Monday, October 6, 2025







মন বিনিময় পর্ব-১৮

#মন_বিনিময়
#পর্বঃ১৮
#লেখনীতে- তাসফিয়া হাসান তুরফা

দেখতে দেখতে রাহিতার পরীক্ষার দিন চলে এসেছে। এক সপ্তাহ টানা পরীক্ষা দিয়ে অবশেষে আজকে তার শেষ দিন। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শেষে হল থেকে বেরিয়ে ভার্সিটির করিডরে বন্ধুদের সাথে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলো রাহিতা। স্বপ্নিল যথারীতি অফিস থেকে ফেরার পথে ওকে নিয়ে বাসায় যাবে। রাহিতার ক্লাস বিকালে শেষ হওয়ায় এ ক’দিন স্বপ্নিল প্রতিদিনই এ কাজ করেছে, যার কারণে রাহিতারও এখন অভ্যাস হয়ে গেছে ভার্সিটি শেষে স্বপ্নিলের জন্য অপেক্ষা করার, দুজন একসাথে গল্প করতে করতে বাসায় যাওয়ার! বলাবাহুল্য, প্রতিদিন ফেরার পথে একটা ভালো সময় কাটে ওদের।
আজ প্রশ্ন খানিকটা কঠিন হয়েছে, সেকশনের সবাই পরীক্ষা শেষে উত্তর মিলানো ও বাকি প্রশ্ন নিয়ে টুকিটাকি আলোচনা শেষ করে যে যার মতো প্রস্থান করলো বাসার উদ্দেশ্যে। বাকি রইলো রাহিতা ওর দুই বান্ধবী রিমি ও তামান্নার সাথে। সবাই পরীক্ষা শেষে সপ্তাহখানেকের ছুটি পেয়েছে ভার্সিটি থেকে, এ কয়দিন কে কি করবে তা নিয়েই আলোচনা হচ্ছিলো মূলত। বাকিদের ছুটি কাটানোর বিভিন্ন প্ল্যান থাকলেও রাহিতার বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে খুশি হলো তামান্না। এর কারণ পরশুদিন ওর জন্মদিন। যেটা উপলক্ষে ধানমন্ডির এক রেস্টুরেন্টে ওর কাছের বন্ধুদের সবাইকে দাওয়াত দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে রাহিতাকেও চলে আসার সময় ইনভাইট করতে ভুললোনা সে।

—রাহি, রিমি তোদের দুজনকেও কিন্তু আসতে হবে মনে রাখিস। আমার জন্মদিন বলে কথা, তোদের ছাড়া সেলিব্রেশন ঠিক জমবেনা।

—আমি তো যাবোই রে, তামু। কিন্তু রাহি যাবে কিনা শোন ওর থেকে আগে। কিছুই বলছেনা এখনো, মেইবি রাহি যাবেনা।
রাহিতাকে নিশ্চুপ দেখে দ্বিধান্বিত কণ্ঠে বললো রিমি।

—আরে না, আমিও যেতে চাই দোস্ত৷ কিন্তু শিওর হয়ে বলতে পারছিনা। তোর দাওয়াত তো রাতে, তাই না? ওই সময় বাসায় সবাই থাকে।

কিছুটা ইতস্তত মুখে কথাগুলো বলতেই তামান্না আরও খানিকটা জোর দিয়ে রাজি করানোর চেস্টা করলো রাহিতাকে। একিসাথে রিমিও যোগ দিলো ওর সাথে। দুজন মিলে বন্ধুত্বের খাতিরে সহ আরও নানা কিছু বলে ব্ল্যাকমেইল করে অবশেষে রাহিতার কোমল মনকে রাজি করাতে সক্ষম হলো। সে জানালো বাসায় শুনে তারপর ওকে জানাবে যাবে কি না! তামান্না জানে রাহিতা বিবাহিত, তাই নতুন নতুন বিয়ে হওয়ায় আর সে-ও কিছু বললোনা। মেয়েটা যেতে চেয়েছে এটাতেই খুশি সে। ওদের থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটি থেকে প্রস্থান করলো তামান্না। পিছে রয়ে গেলো ওরা দুজন। তামান্না যেতেই ওদের সামনে আচমকা আগমন ঘটে নিবিড়ের৷ এবার ওকে দেখে আর চমকে যায়না রাহিতারা, কেননা এ ক’দিন পরীক্ষার সুবাদে যখনি সময় পেয়েছে লাইব্রেরিতে বসে একসাথে গ্রুপ স্টাডি করেছে ওরা তিনজনে। টপার হওয়ায় ও ভালো বুঝতে সক্ষম হওয়ায় সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো নিবিড়ের নোটস থেকেই পড়ে ফেলেছে রাহিতা এ ক’দিনে। যদিও এ ব্যাপারে রিমির আগ্রহ বেশি ছিলো তবুও পরীক্ষায় কাজে লাগছে বলে রাহিতাও আর দ্বিমত করেনি পরে। তাই এখন তাদের বন্ধুত্ব আগের তুলনায় কিছুটা ভালো, আগের মতো জড়তা কাজ করেনা অতোটা।

—হেই রাহি, দাঁড়িয়ে আছো কেন? বাসায় যাবেনা?

—শুধু রাহিকে বলছো কেন? ওর সাথে যে আমিও দাঁড়িয়ে আছি তা কি চোখে পড়লোনা? নাকি পাওয়ার কমে গেছে চশমার?
রাহিতার উত্তর দেওয়ার আগে চোখ উল্টিয়ে নিবিড়ের প্রশ্নের জবাব দেয় রিমি। হুট করে এমন প্রশ্ন করাতে থতমত খেয়ে যায় ছেলেটা৷ নাকের ডগার উপর চশমা ঠিক করতে করতে বলে,

—অফকোর্স দেখেছি। দেখবোনা কেন? কিন্তু তোমাকে আমি ইচ্ছে করেই জিজ্ঞেস করিনি।

—ইচ্ছে করে? তা কেন?

আনমনে বলা নিবিড়ের কথার বিপরীতে অবুঝের ন্যায় প্রশ্ন করে রিমি। সেদিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে বিদ্রুপ হেসে সে উত্তর দেয়,

—কারণ রাহিতা তো ক্লাস শেষে ভালোমেয়ের মতো বাসায় চলে যায়। কিন্তু তোমাকে আমি প্রায়ই দেখি সন্ধ্যা পর্যন্ত ভার্সিটি থাকতে। আমি তো অল্পের জন্য ভেবেছিলাম তুমি এখানেই পড়ে থাকো!

এতক্ষণে নিবিড়ের সূক্ষ্ম অপমান উপলব্ধি করে রাগে লাল হয়ে যায় রিমি। নাক ফুলিয়ে বলে,

—কি বললে তুমি? আমি সারাদিন ভার্সিটিতে পড়ে থাকি? ইউ স্টুপিড। আমি আগে বাসায় যেয়ে কি করবো? আমার তো আর রাহির মতোস হাসবে…

—উফফ থাম তো, রিমি। আর নিবিড় তুমিও থামো। তোরা দুজন কি বাচ্চা? এরকম ঝগড়া করিস কেন ভার্সিটিতে? যখনি কথা হয় দুজন শুধু ঝগড়াই করে। রিমিরটা না হয় বুঝলাম কিন্তু নিবিড় তুমিও? আশ্চর্য!

বিরক্তির সাথে বলে রাহিতা। ওকে বলতে দেখে হঠাৎ চুপ হয়ে যায় দুজনে। রিমি স্বাভাবিক থাকলেও নিবিড় খানিকটা বিব্রতবোধ করে। দাতে দাত চেপে রিমির দিক চেয়ে বলে,

—আমি তো ঠিকই ছিলাম। শুরুটা তো ও করেছে।

—এই, আমি শুরু করেছি মানে? তুমিই তো…

ফুসে উঠে আবারো নিবিড়ের দিকে তেড়ে আসতে লাগে রিমি, ওকে সঠিক সময়ে থামিয়ে দেয় রাহিতা। সরিয়ে এনে বলে,

—এবার থাম, রিমি। কি শুরু করেছিস? কোথায় কাল থেকে ছুটি তার জন্য খুশি হবি তা না, আর তুই সেধে ঝগড়া করছিস!

এবার রিমি কিছু বলার আগেই নিবিড় কথা বলে,

—ওহ ভালো কথা। যেটা বলতে এসেছিলাম তা তো ভুলেই গিয়েছিলাম! তামান্নার বার্থডে তে ইনভাইট করেছে না তোমাদের? যাচ্ছো তো নাকি?

—আমি তো যাচ্ছি। রাহি এখনো শিওর না।

আগ বাড়িয়ে কথা বলে রিমি। ওর কথায় বিরক্ত হয় নিবিড়। সে কি ওকে জিজ্ঞেস করেছে? করেনি তো, তবুও এ মেয়েটার স্বভাব আগ বাড়িয়ে কথা বলা!

—হ্যাঁ, বাসায় জানাতে হবে আগে। ওইদিন কোনো প্রোগ্রাম আছে কিনা? বলা তো যায়না কখন কি থাকে। তাই আগেই শিওরিটি দিতে পারছিনা।

—ওহ আচ্ছা। ঠিক আছে দেখো কি করো। তবে তুমি আসলে ভালোই হতো। আমরা সবাই যাচ্ছি, বেশ মজাই হবে কিন্তু!

—হ্যাঁ, আমি ট্রাই করবো যাওয়ার।

মৃদু হেসে উত্তর দিলো রাহিতা। আরও টুকিটাকি কথা বলার মাঝেই ফোন এলো নিবিড়ের, ফোন রিসিভ করে চলে গেলো সে। এবার হাতঘড়িতে তাকিয়ে রাহিতা লক্ষ্য করে স্বপ্নিলের চলে আসার সময় হয়ে গেছে তাই রিমিকে সাথে নিয়ে ভার্সিটি থেকে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় সে নিজেও!

—আচ্ছা রাহি, তুই কেন শিওর না? ভাইয়া কি তোকে আসতে দিবেনা?
রাহিতা তাকাতেই রিমি কথা ঘুরিয়ে বললো,

“না মানে আমি যতদূর তোর থেকে শুনেছি তোর শাশুড়ী তো অনেক ভালো, মানা করার কথা না। আর তোর ভাষ্যমতে স্বপ্নিল ভাইয়াও যদি তোকে শুধু বন্ধু হিসেবেই দেখে তবে এসব বিষয়ে তো অধিকার ফলানোর কথা না! তাহলে মানা করার কথা আসছে কোথা থেকে?”

রিমির কথা কি উত্তর দেবে ভেবে পায়না রাহিতা। ওর দ্বিধাদ্বন্দের আসল কারণ তো স্বপ্নিল নিজেই। কেননা এখন আর স্বপ্নিল সেই আগের মতো নেই, মুখে কিছু না বললেও আজকাল রাহিতার সকল বিষয়ে ধীরে ধীরেই অধিকার দেখানো শুরু করেছে সে। তবে সেটা কি স্বপ্নিল জেনেবুঝেই করছে না নিজের অজান্তে এ ব্যাপারে সন্দিহান রাহিতা। তাইতো বোকার ন্যায় বললো,

—আমি জানিনা, রিমি। উনাকে আমি ঠিকমতো বুঝে উঠতেই পারিনি এখনো। তার আচরণ কেমন যেন ধোয়াশাময়। কখনো মনে হয় তিনি মন থেকে আমায় বউ হিসেবে মেনে নিয়েছেন আবার কখনো মনে হয় এটাও হয়তো তার নিছক দায়িত্ববোধের মধ্যে পড়ে! আমি খুবই কনফিউজড রে দোস্ত!

—হুম, বিষয়টা আসলেও কনফিউজিং। স্বপ্নিল ভাইয়া এমন কেন? তুই ভালো দেখেই কিছু বলিস না। আমার জামাই এমন হলে তো আমি ওরে..

রাহিতার চোখ পাকানো দেখে বহুকস্টে মুখের কথা বের হওয়ার আগেই গিলে ফেলে রিমি। আজকাল মাঝেমধ্যেই রাহিতার উপর ভীষণ রাগ হয় ওর, কিভাবে নিজের অনুভুতিকে গুটিয়ে রেখে স্বপ্নিলের সামনে চলাফেরা করে মেয়েটা! আর স্বপ্নিল? সে তো এ ব্যাপারে চির অজ্ঞাত! এভাবে চললে ওদের মধ্যে কিভাবে সব ঠিক হবে? রিমি ভেবে পায়না। আর তখনই ওদের দুজনের প্রতি ক্রুদ্ধ হয় তার অন্তর! রাগের চোটে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেনা সে।

____________________

পরদিন সন্ধ্যা। ড্রয়িংরুমে সবার সাথে বসে আছে রাহিতা। স্বপ্নিল রাস্তায়, যেকোনো মুহুর্তে ফিরবে বাসায়। এক সোফায় দিলারা বেগম ও রাহিতা, অপর সোফায় সামিরা বসে। সেখান থেকেই অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে মেয়েটা। এক দন্ড চুপ থাকেনা সে। কলেজে কি হয়েছে না হয়েছে, নতুন স্যার এসে কি করেছে এসব বিষয় মা ও ভাবীকে জানানো যেন বেশ গুরুত্বপূর্ণ এমন ভাবভঙ্গি তার! নিজের কথা শেষ করে রাহিতার উদ্দেশ্যে সামিরা বলে,

—আমার কলেজের কথা তো অনেক হলো। এবার ভাবী, তুমি তোমার ভার্সিটির কথা কিছু বলো? আমরাও শুনি!

—আমার ভার্সিটির কথা? কি শুনবে?

—বলো যদি কোনো মজার ঘটনা মনে পড়ে তবে। যেমন আমার এক ফ্রেন্ডের বার্থডে তে ওকে সারপ্রাইজ দিতে যেয়ে আমরা নিজেরাই সারপ্রাইজড হয়ে গেছিলাম জানো? জানো হয়েছিলো কি…

—সামি, এক মিনিট দাড়াও। খুব ভালো একটা কথা মনে করিয়ে দিয়েছো তুমি। থ্যাংকস। বলবো বলবো করে আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম কাল থেকে!

সামিরা পুনরায় কথা বলা শুরু করতেই ওকে থামিয়ে দেয় রাহিতা। তামান্নার বার্থডে পার্টির কথা তো বাসায় জানাতে ভুলেই গিয়েছিলো রাহিতা! যাক অবশেষে সামিরার মুখে বার্থডে শুনে বিষয়টা আবারো মাথায় এলো তার!

—কি বলতে যেয়ে ভুলে গিয়েছিস, রাহি?

—আসলে মা, আমার এক ফ্রেন্ডের জন্মদিন কালকে। সন্ধ্যায় ধানমন্ডির এক রেস্টুরেন্টে দাওয়াত দিয়েছে কিছু ক্লোজ ফ্রেন্ডসদের। আমাকেও যাওয়ার জন্য খুব জোর করছিলো। আমি বলে এসেছি বাসায় জানিয়ে তারপর ওকে জানাবো। তো বলছিলাম, আমি কি যাবো মা?

—ভালো ফ্রেন্ড তোর? তুই কি যেতে চাস?

শাশুড়ির কথায় আড়ষ্ট ভংগিতে “হ্যাঁ-সূচক” মাথা নাড়ায় রাহিতা। ছুটি চলছে ওর, কাল থেকে বাসায় বসে আছে। স্বপ্নিল আদৌ ওকে কোথাও নিয়ে যাবে কিনা কে জানে? তার চেয়ে এ বাহানায় অন্তত বাসা থেকে বের হওয়া যাবে, একটুখানি ঘুরে বেড়ানো যাবে! রাহিতার ভাবনার মাঝেই ওকে পর্যবেক্ষণ করে মুচকি হেসে দিলারা বেগম বললেন,

—তোর বান্ধবীর জন্মদিন, তোর যেতে মন চাইছে তাহলে তুই যাবি। আমি কেন মানা করবো তোকে? আমি কি ওরকম শাশুড়ী নাকি যে বিয়ের পর বউদের বাড়ির বাহিরে যেতে বাধা দিবে? এটাই তো তোর বয়স আনন্দ-ফুর্তি করার, ঘুরে বেড়ানোর। আর তাছাড়াও ধানমন্ডি তো আমাদের এখান থেকে বেশি দূরেও নাহ, তাই আমিও বাধা দেবোনা।

শাশুড়ির কথায় ও চিন্তাভাবনায় আরেকদফা মুগ্ধ হলো রাহিতা। ওর মন চাইছে উনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে, এত ভালো কেন এ মানুষটা?
রাহিতা কিছু বলবে এর আগেই স্বপ্নিলের কণ্ঠ কানে ভাসে ওর,

—কে কোথায় যাচ্ছে, মা?

চমকে উঠে সেদিকে তাকায় রাহিতা। মুহুর্তেই অফিস ফেরা ক্লান্ত ঘর্মাক্ত স্বপ্নিলকে চোখে পড়ে ওর। আজকে একটু বেশি কাজের চাপ ছিলো বিধায় বাসায় ফিরতে দেরি হয়েছে তার। স্বপ্নিলের চেহারা দেখে তা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।

—তুই এসেছিস, বাবা? জলদি বস এখানে। বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছে তোকে।
ছেলেকে দেখে চিন্তিত ভংগীতে বললেন দিলারা বেগম। হালকা হেসে মায়ের পাশে সোফায় গা এলিয়ে বসে স্বপ্নিল। আড়চোখে রাহিতার দিক তাকিয়ে পুনরায় প্রশ্ন করে,

—এবার বলো কি যেন বলছিলে তুমি শুনলাম। কে কোথায় যাবে?

—ওহ ওটা! আরে রাহির এক বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টি কাল। সেখানে যাওয়ার কথা বলছিলো মেয়েটা। তাই আমিও বললাম ওর যেতে মন চাইলে যাবে। এটাও আবার জিজ্ঞেস করা লাগে? আমাদের কোনো অসুবিধে নাই, কি বলিস?
মায়ের প্রশ্নের জবাব দেয়না স্বপ্নিল। গম্ভীর মুখে রাহিতার উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করে,

—কার বার্থডে? কোথায় হবে পার্টি? কে কে যাবে…

—আরে ভাইয়া আস্তে। তুমি তো দেখি ভাবীকে ঝড়ের বেগে একটার পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছো…

রসিকতা করে ভাইয়ের উদ্দেশ্যে কথাটা বলেই স্বপ্নিলের চাহনি দেখে থেমে যায় সামিরা। চুপচাপ মুখে কলুপ আটে সে। অতঃপর স্বপ্নিলের সব প্রশ্নের জবাব দেয় রাহিতা৷ মনোযোগ দিয়ে ওর কথা শুনে কিছুক্ষণ একদৃষ্টে চেয়ে থাকে সে৷ খানিকবাদে হুট করেই শক্তমুখে বলে,

—রাহি যাবেনা এ পার্টিতে৷

হঠাৎ করে যেন চমকে উঠলো রুমে বসা তিন রমণী। বলছেটা কি স্বপ্নিল? কেন যাবেনা রাহিতা?
বিস্মিত রাহিতা চোখ ছোট ছোট করে প্রশ্ন করে,

—আপনি এমন করছেন কেন? যাবোনা কেন আমি? তাছাড়াও মা তো রাজি হয়েছেই।

—মা রাজি হয়েছে ঠিক আছে কিন্তু মায়ের ছেলে রাজি হয়নি। তাই তুমি যাবেনা।

স্বপ্নিলের কাঠকাঠ উত্তর। তা শুনে করুন চোখে শাশুড়ির দিকে তাকায় রাহিতা। ছেলের উদ্দেশ্যে দিলারা বেগম বলেন,

—আহহা এমন করছিস কেন, স্বপ্নিল? যেতে দে না মেয়েটাকে বাবা। গাড়িতে করে যাবে আসবে। খুব বেশি রাতও করবেনা, আগেই চলে আসবে। কি সমস্যা তোর?

—আমার সমস্যা তুমি বুঝবেনা, মা। রাহিতা এ পার্টিতে যাবেনা বললাম তো।

—আরে শুনুন না। বলছিলাম যে..

—আমি কিছু শুনতে চাইনা, রাহি। একবার বলেছিনা তুমি পার্টিতে যাবেনা? তার মানে তুমি যাচ্ছোনা। ব্যস।

কথাগুলো বলেই হনহন করে রুমের দিকে পা বাড়ায় স্বপ্নিল। সেদিক চেয়ে হতাশ মুখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাকি সকলে। তবু কিছু জিনিস থেকে গেলো তাদের অগোচরে। যা তাদের কর্ণগোচর হয়নি তা ছিলো কথা শেষে খানিকটা থেমে স্বপ্নিলের বিড়বিড়িয়ে বলা,

“আমি চাইনা আমার বউ একা একা রাতের বেলা পার্টি করুক। অন্য কারও সাথে তো অবশ্যই না”

#চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ