#মনের_মাধুরিতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২১
,
,
,
,
সময় প্রবাহমান এটা থেমে থাকেনা কারোর জন্যেই। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ১ টা সপ্তাহ সবাই আবার নিজের গন্তব্য নিজের নীড়ে নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে।৫টা জোড়া যাদের এক হওয়ার কথা ছিলো তারা অর্ধেক জূরেই আবার আলাদা হয়ে গেছে।
আহিয়ান-সুখ
সুখ ঢাকাই ফিরেই আহিয়ানের হস্পিটালে ইন্টার্নি হিসেবে জয়েন করেছে।
পেশেন্ট নাম্বার ৪কে চেক করছে আহিয়ান আর তার পিছনেই দাঁড়িয়ে আছে ১২ জন ইন্টার্নি। সে ১২ জনের মাঝে সুখ এর ও অবস্থান রয়েছে।আহিয়ান সবাইকে বুঝাছে।কিন্তু সুখের কানে কোন কথায় প্রবেশ করছে কি না সন্দেহ। তার চোখ জোড়া আহিয়ানের ঠোঁটের পাশের তিল টার দিকে।
হঠাৎ জোড়ে ধমকে কেপে উঠে সবাই বিশেষ করে সুখ।সামনে তাকিয়েই দেখে আহিয়ান রাগি চোখে তার দিকেই তাকিয়ে আছে বাকি বাকি সবাই ও তার দিকে তাকিয়ে আছে সুখ কিছুটা হচ কচিয়ে যায় আহিয়ানের দিকে তাকিয়ে দেখে সে তার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে সুখের বিষয়টা বুঝতে কিছুটা দেরি হয় আহিয়ান তার থেকে ইনজেকশন চাচ্ছিল কিন্তু সুখ তখন আহিয়ান কে দেখতে ব্যস্ত ছিল যার কারণে ইনজেকশনটা না পেয়ে রেগে যায় আহিয়ান
সুখ দ্রুত নিজের হাতে থাকা ইঞ্জেকশন টা আহিয়ান কে দিয়ে দেয়।সবাই মুখ চেপে হাসছে।সবাই বেরিয়ে যেতে নিলেই আহিয়ান সুখ কে থামিয়ে দেয়।
—আমার কেবিনে আসুন মিস সুখ
সুখ মাথা নাড়ায় সাথে কিছুটা খারাপ ও লাগে লাগে হস্পিটালে বা বাসায় কেউ জানেনা তাদের বিয়ের বিষয়ে।আর হস্পিটালে তো একদম ফর্মাল ভাবে কথা বলে যা মৌটেও পছন্দ না তার।আর কেমন জেনো একটা দূরত্ব টের পাচ্ছে দুইজনার মাঝে
এইসব ভাবনার মাঝেই সুখ কেবিনে এসে প্রবেশ করতেই আহিয়ান এর কাঠকাঠ গলায় বলা কথা কানে আসে
—কোন প্রফেসর এর বা কারো কেবিনে প্রবেশ করতে হলে পার্মিশান নিতে হয় সেটাও কি আপনার জানা নেই মিস সুখ ।
অপমানে সারা শরীর রিরি করে উঠে সুখের। পুনরায় পার্মিশান নিয়েই প্রবেশ করে।গলা তার কাপছে প্রবল ভাবে।কষ্ট হচ্ছে কিন্তু দেখানোর সুযোগ অব্দিও নেই তার কাছে কেউ তাকে দেয়নি তাকে সে অনুমতি
। সুখ ভেতরে প্রবেশ করতেই আহিয়ান তাকে চেয়ারে বসতে বলে সে নিজেও সুখের সামনে একটা চেয়ার টেনে নেয় এবং সেটাই বসে পড়ে
—মিস সুখ আপনি যদি নিজের পড়াশোনায় কন্সেন্ট্রেট না করেন তাহলে আমি আপনাকে অন্য কোন ডাক্তারের আন্ডারে দিতে বাধ্য হব আপনি কি সেটা চাইছেন
— আমি এসব কিছু চাইছি না আমি আপনাকে চাইছি কেন করছেন এমন কি করেছি আমি সিলেট থেকে ফেরার পরে দেখছি আপনি আমাকে ইগনোর করছে কারণ জানতে পারি আমি কি পুতুল যে যখন ইচ্ছা দূরে সরিয়ে দেবেন নাকি এখন ভালো লাগছে না আমাকে(কান্না জড়ানো কন্ঠে আহিয়ানের সামনে এসে তার কলার চেপে ধরে)
—মিস সুখ এটা হসপিটাল ভুলে যাবেন না।(সুখ কে সরানোর চেষ্টা করে)
— আমি ভুলতে চাইনি আপনি আমাকে ভুলতে বাধ্য করছেন
সুখের চোখে স্পষ্ট পানি ছল ছল করছে যা আইয়ান সহ্য করতে পারেনা সে তার চেয়ার ঘুরিয়ে নেয়। সুখ সেখানেই বসে পরে নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে তার এই পুরুষ টা কি জানেনা সুখ অচল হয়ে পড়েছে তাকে ছাড়া সে সারা দুনিয়ার সাথে লড়তে পাড়বে তাদের সামনে নিজেকে মূর্তি হিসেবে দাড় করাতে পারবে কিন্তু এই মানুষ টার সামনে সেটা যে সম্ভব হয়না
—দেখুন মিস সুখ এটা কাজের জায়গা আপনার পড়াশোনা জায়গা এখানে পড়াশোনা করলেই ভালো হবে এই সবে আপনার পড়াশোনা ক্ষতি হচ্ছে আর আমি সেটা চাই না (নিজেকে সামলে নিয়ে)
—আপনি কি চান না চান সেটা আমি আজ অব্দি বুঝতে পারলাম না
(হুহু করে কেদে উঠে।আহিয়ান আর সহ্য করতে পারেনা)
আহিয়ান চেয়ার থেকে উঠে এসে সুখকে বুকে জড়িয়ে ধরে
—কেন বুঝছিস না আমি তোর ভালো চাই আমি চাই চাইনা তুই পড়াশোনা বাদ দিয়ে আমাতে মগ্ন হয়ে থাক সারাদিন তুই পড়াশুনাই কন্সান্ট্রেট করতে পারছিস না পড়া বাদ দিয়ে তোর সম্পূর্ন্য মনোযোগ আমার দিকে থাকছে এই ভাবে তোমার পড়াশুনার ক্ষতি হবে
—চাইনা আমি পড়াশুনা আপনি না থাকলে আমার কিছুতেই মন বসবেনা কথাটা কি আপনার অজানা ডাক্তার।আপনার সুখ পাখি আপনিতেই স্ট্রোং আপনি বিহীন না
আহিয়ান আরেকটু শক্ত করে নেয় তার হাতের বাধন
আরিয়ানের বুঝতে বাকি থাকে না যে তার সুখ পাখি তাকে ঠিক কতটা ভালোবেসে ফেলেছে তাকে ছাড়া তার চলবে না তাকে তার হয়ে তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে কিন্তু সামনের দিন আরও কঠিন হতে চলেছে সেটা ভাবতেই আহিয়ানের ভয় হচ্ছে যে তার সুখ পাখি কিভাবে সব হ্যান্ডেল করবে আই এন আর কিছু না ভেবে সুখকে জড়ায় ধরে তার কপালে ভালোবাসার পরশ একে দেয় সুখ ও পরম আবেশে আহিয়ান এর বুকে লেপ্টে থাকে
——-
ভার্সিটির বাহিরে পা রাখতে বৃষ্টি খেয়াল করে সাদা রঙের একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে বৃষ্টির বুঝতে বাকি থাকে না গাড়িটি কার বৃষ্টি গাড়িটিকে না দেখা করে সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতে নিলেই
সাথে সাথে গাড়িটি ঠিক তার সামনে এসে ব্রেক মারে বৃষ্টি ভয় পেয়ে কিছুটা দূরে সরে যায় সাথে সাথে গাড়ির ডোর ওপেন করে রায়হান বেরিয়ে আসে ফুল ফরমাল গেটাপে বৃষ্টির সাথে থাকা তার বান্ধবীরা হা করে চেয়ে থাকে রায়হানের প্রানে কারণ কালো সুটে রায়হানকে অনেকটাই আকর্ষণীয় লাগছে তা দেখে বৃষ্টি আরও রেগে যায় একে তো এতদিন পরে আসছে তার উপরও এমন ভাবে সেজেগুজে এসেছে যেন পাত্রী দেখতে যাচ্ছে
রায়হান সবাইকে উপেক্ষা করে বৃষ্টির সামনে এসে কান ধরে দাঁড়িয়ে পড়ে সবাই সেটা দেখে অবাক হয়ে যায় কিছু কিছু মেয়েরা তো হা করে তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে কারো কারণ বৃষ্টির সহজে কারো সাথে মিশে না সে একা থাকতেই বেশি পছন্দ করে সেখানে একটা ছেলে এভাবে এসে তার সামনে কান ধরে দাঁড়ায় যায় তাও বৃষ্টির জন্য। বৃষ্টি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়
—নীরবতা আমাকে মাফ করে দিও আমি এই কয়দিন ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম বাবার সাথে। যার কারণে তোমার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি সব কাজ পেন্ডিং হয়ে পড়েছিল এই কয়দিন শ্বাস নেওয়ারও সময় পাইনি যার কারণে তোমার সাথে কথা বা দেখা হয়ে ওঠেনি আজকে একটা ডিল ফাইনাল করে সাথে সাথে তোমার কাছে এসেছি প্লিজ নীরবতার রাগ করে থেকো না। (কিউট ফেস করে)
বৃষ্টি আর কিছু না বলে হাটা ধরে বৃষ্টি বুঝে কাজ ছিল তাই বলে যে একবারে তাকে ভুলে যেতে হবে তার কোন মানে আছে একটা মেসেজ তো অন্তত করতে পারতো দেখা না করুক একটা বার মেসেজ দিয়ে জানাতে তো পারতো যে সে ব্যস্ত থাকবে কিছুদিন যখন এইসব জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি তাহলে এখন কেন সরি বলতে আসছে তাকে
বৃষ্টিকে হাটা ধরতে দেখে রায়হান বৃষ্টির পিছে দৌড় দেয় আর বৃষ্টিকে কাঁধে তুলে গাড়িতে বসিয়ে দেয় বৃষ্টি হঠাৎ এহেন কাণ্ডে হচকচিয়ে যায় সে ভাবেনি রায়হান এমন কিছু একটা করবে রায়হান বৃষ্টিকে গাড়িতে বসানোর সাথে সাথে বৃষ্টি হাত-পা ছোড়াছুড়ি শুরু করে হাতের ইশারা দিয়ে বুঝায়
—আমাকে কেন নিয়ে এসেছেন আমাকে যেতে দিন আমি আপনার সাথে কোথাও যেতে চাই না
—তুমি যেতে চাও বা না চাও তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে রাগ করেছ রাগ না ভাঙ্গায় তোমার মুক্তি নেই।মনের নীরবতার রানীর মান ভাংগানোর দ্বায়িত্ব টা এই অধম নিজের কাধে নিয়েছে
—এটা কেমন জড়াজড়ি
—এটা রায়হানের জোরাজুরি সোনা বুঝবে না
কথাটা বলেই রায়হান বৃষ্টির ঠোঁট এ ঠোঁট ছোয়াই।
চলবে!
#মনের_মাধুরিতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ২২
,
,
,
,
রায়হান আর বৃষ্টি দাঁড়িয়ে আছে খোলা মাঠে।জায়গাটা শহর থেকে অনেকটাই দূরে। বৃষ্টি সারা মুখে খুশির ঝলক একবার এদিক তাকাছে তো আরেকবার অন্যদিকে চারিদিকের সাজানো যেনো তার মন ছুয়ে দিয়েছে। রায়হান খুব সুন্দর করে মাঠটাকে সাজিয়েছে নিজের মন অনুসারে আর সে সাজানোটা বৃষ্টির যে খুব পছন্দ হয়েছে সেটা তার মুখ দেখেই আন্দাজ করতে পেরেছে রায়হান।
বৃষ্টি মনোমুগ্ধকর হয়ে সাজানো টা দেখছে তার মন চাচ্ছে ছুটে গিয়ে এই প্রাকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের সাথে রায়হানের করা ডেকোরেশনের সাথে মিশে যেতে
হঠাৎ পিছন থেকে বৃষ্টি কে আলতো হাতে জড়িয়ে ধরে রায়হান।বৃষ্টি কেপে উঠে রায়হানের স্পর্শ পেয়ে এর আগে কোন দিন রায়হান বৃষ্টির কাছে আসেনি।রায়হান আলতো হাতে বৃষ্টির চুল সরিয়ে দিয়ে উমুক্ত কাধে ঠোঁট ছুয়ে সে অবস্থায় বলে উঠে
— পছন্দ হয়েছে ম্যাডাম
রায়হানের কন্ঠে আলাদাই ঘোর ছিলো
বৃষ্টি সাথে সাথেই মাথা নাড়াই প্রচণ্ড খুশির সাথে
রায়হান বৃষ্টির এহেন উত্তরে খুশি হয়ে যায় তার নীরবতার রানী পছন্দ হয়েছে তার কাজ এটা যে তার কাল সারারাত জেগে করা পরিশ্রম এর সফলতা। কাল অফিস থেকে রাত ১২টা নাগাদ বের হয়েই সে এখানে এসেছিলো সব কিছু গুছাতে করতে করতে ৫টা নাগাদ বেজে যায় সেখান থেকে আবার অফিসে যায়ে প্রেজেন্টেশন করে আবার ছুটে বৃষ্টির কলেজে।এতো এতো ক্লান্তি বৃষ্টির এই উচ্ছ্বাস এর ভরা হ্যা তেই মিটে গেলো।
—কখন করলেন এইসব আপনি না ব্যস্ত ছিলেন(ইশারার মাধ্যমে)
—ম্যাডামের গাল ফুলিয়েছি ম্যাডামকে তো একটু সারপ্রাইজ দেওয়া যায়। নাহলে এই অধম টার শ্বাস আটকে যাবে।তার নীরবতার অভিমানে
বৃষ্টিকে আরও অবাক করে দিয়ে আছে রায়হান বৃষ্টি কে ছেড়ে দিয়ে বৃষ্টির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল বৃষ্টির অবাক হয়ে চেয়ে রইল রায়হানের প্রানে সে ঠিক বুঝতে পারছে না রায়হান ঠিক কি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এইটুকু ঠিক ঠাওর করতে পেরেছে যে আজ তাদের জীবন নতুন মোর আনতে চলেছে।
—জানিনা কখন কিভাবে তোমার এই নীরবতা আমার মনকে গ্রাস করেছে যেদিন প্রথমে তোমাকে দেখেছিলাম ট্রেন প্লাটফর্মে সেদিন নিজের অজান্তে তাকিয়ে ছিলাম তোমার ওই মাধুর্যতাই পরিপূর্ণ আখিযুগল এর দিকে তোমার সেই অভিমানে ভরা আখি যুগোল এর দিকে অদ্ভুত এক মায়া কাজ করছিল তোমার মুখশ্রীতে সে মায়াতে আমি নিজেকে হারিয়েছি তোমার নীরবতা সাক্ষী হতে চায় তোমাকে আমার নীরবতা রানী বানাতে চায় এই কোলাহল এর পূর্ণ জীবিনের এমন একটা মানুষ চায় যে চুপচাপ আমার কথা শুনবে আমার একান্ত ব্যাক্তিগত নিরবতা বানাতে চায় তোমার সকল মনমুগ্ধকর চাহনি কারণ হতে চায় তোমার চোখের পানি নিবারণ হতে চায় দিবে আমাকে সেই সুযোগ আমার নীরবতা রানী নিশ্চুপতা বুঝার জন্য যখন সবকিছুতে ক্লান্ত হয়ে নীরবতা ভরা তোমার সে আঁখি যুগল দেখব আর তাতেই নিজেকে শান্ত করব দিবে আমাকে সেই সুযোগ মিশিয়ে নিবে আমাকে তোমার মনের মাধুরীতে
বৃষ্টির চোখ জোড়া থেকে অশ্রু থামছেনা না অশ্রু যেন আজকে শপথ করেছে তারা আজ সম্পূর্ণ ভাবে শেষ হয়ে যাবে। তারা আজ শেষবারের মতো ঝরে পড়বে আর কোনদিন এই চোখ থেকে অশ্রু গরাবে না গড়াতে দিবে না সেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধতাতেই আজকে বৃষ্টির অশ্রু গুলা ঝরে পরছে।
———-
নামিদামি রেস্টুরেন্টে বসে আছে রিসিকা তার সামনে স্যুট কোট পড়ে বসে আছে এক যুবোক।যুবোকটির দৃষ্টি রিসিকার দিকে থাকলেও রিসিকার দৃষ্টি পাশের টেবিলে বসে থাকা যুবতীর দিকে। যে বর্তমানে রাফির সাথে হেসে হেসে আলাপ করতে ব্যাস্ত।জিনিস টা মৌটেও সহ্য হচ্ছেনা রিসিকার রাফির এহেন অযথা হাসিতে সে বিরক্ত চরম লেভেলের বিরক্ত।কিন্তু তার চেয়ে দ্বিগুন বিরক্ত সে নিজের উপর।কেনো বার বার তাকে তাকাতে হবে পাশের টেবিলে তার সামনে বসা ছেলেটা কোন দিক দিয়ে কম না সব চেয়ে বড় কথা সামনে বসা ছেলেটা তার বাগদত্তা।
—রিসু আপনি ঠিক আছেন
হালকা মুচকি হেসে প্রশ্ন টা করে উঠে আয়মান।রিসিকা তাকায় সামনে থাকা ব্যাক্তিটির দিকে।তার এই মহূর্তে চিল্লায়ে বলতে ইচ্ছা করছে না আমি ঠিক নেই আমাকে আপনারা ঠিক থাকতে দিচ্ছেন না কোথাও একটা তীব্র গোরমাল চলছে কিন্তু আপনারা আমাকে সে গোলমাল ছুটাতে দিতে চাচ্ছেন না। তার এই মহূর্তে রাফিকে প্রয়োজন তার গালে সাপটে দুই চারটা থাপ্পড় দিয়ে জিজ্ঞেস করা প্রয়োজন কেনো করছিস এমন।কিন্তু নিজের সমস্ত বিরক্তি রাগ অসহায়ত্ব ঠেলে সেও স্মিত হেসে জবাব দেয়
—আমি ঠিক আছি মিস্টার আয়মান। আসলে আমার আজ আসা লাগবে কারন মেডিকেল এ আমার ওটি রয়েছে সেটা নিয়ে একটু ব্যাস্ততা আর কি
অনেক কষ্ট মিথ্যা একটা বাহানা সাজায় নিলো রিসিকা। তার এই মুহূর্তে এই দম বন্ধকর অবস্থা থেকে রেহাই পেতেই হবে। নাহলে যেকোন মহূর্তে সে লঙ্কা কান্ড বাধিয়ে ফেলবে বিনা অনুমতিতে
—আমি কি আপনাকে পৌছে দিবো যদি মাইন্ড না করেন এই ভাবে একা আপনাকে ছাড়া উচিৎ নয়
রিসিকা তাকায়।তার এই হাবাগোবা সুন্দর ছেলেটাকে এই মহূর্তে গিলে খাইতে মন চাচ্ছে।যার কাছ থেকে নিস্তার পেতে আয়োজন সে নাকি তাকে সাথে নিয়ে যাবে এইটা আদৌ সম্ভব উহু সম্ভব হলেও কাজটা করবেনা রিসিকা কোনমতেই না । এতে যদি তার কারাদণ্ড হয় তবুও রাজি।
—আমি একা চলতেই বেশি পছন্দ করি মিস্টার আয়মান। আশা করি আপনি বুঝবেন
আয়মান কিছু বলেনা দেড় বছর হলো চিনে সে এই মেয়েটাকে। এখনো স্বভাব নিম্ন মানের বদলে যায়নি এই আত্নবিশ্বাস দেখেই তো মেয়েটার প্রেমে পড়েছিলো সে।আর সে প্রেম কেই মর্যদা দিতেই ঘটা করে আয়োজন করে পারিবারিক ভাবে বাগদত্তা বানিয়ে নেয় সে জানে এই মেয়েটার মনে এতোদিনেও তার জন্য বিন্দু মাত্র অনুভূতি জাগ্রত হয়নি তবুও আফসোস নেই এক না এক দিন হয়তো সেটাও হয়ে যাবে।আর তার ভালোবাসা যথেষ্ট এই বিয়েটাকে সম্পূর্ণ ভাবে টিকিয়ে রাখতে
রিসিকা বেরিয়ে যেতেই রাফির সামনে থাকা মেয়েটিও চলে যায়।আসলে মেয়েটা ছিলো রাফির সাজানো পাত্রী।সে রিসিকাকে একা ছাড়তে চায়নি।আর এটাও দেখতে চাচ্ছিলো রিসিকার রিয়েকশান কি হয় তার যা বুঝার বুঝে গেছে এখন শুধু সঠিক সময়ের পালা।।
,
,
রিহাব কফির মগ নিয়ে উপরে নিজের রুমের দিকে পা বারাতে নিলেই কেউ পিছন থেকে তার গেঞ্জি আকড়ে ধরে।রিহাব পিছনে তাকিয়ে দেখে বন্যা দাঁড়িয়ে আছে চোখ মুখে রাগ স্পষ্ট
—কি সমস্যা তোর
—আওয়াজ নিচে। রিহাবের সাথে কেউ উচু গলায় কথা বলুক সেটা আমার পছন্দ না মাথায় রাখ
—কেন মেরেছিস তুই ওদের তাও এমন বাযে ভাবে ওদের মধ্যে একজন মরতে অব্দি চলেছে বুঝতে পারছিস তুই।ঘুনক্ষরে কেউ যদি টের পায় কি হবে ভাবতে পারছিস।
—নাহ এতো ভাবা ভাবির প্রয়োজন তোর পরে আমার না। ওরা ভুল করেছে শাস্তি দিয়েছি ব্যাস।
—শাস্তি দেওয়ার তুই কে আইন আছে।
—আমার কলিজার শরীরে কেউ স্পর্শ করবে আর আমি তাকে এতো সহজে ছাড়ে দিবো ভাবলি কি করে। এখন বের হো আমার সামনে থেকে ওদের ওকিলতি করে ভুল করলি শাস্তি তোকে পেতেই হবে যা
কথাটা বলেই রিহাব চলে যায় আর বন্যা অবাক নয়নে তাকায় থাকে।এই ছেলেটার সাইকোনেস এ তার ভয় হয়।
সামান্য টোন করায় বন্যার ভার্সিটির বকাটে ছেলেদের আচ্ছা মতো পিটিয়ে সিটি হস্পিটালে এডমিট করিয়ে দিয়েছে জনাব কিন্তু তাতে বন্যার সমস্যা ছিলোনা বন্যার সমস্যা তাদের এতো বাজে ভাবে মারার কি প্রয়োজন ছিলো,
চলবে!