Monday, October 6, 2025







মন বিনিময় পর্ব-৩২+৩৩

#মন_বিনিময়
#পর্বঃ৩২
#লেখনীতে- তাসফিয়া হাসান তুরফা

বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ক্লান্ত শরীরে যে যার রুমে প্রস্থান করেছে সকলে। রুমে ঢুকেই গা এলানোর উদ্দেশ্যে বিছানায় শুতেই স্বপ্নিলের চোখে পড়লো ওয়াশরুম থেকে বের হওয়া রাহিতাকে। বিষয়টাতে কিঞ্চিৎ মনোক্ষুণ্ণ হলো ওর। আজ সারাদিনের ব্যস্ততায় মেয়েটাকে ভালোমতো লক্ষ্য করাও হলোনা, ভেবেছিলো রুমে এসে চুপিসারে ভালোমতোন দেখবে ওকে। কিন্তু তার পরিকল্পনায় এক বালতি জল ঢেলে দিয়ে ইতোমধ্যে গোসল সেড়ে বেরিয়েছে রাহিতা। সেদিক চেয়ে এক দীর্ঘশ্বাস ফেললো স্বপ্নিল। তবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একধ্যানে চুল মুছতে থাকা রাহিতার দিক তাকিয়ে ওর মন ভালো হতে বেশিক্ষণ লাগলোনা বৈকি। সদ্য স্নানকৃত ভেজা চুলের রাহিতাকে অত্যন্ত স্নিগ্ধ দেখালো, চোখ ও অন্তর উভয়ই শীতল হলো স্বপ্নিলের। কপালের উপর বাম হাত রেখে রাহিতার অগোচরে সরাসরিই আপাদমস্তক পর্যবেক্ষণ করে মুগ্ধ হচ্ছিলো সে।

খানিকবাদে চুল ঝাড়া শেষ করে বিছানার দিক তাকাতেই স্বপ্নিলকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে কপাল কুঞ্চিত হয় রাহিতার। এতক্ষণ হলো রুমে এসেছে অথচ কাপড় অব্দি খুলেনি৷ সে কি ফ্রেশ হবেনা? নাকি এভাবেই ঘুমিয়ে গেছে? ভাবতে ভাবতেই বিছানার দিক এগোয় রাহিতা। ওকে এগিয়ে আসতে দেখে চোখ বন্ধ করে ঘুমোনোর ভান করে পড়ে থাকে স্বপ্নিল। ওর নড়চড় না দেখে আস্তে করে কপালের উপর থেকে স্বপ্নিলের হাত সরিয়ে দেয় রাহিতা। চোখজোড়া বন্ধ দেখে ভাবে সে ঘুমিয়ে গেছে। তাই আস্তে করে ডাকতে থাকে ওকে। স্বপ্নিলের মাথায় অদ্ভুত দুস্টুমি চাপে, রাহিতার ডাক শুনেও সে চোখ খুলেনা, কোনোরুপ সাড়া দেয়না। এবার ডাকা ছেড়ে স্বপ্নিলের গালে হাত দিয়ে ডাকতে আরম্ভ করে রাহিতা, একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে সে দেখতে পারতো স্বপ্নিলের ঠোঁটের কোণে সূক্ষ্ম হাসির রেখা। সামান্যক্ষণ অতিক্রম হয়, আচমকা রাহিতার হাতে টান পড়ে। কোনোকিছু বুঝে উঠার আগেই সে পড়ে যায় স্বপ্নিলের প্রশস্ত বুকের উপর। বুকের মাঝে প্রবল বেগে চলা ঢিপঢিপ অনুভূতিতে শরীর অসাড় হয় রাহিতা। স্তব্ধ সে নিজেকে সামলে স্বপ্নিলের বুকে দু’হাত রেখে মাথা তুলতেই ওর চোখে পড়ে স্বপ্নিলের চোখ খোলা। সেই খোলা চোখে স্পষ্ট দুস্টুমির আভাস! যা দেখে এতক্ষণের সবকিছু বুঝতে বিলম্ব হয়না রাহিতার! মুখ ফুলিয়ে উঠে পড়ে স্বপ্নিলের উপর থেকে, শ্বাস নিয়ে তড়িঘড়ি করে সরে দাঁড়ায় মুহুর্তে। ওকে এভাবে সরতে দেখে জোরেই হেসে ফেলে স্বপ্নিল। হাসির মাঝেই ভ্রু নাচিয়ে বলে,

—তুমি তো দেখছি বেশ ভিতু! এত সহজেই ভয় পেয়ে গেলে?

—এগুলো কি ধরনের ফাজলামি, স্বপ্নিল? আপনি কি কখনো ভালো হবেন না?

কোমড়ে হাত দিয়ে চোখ পাকিয়ে তী’ক্ষ্ণ কণ্ঠে উত্তর দেয় রাহিতা। ওর প্রশ্নে আরেকটু হাসে স্বপ্নিল। বিছানা থেকে উঠে এসে দাঁড়িয়ে যায় রাহিতার পাশে। খানিকটা ঝুকে এসে মাথা দুদিকে নাড়িয়ে স্বাগতিক কণ্ঠে বলে,

—না

ওর সহজ স্বীকারোক্তিতে বিরক্ত হয় রাহিতা। দাতে দাত চেপে “চ” উচ্চারণ করে সরে দাঁড়ায় ওর কাছে থেকে। সেদিক চেয়ে ফিচেল হাসে স্বপ্নিল। এমন সময় রাহিতা তাড়া দিয়ে বলে,

—এভাবে শুয়ে ছিলেন কেন এতক্ষণ? আর কতক্ষণ এ কাপড়ে থাকবেন? তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে ফ্রেশ হোন!

—আচ্ছা

ওর কথা শুনে স্বস্তির শ্বাস ফেলে বিছানার দিক এগোয় রাহিতা। হঠাৎ কি মনে করে পেছন ফিরতেই স্বপ্নিলকে দেখে চমকে যায় সে৷ ফরমাল পরিহিত স্বপ্নিল একধ্যানে বোতাম খুলছে রাহিতার দিক তাকিয়ে। রাহিতা জানে স্বপ্নিল এখনো নির্ঘাত ফাজলামির মুডে আছে, কিন্তু তবুও আজ এ স্বপ্নিলকে দেখে এক অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে ওর মনের ভেতর। রাহিতার মন বলছে স্বপ্নিল ওকে মন থেকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছে। অন্তত স্বপ্নিলের চোখ আজকাল সে কথাই বলে! তবু রাহিতার ভয় হয়, পুনরায় স্বপ্নিলের কাছে প্রত্যাখ্যান হওয়ার ভয়ে মনের প্রশ্ন মনেই চেপে রাখে। স্বপ্নিলকে এখনো নিজের দিক তাকিয়ে থাকতে দেখে ওর গলা শুকিয়ে যায়। শুকনো ঢোক গিলে জিব দিয়ে শুষ্ক ঠোঁট ভিজিয়ে সে ইতস্তত কণ্ঠে বলে,

—কি সমস্যা? এখানে কাপড় খু’ল’ছেন কেন? বাথরুমে যান!

ইতোমধ্যে স্বপ্নিলের শার্ট খোলা শেষ। রাহিতার চোখ সরিয়ে নেওয়া, লাজুক আবরণে রেঙে যাওয়া গাল খুব মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে সে। অতঃপর রাহিতার হাত থেকে তোয়ালে কেড়ে নিয়ে গলায় ঝুলায় সে। পেছন ফিরে বাথরুমের দিক যেতে যেতে বলে,

—নিজেই চেঞ্জ করতে বললে আবার নিজেই জিজ্ঞেস করছো কেন করছি? শার্টই তো খুললাম শুধু। আর তুমি এমন ভাব করছো যেন জীবনেও আমায় খালি গায়ে দেখোনি!

স্বপ্নিলের কথায় রাহিতা অবাক হতেও ভুলে গেলো এক মুহুর্তের জন্য। চোখমুখ কুচকে বিড়বিড়িয়ে বললো “অসহ্য লোক!”

____________________

পরেরদিন সকালে সবাই মিলে আড্ডা দেওয়া হচ্ছিলো। এসবে নেই শুধু সীমা বেগম ও আমিরা৷ পরদিন সকাল হতেই তিনি স্বপ্নিলের নানিকে জানিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে গেছেন। হুট করে এভাবে চলে যাওয়ায় সবাই প্রশ্ন করলেও রাহিতা বিশেষ অবাক হলোনা, সে বুঝেছে উনি কেন এভাবে চলে গিয়েছেন। হয়তো এর পেছনে রয়েছে তার অপরাধবোধ নয়তো পশ্চাত্তাপ! কারণ যেটাই হোক, এতক্ষণ পর্যন্ত সব ঠিক ছিলো কিন্তু রাহিতা সবচেয়ে অবাক তখন হলো যখন শাশুড়ি তাকে সকালে ডেকে একটা খাম হাতে ধরিয়ে দিলেন।

—এটা কি, মা?

—তোর জন্য উপহার। সীমা দিয়েছে।

—সত্যি?

রাহিতার কণ্ঠে বিস্ময়। তা দেখে দিলারা বেগম পুনরায় বলেন,

—অবাক হয়েছিস না? আমিও হয়েছিলাম যখন সকালে চলে যাওয়ার আগে হুট করে সীমা আমার কাছে এলো। এসে তোকে এটা দিতে বললো। তোদের বিয়েতে আসেনি, কিছু দেয়নি তাই এটা তোকে দিতে বললো আজ! আমি চমকে যাই! হঠাৎ ওর সুমতি কিভাবে হলো আল্লাহই জানে!

শাশুড়ির কথায় হেসে ফেললো রাহিতা। খাম নিয়ে রুমে এসে তা খুলতেই চোখে পড়লো হাজার পাঁচেক টাকা। পরিপক্ক হাতের একটি চিঠি। তাতে এলোমেলো ভাবেই লেখা,

“রাহিতা, তুমি যখন এ চিঠি দেখবে তখন আমি হয়তো তোমার সামনে থাকবোনা। আসলে তোমার সাথে যেমন আচরণ করেছি, এরপর তোমায় কিছু বলার ভাষা আমার নেই। শুধু বলবো আমার মেয়ের কৃতকর্মের জন্য আমি লজ্জিত, স্বপ্নিলের প্রতি এতদিনের খারাপ মনোভাব রাখার জন্য আরও বেশি লজ্জিত৷ ওকে ধন্যবাদ দিও আমার মৃত মেয়ের সম্মান রক্ষা করার জন্য, ওর রেখে যাওয়া অতীতের কথা কাউকে না বলার জন্য৷ তোমাদের বিয়েতে তো রাগের বশে যাইনি, তাই এ খামে সামান্য উপহার দিলাম দুজনের জন্য। পারলে কোথাও থেকে ঘুরে এসো। দুজন এভাবেই এএকে-অপরের পাশে থেকো, সুখে থেকো!”

সীমা বেগমের চিঠি পড়ে নিমিষেই মন ভালো হয়ে যায় রাহিতার৷ মনে মনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আল্লাহর নিকট তাকে সঠিক বুঝ দেওয়ার জন্য৷ সে ঠিক করে এরপর ঢাকা গেলে একদিন তার সাথে দেখা করবে, মন খুলে কথা বলবে। এরই মাঝে স্বপ্নিল রুমে এলে তাকে চিঠি দেখায় রাহিতা৷ ওর হাতে চিঠি দেখে স্বপ্নিল ভ্রু কুচকে বলে,

—কিসের চিঠি এটা?

এক মুহুর্ত স্বপ্নিলের চেহারার দিক তাকিয়ে রাহিতা ওর মতোই ফাজলামির স্বরে বলে,

—লাভ লেটার পেয়েছি তো। সেটাই দেখছিলাম আর কি!

রাহিতার বলতে দেরি, স্বপ্নিলের চিঠি ছি’নিয়ে নিতে দেরি হলোনা৷ চোখমুখ শক্ত করে চিঠি হাতে নিতে নিতে সে বলে,

—তো আমিও একটু দেখি আমার বউকে চিঠি দেওয়ার সাহস কার হয়েছে!

আনমনেই বলা স্বপ্নিলের কথায় বুকজুড়ে তোলপাড় হয় রাহিতার। বারবার কানে বাজে ওর বেখেয়ালি কথাগুলো! তবে ওর ভাবনা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আগেই স্বপ্নিল চিঠি পড়ে অবাক সুরে বলে,

—আরে? সীমা খালামনি লিখেছে নাকি এটা?

—হুম

—বাপরে! তার এত উন্নতি? কিভাবে হলো এসব, রাহি? তুমি কিছু জানো? আমার তো মাথায় ঢুকছেনা!

মাথা নাড়িয়ে এক শ্বাস ফেলে স্বপ্নিলকে সব বলতে আরম্ভ করলো রাহিতা। সবকিছু শুনে অবাক হলো সে। মাথা নাড়িয়ে বললো,

—আমার পিছে এতকিছু হয়ে গেলো আর আমিই জানলাম না! তুমিও আমায় এত পরে জানালে, রাহি? আগে জানালেনা কেন?

—সরি। আপনাকে কালকেই বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরে টায়ার্ড হয়ে ভুলে গেছি।

—হ্যাঁ, তা তো ভুলেই যাবে। বলো যে আমায় শার্টলেস দেখে মাথা হ্যাং হয়ে গিয়েছিলো তোমার। আমি কি বুঝিনা নাকি?

স্বপ্নিলের কথা শুনে ধাতস্থ হতে কিছুক্ষণ সময় নেয় রাহিতা। বুঝে উঠে ঝগড়া করার জন্য কিছু বলার আগেই হাসতে হাসতে রুম থেকে চলে যায় সে। পেছনে ফেলে যায় এক লাজুক রাহিতাকে!

____________

স্বপ্নিলের কাজিনরা সব বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করছে। এসবে উচ্ছাসিত রাহিতা সবার সাথে ব্যস্ত কোথায় কোথায় যাবে সেসব নিয়ে আলোচনা করতে। এরই মাঝে হুট করে স্বপ্নিল আসে সেখানে। গম্ভীরমুখে জানায় ওদেরও আজকেই যেতে হবে, তার অফিসে একটা কাজ পড়ে গেছে। সে মা-কেও জানিয়ে এসেছে, এখন রাহিতাকে জানাতে এলো। কাজিনমহল এসব শুনে বেশ জোরাজোরি করে ওকে তবুও কাজের ক্ষেত্রে স্বপ্নিল সিরিয়াস বলা চলে। তাই সে কারও কথার তোয়াক্কা না করে রাহিতাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়,

—আমরা আজ বিকেলেই রওনা হবো। দুপুরের খাবার খেয়ে রেডি থেকো। আমি জানি তোমার হয়তো মন খারাপ হবে কিন্তু কিছু করার নেই। ইটস আরজেন্ট!

স্বপ্নিলের মুখ দেখে আর কিছু বলার সাহস পায়না রাহিতা। সে বুঝে নিশ্চয়ই কিছু ঝামেলা হয়েছে নয়তো স্বপ্নিল এভাবে হুট করে যেতে বলতোনা। তাই মন খারাপ পাশে রেখেই রাজি হয় সে। সব ভাবনা ফেলে দুপুরের খাওয়া শেষে রুমে ঢুকতেই পায়চারি করতে থাকা চিন্তিত স্বপ্নিল চোখে পড়ে ওর। রাহিতাকে আসতে দেখেই স্বপ্নিল এগিয়ে এসে উত্তেজিত কণ্ঠে বলে,

—একটা ঝামেলা হয়ে গেছে, রাহি!

#চলবে

#মন_বিনিময়
#পর্বঃ৩৩
#লেখনীতে- তাসফিয়া হাসান তুরফা

বাসায় পৌঁছে বিছানার এক কোণে এক মনমরা হয়ে বসে আছে রাহিতা। ওর মন খারাপের কারণ হলো রুমে ঢুকতেই স্বপ্নিল চিন্তাগ্রস্ত কণ্ঠে জানিয়েছে ওর অফিসে বড়সড় ঝামেলা হয়েছে, যার ফলে ওদের ঢাকা যেতেই হবে। তাই এখনি নিজের ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিতে তাগিদ দিয়েছে সে রাহিতাকে। মন খারাপ করে রাহিতা ব্যাগ গুছাবে এমন সময় দিলারা বেগম এলেন ওদের রুমে। দুজনকে দেখে বললেন,

—তোরা কি ব্যাগ গোছানো শুরু করেছিস?

—না, মা। আমি তো মাত্রই জানালাম রাহিতাকে। এইতো গোছাবে এখনি। কেন কিছু লাগতো তোমার?

স্বপ্নিল জবাব দেয়। ওর কথায় দিলারা বেগম হাসি হাসি মুখে বলেন,

—আমি ভাবছিলাম আজ যাওয়ার দরকার নেই, স্বপ্নিল। তোর বোন তো জেদ ধরে বসে আছে আজকে থাকবেই থাকবে। আর আমিও চাইছিলাম থেকে যেতে। এতদিন পর বাপের বাড়ি এসেছি, বিয়ে শেষ না হতেই চলে যাওয়া বিষয়টা কেমন দেখায় না? তোর কি যাওয়া খুব জরুরি?

শাশুড়ির কথায় মুহুর্তে হাসির রেখা দেখা দেয় রাহিতার এতক্ষণের মেঘে ঢাকা মুখে। মনের উচ্ছ্বাস মুখে ফুটিয়ে সে নম্র স্বরে বলে,

—একদম ঠিক বলেছেন, মা। আমিও যেতে চাইছিলাম না আজ। সবাই কত্ত মজা করবে এখানে আর আমরা কিনা এত জলদি ফিরে যাবো?

একটু থেমে আবার স্বপ্নিলের উদ্দেশ্যে বলে,

—শুনুন না, আজকে না গেলে হয়না? আমরা থেকে যাইনা প্লিজ? আপনি কিন্তু বলেছিলেন আমায় ঘুরতে নিয়ে যাবেন!

মা ও বউয়ের কথায় খানিকটা বিপাকে পড়ে স্বপ্নিল। তবু সে এখন নিরুপায়, কেননা অফিসের ঝামেলাটা এবার বেশ জটিল। তার ম্যানেজার বারবার ফোন করে বলছিলো সকাল থেকে এজন্যই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া নয়তো স্বপ্নিলের নিজেরও মন চাইছিলোনা এত দ্রুত এখান থেকে যেতে। তাই মায়ের উদ্দেশ্যে বলে,

—এবার কোম্পানিতে একটা বড়সড় ঝামেলা হয়ে গেছে, মা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ম্যানেজার। তাই আমার কালকেই অফিসে যাওয়া ভীষণ প্রয়োজন। নয়তো আমার নিজেরও ইচ্ছা ছিলোনা এতদিন পর এসে এত দ্রুত চলে যেতে। কিন্তু এখন আর উপায় নেই। কি করবো বলো?

এরপর খানিকটা সময় নিয়ে কিছু একটা ভাবে স্বপ্নিল। হঠাৎ রাহিতার উদ্দেশ্যে বলে,

—এক কাজ করা যায়। আমি যেহেতু একেবারেই থাকতে পারবোনা, তাই লাঞ্চ করেই ঢাকার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যাবো। কিন্তু মা ও সামিরার তো যাওয়া ইম্পর্টেন্ট নয়। ওরা যখন থাকতে চাইছে তখন থাকুক এখানে। আর তুমিও চাইলে মায়ের সাথে এখানেই থাকতে পারো। তুমি কি থাকবে?

স্বপ্নিলের কথা শুনে দিলারা বেগমও সায় দিলেন। রাহিতাকে বললেন,

—কথাটা কিন্তু খারাপ বলেনি, স্বপ্নিল। ওর যদি একান্তই যাওয়া প্রয়োজন হয় তবে ও যাক আজকে। আমরা তিনজন কয়দিন পর যাবোনি। এছাড়াও বাসায় রহিমা খালা তো আছেই। স্বপ্নিলের কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

শাশুড়ির কথা শুনে আড়চোখে একবার স্বপ্নিলের দিকে তাকালো রাহিতা। স্বপ্নিল ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলো। সে চোখে খানিকটা আকুতি, যেন সে চায়না রাহিতা থেকে যাক এখানে। কথায় আছে, চোখ মনের কথা বলে। সে চোখে তাকিয়েই রাহিতাও যেন ঠিক বুঝে গেলো স্বপ্নিলের মনের খবর। সিদ্ধান্ত নিলো সে চলে যাবে স্বপ্নিলের সাথে। কেননা এখানে থাকার ইচ্ছে থাকলেও, স্বপ্নিলকে ছাড়া একা একা তার মন কিছুতেই বসতোনা। তাই সে নিজেও চায়না স্বপ্নিলকে একা যেতে দিতে। সবমিলিয়ে শাশুড়ির উদ্দেশ্যে সে বলে,

—মা, আমিও উনার সাথে বাসায় যেতে চাইছি। আমারও ভার্সিটি শুরু হবে দু’দিন পর। চাইলেও থাকতে পারছিনা। আপনি আর সামিরা থাকুন না। কয়দিন থেকে ধীরেসুস্থে আসুন। আমি না হয় পরে আবার আসবোনি।

—কিন্তু তুই না থাকতে চাইছিলি, রাহি। হঠাৎ আবার কি হলো? এখানেই থাক আমাদের সাথে? একা একা যেয়ে কি করবি বাসায়?

—আরে মা, ও তো কাউকে তেমন চিনেই না এখানে। থেকেও কি করবে? রাহি যখন যেতেই চাইছে বাসায়, তখন যাক না আমার সাথে। সমস্যা কই? তুমি আর সামু এ কয়দিন মজা করো। ওকে আমি পরে নিয়ে আসবো।

মায়ের কথার বিপরীতে উত্তর দেয় স্বপ্নিল। রাহিতা তো রাজি হয়েই গেলো, তাহলে মা এমন করছে কেন? ভেবে পেলোনা সে। অদ্ভুত! এদিকে স্বপ্নিল-রাহিতার কথা শুনে বাহিরে থেকে স্বাভাবিক থাকলেও মনে মনে হাসলেন দিলারা বেগম। দুজনের মন বিনিময়ে যে বাকি নেই বিষয়টি বুঝতে বেগ পেতে হয়না তার অভিজ্ঞ চোখের! মুখভঙ্গি স্বাভাবিক রেখে তিনি দুজনের উদ্দেশ্যে বলেন,

—আচ্ছা, তোরা দুইটাই যখন যেতে চাইছিস তাহলে এটাই হোক। আমরা মা-মেয়েই না হয় ক’দিন থেকে যাই। তোরা বাসায় যা।

মায়ের কথায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে স্বপ্নিল। কথা বলে চলে যেতে লাগেন দিলারা বেগম। হঠাৎ কি মনে করে যেন থেমে গিয়ে বলেন,

—এই যে বউমা, তোমার ভরসায় ছেড়ে দিচ্ছি কিন্তু আমার ছেলেকে। ওর খেয়াল রেখো!

শাশুড়ির কথায় লজ্জা পেলো রাহিতা, আড়চোখে পাশে তাকিয়ে দেখে মায়ের কথা শুনে ঠোঁটে হাসি নিয়ে স্বপ্নিল তাকিয়ে আছে ঠিক তারই দিকে। মা চলে যেতেই স্বপ্নিল ভ্রু নাচিয়ে বলে,

—কি বললো তোমার শাশুড়ি শুনেছো তো? মনে থাকে যেন, মায়ের বউমা!

ওর কথা শুনে লজ্জার মাত্রা আরেকটু প্রবল হলো রাহিতার। খানিকটা এদিক-ওদিক তাকিয়ে আর কোনোকিছু না বলেই দ্রুতপায়ে তাদের দুজনের ব্যাগ গুছাতে অন্যদিকে এগিয়ে গেলো সে। লাঞ্চের পর বেরোতে হবে যে!

__________________

দুজন বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত হয়ে গেলো। ঢাকার আকাশে তখন বৃষ্টি বৃষ্টি ভাব! মেঘ ডাকছে একটু পর পর। এমন সময় বাড়ির দরজা লক থাকায় চমকে গেলো স্বপ্নিল। বাসায় তো রহিমা খালাকে রেখে গিয়েছিলো তারা। হঠাৎ কোথায় গেলেন তিনি না বলে? এত বছরের বিশ্বস্ত তিনি কখনোই এমন করেন না! এজন্যই বাসা রেখে গিয়েছিলেন তার ভরসায়। কপালে ভাজ পড়ে স্বপ্নিলের। নিজের চাবি দিয়ে গেট খুলে বাসায় ঢুকতে ঢুকতে দারোয়ানকে ডাকলো সে। রাহিতাকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য পাঠিয়ে দিয়ে গেটে দাঁড়িয়ে দারোয়ানের সাথে কথা বলার জন্য দাড়ালো সে। খানিকবাদে দ্রুতপদক্ষেপে চলে এলো দারোয়ান। স্বপ্নিলকে দেখে আরেকবার সালাম দিতেই সে জিজ্ঞেস করলো রহিমা খালা কোথায় গেছেন। তাকে বলে গেছেন কিনা? স্বপ্নিলের প্রশ্নে মাথা চুলকে বোকা হেসে দারোয়ান বললো,

—আসলে স্যার, রহিমা খালা সন্ধ্যায় গ্রামে চলে গেছে। তার ভাই নাকি অনেক অসুস্থ, দেখতে গেছে। তার ফোনে ট্যাকা ছিলোনা, আমারে কইয়ে গেছিলো আপনাদের ফোন দিয়ে জানায় দিতে। বাসার চাবিও দিয়া গেছে। আমিই ফোন দিতে ভুলে গেছিলাম, মাফ করবেন।

দারোয়ানের সরল স্বীকারোক্তিতে স্বপ্নিল কি বলবে ভেবে পেলোনা। গম্ভীর মুখে শুধু বললো ‘এরপর থেকে যেন এমন না হয়’। অতঃপর দারোয়ানের থেকে চাবি নিয়ে বাসার ভেতর ঢুকলো সে নিজেও। দরজা ভালোভাবে লাগিয়ে দিয়ে উপরে চলে গেলো নিজের রুমের উদ্দেশ্যে।

মাত্রই ফ্রেশ হয়ে জামা পালটে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েছিলো রাহিতা। আচমকা সে সময় কারেন্ট চলে যাওয়ায় চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। ভয়ার্ত সে স্বপ্নিলকে না পেয়ে তাড়স্বরে চিৎকার করে ওঠে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ চমকে উঠে যেন পরিবেশকে আরেকটু ভ’য়ং’কর বানিয়ে দিচ্ছে রাহিতার চোখে। এ ধোয়াশা অন্ধকারে রাহিতা কোনদিক যাবে ভেবে পেলোনা, ওর মনে পড়লো স্বপ্নিল তো নিচে আছে। এখনো হয়তো আসেনি উপরে। আর এখান থেকে তো ওর চিৎকারও শুনার কথা না! এখন কি হবে? ভয়ে-চিন্তায় জমে যায় রাহিতা। কোনোমতে অনুমান করে দ্রুতপায়ে এগিয়ে যায় রুমের দরজার দিকে। আঁধার হাতড়ে কিছুটা সামনে এগোতেই নরম অথচ শক্ত কোনোকিছুর সাথে বাড়ি খায় সে। ভয়ে আবারও মৃদু স্বরে চি’ল্লি’য়ে উঠে রাহিতা। পরমুহুর্তে অনুভব করে দুটি হাত ওকে টেনে নিয়েছে নিজের দিকে। কিছুক্ষণের মাঝেই রাহিতা নিজেকে উপলব্ধি করে স্বপ্নিলের প্রশস্ত বুকে। প্রায় সাথে সাথেই স্বপ্নিলের আওয়াজ কানে আসে,

—রাহি? ভয় পেয়েছো? এটা আমি!

স্বপ্নিলের কণ্ঠে যেন প্রাণ ফিরে পায় রাহিতা। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে মুখ গুজে পড়ে থাকে ওর বুকে। রাহিতার ভয় বুঝতে পেরে ওকে সামলানোর জন্য মাথায় সযত্নে হাত বুলিয়ে দেয় স্বপ্নিল। নরম সুরে বলে,

—এই মেয়ে, ভয় পাচ্ছো কেন এত? আমি আছি তো! জেনারেটর চালু হবে কিছুক্ষণের মধ্যে। রিল্যাক্স! হুশ!

—আপনি কখন এসেছেন? আমার চিৎকার শুনেও আওয়াজ দেননি কেন? আমি কতটা ভয় পেয়েছি আপনি জানেন?

ধীরস্বরে বলে রাহিতা। একিসাথে ভয় ও লজ্জায় কণ্ঠ নেতিয়ে গেছে ওর। কিছুক্ষণ সেভাবেই অতিক্রম হলো। রাহিতা ভয়ে ওকে ছাড়তেও পারছেনা আবার এ প্রথম এতক্ষণ স্বপ্নিলের বুকে লেপ্টে থাকতে বেশ লজ্জা ও অস্বস্তি হচ্ছে ওর! তবে রাহিতার লজ্জা লাগলেও স্বপ্নিলকে অতটা বিচলিত হতে দেখা গেলোনা, সে বেশ নির্বিকার ও স্বাভাবিক। মিনিট পাচেক অতিক্রম হওয়ার পরেও যখন কারেন্ট এলোনা তখন দ্বিধাগ্রস্ত রাহিতা স্বপ্নিলের উদ্দেশ্যে বললো,

—আপনি না বললেন জেনারেটর চালু হবে কিছুক্ষণের মধ্যে? তবে এখনো লাইট চালু হচ্ছেনা কেন?

রাহিতার প্রশ্নে স্বপ্নিলকে হাসতে দেখা গেলো। হাসির দমকে বুকটা হালকা কেপে উঠলো ওর! সে খানিকটা ঝুকে রাহিতার কানের কাছে মুখ আনলো। অতঃপর বেশ শান্ত অথচ রহস্যময় কণ্ঠে বললো,

—বাইরে বৃষ্টি। বাসায় আমরা দুজন, একা। যদি আজ ইলেক্ট্রিসিটি না আসে তাহলে?

#চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ