Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রোমান্টিক_অত্যাচারঃ_২রোমান্টিক_অত্যাচার -২ পর্ব-১২

রোমান্টিক_অত্যাচার -২ পর্ব-১২

রোমান্টিক_অত্যাচার -২
পর্ব-১২
লেখিকাঃ #Israt_Jahan
ধারনাঃ #Kashnir_Mahi
আশফিঃ মাহি? সোনা একটু উঠো।
মাহিঃ না।প্লিজ ডিস্টার্ব করো না আমাকে।রেগে যাবো কিন্তু।
আহ্লাদ ভরা কন্ঠে মাহি কথাগুলো বলছে আশফিকে।
-“রাগ করো না জাদু। দেখো ফোনটা বাজছে তখন থেকে।জরুরি ফোন ও তো হতে পারে,তাইনা?
-“এই সন্ধ্যাই কার এমন জরুরি হতে পারে?তার কি ঘরে বউ নেই নাকি স্বামী নেই?
আশফির কাছ থেকে রাগ করে উঠে গেলো মাহি। আশফি উঠে মাহিকে কাছে টেনে কোলের ভেতোর জড়িয়ে ধরে বসলো।
-“ঠিকই বলেছো।তার ঘরে নিশ্চই বউ অথবা স্বামী নেই।না হলে সে ঠিকই বুঝতো আশফিকে এখন তার লাভলী বউটা আদর করছে।আর এমন সময় তো বউ কাছে থাকলে যেকোনো পুরুষের ইচ্ছে করবে তার বউ এর আদর নেওয়ার।
-“হুহ। হয়েছে আর পাম্প করতে হচ্ছেনা।ফোনটা রিসিভ করো।
-“হাহাহাহা। ওহ, ফোনটা তো কেটে গেলো।আননোন নাম্বার দেখছি।কে এটা?
ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে বললো আশফি।
-“কল ব্যাক করে দেখো কে ফোন করেছে?
-“হুম।ফোন বাজছে ফোন তুলছে না কেনো?মাত্রই তো ফোন আসলো।হ্যা রিসিভ করেছে। হ্যালো?
-“হ্যালো আপনি কি আশফি চৌধুরী বলছেন?
-“জ্বী আপনি কে?
-” আমি চ্যাং ওক বলছি।আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে নাম্বার পেলাম।আপনার গাড়িতে যে ভদ্র মহিলা ড্রাইভিং করছিলো তিনি একটা এক্সিডেন্ট করেছে।ওনাকে আমরা হসপিটাল নিয়েসেছি।
-“কি বলছেন?আলিশা এক্সিডেন্ট করেছে?আচ্ছা ঠিক আছে আপনি আমাকে হসপিটালের এ্যাড্রেসটা দিন।আমি এক্ষণি আসছি। আর অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
-“না না ঠিক আছে।আপনি জলদি আসুন।
-“এই কি হয়েছে বলোনা? আলিশা কোথায়?
এক্সিডেন্ট করেছে কিভাবে?
-“মাহি এতোকিছু বলার সময় নেই।রেডি হও হসপিটাল যেতে হবে।
চাচ্চুকে কি জবাব দিবো বুঝতে পারছিনা।
-“আচ্ছা ঠিক আছে তুমি এতো টেনশন নিওনা। চলো আমি রেডি।
মাহি আর আশফি দ্রুত গাড়ি চালিয়ে হসপিটালের ঠিকানা নিয়ে হসপিটাল গেলো। আলিশার কেবিনের খোঁজ করে ওর কেবিনে ঢুকলো।
-“আচ্ছা মিস আলিশা আপনি ভয় পাবেন না। আঘাতটা গুরুতর নয়। কপালে খানিকটা ইনজুরি হয়েছে।চিন্তার কিছু নেই আমি এন্টিবায়োটিক দিয়ে দিচ্ছি যাতে পেইনটা কম হয় আর ঘা টা দ্রুত শুকিয়ে যায়।(ডক্টর)
আশফি আর মাহি কেবিনে ঢুকে ডক্টরের কথা শুনছিলো।তারপর আলিশার সাথে কথা বললো।
-“আলিশা?তুমি ঠিক আছো তো?আমি সত্যি খুব স্যরি।কিভাবে যে আমি তোমার কথা ভুলে গিয়েছিলাম।
-“আরে এতো চাপ নিচ্ছো কেনো?আমি একদম ঠিক আছি।জাস্ট টাইম মত ব্রেকটা হ্যান্ডেল করতে না পারলে বড় কিছু হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো।
-“আচ্ছা ডক্টর ওর কি সিরিয়াস কোনো ইনজুরি হয়েছে?(আশফি)
-“তেমন সিরিয়াস নয়।২ টা দিন রেস্ট নিলে একদম সুস্থ হয়ে যাবে।
-“কি করে হলো এসব বলো তো?(মাহি)
-“মাহি এগুলো এখন থাক। পরে আমরা শুনছি এই বিষয়টা। ডক্টর ওকে কি আমরা বাসায় নিয়ে যেতে পারবো?নাকি এখানে থাকতে হবে ওকে?
-“বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন।প্রবলেম নেই। মেডিসিন দিয়ে দিয়েছি। ওগুলো নিলেই ঠিক হয়ে যাবেন উনি।
-“ওকে ডক্টর থ্যাঙ্কস। তাহলে আমরা ওকে নিয়ে যাচ্ছি।(আশফি)
আশফি হসপিটালের সব ফরমালিটিস মেইনটেইন করে আলিশাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলো।
-“মাহি তুমি আলিশার খাবারের ব্যবস্থা করো তো আগে।আমি আঙ্কেলের সাথে কথা বলে আসছি।
-“এই না না।তুমি কি বাবাকে এগুলো বলতে চাচ্ছো নাকি?
-“হ্যা।জানানোটা তো উচিত।যত যাই হোক ব্লান্ডারটা তো আমার জন্যই হয়েছে।স্যরিটা তো বলতেই হবে।
-“তুমি কি এখন স্যরি বলতে গিয়ে তাদের এক্সট্রা টেনশন দিবে?
-“হুম আলিশা ঠিক ই বলেছে।ব্যাপারটা জানার পর আঙ্কেল আন্টি অনেক টেনশন করতে শুরু করবে। তুমি বরং ঘটনাটা অন্য একদিন বলো।আজ থাক।
-“অন্য একদিন ও বলতে হবেনা।এটা তাদের জানার কোনো প্রয়োজন ই দেখছিনা।
-“আচ্ছা ঠিক আছে সে দেখা যাবে পরে। মাহি তুমি যাও ওর খাবার নিয়েসো। ওকে খাইয়ে দাও।
-“এখন কিন্তু আমার খুব অস্বস্তিকর লাগছে। আমি যতটা অসুস্থ না হয়েছি তোমরা তার থেকে বেশি অসুস্থ করে ফেলছো তোমাদের ওভার টেক কেয়ারের মাধ্যমে। আমার মোটেও খিদে পাইনি। তোমরা যাও ঘরে গিয়ে রেস্ট নাও। শুধু শুধু আমাকে নিয়ে বেশি ভাবছো।
-“এই তুমি একদম কোনো কথা বলবেনা। এখন আমাকে এটা বলতো এক্সিডেন্ট টা হলো কি করে? আমার জানামতে তুমি কখনো বেখেয়ালি ভাবে ড্রাইভ করোনা। খুব কেয়ারফুল থাকো।(মাহি)
-“না আসলে আমি নিজেও বুঝতে পারিনি কি করে কি হলো?
-“এটা কোনো যুক্তিসম্মত কথা হলো না আলিশা। ব্যাপারটা আমাদের কে বলো। Exactly কি হয়েছিলো?(আশফি)
আলিশা চুপ করে রইলো। ও কি বলবে ঠিক ভেবে পাচ্ছেনা।ড্রাইভিংটা ও আনমনে হয়ে করছিলো। এখন এই কথাটা বললে ওরা জানতে চাইবে হঠাৎ আনমনে হয়ে ড্রাইভিং করার কারণটা কি? কি এমন ভাবছিলো ও? এসব প্রশ্নের উত্তর কি দিবে ও সেটাই ভাবছে।ওর এমন ভাবে চুপ করে থাকতে দেখে মাহি আর আশফি বুঝতে পারলো আলিশা একটা বাড়তি টেনশনে আছে।
-“আলিশা তুমি তো একদিন বলেছিলে যে তুমি আমাদেরকে বন্ধু ভাবো। ভাইয়া ভাবী নয়। তাহলে এতো প্রাইভেসি কেনো রাখছো?হ্যা মানছি কিছু বিষয় আছে যা সবার সাথে শেয়ার করার মত নয়।কিন্তু যেগুলোর জন্য তুমি ডিপ্রেশনে ভুগছো সেগুলো অন্তত তোমার শেয়ার করা উচিত কাছের মানুষের সাথে। আমরা তো তোমার দূরের কেউ নই বলো।তুমি নিশ্চই আমাদের দূরের কেউ ভাবোনা?(মাহি)
-“না না,ছি ছি দূরের কেউ ভাবতে যাবো কেনো?
-“তাহলে তুমি কি এটা ভাবছো যে আমাদের সাথে তোমার প্রবলেম শেয়ার করলে আমরা তার সলিউশন দিতে পারবোনা তাই শেয়ার করার কোনো প্রয়োজন নেই? আচ্ছা এরকমটা যদি ভেবেও থাকো আমরা যদি তার সলিউশন করতে নাও পারি এটলিস্ট তোমার মনটা হালকা হতে পারে আমাদের সাথে শেয়ার করলে।(আশফি)
-“আরে তেমন কিছুই নয়।প্রবলেম থাকলে তো শেয়ার করবো বলো?
তোমরা মিছিমিছি টেনশন নিচ্ছো।
-“আচ্ছা বেশ তোমার যদি বলতে ইচ্ছা না হয় বলোনা।আমরা আর জোড়াজোড়ি করবো না। কিন্তু যে প্রবলেমই থাকো সেটাকে নিজের মত করে সল্ভ করতে না পারলে বাসার মানুষের হেল্প নিও। কারণ তাদের মত করে হেল্প তোমাকে কেউ করতে পারবেনা।খামখা দুশ্চিন্তা করে নিজের এতো সুন্দর ফিটনেস বডি নষ্ট করোনা। আর চেহারার কথা বললাম না।(আশফি)
-“হা হা হা। কি যে বলোনা তুমি?
-“আচ্ছা তোমরা গল্প করতে থাকো।আমি আলিশার খাবার নিয়ে আসি।
মাহি আলিশাকে খাইয়ে-দাইয়ে কিছুক্ষণ আলিশার সাথে সময় কাটিয়ে ওরা রুমে চলে এলো।
-“তখন কি বলছিলে আলিশাকে?(মাহি)
-“কখন?কি বলছিলাম?(আশফি)
জ্যাকেটটা খুলতে খুলতে আশফি কথা বললো।
-“ঐ যে বললে ওর ফিটনেস বডি?
-“হ্যা।ওর বডি কি ফিটনেস নয়?
-“হুম।আমি কখন বললাম ফিটনেস নয়?
-“তাহলে এভাবে প্রশ্ন করছো যে?
মাহি কোনো উত্তর দিলোনা।চুপ করে মুখটা কালো করে রইলো। আশফি সেটা খেয়াল করলো। ও বুঝতে পেরেছে মাহি কি কারণে রাগ করেছে।এভাবে রিয়্যাক্ট করার কারণে আশফির ইচ্ছা হলো মাহিকে আরো একটু রাগাতে।
-“আসলে সামনে সুন্দর জিনিস থাকলে সেটাকে সুন্দর না বলে থাকা যায় না।
-“হ্যা তো বলো না।নিষেধ করছে কে?
-“নিষেধ কেনো করবে? নিষেধ করার কথায় বা আসছে কোথা থেকে? কিন্তু তুমি এভাবে রিয়্যাক্ট করছো কেনো বলো তো?
-“আমি কোথায় রিয়্যাক্ট করলাম?সুন্দর জিনিসের প্রশংসা করো গিয়ে। যাও।
আশফি ভাবছে, মেয়ে মানুষের এই একটা সমস্যা,এদের সামনে অন্য মেয়ে মানুষের প্রশংসা করলে অনেক বড় ঝামেলা বেঁধে যায়।সে তার সাথে যতই ভালো সম্পর্ক থাক। এমনিতে নিজে যখন আলিশার প্রশংসা করে তখন কোনো দোষ হবে না আর আমি বলতে গেলেই আমার ঘাড়ে যে কয়টা মাথা থাকবে সবকয়টা কেটে ফেলবে।যদিও ঘাড়ে একটা মাথায় আছে সেই একটার কথায় বললাম।নাহ্ আর বেশি রাগানো যাবেনা।পরে দেখা গেলো আমার আর আজ বেডে জায়গা হবেনা।
-“আচ্ছা ডিয়ার এদিকে এসো।
-“না।কোথাও আসবো না।
-“ওকে কাছে টেনে নিয়েলাম।তারপর পেছন থেকে ওর কোমড় জড়িয়ে পেটের উপর হাত রেখে ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়ালাম।
মাহি তুমি কি কিছু দেখতে পাচ্ছো?
-“কি দেখবো?
-“কিছুই দেখতে পাচ্ছোনা?
-“শুধু তোমাকে আর আমাকেই তো দেখছি।
-“আমাকে দেখতে হবেনা। তোমাকে দেখো।আমার চান্দুর মা হওয়ার পর থেকে তোমার সৌন্দর্যটা কতোটা পাল্টে গেছে’না?এক অন্যরকম মাহি লাগছে তোমাকে।যাকে দেখলেই মনে হয় সর্বক্ষণ আষ্টপৃষ্ঠে বেঁধে রাখি।
-“সেটা তো তোমার চান্দুর খেয়াল রাখার জন্য।
-“শুধু সেজন্যই নয়। তোমার মাঝে এক অন্যরকম সৌন্দর্য বিরাজ করছে।যা তুমি দেখতে পাচ্ছোনা।সেই সৌন্দর্যই আমাকে সর্বদা টানে। শুধু চেহারার সৌন্দর্যই নয় তোমার শরীরের সৌন্দর্য ও।যা এখন অন্যসব সুন্দরী মেয়েদের মাঝেও নেই। কারণ তারা এখন কেউ হবু মা নয়।আর আমি তো তখন আলিশার টেনশন রিলিজ করার জন্য কথাটা বললাম।কারণ মেয়েদের তার ফ্যামিলির কসম দিয়ে বা অন্যকিছুর কসম দিয়ে যতই বুঝাও সে মাথাতেই নিবেনা মানে কাজে দিবেনা।কিন্তু যখনই তার ফিটনেস,চেহারার কথা বলবে সে দ্রুত সেটাকে ঠিক রাখার জন্য ব্যাস্ত হয়ে যাবে।
-“হুম।সেটা ঠিক।কিন্তু বিষয়টা যদি ভালোবাসা রোগ হয় তাহলে যত যার দোহাই কিচ্ছু কাজে দিবেনা।
-“তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছো বয়ফ্রেন্ড সংক্রান্ত ব্যাপার?
-“হুম।আমার তাই মনে হচ্ছে।বেশ কিছু দিন খেয়াল করছি ও কারো সাথে ফোনে কথা বলার পরই কেমন যেনো বিষন্ন দেখাই ওকে।দেখো চাচ্চু বা চাচিমায়ের সাথে যখন কথা বলে তখন বেশিরভাগ সময় আমি সামনে থাকি আমিও কথা বলি।তাদের সাথে কোনো প্রবলেম না। প্রবলেমটা অন্য কাউকে নিয়ে। আর ওর শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশ ভালো।
ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো টেনশন ই হওয়ার কথা না ওর।তাহলে বাকি থাকলো বয়ফ্রেন্ড। যদি সেটা থেকে থাকে।কিন্তু আমার মনে হচ্ছে সেটা আছে ওর।
-“হুম বুঝলাম।কিন্তু ওর মত মেয়েকে রিফিউজড করবে সে কি এমন ছেলে? কোনো ইংল্যান্ডার নাকি?
-“সেটা তো ওর সাথে কথা বললেই বুঝতে পারতাম। সে যাই হোক ও যদি এখন নিজে থেকে কিছু না বলে তাহলে আর কি করার।
হঠাৎ ধুম করেই মাহির কথার মাঝে মাহিকে কোলে তুলে নিলো আশফি।
-“এটা কি হলো?এভাবে কোলে তোলার মানে কি?
-“মানে তো থাকতে পারে অনেক কিছুই।কিন্তু আমি কি আমার বউকে কোনো মানে ছাড়া কোলে তুলতে পারিনা?হুম?
-“সে তো পারোই।কিন্তু কোনো কারণ তো অবশ্যই আছে তাই তো জিজ্ঞেস করলাম।
-“হুম তা আছে। কারনটা হলো তখন আমি তোমার থেকে ফুল পেমেন্টটা পাইনি হাফ পেয়েছি।এখন যেটুকু ডিউ আছে সেটা রিপেমেন্ট করো।
-“ও আচ্ছা।কিন্তু বাকি তো বাকিই।সেটা তো ফাঁকিতেই পড়ে গেছে। ওটা আর পাচ্ছোনা।
-“তোমার তাই মনে হলো?তুমি এখনো অলরেডি আশফির কোলেই আছো।আর আশফি তার হাফ পেমেন্টটা না পেয়েই তোমাকে রেহাই দিবে মনে হচ্ছে? সুদে আসলে মিটিয়ে নিবো কিন্তু।
-“সুদে আসলে মিটিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ ই নেই।
-“উহহু।তুমি না আমার চান্দুর দোহাই দিয়ে দিয়ে পাড় পেয়ে যাচ্ছো।কিন্তু সেটা আর কতোদিন? তারপর যে তোমার কি হাল করবো!
-“আচ্ছা? দেখে নিবো।
-“সে দেখে নিও তুমি। কিন্তু এখন যেটা করতে বললাম সেটা করো। না হলে কিন্তু কোল থেকে নামাবোনা।আর যদি নামায় ও তাহলে তোমার উপর যা সব টর্চার হবে তা তুমি নিশ্চই বুঝতে পারছো?
-“তোমার কি মনে হয় আমি তোমার টর্চারকে ভয় পাই?
-“ও।তাহলে দেখা যাক। চলো তাহলে শুরু করি।
ওকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।তারপর গা থেকে টি শার্টটা খুলে ফেললাম।
-“এই তুমি কি করতে চাইছো বলো তো?
-“সেটা তো দেখতেই পাবে।
ওর কাছে গিয়ে বললাম।
-“তুমি না পাগল একটা। ভুলে গেলে নাকি এখানে কে আছে?
মাহি নিজের পেটে হাত রেখে বললো।
-“একদম না।এখানে আমার আর তোমার ভালোবাসার এক বিশেষ অংশ বেড়ে উঠছে।আর আমি তো তোমার উপর এমন কোনো টর্চার করবো না যেটাতে আমার চান্দুর কষ্ট বা ক্ষতি হতে পারে। তো এখন আমাকে আর বাঁধা দিওনা।আমি সেই বাঁধা মানবোনা।
-“এক মিনিট।তোমার হাফ পেমেন্ট সহ যদি আবার এক্সট্রা পেমেন্ট করি তোমাকে তাহলে কি হবে?
-“দৌড়াবে।তাহলে আর এতো দেরী কিসের?আমি প্রস্তুত।
-“কিন্তু আমি প্রস্তুত নই। কারণ খালি পেটে বউ এর প্রেম হজম করতে পারবেনা। পরে সেটা বদহজম হয়ে যাবে।
-“বউ এর প্রেমে যদি বদহজম হয় তবে সেই বদহজমকেই আমি হজম করে নিবো।তবু কোনো ছাড়াছাড়ি নেই।বুঝেছি তোমাকে দিয়ে এখন কিচ্ছু হবেনা।ওটা আমাকেই করতে হবে।তুমি বর্তমানে প্রচুর ফাঁকি দেওয়া শিখে গেছো।তোমার ফাঁকি দেওয়া আমি ছোটাচ্ছি।
কথাগুলো বলেই আমি মাহির ঠোঁটে চুমু দিয়ে বসলাম।ঠোঁট থেকে গলার কাছে নামতেই ও আমাকে থামিয়ে দিলো।
-“প্লিজ আমার একটা কথা শুনো।
-“উফফো।কি কথা বলো।
আমি ওর গলায় তখন নাক আর ঠোঁট দিয়ে ঘষছিলাম।
-“বলছি আমাদের আর এক বার…….উফ থামো না একটু।সুড়সুড়ি লাগছে তো।
-“লাগুক।থামতে পারবোনা।
এবার ওর গলায় জিহ্বা লাগিয়ে সুড়সুড়ি দিতে থাকলাম।
-“প্লিজ থামো না। আমার কথাগুলো শুনো একটু।
-“তো বলোনা।আমি কি বাঁধা দিচ্ছি?
-“দিচ্ছোই তো।এভাবে বলা যায়?কেমন যেনো লাগে?কথা আটকে যায়।
আমার কথাটা শুনে আশফি মিটিমিটি হাসছে।
-“কি হলো?এভাবে মিটিমিটি হাসছো কেনো?(মাহি)
-“এমনি।আচ্ছা বলো। থেমেছি তো এবার।
-“অসংখ্য ধন্যবাদ জনাব। বলছি আলিশার কাছে তো আর একবার যাওয়া উচিত।
-“হুম যাবো তো। মাত্রই তো এলাম।
-“কোথায় মাত্র এলাম। ২০/৩০ মিনিটের মত তো হয়েই গেছে।
-“সত্যি?এতক্ষণ হয়ে গেছে?
-“আজ্ঞে হ্যা।
-” তোমার কাছে থাকলে না আমার পৃথিবীর আর কোনো কিছুই মাথায় থাকেনা।
-“সেইজন্যই তো থামতে বলছি।কারণ এখন তুমি আমার সাথে দুষ্টুমি শুরু করলে তখনকার মত আবার মেয়েটার কথা ভুলে যাবে।আর তোমার সাথে আমিও।
-“তাহলে দোষটা তো আর আমার একার হলো না। তোমার ও।
-“তো আমি তো সেটা স্বীকার করলাম ই। আর তাছাড়া এখন রাত প্রায় ৮ টা বেজে গেছে। আমাদের ও ডিনার করার সময় হয়ে গেছে।
-“ওকে।আগে যাও ওকে দেখে আসো।আমি একটু ফ্রেশ হয়ে তারপর ডিনার করতে আসছি।আসার পর তো তোমার জন্য ফ্রেশ ও হতে পারলাম না।
মাহির কাছ থেকে উঠে ওয়াশরুমে যাচ্ছিলাম।
-“কি?আমি কি করলাম শুনি?আমি কি তোমাকে বেঁধে রেখেছিলাম?
-“রাখোনি, আবার ধরে বেঁধেই রাখো।
-“হুহ।যতসব ফালতু কথা।
-“কি বললে?ফালতু কথা! দাড়াও তোমাকে দেখছি। মুভ ভেংচি দেওয়া হচ্ছে তাইনা?আমি ফালতু কথা বলি?
ওয়াশরুমে না ঢুকে ওকে ধরার জন্য ওর কাছে দৌড়ে গেলাম।ও তখন বিছানা থেকে উঠে দৌড়াতে যাচ্ছিল। ওর দৌড়ানো দেখে আমার কেমন যেনো ভয় করলো।আমি ওকে বারণ করছিলাম না দৌড়ানোর জন্য।
-“মাহি দাড়াও।দৌড়াবেনা প্লিজ।
পেছন থেকে গিয়েই ওকে ধরে ফেললাম।
-“তোমাকে না বলেছি তুমি একদম ছোটাছোটি করবেনা।আবার আমার কথা অগ্রাহ্য করছো?
আশফির চোখে মুখে তখন অজানা এক ভয় কাজ করছিলো।ভয়টা নিশ্চই ছিলো মাহির কোনো ক্ষতি হয়ে যাওয়ার ভয়।
-“আশফি?তুমি এতো ভয় পাও কেনো?আমি তো বাচ্চা নই।আমার ও খেয়াল আছে যে আমি এখন আমার আশফির চান্দুর মা।
-“জানিনা কিসের এতো ভয় করে আমার।শুধু মনে হয় আমার থেকে এক্সট্রা কেয়ার তোমাকে কেউ করতে পারবেনা।এমনকি তুমি নিজেও না।
-“অনেক বেশি দুর্বল তুমি আমার প্রতি।এর জন্যই এমন মনে হয় তোমার। কিন্তু এতো বেশি দুর্বলতা ভালো নয় আশফি।
-“রাগাচ্ছো আমাকে?
-“উহুম।সত্যি বলছি।
-“ওহ্ আচ্ছা। কেনো ভালো না বলো?
-“এখন হয়তো তোমার বিশ্বাস হচ্ছেনা।কিন্তু আল্লাহ্ না করুক এমন কোনো দিন যদি আসে যেদিন আমি অনেক দূরে থাকবো তোমার থেকে সেদিন তুমি নিজেকে সামলাতে পারবেনা।বা তুমি নিজেই যদি আমার উপর অভিমান বা রাগ করে দূরে সরিয়ে রাখো আমাকে সেদিন তোমার এই দুর্বলতা তোমাকে অনেক কষ্ট দিবে। তখন তুমি না পারবে আমার থেকে দূরে থাকতে আর না পারবে কাছে আসতে।
-“এইসব উল্টা পাল্টা চিন্তা ভাবনা তোমার মাথায় আসে কোথা থেকে বলো তো।যা আমি স্বপ্নেও ভাবিনা তাই তুমি আমার সামনে ঝেড়ে দিলে তাও কি অনায়াসে।তুমি বোধহয় এসব ই ভাবো,তাইনা?
-“একদমই না। কিন্তু মাঝেমাঝে তোমার এতো ভালোবাসা দেখে অনেক ভয় হয়।কারণ সুখ যে আমার কপালে সয়না। না হলে তো আজ আমার বাবা-মা,শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি নিয়ে সুখে শান্তিতে ঘর করার কথা ছিলো।অথচ দেখো কি অসময়ে তাদেরকে আমি হারিয়েছি।
-“তোমাকে আর কত বুঝাবো বলো তো।মৃত্যুর কোনো সময় অসময় নেই। এটা সম্পূর্ণ আল্লাহর হাতে। তার ইচ্ছা হয়েছে তার বান্দাদের সে নিজের কাছে নিয়ে গেছে।
-“এটা যদি পুরোটাই আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয় তাহলে ওনাদের মৃত্যুটা ঐ শয়তানদের হাতে হলো কেনো?
-“মাহি আমি কিন্তু এখন সত্যি বিরক্ত হচ্ছি।
তোমাকে আমি লাস্টবার বলছি এমন ধরনের টপিক উঠালে আমি কিন্তু তোমার সাথে টানা তিন দিন কথা বলবোনা,তোমার দিকে তাকাবোনা,তোমাকে টাচ্ করবোনা এমনকি তোমার রুমেই থাকবো না।
-“ওকে স্যরি বাবা। আর বলবো না।হয়েছে এতো রাগ করোনা।রাগ করলে তোমাকে এ্যানাকন্ডার থেকেও ভয়ংকর লাগে।
-“পাঁজি মেয়ে!কি বললে?
ওর কোমড় ধরে ওকে কাছে টেনে নিয়ে এলাম।
-“এই ছাড়ো প্লিজ। এখন কোনো কিস টিস করবে না কিন্তু।
-“হ্যা।সেটাই করবো। কিন্তু অনেক অত্যাচারিত ভাবে।
ওকে জোড় করে ধরে ওর ঠোঁটে একটা কামড় বসিয়ে দিলাম।
-“উফ,কেটে গেছে নিশ্চই।
ব্যাথা পেয়েছি অনেক।
-“ব্যাথা পাওয়ার জন্যই তো দিলাম।
-“ঠিক আছে।ওয়েট করো শোধ দিবো আমিও।
-“আই এম ওপেন।
আশফির কথা শুনে মাহি আশফির নাকে ছোট্ট করে একটা ঘুষি মেরে চলে গেলো আলিশার রুমে।
-“আলিশা? দরজাটা একটু খুলো।ঘুমিয়ে পড়েছো নাকি?(মাহি)
মাহির ডাক শুনে আলিশা জলদি চোখ মুখ মুছে দরজাটা খুললো।
-“না গো ঘুমাইনি।এই ফোনে গেম খেলছিলাম। ভেতোরে এসো।
-“আলিশা কি কান্না করছিলো?ওর চোখ মুখ দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। চোখদুটো ফুলে লাল হয়ে আছে।আমি রুমে ঢুকে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।
-“কি দেখছো এভাবে? মনে হচ্ছে আজ নতুন করে দেখছো?(আলিশা)
-“নতুন করেই তো দেখছি। এখানে(বিছানায়)বসো আগে।যদি আমাকে সত্যি তোমার নিজের কেউ মনে করো তাহলে যা ভেবে কষ্ট পাচ্ছো তার সবটা আমাকে বলো।কথাটা সরাসরি বললাম।কারণ এখন আমি যেটা দেখছি তাতে আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি তোমার সাথে খুব খারাপ কিছু হচ্ছে।এখন তুমি যদি আমাকে এর কারণটা না বলো তাহলে আমি বুঝে নিবো তুমি আমাকে আপন কেউ ভাবোনা।
-“না মাহি।এসব তুমি কি বলছো?আমার কোনো ভাই নেই।আমি বড় হওয়ার
পর আশফির সাথে আমার এটা প্রথম সাক্ষাৎ হলেও কিন্তু সেই ছোটো থেকে আমি শুনে এসেছি আর শুধু শুনেছি বলবো কেনো বিশ্বাস ও করেছি ও আমার ভাইয়া, নিজের ভাইয়া। তারপর ওর সাথে যোগাযোগ হওয়ার পর থেকে ওকে ভাইয়ের থেকে বন্ধু বলে বেশি মনে করেছি। আর তুমি তার বউ।তোমাকে কেনো আমি পর ভাবতে যাবো,বলো?
-“তাহলে মাহি যা প্রশ্ন করছে তার উত্তর দাও।আমি রুম থেকে আসার সময় তোমাদের কথাগুলো শুনছিলাম।
(আশফি)
-“কি বলবো বলো তো? আমার কথা বলার শক্তিটুকুই হারিয়ে গেছে।
-“কথা বলার শক্তি হারিয়ে গেছে নাকি তোমার নিজের উপর নিজের আত্মবিশ্বাসটুকু হারিয়ে গেছে?(আশফি)
-“জানিনা আমি।(কান্না করে)
-“আলিশা প্লিজ কান্না থামাও।এতো কান্না করোনা।আশফি দেখোনা
ও তো আমার কোনো কথায় শুনছেনা।
-“মাহি ওকে আর কিছুক্ষণ কাঁদতে দাও।আমরা ওয়েট করবো।চলো,বাইরে এসো।
মাহিকে নিয়ে বাইরে চলে আসছিলাম।
-“না প্লিজ।দাড়াও তোমরা।যেওনা।
-“আমরা তো যেতে চাইছিই না। কান্না থামাও।এখন বলো তো কি হয়েছে?(মাহি)
-“সেমিস্টারের মাঝামাঝি সময়।হসপিটালে ব্লাড ডোনার হিসেবে গিয়েছিলাম একজন রোগীর জন্য সেইদিন ঐ রোগীর জন্য আরো একজন এসেছিলো। ঐ দিনই ওর সাথে আমার প্রথম আলাপ হয়।
-“ও” টা কে সেটা জানার জন্য আলিশাকে প্রশ্ন করতে চাইলাম।আশফি হয়তো বুঝতে পেরেছে সেটা।তাই ও আমাকে ইশারার মাধ্যমে থামিয়ে দিলো। থামিয়ে দেওয়ার কারণ এটা ছিলো ওকে আগে বলার সুযোগ দেওয়া হোক।তাই আমি থেমে গেলাম।
-“সেদিন ওর সাথে তেমন বিশেষ কোনো কথা বার্তা হয়নি।জাস্ট সিম্পলি পরিচয় আদান-প্রদান। তার কিছুদিনের ভেতোরই আমি ওকে আমার ভার্সিটির ক্যাম্পাসে দেখতে পেলাম।সেদিন ওর সাথে কথা বলে জানতে পারলাম ও এই ভার্সিটির মেডিকেল স্টুডেন্টস এর প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের টিচার।শুনে একটু অবাক হলাম সেই সাথে অনেকটা খুশি ও হলাম। তারপর মাঝেমাঝে ওর সাথে আমার ক্লাসের ফাঁকে বা ওর ক্লাস নেওয়ার ফাঁকে কথা হতো, দেখা হতো। একসময় হোয়াটসআপ নাম্বার আদান প্রদান হলো। তারপর ফোনে হোয়াটসআপে কথা বলতাম।বাইরে ও দেখা করতাম।এভাবেই আমার আর ওর মাঝে একটা গুড রিলেশন তৈরি হয়।যদি মাঝে কিছুদিন যোগাযোগ না হতো ও নিজে ফোন করে আমার খোঁজ নিতো। এটা আমার কাছে কেনো যেনো খুব ভালো লাগতো। মাঝেমাঝে এক্সট্রা কেয়ার ও নিতো।এই জিনিসগুলোই ওর প্রতি আমার দুর্বলতা বাড়িয়ে দিতে থাকে। ওর ফোন বা খোঁজ-খবর না পেলে আমি প্রায়ই ওর বাসায় ছুটে যেতাম।অসুস্থ থাকলে রান্না করে দিতাম, যতদূর পারতাম ওর সেবা করতাম। আমার এই কেয়ারনেস গুলো ওর নাকি খুব পছন্দ হতো।একদিন তো বলেই ফেললো আমি নাকি বউ এর মত করে সেবা করি।ঐ দিন ওর ঐ কথাটা শোনার পর এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করলো ভেতোরে। বোকার মত ভেবে নিলাম ও হয়তো আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে।আর আমি তো বেসেই ফেলেছি।ভাবলাম প্রপোজ করার কি প্রয়োজন?দুজনের মনের কথা দুজন তো বুঝতেই পারছি।এভাবেই চলুক।তারপর একদিন সময় সুযোগ বুঝে ওকে সরাসরি বিয়ের প্রপোজাল দিবো।সেমিস্টার শেষ করলাম।এখানে আসার আগে ওর সাথে একদিন মিট করে বলে দিলাম নিজের মনের বাসনা। সেদিন যে আমি একদম সরাসরি রিফিউজড হবো তা আমি কল্পনাতে ও ভাবিনি।ও আমাকে বলেছিলো আমাকে নাকি ওর খুব ভালো লাগে একজন ওয়েল-উইশার এর মত,ভাল বন্ধুর মত।কিন্তু প্রেমীকার মত না।হাহ্…. ততদিনে তো আমি ওকে আমার সর্বস্ব দিয়ে আঁকড়ে ধরেছি।কখনো বুঝতেই পারিনি ও আমার ছিলোইনা।কেনো যেনো অটোমেটিক্যালি আমার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়েছিল।
-“সে কেনো তোমাকে রিফিউজড করেছিলো? তার থেকে তুমি কোথায় কম ছিলে?(মাহি)
-“রিফিউজড এর কারণ কম থাকা বা বেশি থাকার জন্য ছিলোনা।ছিলো একটা অদ্ভুত কারণ যা আমি আজ ও মেনে নিতে পারিনি বলে ওর কাছে নির্লজ্জের মত বারবার ফোন করি।
-“যাই হোক।তুমি সেদিনের ঘটনাটা বলো। তারপর কি হয়েছিলো?(আশফি)
-“তখন আমার চোখের পানি দেখে সে অবাক হয়ে তাকিয়েছিলো।হয়তো সে ভাবেনি আমি তাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবেসে আসছি।আমি কোনো কথা বলতে পারছিলাম না।তবুও প্রশ্ন করলাম,আমি কি তার যোগ্য নই?সে উত্তর দিলো পৃথিবীর কোনো নারীর ভালোবাসা নেওয়ার যোগ্যই সে নয়।কয়েকবছর আগে ও যখন কলেজে পড়ে মানে দেশে থাকতে একটা মেয়েকে ভালোবেসেছিলো।কিন্তু ওর ভালোবাসা গ্রহণ করেনি।সে নাকি বলেছিল ও এই ভালোবাসা বিয়ে এগুলোতে বিশ্বাসী না। ও কোনোদিন কাউকে বিয়ে করবেনা ভালোবাসবেনা।
ঐ দিন ও নিজেও ওর সামনে প্রতিজ্ঞা করেছিলো সে যদি ওকে ভালো ননা বাসে বিয়ে না করে তবে ও নিজেও কোনোদিন ওকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবেনা ভালোবাসবে না। তারপরেও অনেকদিন ওয়েট করেছিলো মেয়েটির জন্য।একদিন জানতে পারলো মেয়েটি অন্য কাউকে বিয়ে করেছে। সেদিন ও শুনে অবাক হয়েছিলো।ও ভেবে নিলো ঐ মেয়ে তার প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গলেও ও ওর প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গবেনা। আরো বেশি দৃঢ় হলো ওর প্রতিজ্ঞা। তোমরাই বলো এমন ধরনের ইসু দেখিয়ে ও যদি আমাকে প্রত্যাখ্যান করে তাহলে সেটা আমি কিভাবে মেনে নিবো?আমি ওকে অনেক বুঝিয়েছি যাতে ও ওর অতীত ভুলে যায়। নতুন করে সবকিছু শুরু করে।প্রতিনিয়ত তা বুঝিয়ে চলেছি।আজকে যখন সুপারশপে একা ছিলাম সময় কাটছিলো না।তাই ওকে ফোন করলাম।ও আমার ভালোবাসা জানার পর থেকে আমার ফোন সহজে রিসিভ করতে চাইনা।অনেকবার ট্রাই করার পর রিসিভ করে। কিন্তু সেভাবে কথা বলতে চাইনা।আজকে যখন আমি ওকে বারবার ফোন করছিলাম কথা বলার জন্য ও ফোনটা রিসিভ করে আমার সাথে অনেক মিস বিহেভ করলো।তখন আমার ও প্রচন্ড রাগ হয়ে গিয়েছিলো তাই আমি ওকে সহ ও যাকে ভালোবাসতো তাকে নিয়ে কিছু রাফ কথা বলেছিলাম।যেটা ও সহ্য করতে না পেরে আমাকে বললো আমার লাশ ও যদি ওর সামনে যায় তাও ও আমাকে কোনোদিন বিয়ে করবেনা।
-“আলিশা……(আশফি)
-“আশফি প্লিজ আমাকে কোনো শান্তনা দিওনা। আমি এটা খুব অপছন্দ করি।তোমরা তো এটাই বলবে যে ভালোবাসাটা একতরফা।তাহলে ও কেনো আমার সাথে এতোগুলো বছর এতো ক্লোজলি মিশলো?
-“ক্লোজলি বলতে?(আশফি)
-“ক্লোজলি বলতে তোমরা যেটা ভাবছো সেটা নয়।
-“হুম বুঝেছি।আচ্ছা ছেলেটা তাহলে বাঙ্গালী?
-“হুম।না হলে ওকে চোখ বন্ধ করে নিজের সবটুকু ভালোবাসা উজাড় করে দিতাম না।
মাহি আলিশার মাঝের কিছু কথা শুনে একদম স্তব্ধ হয়ে গেলো।ও এটাই ভাবছে ১০ বছর আগে যার সাথে ওর এরকম ধরনের কিছু কথা হয়েছিলো ও সেই নয়তো?কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব?আলিশা যার কথা বলছে সে তো ইংল্যান্ড থাকে।তার মানে ও কি ইংল্যান্ড চলে গিয়েছে? এমন হাজার ধরনের চিন্তা ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এখন।
(আগে গল্পগুলো রেগুলার পোস্ট করতাম কারণ তখন এক পর্ব লেখার মাঝেই পরের পর্বের ধারনা মাথায় চলে আসতো।কিন্তু আজ কাল মনেই কিছু আসেনা দুই তিন দিন চলে যাওয়ার পরও।লেখার মন নষ্ট হয়ে গেছে।যাই হোক এতো আবেগ ঝাড়বোনা। কিছু কথা বলি আপনাদের। আমার গল্পে রোমান্টিকতা আছে।অনেকটাই আছে।গল্পের সাথে তাল মিলিয়ে সেগুলো দিই।১/২ লাইন পর পর ই রোমান্স ঢেলে দিইনা।গল্প উপন্যাসে দুটো নায়ক নায়িকার মনের অনুভূতি ভালোবাসা বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে।রোমান্স দিয়ে,আবেগ দিয়ে,কথা দিয়ে বিভিন্নরকম উপায়ে। তো আমিও তার সবটাই প্রয়োগ করছি গল্পে। আপনারা যদি এই রোমান্সগুলো উপন্যাসে মেনে নিতে পারেন তাহলে গল্পে কেনো পারেন না বলেন তো?আপনারা কি কখনো হূমায়ন আহমেদের লিখা পড়েন নি?হয়তো পড়েন নি। আমি কিন্তু আমার লিখা তার সাথে তুলনা করছিনা। বাদ দিই হূমায়ন স্যারের সাবজেক্ট। আচ্ছা আমি বুঝেছি, উপন্যাস গুলো বই হয়ে ছাপা হয়ে বেরিয়েছে তাই উপন্যাসের রোমান্স গুলো রোমান্স।আর আমি ফেসবুকে লিখালিখি করি বলে সেগুলো রোমান্স না সেগুলো বাংলা চ* তাইনা?আপনাদের যদি তাই মনে হয় তাহলে আপনাদের কোন প্রধানমন্ত্রী এসে বলেছে আমার গল্প পড়তে?দূরে থাকুন’ না?১০০ গজ দূরে থাকুন।কিন্তু গল্প পড়বেন ও আবার বাজে কথা ও বলবেন?আপনাদের জন্য গল্প লিখি বলে কি আমার মাথা বেঁচে দিয়েছি আপনাদের কাছে?যে আপনাদের সবকিছু মেনে নিবো?সমালোচনা সহ্য করতে রাজি আছি কিন্তু বাজে কথা শুনতে আমি রাজি নই।কত বাজে কথা সহ্য করা যায়?সহ্যের একটা লিমিটেশন থাকে।
জানি আপনাদের এসব বলে লাভ নেই।সেই আমাদের মত রাইটারাই পঁচবো। তাই ভেবে নিয়েছি ফেসবুকে লিখালিখির পর্ব শেষ করে দিবো চিরতরে।উপন্যাস সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করে উপন্যাস বই লিখবো যদি কোনোদিন এমন কোনো যোগ্যতা অর্জন করতে পারি। কিন্তু ফেসবুকে আর লিখবোনা। এই গল্পটি ও খুব দ্রুত শেষ করে দিচ্ছি।)
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ