মনের অরণ্যে এলে তুমি পর্ব-০৯

0
1179

#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৯ ( প্রথমাংশ )

” মামি! মামা তোমাকে ডাকছে। এখন নাকি বেড়োবে। ”

ইনায়া এসে পল্লবীকে ডাক দিলো। স্বামীর প্রসঙ্গ উঠতেই পুরনো কথা অসম্পূর্ণ রইলো। ননদের পানে একপলক তাকিয়ে স্টাডি রুম থেকে প্রস্থান করলেন পল্লবী। মালিহা তপ্ত শ্বাস ফেলে ইনায়ার সাথে লিভিং রুমে অগ্রসর হতে লাগলেন। ভাই ও ভাবীকে বিদায় জানানোর জন্য।
.

ঘোর অমানিশায় ছেয়ে ধরিত্রী। চন্দ্রিমা লুকিয়ে মেঘের অন্তরালে। শীতল পবন বইছে চারিদিকে। বৈরী আবহাওয়া। বৃষ্টি হতে পারে। লিভিং রুমের সোফায় বসে মেয়েটি। আনমনে অস্থিরতা অনুভব করছে। ঘড়ির কাঁটা তখন দশের কাছাকাছি। বাহ্যিক বৈরী ভাব তার অন্তরেও প্রভাব সৃষ্টি করছে। বারংবার দৃষ্টি চলে যাচ্ছে প্রবেশদ্বারে। অপেক্ষায় একজনের। মালিহা ওয়াটার বটল হাতে সিঁড়ি বেয়ে নামছিলেন। হঠাৎ পুত্রবধূকে লক্ষ্য করে ঈষৎ চমকালেন! হৃদি একসময়ে এখানে! পরক্ষণে বিষয়টি অনুধাবন হতে তৃপ্তিময় ঝলক পরিলক্ষিত হলো চেহারায়। পুত্রের অপেক্ষায় পুত্রবধূ। মধুরতম মুহূর্ত! মুচকি হেসে উনি নেমে এলেন। এগিয়ে গেলেন হৃদির কাছে।

” কি রে মা! তুই এখানে? ”

বুঝেও অবুঝের মতো প্রশ্ন করলেন উনি। আকস্মিক ওনার কণ্ঠস্বরে হকচকিয়ে গেল মেয়েটি। তড়িঘড়ি করে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।

” ম্ মা! ”

” কত রাত হয়েছে। এখনো জেগে আছিস কেন মা? যা ঘুমিয়ে পড়। ”

হৃদি আমতা আমতা করে দরজার পানে দু’বার তাকালো। অতঃপর মায়ের কাছে সত্য ই বললো,

” মা তোমার ছেলে তো এখনো এলো না। বাহিরে জোরে বাতাস বইছে। আ আবহাওয়া ভালো না। ”

উনি প্রসন্ন হলেন এহেন কথায়। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

” চিন্তা করিস না মা‌। আমার ছেলেটা এরকম ই। দেশসেবাই ওর সমস্ত ধ্যান জ্ঞান। বাড়ি ফেরার কথা বোধহয় মনেই থাকে না। তুই রুমে যা। ও ঠিক সময়মতো চলে আসবে। ”

কক্ষে ফেরার প্রস্তাব ঠিক মনমতো হলো না। তাই দ্বিমত পোষণ করলো হৃদি,

” সমস্যা নেই মা‌। আমি এখানেই আছি। ঘুম আসছে না। তুমি বরং যাও। বিশ্রাম নাও। উনি এ-ই চলে আসবেন। ”

মালিহা বুঝতে পারলেন স্বামীকে না দেখা অবধি এ মেয়ে প্রস্থান করবে না। তাই উনিও আর বিরক্ত করলেন না।

” ঠিক আছে। আমি যাচ্ছি। বেশি রাত করিস না কিন্তু। কেমন? ”

” হুম। তুমি এবার তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ো। বয়স হচ্ছে তো। বেশি বেশি বিশ্রাম দরকার। ”

মালিহা হেসে ওর গাল টিপে দিলেন।

” ও রে পাকা মেয়ে রে! মা’কে এত তাড়াতাড়ি বুড়ি বানিয়ে দিচ্ছিস? ”

দাঁত বের করে হাসলো হৃদি। সে হাসিতে সংক্রমিত হয়ে উনিও হাসলেন।

” আচ্ছা আচ্ছা। আমি যাচ্ছি। ইরু বোধহয় ফিরে খাবে না। তাই বেশি দেরি করিস না। তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়িস। রাত জাগা বাজে অভ্যাস। ”

মাথা নাড়ল মেয়েটি। কথার ভীড়ে ‘ ইরু ‘ শব্দটি ঠিক খেয়াল করলো না। অন্যথায়..

মালিহা ওয়াটার বটল পূর্ণ করে নিজ কক্ষের উদ্দেশ্যে ধাবিত হলেন। লিভিং রুমে একাকী রয়ে গেল হৃদি। বিড়বিড় করতে করতে মেয়েটা সোফায় বসে পড়লো,

” কত রাত হয়ে গেল। উনি এখনো বাহিরে করছেন টা কি? বাড়ি বাড়ি নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন নাকি পতাকা উত্তোলন করছেন? যত্তসব দরবার। ”

বিরক্ত বোধ হচ্ছে। তবুও সেথা হতে যাচ্ছে না। ওকে তো কেউ থাকতে বলেনি। নিজে থেকে স্বেচ্ছায় থাকছে আবার বিরক্ত বোধও হচ্ছে। এ কেমন দ্বৈত জ্বা লা! সহসা এ জ্ব’লন সমাপ্ত হলো। বেজে উঠলো কলিংবেল। উচ্ছ্বসিত হয়ে দ্রুত পায়ে মূল দ্বারের পানে অগ্রসর হলো হৃদি। বিলম্ব না করে দ্বার উন্মুক্ত করলো। অবশেষে দেখা মিললো একান্ত মানবের। ক্লান্ত শ্রান্ত দেহে দাঁড়িয়ে মানুষটি। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ওকে দেখে ঈষৎ চমকিত! সে চমকানো ভাব চোখেমুখে ফুটে উঠেছে স্পষ্ট রূপে। হৃদি আলতো হেসে বলল,

” হাই! দাঁড়িয়ে কেন? ভেতরে আসুন। ”

দৃষ্টি সরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে করতে সালাম দিলো ইরহাম।

” আসসালামু আলাইকুম।‌ ”

স্বল্প অপ্রস্তুত হয়ে সালামের উত্তর দিলো মেয়েটি,

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। ”

লিভিং রুম এরিয়া ত্যাগ করতে করতে ইরহাম গম্ভীর স্বরে শুধালো,

” এখনো জেগে কেন? ”

হৃদি প্রত্যুত্তর দিতে যাচ্ছিল যে আপনার জন্য। তবে তা আর বলা হলো না। থমকে গেল গম্ভীর মানবের ভাবস্ ওয়ালা উপদেশ শুনে।

” আর কখনো জাগবে না। ঘুমিয়ে পড়বে। ”

পেছনে দন্ডায়মান মানবীর কথা শোনার জন্য দাঁড়ালো না ইরহাম। বড় বড় কদম ফেলে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় নিজ কক্ষের উদ্দেশ্যে রওনা হলো। পেছনে রয়ে গেল বিহ্বল হৃদি!

” এ কেমন লোক রে বাবা! ”

ভানু’র দ্যুতি ছড়িয়ে ধরনীর বুকে। আলোকিত চারিদিক। গভীর নিদ্রায় মগ্ন মেয়েটি। ঘুমের ঘোরে উষ্ণতার খোঁজে আরেকটুখানি ডানে চেপে গেল। জাপটে ধরলো পাশবালিশ। তবে শিরা উপশিরায় কেমন শিরশিরানি অনুভূত হচ্ছে। অস্বস্তি জাপটে ধরছে আষ্টেপৃষ্ঠে। এমন অস্বস্তি তাকে ঘুমোতে দিলো না। বিরক্ত হয়ে ঘুমকাতুরে আঁখি জোড়া মেলে তাকালো। তাকাতেই হলো বিহ্বল! পাশবালিশের বদলে এসব কি! ও মা! অনাবৃত উদোম উদরে পেঁচিয়ে তার হাতটি। হৃদির চঞ্চল আঁখি যুগল একবার উদোম উদরে, আরেকবার নিজ হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় চমক এলো কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই। যখন নয়নে মিলিত হলো নয়ন। নভোনীল চক্ষু জোড়া তার পানেই আবদ্ধ। বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে রইলো মেয়েটি। ভুলে গেল নিজস্ব অবস্থান। বিপরীতে থাকা মানুষটিও গভীর চাহনিতে তাকিয়ে। যে চাহনি তোলপাড় সৃষ্টি করছে হৃদয়ে। তরঙ্গ বয়ে যাচ্ছে র-ক্ত কণিকায়। সম্মোহিত মেয়েটি অনাবৃত উদরে এখনো হাত পেঁচিয়ে। অতিবাহিত হলো কয়েক মুহূর্ত। নভোনীল চক্ষু জোড়া যেই পলক ঝাপটালো ওমনি চেতনা ফিরলো হৃদির। নিজস্ব অবস্থান অনুধাবন করে আঁতকে উঠলো। তড়িঘড়ি করে সরে গেল। একপলক বিহ্বল স্বামীর পানে তাকিয়ে বিছানা ছেড়ে নেমে পড়লো। এলোমেলো ভঙ্গিমায় দৌড়ে প্রবেশ করলো ওয়াশরুমে। সশব্দে বদ্ধ হলো দ্বার। খুলে রাখা দোপাট্টাটি তখনো বালিশের পাশে। মিস্টার চৌধুরী তো হতবাক, হতবিহ্বল সব একত্রে! কি থেকে কি হয়ে গেল এ!

বিছানায় বসে সুপারি টুকরো টুকরো করে খণ্ডিত করে চলেছেন রাজেদা খানম। সমস্ত ধ্যানজ্ঞান সে কর্মে। তখনই সেথায় আগমন হলো নাতবউ এর। উন্মুক্ত দ্বারে দাঁড়িয়ে মেয়েটি দৃষ্টি আকর্ষণ করলো,

” আসসালামু আলাইকুম দাদি। আসবো? ”

ওর পানে একঝলক তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিলেন দাদি। অনুমতি প্রদান করলেন,

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আয়। ”

মুচকি হেসে ভেতরে প্রবেশ করলো মেয়েটি। দাদির পাশে দাঁড়িয়ে অনুমতি চাইলো,

” বসতে পারি দাদি? ”

দাদি হাঁ সূচক মাথা নাড়লেন। অনুমতি পাওয়া মাত্রই বাঁ পাশে বসলো হৃদি। একমনে অবলোকন করতে লাগলো সুপারি কাটা।

” অ্যামনে গোল গোল চোখ কইরা কি দ্যাহোছ? ”

” সুপারি কাটা দেখছি গো দাদি। বেশ ডেঞ্জারাস আছে। তোমার হাতে লাগে না? ”

দাদি মৃদু হেসে বললেন,

” না লাগে না। বছরের পর বছর কাটতে কাটতে অভ্যাস হইয়া গেছে। ”

” আচ্ছা তোমরা সিনিয়র সিটিজেনরা এত পান ভক্ত হও কেন? মানে এই পান পাতায় কিসের এত স্বাদ? আমার তো দেখতেই কেমন লাগে। সাদা দাঁত লাল টকটকে হয়ে যায়। উঁহু হুঁ। ”

মুখ বিকৃত করে বাক্য সমাপ্ত করলো মেয়েটি। ওর সরল স্বীকারোক্তি শুনে নিঃশব্দে হাসলেন রাজেদা খানম।

” পান হইলো নে শা র লাহান। বুঝলি? একবার দুইবার তিনবার খাইলে নে শা ধইরা যায়। আরো খাইতে মন চায়। ছাড়তে ইচ্ছা করে না। ”

” তাই নাকি? আচ্ছা তাহলে তুমি এই নে*শায় কবে থেকে নে*শাক্ত হলে? ”

” আমার বিয়ার পর থে। তোগো দাদার পান বহুত পছন্দ আছিল। হ্যার দ্যাহাদ্যাহি আমিও খাইতে আরম্ভ করলাম। এরপর.. ”

হৃদি দুষ্টুমি করে সুর টেনে বললো,

” ওহ্ হো! দাদাজানের অভ্যাস তোমাতে ট্রান্সফার হলো? নট ব্যাড! ”

” ব্যাড বুড ছাড় তো। একখান খাইয়া দ্যাখ। ভাল লাগবো। ”

হৃদি দ্বিধান্বিত স্বরে শুধালো,

” বলছো? খাবো? দাঁত লাল হয়ে যাবে না? ”

” রাখ তো ছে ম ড়ি তোর লাল নীলের কথা। একখান খাইয়া দ্যাখ। ”

দাদি পানের বক্স হতে একটি সাজানো পান ওর হাতে তুলে দিলেন। হৃদি ইতিউতি করছে। মুখে দেবে কি দেবে না দ্বিধায় পড়ে গিয়েছে। অবশেষে দ্বিধা ত্যাগ করে মুখে পান পুরে নিলো। আস্তে আস্তে চিবোতে শুরু করলো।

” কি ক্যামন লাগতাছে? ”

হৃদি মৃদু স্বরে পান চিবোতে চিবোতে অস্ফুট স্বরে বললো,

” সত্যি বলছি। মন খারাপ করো না আবার। আমার না কেমন যেন লাগছে। ”

সশব্দে হেসে উঠলেন রাজেদা খানম। নাতবউ এমন আদুরে মুখ বানিয়ে বলছে না হেসে পারলেন না। ওনার হাসি দেখে হৃদি কাঁচুমাচু মুখে পান চিবোতে লাগতো। কেমন যেন স্বাদ লাগছে! প্রথমবার বলে কি!

বিবাহ পরবর্তী জীবনে অতিবাহিত হয়েছে ক’দিন। হৃদি আজ স্বামীর সঙ্গে পিতৃগৃহে যাচ্ছে। বিয়ের পর প্রথমবারের মতো। স্বাভাবিক ভাবেই আনন্দ, উত্তেজনা বিরাজ করছে শিরায় উপশিরায়। খুশি ভাব স্পষ্টত মুখশ্রীতে। টয়োটা প্রিমিও তে পাশাপাশি বসে দু’জনে। ব্যস্ত সড়কে চলছে গাড়িটি। হৃদি কেমন ছটফট ছটফট করছে। একটু পরপর জানালা গলিয়ে বাহিরে তাকাচ্ছে। গুণগুণ করছেও কখনো কখনো। মনের সুখে গান গাইছে কি! গাড়ি চালনার ফাঁকে ফাঁকে কয়েকবার অর্ধাঙ্গীর পানে তাকালো ইরহাম। তবে তা স্বল্প সময়ের জন্য। সে মনোনিবেশ করলো ড্রাইভিংয়ে। শহরের যানজট পেরিয়ে তারা পৌঁছালো সুখনীড় এ। গাড়ির হর্ন শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে পৌঁছাতেই এগিয়ে এলেন সিকিউরিটি গার্ড। উন্মুক্ত করে দিলেন মূল ফটক। ভেতরে প্রবেশ করলো টয়োটা প্রিমিও টি। থামলো পার্কিং লটে। গাড়ি থামা মাত্রই চঞ্চল প্রজাপতির ন্যায় তিড়িংবিড়িং করে গাড়ি হতে বেরিয়ে এলো মেয়েটি। ছুটলো লিফটের পানে। পেছনে রয়ে গেল নতুন জামাই। যার জন্য এত আয়োজন সে-ই অবহেলিত। ইরহাম সেসবে পাত্তা না দিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো। সকলের জন্য ক্রয়কৃত উপহার এবং নাস্তা সামগ্রী বহনকারী ব্যাগ সমূহ হাতে নিয়ে গাড়ি লক করলো। অগ্রসর হতে লাগলো লিফটের দিকে।
.

ফারহানা এবং নাজরিন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নতুন জামাই আসছে। কিচেনে কত কর্ম ব্যস্ততা! দু’জনেই ঘর্মাক্ত দেহে রান্নার আয়োজন করে চলেছেন। নীতি ও নিদিশা লিভিং রুমে ফারিজার সঙ্গে খুনসুটিতে মত্ত। মোবাইলে ফানি ভিডিও দেখছে এবং হাসছে। তখনই কলিংবেল বেজে উঠলো। উচ্ছ্বসিত হলো দু বোন। ফারিজাকে কোল হতে নামিয়ে সোফায় বসালো নিদিশা। দ্রুত পায়ে ছুটে গেল দরজায়। হাসিমুখে দরজা খুলতেই সে হাসিটুকু মিলিয়ে গেল অনাকাঙ্ক্ষিত কাণ্ডে। হতবাক নয়নে তাকিয়ে নীতি। এ কি হলো!

চলবে.

#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৯ ( শেষাংশ )

হৃদির আকস্মিক কাণ্ডে হতবাক সেথায় উপস্থিত নীতি! পরক্ষণেই ফিক করে হেসে উঠলো। আপন নীড়ে ফিরে খুশিতে বাকবাকুম হৃদি। তাই তো দ্বার উন্মুক্ত করা মাত্রই চাচাতো বোন নিদিশাকে দু হাতে আলিঙ্গন করে গোল গোল ঘুরতে লাগলো।

” দিশা! মাই বেহনা! ”

উচ্ছ্বাসে কতরকম শব্দ নিঃসৃত হচ্ছে। তা কর্ণ কুহরে পৌঁছাতেই ফারহানা এবং নাজরিন দ্রুত পায়ে কিচেন হতে বেরিয়ে এলেন। মাতৃ হৃদয় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লো মেয়েকে দেখে। অক্ষিকোলে জমায়েত হলো বিন্দু বিন্দু জল। ইরহাম এতক্ষণ বাহিরেই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ছিল। দেখছিল তার পা গ লী বউয়ের পা*গলামী! তবে ওকে লক্ষ্য করে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন দুই জা।

” আরে জামাই বাবা! তুমি বাহিরে দাঁড়িয়ে কেন? এসো এসো ভেতরে এসো। ”

নাজরিনের কণ্ঠ শ্রবণ হওয়া মাত্র থমকে গেল মেয়েটি। ফারিজাকে কোলে নিয়েই পিছু ঘুরে তাকালো। স্বামীকে এখনো দরজার বাহিরে দাঁড়ানো দেখে বেশ লজ্জিত বোধ করলো। কি লজ্জাজনক কাণ্ড! নাজরিন এবং ফারহানা এগিয়ে গেলেন। নতুন জামাইকে সাথে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেন। ইরহাম তাদের সালাম দিয়ে কুশলাদি বিনিময় করলো। ওর কণ্ঠ শুনে কক্ষ হতে বেরিয়ে এলেন রায়হান সাহেব। প্রসন্ন চিত্তে জামাতার সাথে কথোপকথনে লিপ্ত হলেন। সোফায় বসলো শ্বশুর জামাই যুগল। হৃদি এসবে যুক্ত না হয়ে নিজ কক্ষের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো। সাথে খুদে সদস্য ফারিজা।
.

নিজ কক্ষে পৌঁছানো মাত্র শীতল হলো হৃদয়। আনন্দে নৃত্য করলো অন্তরাত্মা। হাতে থাকা পার্সটি বিছানায় ছুড়ে ফেলে দু হাত দু’দিকে প্রসারিত করে দু পাক ঘুরলো হৃদি। আঁখি পল্লব বন্ধ করে নাসিকা গ্ৰন্থিতে টেনে নিলো আপন নীড়ের সুবাস। অতঃপর চক্ষু মেলে কক্ষের আনাচে কানাচে তাকাতে লাগলো। মাত্র ক’দিনের দূরত্ব। তাতেই কেমন অতিথি অতিথি অনুভূতি আসছে। তবে সবটা সে-ই পূর্বের ন্যায় বিদ্যমান। আম্মু খুব যত্ন করে গুছিয়ে রেখেছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বিছানা, স্টাডি টেবিল, ড্রেসিং টেবিল। সব আগের রূপেই রয়েছে। নিজস্ব প্রিয় কক্ষে চোখ বুলাতে বুলাতে এক পর্যায়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো দেয়ালের একাংশে। তার সবচেয়ে প্রিয় অংশে। বৃহদাকার ওয়াল ফটো ফ্রেম সেটি। দেয়ালের বিশাল লেখিকা তাহিরাহ্ ইরাজ অংশ জুড়ে ফটো ফ্রেমটি লাগানো। সেথায় বাহারী ফটোর মিলনমেলা। হৃদি লাজুক চিত্তে মন্থর পায়ে সেদিকে অগ্রসর হলো। গুটিগুটি পায়ে পৌঁছে গেল ফ্রেমের সম্মুখে। সেথায় হাজির হতেই লাজুকতার ন্যায় গুটিয়ে নিলো নিজেকে। অবনত দৃষ্টি একটু করে তুলছে। আবার ফটো সমূহ দেখে নত করে নিচ্ছে। হঠাৎই দু হাতের তেলোয় লাজে রঙিন মুখখানি লুকিয়ে সরল স্বীকারোক্তি পেশ করলো,

” আই মিসড্ ইউ জান্স। ”
.

দুপুরের ভোজন পর্ব চলছে। নতুন জামাই হিসেবে ইরহামের জন্য সে এক বি শা ল আয়োজন। টেবিলে বাহারী খাবারের উপস্থিতি। স্বাস্থ্য সচেতন ইরহামের প্লেটে এখনো যথেষ্ট খাবার। তবুও ফারহানা কিংবা নাজরিন মাছ অথবা মাংস প্লেটে তুলে দিচ্ছেন। অবস্থা এমন যে আর একটু খেলেই পেট ফেটে বি-স্ফোরণ হবে। ওর ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা দেখে বিপরীত দিকের চেয়ারে বসে থাকা হৃদি তো প্রচুর বিনোদন পাচ্ছে। মুখ টিপে হাসছে আর নিজের মতো এটা সেটা নিয়ে খাচ্ছে। কখনো আবার পাশের চেয়ারে থাকা আদুরে পুঁচকের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। সবটাই তীক্ষ্ণ চাহনিতে অবলোকন করলো ইরহাম। তবে রইলো বরাবরের মতো নীরব। গম্ভীর।

” এ কি বাবা খাচ্ছো না কেন? বেশি ঝাল হয়েছে কি? ”

ফারহানা উৎকণ্ঠা প্রকাশ করলেন। ইরহাম জোরপূর্বক অধরে চিকন হাসির রেখা ফুটিয়ে তুললো।

” না মা। অল ওকে। ”

স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন উনি। মমতাময়ী কণ্ঠে বললেন,

” আচ্ছা বাবা। তুমি খাও। কিছু লাগলে নিসংকোচে বলো। লজ্জা পেয়ো না কেমন? ”

ইরহাম খাবার ভর্তি প্লেটে তাকালো। এতকিছুর পর আরো কিছু দরকার পড়তে পারে কি? অসম্ভব!
.

ভোজন পর্ব সমাপ্ত হলো আধ ঘন্টার মতো হবে। ইয়া বড় ঢোলের মতো পেট হয়েছে মেয়েটার। আজকে একটু বেশিই খাওয়া হয়ে গেছে। পেট ফুলে এমন অবস্থা যেন সে ক মাসের গর্ভবতী নারী! পেট নিয়ে যার হাঁটাচলা মুশকিল। লিভিং রুম পেরিয়ে মন্থর গতিতে হেঁটে নিজ কক্ষে অগ্রসর হলো‌। ভেজানো দ্বার বহু কষ্টে ঠেলে অন্দরে প্রবেশ করলো। সহসা আঁতকে উঠলো চরমভাবে!

” এ কি! এসব ক্ কি করছেন! ”

অগ্নিতে’জা মানবের দু হাত এলোপাথাড়ি ভঙ্গিমায় দেয়ালে নৃ*শংস কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে। চোখেমুখে কাঠিন্যতা মিশ্রিত অভিব্যক্তি। শক্ত তার চোয়াল। পেশিবহুল দু’টো হাত নেমে নেই। আজ সব ধ্বং-স করে তবেই ক্ষ্যা ন্ত হবে। নভোনীল চক্ষু জোড়ায় কোনো দুর্বোধ্য অনুভূতি উপস্থিত। শক্ত দু হাতের মুঠো। ভেসে উঠেছে নীল রঙা শিরা উপশিরা। এখনো হস্ত কারুকার্য বহমান। আ’তঙ্কিত রমণী দ্রুত পায়ে ছুটে গেল স্বামীর পানে। থামানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে গেল। এটা ওটা বলে বাঁধা প্রদান করার প্রয়াস চালালো। তাতে বিন্দুমাত্র লাভ হলো না। নিজ ধ্বং-সলীলা সমাপ্ত করে তবেই থামলো সে গুরুগম্ভীর রহস্য মানব। ঘন ঘন শ্বাস ফেলে ভেতরকার আ-গ্নেয়গিরি শান্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে মানুষটি। সে চায় না তার কাঠিন্যতা, ক্রো*ধের সাক্ষী হোক এ চঞ্চল সরল মেয়েটি। আস্তে ধীরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নদীর শান্ত জলের ন্যায় অচঞ্চল রূপে রূপান্তরিত হলো ইরহাম। পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো অর্ধাঙ্গীর পানে। নয়নে নয়ন মিলিত হতেই ধক করে উঠলো মেয়েটির আত্মা। মানুষটির আঁখি যুগলের সফেদ অংশে তখন আর’ক্ত আভা। নভোনীল অক্ষি জোড়া স্বল্প সময়ের মধ্যেই তাকে সম্মোহিত করে ফেললো। নিষ্প্রাণ কাঠের পুতুলের ন্যায় থমকে মেয়েটি। মধ্যকার সামান্য দূরত্বটুকু ঘুচিয়ে সন্নিকটে এলো ইরহাম। কিঞ্চিৎ ঝুঁকে গেল অর্ধাঙ্গিনীর পানে। ওষ্ঠ ঠেকালো ওর কর্ণ কুহরে। সেথায় ছাড়লো তপ্ত শ্বাস। শিরশির করে উঠলো কোমল কায়া। বুজে গেল অক্ষিপুট। অতি শান্ত অথচ সম্মোহনী স্বরে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করলো মানুষটি,

” ঘরের দেয়াল হোক কিংবা মনের। সেথায় কোনো পরপুরুষের অস্তিত্ব বরদাস্ত করার মতো মহানুভব নই আমি। তোমার মন ও মস্তিষ্কে থাকবে শুধু একজনেরই পদচারণা। সে.. তোমার একান্ত জন। ”

আবেগময় অনুভূতি ব্যক্ত করাকালীন কর্ণ পাতায় অতি সুক্ষ্ণ রূপে নরম স্পর্শ অনুভূত হলো। শিরদাঁড়া বরাবর তড়িৎ প্রবাহ বয়ে গেল। নিজেকে আবিষ্কার করলো এক ধূ ধূ মরুর মাঝে। যেথায় সে বিহীন নেই অন্য কেউ‌। একাকী লক্ষ্যহীন পথভ্রষ্ট সে। নেই তার কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্য। আস্তে ধীরে মরুর বুক হতে ফিরে এলো মেয়েটি। ফিরে পেল জাগতিক চেতনা। ধীরে ধীরে অক্ষি পল্লব মেলে তাকালো। নিজেকে খুঁজে পেল একাকী এ কক্ষে। কিয়ৎক্ষণ পূর্বের তু ফান স্মরণে আসতেই ডানে তাকালো। শূন্য তার প্রিয়তমদের মিলনমেলা। ফটো ফ্রেমটা খাঁ খাঁ করছে। ছোট-বড় আকৃতির সব কয়টি ফটো বি!ধ্বস্ত রূপে মেঝেতে পড়ে। রণবীর সিং, আরমান মালিক, রণবীর কাপুর, জেইন ইমাম, ওয়াহাজ প্রমুখ সকলের মুখখানা ছিঁড়ে খানখান। তন্মধ্যে ইরহাম চৌধুরীর একটি ফটোও রয়েছে। অগ্নিতে’জা মানবের দৃষ্টিগোচর হয়নি বোধহয়। তাই তো বাকি সবের ন্যায় ছিঁড়ে মেঝেতে লুটোপুটি খাচ্ছে। অভিমানী কন্যার গণ্ডস্থল শুকিয়ে গেল। টলমল করে উঠলো নয়ন জোড়া।

আঁধারিয়া রজনী। বিছানায় শুয়ে মেয়েটি। দৃষ্টি নিবদ্ধ খোলা জানলায়। তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পাশের জন। আনমনা মেয়েটি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে। জ্বালা করছে নয়ন জোড়া। তবুও পলক ফেলছে না। নিজেকে নিজেই বুঝি কষ্ট দিচ্ছে। দেবে না? সে যে ভেতরকার যাতনা লুকোতে বাহ্যিক রূপে নিজেকে কঠিন দেখানোর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কতটুকু সফল হচ্ছে নিজেরও জানা নেই বোধহয়। ঘুমের ঘোরে পাশের জন আরেকটু গাঢ় আলিঙ্গনে আবদ্ধ করলো। তাতে ঘোর কেটে গেল। বাঁয়ে তাকালো সে। নিদিশা ঘুমের ঘোরে শক্ত বাঁধনে বেঁধে ফেলেছে। মেয়েটা ওর মতোই। ঘুমের ঘোরে হাত-পা চলে বেশি। কিছু আলিঙ্গনে আবদ্ধ না করলে ঘুম হয় না। কষ্ট মিশ্রিত হাসলো মেয়েটি। এখানে আজ কার থাকার কথা আর কে থাকছে। মানুষটি তো এখন নিজ গৃহে। হয়তো ঘুমিয়ে কিংবা জেগে। আর সে? নিজের ঘরে আনমনে কষ্টে ভুগছে। কার জন্য কষ্ট পাচ্ছে সে? তার অভিমান, অনুভূতি কি আদৌও বিপরীতে থাকা মানুষটির কাছে মূল্য পায়? পায় না তো। এজন্যই তো একরাত এখানে কাটিয়ে কর্মব্যস্ততার দোহাই দিয়ে পরদিন ই বিদায় নিয়েছে মানুষটি। তার সঙ্গে কোনোরূপ ভাব বিনিময় করার চেষ্টা অবধি করেনি। অভিমানে সেও নিস্ক্রিয় রূপে হাজির হয়েছে। আজ দু রাত সে এখানে। কোনো যোগাযোগ নেই মানুষটির সঙ্গে। সে বোধহয় ভুলেই গেছে বিবাহিতা স্ত্রী বলে একজনের অস্তিত্ব রয়েছে। তাই তো এমন নির্লিপ্ততা। যোগাযোগহীনতা। হাহ্!

অভিমানী কন্যা অন্তরে দাবিয়ে রাখা সবটুকু অভিমান অন্তরেই ধামাচাপা দিলো। বুজে নিলো আঁখি পল্লব। চেষ্টা করতে লাগলো নিদ্রায় তলিয়ে যাওয়ার।

সূর্যের আলোকছটা ছড়িয়ে ধরনীর বুকে। ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সঙ্গে আলাপচারিতায় লিপ্ত মেয়েটি। প্রকাণ্ড এক বৃক্ষতলে দাঁড়িয়ে ওরা। সূর্যের উত্তাপ হতে মিলছে সাময়িক স্বস্তি।

” ওই ব্যা টা আর.এস নির্ঘাত আজকে বউয়ের সাথে ঝগড়া করে আসছে। এজন্য যত ঝাল আমাদের ওপর ঝাড়ছে। ব্যা’টা আস্ত এক খাঁ.টাশ। কোনো মায়া দয়া নাই। ”

আফরিনের কথার রেশ ধরে সাবিত বললো,

” ইগ্লা আইজ জানলি? ওই ব্যা টা সেই ফার্স্ট ইয়ার থে আমগো জিন্দেগী ত্যা*নাত্যানা করে আইতেছে। সেকেন্ড ইয়ারে উঠছি। তা-ও রেহাই নাই। খালি বকবক বকবক। ”

হৃদি শুধালো,

” আচ্ছা তাহলে শেষমেষ কি দাঁড়ালো? অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়ার লাস্ট ডেট কবে? ”

” কবে আবার? চারদিন পর। ” বললো নাবিল।

” ইশ্! চারটা দিন বেশ খাটুনি খাটতে হবে। কতগুলো লেখা। ” চিন্তিত হয়ে পড়লো হৃদি।

দিয়া বললো, ” আর.এস তো এমনই। আগেভাগে কিছু বলবে না। সময়কালে ক.ফিনে পেরেক ঠু কে দেবে। ”

ইভা বিরক্তি প্রকাশ করলো, ” ধ্যাৎ! ক্যামনে যে এত লেখা কমপ্লিট করবো! ”

সাবিত বললো, ” ক্যামনে আবার? হাত দিয়া। না মানে মুখ দিয়া লিখতে পারলে আলাদা ম্যাটার। তাই না? ”

বোকা হেসে বললো সাবিত। ব্যাস। পিঠে এক ঘা লাগিয়ে দিলো ইভা। হৃদি সহ বাকিরা হেসে উঠলো। এমন হাসির মুহূর্তে হৃদির হাতে থাকা মোবাইলে নোটিফিকেশনের ধ্বনি নিঃসৃত হলো। কৌতুহলী হয়ে মোবাইলের স্ক্রিনে তাকালো সে। ভ্রু কুঞ্চিত হলো খুদে বার্তা দেখে। খারুস চৌধুরী নামে সেভ করা নম্বর হতে খুদে বার্তা এসেছে,

” আম্মু ও দাদি কারোর অপেক্ষায় দিন গুনছে। ”

বার্তা প্রেরক কে বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হলো না। দ্বৈত অনুভূতির মিশ্রনে মুখ বাঁকালো মেয়েটি।

‘ আনন্দাঙ্গন ‘ এ হৃদি ফিরে এসেছে তিনদিন হলো। এসেই ব্যস্ত হয়ে পড়লো অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে। এত লেখা স্বল্প সময়ে সমাপ্ত করতে গিয়ে হুলস্থূল অবস্থা। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যথাসময়ে লেখা সমাপ্ত করতে সক্ষম হলো। আগামীকাল জমা দেবে। অবশেষে স্বস্তি! জানালা গলিয়ে বাহিরে তাকালো হৃদি। আঁধারে তলিয়ে বসুধা। ঘড়ির কাঁটা তখন আটের কাছাকাছি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। পটু হাতে বিছানায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বইপত্র গুছিয়ে ফেললো। রাখলো যথাস্থানে। অতঃপর হাত-পা নাড়িয়ে অঙ্গচালনা অর্থাৎ একটুআধটু ব্যায়াম করে নিলো। অবসাদ দূরীকরণ হলে বেরিয়ে গেল কক্ষ হতে।
.

লিভিং রুমে সোফায় পাশাপাশি বসে ননদ ভাবী যুগল। মনোযোগ নিবদ্ধ টেলিভিশনের পর্দায়। একসাথে উপভোগ করছে হলিউড মুভি ‘ বেবিস্ ডে আউট ‘. জনপ্রিয় পুরনো হলিউড মুভি এটি। এতবার দেখেছে। তবুও দেখতে মন চায়। তাই তো ননদিনীর সঙ্গে দেখতে বসা। দু’জনে দেখছে এবং হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে। ওদের হাস্য কলরব কিচেনে দাঁড়িয়ে শুনছেন মালিহা। ওদের হাসিতে সংক্রমিত হয়ে উনিও হেসে উঠলেন। মুভিতে ছোট্ট বেবিটার কাণ্ড দেখে হৃদির অবস্থা করুণ। সোফায় রীতিমতো মিশে যাচ্ছে মেয়েটি। এত পরিমাণে হাসছে। আকস্মিক এ হাসাহাসিতে ব্যাঘাত ঘটলো। কেননা..

চলবে.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে