রঙ তুলির প্রেয়সী
২২.
হেলাল আহমেদের ইচ্ছেতে উনার বাড়িতেই বিয়ের আয়োজন করা হলো। বিয়ের আর আছে মাত্র একদিন। আজকে গায়েহলুদ। সকাল থেকেই মেহমানদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। মুনতাহা, আদিয়া এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে কাজ করছেন। একটু পর ফাহি দের বাড়ির সবাই চলে আসবে। মুনতাহার বোন মনিরাও উনার স্বামীসহ ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছেন। মনিরা এসেই বোনের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন। নাজিম হোসেন দাঁড়িয়ে আছেন হেলাল আহমেদের সাথে। এটা সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাদের মাঝে। এমন সময় রিয়াদ এসে বললো, ‘বাবা, জাওয়াদ কোথায়? দরকার ছিলো ওকে।’
‘একটা কাজে পাঠিয়েছি। চলে আসবে।’ বলে হাসলেন হেলাল আহমেদ।
‘আচ্ছা তাহলে শোনো, আমি গাড়ি নিয়ে একটু বেরোচ্ছি।’
‘কোথায় যাবি তুই?’
‘নাহিদের বাইকটা মাঝপথে আটকে আছে। ওকে নিয়ে আসি। সাথে রাকিবকেও পিক করে নেবো। তুমি মা-কে বলোনা আমি গেছি। যাবো আর আসবো।’
‘তাড়াতাড়ি ফিরে আসিস।’
রিয়াদ বেরিয়ে যাওয়ার পর নাজিম হোসেন হেসে বললেন, ‘এক ছেলের জীবন তো গুছিয়ে দিলেন। এবার আরেকজনের জন্য কী প্লান?’
আবছা হাসলেন হেলাল আহমেদ। বললেন, ‘সেই প্লান ছেলের ওপরেই ছেড়ে দিলাম।’
‘যদি কিছু মনে না করেন… ইয়ে… মানে…’ আমতাআমতা করতে লাগলেন নাজিম হোসেন।
‘জ্বি, ভাই, বলুন।’ কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন হেলাল আহমেদ। নাজিম হোসেন কিছু একটা বলতে গিয়েও অস্বস্তিতে বলতে পারছেন না। এমন সময় পেছন থেকে মনিরা বেগম বলে উঠলেন, ‘আপনার সাথে বেয়াই পাতাবো এবার, দুলাভাই।’
হেলাল আহমেদ আর নাজিম হোসেন একসাথে পেছন ফিরে দেখলেন, মুনতাহা ও মনিরা দাঁড়িয়ে আছেন। মনিরা হেসে এগিয়ে এসে নাজিম হোসেন এর পাশে দাঁড়ালেন। নাজিম হোসেন যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। হেলাল আহমেদ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন, ‘বুঝলাম না।’
মনিরা বেগম বললেন, ‘ছেলেমেয়েরা কী কাণ্ড করছে সেটা কী খবর রাখেন?’
হেলাল আহমেদ মুনতাহার দিকে তাকালেন। মুনতাহা বললেন, ‘নুহা আর জাওয়াদ একে অপরকে ভালোবাসে।’
অবাক হলেন হেলাল আহমেদ। বললেন, ‘কী বলো! কবে থেকে? ওদেরতো কখনও কথা বলতেই দেখিনা।’
নাজিম হোসেন বললেন, ‘লজ্জায় সবার সামনে কথা বলে না। বুঝেনই তো।’
হেলাল আহমেদ চমকালেন খুব। তার ছেলেকে তিনি চেনেন। জাওয়াদের ব্যবহারের সাথে খুব পরিচিত তিনি। নুহার সাথে জাওয়াদের এরকম কিছু কল্পনাও তিনি করেন না। কখনও বোঝাও যায়নি এসব। মুনতাহা স্বামীর মন বুঝলেন হয়তো। তিনি নিজেও অবাক হয়েছেন এটা শোনার পর। তিনি কথা অন্যদিকে নেয়ার জন্য হেলাল আহমেদকে বললেন, ‘আচ্ছা আচ্ছা, সবাই চলে আসবে এক্ষুণি। তুমি একটু এদিকটায় থেকো। আমি যাই কিছু কাজ আছে।’ বলে তিনি চলে গেলেন। হেলাল আহমেদ মনিরা আর নাজিম হোসেন এর সাথে এটা সেটা নিয়ে গল্প করতে লাগলেন।
__________
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
নুহা দোতলায় ঘুরছিলো। খুব সুন্দর ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে বাড়িটা। সে ভাবছে, তার আর জাওয়াদের বিয়েতে এরথেকেও সুন্দর করে বাড়িটা সাজাবে। সবাই তাক লেগে যাবে বিস্ময়ে। এসব ভাবছিলো আর হাঁটছিলো নুহা। হঠাৎ চোখ পড়লো তিথির ঘরের দিকে। দরজা খোলা দেখে একবার ভেতরে উঁকি দিলো৷ কেউ নেই। বিছানার ওপর একটা মগ আর কাগজের মতো কিছু একটা রাখা। নুহা এগিয়ে গেল। আর্ট পেপার টা হাতে নিলো। দাঁতে দাঁত চেপে কিছুক্ষণ দেখলো। তিথির বৃষ্টি বিলাস এর ছবি, জাওয়াদের আঁকা। জাওয়াদের আঁকার সাথে নুহা পরিচিত। চোয়াল শক্ত করে এদিক ওদিক তাকালো নুহা। তারপর বিছানার ওপর রাখা মগটায় দেখলো, কফি রাখা। হাসলো নুহা। হাতের আর্ট পেপার টা খুব যত্ন করে বিছানার ওপর রাখলো। তারপর কফির মগটা হাতে নিয়ে আর্ট পেপারের ওপর মগের সব কফি ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দিলো। একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে ছবিটা। হেসে বেরিয়ে গেল নুহা, তিথির ঘর থেকে।
_________
ফাহির ফ্যামিলির সবাই চলে এসেছে। গায়েহলুদ শুরু হওয়ার আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। আসার পরই আদিয়া, নুহাসহ সবাই ফাহিকে নিয়ে পার্লারে চলে গেল। আদিয়া চেয়েছিলো তিথিকে সাথে নিতে, কিন্তু তিথি যায়নি। সে আজ জাওয়াদের মনমতো সাজবে। ছাঁদে দাঁড়িয়ে দেখছে তিথি, মেয়েদের নিয়ে একটা গাড়ি রওয়ানা হলো পার্লারের দিকে। আর জাওয়াদের গাড়ি এসে আটকালো গেটের সামনে। মুখে হাসি ফুটে উঠলো তার। কাপড়গুলো হাতে নিয়ে নিচে নেমে যেতে লাগলো। একটু পর ছাঁদে গায়ে হলুদের স্টেজ সাজানো হবে। তাই, যে কাপড়গুলো শুকোতে দিয়েছিলো সেগুলো নিতে এসেছিলো সে। নিচে নামতে নামতে তিথির মনে পড়লো, ফাহির সাথে দেখা হলোনা। থাক, পরে দেখা করে নেবে ক্ষণ। নিজের ঘরের দিকে যেতেই পেছন থেকে টুনির ডাক শুনতে পেলো তিথি। ঘুরে তাকালো সে। টুনি বললো, ‘খালাম্মা আপনেরে ডাকে। উনার ঘরে।’
তিথি হাতের কাপড়গুলো টুনির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো, ‘তুমি একটু এগুলো আমার ঘরে রেখে এসো।’
টুনি বিনাবাক্যব্যয়ে কাপড়গুলো নিয়ে চলে গেল। তিথি এগোলো মুনতাহার ঘরের দিকে।
_________
‘আমার কাছে বিষয়টা ভালো ঠেকছেনা। আমি আমার ছেলেকে চিনি।’ চিন্তিত মুখে বললেন হেলাল আহমেদ।
আলমারি থেকে একটা বক্স বের করে বিছানায় এসে বসলেন মুনতাহা। তারপর স্বামীর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এখানে এতো চিন্তার কিছু নেই। নুহা ভালো মেয়ে।’
‘ভালো খারাপের কথা আমি বলছিনা। আমি জাওয়াদের কথা ভাবছি। তুমি ভালোকরেই তোমার ছেলেকে চেনো। সে নিজের ইচ্ছা ব্যাতিত অন্যের ইচ্ছায় চলেনা।’
‘আচ্ছা। বিয়েটা ভালোয় ভালোয় মিটতে দাও। পরে জাওয়াদের সাথে কথা বলা যাবে ক্ষণ।’
‘মুনতাহা। আমার মনটা কেন যেনো বড় কু ডাক ডাকছে।’ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললেন হেলাল আহমেদ।
মুনতাহা চাপা ধমকের স্বরে বললেন, ‘তুমি এখন এসব নিয়ে টেনশন করে শরীর খারাপ করো না তো। জাওয়াদ পছন্দ করলে ভালো, না করলে আমরা এগোবোনা। ব্যস।’
কথাটা বলে বক্সের ভেতরের জিনিসগুলো দেখতে লাগলেন মুনতাহা। স্বামীকে ধমকে চুপ করালেও, নিজের মনকে শান্ত করছে পারছেন না তিনি। ‘আমরা এগোবোনা’ কথাটা যতো সহজে বলেছেন, বাস্তবায়ন করাটা ততোটাই কঠিন।
‘মামণি, আমায় ডেকেছিলে?’
তিথির ডাকে ঘোর কাটে মুনতাহার। তিনি তিথির দিকে তাকালেন। হেলাল আহমেদ বললেন, ‘হ্যাঁ মা, ডেকেছেন। ঠিক আছে তোমরা থাকো। আমি যাই বাইরে।’ বলে বেরিয়ে গেলেন তিনি।
‘আয়। বস।’ বললেন মুনতাহা। তিথি এসে বসলো তাঁর পাশে। তিথি বক্স থেকে এক জোড়া স্বর্ণের ঝুমকো বের করলেন। ঝুমকো জোড়া বেশ বড় আর খুব সুন্দর। সেটা তিথির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোর শাড়ির পাড় তো এই রঙের, তাইনা? এইটা পরবি আজকে।’
তিথি একবার তাকালো ঝুমকোর দিকে। তারপর বললো, ‘আমার এসবের দরকার ছিলোনা তো, মামণি। সেদিনই তো একগাদা গয়নাগাটি কিনে দিলে।’
‘ওগুলো তো এমনিই। আজ এইটা পরবি তুই।’
তিথি কিছু বলতে যাবে তখনই শুনলো কেউ একজন বলছে, ‘তিথিও আছো এখানে। ভালোই হলো।’
তিথি আর মুনতাহা একসাথে দরজার দিকে ফিরে তাকালেন। দেখলেন, জাওয়াদের বড় মামী মেহেরুন হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। মুনতাহা বললেন, ‘ভাবি। এসো ভেতরে এসো।’
মেহেরুন হেসে ভেতরে এলেন। তিথি দাঁড়িয়ে গেল বসা থেকে। তারপর দেখলো জাওয়াদের ছোট মামীও এসে ঢুকলেন ঘরে। তিথি সালাম দিলো দুজনকেই। তারপর মুনতাহাকে বললো, ‘আমি এখন যাই মামণি।
‘না না, তুমি থাকো, তিথি।’ বললেন মেহেরুন।
তিথি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। জাওয়াদের ছোট মামী আঞ্জুমান বললেন, ‘দাঁড়িয়ে আছো কেন, তিথি? বসো তুমি। আমি বসতে আসি নি। চলে যাবো।’
তারপর মুনতাহার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আপা, কলিজার তরকারি আছে? সাহিল বায়না ধরেছে কলিজার তরকারি দিয়ে ভাত খাবে। এখনও তো রান্না হয়নি দেখলাম। আগের রান্না করা আছে?’
‘হ্যাঁ ফ্রিজে আছে দেখো। একটা সাদা বাটিতে। গরম করে দিয়ে দিও।’
‘আচ্ছা।’ বলে বেরিয়ে গেলেন আঞ্জুমান।
তিথি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। মেহেরুন মুনতাহার দিকে তাকালেন। তারপর ব্যাগ থেকে একটা আকাশী রঙের কাতান শাড়ি বের করলেন। সেটার দিকে তাকিয়ে থেকে বলতে লাগলেন, ‘এই শাড়িটা মাহির। জাওয়াদ উপহার দিয়েছিলো। খুব পছন্দের ছিলো এটা মাহির। যখনই পরতো, সদ্য ফুটে ওঠা ফুলের মতো লাগতো আমার মেয়েটাকে। শাড়িটা যখন সে পরতো, চুল ছাড়া রাখতো সে। আমি আমার মেয়ের চুলের মতো লম্বা চুল আর একজনের দেখেছি।’ এতটুকু বলে তিথির দিকে তাকালেন তিনি। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে তিথির সামনে গেলেন। তিথি একটু অবাক হলো। মেহেরুন বললেন, ‘শুধু চুলের দিক থেকে নয়। তোমাকে দেখলেই আমার মাহির কথা মনে হয়। মনেহয়… আমার মেয়েটা আমার সামনে দিয়ে ঘুরছে। এ-এই… তুমি এই এই শাড়িটা কালকে পরবে, তিথি? পরবে, মা? আমার খুব ভালো লাগবে।’
কথাগুলো বলা শেষ করতেই টুপ করে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে মেহেরুনের গাল বেয়ে। তিথির বুকটা মুচড়ে ওঠে। একজন মা এভাবে এসে তাকে বলছে… কান্না পেয়ে গেল তিথিরও। সে আস্তে আস্তে শাড়িটা মেহেরুনের হাত থেকে নিজের হাতে নিলো। তারপর বললো, ‘পরবো। অবশ্যই পরবো।’
মেহেরুন এগিয়ে গিয়ে তিথির কপালে একটা চুমু দিলেন। তারপর মুনতাহার দিকে তাকালেন। মুচকি হাসলেন মুনতাহা। বেরিয়ে গেলেন মেহেরুন। তিথিও শাড়িটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মুনতাহা ডাকলেন, ‘শাড়িটা আমার কাছে দিয়ে যা। কাল তোকে পরিয়ে দেবো আমি। আমার কাছে আসবি। পার্লারে যেতে হবে না তোকে কাল। আমি সাজিয়ে দেবো।’
তিথি কিছু না বলে শাড়িটি মুনতাহার হাতে দিলো। তারপর ঝুমকো জোড়া নিয়ে বেরিয়ে গেল। মুনতাহা কিছুক্ষণ শুন্যে তাকিয়ে রইলেন। তারপর হুট করে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলেন
____________
তিথি নিজের ঘরে গিয়ে দেখলো জাওয়াদ বসে আছে। হাতে ভাজ করে রাখা একটা কাগজ৷ দেখে মনে হচ্ছে আর্ট পেপার। তারপর মনে পড়লো তিথির, বিছানার ওপর জাওয়াদের আঁকা ছবিটা রেখেছিলো সে। জাওয়াদ দিতে চায়নি, জোর করে নিয়ে এসেছিলো। বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখলো কফির মগ। কফির কথা ভুলেই গিয়েছিলো সে। তারপর খেয়াল করলো, বিছানার চাদরটা পাল্টানো। সে এগিয়ে এসে বললো, ‘আরে, সকালেই আমি চাদর বদলিয়েছি। আবার বদলালো কে?’
জাওয়াদ নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তিথির কথা শুনে মাথা তুলে তাকালো তার দিকে। তারপর হেসে বললো, ‘আমি বদলিয়েছি।’
‘কিন্তু কেন?’
‘হিসু করে দিয়েছিলাম তোমার বিছানায়।’ বলে হেসে দিলো জাওয়াদ।
‘ইশ, আপনি না…’ লজ্জা পেলো তিথি।
জাওয়াদ বললো, ‘প্রশ্নেরও ধরন থাকতে হয় পিচ্চি। ওটা ভালো লাগেনি তাই চেঞ্জ করিয়েছি।’
‘ও।’ বললো তিথি। তারপর একটু চুপ করে আবার বললো, ‘ছবিটা নিলেন কেন? দিন।’ বলে নিতে চাইলো ছবিটা তিথি। জাওয়াদ হাত পেছনে নিয়ে নিলো। তারপর বললো, ‘অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। সেটা ঠিক করবো। ছবিটা তোমাকে এখন দেয়া যাবেনা।’
‘কেন?’ গাল ফুলিয়ে বললো তিথি।
জাওয়াদ বললো, ‘তুমি বুঝবেনা।’ বলে নিজের পকেট থেকে একটা চকলেট বের করে তিথির দিকে এগিয়ে দিয়ে আবার বললো, ‘এটা দিতে এসেছি। নাও। খাও। কাজ আছে আমার, যাচ্ছি। আর তোমার কফিটা আমি খেয়ে ফেলেছি।’ বলে তিথির হাতে চকলেট দিয়ে হেসে বেরিয়ে গেল জাওয়াদ। তিথিও হেসে চকলেট খেতে লাগলো।
____________
নিজের রুমের দিকে যেতে যেতে ভাবছিলো জাওয়াদ, তিথি ছবিটার এই হাল দেখলে অনেক কষ্ট পেতো। বিছানার চাদরেও কিছুটা কফি পড়ে দাগ লেগে গিয়েছিলো। কোনোভাবেই যাতে কিছু না বুঝে তাই বিছানার চাদরটাও টুনিকে দিয়ে বদলিয়েছে সে। জাওয়াদ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে। কাজটা কার করা। দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো ভেতর থেকে। রাগ করতে করতেও ক্লান্ত সে। নিজের রুমে যেতেই কেউ একজনের চিৎকার শুনলো, ‘জাওয়াদ, এতোকিছু হয়ে গেল কিছুই বললিনা।’
জাওয়াদ তাকিয়ে দেখলো তার রুমে রিয়াদ, রাকিব, নাহিদ তিনজন বসে আছে। কথাটা রাকিব জিজ্ঞেস করেছে চিৎকার করে। জাওয়াদ বললো, ‘কী বলবো?’
‘ভাবি বানিয়ে ফেললি বেটা, বলিওনা না ট্রিটও দিলিনা।’
‘বিয়ে খাচ্ছিস, হচ্ছেনা?’ বলে বিছানায় এসে বসলো জাওয়াদ। নাহিদ বললো, ‘রিয়াদের বিয়ে। এমনভাবে বলছিস যেনো বিয়েটা তোর। আমার ছাত্রীর সাথে হিল্লে করলি অথচ আমিই জানলাম না।’
জাওয়াদ ওদের কথাকে পাত্তা না দিয়ে রিয়াদের পিঠে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো, ‘সময় বেশি নেই। আস্তে আস্তে তৈরি হ।’
রাকিব বললো, ‘ভাবিকে দেখবো কবে?’
জাওয়াদ হাসলো ঠোঁট কামড়ে। তারপর নিজের চুলে হাত চালাতে চালাতে বললো, ‘দেখবি। আজই দেখবি।’
_________
চলবে……..
#ফারজানা_আহমেদ
আর ২/৩ পর্বে শেষ।