Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"মনের মাধুরীতে তুমিমনের মাধুরীতে তুমি পর্ব-১১+১২

মনের মাধুরীতে তুমি পর্ব-১১+১২

#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিক্বঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১১
,
,
,
,
ছোট ছোট পায়েই রায়হানের পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছে বৃষ্টি বন্যা। বন্যা কথার ঝুলি খুলে রাখলেও বৃষ্টি ছিলো শান্ত আর চুপচাপ।বন্যা তাকে কিছু জিজ্ঞেস করলে হ্যা বা না তে মাথা নাড়াচ্ছে।রায়হানের কেন যেনো ভিষন ভালো লাগছে বৃষ্টির এই নিরবতা। আনমনেই কখন বলে উঠলো
“নিরবতার রানী”

নিজের দেওয়া নামটা আপন মনেই বলেই কেমন অদ্ভুদ দোলা খেলে গেলো মনে।নতুন কোন এক অনূভুতি যেনো তার সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলো।কিন্তু তার বড্ড ইচ্ছা করলো একবার শুনতে এই মিষ্টি চেহারার অধিকারীনির গলাতে তার নাম শুনতে।তার পাশে যে কেউ অনবরত কথা বলেই যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল নেই রায়হানের। সে তো একরাশ নিস্তব্ধতায় ঘিরা অনুরাগীনির প্রাণে চেয়ে আছে

দেখতে দেখতে বাসায় পৌঁছে গেলো তারা।রায়হান শুধু অবাক হয়ে চেয়ে রইলো ৩ঘন্টার রাস্তাই একটা টু শব্দ করেনি।মেয়েটা।মানুষ বুঝে এতোক্ষন চুপ থাকতে পারে সেটা জানতোনা রায়হান। এবার রায়হান অধৈর্য হয়ে পড়লো না পেরে বন্যাকে জিজ্ঞেস করেই ফেললো

—বৃষ্টির কি কিছু হয়েছে

বৃষ্টি ওদের পিছনে থাকায় রায়হানের বলা বাক্যটি তার।কান অব্দি পৌছালোনা।
বন্যা,অবাক দৃষ্টিতে চাইল রায়হানের প্রাণে

—তুমি ভুলে গেছো ভাইয়া বৃষ্টি কথা বলতে পারেনা।

রায়হানের পা থমকে গেলো মনে পড়ে গেলো ছোট বেলার কিছু ঘটনা। বৃষ্টি কথা না বলতে পারায় এলাকার কেউ তার সাথে মিশতোনা। বেশির ভাগ সময় বৃষ্টি একা এক কোণাতেই দাঁড়ায় থাকতো।আহিয়ান রায়হান রিহাব যখন তাদের বাসায় যেতো শুধু তখন ই হাসত৯ বৃষ্টি আওয়াজ বিহীন সে হাসিটা মনে পড়তেই রায়হানের মনের অদ্ভুদ এক বাতাস দোলা দিলো রায়হানের মনে।

তিনজনে বাসায় প্রবেশ করতেই মিসেস নিহারিকা(আহিয়ানের আম্মু)এসে জড়িয়ে ধরলো বৃষ্টি আর বন্যাকে। বোনের দুই মেয়েকে তিনি অনেক বেশিই ভালোবাসে।উনার মেয়ের খুব শখ ছিলো কিন্তু আল্লাহ তিনটাই ছেলে দেওয়ার দরুন সেটা সম্ভব হয়নি।আর রিহাব হওয়ার সময় উনার কিছু কমপ্লিকেশন থাকায় তিনি মা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
তখন থেকে বোনের দুই মেয়েকেই তিনি নিজের মেয়ের মতো ভালোবেসে এসেছেন। ছেলে তিনটা যখন বাহিরের দেশে থাকতো তখন বেশির ভাগ সময় ই বৃষ্টি এসে তার সাথে থেকে যেতো।

নিহারিকা বেগম দুইজনার কপালে চুমু খেলেন।

—কেমন আছে আমার মা দুইটা

বৃষ্টি নিহারিকা বেগমের গালে চুমু খেলেন তার মানে সে খুব ভালো আছে।নিহারিকা হাসলেন বন্যা বলে উঠলো

—এতো সুন্দর খালামনিকে দেখে মন একদম চাঙ্গা হয়ে গেছে

নিহারিকা বেগম হালকা করে চাপড় দিলেন বন্যার মাথায়।

—এখনো আগের মতোই দুষ্টু আছিস

বন্যা হেসে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো।নিহারিকা বেগম বুঝলেন ভাতিজির চোখের এহেন বিচলতা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলেন

—তোরা রুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নে। আর যাকে খুজা হচ্ছে সে তোদের রুমেই আছে।

বন্যা লজ্জা জনক হাসি দিয়ে উপরে চলে গেলো পিছন পিছন বন্যাও গেলো।

———

আহিয়ান একমনে সুখকে বুঝাচ্ছিলো।অন্যদিকে যে সুখ তার দিকে একমনে চেয়ে আছে সে দিকে ধ্যান নাই আহিয়ানের সেটাই ভাবে সুখ কিন্তু এদিকে যে আহিয়ান তার সুখ পাখির এহেন চাহুনিতে অদ্ভুদ প্রশান্তি অনুভব করছে সেটা আহিয়ানের বোকা সুখ পাখি টের পাচ্ছে।এমন সময় দুইজনার ধ্যান ভঙ্গ করে আহিয়ানের ফোন বেজে উঠে। চেয়ার ছেয়ারে উঠে যেতে নিলেই বন্যা এসে জড়িয়ে ধরে আহিয়ান কে। হঠাৎ এমন হওয়াই আহিয়ান তেমন কোন রিয়েকশান না দিলেও চমকাই সুখ। এই ভাবে কেউ এসে যে আহিয়ান কে জড়ায় ধরবে সেটা তাকে যতোটা না ভাবিয়েছে তার চেয়ে বেশি অবাক করেছে আহিয়ান এর কিছু না বলা। গলা শুকিয়ে আসছে সুখের। হঠাৎ করেই বড্ড পিপাসা পাচ্ছে তার।যেনো মহূর্তে পানি না পেলে সে মারা যাবে

—কেমন আছিস। আর কখন আসলি

—এই মাত্র এলাম।এসেই দেখি তুমি আমার রুমে

—হুম যা দুইজন ফ্রেশ হয়ে নে আমার দরকারি কল এসেছে

আহিয়ান বন্যাকে ছাড়িয়ে বৃষ্টির মাথায় হাত বুলিয়ে চলে যায়।এবার বন্যা আর বৃষ্টির নজর পরে সুখের দিকে।সুখের মাঝে তেমন কোন হেলদোল নেই।
এরই মাঝে সেখানে উপস্থিত হয় মিসেস চৌধুরী।

—খালামনি এই মেয়েটা কে

—এই সুখ। তোর খালুর বোনের মেয়ে।

—ওহ কিন্তু এই এখানে কেনো আর আহিয়ান ভাইয়াও দেখলাম এই রুম থেকেই বের হলো

মেয়েটার কন্ঠে স্পষ্ট করুনতা টের পেলো সুখ। সময় লাগলোনা তার বুঝতে এই কাতরতার মানে

বৃষ্টি এসে জড়ায় ধরলো সুখকে। সুখ বাস্তবতাই ফিরে এলো এবার।সে ও জড়ায় আলতো করে জড়ায় ধরলো।

—কিন্তু খালামনি তুমি তো জানো এই রুমটা আমার কতো।পছন্দ

—হ্যা আমি ভুলে গেছিলাম যে এই রুমে সুখ আছে।আমি তোদের জন্য নিচের রুম টা খুলাই পরিষ্কার করায় দিচ্ছি।

—ওইটাতো গেস্ট রুম খালামনি। অবশ্য আমরাও তো গেস্ট ই তাইনা ঠিক আছে

বন্যার কথায় স্পষ্ট অভিমান টের পেলো নিহারিকা বেগম। তিনি পড়ে গেলেন বিপাকে না পারছেন সুখ কে এই রুম ছেড়ে দেওয়ার কথা বলতে না পারছেন নিজের ভাতিজিদের কিছু বলতে সুখ বুঝলো নিহারিকার অবস্থা।

—তোমাদের খালার বাসায় তোমরা কেনো মেহমান হবা আপু এই ঘড়টা তোমাদের।আমি তো শুধু কইটা দিন ছিলাম সমস্যা নাই। আমি নিচের রুমে সিফট হয়ে যাবো

বৃষ্টি মাথা নাড়িয়ে না করলেও বন্যা র মুখে হাসি ফুটে উঠলো।সুখ ও হাসলো।

—আমাকে একটু সময় দেও আমি আমার জিনিস গুলো প্যাক করেনি
—হুম কিন্তু একটু দ্রুত আসলে এতোদূর জার্নি করে এসেছি।

সুখ কিছু বললোনা মুচকি হাসির আড়ালে নিজের কষ্ট লুকিয়ে দিলো।সে চাইলেই পারতো এর জবাব দিতে কিন্তু তার মন চাইলোনা কি হবে সামান্য রুম নিয়ে ঝগড়া করে। তার যে নিজের বলতে কিছু নাই সেটা সে অনেক আগেই টের পেয়েছে।কিন্তু এতো দিন এক টা মাস এর বেশি এই ঘরে ছিলো অনেক টাই আপন করে নিয়েছিলো।

নিজের সমস্ত জিনিস বের করে নিতে ঘন্টা খানেক লাগলো নিচের ঘরে আসতেই কেশে উঠলো সুখ।ধুলাতে তার এলার্জি আছে মহূর্তে সারা।শরীর চুলকে ফুলে উঠতে শুরু করলো আর হাচ্চি তো আছেই।
একজন সার্ভেন্ট এগিয়ে আসতে নিলে সুখ নিষেধ করলো

—আপনি এদিকে এসেন না আমাকে দিন আমি করে নিবো।আপনি আপুদের খাবার ঠিক করুন এইটুকু আমি করে নিবো

—কিন্তু মা তোমার তো অবস্থা ভালোনা

—আরে এইসব কিছু না আপনি চিন্তা করবেন না এই সামান্য জিনিসে আমার কিছু হবেনা(হাচ্চি ফেলে)

সুখের জড়াজড়িতে সেখান থেকে যেতে বাধ্য হলো মহিলাটি।দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কাজে লেগে পড়লো সুখ।সব কিছু পরিষ্কার করতে করতে রাত প্রায় ১ টা বেজে গেলো।গোসল করে এসে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলো সুখ।প্রচুর ক্লান্ত সে।সাথে খুদাও লেগেছে কিন্তু উঠে খাবার নিয়ে খেতে ইচ্ছা করলোনা।আর কারো যে মনে থাকবে সেটাও সম্ভব না কারণ নিহারিকা বেগম নিজের ভাতিজিদের আপ্যায়নে ব্যস্ত ছিলেন এতোকিছুর মাথায় যে তার কথাটা উনার মাথা থেকে বেরিয়ে যাবে এটা তেমন কোন ব্যাপার বলে মনে করলোনা সুখ।

হাত পা প্রচুর চুলকাচ্ছে সাথে অনেক জায়গায় ছিলে জ্বলছে গলাটাও আকড়ে আসছে তীব্র ভাবে।কিন্তু এই রাতে ঔষধ বা কই পাবে। হঠাৎ ওর মাথায় এলো ওর নানুর কথা। অনেক কষ্টে উঠে দাড়ালো সে। কিন্তু সাথে সাথে মাথা ঘুরে ফ্লোরে পড়ে গেলো,,,,,,,

চলবে!

#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১২
,
,
,
,
তীব্র মাথা নিয়ে চোখ মেলে তাকায় সুখ।হাত পা অবশ হয়ে আছে তার।মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ দুইটা বুঝে নিলো আপনমনেই ভেবে নিলো হাতের মালিক টা আহিয়ান। কিন্তু চোখ টা খুলে তাকাতেই মাথার কাছে অভিরুপ কে দেখে অজান্তেই বুকের বামপাশটা ফাকা হয়ে গেলো । অজান্তেই মনটা আশা করেছিলো আহিয়ান কে। বুকটা ভারি হয়ে গেলো

সুখকে নড়াচড়া করতে দেখে অভিরুপ দ্রুত তাকে ধরে উঠায়।মাথায় হাত বুলায়ে আলতো স্বরে জিজ্ঞেস করে

—কেমন লাগছে মা।এমটা কেউ করে যেহেতু তুমি জানো তোমার ডাস্ট সহ্য হয়না তাহলে করতে গেছো কেনো।এই অবস্থায় কাউকে ডাকবা না আমি যদি এদিক দিয়ে না যেতাম তাহলে তো জানতেও পারতাম না

—সমস্যা নাই মামু। আমি ঠিক আছি।আর আমি যাচ্ছিলাম ই ইয়াং ম্যান এর কাছে ঔষধ নিতে কিন্তু সে সময় মাথা ঘুরে উঠে আর কিছু মনে নাই

—আমি এসে দেখি তুই অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছিস ভয় পেয়ে যায়।রাতেও না খাওয়ার জন্য আর অতিরিক্ত দুর্বলতার জন্য এই অবস্থা।ইমেডেটলি স্যালাইন লাগানো না হলে তোকে এই মহূর্তে আইসিউতে এডমিট করা লাগতো

সুখ এখন খেয়াল করে তার হাতে ক্যানোলা লাগানো।

—অনেক বেশি জ্বালায়েছি তাইনা এমনিতে রাত করে বাসায় আসেছো তার উপরে আমার জন্য ঘুমাতেও পারলে না আবার ডিউটি আছে।

নিচু গলায় বলে উঠলো।অভিরুপ সুখের মাথায় হাত দিয়ে বলে উঠে

—নিজের মায়ের যত্ন নিতে বুঝি কোন ছেলের কষ্ট হয়।আর একবার আমার সামনে মাথা নিচু করে এইভাবে অপরাধীর গলায় কথা বলবিনা

সুখ আলতো হেসে জড়িয়ে ধরে মামা নামক বাবার ছায়াকে

—জানো মামু মাঝেমধ্যে মনে হয় তোনার জায়াগায় বাবাই থাকলেও বুঝি আমাকে এতোটা ভালোবাসতোনা। এতোটা আদর দিতে পারতোনা।তোমার সাথে থাকলে বাবা বাবা গন্ধ পাই তীব্র ভাবে।

অভিরুপ হেসে সুখের কপালে চুমু একে দেয়।

——————
সুখ বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছে সকাল গরিয়ে দুপুর হয়ে এলো।সকালে অভিরুপ সুখ কে খাওয়াই দিয়ে ঔষধ দিয়ে হস্পিটালে রওনা দেয় ইমার্জেন্সি থাকায়।

সুখ একমনে তাকায় আছে দরজার দিকে অনাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তিটির আশায়।বাহির থেকে সবার হাসি আড্ডার আওয়াজ ভেসে আসছে।নীহারিকা চৌধুরী উচ্ছ্বাসিত শব্দটাও স্পষ্ট পাচ্ছে সুখ।আদরের ভাগ্নিদের খাওয়ানোর কি তোরজোর। আলতো হাসলো সুখ।রায়হান আর সুখ এর নানু এসে দেখে গেলেও আর কেউ আসে নাই এই ঘরে।আলতো করে বিছানা থেকে নেমে পড়লো সুখ।আলমারি থেকে এক সেট জামা বের করে পরে নিলো দুর্বল শরীর নিয়ে বেরিয়ে পড়লো রুম থেকে

—মামনি

সুখের গলা শুনে সামনে তাকালো নিহারিকা বেগম। সুখের মলিন মুখ দেখে বুকের ভিতরটা হুহু করে উঠলো।সে তার ভাগ্নিদের পেয়ে ভুলেই গেছিলো মেয়েটার কথা।সকালে এক বার ভেবেছিলো দেখে আসবে কিন্তু বন্যার একেক টা আবদার আর কথার জন্য ভুলেই গেছিলো।
নীহারিকা সুখের দিকে আসতে নিলেই সুখ বলে উঠে

—মামনি আমার একটু কাজ আছে আমি বাহীরে যাচ্ছি আসতে একটু দেরি হবে চিন্তা করিও না মামু কে বলে দিবো।

বলেই দুর্বল শরীর নিয়ে বেরিয়ে পড়লো সুখ। নীহারিকা বেগম চেয়েও থামাতে পারলেন না। বন্যা আরেকটু খাবার চাইতেই মনে পড়লো সুখ সকালে সামান্য সুপ খাওয়ার পরে আর কিছু খায়নি। নিজেকেই নিজের কাছে নিচু মনে হলো।সুখ তো ওকে মামনি বলে।মানে মা আর সে কি করে এমন টা করতে পারলো।

বন্যা কে খাবার বেরে দিলেও নিজের গলা দিয়ে আর খাবার নামলোনা। মেয়ে না খেয়ে বেরিয়ে গেলো সে কি ভাবে খাবে। তার গলা দিয়ে যে আর খাবার নামবেনা। না জানে অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথায় গেলো মেয়েটা চিন্তাই অস্থির হয়ে উঠলো নীহারিকার মন।

———-

নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়ায় আছে সুখ। ছোট সুখের নীড় তার এটা।তালা খুলতে যেয়েই দেখে দরজা খুলা অবাক হয় সে।ইয়াং ম্যান কি বাসাটা বিক্রি করে দিয়েছে কই তাকে তো বলেনি।দো মনা করে কলিং বেল না বাজিয়েই দরজা ধাক্কা দেয়।সাথে সাথে দরজাটা খুলে যায়। ভিতরের আসবাব পত্র আগের মতোই আছে।সুখ চমকায় এতোদিন বন্ধ থাকার পরেও একটা ধুলা অব্দি জমে নি।সুখ নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যায়।আর সেখানে যেতেই চমকে উঠলো। কারো তার বিছানার উপরেই আসাম করে শুয়ে আছে আহিয়ান।পায়ের উপর পা তুলে।

অভিমানে অজান্তেই বুকটা ভারি হয়ে আসে তার।

—আপনি আমার ঘরে কি করছেন ডা,,,, আহিয়ান ভাইয়া

আহিয়ান চোখ খুলে ধীরে নেমে আসে বিছানা থেকে শান্ত চাহুনী নিক্ষেপ করে এগিয়ে যায় সুখের দিকে আচমকায় সুখের গলা শুকিয়ে আসে।আপন মনেই তার পা পিছাতে শুরু করে

আহিয়ান সুখের কাছে এসে তার গালে আংগুল বুলায়

—ডাক্তার থেকে আহিয়ান ভাইয়ায়ায়ায়া। বাহ এতোটা উন্নতি ব্যাপার কি

হঠাৎ করে শক্ত করে চেপে ধরে সুখের গাল।সুখের প্রান যায় যায় অবস্থা।এত শক্ত করে চেপে ধরায় নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়না। কারন আহিয়ানের ক্রোধের সামনে তার এহেন শক্তি কিছুই না।চোখ বেয়ে গরিয়ে পড়ে অশ্রুকণা। ছেড়ে দেয় আহিয়ান।সুখ গালে হাত দেয়।যেনো চোয়াল টা ভেংগে গেছে।

—সাহস কি করে হলো তোর নিজেও রুম ছাড়ার।তোকে আসে কেউ বলবে আর তুই তোর অধিকার রেখে চলে যাবি।

—ওইটার উপর আমার অধিকার আসবে কেনো ওইটা আমার মামার বাসার তার উপরে আমার অধিকার নেয়

—ওইটা তোর শশুড় বাড়ি ও কথাটা ভুলে যাচ্ছিস নাকি

—সে হিসেবে তাহলে আপনার রুমে আমার অধিকার হওয়া উচিত সাথে আপনার উপরেও যেখানে এই দুইটার উপরেই আমার কোন অধিকার নেই সেখানে অন্য কিছুর উপরে অধিকার দেখায়ে কি করবো আমি।

আহিয়ান হাসে। তার হাসিতে সুখ এর বুকে ঝড় উঠে।

—তো আমার উপরে অধিকার চায় তোমার তাই নাকি ওয়াইফি

—আমার বাসা থেকে বের হোন

—আমার শশুড়বাড়ি এটা আর তার থেকে বড় কথা আমি তোমার মতো গাধা না যে যার তার কথায় নিজের অধিকার ছাড়ে দিবো

—হ্যা আমি গাধা আমি পারিনা জোড় করে ধরে রাখতে আর কেউ নিজ ইচ্ছায় কোন দিন আমার হয়ে থাকবেনা তা আমার বোঝা হয়ে গেছে দরকার নাই আমার কারো আমি একা খুব ভালো আছি

আহিয়ান সুখের কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের দিকে টেনে নেই

—কিন্তু আমি ভালো নেই আমার সুখ পরিকে থুয়ে কালকে নিজের যা অবস্থা করেছিলাম এক বার বুক কাপেনি নিজেকে কষ্ট দেওয়ার আগে।ইচ্ছা করছিলো অজ্ঞান অবস্থায় গলা টিপে দি।বাবা না আসলে সত্যি সত্যি হয়তো রাগের বসে মেরেই দিতাম

সুখ এতোক্ষন ছোটফোট করলেও এবার শান্ত হয়ে যায়।

—আমি মারা গেলে খুশি হবেন তাইনা

আহিয়ান কিছু না বলে সুখের ঠোঁট জোড়া দখল করে নেয়।

—————

বৃষ্টি বাগানে হেটে বেরাচ্ছিলো জায়গাটা তার বড্ড পছন্দের। এই বাগান দেখেই নিজের বাসাতেও একই রকম বাগান তৈরি করেছে সে।কিন্তু তবুও এই জায়গায় যা শান্তি মেলে সে শান্তি অন্য কোন জায়গায় পায়না

বৃষ্টির চোখ হঠাৎ করে আটকে যায় দূর দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলা রায়হানের দিকে। ফোন কথা বলছে ঠোঁটে লেগে আছে চমৎকার হাসি।এই হাসিটা বড্ড পছন্দের তার।রায়হান আগে বাহিরে পড়াশুনা করতো দেখে তার আর বৃষ্টির সাক্ষাৎ হয়েছে খুব কম কিন্তু বৃষ্টি রায়হানের খুটি নাটি সব তথ্যই জানে আলাদা এক অনূভুতি হয় রায়হানের আশেপাশে থাকলে কেন সে আগে না জানলেও এখন জানে।কিন্তু সে নিরুপায়।রায়হান যে কোন দিন ও তাকে তার মনের মাধুরিতে মিশাবে না সে জানে তবুও বেহ**** মন মানে কই

চলবে!!!

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ