ্বাস করেছ। ছিঃ অয়ন একবার এসব শুনলে তো তোমার প্রতি ওর শ্রদ্ধাটাই চলে যাবে।
কাব্য: (নিশ্চুপ)
আমি: এখন চুপ হয়ে আছ কেন আর প্রশ্ন করবে না? তুমি অতীতে কি করেছ না করেছ এসবের হিসাব এখন আমাদের দিতে হচ্ছে কেন? তুমি আরশির সাথে প্রতারণা করেছ আর সেটার ফল ভোগ করতে হয়েছে আমার সন্তানকে, পৃথিবীতে আসার আগেই ওকে জীবন দিতে হয়েছে শুধু তোমার জন্য।
কাব্য: তিলো।
আমি: এভাবে তাকাচ্ছ কেন ভুল কিছু বলেছি নাকি? আরশির সাথে কি প্রতারণা করেছ বলো?
কাব্য: সবাই জানে আমি আরশির সাথে কোনো প্রতারণা করিনি বরং ও করেছিল, আমাকে মদ খাইয়ে মাতাল করে সবকিছু ওর নামে লিখে নিতে চেয়েছিল। আমি সিগনেচার করার আগ মুহূর্তে ফারাবী চলে এসেছিল তারপর ওকে জেলেও দেয়েছিলাম। আমি তো জানিই না আরশি জেল থেকে কবে ছাড়া পেয়েছে।
আমি: হুম এবার পারলে তোমার আরশিকে সামলাও, ও যদি আর কখনো আমাদের কারো কোনো ক্ষতি করেছে তাহলে ওকে আবার জেলে যেতে হবে।
কাব্য: বার বার আমার আরশি বলছ কেন?
আমি: কারণ আরশিই তোমার ভালোবাসা আমি তোমার কেউ না। আর শুনো তোমার হয়তো আব্বু আম্মুকে প্রয়োজন নেই কিন্তু হিয়ার আছে তাই আমি উনাদের খুঁজে আনবো। অবশ্য আব্বুকে পেয়ে গেছি এখন আম্মুকে খুঁজা বাকি শুধু।
কাব্য: কোথায় যাচ্ছ?
আমি: যে আমাকে বিশ্বাস করে না তার সাথে কথা বলার ইচ্ছা বা এক রুমে থাকার ইচ্ছা কোনটাই আমার নেই। (রুম থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলাম পরক্ষণেই মনে হলো অয়ন যদি কিছু বুঝতে পারে তাহলে তো কষ্ট পাবে। কাব্য যতোই ভুল বুঝুক আমি তো জানি অয়ন আমাকে শুধু ভাবি নয় বোনও ভাবে। রুমের বাইরে যাওয়া ঠিক হবে না যে কেউ সন্দেহ করবে তাই বারান্দায় চলে আসলাম)

বারান্দায় রাখা কাউচে এসে শুয়ে পড়লাম, এখানেই ঘুমাবো আজ। কাব্য’কে শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন, বউকে বিশ্বাস না করে এক্স জিএফ কে বিশ্বাস করার শাস্তি আজ ও পাবে। আর ওর আরশিকে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থাটাও খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে, অন্য কিছুর জন্য না হউক আমার সন্তানকে খুন করেছে এইটার শাস্তি তো ওকে আমি দিবোই।

চলবে?

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ