#মেঘ রোদ্দুরের আলাপন
#পার্টঃ০৫
#Writer:মারশিয়া জাহান মেঘ
২৮.
ম্যাম আপনার জন্য একটা চাকরির অফার আছে। আপনি শুধু অফিসের অল স্টাফ রেগুলার এটেন্ড করছে কিনা তা দেখবেন”
একজন ভদ্রলোকের মুখে এমন কথা শুনে চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে উঠে রিশ এর। রিশ হেসে বলে আমি জবটা করতে চায়। তবে হ্যাঁ যথেষ্ট আমার যোগ্যতায়।
‘হুম হুম Sure ম্যাম। তাহলে কাল চলে আসিয়েন ইন্টারভিউ দিতে।
‘অবশ্যই। ধন্যবাদ আপনাকে। রিশ কে বিনিময়ে একটা হাসি দিয়ে চলে গেলেন সেই ভদ্রলোকটি।
রিশ মনে মনে ভাবে, ‘আমাকে আমার কাজ সম্পূর্ণ করতে যেতেই হবে ওই কোম্পানীতে।
২৯.
জেইন চেয়ারে বসে বার বার বৃত্তান্তটা নিয়ে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবছে। স্বাদ চুপ করে সামনে বসে আছে। জেইন নিরবতা ভেঙে বললো,
‘স্বাদ.. রিশ টের পায়নিতো কিছু?
‘নো স্যার। রহিম চাচাকে ম্যাম বলেছে যথেষ্ট ওনার যোগ্যতায় ওনি জবটা নিতে চায়।
‘হুম তাই হোক। বাট আমি রিশ ওয়াহিদকে আমার অফিসেই দেখতে চায় স্বাদ। এনিকোস্ট।
‘আই উইল ট্রাই অফ মাই বেষ্ট স্যার।
৩০.
রিশশশশশ…চিৎকার করে দৌড়ে গিয়ে মিসকাত রিশকে জড়িয়ে ধরে।
‘আল্লাহ এই মেয়ে কি এতো চিৎকার করছিস কেনো?
‘আগে তুই বল, তোরতো আন্টির সাথে দেখা করে চলে যাওয়ার কথা হঠাৎ থেকে গেলি কও বুঝে?
‘তোর বিয়ের বুঝি?
‘ওরে আমার ঢং তোর বিয়ের আগে আমার বিয়ে হবেইনা দেখিস।
‘হুম হুম দেখা যাবে।
ওদের কথা শুনে ফিক করে হেসে দেয় রিলজেম। মিসকাত রিশকে দেখে এতোটাই কথায় মগ্ন ছিলো যে ভুলেই গেছে তাদের পাশে আরেকজন ব্যক্তি আছে। মিসকাত চুপসে যায়। রিশ দুই কোমড়ে হাত রেখে নাক ফুলিয়ে বললো,
‘দাভাই তুমি হাসছো কেনো?
‘আম আমি কই হাসলাম?
‘না হাসলে তোতলাচ্ছো কেনো?
‘ইশশ রিশ তোর বান্ধবী দেখতেই বড় হয়েছে কিন্তু ওর স্বভাব পুরাই বেবি হাহাহাহা।
‘রিশশশ…
‘হিহিহি..
‘রিশ তুইও হাসছিস?
‘তো কি করবো দেখলিনা? আমার দাভাই তোকে বেবি বললো.. এইটা বলে আবার হাহা করে হাসে রিশ। মিসকাত রাগী চোখে রিলজেম এর দিকে তাকাতেই রিলজেম একটা চোখ টিপ মেরে উপরে চলে যায়। মিসকাত হা হয়ে তাকিয়ে আছে। রিশ হঠাৎ খেয়াল করে মিসকাত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আসলে রিশ এমনভাবে হাসিতে মত্ত ছিলো যে দেখেইনি তার দুষ্টু ভাইয়ের কান্ড। রিশ একটু মিসকাতের কাঁধে আলতো ধাক্কা দিয়ে বললো, ‘কিরে হা হয়ে আছিস কেনো? মশা ডুকবেতো।
৩১.
স্বাদ ৫ জন এয়ারপোর্ট থেকে আমাদের বাগান বাড়িতে ঠিকমতো পৌঁছে ছেতো?
‘ইয়েস স্যার। স্যার হ্যাড স্যার আপনার সাথে আলাদা মিটিং করতে চায়।
‘ওয়েল রাত ১০ টায় কানেক্টেড করে নিও।
‘ওকে স্যার।
“স্বাদ..একটা কথা বলবো তোমার সাথে?
‘অফ কোর্স স্যার। প্লিজ…
” আমার কেনো জানি একটা বিষয়ে সন্দেহ হচ্ছে।
‘কোন বিষয়ে স্যার?
‘আমার বার বার মনে হচ্ছে Something is Wrong
‘কেনো স্যার? কোন বিষয়ে?
‘রিশ ওয়াহিদ ফর্মোলা কান্ট্রির হাতে তুলে দিচ্ছেনা কেনো? এই কথাটা আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিনা।
“স্যার জানিনা কেনো আমারো অনেক সন্দেহ হচ্ছে। ওনি দেশের সাথে প্রতারকতা করবেন নাতো?
‘না আমার তা মনে হয়না। ওনার সম্পর্কে যতটা জেনেছি ওনি যথেষ্ট অনেস্ট একজন ওমেন অফিসার।
‘তাহলে?
” স্বাদ এই তাহলের উত্তরটা পাওয়ার জন্যইতো এই কোম্পানিতে ওনাকে চায়। এইখানে থাকলে ইজিলি ফলো করা যাবে।
‘রাইট স্যার।
৩২.
রিশ নে পায়েস।
‘পায়েস খাবোনা মম।
‘রিশ পায়েসতো তোর ভীষণ পছন্দের একটা খাবার খাবিনা কেনো?
‘দাভাই আর খেতে ভালো লাগেনা।
‘মমতা মিসকাত কে দাও।
‘হুম মম দিন দিন ওনাকেই দিন।
রিলজেম মিসকাতের দিকে তাকিয়ে মিনমিনিয়ে হেসে কথাটা বললো।
রিলজেম মিসকাতের দিকে এমনভাবে তাকিয়ে আছে দেখে রিশ গলাটা একটু ঝেড়ে বললো,
‘দাভাই তুমি কি খাবে নাকি কাউকে দেখতে দেখতে পরে যাবে?
শাহারিয়া ওয়াহিদ মেয়ের দিকে একনজর তাকিয়ে মুচকি হেসে মনে মনে ভাবলো, ” যাক রিশ মন খুলে হাসছে।
‘ওগো শুনছো…কালতো আমাদের সবার ইনভাই আছে সবাই যাবে কিনা বলো।
শাহারিয়া ওয়াহিদ ওয়াইফের কথা শুনে বললো, ‘ওহ হে তাইতো ভুলেই গিয়েছিলাম। সবাই শুনো..কাল আমাদের সবার ইনভাইটেশন আছে সবাই যাচ্ছোতো?
‘বাবাই আমি যাবোনা
‘রিশ তুমিতো কখনো ইনভাইটেশন মিস করোনা ব্যাপার কি?
‘একচুয়ালী বাবাই আমার নিউ জবতো তাই একটু প্রস্তুতী নিতে হবে। তুমি বরং মিসকাত ও দাভাইকে নিয়ে চলে যাও আর মমতে আছেই।
‘না আমি তোকে ছাড়া কোথাও যাবোনা।
‘ওফ মিসকাত আমি না থাকলে কি হবে দাভাই আছেতো। তুই বরং দাভাইয়ের সাথে সাথেই থাকিস।
‘না ম্্ মানে…
‘হে হে রিশ তুই ঠিক বলেছিস আমি আছি ওনার কোনো প্রবলেম হবেনা। রিশ মিনমিনিয়ে হেসে বলে হুম তাইতো।
৩৩.
‘ছোট ছোট করে চোখ খুলে সি আই ডি অফিসার R.W. চোখটা খুলতেই কপালে হাত রাখলো। মাথাটা ব্যাথা করছে প্রচুর। মুখে টেপ লাগানো। চেহারার অবস্থা খুবই খারাপ। এতোক্ষনে ভালোভাবে তাকায় অফিসার R.W. চারিদিকে চোখ বুলিয়ে দেখে অন্ধকার একটা রুম। মনে মনে ভাবলো, ‘না না আমাকে যেভাবেই হোক পালাতে হবে৷ আমার দেশকে বাঁচাতে হবে। হে আল্লাহ আপনি সদয় হোন।
হঠাৎ কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে আগের মতো বিবস্ত্র হয়ে চোখ বুঝে অফিসার RW.
মুহুর্তেই কয়েকজন মানুষের কথা শুনে সে।
কেউ একজন বললো, ”বস বলেছে এই অফিসারকে কিছুতেই একা ছাড়া যাবেনা। এই অফিসার অনেক চালাক তাই এ কখন কি করবে অজানা।
আরেকজন বললো,
‘সেইটা বস পরে যা করার করে নিবে। মেয়েটাকে এখন কোনোরকম উঠিয়ে খাইয়ে দে। এই অফিসারকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কারণ একমাত্র এই অফিসারই জানে সেই ফর্মোলা কোথায়। বসের কথা অনুসারে একে জীবন্ত লাশ বানিয়ে রাখতে হবে হাহাহা।
অফিসার R.W মনে মনে বলছে, ‘এই আশা তোদের কখনো পূরণ হবেনা। ক্যাপ্টেন ডনকে আমি দেশের কোনো ক্ষতি করতে দিবোনা। এইটা অফিসার R.W এর প্রমিস।
৩৪.
স্যর টু বি এলার্ট। একটা ইম্পরট্যান্ট ইনফরমেশন আছে ফরেনার টিম এক্ষুণি অনলাইনে কানেক্টেড হতে চায়।
জেইন গোসল সেরে এইমাত্র ওয়াশরুম থেকে বের হয়েছিলো। হঠাৎ স্বাদ এসে উপরোক্ত কথাটা বললো। জেইন ভেজা চুল গুলে হাত দিয়ে ঝাঁড়তে ঝাঁড়তে বললো,
‘কল লাগাও।
‘ওকে স্যার।
রিং হতেই জেইন ফোনটা হাতে নিয়ে বললো,
‘হুম বলো। কি ইনফরমেশন আছে?
ওপাশ……
‘হোয়াট? রিশ ওয়াহিদ ওইখানে হলে এইখানে কে?
চলবে…..