Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রোমান্টিক ডাক্তাররোমান্টিক_ডাক্তার পার্ট: ১৬

রোমান্টিক_ডাক্তার পার্ট: ১৬

রোমান্টিক_ডাক্তার

পার্ট: ১৬

লেখিকা: সুলতানা তমা

কাব্য আমার চুলে হাত বুলাচ্ছে আর আমি পরম সুখে ওর বুকে শুয়ে আছি। কাব্য ভাবছে আমি ঘুমে কিন্তু আমি তো জেগে আছি আর ওর ছোঁয়া গুলো অনুভব করছি কাব্য সেটা বুঝতেই পারছে না হিহিহি। হঠাৎ রাতের কথা মনে পড়তেই নিমিষে মুখের হাসি মিলিয়ে গেলো, কাব্য’কে এখনি বলা প্রয়োজন। লাফ দিয়ে উঠে বসলাম।
কাব্য: কি হলো?
আমি: কিছুনা।
কাব্য: এভাবে লাফ দিয়ে উঠলে যে।
আমি: আচ্ছা তুমি না আমাকে কি সারপ্রাইজ দিবে।
কাব্য: সারপ্রাইজ জানার জন্য মন পাগল হয়ে আছে দেখছি।
আমি: বলোনা।
কাব্য: আজ বিকেলে আমরা হানিমুনে যাচ্ছি। (তারমানে ওই লোকটার কথাই ঠিক)
আমি: ওহ কোথায় যাচ্ছি।
কাব্য: কক্সবাজার।
আমি: না গেলে হয় না?
কাব্য: জানতাম তুমি রাগ করবে, প্লিজ লক্ষীটি রাগ করোনা।
আমি: রাগ করবো কেন রাগ করিনি তো।
কাব্য: এইযে বিয়ের একমাস পর হানিমুনে যাচ্ছি তাও আবার কক্সবাজার। তুমি হয়তো অন্য কোথাও যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলে, কথা দিচ্ছি আবার যখনি সুযোগ পাবো তখন অন্য কোথাও নিয়ে যাবো, তুমি যেখানে বলবে সেখানেই যাবো, খুশি?
আমি: বলেছি নাকি আমি অন্য কোথাও যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছি আমি তো…
কাব্য: আসলে ওখানে এক বছর ছিলাম তো সেই হসপিটালের সবাই তোমাকে দেখতে চাইছে আর তোমার সাথে তো আমার প্রথম দেখাটা কক্সবাজারেই হয়েছিল তাই ওখানেই যেতে চাইছি। প্লিজ তুমি রাগ করে থেকো না।
আমি: কতোবার বলবো আমি রাগ করিনি, আসলে তো আমি হানিমুনেই যেতে চাচ্ছি না। (চিৎকার করে উঠলাম কাব্য অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে)
কাব্য: আশ্চর্য তুমি এতো রেগে যাচ্ছ কেন? (চুপচাপ বিছানায় বসে আছি, এভাবে রেগে যাওয়াটা বোধহয় ঠিক হয়নি আমার। কিন্তু আমি কি করবো লোকটা তো ভয় দেখিয়েই যাচ্ছে)
কাব্য: সবাই তো বিয়ের পর হানিমুনে যেতে চায় কিন্তু তুমি…
আমি: সরি। (কাব্য’র কাছে এসে ওকে জরিয়ে ধরলাম)
কাব্য: হু হয়েছে এবার বলতো রেগে আছ কেন?
আমি: আমি রাগ করিনি আসলে তো আমি ভয়ে আছি।
কাব্য: ভয়, কিসের ভয়?

লোকটার কথা সবকিছু কাব্য’কে খুলে বললাম। ফোন থেকে লোকটার নাম্বারও কাব্য’কে দেখালাম। কাব্য আমার মতো এতোটা ভয় পায়নি কিন্তু বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে ওকে।
কাব্য: এখন তুমি কি চাও।
আমি: আমরা হানিমুনে যাবো না প্লিজ।
কাব্য: এতো কষ্ট করে ছুটি নিলাম। সবকিছু ঠিকঠাক, হোটেলে রুমও বুক করে ফেলেছি আর এখন কোথাকার একটা লোকের ভয়ে আমরা হানিমুনে যাবো না।
আমি: মানে কি তোমার ভয় করছে না?
কাব্য: না করছে না। চিনি না জানিনা কোথাকার কোন লোক এসে ভয় দেখালো আর আমরা সেই ভয়ে হানিমুনে যাবো না, এইটা হয় নাকি তিলো?
আমি: লোকটা কে আমরা তা জানিনা বলেই তো ভয় বেশি হচ্ছে।
কাব্য: তিলো…
আমি: প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো আমার খুব ভয় করছে।
কাব্য: ঠিক আছে ভেবে দেখছি। (কাব্য মন খারাপ করে চলে গেলো। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না)

চুপচাপ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। কাব্য কিছু না খেয়ে কোথায় যেন চলে গেছে, ও যে খুব কষ্ট পেয়েছে তা আমি বুঝতে পেরেছি কিন্তু আমি কি করবো কক্সবাজার গিয়ে যদি ওর কোনো ক্ষতি হয়ে যায় তখন আমি কি করবো কাকে নিয়ে বাঁচবো। ফোনটা বেজে উঠলো, রুমে এসে ফোন রিসিভ করলাম তিশা ফোন দিয়েছে।
আমি: হুম বল।
তিশা: কিরে কবে বেরুচ্ছিস?
আমি: কবে বেরুচ্ছি মানে?
তিশা: কক্সবাজার যাবি না?
আমি: না।
তিশা: মানে কি? তুই জানিস কাব্য হানিমুনে যাওয়ার জন্য কতোটা এক্সাইটেড হয়ে আছে আ…
আমি: একটা সমস্যা হয়েছে তাই যাবো না।
তিশা: কোনো সমস্যা বুঝি না যেতে হবে।
আমি: কেন?
তিশা: কারণ তুই না গেলে আমাদের যাওয়া হবে না।
আমি: মানে?
তিশা: কাব্য বলেনি তোকে তোদের সাথে যে আমি আর আদনান যাচ্ছি?
আমি: নাতো। (কখন বলবে আমি ওকে বলার সুযোগ দিলে তো বলবে)
তিশা: প্লিজ না করিস না কাব্য অনেক কষ্ট পাবে (হঠাৎ ছাদ থেকে গীটারের টুংটাং শব্দ ভেসে আসলো, তারমানে কাব্য আবার গীটার বাজাচ্ছে আর কাঁদছে)
আমি: পরে তোকে জানাচ্ছি এখন রাখি।
তিশাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোনটা কেটে দিয়ে ছাদের দিকে দৌড় দিলাম।

যা ভেবেছিলাম তাই কাব্য কাঁদছে আর গীটার বাজাচ্ছে। আমি ওর কাধে হাত রাখতেই গীটার বাজানো বন্ধ করে দিলো।
আমি: আবারো তুমি…
কাব্য: আমার কিছু ভালো লাগছে না একা থাকতে দাও আমাকে।
আমি: আদনান ভাইয়া আর তিশা যে যাবে আমাদের সাথে বলনি তো।
কাব্য: বলার মতো সুযোগ দিয়েছ নাকি?
আমি: ঠিক আছে আমরা কক্সবাজার যাচ্ছি।
কাব্য: কি? (কাব্য অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে)
আমি: যাচ্ছি কিন্তু দুদিনের বেশি থাকা যাবে না আমার খুব ভয় করছে।
কাব্য: ঠিক আছে দুদিন পর চলে আসবো। যাও রেডি হয়ে নাও।

যেতে তো রাজি হলাম কিন্তু ভিতরের ভয়টা যে ক্রমশ বেড়েই চলেছে। যদি ওই লোকটা আমাদের কারো কোনো ক্ষতি করে।
কাব্য: কি হলো এখনো রেডি হওনি তিশারা তো চলে এসেছে।
আমি: এইতো শেষ।

ড্রয়িংরুমে এসে দেখি আদনান ভাইয়া আর তিশা বসে আছে। আচ্ছা ওদের সম্পর্কটা কি শুরু হয়েছে নাকি এখনো…
কাব্য: চলো সবাই।
ভাবি: সাবধানে যেও।
কাব্য: ঠিক আছে তুমি চিন্তা করোনা।
আমি: ভাবি অয়ন কোথায়?
ভাবি: সামনে পরীক্ষা তো তাই ঠেকায় পড়ে কলেজে গেছে।
আমি: ওকে বলো আসছি আমরা।

কাব্য: তিলো গাড়িতে উঠো (পিছনে তিশার কাছে বসতে গেলাম কাব্য নিষেধ করলো)
কাব্য: সামনে বসো আমার কাছে।
আমি: কিন্তু তিশার কাছে আদনান ভা…
কাব্য: ওরা দুজন একে অপরকে পছন্দ করে কিন্তু কেউ কাউকে এখনো বলতে পারেনি, এই লং ড্রাইভে যদি বলতে পারে তাই তো দুজনকে পিছনে দিলাম।
আমি: তা নাহয় বুঝলাম কিন্তু এতোটা রাস্তা কি তুমি ড্রাইভ করবে?
কাব্য: হ্যাঁ সমস্যা কি, ভয় পেয়ো না ড্রাইভটা আমি ভালোই পারি।

কাব্য ড্রাইভ করছে আর আমি ওর পাশে বসে ফোনটা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। ভয় হচ্ছে খুব যদি…
কাব্য: মনে হচ্ছে তুমি কারো ফোনের অপেক্ষা করছ।
আমি: নাতো (কিসের জন্য ফোনটা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছি নিজেও বুঝতে পারছি না। শুধু জানি লোকটা আবারো ফোন বা মেসেজ করবে, আবারো ভয় দেখাবে। কিন্তু লোকটা কি শুধু ভয় দেখিয়েই যাবে নাকি আমাদের কোনো ক্ষতি করবে। এসে কোনো ভুল করিনি তো)
কাব্য: ফোনটা হাত থেকে রাখো তো (কাব্য বড় বড় চোখ করে তাকাচ্ছে দেখে ফোনটা ব্যাগে রেখে দিলাম। কাব্য আমার একটা হাত চেপে ধরলো)
আমি: আরে এক হাত দিয়ে ড্রাইভ করছ কেন?
কাব্য: বললাম না ড্রাইভটা ভালোই করতে জানি, তুমি ভয় পেয়ো না। (সামনে তাকিয়ে ড্রাইভ করতে করতেই আমার হাতটা ওর মুখের কাছে নিয়ে গিয়ে হাতে একটা চুমু খেলো)
কাব্য: সব ভালো হবে দেখো, ভয় পেয়ো না। তুমি এভাবে মুখ গোমরা করে তাকলে আমার ভালো লাগে বলো? প্লিজ একটু হাসো। (চলেই যখন এসেছি এখন আর মুখ গোমরা করে রেখে ওদের আনন্দ নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। কাব্য’র দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে ওর কাধে মাথা রাখলাম)
কাব্য: এইতো আমার লক্ষী বউ।

হঠাৎ কাব্য’র ডাকে চোখ খুলে চারপাশে তাকালাম, সন্ধ্যা নেমে এসেছে আর আমরাও চলে এসেছি। হোটেলের সামনে গাড়ি থামিয়েই কাব্য আমাকে ডাক দিয়েছে।
কাব্য: তিলো এভাবে কি দেখছ, ভাবছ আমরা কক্সবাজার চলে এসেছি কিনা?
আমি: হু।
কাব্য: এক ঘুমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার, এমন ঘুম পাগলী আমার জীবনে আর একটাও দেখিনি।
আদনান: ভাবিকে যদি কেউ ঘুমের মধ্যে কিডন্যাপ করে নিয়ে যায় তাও তো ভাবি বুঝতেই পারবে না হাহাহা (আদনান ভাইয়ার হাসি শুনে পিছনে তাকালাম, আদনান ভাইয়া হাসছে আর তিশা এক দৃষ্টিতে সে হাসি দেখছে। বুঝেছি আমাদের দুজনেরই কিছু করতে হবে নাহলে এই দুইটা এভাবেই থেকে যাবে কেউ কাউকে মনের কথা বলতে পারবে না)
কাব্য: ঘুম পাগলী আমাদের বাসর রাতের কথা মনে আছে, তুমি নৌকাতে আমার বুকে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলে। (কাব্য ফিসফিস করে আমাকে কথাটা বলে হাসতে লাগলো, সেদিনের কথা মনে পড়তেই খুব লজ্জা পেলাম, আমি সত্যিই একটা ঘুম পাগলী)
কাব্য: এবার চলো রুমে গিয়ে সবাই ফ্রেশ হয়ে নাও।
তিশা: কাব্য তোমার সাথে একটু কথা ছিল খুব জরুরী।
কাব্য: হ্যাঁ বলো (তিশা আমার দিকে তাকাচ্ছে তারমানে ও কাব্য’কে কথাটা একা বলতে চায়, কিন্তু কি কথা)

আদনান ভাইয়া আর আমি আগে আগে হাটছি, তিশা আর কাব্য পিছনে কথা বলতে বলতে আসছে।
আমি: তিশাকে কি মনের কথাটা বলবেন নাকি এভাবেই দুজন সারাজীবন কাটিয়ে দিবেন..?
আদনান: বলতে পারছি নাতো।
আমি: কেন কিসের ভয় আমি যতোটুকু বুঝতে পেরেছি তিশা আপনাকে পছন্দ করে।
আদনান: সেটা আমিও বুঝতে পারছি।
আমি: আপনি আর আপনার বন্ধু তো পুরো আলাদা। ডাক্তারবাবু তো প্রথম দিনই আমাকে ভালোবাসে বলেছিল আর পরে হাতে চাকু নিয়ে বলেছিল আমি ওকে ভালোবাসি কিনা। আপনি ওর মতো হতে পারেন না?
আদনান: কাব্য’র মতো হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না তবে আজকে যেভাবেই হউক তিশাকে আমি বলে দিবো।
আমি: হ্যাঁ এ…
কাব্য: তুমি আমাকে আগে বলবে না, আগে বললে আজ এখানে আসতাম নাকি (কাব্য’র কথা শুনে থেমে গেলাম, ও তিশাকে কথাটা বলছে তারমানে কি ওরা ওই লোকটার ব্যাপারে কিছু জানতে পেরেছে)

রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম, কাব্য দরজা বন্ধ করে আমার পাশে এসে বসলো। ফোনটা দেখার সুযোগই পাচ্ছি না, একবার ফোনটা চেক করলে তো বুঝতে পারতাম লোকটা এখনো আমাদের ফলো করছে কিনা।
কাব্য: তিলো ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও বেরুবো।
আমি: এই রাতে আবার কোথায় বেরুবো তাছাড়া এতোটা রাস্তা এসে…
কাব্য: তুমি তো আর টায়ার্ড নও সারা রাস্তা ঘুমিয়ে এসেছ তাহলে সমস্যা কোথায়? যাও রেডি হয়ে নাও।
আমি: হুম।

চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হয়ে নিলাম। কালো রঙের শাড়ি পড়েছি আর বরাবর এর মতো চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছি নাহলে যে আমার ডাক্তারবাবু রাগ করবে। কিন্তু এই রাতের বেলায় আমরা যাচ্ছি কোথায়?
কাব্য: বাহ্ আমার তিলো পাগলীকে তো দারুণ লাগছে। (কাব্য এসে আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো। আমার হাতের উপর ওর হাত দুটু রেখে পেটে আলতো করে চাপ দিলো)
আমি: দুষ্টুমি শুরু হয়ে গেলো তো?
কাব্য: হ্যাঁ হানিমুনে এসেছি দুষ্টুমি না করে থাকি কিভাবে বলো (আমার একটা হাত চেপে ধরে টান দিয়ে আমাকে ঘুরিয়ে দিলো। আমার কোমর জরিয়ে ধরে টান দিয়ে আমাকে ওর কাছে নিয়ে আসলো। আমার ঠোঁটের কাছে ওর ঠোঁট দুটু আনতেই দরজায় টোকা পড়লো)
কাব্য: হাসো হাসো তুমি তো হাসবাই, হানিমুনে এসেও শান্তি নেই। (কাব্য আমাকে ছেড়ে দিয়ে গিয়ে দরজা খুললো)
আদনান: কিরে শেষ তো।
কাব্য: হ্যাঁ চল, তিলো এসো। (কোথায় যে নিয়ে যাচ্ছে কে জানে)

কাব্য আমাকে সেই হসপিটালে নিয়ে আসলো, যেখানে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। কিন্তু ও আমাকে হসপিটালের ছাদে নিয়ে যাচ্ছে কেন? কি যে করছে কা… ছাদে এসে তো আমি অবাক কতো সুন্দর করে সাজানো, মনে হচ্ছে কোনো পার্টী হবে। কাব্য আমাকে একে একে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।
আদনান: বারোটা বাজতে তো আরো সময় আছে।
কাব্য: হ্যাঁ আর একটু, তুই এর মধ্যে তোর কাজটা সেরে ফেল।
আমি: কি কাজ।
কাব্য: তিশাকে প্রপোজ করবে।
আমি: সত্যি (সামনে তাকিয়ে দেখি আদনান তিশার সামনে হাটু গেড়ে বসে আছে হাতে রিং, তিশা বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে)
আমি: আরে বাবা কি এতো ভাবছিস হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে রিংটা পড়ে নে। (তিশা যেন আমার এই কথাটার জন্য অপেক্ষা করছিল, আমি বলতেই হাত বাড়িয়ে দিলো)
কাব্য: শুভ জন্মদিন তিলো পাগলী (কাব্য আচমকা আমাকে জরিয়ে ধরে বললো, আমি তো হা করে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। আমার জন্মদিন আর আমি নিজেই ভুলে বসে আছি)
কাব্য: সরি সোনা জানতাম না তো আজ যে তোমার জন্মদিন। জানলে এখানে আসতাম না বাসায় সবাইকে নিয়ে আরো বড় করে পার্টী দিতাম)
আমি: কেন এখানে কি কম বড় হয়েছে, অনেক সুন্দর করে পুরো ছাদটা সাজিয়েছ তো।
কাব্য: তিশা একটু আগে বলেছে তারপর এখানে ফোন করে সবকিছু করালাম, তুমি খুশি তো?
আমি: অনেক অনেক অনেক খুশী।

সবাই ডান্স করছে আর কাব্য আমার পাশে বসে আছে।
আমি: কি হলো যাও।
কাব্য: তুমি একা একা বসে থাকবে আর আমি সবার সাথে আনন্দ করবো?
আমি: তাতে কি হয়েছে যাও তুমি, আমার তো মিউজিক এর শব্দে মাথা ব্যথা করছে তাই বসে আছি।
কাব্য: উঁহু তোমাকে ছাড়া আমি ডান্স করবো না।
–এই চল তো (একজন এসে কাব্য’কে টেনে নিয়ে গেলো)
চুপচাপ বসে আছি এই মিউজিক এর শব্দে মাথা প্রচুর ব্যথা করছে।

হাটতে হাটতে ছাদের অন্যপাশে চলে আসলাম, এখানে মিউজিক এর শব্দটা একটু কম আসছে। নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি হঠাৎ মনে হলো কে যেন পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে, কাব্য নয় তো? পিছনে তাকিয়ে আমার ধম আটকে গেলো, এইটা তো সেই লোক সাথে আরেকজন আছে। আমি দৌড় দিতে চাইলাম লোকটা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।
–নিষেধ করেছিলাম তো কেন আসলি?
আমি: কেন আমাদের পিছনে লেগেছেন?
–টাকা পেয়েছি তাই (কাব্য’কে ডাকতে যাবো তখনি আমার মাথায় কি দিয়ে যেন আঘাত করলো)
–ডাক তোর ডাক্তারবাবুকে দেখি তোকে এসে বাঁচাতে পারে কিনা।
আমি: ডাক্তারবাবু (খুব জোরে ডাক দিলাম কিন্তু মিউজিক এর শব্দে তো আমার ডাক ওর কান অব্দি পৌঁছাচ্ছে না। মাথা থেকে প্রচুর রক্ত পড়ছে, লোকটা এসে আমার পেটে খুব ভারী কিছু দিয়ে বারী মারলো, আরেকবার দিতে যাবে তখনি লোকটার ফোন বেজে উঠলো)
“চিন্তা করবেন না ম্যাডাম যা অবস্থা করেছি ওর হসপিটালের ছাদ থেকে ইমারজেন্সীতে নিয়ে যাওয়ার আগেই ও মারা যাবে”
মাথা আর পেটের প্রচন্ড ব্যথায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লাম সাথে সাথে কারেন্ট চলে গেলো। খুব কষ্ট করে কাব্য’কে আরেকবার ডাক দিলাম, মিউজিক এর শব্দ নেই তাই কাব্য শুনতে পেয়েছে। সবাই এদিকে আসছে বুঝতে পেরে লোক দুটু চলে গেলো।

কাব্য: তিলো কি হয়েছে তোমার, এতো রক্ত।
তিশা: তমা কি হয়েছে কে করেছে এমন অবস্থা?
আমি: ওই লোকটা, কাব্য আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।
আদনান: কাব্য কথা বলে সময় নষ্ট করছিস কেন তাড়াতাড়ি ইমারজেন্সীতে নিয়ে চল।
কাব্য আমাকে কোলে তুলে নিলো। পেটের প্রচন্ড ব্যথায় চোখ দুটু অন্ধকার হয়ে আসছে। কাব্য’র গলা জরিয়ে ধরে ওর মুখের দিকে তাকালাম, আস্তে আস্তে চোখ দুটু বোজে আসলো।

চলবে?

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ