রজনীগন্ধা
তখন থেকে ফোন টা বেজেই যাচ্ছে,, কেও
ধরছে না কেন??চেঁচিয়ে বললেন আয়শা বেগম..
রফিক সাহেবের সেদিকে কোন ভ্রহ্মেপ নেই,তিনি পেপার পড়ায় ব্যাস্ত। আর মেয়ে বইয়ে মুখ গুজে আছে.
শেষ অব্দি আয়শা বেগমকেই ফোন টা ধরতে হলো…
আয়শা বেগমঃ হ্যালো, কে বলছেন??
…..
আয়শা বেগমঃ সরি, রং নাম্বার,, বলে ফোন টা রেখে দিলেন।
রাগে গজ গজ করতে করতে রফিক সাহেবের সামনে গিয়ে দারালেন।।
আয়শাঃ কি সমস্যা??
রফিক সাহেব এখনো পেপারে মুখ গুজে আছেন..
আয়শাঃ কথা বলছি শুনছো না?সকাল থেকে পেপারে মুখ গুজে আছো, ফোন টাও ধরতে পারো না?
সব কিছু কি আমাকেই দেখতে হবে?এবার কি বাজার টাও আমি করতে যাব? তোমাদের বাপ মেয়ের এসব হেয়ালি আমার একদম সহ্য হয় না,,সব ছেড়ে চলে যাব, থাকো তোমরা তোমাদের এসব ঢং নিয়ে।
রফিক সাহেব মুখের সামনে থেকে পেপার টা সরিয়ে আয়শা বেগমের দিকে তাকালেন। মুচকি হেসে বললেন দাও বাজারের ব্যাগ টা, দেরি হয়ে গেলে আলু ছাড়া আর কিছু পাওয়া যাবেনা। আয়শা বেগম ভ্রু কুঁচকে কিছুহ্মন তাকিয়ে থেকে রান্নাঘর এর থেকে ব্যাগ আনতে গেলেন। এদিকে রফিক সাহেব মুচকি মুচকি হাসছেন আর মনে মনে বলছে_ পাগলি বউ আমার,,
(রোজ রোজ একি জিনিষ,, আগে বিরক্ত হত,এখন বেশ মজাই লাগে রফিক সাহেবর। বিনোদন বিনোদন ভাব আছে)
প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন আয়শা বেগম আর রফিক সাহেব। অনেক ঝড় ঝাপটার পর ৫ বছরের প্রেম সফল হয়েছিল তাদের। বিয়ের পর থেকে কম সমস্যায় পরে নি তারা, তারপর কেও কারো হাত ছাড়েনি,,সংসারে অভাব থাকলেও তাদের মাঝে ভালবাসার কোন কমতি ছিল না। সব সময় মতের মিল হতো তা নয়,ঝগড়াও হতো কিন্তু কেও কখনো সেই ঝগড়ার রেশ ধরে রাগ করে থাকত না। কেও একজন সরি বলে সব ঠিক করে নিতো,সরি টা কিন্তু মুখে বলতো না,, আয়শা বেগম রাগ ভাঙানর জন্য রফিক সাহেবের প্রিয় খাবার রান্না করতেন আর রফিক সাহেব হাতে করে এক গুচ্ছ রজনীগন্ধা নিয়ে এসে বলতো ভালবাসি..ব্যাস রাগ ওখনানেই শেষ।।
আজ বিয়ের ২০ বছর পরেও তাদের প্রেম আগের মতোই আছে, কে বলবে তাদের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আছে….
আয়শা বেগম বাজারের ব্যাগ টা দিয়ে আবার রান্না ঘরে চলে গেলেন, আজকে রাগ টা তার কমছেই না , আজকের এই দিনে তাদের ১ম দেখা হয়ে ছিল অথচ রফিক সাহেব কে দেখে মনে হচ্ছে সে বেমালুম ভুলে গেছে।
ঘণ্টা খানেক পর আয়শা বেগমের ফোনে একটা কল আসলো.. ফোন স্ক্রিনে রফিক সাহেবের নাম টা ভেসে উঠেছে..
আয়শাঃ কি হলো,এখনো বাজার করা শেষ হয়নি? বলি রান্না কি আমি রাতে করব, সারাদিন কি না খেয়ে থাকার ইচ্ছা??
রফিক সাহেবঃ একটু ছাদে আস তো.. বলেই ফোন টা কেটে দিলেন,, আয়সা বেগম কে আর কিছু বলার সুযোগ দিলেন না।
এদিকে আয়শা বেগমের মেজাজ আর খারাপ হয়ে গেল।। বক বক করতে করতে ছাদে গেলেন
আয়শাঃকি হয়েছে শুনি,, এই অবেলায় ছাদে কেন আসতে বললে…
পুরো ছাদ বেলুন রঙিন কাগজ দিয়ে সাজানো আর ছাদের মাঝখানে রফিক সাহেব এক গুচ্ছ রজনীগন্ধা নিয়ে দারিয়ে আছে।
আয়শা বেগমের সামনে এসে দারিয়ে..
রফিকঃ ভালবাসি পাগলি,আজকের এই দিন টা কি করে ভুলবো?? আজকের এই দিনেই তো আমার প্রিয়জনের সাথে দেখা হয়ে ছিল। আমার হলুদ পরি, বাকি টা জিবন কি আমার জালাতন সহ্য করতে রাজি আছো?এই বলে ফুল গুলো আয়শা বেগমের সামনে বাড়িয়ে দিল
আয়শা বেগমের চোখ থেকে ২ফোঁটা জ্বল গড়িয়ে
পড়ল ,, কিছু না বলেই ঝাঁপিয়ে পড়ল রফিক সাহেবের বুকে।
একমাত্র এটাই যে শান্তির জায়গা আয়শা বেগমের কাছে।।
বেঁচে থাক এমন হাজারো ভালবাসা ?
#আনন্দিতা
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/