#মনের_মাধুরিতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৭
,
,
,
,
আহিয়ান সুখের সাথে সবার পরিচয় করায় দিলো।
—এরা হলো আরিফ,রাফি,আয়াত,রিসিকা। আমার মতো এরাও ডাক্তার।শুধু রিহাব বিজনেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশুনা করছে।এবার মাস্টার্স কাম্পিলিট হয়ে যাবে।রিহাব হোস্টেলেই থাকে তার নাকি সেখানেই ভালো লাগে।
এর মধ্যে রাফি বলে উঠলো
—আমাদের পরিচয় টা তো দিলি এবার এই সুন্দরী ললনার পরিচয় টাও দে।
রাফির কথা শেষ হওয়ার আগেই রিসিকা রাফির মাথায় জোড়ে একটা থাপ্পড় দেয়।রাফি আহ বলে উঠে
—এই পেত্নি আমাকে মারিস কেন তুই খালি
—তুই কেন যেখানে সেখানে লু**** শুরু করিস
—কেনো গো প্রিয়া আমাকে অন্যকারো সাথে দেখলে তোমার বুঝি জ্বলে।
—আমার বয়েই গেছে তোর মতো বাদরের জন্য জ্বলার।
—হ্যা গো ললনা বুঝি বুঝি আমি কি আর খাই সুজি
—কচু বুঝিস ধুর।
কথাটা বলেই যেতে নিলে আরিফ এসে ওর হাত ধরে নেয়
—তোরা দুইটা থামবি।কি শুরু করেছিস জায়গা দেখিস না কিছু দেখিস না শুরু করে দিস
—ওই শুরু করে আমি না (রিসিকা)
—এহ আমার তো কাজ নাই আর (রাফি)
আহিয়ান এর ধমকে এবার দুইজনেই চুপ হয়ে যায়।সুখ বাদে বাকি গুলো এমন ভাবে ইঞ্জয় করছিলো যেনো তারা অভ্যস্ত এইসবে।
—এই হলো ইনায়াত রহমান সুখ।আমার ফুপির মেয়ে।
সবাই সুখের সাথে পরিচয় হয়ে নিলো রিসিকা আর আয়াত সুখ কে এমন ভাবে জড়ায় ধরলো যেনো সে তাদের কতো চেনা।কিছু সময়ের মাঝেই ট্রেনের বাশি বেজে উঠতেই সবাই উঠে পড়লো।
—আহিয়ান এর পাশে সুখ বসতে যাবে তার আগেই বন্যা তাকে ধাক্কা দিয়ে বসে পড়লো।সবাই দেখলো কিন্তু কিছু বলতে পারলোনা আহিয়ান এর চুপ থাকায়।সুখ আহিয়ানের চুপ থাকায় কষ্ট পেলো সে চাইলেই এই মহূর্তে প্রতিবাদ করতে পারত কিন্তু করলোনা কেন আহিয়ান পারতোনা বলতে এই জায়গাটা আমার সুখ পাখির কেনো বললোনা।
সুখ কে মুখ কালো করে দাঁড়ায় থাকতে দেখে রিহাব বলে উঠলো
—লিটেল পুতুল এখানে জানালার পাশে এসে বসো।
রিহাব সরে জানালার সাইড টা খালি করে দিলো।সুখ সেখানেই বসে পড়লো একদম আহিয়ান এর সামনে।রিসিকা আয়াত এর পাশে বসতে নিলে আরিফ বসে পড়ে । রিসিকা আর কি করবে বসে পড়লো রাফির পাশে।এদিকে বৃষ্টির না চাইতেও বসতে হলো রায়হানের পাশে। সে চাই রায়হানের থেকে দূরে দূরে থাকতে কারন আজকাল অনুভূতি গুলো আজকাল কেমন বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে।নিজের অজান্তেই রায়হানের চোখে নিজের জন্য ভালোবাসা খুজতে শুরু করেছে সে।
—কেন এমন হচ্ছে রায়হান বলতে পারেন আমাকে আমি কেনো স্বার্থপর হয়ে পড়ছি যতো আপনার থেকে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করছি ঠিক ততোটাই আপনার কাছে চলে আসছি কেনো কেনো কেনো।এতোদিন তো দিব্বি ছিলাম আপনাকে ছাড়া।একনজর দূর থেকে দেখলেই খুশি হয়ে যেতাম তাহলে এখন কেনো বার বার আপনার ওই মুখ দেখার ইচ্ছা যাগে কেনো আপনার বুকে মাথা রাখার ইচ্ছাটা দিন দিন প্রবল হচ্ছে
বৃষ্টির ভাবনার মাঝেই হঠাৎ করে নিজের কানের কাছে কারো ঠোঁটের স্পর্শ পেতেই কেপে আশে পাশে তাকাতে থাকে।হঠাৎ কানের কাছে স্লো ভয়েজ পেতেই কেপে উঠে
—কি ভাবো গো সুন্দরী।আমাকে নিয়ে এতো গভীর ভাবনা ভাবতে হবেনা গভীর ভাবনায় তলিয়ে যাবে গো সুন্দরী।
বৃষ্টি পাশে থাকা রায়হানের দিকে তাকাতেই দেখলো রায়হান কেমন ঘোর লাগানো চোখে তাকায় আছে তার দিকে।
_____
সুখ একমনে চেয়ে আছে জানালার বাহিরের দৃশ্যর দিকে।ভুলেও আশেপাশে তাকাছেনা যেনো চোখ অন্যদিকে দিলেই তাকে চরম শাস্তি দেওয়া হবে।আহিয়ান সুখের অভিমানে ভরা মুখ দেখে হাসে।
—সুখ পাখি এইটুকুতেই এই অবস্থা এখনো শাস্তি বাকী অনেক।আমিই কাছে টানবো আমিই দূরে সরাবো।আমিই কষ্ট দিবো আবার আমিই কষ্টের ঔষধ হয়ে কাজ করবো সব কিছুই হবে তোমার আমাকে ঘিরে।
মনে মনে কথা গুলো বলেই সিটে হেলান দিয়ে বসলো।জুতো থেকে পা বের করে সুখের পায়ে স্লাইড করতে শুরু করলো।কেপে উঠলো সুখ পা সরাতে চাইলেই আরেক পা দিয়ে আকড়ে ধরে।সুখ না পারছে সহ্য করতে না পারছে প্রকাশ করতে।
———-
রাত প্রায় ১২টা।ট্রেনের বেশির ভাগ পেসেঞ্জার ঘুমিয়ে গেছে এমনকি আহিয়ানের বুকড করা বগিতে যারা আছে সবাই।শুধু জেগে রয়েছে সুখ।এরই মাঝে ট্রেন একটা স্টেশনে এসে থেমে গেলো।এখানে কিছু যাত্রী নেমে যাবে তারপর আবার ট্রেন চলতে শুরু করবে।হঠাৎ সুখের হাতে টান পড়াতে অবাক হয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহিয়ান সুখের হাত ধরে বেরিয়ে এলো।একটা লোক এসে তার হাতে ছোট একটা ব্যাগ ধরায় দিতেই তাকে ধন্যবাদ জানায়ে কিছু টাকা হাতে ধরায়ে বিদায় দিলো
—আরে হচ্ছে টা কি এইভাবে বের হয়ে আসার কোন মানে হয় ট্রেন ছেড়ে দিবে তো
—হুশ একটাও কথা না। বউ কে নিয়ে ট্রেনে যাচ্ছি রোমান্স ছাড়া যাবো নাকি
—কিসের বউ আমি না আপনার বোন হয় ভাইয়া।বোন কে এসব বলতে লজ্জা করেনা ভাইয়া।এটা উচিৎ না ভাইয়া।ভাইয়া ট্রেন ছেড়ে দিবে চলুন ভাইয়া
—এই মেয়ে চুপ এক বাক্যতে কইবার ভাইয়া ডাকা লাগে দিবো থাপ্পড়
—কেন কেন আমি না আপনার বোন আপনি নিজেই বলেছেন ভাইয়া। আপনি বোন হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন আর আমি ভাইয়া বললেই দোষ এটা কেমন কথা ভাইয়া
আহিয়ান এর ভ্রু জড়া কুচকে গেলো।এতোবার ভাই ডাকার কারন কি তার মাথায় ঢুকছেনা
—আমি কখন বললাম তুমি আমার বোন
—কেন সবাইকে তো বোন হিসেবেই পরিচয় দিলেন
—আমি বোন ওয়ার্ড ইউজ করেছি একবার ও
—ফুপির মেয়ে মানেই তো বোন
—আমি তো আর বোন বলি নাই আমি বলেছি ফুপির মেয়ে কেন তুমি আমার ফুপির মেয়ে না
সুখ বিরক্ত হয়ে যায়। এই ছেলের টার সাথে কথাই পারবেনা সে। সুখ বিরক্ত হয়ে ট্রেনের দিকে যেতেই নিলেই ট্রেন চালু করার বাশি দিয়ে দেয়। সুখ উঠতে যাবে তার আগেই আহিয়ান সুখের হাত ধরে নেই। সুখ হাজার চেষ্টা করেও হাত ছাড়াতে সম্ভব হয়না।
—আরে আরে ট্রেন চলে গেলোত। ছাড়ুন আমাকে।
সুখের হাজার চেষ্টার পরেও আহিয়ান এর হাত কে নিজেকে নিস্তার করাতে পারলোনা।অন্ধকার রাতে খোলা আকাশের নিচে আহিয়ান নিজের বাহুতে জড়ায় নিলো সুখকে।সুখ এবার ছোটফোট করা বন্ধ করে আহিয়ান এর বুকে পরে রইলো কিছু ক্ষন পরেই ফুপিয়ে উঠলো।
—কেন ওই বন্যা আপনার পাশে বসলো কেন আপনি কিছু বললেন না কেনো সে আপনার বাহু ছুয়ে বসে পড়লো
—কেন প্রতিবাদ করলেনা কেন সে তোমাকে ধাক্কা দিলো কেনো তুমি ওকে কিছু বললা না কেনো সে তোমার ডাক্তারের পাশে বসার সাহস পায়।আমি তো এই নিশ্চুপ অবলার অন্যের উপর ডিপেন্ডেড মেয়েকে চায়নি তাহলে।সে তো নিজের লড়াই নিজে করতে পারে তাহলে এবার কিভাবে তুমি হেরে যাচ্ছো
—কারন আমি লড়াই করতে করতে এলে গেছি আমি পারছিনা আর লড়াই করতে আমি কারো ছায়া চায় আমার ব্যাক্তিগত আপনার ছায়া যে আমাকে নিজের আড়ালে রাখবে যার হাতে নিজেকে সুরক্ষিত পাবো যার পাশে আমাকে নিজের জন্য লড়তে হবেনা বাবার ছায়া পায়নি এতো বড় পৃথিবীতে সবার মতো আমার ছায়া ছিলোনা কিন্তু এবার আমি ছায়া চায় বাবার পায়নি কিন্তু স্বামির ছায়া চায়।আমি আমার বেলায় আপনার উপর ডিপেন্ডেড হতে চায়
আহিয়ান কিছুনা বলে নিজের বুকে শক্ত করে আবদ্ধ করে রাখলো সুখ কে।
চলবে!
#মনের_মাধরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৮
,
,
,
,
পরের ট্রেন আসতেই আহিয়ান সুখকে নিয়ে উঠে পড়লো।টিসির সাথে কথা বলে একটা।কেবিন বুক করে নিলো সম্পূর্ণ টা।
—কাউকে তো না বলে চলে আসলাম সবাই চিন্তা করবেনা
—সেটার চিন্তা করা লাগবেনা ওয়াইফি আমি সব সামলে নিবো তুমি কিছু খাবা।
সুখ মাথা দুলিয়ে না করে দিলো।হঠাৎ সুখের নজর যায় আহিয়ানের।ঠোঁটের কোনায়।
—আপনার ঠোঁট কেটে গেলো কি করে।
আহিয়ান ঠোঁটে হাত দিয়ে সামান্য ব্যাথা পাইলো।মনে পড়লো কাল ভোরের কথা। ঘুমন্ত সুখের ঠোঁটের দিকে তাকাতেই পুরো শরীরে অদ্ভুদ এক।ঝাকুনি দিয়ে উঠলো আলতো করে চুমু খেতে সুখের ঠোঁটে স্পর্শ করতেই সুখ ঘুমের ঘোরেই কামড় বসায় দেয়।আহিয়ান সরে আসে।ঠোঁটে হাত দিয়েই হেসে উঠে সুখের কপালে চুমু খেয়ে সরে যায়।
—কি হলো বললেন না যে
—কিছুনা একটা ভ্যাম্পায়ার কুইন কামড় দিয়েছিলো
—কিহ
—প্যাক্টিকালি বুঝায়
সুখ আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহিয়ান সুখকে নিজের সাথে চেপে ধরে ঠোঁট জোড়া আকড়ে ধরে।
,
,
,
বৃষ্টির ঘুম ভাংগতেই নিজেকে আবিষ্কার করে কারো হাতের দৃঢ় বন্ধনে।চোখ তুলে তাকাতেই নজর যায় রায়হানের ঘুমন্ত মুখের দিকে।বুকের বাম পাশটা যেনো প্রশান্তিতে ভরে যায়।এতো ভালো লাগা কেন এই মুখে।বৃষ্টির অনেকদিনের ইচ্ছা ছিলো রায়হানের ঘুমন্ত মুখটা দেখার। ঘুম জোড়ানো কন্ঠে তার নাম শুনার।এক ইচ্ছা তো পূরণ হয়ে গেলো কিন্তু দ্বিতীয় ইচ্ছাটা যে সর্বদা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে ওই সেটা জানে কিন্তু মন যে আশা ছাড়েনা এক।শতাংশ যদি চান্স থাকে সে সেটাও আকড়ে ধরতে চায়।
আনমনে নিজের মুখটা তুলে রায়হানের কপালে ছুয়ে দেয়।ঘুমের মাঝেই রায়হানের হাতের বাধন টা আরও শক্ত হয়ে উঠে।বৃষ্টি নিজের কাজে নিজেই লজ্জিত হয়।
—আজ যে কাজটা আপনার অজান্তে করলাম সে কাজ কোনোদিন ও আপনার সজ্ঞানে করতে পারবোনা।
বৃষ্টি নিচে পড়ে থাকা চাদর টা সুন্দর করে তুলে দিলো দুইজনার শরীরে।সারারাত সজ্ঞানে থেকেই পার করে দেওয়ার সিধান্ত নিয়েই তাকিয়ে রইলো রায়হানের দিকে।
—আজকের রাতটা নাহয় নির্ঘুম কাটুক এই জৎস্না রাতে নাহয় আপনার সৌন্দর্যকে দেখেই পার করা হোক।আর কোন দিন এই সুযোগ হোক না হোক।
রাতটা যে একাই বৃষ্টি নির্ঘুম কাটাচ্ছেনা। বরং তার সাথে আরও একজন কাটাছে আরও একজনার চোখে ঘুম নেই বরং চোখে রয়েছে প্রিয় মানুষটার ঘৃণা সহ্য না করতে পারার বেদনা। প্রিয় মানুষ টাকে এতো সময় বাদে দেখার অফুরন্ত সুখ।এই মিশ্র অনুভূতির কি নাম দিবে যানে না রিহাব শুধু জানে সামনে বসে থাকা ভীষন স্বার্থপর নারীকে তার প্রয়োজন ভীষন ভাবে প্রয়োজন।কিন্তু এই মেয়েটা কি বুঝে।উহু বুঝেনা
—কেন রে বন্যা। আমার ধানীলংকা নাহয়ে কেনো আহিয়ান ভাইয়ের হতে চাস।কেনো এই আমিটাকে তোর সহ্য হয়না।তোকে যে ভীষন ভালোবাসি বুঝবিনা তুই। আমার প্রকাশিত ভালোবাসাটা কি কোন দিন তোর সামনে মর্যাদা পাবেনা।।।
———
ভোরের আলো চোখে পড়তেই সবার ঘুম ভেংগে যায়। কিন্তু সবার মাঝে আহিয়ান আর সুখকে না দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়
—এই আহিয়ান আর সুখ সকাল সকাল গেলো কথায়(রাফি)
—হয়তো সুখকে নিয়ে ওয়াসরুমে গেছে।(আয়াত)
—হুম তাই হবে সবাই ফ্রেশ হয়ে নেও। আর কিছুক্ষন বাদেই আমরা গন্তব্যতে পৌছে যাবো(রায়হান)
—হুম ঠিক বলেছে ভাই সবাই ফ্রেশ হয়ে নেও (রিহাব)
রিহাব কথাটা বলেই অন্যদিকে চলে গেলো।বন্যা একবার চেক করতে গেলো ওয়াসরুমে যে।সত্যিকি তারা সেখানে আছে।বন্যা ওয়াসরুমের রাস্তাই যেতেই দেখে ট্রেনের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে রিহাব সিগারেট এর এক একটা টান নিজের মাঝে প্রবেশ করাছে। নির্বিঘ্নে যেনো এই সিগারেট তার নিত্য দিনের সাথী
—বাহ আগে তো শুধু গুন্ডা আর লম্পট ছিলি এখন তো দেখি নেশাখোর শব্দটাও তোর উপর ফিট বসে
তাচ্ছিল্যের সাথে বলা কথা রিহাবের কানে।যেতেই সে উল্টে থাকা অবস্থায় হাসে। সে জানে তাকে বলা কথাটা বন্যা ছাড়া কেউ বলতে পারবেনা কারো এতো সাহস নাই রিহাব চৌধুরী কে উচু গলায় বা নিচু করে কথা বলবে
—তুই কোনদিন বুঝি আমাকে ভালো ভেবেছিস
—ভালোভাবার মতো কোন কাজ কোন দিন করেছিস বলে মনে হয়না আমার
—তাই নাকি
কথাটা বলেই সিগারেট ছুড়ে ফেলে দিলো। বন্যার দিকে ঘুরে বন্যাকে দরজার সাথে চেপে ধরলো
—তো এই গুন্ডা লম্পট এর লম্পট গিরি দেখাই দি কি বলিস
বন্যা ঠাস করে রিহাব এর গালে থাপ্পড় বসায় দেয়। রিহাবের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠে।কিন্তু চোখ জোড়া রক্তিম হয়ে আছে।
—তোর এই সব কথায় বাকিরা ভয় পেলেও এই বন্যা ভয় পায়না কারন এই বন্যার সাহস আছে সব কিছু ডুবিয়ে নিয়ে যাওয়ার
—আর এই রিহাবের সাহস আছে তোর মতো দশটা বন্যাকে নিশ্বেস করে দেওয়ার।কিন্তু কি জানিস তোর এই ডাগোর চোখে নিজের জন্য ভালোবাসা দেখার ইচ্ছাটা তীব্র।যেদিন এই চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখবো সেদিন তোকে মরণ তৃষ্ণাই ভুগাবো।এই যে অহংকারে তোর চোখ মাটিতে নামে না এই চোখ বেয়ে সব অহংকার অশ্রু হিসেবে ঝড়াবো আমি
—সেটা কখনো সম্ভব না রিহাব চৌধুরী এই বন্যা শুধু আহিয়ানের। আহিয়ানেই এই শুরু আহিয়ানেই সমাপ্ত।
—এই বন্যা শুধু আমার আর সেটা তোর জন্মের আগেই আমি ঠিক করে দিয়েছি আর জন্মের হওয়ার পরে তাতে সিল মোহর ও মেরে দিয়েছি।বিশ্বাস না হলে নিজের হাতের উপরের ক্ষতটার দিকে তাকাস।যেখানে আমার নাম লিখে দিয়েছিলাম সময়ের সাথে সেটা গায়েব হয়ে গেলেও এখনো সেটার দাগ স্পষ্ট
কথাটা বলেই রিহাব সেখান থেকে চলে গেলো।বন্যা তাকায় রইলো নিজের কবজির দিকে।আসলেই সেখানে দাগ রয়েছে।অনেক চেষ্টা করেছে এই দাগ মিটানোর কতো ঔষধ কতো কিছু কিন্তু দাগটা নাছড়বান্দা।
বন্যার মাথা থেকে বেরিয়ে গেলো আহিয়ান আর সুখের কথাটা। তার মস্তিষ্কে বিধে গেলো রিহাবের বলা কথাগুলো।এটা নতুন না রিহাবের সাথে দেখা হলেই রিহাব তার সাথে এই ভাবেই ব্যবহার করে। তাকে কষ্ট দেওয়াটা তার প্রশান্তি সে জানে।
,
,
,
কিছুক্ষনের মাঝেই সবাই বুঝে যায় সুখ আর আহিয়ান গায়েব কিন্তু চলন্ত ট্রেনে খুজবে কিভাবে।
—আরে গাধারা ফোন দিলেই তো হয়(রিসিকা)
রিসিকার কথায় সবাই নিজেদের গালি দেয়। এই যুগে তাদের মাথাথেকে বিষয়টা বেরিয়েই গেছিলো
—–
সুখের গলায় মুখ গুজে আরামে ঘুমাচ্ছিলো আহিয়ান ফোনের শব্দে ঘুম ভেংগে গেলো।চোখ খুলে ফোন কানে ধরে সুখের গলাই মুখ গুজেই হ্যালো বলতেই কেপে উঠলো সুখ খামচে ধরলো আহিয়ানের চুল।আহিয়ান হাসলো।কল কেটে।রায়হানের নাম্বারে ম্যাসেজ পাঠায় দিলো
“আমরা ঠিক আছি চিন্তা করিস না। সিলেটে পৌঁছে সব জানাবো”
—এই বউ সকাল সকাল বুঝি আমার চুল গুলো ছিড়ার সখ হয়েছে
—উম ঘুমাতে দেন।(ঘুম জড়ানো কন্ঠে)
আহিয়ান আর নিজেকে না আটকায়ে সুখের ঠোঁট জোড়া আকড়ে ধরলো।ঘুমের মাঝেই আহিয়ানের স্পর্শ গুলোকে অনুভব করতে শুরু করলো সুখ।
,
,
,
ট্রেন থামতেই নেমে পড়লো আহিয়ান আর সুখ।তাদের এখান থেকে সিলেটের বাগান বাসায় পৌছাতে এখনো সময় লাগবে ৪ঘন্টা।ওদিকে সবাই ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে বাগান বাড়িতে।
রিসিকা ফোন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাগানে।অনবরত রিং বেজে চলছে ফোনে। স্ক্রীনে স্পষ্ট নাম ভেসে উঠছে “অনুভব”।
—কি রে কল ধর তোর হবু হাপপেন্ট থুক্কু হাসবেন্ড তোরে কতো মিস করছে দেখ।
হঠাৎ কারো গলা পেয়ে পিছন ফিরে তাকাতেই রাফি কে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।রাফির ঠোঁটে হাসি। কিন্তু রিসিকার চোখে অসহায়ত্ব।।
চলবে!