Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"মিঠা রোদমিঠা রোদ পর্ব-২১+২২+২৩

মিঠা রোদ পর্ব-২১+২২+২৩

#মিঠা_রোদ
#পর্ব:২১
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

দূর্বোধ্য এক অনুভূতিতে বাঁধা পড়েছে কিশোরী তোশা।ক্ষণে ক্ষণে যা তাকে শেষ করে দিচ্ছে।জীবনে হাসিখুশির উজ্জ্বলিত প্রদীপটি যেন আজ নিভন্ত পর্যায়ে এসে ঠেকেছে।সকাল থেকে ঠিকমতো খাওয়া হয়ে উঠেনি।তাহিয়া ব্যস্ত থাকায় বিষয়টি তেমন একটা খেয়ালও করেনি।পেটের প্রত্যেকটি আনাচে কানাচে এখন তোশাকে খাবার গ্রহণের জন্য আকুতি জানাচ্ছে।কিন্তু আশ্চর্য মেয়েটি এক দানাও মুখে তুলতে পারছেনা।অথচ যাকে ঘিরে এই খারাপ লাগার আয়োজন সেই কবীর শাহ হেসে খেলে বেড়াচ্ছে।বোনের বিয়ে উপলক্ষে আসিফ তার সমস্ত বন্ধুবান্ধবদের ডেকেছে।একসময় তারা কবীরের সিনিয়র ছিল।তারা যে জায়গায় পড়াশোনা করেছে তা মূলত স্কুল,কলেজ একত্রে ছিল।

“রান্না ভালো হয়নি তোশা?”

“ভালো হয়েছে আম্মু।”

“তাহলে জলদি খেয়ে রুমে চলে যাও।একটু পরে সকলে আড্ডার আসর জমাবে।তুমি ছোট এখানে থাকা উচিত হবেনা।”

“তুমি এখানে থাকবে আম্মু?”

“কবীর থাকবে।আমি কিছুসময় আছি।ভয় নেই।তোমার সাথে আপাতত থাকার জন্য একজন মেয়েকে সাথে দিবো আমি।”

“হুহ।”

তোশা মনে মনে ভাবছে সে তো শুধু তার মায়ের কথা শুনতে চেয়েছিল।তবে সেখানে কবীর নামটা কেন যুক্ত হলো?ভয়ংকর অপমান করেছে লোকটা তাকে।সে কখনো আর কথা বলবেনা।মনকে শাসন করে নিলো।ছোট ছোট করে খাবার মুখে দিচ্ছে এহেন সময় একজন মহিলাকে ঘিরে হৈ হৈ করে উঠলো সকলে।তোশা তাকে চিনে।প্রচন্ড রকমের বি ত র্কিত একজন নারী লেখক।নাম রুবা।বয়স আসিফের সমান হবে সম্ভবত।তোশা আগ্রহের সহিত মায়ের উদ্দেশ্যে শুধালো,

“উনি কে হোন আসিফ আঙকেলের?”

“বান্ধুবী।আমাদের সিনিয়র ছিলেন।তখন তো ভালো ছিল।কিন্তু এখন পুরোদস্তর ফেমিনিস্ট।কবীর তো এক কালে রুবা আপু বলতে ফিদা ছিল।”

তোশার শূন্য হৃদয়ে কেউ যেন একরাশ কয়লা ফেলে দিলো।জ্বলেপুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে।ধীর কণ্ঠে শুধালো,

“কেমন ফিদা ছিল?”

“ফ্লার্ট করতো।বাড়ীতে গিয়ে ঢিল ছুঁড়তো।টিনেজাররা যেমন করে।দেখো আজ আবার যখন দুজনের দেখা হবে তখন ঠিক আগের রুপে ফিরে যাবে।”

“ভালোবাসা ছিল?”

মিষ্টি করে হাসলো তাহিয়া।যা পুরোদস্তুর নিরোর্থক অনুভব হলো তোশার নিকট।খাওয়া বাদ দিয়ে কিশোরী সামনে তাঁকিয়ে রইলো।কবীর শাহ ভীরের মধ্যে একদম রুবার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।তোশা চোখ বন্ধ করে নিলো।কিন্তু কথা গুলো ঠিকই তার কর্ণগোচর হলো।এইতো সেই দৃঢ়, মায়াময় শক্ত কণ্ঠে কবীর বলছে তবে অন্য এক রমণীর উদ্দেশ্যে।

“কী আশ্চর্য আজ জমিনে চাঁদের আগমণ ঘটলো।এই কয়লা হয়ে যাওয়া পাথরটি তো নিজেকে কু র বা ন করতে ভুলবে না সেনোরিটা।”

রুবা উচ্ছাসিত কণ্ঠে বলল,

“কবীর শাহ।তুমি সত্যি নাকী আমি ভুল দেখছি।”

“কী ব্যাপার রুবা।আমাকে নিয়ে কী খুব বেশীই স্বপ্ন দেখেন যে বাস্তবে দেখে বিশ্বাস হচ্ছে না।”

কুটিল হাসলো রুবা।ঘাড় অবধি সুন্দর করে কাট দেওয়া চুলগুলো নাড়িয়ে বলল,

“তুমি বদলালে না।”

“এতো রুপ দেখে বদলানো যায় বলেন?তবে মন খারাপ হয়েছিল।বিয়ে শেষ হতে চলল অথচ সুন্দরীর দেখা মিললো না।অবশেষে এই অধম এক বিন্দুর পানির দেখা পেলো।”

রুবা সহ আশেপাশের সকল মানুষ উচ্চ শব্দে হেসে উঠলো।আসিফ তাদের থামিয়ে বলল,

“চুপ থাকো দুজনে এখন।চল রুবা তাহিয়ার সঙ্গে আলাপ করিয়ে আনি।”

“তাহিয়া?ও এখানে কীভাবে?”

“সে বহু কথা।আয়।”

রুবার সঙ্গে সরাসরি পরিচয় হতে হবে দেখে তড়িঘড়ি করে মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে নিলো তোশা।কবীরের মুখে বলা একেকটি বাক্য তাকে য ন্ত্র ণা দিচ্ছে।হয়তো শুধুমাত্র একান্তে সেসব পাওয়ার আশা জাগে মনে।যা পূরণ হয়না।প্রস্থানের সময় কবীরের সঙ্গে চোখাচোখি হলো তার অবশ্য।কিন্তু অনুভূতির বিনিময়?সেটা কখনো হবে?”

(***)

গভীর রাত দুটো।সকলের সঙ্গে আড্ডায় এতোটা সময় কখন চলে গিয়েছে বুঝতে পারেনি কবীর।তাছাড়া সে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিল তোশার কথা ভুলে থাকতেও।রুমের কাছে এসে সে থমকে দাঁড়ালো।পাশে তাহিয়াদের রুম যেটির দরজাটি হালকা খোলা।খটকা লাগলো কবীরের।যদিও ভেতরে উঁকি দেওয়া কোনো সভ্য মানুষের কাজ হবেনা কিন্তু নিজেকে দমন করতে পারলো না।বিছানায় একান্তে শুধু তাহিয়াকে শুয়ে থাকতে কপালে মৃদু ভাঁজ পড়লো।ওয়াশরুমটাও যে ফাঁকা সেটি বোঝা যাচ্ছে। মুহুর্তেই ঘাম ছুটে গেলো কবীরের।হালকা নেশা আছে তার।তবুও হন্তদন্ত হয়ে নিজের রুমে এসে দেখলো সেটিও ফাঁকা।

“তোশা তুমি কী ভেতরে আছো?”

জবাব পেলো না পুরুষটি।তৎক্ষনাৎ বের হয়ে গেলো রুম থেকে।অবশেষে আধা ঘন্টার গোপন অভিযানের পর মেয়েটির দেখা মিললো ছাদে।আজ তাকে সুন্দর করে শাড়ী পরিয়ে দিয়েছিল তাহিয়া।হলুদ রঙা মিষ্টি পাখি লাগছিলো।এই কিশোরীকে কখনো শাড়ী পরলে ছোট লাগেনা।কবীরের কী হলো কে জানে?পিছন থেকে তোশাকে খুব শক্ত করে আলিঙ্গন করলো।

“এখানে কী করছো তুমি?জানো রুমে না দেখে ভয় পেয়েছিলাম।”

কুণ্ঠিত হয়ে তোশা জবাব দিলো,

“আম্মু ঘুম থেকে উঠেছে?”

“নাহ।”

“রুমে ভালো লাগছিলো না।”

“তাহলে আমার কাছে আসতে।তবুও একা কেন ঘুরাঘুরি করছো।”

“আপনি আমার কে যে আপনার কাছে যাবো?”

কবীর অবাক হয়ে নিজ বক্ষের সঙ্গে লেপ্টে থাকা অভিমানী কিশোরীকে দেখলো।তৎক্ষনাৎ স্মরণে এলো সে সত্যিই কেউ না।ছেড়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ালো।গম্ভীর সুরে বলল,

“রুমে ফিরে চলো।”

“একটু পরে।”

“মন খারাপ কিছু নিয়ে?”

“হুহ।”

“সেটা কী?”

“শুনে কী করবেন?আপনার জন্য তো বহু রুবা আছে।এক তোশার কথা না শুনলেও চলবে।”

“জেলাস?”

কঠিন মুখে ফিরে তাঁকালো তোশা।আবারও অনুভূতিকে অপমান করছে ব্যক্তিটি।

“মি.শাহ।আপনি আমার অনুভূতিকে ইনসাল্ট করার সাহস পান কোথা থেকে সবসময়?”

ভ্রু কুঞ্চিত হলো তামাটে পুরুষটির।অধরে মৃদু হাসি ফুটিয়ে বলল,

“তুমি ভীষণ রহস্যময়ী বেলাডোনা।যাকে এই কয়লা বুঝতে পারছেনা।”

তোশা অশ্রুপূর্ণ দৃষ্টিতে মানুষটিকে দেখলো।ভালোবাসি সে আর বলবেনা।বরং এখন থেকে দূরে দূরে থাকবে।চলে যেতে নিলে তার আঁচলখানা ধরে নিজের কাছে টেনে নিলো কবীর।প্রাণভরে মেয়েটির গায়ের উষ্ণ সুগন্ধ গ্রহণ করলো সে।

“তোশামণি,তুমি বড় অসময়ে আমার জীবনে এলে।যদি তা না হতো বিশ্বাস করো সবথেকে ভালোবাসা দিতাম তোমাকে।”

“আপনি নিষ্ঠুর কবীর শাহ।”

কবীর পুনরায় সেই ভুলটি করলো।তবে এবার তোশা সজ্ঞানে রয়েছে।আস্তে করে তপ্ত অধর দুটো তোশার কপালে ঠেকালো।মিষ্টি একটি বাতাস এসে স্পর্শ করে গেলো তাদের।কবীর আনমনে বলল,

“আমি দেশ ছাড়বো তোশা।যদি এখন তোমার থেকে দূরে না যাই তবে পাগল হয়ে যাবো।জানো হালকা নেশা করেছি একটু আগে।সেই কারণে এমন নিজেকে খুলে দিচ্ছি তোমার কাছে।নেশা কেঁটে গেলে আবার বাস্তববাদী হয়ে পড়বো।”

“কেন যাবেন কবীর শাহ?আমাকে ভালোবাসেন আপনি?উত্তরটি কী হ্যাঁ নয়?”

“হয়তো আবার হয়তোবা না।বাদ দাও এসব কথা।এখন শুধু এই সময়টুকুকে উপভোগ করো।”

চলবে।

#মিঠা_রোদ
#পর্ব:২২
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

“বউয়ের সঙ্গে রেডিমেড একটা মেয়ে পেলে মন্দ হয়না কী বলো কবীর?এই কারণে তাহিয়ার পিছু পিছু ঘুরছি।যদি মানুষটার আমার প্রতি মায়া জন্মায়।”

“কিন্তু তাহিয়া বিয়ে করবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসিফ ভাই।মায়ান যখন পরবর্তীতে সংসার গড়ে তুললো তখন আমরা সকলে ওর জন্য পাত্র দেখা শুরু করেছিলাম।কিন্তু মেয়ের জন্য রাজী হয়না।”

“আমার কাছে তাইয়ুবার একটুও অনাদর হবেনা।মায়ান মেয়ের খোঁজ রাখে?”

“খুব ভালোবাসে।সব খোঁজ নেয়।”

“যাই হোক।তোমাদের এখানে ডেকে আমার খুব ভালোলেগেছে।বিশেষ করে তাইয়ুবাকে।মেয়েটা আসলেও ছোট্ট একটা পুতুল।”

আসিফ যে মায়া মমতা নিয়ে তোশার পানে তাঁকালো কবীর ঠিক সেটা পারলো না।বরং তার মনে একরাশ অস্বস্ত্বি এসে জড়ো হলো।গত পরশু গায়ের হলুদের রাতে ছাদে ঠিক কী হয়েছিল তাদের মধ্যে কবীরের মনে মেই।শুধু এতোটুকু স্মরণে ছিল সে তোশার কপালে চুম্বন করেছে।এবং মেয়েটির সম্পূর্ণ জ্ঞান ছিল তখন।এই একটি মাত্র নির্লজ্জতায় কবীর আত্নগ্লানিতে শেষ হয়ে যাচ্ছে।এরপরে বহু সময় তারা ছাদে একত্রে ছিল।ঠিক ওতোটা সময়ে কী হয়েছিল কবীরের স্মরণে নেই।তবে বিশেষ কিছু হয়েছিল তখন।তা নয় তোশা নামক কিশোরী একটি বাক্যও উচ্চারণ করেনি এই দুদিন তার সঙ্গে।তাকে ভাবনার বিশাল সমুদ্র থেকে বের করে আসিফ বলল,

“রুবা চলে যাচ্ছে কবীর।”

“হু,কখন?তাকে ঠিকমতো ডোজ দিতে পারলাম না।এরকম ফেমিনিস্ট হয়েছে কেন সেটাই ভাবার বিষয়।”

“তিন বছরে দুবার সংসার ভাঙছে।ঠিক এই কারণে।তবে আমার আশ্চর্য লাগে এটা ভেবে যে তোমাদের মধ্যে কতো অদ্ভূত কথাবার্তা হয়।”

“ফেমিনিস্ট না হলে কী হবে।তেজ আগে থেকে ছিল।এই কারণে নাকানিচুবানি খাওয়াতাম।মনে আছে আমি একবার ইট ছুঁড়তে গিয়ে তার বাবার মাথা ফা টি য়ে দিয়েছিলাম।”

আসিফ হাসতে হাসতে বলল,

“খুব মনে আছে।আর আঙকেল এরপর থেকে যে বারান্দায় হেলমেট পরে ঘুরাঘুরি করতো এই দৃশ্যও মনে আছে।”

কবীর হাসিতে যোগ দিলো।আজকে বিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছে।এজন্য মেহমানরা একে একে চলে যাচ্ছে।মেয়ের স্কুল মিস যাচ্ছে বিধায় তাহিয়াও চলে যাবে।কাজ সব শেষ করে কবীর ফিরবে ঢাকাতে।সকলের কাছ থেকে বিদায় নিতে গেলো তাহিয়া।এদিকে চুপচাপ গাড়ীর পাশে দাঁড়িয়ে আছে তোশা।আজ খুব সুন্দর লাগছে তাকে।গোলাপি রঙের সুঁতি থ্রি পিচ পড়েছে।মসৃণ চুলগুলো পিঠময় ছড়িয়ে আছে।কবীর অনেকটা ইতস্তত করে তার পাশে এসে দাঁড়াল।মানুষটার গায়ের রঙ কালো হলে কী হবে?কালো শার্টেও খুব মানাচ্ছে।শক্ত ফুলে ফেপে থাকা পেশিগুলোর উপর শার্টটি আঁটসাঁট হয়ে বসেছে।গা থেকে সেই তীব্র সুগন্ধ।যা নাকে আসতে মনটা খারাপ হয়ে গেলো তোশামণির।

“চলে যাচ্ছো?খেয়েছো কিছু?”

“খেয়েছি।”

“তোশামণি একটি কথা জিজ্ঞেস করার ছিল।সেদিন মানে হলুদের দিন ছাদে আমার দ্বারা তোমার সাথে কোনো অন্যায় হয়েছে?সত্যি করে বলো।”

তোশা একটি বার পাশে দাঁড়ালো শৈল্পিক মানুষটিকে দেখলো।তার থেকে বেশ লম্বা হওয়ায় তামাটে মুখশ্রীকে মনে হচ্ছে বেশ দূরে তার থেকে।

“সত্যি বলতে কালোতে আপনাকে মানায় না কবীর শাহ।”

“মজা নয় লিটল চেরী।আমি কী কোনো ভুল করেছি?এতোটা মনে আছে আমি ভুল স্পর্শ করেছিলাম।”

“এটা নিয়ে তো দ্বিতীয়বার ছিল।তবে এতো গিল্টি ফিল করছেন কেন?”

কবীর বিবর্ণ হেসে বলল,

“সম্মান ও কামনার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে লিটল চেরী।”

তোশা পুনরায় অনুভূতিহীন দৃষ্টিতে কবীরকে দেখছে।এইতো সেই মানুষটা যে তার স্বপ্নের পুরুষ ছিল উহু,বরং আছে।এবং সবসময় থাকবে।কিন্তু আজকের পর থেকে বিচ্ছেদ যে শুরু হবে তাদের মধ্যে।সেটি কী কখনো মিটবে?

“আপনি কিছুই করেননি কবীর শাহ।যা আমার কাছে সুখের বিষয় সেটিকে ভুল বলবেন না।আর হ্যাঁ আপনাকে দেশ ছাড়তে হবেনা।আমি কখনো আপনার সামনে আসবো না আজকের পর থেকে।”

“কেন আসবেনা?এর মানে আমি ভুল করেছি কিছু।”

বাক্য দুটো বলতে গিয়ে কবীরের কণ্ঠ মৃদু আন্দোলিত হয়ে উঠলো।তীব্র আশংকায় বুকটি শেষ হয়ে যাচ্ছে তার।তোশা নিজেকে সামলে বলল,

“আমি বুঝেছি আপনার আমার হয়না।আর সত্যিই আবেগ ছিল কিছুটা।ভাববেন না টাকার জন্য ছিলাম।”

রেগে গেলো কবীর।মেয়েটির বাহু শক্ত করে ধরলো।দাঁতে দাঁত ঘর্ষণ হলো তার।

“আমি কখনো সেটা বলেছি?এরকম অদ্ভূত মনগড়া কথা বললে ট্রাকের নিচে ধা ক্কা দিয়ে ফেলে দিবো।”

“না আপনি বলেননি।আমি কথার কথা বললাম।যাই হোক সত্যিই আবেগ ছিল।আপনি হালকা কাছে আসায় মিটে গিয়েছে।”

আশ্চর্য হয়ে তোশার বাহু ছেড়ে দিলো কবীর।শুকনো তিক্ত ঢোক গিলে শুধালো,

“এইতো বললে সময়টা সুখের ছিল।তবে আমার স্পর্শে খারাপ লেগেছে তোমার?”

“ভুলে বলেছি।কিন্তু আপনার সামনে কখনো আসবো না।টাকা পয়সার দিক দিয়ে দেখতে গেলে আমি আপনাকে ডিজার্ভ করিনা আর সৌন্দর্য বয়সের দিক দিয়ে দেখতে গেলে আপনি আমাকে ডিজার্ভ করেননা।তাই দূরে থাকা ভালো।দেশ ছাড়বেন না।অন্তত ছেলেকে সাথে নিয়ে বাঁচেন।”

কবীর যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা যে এটাই সেই ছোট্ট তোশামণি কীনা।যার সঙ্গে এইতো মাত্র কয়েকমাস আগে পরিচয় হলো তার।পুতুলের মতোন আশেপাশে মিশে থাকতো।এখন তার সামনে যে শক্ত,দৃঢ় মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে তার বয়স যেন বিশ বছর বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছে।পরবর্তীতে কবীরের সম্মান আঘাত এলো।সে শক্ত কণ্ঠে বলল,

“তোমার থেকেও সুন্দর আমার টগর ছিল তোশা।সেই হিসেবে চাইলেই আরো ভালো মেয়ে ডিজার্ভ করি।আজকে যা অপমান করলে আমাকে তুমি।সব কথা ভুলে গেলেও শেষের কোনো বাক্য ভুলবো না।যাও কখনো আমার সামনে আসবেনা।”

তোশা অধরযুগল কাঁ ম ড়ে ধরে অশ্রু আঁটকানোর চেষ্টা করছে।কিন্তু শক্তি তো পাচ্ছে না মেয়েটা।কবীর পিছন ফিরে বড় বড় শ্বাস নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো।পুনরায় হু ং কা রের অনুরূপ বলল,

“এরপর যদি কখনো আমাদের দেখা হয় তোশা তবে হয় তুমি আমার প্রেমিক রুপ দেখবে যেখানে বয়স,সম্পর্কের কোনো প্রকার ভয় থাকবেনা।তা নয় অবহেলার রুপ দেখবে।যাই হোক দেখা হলে কী ডিজার্ভ করি আমি বুঝিয়ে দিবো।”

ব্যস এতোটুকু কথার বিপরীতে কোনো কিছু বলার সাহস হয়ে উঠেনি তোশার।কবীর আর একটিবারও তার দিকে দৃষ্টি দেয়নি।তোশাও পাথরের মূর্তির মতোন গাড়ীতে গিয়ে বসলো।শুধু যখন পাশে তাহিয়ার সান্নিধ্য পেলো তখন মাকে শক্ত জড়িয়ে ধরে বলল,

“তোমাকে অনেক ভালোবাসি আম্মু।ধন্যবাদ আমাকে জীবনে রাখার জন্য।”

মেয়ের মন খারাপ দেখে তাহিয়া শুধালো,

“কী হয়েছে তোশামণি?মায়ের প্রতি হঠাৎ এতো ভালোবাসা?”

“সবসময় তোমাকে ভালোবাসি আম্মু।”

গাড়ী চলতে শুরু করলো।তোশা জানে এখন গাড়ী থেকে মাথা বের করলে কবীরের দেখা পাবে।কিন্তু সে ভুলেও এই কাজটি করবেনা।চোখ বন্ধ করে সেদিনের রাতের ঘটনাগুলো মনে করলো।কবীরের বলা প্রত্যেকটি বাক্য তার এখনও স্মরণে আছে।হয়তো আজীবন থাকবে।

(***)

সময়ের স্রোতে চারটি বসন্ত কেঁটে গিয়েছে।দুনিয়ার সমীরণের সঙ্গে মানুষগুলোও যেন বদলে গিয়েছে।এইযে তোশা নামক সেই কিশোরী বিশ বছরের যুবতী।এক সপ্তাহ পূর্বে ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে।বয়স বেড়েছে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শারীরিক ও মানসিক পরিপক্বতা বেড়েছে।কিন্তু এখনও যেন তাহিয়ার ছোট্ট কন্যাটি।ক্ষণবাদে ভার্সিটিতে যাবে তোশা।টেবিলে বসে আছে নাস্তার জন্য।তাহিয়া ফোনে কথা বলছে আর মেয়ের মুখে ব্রেড ভরে দিচ্ছে।পাশে কল্লোল বসে আস্তে করে চায়ে চুমুক দিচ্ছে।

“ফুপু তুমি কেন তোশামণিকে এখনও খাইয়ে দাও।ও তো বড় হয়ে গিয়েছে।”

তাহিয়া মুচকি হেসে বলল,

“ও আমার কাছে সবসময় ছোট থাকবে।যাই হোক ওকে ভার্সিটিতে নামিয়ে তবে তুমি যাবে।”

“তোশাকে তো কতোবার বলি ড্রাইভিং শিখে নাও।”

মুখে এতোগুলো খাবার নিয়ে তোশা জবাব দিলো,

“গাড়ী চালাতে ভালো লাগেনা আমার।তুমি না নিলে বলো আমি উবারে চলে যাবো।”

“নিয়ে যাবো তো।জলদি খেয়ে নাও।”

কল্লোল বর্তমানে মেডিক্যালে পড়াশোনা করছে।ভবিষ্যত ডাক্তার হওয়ার সমস্ত হাবভাব প্রকাশ পেয়েছে তারমধ্য।তাহিয়া গোপনে নিশ্বাস নিলো।তোশাকে যে কল্লোল পছন্দ করে সেটা সে জানে।কিন্তু মেয়েটির মতিগতি বুঝেনা সে।

গাড়ীতে বসে একমনে বাহিরে তাঁকিয়ে আছে তোশা।ঢাকা শহরকে তার অনুভূতিহীন শহর মনে হয়।কিন্তু ভালো লাগেনা আবার এখান থেকে দূরে কোথাও গিয়ে।তীরে এসে তরী ডুবার মতোন শাহবাগে এসে জ্যামে পড়লো তারা।হঠাৎ আনমনে তোশার বাহিরে ফুলের দোকানগুলোর উপর দৃষ্টি পড়লো।নিশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে গেলো তার।সমস্ত মাদকতা নিয়ে সেই তামাটে স্বপ্নের পুরুষটি দাঁড়িয়ে আছে।বাহুতে অন্য এক রমণীর হাত।প্রায় তিন বছর পর তার দর্শণ পেলো তোশা।দোকানদার একগুচ্ছ গোলাপ এগিয়ে দিলো কবীরের দিকে।সে হাতে নিয়ে পাশে থাকা রমণীর উদ্দেশ্যে এগিয়ে দিলো।এর বেশী নিতে পারলো না তোশা।চোখ ভরে এলো তার।এদিকে জ্যাম ছেড়ে গিয়েছে।পাশে বসে থাকা কল্লোলকে বলল,

“ভাইয়া একটু আস্তে কিন্তু যখন বলবো তখন জোরে চালাবে।”

“কেন?”

তোশা জবাব দিলো না।পানি ভর্তি বোতল নিয়ে জানালা থেকে কবীরের দিকে ছুঁড়ে মারলো।মুহুর্তেই ভিজে গেলো লোকটা।চমকে গাড়ীর দিকে তাঁকালে দেখতে পেলো একটি মেয়ে মুখ বের করে চিল্লিয়ে বলল,

“হেইট ইউ কবীর শাহ।”

চলবে।

#মিঠা_রোদ
#পর্ব:২৩
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

“পুরুষ কী শুধু প্রেমিকাকে ফুল দিতে পারে অন্য কাওকে না?আমি জন্ম থেকে এতিম ছিলাম।কিন্তু একজন চমৎকার মানুষ আমাকে নিজের পরিচয়ে বড় করে তুলেছেন।সেই চমৎকার মানুষটির আবার আরেকজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের ছেলে আছে।যে নিজ বোনের অনুরূপ আমাকে সম্মান করে, ভালোবাসে।আমার প্রিয় ফুল গোলাপ।যখুনি দেখা হবে ফুল কিনে দিতে ভুলবেনা।এমনকি সেই ভাইয়ের ছোট ছেলেটিও দেখা হলে ফুল দিবে।এখন বলো তোমরা তারা কী পুরুষ নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছে?”

ক্লাসের অন্যসকল ছেলে-মেয়েগুলো না বোধক শব্দ করলো।শুধু মাত্র সামনে বসে থাকা অতি সুন্দরী যুবতীটি নিজ ওষ্ঠাধর একত্রে চেপে বসে রইলো।এতোক্ষণ যে কথাগুলো বলল সে তাদের একজন অধ্যাপিকা সিয়া শাহ।এই ম্যাডামটি যখন ক্লাসে ঢুকলো তখুনি তোশার প্রাণ পাখি ঝিমিয়ে গিয়েছিল।পরবর্তী শাহ পদবি শুনে চক্ষু চড়কগাছ।তবে ভেবেই নিয়েছিল সিয়া ম্যাম কিছু শুনেনি বা তাকে চিনবেনা।কিন্তু আগাগোড়া সবটাই তো ভুল হলো।সিয়া এগিয়ে এসে ঠিক তোশার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,

“পরিচিত ব্যক্তিকে অচেনা কাওকে ফুল দিতে দেখলে তুমি কী ভাববে প্রথমে মিস?”

“তাইয়ুবা চৌধুরী তোশা।”

“জি তোশা।তুমি কী ভাববে?”

তোশা উষ্ণ শ্বাস ফেললো।যা হবার হোক।তবুও সে সত্যিটাই বলবে।দাঁড়িয়ে সে মাথা নিচু করে বলল,

“দুনিয়াতে অন্যসব পুরুষ কাকে ফুল দিলো আমার মাথা ব্যাথা নেই।কিন্তু একজন নির্দয়,পাষাণ ব্যক্তিকে কাওকে ফুল দিতে দেখলে আমার অবশ্যই পুড়বে।”

চমকে উঠলো সিয়া।কপালে খুব চিকন ভাঁজ পড়লো।চোখের চশমাটি একটু ঠিক করে বলল,

“তোমার বয়স কতো?”

“জি ম্যাম বিশ বছর।”

“বেশ।ক্লাস শেষে আমার সঙ্গে দেখা করবে।”

তোশা মাথা নাড়িয়ে বসে পড়লো।সিয়া নামক যে তাদের ম্যাডাম আছে আজ সে জানলো।কারণ সিয়া এক সপ্তাহের ছুটিতে ছিল।নাহ,এভাবে সত্য বলায় তোশার বিন্দুমাত্র আক্ষেপ হচ্ছে না।বরং মনে মনে সে খুশি।আবার কবীর শাহ এর জীবনে ঝড় তোলার একটি মাত্র সরু পথ তো খুঁজে পেলো।ক্লাসটা পরিচয় দেওয়া নেওয়ার মধ্যেই শেষ হলো।সিয়ার পিছন পিছন ছোট্ট নরম পায়ে বের হয়ে এলো তোশা।একটু নির্জনে যুবতীর উদ্দেশ্যে সে শুধালো,

“আমার ভাইকে এতো ঘৃণা করার কারণ কী তোশা?তুমি কী মায়ান চৌধুরীর মেয়ে?”

“ঘৃণা করিনা ভালোবাসি।হ্যাঁ আমি মায়ান চৌধুরীর মেয়ে।”

সিয়ার অক্ষিগোলক স্বীয় ছন্দে বড় হয়ে গেলো।বাচ্চা মেয়েটির পা থেকে মাথা অবধি একবার দেখে নিলো।

“কেমন ভালোবাসা?ভাইয়ের বয়স চল্লিশ জানো?তোমার দ্বিগুণ।”

“ম্যাম বয়স তো সংখ্যামাত্র।”

“একদম না।আজকের দিনে বয়স,যোগ্যতা,লুক সবকিছু মেটার করে।নেহাৎই আমার ভাই সুন্দর,যোগ্যতাসম্পন্ন।বয়স ওর চল্লিশ মনে হয়না।”

তোশা থমথমে মুখে বলল,

“কিন্তু যাই বলেন কবীর শাহ তো কালো।”

“তুমি আমার ভাইকে কালো বললে?”

“যা সত্যি তাই।”

“তাহলে ভালোবাসার কথা কেন বলছো?আবার ঘৃণাও করো।স্টুপিড মেয়ে কোধাকার। ক্লাসে যাও।”

“সব কথা তো শুনেন ম্যাডাম।আপনার ভাইকে এতোদিন পর দেখলাম তাও ফুল দিতে।এজন্য রাগ সামলাতে পারিনি।”

সিয়া ধমকে বলল,

“ক্লাসে যাও।এখুনি যাবে।এখন মনে পড়লো দুই বছর আগে আমার ভাই বলেছিল এরকম একজনের কথা।”

“সত্যি?কী বলেছিল?”

” ক্লাসে যাও তোশা।”

তোশা গোমড়া মুখে ক্লাসের দিকে এগিয়ে গেলো।সিয়া সেদিকে তাঁকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে কবীরের নাম্বারে ডায়াল করলো।ওপাশ থেকে রিসিভ হতে বলল,

“তোশা এখনও তোকে ভালোবাসে ভাই।আমি পরীক্ষা করে দেখেছি।”

“ভালোবাসার ভূত তাহলে এখনও মাথা থেকে নামেনি।”

“মনে হয়না নামবে।যাই হোক মেয়েটা হয়তো সত্যিই তোকে ভালোবাসে।তা নয় চার বছরে যা কমলো না।তুই নিজেও তো..।”

কথা সম্পূর্ণ করতে পারলো না সিয়া।তার পূর্বেই ফোনটি কেঁটে দিয়েছে কবীর।

(***)

সূর্যের সঙ্গে যেন প্রতিযোগীতা করে ঘুম থেকে উঠে কবীর।এইতো ক্ষীণ আলো প্রকাশ পাওয়ার পূর্বেই তৈরী হয়ে বাহিরে দৌড়ানোর জন্য বের হয়ে যায়।এসব নিয়মিত শরীর চর্চার জন্য কীনা চল্লিশ বছর বয়সেও দেখতে যথেষ্ট কম বয়সী লাগে।লম্বা বড় বড় পা ফেলে সে দৌড়ে চলেছে বিশাল বড় মাঠটির এ মাথা থেকে ওই মাথা।হুট করে তার সঙ্গী দৌড়ে এলো কোথাও থেকে।থেমে গেলো কবীর।মিষ্টি হেসে বিড়ালটিকে কোলে তুলে নিলো।বিড়ালটি ম্যাও ম্যাও শব্দে আদরে আদরে ভরিয়ে দিচ্ছে ব্যক্তিটিকে।এই প্রাণীটিকে দেখলেই তোশার কথা মনে পড়ে কবীরের।উষ্ণ শ্বাস বের হয়ে এলো ভেতর থেকে।কিছুটা সময় আদর করে প্রাণিটিকে নামিয়ে দিলো কবীর।একজনের যে পালিত বিড়াল তা গলার মালা দেখে বোঝা যায়।পুনরায় দৌড়ানো শুরু করলো সে।এবারও তার সঙ্গী হলো কিন্তু মানুষ।কবীর ভ্রুঁ কু্চকে পাশ ফিরে তোশাকে দেখে চমকে গেলো।নিশ্চয় মেয়েটি বিভ্রম তার।ওতোটা তোয়াক্কা না করে কবীর নিজ ছন্দে দৌড়াচ্ছে।

ব্যক্তিটির এরকম নির্বিকার ভঙ্গি দেখে মেজাজটি খারাপ হয়ে গেলো তোশা।চিল্লিয়ে বলল,

“আস্তে কবীর শাহ।এতো বেশী দৌড়াচ্ছেন কেন?”

থেমে গেলো কবীর।অবিশ্বাসের সুরে বলল,

“তোশা তুমি?”

“কেন অন্য কাওকে আশা করেছিলেন?”

“আবার শুরু হলো।কোন বুদ্ধিতে যে সিয়াকে নিয়ে ফুল কিনতে গিয়েছিলাম।”

কবীরের বিরক্তিতে তোশার বুকটা ভেঙে গেলো একদম।কান্নাগুলো প্রায় চলেই এসেছিল এমন সময় থেমে গেলো।শুকনো ঢোক গিলে বলল,

“দেখুন।”

“হুম বলো।”

“আরে আমাকে দেখতে বলেছি।”

“তুমি কী দেখার জিনিস?”

“দেখেন তো।”

তোশা ঘুরেফিরে কবীরকে দেখালো।হলুদ ড্রেসটায় তাকে ছোট্ট হাঁসের ছানার মতোন লাগছে।

“দেখা শেষ এবার বলো।”

“আমার এনআইডি কার্ডটা তো বাসায় রেখে এসেছি।পারলে সেটাই দেখাতাম।এখন আমি বড় হয়েছি।সেসব বাদ আমি আপনার পিছনে আসিনি।না হলে ছয়দিন আগে পানি মে রে ছি লা ম এরপর দেখেছেন আমাকে?বরং ওইযে যে বিড়ালটাকে দেখলেন ওদের বাসায় এসেছি।টিকুর মা আমার বান্ধুবী।”

“ভেরী গুড।তা আমার সামনে কেন এলে?”

“বারান্দা থেকে গত তিনদিন ধরে দেখি লোভ সামলাতে পারিনি আজ এজন্য।বাই দ্যা ওয়ে আপনি আরো সুন্দর হয়েছেন কবীর শাহ।তুলে বিয়ে করে ফেলতে মন চাচ্ছে।বিয়ের প্রস্তাব দিতে এসেছি।আপনি খুব সুন্দর ব্রেইন ওয়াশ করেছিলেন আমার অতীতে।ছোট ছিলাম দেখে।এবার ছাড়বো না।তাই বলতে এলাম।”

“ন্যাকা মেয়ে একটা।”

তোশার মাথায় শক্ত করে একটা চাটি দিয়ে পুনরায় দৌড়াতে লাগলো কবীর।কিন্তু আশ্চর্য রাউন্ড শেষ করে এসে দেখে মেয়েটি নেই।শুধু টিকু নামক বিড়ালটি আছে।কবীরকে দেখে প্রাণিটি উচ্ছাসিত হয়ে তার দিকে এগুবে ওমনিই একটা মেয়ে ডাকতে ডাকতে এদিকে এলো।

“এইযে ভাইয়া পিকুকে একটু দেন তো।”

কবীর খেয়াল করলো মেয়েটি তোশার বয়সী।কিন্তু নাম ভিন্ন বলায় সে শুধালো,

“ওর নাম তো টিকু।”

“না তো।পিকু।”

“কেন তোশা যে বলল।”

“তোশা কে?”

“তোমার বান্ধুবী।”

মেয়েটি মুচকি হেসে বলল,

“আমার এমন নামের কোনো বান্ধুবী নেই।আচ্ছা আপনি যাকে দেখেছেন সে কী খুব সুন্দরী?”

গম্ভীর মুখে কবীর জবাব দিলো,

“হুম পরীর মতোন দেখতে।”

“নিশ্চয় তবে সেই জিনকে দেখেছেন যা আমার বড় ভাইয়ের পিছনে দশ বছর ছিল।এইযে মাঠে যারা দৌড়ায় তাদের এসে ধরে।আপনি যা সুন্দর তাই আপনার প্রিয় মানুষটার রুপ ধরে এসেছে।”

“আমাকে বোকা মনে হয় তোমার মেয়ে?”

“বিশ্বাস করলেন না তো?সত্যি বলছি।”

কবীরের কেমন যেন খটকা লাগলো।তাই সে তৎক্ষনাৎ তাহিয়াকে ফোন করে তোশার খোঁজ করলো।মেয়েটা বাড়ীতে ঘুমাচ্ছে শুনে চমকে গেলো।কিন্তু তা প্রকাশ করলো না।নিজ বাড়ী থেকে খুব বেশী দূরে এই মাঠটি নয়।কতো বছর ধরে আসে কিন্তু এমন তো শুনেনি।আগুন্তক মেয়েটি বিড়ালটিকে কোলে নিয়ে নিজ বাসার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলো।এই পুরো ঘটনায় একমাত্র টিকু যে এই মাত্র পিকু নামে ভূষিত হয়েছে সে সমান তালে ম্যাও ম্যাও করছে।যার বাংলা করলে হয়তো এটা দাঁড়াবে,

“কবীর শাহ তোমাকে দুনিয়ায় সবথেকে মিষ্টি মেয়েটি বোকা বানালো।এবার সে কোমড় বেঁধে নেমেছে প্রেম প্রেম খেলার মাঠে।হারবে না।”

চলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ