Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"মনের অরণ্যে এলে তুমিমনের অরণ্যে এলে তুমি পর্ব-১১

মনের অরণ্যে এলে তুমি পর্ব-১১

#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_১১

ঘুটঘুটে আঁধারে আরম্ভ হলো র ক্তক্ষয়ী খেলা। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। ক্ষুদ্র বগির ভেতরে গোঙানির শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়ে চলেছে। র ক্তে র’ঞ্জিত হচ্ছে ট্রেনের আসন। পরপর কয়েকটি দেহ নিথর রূপে লুটিয়ে পড়লো মেঝেতে। চলমান রইলো সে শত্রু শত্রু খেলা। আঁধারিয়া রজনীতে এ কোন বিপদ ঘনিয়ে এলো! কারা এরা? কিসের শ ত্রুতা তাদের মধ্যে? কেন এই অনাহুত র-ক্তারক্তি! ঘুটঘুটে অন্ধকারে এ প্রশ্ন এবং তার জবাব দুইই হারিয়ে গেল। ঘন গাছপালায় আচ্ছাদিত সরু লাইন ধরে এগিয়ে চলেছে ট্রেনটি। স্বল্প সময়ের মধ্যেই ছোটোখাটো এক মৃ*ত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে যেন। এ কি সর্বনা’শা কাণ্ড!

ভানু’র দ্যুতি ছড়িয়ে ধরনীর বুকে। রৌদ্রময় এক সুবাহ। হালকা পবনের স্পর্শে নৃত্যরত বৃক্ষপত্র। নিজ কক্ষে আরশির সম্মুখে দাঁড়িয়ে মেয়েটি। দীঘল কালো কেশ উঁচু করে ঝুঁটিতে আবদ্ধ করে চলেছে সে। পড়নে তার কৃষ্ণবর্ণ সালোয়ার কামিজ। দোপাট্টায় স্বর্ণালী রঙা প্রিন্টের কারুকাজ। মুখশ্রীতে মানানসই কৃত্রিম প্রসাধনীর ছোঁয়া। ভারী মিষ্টি লাগছে দেখতে। মেয়েটি দ্রুততার সহিত তৈরি হচ্ছে। দেরী হয়ে গেছে বেশ। তাই টেরও পায়নি কখন কক্ষে স্বামীর আবির্ভাব হয়েছে। হৃদি দ্রুত ঝুঁটি বেঁধে আরশিতে একবার নিজেকে দেখে নিলো। অতঃপর ঘুরে দাঁড়ালো। বিছানায় রাখা সাইড ব্যাগ হাতে নিতেই কর্ণ কুহরে পৌঁছালো,

” ব্যাগটা খুলে দেখো। পছন্দ হয় কিনা। ”

চমকে ডানে তাকালো মেয়েটি। ইরহাম আরশির সম্মুখে দাঁড়িয়ে। কেশে হেয়ারব্রাশ চালনা করে চলেছে। বরাবরের মতো গম্ভীর মুখশ্রী। হৃদি কাঁধে ব্যাগ জড়িয়ে বললো,

” স্যরি। আমার খুব লেট হয়ে গেছে। এসে দেখবো ঠিক আছে? ”

ব্যস্ত পায়ে কক্ষ ত্যাগ করতে গিয়েও ব্যর্থ হলো হৃদি। ওর ঠিক সম্মুখে এসে দাঁড়ালো মানুষটি। এত দ্রুত হাজির হলো কি করে? আচমকা কাণ্ডে স্বল্প ভীত হলো মেয়েটি। বক্ষে হাত রেখে ঘন শ্বাস ফেলে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলো,

” এমন ভূতের মতো করছেন কেন? ভয় পেয়েছি না? ”

থমথমে মুখশ্রী মানুষটির। সে নিজ বক্তব্য পেশ করলো,

” ব্যাগটা খোলো। পছন্দমতো একটা জড়িয়ে তবে বেড়োবে। এর আগে নয়। ”

ভারী মুসিবত তো! দেরী হয়ে গেছে এরমধ্যে উনি! উফ্! তপ্ত শ্বাস ফেলে কাঁধে থাকা ব্যাগ বিছানায় রাখলো হৃদি। হাতে নিলো বিছানার একাংশে রাখা একটি শপিং ব্যাগ। সেটা আনপ্যাক করতেই বিহ্বল হলো! দোপাট্টা! হাঁ তাই তো। দু’টো সুন্দর আকর্ষণীয় দোপাট্টা। হৃদি উদগ্রীব হয়ে দ্রুত হস্তে বিছানায় রাখা আরো একটি শপিং ব্যাগ উন্মুক্ত করলো। সেখানেও দু’টো সুন্দর আকর্ষণীয় দোপাট্টা। মেয়েটি বিস্মিত বদনে পিছু ঘুরে তাকালো। থমকে গেল অতি সন্নিকটে স্বামীকে অনুভব করে। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দু’জনে। মধ্যকার দূরত্ব অতি সামান্য। একে অপরের চোখে চোখ পড়লো। নভোনীল আঁখি যুগলে ডুবে গেল কৃষ্ণকালো আঁখি। থমকে গেল এ সময়। হৃদির বিমুগ্ধ দৃষ্টি স্বামীর গম্ভীর বদনে ঘুরে বেড়াতে লাগলো। সফেদ পাঞ্জাবি পরিহিত স্বামীকে দেখে আরো একবার হলো বিমোহিত! বিপরীত দিকে ইরহাম অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে অর্ধাঙ্গীর পানে। মায়ায় ভরা চেহারা পেরিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলো সহধর্মিণীর পড়নে থাকা পাতলা দোপাট্টাটি। সহসা মোহাচ্ছন্ন ভাব ভঙ্গ হলো। চোখে চোখ রেখে ইরহাম বলে উঠলো,

” একজন নারীর অন্যতম মূল সম্পদ হলো তার সৌন্দর্য, সম্ভ্রম। এর ওপর কোনো পরপুরুষের হক নেই। শুধুমাত্র একান্ত মানুষটির হালাল অধিকার রয়েছে এ সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হওয়ার, মুগ্ধতা প্রকাশ করার। অন্য কারোর নয়। ”

ঘোর কেটে গিয়ে বাস্তবে পদার্পণ করলো মেয়েটি। জিজ্ঞাসু নয়নে তাকালো স্বামীর পানে। ওর অবস্থা অনুধাবন করে স্বামী নামক মানুষটি বললো,

” পাতলা ওড়না চেঞ্জ করে ওগুলোর মধ্যে একটা পড়ে নাও। নাহলে বাড়ির বাইরে এক পা-ও রাখতে পারবে না। মনে থাকে যেন। ”

শীতলতম হু’মকি প্রদান করে কক্ষ হতে বেরিয়ে গেল ইরহাম। পেছনে রয়ে গেল বিমূর্ত হৃদি! আনমনে বলে উঠলো,

” উনি হঠাৎ এমন অদ্ভুত আচরণ করছেন কেন? আমার সবটা জুড়ে অধিকার স্থাপন করছেন। আদর্শ স্বামীর ন্যায় এটা সেটা বিধিনিষেধ আরোপ করছেন। কিন্তু কেন? বিয়ের আগে তো এমন কথা ছিল না। উনি তো তখন ভিন্ন কিছু বলেছিলেন। তাহলে এখন এসবের মানে কি? ”

প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে উন্মুক্ত দ্বারে তাকিয়ে মেয়েটি। মিলছে না অন্তরে লালিত প্রশ্নের জবাব। নাকি জবাব পেয়েও সে মানতে নারাজ! জানা নেই।

তমস্র রজনী। বিছানায় এলোমেলো ভঙ্গিতে রাখা উপহার স্বরূপ প্রাপ্ত চারটে দোপাট্টা। সঙ্গে রয়েছে অমন সাদৃশ্যপূর্ণ আরো তিনটি দোপাট্টা। নিজে ক্রয়কৃত। ডান পাশে দু পা এলিয়ে বসে হৃদি। দু হাতের মুঠোয় বন্দী একটি লালাভ রঙা দোপাট্টার একাংশ। চোখেমুখে তার খুশির ঝিলিক। অধরে লজ্জালু আভা। আলতো স্পর্শে দোপাট্টার আবরণে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে অঙ্গুলি। এগুলো হয়তো দেখতে সাধারণ দোপাট্টা। প্রকৃত অর্থে সাধারণের মধ্যেও অসাধারণ! এগুলো যে তার স্বামী প্রেরিত উপহার। বিয়ের পর প্রাপ্ত প্রথম উপহার। স্বাভাবিক ভাবেই মনের কুঠুরিতে বিশেষ জায়গা দখল করে নিয়েছে। অন্তরে অনুভূত হচ্ছে খুশির ঝলকানি। সে ঝলকানি চোখেমুখেও দৃশ্যমান। লাজুক হেসে দেহে দোপাট্টাটি জড়ালো হৃদি। নাম না জানা অনুভূতিতে আবিষ্ট হলো তনুমন। আবেশে মুদিত হয়ে এলো নেত্রপল্লব। চক্ষু বুজে উপহার প্রেরককেই যেন অনুভব করার প্রয়াস চালাতে লাগলো। তাতে সক্ষম না হলেও এক ফায়দা হলো বটে। বদ্ধ নেত্রপাতায় ভেসে উঠলো গোমড়ামুখো মানবের গম্ভীর মুখখানা। তড়িৎ চক্ষু মেলে তাকালো মেয়েটি। ধক ধক করতে লাগলো হৃৎযন্ত্রে। শ্বাস পড়ছে ঘন ঘন। স্বল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে ধাতস্থ করতে সক্ষম হলো হৃদি। অধর প্রসারিত করে মাথায় দোপাট্টা জড়িয়ে ঘোমটা টেনে নিলো। নিজস্ব নয়া রূপ অবলোকন করবার জন্য বাঁ পাশে বিছানা হতে মোবাইল হাতে নিলো। অন করলো ক্যামেরার সেলফি মোড। নিজেকে দেখে নিজেই বিমোহিত হলো! লাজে রাঙা মুখখানি ধারণ হলো মোবাইলের ক্ষুদ্র ক্যামেরায়।

‘ আনন্দাঙ্গন ‘. লিভিং রুমের বুকে ছুটে বেড়াচ্ছে ভীতসন্ত্রস্ত কিশোরী। তার পিছুপিছু পকিমন। দুজনের মধ্যে অঘোষিত লড়াই চলমান। মৃদু আর্তনাদ করে ছুটে বেড়াচ্ছে ইনায়া। কখনো সোফার পেছনে তো কখনো আবার লাফ দিয়ে সোফার ওপরে। বারবার চেঁচিয়ে বলছে,

” ভাবি! ও ভাবি ম রে যাবো। এটাকে সরাও। ভাবি..! ”

বিড়ালের উপস্থিতিতে চরমভাবে ভীতসন্ত্রস্ত ইনায়া। ওর কাণ্ড দেখে হৃদির নাজেহাল অবস্থা। বাঁ হাতে পেট চেপে হেসে চলেছে মেয়েটা। পকিকে থামাবে কি! নিজের অবস্থাই নাজেহাল। বেশ উপভোগ করছে এই ছোটাছুটি। ঠিক সে মুহূর্তে কলিংবেল বেজে উঠলো। থেমে গেল ইনায়া এবং ওর দেখাদেখি পকিমন। পকিকে কোলে নিয়ে মূল ফটকের পানে অগ্রসর হলো হৃদি। ইনায়া লাফ দিয়ে সোফা হতে নেমে এলো। দু হাতে ঝাড়তে লাগলো সোফা। হৃদি দ্বার উন্মুক্ত করতেই দেখা মিললো অমরেশ পুরী মহাশয়ের। মিষ্টি হাসি উপহার দিলো মেয়েটা,

” আসসালামু আলাইকুম পাপা! ”

গৃহে প্রবেশ করেই অপছন্দের মানুষের সাক্ষাৎ। বিরক্ত বোধ করলেন উনি। বেজার মুখে সালামের জবাব দিলেন।

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। ”

ক্লান্ত পায়ে হেঁটে লিভিং রুমে উপস্থিত হলেন এজাজ সাহেব। হাতে থাকা অফিসিয়াল ব্যাগ পাশে রেখে সোফায় বিশ্রাম নিতে বসলেন। বাবাকে দেখে ইনায়া ইতিউতি করছে। ভাবছে সেথায় থাকবে কি পলায়ন করবে! ভাবনার মাঝে হৃদি হাজির। মালিহা আনার পূর্বেই সে পানির গ্লাস নিয়ে এসেছে। এগিয়ে দিয়েছে শ্বশুরের পানে। মালিহা তা লক্ষ্য করে প্রসন্ন হলেন। হলেন না শুধু এজাজ সাহেব। উনি মুখ ফিরিয়ে স্ত্রীর দিকে তাকালেন। বললেন,

” হা করে দাঁড়িয়ে আছো কেন? পানি নিয়ে এসো। দেখতে পাচ্ছো না আমি ক্লান্ত? ”

ওনার আচরণে কিচ্ছুটি মনে করলো না হৃদি। বরং চিন্তিত বদনে বাবার পাশে বসলো। মালিহা তখন পানি আনতে গিয়েছেন। সে ফাঁকে টেবিলের ওপর রাখা এসি রিমোট দিয়ে এসির তাপমাত্রা সেট করে দিলো হৃদি। এবার হাতে থাকা গ্লাস নিজে থেকে বাবার মুখের কাছে ধরলো। এহেন আচরণে যারপরানাই অবাক এজাজ সাহেব!

” পাপা তাকিয়ে কি দেখছো? নাও পানি খাও। যে গরম পড়েছে! আল্লাহ্। নেও নেও। খাও। ”

একপ্রকার নিজে থেকে পানি পান করিয়ে দিলো হৃদি। এজাজ সাহেব হতভম্ব রূপে সে পানি পান করলেন। টেবিলের ওপর গ্লাস রেখে হৃদি সযতনে বাবার পড়নে থাকা কোট খুলতে লাগলো। সম্মোহিতের ন্যায় এজাজ সাহেব তা হতে দিলেন। কোট খুলে সোফার একপাশে রেখে দিলো মেয়েটি। তখনই কর্ণ কুহরে পৌঁছালো,

” বাহ্! ভালোই তো বাপের সেবাযত্ন করা শিখছোছ! ”

সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন রাজেদা খানম। ওনার পাশে দাঁড়িয়ে মালিহা। হাতে পানির গ্লাস। ইনায়া এগিয়ে গিয়ে দাদির হাত ধরলো। সোফায় বসতে সহায়তা করলো। পুত্রের বিপরীতে বসে রাজেদা খানম। কথাটা উনি হৃদির উদ্দেশ্যে বললেন। হৃদি মুখ ফুলিয়ে বললো,

” দাদিমা এমন করে বলছো কেন? মেয়ে হিসেবে আমি কি বাবার জন্য সামান্য এতটুকু করতে পারি না? ”

” নিশ্চয়ই পারোছ। তবে আমার এই পোলা তো গাঁ ধা। মাথায় ঘি’লু কম। তাই তো তোর মতো মাইয়ার লগে হারুম গুড়ুম করে। ”

এজাজ সাহেব রাশভারী কণ্ঠে বলে উঠলেন,

” দুদিনের মেয়েটার সামনে আমাকে অপমান করছো মা? ”

” অপমান করলাম কই? যা সত্যি তাই তো কইলাম। তুই বুঝি অর লগে হারুম গুড়ুম করোছ না? ক? করোছ না? ”

সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন এজাজ সাহেব। বললেন,

” যে যেমন ব্যবহার ডিজার্ভ করে আমি তার সঙ্গে তেমনই করি। কম বা বেশি নয়। ”

আর দাঁড়ালেন না উনি। দাঁড়ালে হয়তো লক্ষ্য করতেন পুত্রবধূর মলিন অভিব্যক্তি।

অর্ধাঙ্গীকে উপহারস্বরূপ চারটি ওড়না উপহার দিয়েছে এক সপ্তাহ পেরিয়েছে। এই এক সপ্তাহ বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে ইরহামের। তাই তো ঘরে কম বাহিরে বেশি সময় অতিবাহিত করছে। নির্বাচনের পূর্ববর্তী কার্যক্রমে কাটছে ব্যস্ত সময়। এতটাই ব্যস্ত যে সকালে ফজরের সময় একটু দেখা হচ্ছে আবার ঘুম ঘুম চোখে অনেক রাতে। এমনতর আচরণে অসন্তুষ্ট হৃদি। স্বামী নামক মানুষটি যেন হুট করে আকাশের চাঁদ হয়ে গিয়েছে। যার নাগাল পাওয়া দুষ্কর। কষ্টসাধ্য। দেখাই মেলে না। সে যেন অদৃশ্য, অস্পৃশ্য। উপহার যে দিলো তা পরিহিত অবস্থায় স্ত্রীকে দেখার সুযোগ অবধি মেলেনি। তাতেই অভিমানিনীর হৃদয়ে অভিমান জমা হলো। কথাই বলবে না ওই লোকটার সঙ্গে। ভাবস্ ওয়ালা মানুষদের সে অপছন্দ করে। হুঁ।
.

আঁধারে নিমজ্জিত বসুধা। বিছানায় শুয়ে হৃদি। হাতে মোবাইল। একমনে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে বেড়াচ্ছে। তখনই মেসেঞ্জারে মেসেজ এলো। ইনবক্সে দেখা মিললো,

” আসসালামু আলাইকুম বিবাহিত আপা। আপনে কি হৃদি বলে কোনো চু ন্নি রে চেনেন? হেতি বিয়েশাদী করে রীতিমতো হাওয়ায় মিশে গেছে। দেখাই পাওয়া যায় না।”

আফরিনের মেসেজ দেখে হেসে উঠলো হৃদি। রিপ্লাই দিলো,

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম আপামনি। জ্বে আমি ওই নামে কাউরে চিনি না। তয় মিসেস চৌধুরীরে চিনি। হেতিরে হইলে চলবো? ”

কোনো মেসেজ এলো না। তবে ভিডিও কল এলো আফরিনের আইডি থেকে। হেসে কল রিসিভ করলো হৃদি। চক্ষুতারায় দৃশ্যমান হলো বান্ধবীর মুখখানি। বিছানায় বসে সে। তৎক্ষণাৎ রেগেমেগে খ্যাক করে উঠলো বান্ধবী।

” শয়*। বা*ন্দরনী। চৌধুরী বাড়ির বউ হইয়া তোমার ভাবস্ বাইড়া গেছে? ভাব দেখাও আমগো? পি’টাইয়া ছালচামড়া ফালা ফালা করে দিমু। ”

একসাথে এত হু ঙ্কার! কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার উপক্রম। বাম কানে হাত চেপে ধরে প্রতিবাদ জানালো হৃদি।

” চুউপ! তখন থেকে চিল্লাচিল্লি করে আমায় বয়রা বানিয়ে দিলি। এবার তো ক্ষ্যা-মা দে‌। ”

” দিতাম না। আগে বল আজ ভার্সিটি আসিস নাই ক্যান? নিজে আসতে বইলা গায়েব হয়ে গেলি। বে দ্দ প মাইয়া। আমরা কতক্ষণ অপেক্ষা করছি জানোছ? শেষমেষ দুই ক্লাস কইরা ভাইগা গেছি। ”

সশব্দে হেসে উঠলো হৃদি। তাতে তেঁতে উঠলো আফরিন।

” খবরদার হাসবি না। থা”পড়াইয়া দাঁত গুঁড়া কইরা দিমু কিন্তু। ”

” আচ্ছা! তোর ওই শুঁটকি মাছের শরীরে এত শক্তি আছে? ” সন্দেহ পোষন করলো হৃদি।

” অফকোর্স আছে। কোনো সন্দেহ? ”

” জ্বি হাঁ। ”

” তোরে তো আমি.. ”

ভয় পাওয়ার মিথ্যা অভিনয় করলো হৃদি। তড়িঘড়ি করে বলে উঠলো,

” ওরে বাপ রে! থাম বান্দুপি। আই অ্যাম তো ভীত। ”

দু’জনে সমস্বরে হেসে উঠলো। হাসতে হাসতে হৃদি বললো,

” সকালে মাথা ব্যথা করছিল রে। এজন্য আসিনি। মা নিষেধ করলো। ”

” শাশুড়ি মা? ”

” হুম। ”

আফরিন মিষ্টি হেসে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলো,

” আল্লাহ্ দিলে চমৎকার শাশুড়ি পাইছো বান্দুপি। কোনো কোকিলা মোদী মার্কা শাশুমা পাও নাই, শুকরিয়া আদায় করো। ”

” আলহামদুলিল্লাহ্ ফর এভরিথিং। ”

মন থেকে শুকরিয়া আদায় করলো হৃদি। ঠিক সে মুহূর্তে…

চলবে.

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ