ভৈবর নদীর পাড় পর্ব-১০

0
74

#ভৈবর_নদীর_পাড়
কলমে : #ফারহানা_কবীর_মানাল
পার্ট -১০

মিনিট পাঁচেক পর মতিন একজন মানুষকে নিয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকলো। অবাক দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে রইলাম। খানিকটা হতবাক হয়ে গেছি বলা চলে। এই লোককে এখানে কেন আনা হয়েছে? দারোগা সাহেব বললেন, “মোশারফ সাহেব, দেখুন তো চিনতে পারেন কি-না? লোকটাকে আপনার পরিচিত মনে হচ্ছে।”

ফুফা তীক্ষ্ণ গলায় বললেন, “না, চিনতে পারছি না। উনি আমার পরিচিত নয়।”

দারোগা সাহেব মৃদু হাসলেন। সহজ গলায় বললেন, “ফয়সাল, দেখো তো, তুমি একে চিনতে পারো কি-না?”

“জ্বি চিনতে পারি। ফুফার সাথে যেদিন ভৈবর নদীর পাড়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। ওইদিন উনার সাথে দেখা হয়েছিল। উনার একটা হাত কা’টা।”

“এইতো ফয়সাল চিনতে পেরেছে, তাহলে আপনি কেন চিনতে পারলেন না?”

ফুফা কিছু বললেন না। কঠিন দৃষ্টিতে মেঝের দিকে তাকিয়ে রইলেন। ছোট দাদি বললেন, “আমাদের হেনস্তা করবেন না। পুলিশ হয়েছেন বিধায় কি মাথা কিনে নিয়েছেন?”

দারোগা সাহেব বললেন, “মাথা কিনে নেওয়ার কথা আসছে কেন? তদন্তের খাতিরে অনেক কিছুই করতে হয়। যাইহোক। এই লোকটার সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই।”

ফুফু বলল, “কারো সঙ্গে পরিচিত হওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। সোজা কথাগুলো সোজাভাবে বলুন। এখানে মেয়ের বিয়ে দিতে বসিনি যে হাজার কথা আলোচনা করতে হবে।”

দারোগা সাহেব ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস গোপন করে বললেন, “বেশ। এই যে তুমি, মোশারফ সাহেবকে চিনতে? আগে থেকে পরিচয় ছিল?”

হাতকাটা লোকটা মাথা নাড়ালো। স্পষ্ট গলায় বলল, ” জ্বি চিনতাম। বেশ আগে থেকে পরিচয় ছিল।”

“কিভাবে পরিচয় হয়েছিল?”

“একটা অনুষ্ঠানে। তারপর থেকে যোগাযোগ আছে। নিয়মিত যোগাযোগ হয়।”

দারোগা সাহেব সরল গলায় বললেন, “পরিচিত হওয়া তো দোষের কিছু নয়। মোশারফ সাহেব, আপনি উনাকে চিনতে অস্বীকার করলেন কেন? এর পিছনে বিশেষ কোন কারণ নেই তো? নাকি আপনার ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় হচ্ছে?”

ফুফা কিছু বললেন না। ভাবলেশহীন চোখে এদিক-ওদিক তাকাতে লাগলেন। একটু খেয়াল করলে বোঝা যায় ভয়ে তার মুখ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বসার ঘরে পিনপতন নীরবতা। সবাই কেমন যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে। তুলি আন্টি উসখুস করছে। খেয়াল করলাম মতিন এক দৃষ্টিতে তুলি আন্টির দিকে তাকিয়ে আছে। নিরবতা ভেঙে ছোট দাদি বললেন, “এখানে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রেখেছেন কেন? কাজের কথা বলুন। অচেনা একটা লোককে ধরে এনে আমার ছেলেকে হেনস্তা করতে চাইছেন কেন? আপনাদের পুলিশদের উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই খারাপ।”

দারোগা সাহেব বললেন, ” আমার উদ্দেশ্য খারাপ হলে আপনার ছেলের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যেতাম। যাইহোক কাজের কথা বলি। এই যে লোকটাকে দেখছেন, সে কোন সাধারণ মানুষ নয়। বরং কুখ্যাত অপরাধী। জে’ল পালানোর রেকর্ডও আছে। এমনকি এখনও জে’ল পালিয়ে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

” অপরাধী পালিয়েছে, তাদের ধরবেন। এর সাথে আমার ছেলের কি সম্পর্ক?”

“সেই কথাটা না হয় তার মুখ থেকেই শোনেন। এই যে বলতে শুরু করেন আপনি।”

লোকটা জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলল, ” মোশারফ ভাইয়ের সাথে বেশ অনেকদিনের পরিচয়। মাঝেমধ্যে ফোনে কথা হতো। বিকেলে দেখা-সাক্ষাৎ, হালকা খাওয়া-দাওয়া। এভাবেই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হলো। আমাদের কয়েকজনের মাদকের ব্যবসা আছে। পরিচিত বাড়ার পর উনাকেও সেই দলের সাথে যুক্ত করতে চেয়েছিলাম। উনিও রাজি হয়েছিলেন। বেশ কয়েকদিন দু’জনে মিলে মাল দেওয়া-নেওয়া করেছি। ভালোই চলছিল। লাভ হচ্ছিল প্রচুর। হঠাৎ করেই মোশারফ সাহেব প্রস্তাব করলেন- একটা ছেলেকে দলে আনবেন। ছেলেটা আনা-নেওয়ার কাজ করবে। বাচ্চা ছেলে বিধায় কেউ সন্দেহ করবে না। আমিও রাজি হয়ে গেছিলাম। বেশ কয়েকদিন ধরে পুলিশ আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল। নতুন কেউ এলে আমার নিজের গা ঢাকা দেওয়ার ভালো সুযোগ হবে বিধায় একটুও অমত করিনি। ছেলেটা একদিন মাল ডেলিভারি দিয়েছিল, সমস্যা করেনি।”

আমার কেমন অদ্ভুত লাগতে আরম্ভ করলো। সেদিনের ওই পুটলির মধ্যে এসব জিনিস ছিল। আর আমি না বুঝেই ওই লোকটাকে দিয়ে এসেছিলাম। দারোগা সাহেব বললেন, “চুপ হয়ে যাওয়ার কিছু হয়নি। বলতে থাকেন।”

লোকটা একবার ফুফার দিকে তাকালো। তার দৃষ্টিতে রাগ ঝরে পড়ছে। গলার স্বর কর্কশ করে বলল, “বেশ নিশ্চিন্তে ছিলাম। হঠাৎ করে এই লোকটা আমায় কল দিয়ে বলল- একজনকে খু’ন করতে হবে। আমি প্রথমে রাজি হইনি। জে’ল পালানো আসামি হয়ে খু’নখা’রা’বি করার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু ওই পোড়া কপাল। উনি আমাকে ব্লাকমেইল করতে থাকলেন -যে কাজটা না করলে সবকিছু পুলিশকে বলে দিবেন। আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। সেজন্য উনার প্রস্তাবে রাজি হই। উনি আমাকে পরিকল্পনা বললেন, ভৈবর নদীর পাড়ে একটা বুড়ি পড়ে আছে। তাতে গিয়ে ছু’রি মা’র’তে হবে। অন্যকিছু দিয়ে মা’র’লে হবে না। ছু’রিই মা’র’তে হবে।”

ফুফু বলল, “আপনি কাজটা করেছিলেন?”

“না করে আর কি কোন উপায় ছিল? আমার লাগাম ওই লোকটার হাতে ধরা, বাধ্য হয়ে এসব করেছি।”

ছোট দাদি বললেন, “দারোগা সাহেব, এই লোকটার কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না। তাছাড়া ও নিজেই একটা অপরাধী ওর সাক্ষ্য নেওয়ার কি কেন প্রয়োজন আছে?”

দারোগা সাহেব বললেন, “অবশ্যই প্রয়োজন আছে। ভুলে যাবেন না অপরাধীরা পরস্পরের বন্ধু এবং শত্রু। আপনি যেহেতু ঘটনাটা বুঝতে পারছেন না। তাহলে আপনাকে বুঝিয়ে বলছি। আপনার গুনধর ছেলে এই ছোট্ট বাচ্চাটাকে দিয়ে মা’দক পা’চার শুরু করতে চেয়েছিল। অবশ্য শুরু করতে চেয়েছিল না বলে শুরু করে দিয়েছিল বলা চলে।”

“তার সঙ্গে এই খু’নের কি সম্পর্ক? খু’ন যে ফয়সালই করেছে তার অসংখ্য প্রমাণ আছে। ভিডিও আছে, প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী আছে।”

“এতকিছু প্রমাণ থাকার পরও ফয়সাল একদম নির্দোষ। অপেক্ষা করুন। আস্তে আস্তে সবকিছু পরিষ্কার হবে। প্রথম থেকে বলি, সবকিছু শুনলে বুঝতে পারবেন আপনার ছেলে কত বড় ঘুঘু। এমনিতেই আপনাদের পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা আছে। সবাই নিজের আখেরটা গোছাতে চান। এই অঢেল সম্পত্তির মাঝে মাত্র দু’জন লোক বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এক ফয়সাল, দুই ওর দাদি। এদের মধ্যে একজনকে মে’রে অন্যজনের কাঁধে খু’নের দোষ চাপাতে পারলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। পরিকল্পনাটাও সেই অনুযায়ী হয়েছিল। তবে মোশারফ সাহেব খুব তাড়াহুড়ো করে এই পরিকল্পনা করেছিলেন বিধায় ফাঁক থেকে গেছে। সেদিন তুলিকে পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছিল। সবাই বাড়িতে, হঠাৎ করেই ফয়সালের দাদি বাড়ির বাইরে চলে গেলেন। যেহেতু উনি বাইরে গেলে কাউকে বলে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করতেন না। তাই সকলের কাছে ব্যাপারটা অজানা রয়ে গেল। দুপুরে খাওয়ার সময় উনি মোশারফ সাহেবকে কল দিয়েছিলেন। কেন দিয়েছিলেন তা সঠিক বলতে পারছি না। উনি কল দেওয়ার এক পাঁচ মিনিট পর মোশারফ সাহেব অন্য একটা নম্বরে কল দিয়েছিলেন। আর সেই নম্বরের মালিক ওই যে দাঁড়িয়ে আছে যাতে তিনি চিনতে অস্বীকার করেছেন।”

ফুফু বলল, “তারা পরিচিত ছিল। কল দেওয়া দোষের কিছু না। এতে কিছুই প্রমাণ হয় না।”

“আপনার স্বামী কিন্তু সেই পরিচয় স্বীকার করতে চাননি। যাইহোক! এই একবার নয়। এরপর থেকে উনি ক্রমাগত একটা নম্বরের কল দিয়ে গেছেন। ব্যাপারটা অনেক এমন- এই লোকটাই রেহানা বেগমকে খু’ন করে কাঁদার মধ্যে ফেলে রেখে গেছিল। তারপর মোশারফ সাহেব ফয়সালকে নিয়ে ওই জায়গায় যান। কৌশলে ওকে দিয়ে লা’শ ঘুরিয়ে ছু’রি বের করতে বলেন। ফয়সালের বয়স কম। সরল মনে ফুফার কথা মেনে নেয়। এখানেই হয় সবথেকে বড় চাল। ফয়সাল ছু’রি বের করার সময় উনি ছবি তোলেন এবং ভিডিও করেন। সেই ভিডিও একটা অ্যাপের সাহায্যে রিভার্স করে আমাদেরকে দেখান। লোক জড় করে সাক্ষী রেডি রাখেন। উনি বুঝতে পারেননি পুলিশ উনার ছয়-নয় ধরে ফেলবে।”

দারোগা সাহেবের কথাগুলো বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু এটাই সত্যি। ফুফার সাথে যাওয়ার সময় উনি কাউকে ক্রমাগত কল দিচ্ছিলেন। বারবার বলছিলেন- কাজটা হয়েছে কি-না। ঠিকঠাক হবে কি-না। ফুফু বলল, “আপনার এই কথার কি কোন ভিক্তি আছে?”

“অবশ্যই আছে। ভিডিওটা একটু ভালো করে দেখলেই বোঝা যায়। র’ক্ত কাঁদা মাখা ছু’রি কি করে কারো শরীরে ঢোকানো হয়। তাছাড়া তর্কের খাতিরে যদি এটা ধরেও নিই যে মোশারফ সাহেব যাওয়ার আগে ফয়সাল উনাকে মে”রে”ছে, তবে তা ভুল। কারণ এটা আগেই প্রমাণিত হয়েছে যে ফয়সাল মোশারফ সাহেবের সাথেই ওই জায়গায় গিয়েছিল। তাহলে কেন উনি ফয়সালকে আটাকে চেষ্টা করলেন না? কেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিডিও করলেন? শারিরীকভাবে উনি অক্ষম নয় যে একটা বাচ্চাকে আটকাতে পারবেন না।”

হঠাৎ করে ফুফা অট্ট হাসিতে ফেলে পড়লেন। তেজী গলায় বললেন, “দারোগা সাহেব, বলতেই হয় আপনার এলেম আছে। পুলিশ হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। হ্যাঁ আপনি ঠিকই ধরেছেন। এই সব পরিকল্পনা আমার। আমিই আমার শাশুড়িকে খু’ন করিয়েছি। সেদিন হঠাৎ করে আম্মা আমায় কল দিয়েন, বললেন- উনি ভৈবর নদীর পাড়ে আছেন। আমি যেন তার সাথে দেখা করি। বুড়িটা ভীষণ চালাক। কিভাবে যেন ধরে ফেলেছিল আমি ওর নাতিকে দিয়ে মাদক ব্যবসা শুরু করেছি। আমায় হুমকি দিতে লাগলো। ব্যাপারটা আমার ঠিক হজম হলো না। কফুরকে কল দিয়ে বললাম বুড়িটাকে মে’রে দিতে। কফুর জে’ল পালানো আসামি, মাদক ব্যবসায়ী। ওর সমস্ত তথ্য প্রমাণ আমার কাছে আছে। আমার কথা শোনা ছাড়া ওর অন্য উপায় নেই। নদীর ওদিকে লোকজনের যাতায়াত নেই। কফুর বুড়িটাকে মে’রে কাঁদায় ফেলে রাখলো। তরপর যা তাই।”

ফুফু শাড়ির আঁচলে মুখ চেপে ধরলো। হয়তো সে এসব কথা বিশ্বাস করতে পারছে না। নয়তো আগামীতে কি হবে সেই চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে। কারো মুখে কোন কথা নেই। তুলি আন্টি নিজের ঘরে চলে গেলন। যাওয়ার আগে একবার মতিনের দিকে ফিরে তাকালেন। সেই দৃষ্টিতে খুব গভীর কথা লুকিয়ে আছে। কিন্তু পড়া যাচ্ছে না। মতিন মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। তার চোখে-মুখে লজ্জার ছাপ ফুটে উঠেছে।

দারোগা সাহেব বললেন, “সবকিছু ক্লিয়ার হয়ে গেল। এবার কেসটা আদালতে যাবে। সব সিদ্ধান্ত ওখানে হবে। ফয়সালের নামেও একটা কে’স হয়েছে। আদালত তা মিমাংসা করে দিবে নিশ্চয়ই। মোশারফ সাহেব চলুন। নিজ আস্তানায় ফেরত যান। এখন থেকে চোদ্দ শিকের আড়ালে আপনার বাস।”

দারোগা সাহেব থানায় যাওয়ার সময় আমাকেও সাথে নিয়ে গেলেন। সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করে জে’ল থেকে ছাড়ার নির্দেশ করে করলেন। যেন উনি আমার খুব কাছের কেউ। মানুষ যে নিঃস্বার্থভাবে এতটা সাহায্য করতে পারে, এতটা সৎ হয়, উনাকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।

দিনের আলো ম’রে এসেছে। চারদিকে অন্ধকারে ঘনত্ব বাড়ছে। দারোগা সাহেব হাসিমাখা মুখে আমার দিকে তাকালেন। সহজ গলায় বললেন, ” তোমাকে কি বাড়িতে দিয়ে আসবো?”

“হ্যাঁ, আসুন।”

“ঠিক আছে।”

অন্ধকার রাস্তায় গাড়ি চলছে। এটা আমাদের বাড়ির পথ নয়। একবার মনে হলো দারোগা সাহেবকে ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করি, পরক্ষণেই চুপ হয়ে গেলাম। এদিকে কোন কাজ থাকবে হয়তো। রাতের পরিবেশে ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালো লাগে। ফাঁকা মাঠের কোণায় এসে গাড়ি থামলো। দারোগা সাহেব বললেন, “নামো তো। একটু কাজ আছে।”

চুপচাপ গাড়ি থেকে নেমে এলাম। মাঠটা বেশ বড়। দূরে ঝোপঝাড় আছে। জায়গাটা নির্জন। লোকজন নেই। গা ছমছমে ভাব। দারোগা সাহেব বললেন, “ফয়সাল মিয়া, ভয় করছে নাকি?”

চমকে উঠলাম। নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে করতে বললাম, “না, ঠিক আছে।”

“বুঝলে এই জায়গাটা আমার খুব প্রিয় একটা জায়গা। তবে বিগত কুড়ি বছর ধরে আমি এই জায়গাটাকে ঘৃ’ণা করি।”

“মানে?”

“মানেটা খুব সহজ, আবার জটিলও বলতে পারো।”

“আপনার কথা বুঝতে পারলাম না।”

দারোগা সাহেব বরফ শীতল কণ্ঠে বললেন, “তোমার মা’য়ের নামটা যেন কি?”

দারোগা সাহেবের দিকে তাকালাম। উনি খুব ভয়ংকর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ডান হাতে একটা ছু’রি। চাঁদের আলোয় ছু’রিটা চকচক করছে।

“আপনার হাতে ছু’রি কেন?”

“লাইসেন্স করা পি’স্ত’ল দিয়ে খু’ন করতে হয় না।”

ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে করতে বললাম, “মানে?”

দারোগা সাহেব হাসলেন। সেই হাসিতে গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। ভয়ে শরীর জমে আসে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে