Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"মা'ওয়ামা'ওয়া পর্ব-০৫(শেষ পর্ব)

মা’ওয়া পর্ব-০৫(শেষ পর্ব)

~ মা’ওয়া ~
মোর্শেদা হোসেন রুবি
পর্ব-০৫(শেষ পর্ব)

বিচার পর্ব শুরু হতে একটু দেরিই হয়ে গেলো। বিচারের লোকজন এখনও আসা শুরু করেনি। সবাই হয়তো রাতের খাওয়া সেরে আসছে। গ্রামের লোকজন এমনিই তাড়াতাড়ি খায় আর তাড়াতাড়ি ঘুমায়। শহর হিসেবে এটা সন্ধ্যা।
রাহিমা চাচি জানালেন অন্যান্য দিন এসময়টায় হাকিম মোল্লা চাচা আর ইনজাম দুজনেই খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়ে। আজ বিচারের কারণে তাদের নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটেছে। কারণ বিচারটা কোন সাধারণ নারীর না, একজন ইমামপত্নীর। তার সম্মানের দিকটা মাথায় রেখেই এই রাত্রি আয়োজন। চাচী আরো বললেন, ” রাতের অন্ধকারও একটা পর্দা।”

বিচারের ঘরে আসার আগে রাহিমা বেগম নিজের পরনের পোশাকের উপর আরেকটা জিলবাব চাপালেন। অথচ বিচার ঘরে চাদরের এপাশে সবাই মহিলা। ইশারা মনে মনে কিছুটা বিস্মিত হলেও মুখে কিছু বললো না। সে বেশ আগ্রহ নিয়েই বিচারের আয়োজন দেখছিলো।

কিছুক্ষণের মধ্যেই বিচার পর্ব শুরু হবে। চাদরের ওপাশে একাধিক পুরুষ কণ্ঠের আওয়াজ পেয়ে রাহিমা চাচি থম ধরে গেলেন। অথচ পুরো সন্ধ্যা অনর্গল কথা বলেছেন। ইশারা অবাক হয়ে তাকে দেখছিলো। একজন বয়স্ক মানুষের এই লজ্জাবোধ ওকেই যেন লজ্জায় ফেলে দিচ্ছিলো। শেষ পর্যন্ত চাচির দেখাদেখি ইশারা নিজেও মাথায় ওড়না দিতে বাধ্য হলো। কিছু পরিবেশের দাবিই এমন হয় যাকে অগ্রাহ্য করা যায়না ।

বিচারে খুব বেশি লোকের সমাগম হয়নি। হাকিম মোল্লা চাচার কঠোর নির্দেশে বাইরের কাউকেই বিচারে আসতে দেয়া হয়নি।
চাদরের ওপাশে পুরুষদের দিকে আছেন হাকিম মোল্লা চাচা সহ তার পুত্র ইঞ্জিমাম, ইমামপুত্র আব্দুল্লাহ এবং প্রয়াত ইমাম সাহেবের একমাত্র শ্যালক অর্থাৎ ইমামপত্নী নাবিলার সহোদর ভাই যিনি নিজেও একটি মাদ্রাসার উস্তায।
চাদরের এপাশে মেয়েদের দিকে আছেন রাহিমা চাচি, ইমামের বিধবা পত্নী নাবিলা ও তার প্রৌঢ়া মাতা জমিলা বিবি। বাইরের লোক বলতে একমাত্র ইশারা। সেও ইঞ্জামের ভাষায়।

বিচার শুরু হবার পরেই চাচার এক প্রশ্নে ইমামপুত্রের বুকফাটা কান্না শুনে সবাই থেমে গেলো। চাদরের এপাশে বসে সবাই আরেকটি ফোঁপানি শুনলো। ইশারা ধারণা করলো ইনি প্রয়াত ইমাম সাহেবের শ্যালক। তিনিও ভাগনের সাথে কাঁদছেন। তাদের সেই কান্না এবার সংক্রমিত হলো চাদরের এপাশেও। প্রয়াত ইমাম সাহেবের প্রৌঢ়া শ্বাশুড়ীও কেঁদে উঠলেন। বাকিরা সবাই স্তম্ভিত। চাদরের একপাশে ক্রন্দনরত কিশোর পুত্র আব্দুল্লাহ আর অপর পাশে তার ক্রন্দনরতা নানী জমিলা বিবি।
বিচারক হাকিম মোল্লা চাচা নির্বাক। বাকিদের সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছেনা। ইশারা শুধু পরম বিস্ময়ে ইমাম পত্নী নাবিলাকে দেখছিলো। সে নিজে সুশ্রী বলে চাপা একটা গর্ব ছিলো তার। কিন্তু ইমামপত্নী নাবিলাকে দেখার পর নিজেকে ওর সামনে কুশ্রী মনে হতে লাগলো। কী চমৎকার দুধে আলতা গায়ের রঙ আর কী কমনীয় মুখশ্রী। যেন কোনদিন সূর্যের আলো পড়েনি ঐ ত্বকে। তাকে দেখে মনেই হচ্ছে না যে তিনি এতো বড় একটি পুত্রের মা। ইশারা তারচেয়ে বেশি অবাক হলো নাবিলার শক্ত মুখ দেখে। এবং সে মোটেও কাঁদছিলো না। তাকে পাথরের মুর্তির মতো মনে হচ্ছিলো।

একসময় কান্না পর্ব স্তিমিত হলো। ইশারা শুনতে পেলো, চাদরের ওপাশে নাবিলার ভাই কান্নাভেজা ভাঙা কণ্ঠে বলছেন,” ফুপাজান। আপনি মুরুব্বি। এই গ্রামের মাথা। আমরা এখন কী করবো একটা বুদ্ধি দেন। আমার মাথা আর কাজ করেনা ফুপা। এর একটা বিহিত করেন। এই পাপীষ্ঠাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার অনুমতি দেন আর নয়তো দোররা দেন মেরে ওকে রক্তাক্ত করি আমি। দেখি ওর ঐ একরত্তি শরীরে কত শক্তি ধরে। এতোবার বলেছি, এসব বাদ দে। ফিরে আয়। জান্নাতের পথ ধর। তার কানে এসব ঢোকেনা। ঐ জাহান্নামী নিজেও জাহান্নামে যাবে আমাদেরকেও নেবে।” বলে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন মওলানা।
সেই কান্নার সাথে সাথে নাবিলার মাও কাঁদলেন। রাহিমা চাচির হাত ধরে বিড়বিড় করে বললেন,” আম্মা, আমি নিজেও তে অল্প বয়সের বিধবা। আপনারা তো জানেন, আমার স্বামী মারা যাবার পর থিকা জীবনের এতোগুলো বছর পর্দা পসিদার ভিতরে থাকছি। কোন পরপুরুষের দিকে চক্ষু তুইলা চাই নাই। সবুর করছি। এক হাতে এই ছয়টা পুলাপান মানুষ করছি। কারণ আমি জানি, রাসুল সাঃ বলছেন, যে নারী স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজের সতীত্ব আর স্বামীর মাল সম্পদ রক্ষা করে, স্বামীর সামনে তার লগে কথাবার্তা সাবধানে বুইজ্যা বলে এবং শিশু সন্তান সহ বিধবা হওনের ফরেও যে নারী সন্তানগো আঁকড়াইয়া ধইরা রাখে আর তাগো ক্ষতি হওনের ডরে বিয়াশাদী না কইরা সন্তানগো দেখাশোনা করে, লালন ফালন করে সেই নারী জান্নাতী (কিতাবুল কাবায়ের – ইমাম আযযাহাবী রাঃ)। আর আমার এই মাইয়া আমার পেটে জন্ম নিয়াও আইজকা রঙগিন চশমা পিনছে। মনে করসে আমি কিছু বুজিনা। সেয় রাত বিরাইতে গুসুল করে। জিগাইলে কয় তাহাজ্জুদ পড়ুম। কত্ত বড় সিয়ানা বলেন আম্মা। সেয় কুথা থিকা এক মুবাইল জুটাইসে জানিনা। সেইহানে আবার কারে জানি বন্ধুও বানাইসে। নাউযুবিল্লাহ। হেই বেটা অহনে সমানে ফুন দেয়। কয়, বিয়া করবো। এই মাইয়ারে আমি কেমনে বুঝাই। ওরে জেনাকারিনী এই দুনিয়ার জীবন দুই দিনের । এই শরীর তো পুকামাকড়ের খাইদ্য। ” জমিলা বিবি চাপা স্বরে মেয়েকে বকতে লাগলেন।
তিনি হয়তো আরো কিছু বলতেন কিন্তু তার আগেই হাকিম মোল্লা চাচার খাকারিতে রাহিমা হাত দিয়ে তাকে থামতে ইশারা করলেন। বাকিরাও সবাই থেমে গেলো।

হাকিম মোল্লা পর্দার এপাশের বিচারপ্রার্থিনীর উদ্দেশ্যে বললেন,” এক পক্ষের কথা তো শুনলাম। এবার আব্দুল্লাহর আম্মার মতামতটাও জানতে চাই। ইঞ্জামের আম্মা, আপনি উনার কথাগুলো মন দিয়ে শুনেন। ওনার ইচ্ছেটা জানেন। কারণ ইসলাম ধর্মে বিধবা বিবাহের অনুমতি আছে। কাজেই আব্দুল্লাহর আম্মা যদি চান তাহলে শরীয়ত মতো…!”

” না ফুপা। এই গজব কইরেন না ফুপা। আমাদের মানসম্মান থাকবে না। ইমাম সাহেবের একটা সুনাম আছে এলাকায়। তার সন্তানরা থাকতে ওদের মা বিয়ে করাটা কেমন দেখায়। ” হাকিম মোল্লাকে থামিয়ে দিয়ে আব্দুল্লাহর মামা প্রবল বিরোধিতা করে উঠলেন। আব্দুল্লাহও শব্দ করে কেঁদে উঠলো প্রথমে তারপর হঠাৎ ছুটে গিয়ে পাকা দেয়ালে কপাল ঠুকতে লাগলো। এপাশে জমিলা বিবিও দু হাতে কপাল চাপড়াতে লাগলেন। মুহূর্তে পুরো বিচারিক সভা উত্তেজিত ও অশান্ত হয়ে উঠলো। উত্তেজনায় ইশারা নিজের ঠোঁটগুলো দাঁত দিয়ে শক্ত করে কামড়ে ধরলো। হায় আল্লাহ , কী হবে এই মেয়ের। এ যেন অনাঘ্রাতা, অপাপবিদ্ধা। এ তো এমন ফুল যার পত্রপল্লবে এক ফোঁটা ধূলো পড়েনি। এই মেয়েকে কী তবে জোর করে আজীবন এভাবে বেঁধে রাখা হবে ? হায়, ধর্মের নিয়মগুলো এতো কঠোর কেন। ইশারা কান্না পেয়ে গেলো হঠাৎ।

এমন সময় ইঞ্জিমামের গমগমে সুর পরিবেশটাকে কিছুটা শান্ত করলো। ইশারা শুনতে পেলো ইঞ্জিমাম বলছে ,” আব্বা আপনার অনুমতি নিয়ে আমি আব্দুল্লাহ আর ওর মামাকে দুটো প্রশ্ন করতে চাই। ”

হাকিম মোল্লা মাথা নাড়লেন। ইঞ্জিমাম বললো, ” মওলানা সাহেব। আপনি তো মাশাআল্লাহ দ্বীন জানা লোক। শারঈ বিধান জানেন। আব্দুল্লাহ এখনও ছোট ওর হয়তো জানা নাও থাকতে পারে। তবু দুজনকেই প্রশ্ন করছি। আপনারা কী রাসুল সাঃ কে অনুসরণ করেন বা নিজেকে তার উম্মত দাবি করেন ?”.

” জি অবশ্যই। ” দুজনেই সমস্বরে বললো।

” মাশাআল্লাহ। আপনারা কী রাসুল সাঃ এর স্ত্রী উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামার সাথে বিয়ের ঘটনা জানেন ? মওলানা সাহেব আপনি বলুন, জানা আছে সেই ঘটনা? ”

মওলানা খানিকটা দমে গিয়ে বললেন,” জি জানা আছে জনাব।”

” মাশাআল্লাহ। তাহলে তো এটাও জানেন যে রাসুল সাঃ এর সাথে কয়েকজন সন্তানের জননী উম্মে সালামার বিয়ে হয়েছিলো তার নয় বছরের পুত্র উমারের তত্ত্বাবধানে ?”

মওলানা এবারও মাথা নাড়লেন, ” জি জনাব।”

” মাশাআল্লাহ। তাহলে এবার বলুন, আপনি কত বড় ইজ্জতদার হয়ে গেছেন যার ইজ্জত রাসুলের ইজ্জতকে টপকে গেছে ? আপনি আপনার অল্পবয়সী বিধবা বোনকে বিয়ে দিলে আপনার সম্মান লুট হয়ে যাবে কারণ তার দুটো বাচ্চা আছে। কাল যখন আপনার স্ত্রী মারা যাবে আর আপনি বিয়ে করবেন তখন আশাকরি কারো সম্মান লুটিয়ে যাবে না। কী বলেন ? যতদুর জানি, আপনার নিজেরও দুটো বাচ্চা আছে? ”

মওলানা নিরব। নিরব গোটা বিচারিক মজলিশ। ইশারা স্তব্ধ হয়ে কথাগুলো শুনতে লাগলো। মাত্র কয়েক মিনিট আগেই এই ছেলের ব্যবহারে সে রাগ করেছিল। পণ করেছিলো জীবনে আর ইঞ্জিমামের সাথে কথা বলবেনা। যে কিনা তার বাল্যবন্ধুকে অস্বীকার করে শুধু ধর্মের দোহাই দিয়ে। সেই ইঞ্জিমাম এসব কী বলছে ?

ইশারাকে বিস্মিত করে দিয়ে ইঞ্জিমাম পুনরায় বললো, ” জমিলা চাচি আপনার কথাগুলো আমি শুনেছি। চাচি আপনি মুরুব্বি মানুষ তাই সহজ করে বলি। সবাই আপনার মতো এতো দীর্ঘ সময় ধরে রোজা রাখতে পারেনা। আপনার জন্য সাধুবাদ কিন্তু যে বিধান আল্লাহতা’লা স্বয়ং রেখেছেন তার বান্দার জন্য তাতে যদি আপনাদের মানসম্মান যায় তাহলে বুঝতে হবে আল্লাহর বিধানের উপর আপনারা সন্তুষ্ট নন, নাউযুবিল্লাহ। আর রাসুল সাঃ এর যে হাদিসটা আপনি বললেন তার পাশাপাশি এটাও জেনে রাখুন, রাসুল সাঃ বলেছেন, ” যে আমার সুন্নতকে অপছন্দ করলো সে যেন আমাকেই অপছন্দ করলো। ” এ পর্যন্ত বলে থামতেই জমিলা চাচি এপাশে গুনগুন করে কেঁদে উঠলেন। মওলানা এবারও নিরব।

কেবল আব্দুল্লাহ এগিয়ে এসে ইঞ্জিমামের হাত ধরে বললো,” আপনি যা বলছেন তা সত্যিই ভাইজান?”

” সিরাহ পড়ে দেখো। উস্তাদদের জিজ্ঞেস করে জেনে নাও। তুমি জানো আমি মিথ্যে বলিনা। তাও কিনা আমার নবীর শানে? এ জিভ খসে পড়ুক।”

” আমি আম্মাজান উম্মে সালামার পুত্র উমারের মতো হতে চাই ভাইজান।” আব্দুল্লাহর কণ্ঠে অন্য রকম দীপ্তি। ইঞ্জিমাম সামান্য হাসলো।

” মাশাআল্লাহ। এটাই ঈমানী জযবা। এই ট্যাবু ভাঙতে হবে ভাই। তিনি তোমার মা এটা যেমন সত্য তেমনি তিনি আল্লাহর একজন দুর্বল বান্দি। রক্তমাংসের একজন মানুষ এটাও সত্য। কুরবানী নিজে দেয়া যায় আব্দুল্লাহ। কারো কাছ থেকে আশা করা যায় না। আল্লাহ তোমাকে একটা সুন্নাহ পালনের সুযোগ দিয়েছেন। সুযোগটা কাজে লাগাও। ”

এর পরের ঘটনাগুলো একটার পর একটা ঘটে গেলো। মওলানা এবং জমিলা বিচারের রায় মেনে নিয়ে কন্যা বিয়ের জন্য সম্মত হয়ে বিদায় নিলেন। তাঁদের শেষ প্রশ্ন ছিলো, ” লোকজন মন্দ বললে তারা কী উত্তর দিবে ? ”

হাকিম মোল্লা তাদের বললেন, ” তোমরা আমার নবীর কথা ভাবো তাহলে উত্তর পেয়ে যাবে। এই দুনিয়ায় আইনের প্রয়োগ হয় জনগনের উপর দিয়ে। আইন প্রণেতারা এর বাইরে থাকে। একমাত্র ইসলামই সেই বিধান যার আইন প্রনয়নের পর তার প্রয়োগ শুরু হয় এর নেতাকে দিয়ে। আমাদের নবীকেও সে যুগে তাঁর কিছু বিয়ের কারণে অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো। আম্মাজান আইশা রাঃ , আম্মাজান যাইনাব বিনতে জাহাশ রাঃ যিনি তার পালক পুত্রের স্ত্রী ছিলেন। এসব বিয়ে ছিলো সেসময়ের গোঁড়ামীর মূলে কুঠারাঘাত। আমাদের নবী সেসব সহ্য করেছিলেন। আজও যখন কিছু কুলাঙ্গার আমাদের নবীর জীবনী না জেনে তাঁর একাধিক বিবাহ নিয়ে আলোচনা করে তখন তোমরা ওদের সাথে ঝগড়া করো ঠিকই কিন্তু বাস্তবে ওদের কথারই বাস্তবায়ন করো। ”

হাকিম মোল্লা থামলে ইঞ্জিমাম আব্দুল্লাহকে বললো, ” শোনো আব্দুল্লাহ দেশীয় আইনে তুমি নাবালক হলেও শরীয়া আইনে তুমি সাবালক। কারণ তোমার গোসল ফরয হয়ে গেছে। আর কয়েক বছর পর ইনশাআল্লাহ বিয়েও করে ফেলবে। মাকে এভাবে আটকে রেখোনা। বিয়েটা সহজ করে দাও তাহলেই জেনা কঠিন হয়ে যাবে। আজ বিয়ে কঠিন বলেই জেনা সহজ।”

=====
একটা ঘোরের মধ্যে বাড়ি ফিরলো ইশারা। রাতে ছোটমায়ের সাথে বিচারের বিষয়বস্তু নিয়ে টুকটাক আলাপ করলো। বাকি রাত ঘুম হলোনা ইশারার।
পরদিন নাস্তার টেবিলে বড়ভাইয়া জানালেন, ইশারা এখন থেকে মাসুমার কাছেই থাকবে। কলেজ খোলা থাকলে হোস্টেলে যাবে নয়তো ছুটিছাটা সহ বাকিটা সময় সে মাসুমার ঢাকার বাড়িতে থাকবে। এটা ওদের সব ভাই বোনদের মিলিত সিদ্ধান্ত। তাছাড়া মাসুমার যে দেবর ওকে বিয়ে করতে আগ্রহী তাকে বলে দেয়া হবে আরো তিনচার বছর পর আসতে। ইশারার ইন্টার্নী শেষ হবার পর। ইশারা যেন নিজের ভবিষ্যত নিয়ে একদম না ভাবে। তাছাড়া ও একজন ডাক্তার। ওর জন্য পাত্রের অভাব হবেনা ইত্যাদি। ছোটমার ব্যপারেও সবকিছু ভাবা হয়েছে। তিনি তার বাপের বাড়ি চলে যাবেন। তাকে এককালীন কিছু টাকা দিয়ে দেয়া হবে যেটা ব্যাংকে রেখে তিনি আজীবন খেতে পারবেন।

ইশারা সব শুনলো কোন মন্তব্য করলো না। গ্লাসে পানি ঢেলে নেবার সময় রুমানা আর গোধূলির অসন্তুষ্ট মুখটাও একবার দেখে নিলো। ইশারা ভালো করেই জানে ওরা মুখে হাসিখুশি ভাব ধরে রাখলেও মনে মনে নারাজ। অবশ্য ইশারার সম্পত্তি দেখাশোনার ভার মাসুমা আপার বরের হাতে চলে যাচ্ছে এটা ওদের সহ্য না হবারই কথা। আজ ইশারার চেয়ে বেশি দাম ওর সম্পত্তির।

ইশারা শান্ত মুখে পুরো নাস্তা শেষ করলো তারপর উঠে চলে গেলো ভিতরে। সেখানে ছোটমাকে দেখা গেলো মুখ গুঁজে পড়ে আছেন। ইশারা তার পাশে বসলো। পিঠে হাত রাখলো।
” কী হয়েছে মা?”
” কিছু হয়নাই।” বলে উঠে বসলেন ময়না বিবি। চাপা দীর্ঘশ্বাসের সাথে বললেন, ” আর কয়দিন বাদে তুমি চইলা যাইবা। এর লিগা মনডা খারাপ।’
” বাহ্ কী সুন্দর করে মিথ্যা বলো তো তুমি ? কার কাছ থেকে এমন করে মিথ্যা বলা শিখলে ? ”
ময়না বিবি চুপ মেরে গেলেন। ইশারা তার মাথার ঘোমটাটা ঠিক করে দিয়ে বললো,” তুমি কোথাও যাবেনা। এখানেই থাকবে। আমার কাছে।”

ময়না বিবি চমকে তাকালেন। ইশারা আর কোন কথা না বলে সোজা উঠে রাহিমা চাচির ঘরে চলে এলো। এবারও ওকে দেখে ইঞ্জিমাম দ্রুত ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো তবে যাবার আগে ওর বিরক্তিটা ইশারার নজর এড়ায়নি। ইশারার যখন তখন আগমন ওকে বিরক্ত করছে সন্দেহ নেই। ইশারা ওর বিরক্তি আজই শেষ করে দিবে।

ইশারা রাহিমা চাচির মুখোমুখি বসলো। কিছুক্ষণ ইতস্তত করে তারপর দ্বিধা কাটিয়ে ফেললো। স্পষ্ট স্বরে বলে উঠলো, ” চাচি, আমি আপনাকে ঐ দিনের ব্যপারে বলতে এসেছিলাম।”

রাহিমা প্রথমটায় হতবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন ইশারার দিকে। যেন ওর কথাটা ধরতে পারছেন না। তারপরই মৃদু স্বরে বললেন,” কী কথা, বলো না মা।”

ইশারা মুখ নামিয়ে বললো,’ গতকাল সারারাত আমি অনেক ভেবেছি চাচি। আপনার প্রস্তাবটা আমার জন্য সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হবে। তাই আমি স্থির করেছি আপনার পরামর্শটাই আমি বাস্তবায়ন করবো। আমি আপনার ছেলের সাথে বিয়েতে রাজি। তবে আমার একটা ছোট্ট অনুরোধ আছে চাচি। ”

” কী অনুরোধ বলো।’ রাহিমা হাসছেন।

” আমার ছোটমাকে আমি নিজের কাছে রাখতে চাই। আমি চাই ছোটমা তার জীবনের বাকি দিন তাঁর স্বামীর ভিটাতেই থাকুন। আমার বিয়ের পর আমি এখানেই থিতু হতে চাই। যেমনটা আপনি চান সাহেদ ভাই থাকুন।”

” মাশাআল্লাহ মা। খুবই সুন্দর ইচ্ছা। তা মা সাহেদ কী তোমাকে এখানে রাখতে রাজি হবে? আমি নাহয় সাহেদকে ফোন করি, করবো ? ”
ইশারা এবার জবাব না দিয়ে রাহিমার হাত ধরে মুখ লুকলো। চোরা হেসে বললো, চাচি আমি শাহেদ ভাইয়ের কথা বলিনি।”

” ওমা, তাহলে?” রাহিমার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। আর ইশারার চেহারা রক্তবর্ণ ধারণ করলো। ওর চেহারা দেখেই রাহিমা যা বোঝার বুঝে নিলেন। এবার তিনি সামান্য মুচকিও হাসলেন।

হাকিম মোল্লা চাচার বাড়ি থেকে ফিরেই ইশারা বড় ভাইয়ের কাছে এলো। আখতার তখন সবার সাথে একত্রে চা পান করছিলেন। ইশারা সবার সামনেই বললো, ” আমার কিছু কথা আছে ভাইজান। তোমাদের সবার সাথে।”

আখতার ছোটবোনের দিকে তাকালো। সস্নেহ হাসি দিয়ে বললো,” আয় না বুবু। বস এখানে। কী বলবি বল।” ওর কণ্ঠই বলে দিচ্ছে সে খুব খুশি।

” ভাইজান, আমি চাই ছোটমা এখানে থাকুন। গ্রামে এই বাড়িতে।’ সময় নিয়ে ধীরে ধীরে কথাগুলো বললো ইশারা। আখতার তাৎক্ষণিক ভাবে কিছু না বললেও গোধূলি তেতে উঠলো। তীক্ষ্ম স্বরে বললো,
” মানে? সে কেন এই বাড়িতে থাকবে। আর এই সিদ্ধান্ত দেবার তুই কে ? ”

” আমি লালমিয়ার ছোটমেয়ে।আর ময়না বিবি লালমিয়ার বিবাহিতা স্ত্রী। এইজন্য।” ইশারা বিচলিত হলোনা। সে শান্ত রইলো। এরইমধ্যে রুমানা বলে উঠল।

” বাহ। অনেক বড় হয়ে গেছিস মনে হয়। এখনও বিয়েশাদি হয়নি। জীবন শুরু করিসনি। আর এখনই সিদ্ধান্ত দেয়া শুরু করেছিস?”

গোধূলি পাশ থেকে ফোড়ন কাটলো, ” বুঝবে না কেন। দুদিন ধরে তো ঐ বাড়ি থেকেই বুদ্ধি ধার নিচ্ছে। কত বুদ্ধি গজাবে এখন মাথায়? ”

ইশারা ম্লান হাসলো। ” ঠিকই বলেছো আপু। আমার বুদ্ধি আসলেই গজাতে শুরু করেছে। যেদিন থেকে আমার পায়ের নিচে মাটি সরে গেছে সেদিন থেকেই আমি বুঝতে শিখেছি আমার ফেরার জায়গাটা নাই হয়ে গেছে। তোমরা সবাই একদিন যার যার বাড়ি ফিরবে। তোমাদের ঘরে। আর আমি ফিরবো হোস্টেল। সেখান থেকে বড়আপার বাড়ি। আরেক হোস্টেল। অন্তত আমার জন্য। আর এভাবে ততদিন চলবে যতদিন আমার নিজের কোন ঘর না হয়।”

” কেন, একথা হবে কেন। তুই একদিন ডাক্তার হবি। কত নাম ডাক হবে তোর। তোর এতো ভাবনার কী আছে? ” রুমানা বললো। তবে তার জবাব দেবার আগেই আখতারুজ্জামান নরম সুরে বললেন, ” আচ্ছা, আমরা কী তোর কেউ না? এভাবে করুণ গলায় কথা বলছিস কেন রে? ” আখতারের গলা কিছুটা ভিজে এসেছে বলে মনে হলো ইশারার। সে বললো,
” তোমরা তো অবশ্যই অনেক কিছু তবে সেটা সাময়িক। ঠিক একটা ওয়েটিং রুমের মতো যেটা না হলে গন্তব্য বদলানো কঠিন। আমি আমার গন্তব্য যেতে চাই ভাইয়া। যেখানে আমি ফিরতে পারবো। যেখানে গেলে আমার মনে হবে, ‘ আই এম হোম। যেটা আমার একখন্ড আশ্রয়। আমার মা’ওয়া।”

-” বাব্বাহ, এতো কিছু ঠিক করে ফেলেছিস। তা এটা কী করে ভাবলি যে তোর কথায় ছোটমাকে এখানে থাকার অনুমতি দেব আমরা?” মাসুমা বললো।

‘ তোমাদের কাছে তো অনুমতি চাইনি আপা। যেটা বাবা নিজে দিয়ে গেছেন সেটা থেকে তো তোমরা তাকে বঞ্চিত করতে পারবেনা। এটা জুলুম।”

” ছোটমা নিজে না দাবী নামায় স্বাক্ষর করে তার মতামত জানিয়ে দিয়েছেন। এখন আর এসব বলে লাভ নাই।’ রুমানা মুখ ভ্যাঙচানোর মতো করে বললো। ইশারা মুচকি হেসে বললো,” সেটা কোর্ট বুঝবে। স্বামী মারা যাবার দ্বিতীয় দিনে কেউ কাউকে লিখে পড়ে জমি দিয়ে দেয় এটা আজ প্রথম জানলাম। যাই হোক, ভাইয়া, তোমাকে বলছি। তুমি আমার বড় ভাই। আমার বর্তমান অভিভাবক। যদিও আইনগত ভাবে আমি নিজেই বিয়ে করতে পারি তবু আমি চাইবো অন্তত আমার আকদের দিন তুমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে আমার গন্তব্য বদলে দাও। আমার অভিভাবক হয়ে আমাকে আমার স্বামী পর্যন্ত পৌঁছে দাও।”

মুহূর্তেই শোরগোল পড়ে গেলো ঘরের মধ্যে। মাসুমা রুমানা গোধূলি একসাথে চেঁচাতে শুরু করলো। গোধূলী তো বলেই বসলো, বাপ মরেছে দুদিনও হয়নি। আর উনার মনে রঙ লেগেছে। কেবল আখতার নিরব বিস্ময়ে বোনকে দেখতে লাগলো। ইশারা ওদের কোন কথারই কোন জবাব দিলো না। এক মুহূর্তের জন্য ওর নিজেকে নাবিলা বলেও মনে হলো।
আখতার এবার প্রশ্ন করলো,” ছেলেটা কে রে ? ”

ইশারা মুখ নামালো। নাম বললো। মাসুমা গোধূলি আর রুমানার মুখে এবার তালা পড়ে গেলো। বিস্ময়ে তাদের চোখে পলক পড়ছে না। আখতার শুধু বললো,” যা বলছিস ভেবে বলছিস তো? ”

” জি ভাইয়া। ঠান্ডা মাথায়। ইনফ্যাক্ট আমার ইচ্ছের কথাটা একটু আগে জানিয়েও এসেছি চাচিকে। দুদিন বাদে তোমরা সবাই চলে যাবে। আমারও কলেজ খুলে যাবে। তোমরা এই গ্রামে আবার কোনদিন আসবে কিনা জানিনা। এলেও সবাইকে একসাথে পাবো কিনা তাও অনিশ্চিত। এসব কিছু ভেবেই আমি চলে যাবার আগে নিজের জন্য একটা গন্তব্য রচনা করতে চাইছি। ওটা হবে আমার ঘর,আমার আশ্রয়।”

” হম, আমি অবশ্য সাহেদকে ধারণা করেছিলাম। ও ডাক্তার ছিল। তুইও ডাক্তার হবি দুদিন বাদে। মানাতো তোদেরকে। ”

“দুজনেই ডাক্তার হলে সব ঠিকমতো চলবে এমন কোন যুক্তি নেই ভাইয়াা। ইনজাম মানুষ হিসেবে সাহেদের চেয়ে অনেক উর্ধ্বে।”

” যাক তুই সংসার করবি তুই ভাল বুঝিস।
ইনজাম তো আবার তোর বাল্যবন্ধু। ” বলে আখতার থেমে গেলো। এবার আর কেউ কোন কথা বললো না। আখতার এই প্রথম ইশারার কাঁধে হাত রাখলো। মৃদু স্বরে বললো, ” আমি বেঁচে থাকতে তুই নিজের বিয়ের কথা নিজে চালাচালি করবি এটা তো ঠিক না। চল, আমাকে চাচার কাছে নিয়ে চল।”

======
ঠিক পাঁচদিন পরের কথা। এক অনাঢ়ম্বর পরিবেশে খুবই ঘরোয়া পরিসরে ইশারার বিয়ে হয়ে গেলো ইনজিমামের সাথে। মায়ের জরুরী তলব পেয়ে সাহেদ আগেই চলে এসেছিলো গ্রামে। তবে এবার আর প্রতিবারের মতো পরদিনই দৌড় মারেনি। ভাইয়ের বিয়ে বলে কথা। মায়ের খুশিতে সেও খুঁশি। আনন্দে আবেগে দারুণ আপ্লুত।

খুশি না শুধু একজন। আকদের রাতেই তার রাগান্বিত মুখ দেখলেন রাহিমা। অসহায়ের মতো বললেন,” আমি কী করবো ? ইশারাই তো বললো ও আকদের পরদিনই চট্টগ্রাম চলে যাবে। ওর কলেজ খুলে যাবে। এদিকে তোর ভাইও যাবার জন্য পাগল। কাকে কাকে আটকাবো।

” সেজ ভাই যাচ্ছে যাক। তাই বলে বিয়ের পরদিনই কনে উধাও হবে ? সেই কবে না কবে আবার ছুটি হবে সেদিন ফিরবে। কোন মানে হয়?”

‘ তুই একটু কথা বলে দেখ না ওকে দুই একদিন রাখতে পারিস কিনা।” অনিশ্চয়তার সাথে বললেন রাহিমা।

মায়ের সাথে কথা শেষ করেই সরাসরি লালমিয়া ব্যপারীর বাড়ি চলে এল ইঞ্জিমাম। এ বাড়িতে আখতারদের সবার আজ যাওয়ার ধুম পড়েছে। গতরাতে বোনের আকদ সম্পন্ন করে সবাই অনেকটা হালকা মেজাজে আছে। চলে যাবার গোছগাছ চলছে। আগামী কাল সাত সকালেই মাসুমা আর রুমানা রওনা দিবে। গোধূলি বেরোবে বেলা বারোটার দিকে। আখতার যাবেন পরশু।
তিনি ইঞ্জিমামকে দেখেই সাদরে অভ্যর্থনা জানালেন। তারপর ওর হাত ধরে বললেন, ” আমার বোনটাকে দেখে রেখো। সাথে ছোটমাকেও।”

” জি, ইনশাআল্লাহ। ” মনে মনে বললো, আমাকে তো বললেন এবার বোনকে বলে যান আমাকে ফেলে যেন আজই না যায়।

আখতার নিজেই বললেন,” যাও ভেতরে যাও। ইশারা ছোটমার ঘরেই আছে।”

ইঞ্জিমাম সামান্য মাথা নেড়ে ছোটমার ঘরের দরজায় টোকা দিলো। দরাজ কণ্ঠে সালাম দিয়ে ভেতরে ঢুকলে ময়না বিবি গুটিশুটি মেরে একপাশে সরে বেরিয়ে গেলেন। ইঞ্জিমাম দেখলো ইশারা বাঁধাছাদা করছে। যাত্রার প্রস্তুতি। ইঞ্জিমাম নিরবে কিছুক্ষণ ইশারার প্যাকিং দেখলো। তারপর ওর হাত ধরে ওকে থামালে ইশারা পূর্ণদৃষ্টিতে তাকালো ওর দিকে। ভাবলেশহীন কণ্ঠে বললো,” কী হয়েছে ? ”

” এসবের মানে কী? তুই কালই চলে যাবি এটা কেমন কথা? ”

” পরশু আমার ক্লাস। মিস দিতে পারবো না।”

” তাহলে পরশুই যা। আমি তোকে নিয়ে দিয়ে আসবো। আজ বা কাল আমি কোন অবস্থাতেই তোকে যেতে দেবো না। ”

” উপায় নেই ইনজি। আমাকে কালই যেতে হবে।” নির্বিকার ভঙ্গিতে কথাগুলো বললেও ইনজির শক্ত বাহুবন্ধনে ভাষা হারিয়ে ফেললো। ইনজি কাতর স্বরে বললো, ” কেন এরকম করছিস?”

” প্রতিশোধ নিচ্ছি। ” বলে মুখ গম্ভীর করতে গিয়েও ফিক করে হেসে ফেললো ইশারা।

ইঞ্জিমাম ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, ” যাসনা প্লিজ, কষ্ট পাচ্ছি।”

” উচিত শিক্ষা। “ওর দিকে না তাকিয়েই উচ্চারণ করলো ইশারা।

‘ হম, আসলেই উচিত শিক্ষা হচ্ছে আমার।” বলে ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাকিয়ে রইলো ইশারার দিকে। ওর করুণ ভঙ্গিমা এবার ইশারাকে দুর্বল করে ফেললো। সে নিজেকে পুরোপুরি সঁপে দিলো এক চওড়া বুকের দেয়ালে। শরীর কাঁপিয়ে কান্না এলো ওর। ইনজিমাম ওকে সামলে নিতে চাইলো। মৃদু শব্দে বললো,” কান্না করার কী হলো?”

” প্রতিশোধ নিতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেছি। ইচ্ছে করছে না যাই।’

‘ নাহ্, এতোটা দুর্বল হলে চলবে কেন। সময়মতোই যাবি। হাসিমুখেই যাবি। আমিই তোকে পৌঁছে দিয়ে আসবো। যেভাবে তোকে হারাম অবস্থায় পেয়ে সাময়িক লোভে পড়ে নিজের জন্য হালাল করে নেইনি। আজও তোকে হালাল পেয়ে আমার বাকি দিনগুলোর স্বস্তি হারাম করবো না। এটা তো আল্লাহর রহমত যে আমরা একে অন্যের গন্তব্য হতে পারছি। আমাদের একজীবনের আশ্রয়। ”
ইশারা কোন কথা বললো না। কেবল মন দিয়ে উপলব্ধি করতে লাগলো প্রিয়জনের নৈকট্যকে। ”

~সমাপ্ত~

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ