Monday, October 6, 2025







মন বিনিময় পর্ব-০৩

#মন_বিনিময়
#পর্বঃ৩
#লেখনীতে- তাসফিয়া হাসান তুরফা

শান্ত পরিবেশ। নিশ্চুপ ভংগিতে পেছনে ঝুকে আতংকিত মুখে স্বপ্নিলের চোখের দিক চেয়ে আছে রাহিতা। যে চোখে স্পষ্ট শূন্যতা বিরাজমান। হুট করে স্বপ্নিল হাত ছেড়ে ছেড়ে দেওয়ায় ভয়ে চোখমুখ কুচকে ফেললো রাহিতা। এই বুঝি পড়ে যাবে মনে হতেই তৎক্ষণাৎ পুনরায় হাত চেপে ধরে স্বপ্নিল। অতঃপর চোখ খুলার আগেই হ্যাচকা টানে আচমকা তার বুকে এসে পড়ে রাহিতা। সবকিছু এতটাই আকস্মিকভাবে ঘটলো যে ভয়ে-বিস্ময়ে স্তম্ভিত হয়ে আছে মেয়েটা। অপরদিকে স্বপ্নিলকে এত কাছে থেকে অনুভব করতে পেরে এক অন্যরকম অনুভূতিতে বশীভূত হয় তার মন! স্বপ্নিলের বুকে মাথা রেখে সেভাবেই তার হৃদস্পন্দন শুনার চেস্টা করছিলো সে, এরই মধ্যে তাকে বুক থেকে সরিয়ে দেয় স্বপ্নিল। দুহাতে বাহু চেপে ধরে সামান্য দূরত্ব সৃষ্টি করে দুজনের মাঝে!

—কেমন লাগলো?

রসিকতামূলক প্রশ্ন করতেই সরু চোখে অপর পাশ ফিরে রাহিতা। তাকে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টায় সফল হওয়ায় এবার যে মজা নিবে স্বপ্নিল তা বেশ বুঝছে সে। রাহিতাকে চুপ দেখে স্বপ্নিল পুনরায় তার বাহু ঝাকিয়ে প্রশ্ন করে,

—খুব ভয় পেয়েছিলে? স্বীকার করতেই পারো। আমি মাইন্ড করবোনা।

—ধুর, আপনি একটা খুব বাজে লোক!

বিরক্তিকর কণ্ঠে কথাটা বলে স্বপ্নিলের থেকে নিজ হাত ছাড়িয়ে তাকে ইষৎ ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বারান্দা থেকে চলে যেতে যেতে বললো রাহিতা। পেছন ফিরলে সে দেখতে পেতো স্বপ্নিলের ঠোঁটের কোণে এক প্রস্ফুটিত সূক্ষ্ম হাসি!

_____________

নিচে নামতেই শাশুড়ি ও অন্যান্য আত্মীয়দের মুখোমুখি হলো রাহিতা। সবাই যেন ওর জন্যই অপেক্ষা করছিলো সেভাবেই হাসলো ওকে দেখে। বিনিময়ে সে-ও ইতস্তত হেসে সকলের মাঝে গিয়ে বসলো। শুরু হলো নতুন বউকে দেখে প্রশংসা করলো সবাই। একিসাথে তাকে ক্ষেপানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম হাসি-ঠাট্টা। গল্পের পসরায় জমে গেলো আসর। বলাবাহুল্য, স্বপ্নিলের বাবা মারা গেছেন, ওর একটা একাদশে পড়ুয়া ছোট বোন আছে। পড়ালেখার পাট চুকানোর আগেই তার বাবা মারা যাওয়ায় ভার্সিটিতে উঠার শুরু থেকেই তার বাবার রেখে যাওয়া ব্যবসায় হাত দিতে হয় তাকে। অল্প সময়ে দায়িত্বের বোঝা ঘাড়ে চেপে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই একা হাতে যতটুকু পেরেছে বেশ ভালোভাবেই সবদিকে সামলে রেখেছে সে। এসব নিয়েই কথা হচ্ছিলো, বেশিরভাগ আলোচনা স্বপ্নিলকে ঘিরে। তার কি পছন্দ, অপছন্দ এসব রাহিতাকে জানানোর উদ্দেশ্যেই যে তার শাশুড়ি করছে বুঝতে বাকি রইলোনা তার। একিসাথে রাহিতা এটাও বুঝলো, এত দ্রুত বাবাকে হারানোর পর থেকেই মায়ের প্রতি এক আলাদা দূর্বলতা আছে স্বপ্নিলের। আর হয়তো সে কারণেই নিজের মনের ক্ষত শুকানোর আগেই সে মায়ের কথায় এ বিয়ে করতে রাজি হয়!

আত্মীয়দের সাথে আলাপ আলোচনা শেষে রান্নাঘরে প্রবেশ করতেই শাশুড়িকে সে জিজ্ঞেস করে,

—সরি আন্টি, উঠতে দেরি হয়েছে। আপনার হেল্পও করতে পারলাম না সকালবেলা রান্নায়।

—ঠিক আছে। তবে তোমাকে এক শর্তে ক্ষমা করতে পারি।

কিছুটা গম্ভীর মুখে বললেন দিলারা বেগম। শাশুড়ির এমন আচরণে কিছুটা অবাক হলো রাহিতা, তবুও স্বাভাবিক মুখে বললো,

—কি শর্ত, আন্টি? আমায় বলুন।

—আমি এখানে কারও আন্টি না। আমাকে এখন থেকে মা বলে ডাকলে তবেই মাফ করবো, বুঝেছো বৌমা?

হেসে কথাগুলো বলেন দিলারা বেগম। শাশুড়ির হাসি দেখে হেসে ফেলে রাহিতাও! তিনি যে ওর সাথে মজা করছিলেন এতক্ষণে বুঝে এলো তার। হাসতে হাসতেই দিলারা বেগম বললেন,

—রান্না করতে পারিস না, রাহি?

—জি, মা। পারি টুকটাক!

—বেশ! আমার স্বপ্নিল কিন্তু বেশ ভোজনরসিক। ওকে দেখে খুব একটা বুঝা যায়না। কিন্তু খাবার খেতে অনেক পছন্দ করে আমার ছেলেটা! তুই বুঝতে পারছিস তো আমি কি বলছি?

শাশুড়ির কথায় কি জবাব দিবে ভেবে পায়না রাহিতা। তবুও মাথা নিচু করে হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ে সে। কিছুক্ষণ নীরবতার পর দিলারা বেগম বলেন,

—আজ বিকেলে সবাই চলে যাওয়ার পর আমার রুমে আসবি কেমন? কিছু কথা বলার ছিলো তোকে।

উনার কথায় মাথা তুলে তাকায় রাহিতা। অবশেষে তিনি নিজে থেকে সব খুলে বলতে চাইছেন তবে ওকে! জানার সুযোগ পেয়ে সে-ও সায় জানিয়ে বলে দেয় সে আসবে। তারও যে স্বপ্নিলের সম্পর্কে অনেক কিছু জানা বাকি! নিজের ভাবনার মাঝেই সে শুনতে পেলো দিলারা বেগমের আরেকটি প্রশ্ন,

—স্বপ্নিল তোকে কাল রাতে কিছু বলেছে?

—মানে?

যদিও রাহিতা জানে তিনি কি প্রসঙ্গে কথা বলছেন তবুও অবুঝের মতো প্রশ্ন করে পুরোটা শুনার জন্য। ওর প্রশ্নে ইতস্ততভাবে দিলারা বেগম বলেন,

—মানে ও কি তোর সাথে কোনো ধরনের খারাপ ব্যবহার করেছে? বা এমন কিছু বলেছে যাতে তুই কস্ট পেয়েছিস? যদি করে থাকে আমায় বলতে পারিস। আমি নিজে ওর খবর নেবো।

রাহিতার মনে হলো একবার বলে দিক কাল রাতের স্বপ্নিলের অদ্ভুত আচরণের কথা। তাকে স্ত্রী হিসেবে মানবেনা, কোনোদিন ভালোবাসবেনা এসব বলার কথা কিন্তু তবুও অজানা এক কারণে সে সংযম করলো নিজেকে। আগে সবকিছু শাশুড়ির থেকে জানতে হবে তবেই সে কোনোকিছু ভাববে! তাই মুখভঙ্গি স্বাভাবিক করে মলিন হেসে বললো,

—না, মা। তেমন কিছুই হয়নি। আসলে আমরা খুব বেশি টায়ার্ড ছিলাম তো তাই দুজনেই ঘুমিয়ে পড়েছি দ্রুত। কেন কিছু হয়েছে নাকি, মা?

রাহিতার কথায় এতক্ষণ চেপে রাখা শ্বাস ছাড়লেন দিলারা বেগম। স্বপ্নিল যে রাহিতার সাথে কোনো খারাপ আচরণ করেনি ভেবে খুশি হলেন তিনি। যাক, তার ছেলে নিজেকে সামলে নিতে শিখেছে। এখন রাহিতাকে মেনে নিলেই হয়! মনে মনে প্রার্থনা করলেন উনি। হাসিমুখে বললেন,

—আরে না। আমি তো এমনি বলছিলাম! বয়স হয়ে গেছে তো! কখন কি বলি ঠিক নাই। তুই এখন বাহিরে যা। তোর কাকিশাশুড়িদের কাছে যা। আমিও আসছি!

অতঃপর একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাথা নাড়িয়ে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে আসে রাহিতা। বের হতেই পথিমধ্যে দেখা হয় স্বপ্নিলের সাথে। ওর দিকেই অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে! এ দৃষ্টি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম, কোমল দৃষ্টি। যেন কোনো কারণে ওর কাছে কৃতজ্ঞ সে! স্বপ্নিলকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে কিছুটা চমকে উঠেই চোখের ইশারায় রাহিতা জিজ্ঞেস করে “কি?”

স্বপ্নিল উত্তর দেয়না। কিছুক্ষণ ওর চোখে সেভাবে চেয়ে থেকেই হঠাৎ ধরা পড়া চোরের ন্যায় এদিক সেদিক তাকিয়ে উশখুশ করে কেটে পড়ে রাহিতার সামনে থেকে।
হঠাৎ করে কি এমন হলো তার?
ওর যাওয়ার পানে চেয়ে রাহিতা ভাবে।

______________

সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো, দুপুর পেড়িয়ে বিকেল। বিকেল হতেই এক এক করে মেহমানরা চলে যেতে লাগলো নিজ নিজ গন্তব্যে। স্বপ্নিলও বাহিরে চলে গেছে। ওর আসতে আসতে রাত হবে। বাসা ফাকা পেয়ে এ সুযোগে শাশুড়ির রুমে চলে গেলো রাহিতা। সকাল থেকেই যে এ মুহুর্তটার অপেক্ষা করছিলো সে! তাইতো সময় পেতেই এক মুহুর্ত বিলম্ব করেনি। অপরদিকে দিলারা বেগমও যেন ওর আগমনের জন্যই প্রস্তুত ছিলেন। রাহিতা রুমে ঢুকতেই ইশারায় তার পাশে বসার ইংগিত দিলেন তিনি। ওর মাথায় হাত রেখে বেশ শান্ত গলায় বললেন,

—দেখ মা, এখন হয়তো আমি তোকে যা বলবো শুনলে তুই কস্ট পাবি। মনে মনে আমাকে ভালোমন্দও বলতে পারিস। এতে আমি কিছু বলবোনা তোকে। কিন্তু আমার মনে হয় তোদের সম্পর্ক পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগে তোকে স্বপ্নিলের সম্পর্কে সবকিছু জানানো দরকার। তাই তোকে এখানে ডাকা। এ বুড়ো মায়ের কথা শুনবি তো?

ঢিপঢিপ করতে থাকা হৃদয় নিয়ে উনার দিকে চেয়ে রইলো রাহিতা। এক অদ্ভুত উত্তেজনায় ক্ষণে ক্ষণে শিউরে উঠছে সে। কি এমন হয়েছিলো স্বপ্নিলের অতীতে? কেন-ই বা ও সবসময় এইরকম মনমরা হয়ে থাকে? আজকে যে অবশেষে সবকিছুর কারণ জানতে পারবে সে!

#চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ