Monday, October 6, 2025







ভৈবর নদীর পাড় পর্ব-০৪

#ভৈবর_নদীর_পাড়
কলমে : #ফারহানা_কবীর_মানাল
পার্ট -৪

তিশা আপু পা’লিয়ে যাওয়ার মেয়ে নয়। কোন ছেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক নেই। থাকতেও পারে না। অন্তত আমার এমন মনে হয় না। দীর্ঘদিন ধরে আপুকে দেখছি। একবারের জন্যও মনে হয়নি এই মেয়ে প্রেম করতে পারে। বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকা মেয়েদের খুব সহজে প্রেম হয় না। তারা গল্প উপন্যাসের নায়ক খুঁজে বেড়ায়। সেই স্বপ্নের পুরুষকে খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে যায়। যে ছেলেকে দেখে তাকেই কোন না কোন উপন্যাসের নায়ক বানিয়ে ফেলে। উৎসাহ নিয়ে দু’জনের চরিত্র মিলিয়ে দেখে এবং হতাশ হয়। বাস্তবে উপন্যাসের চরিত্র পাওয়া খুব মুশকিলের কাজ। কাজেই আমার মনে হচ্ছে মনিরা আপু মিথ্যা বলছে। কেন বলছে তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। হয়তো তিশা আপুর নিজেই উনাকে শিখিয়ে পড়িয়ে পাঠিয়েছে। উনি এখানে এসে আপুর শেখানো কথাগুলি তোতা পাখির মতো আওড়াচ্ছে। কয়েক মিনিট বাদে দেখা যাবে আপু ফিরে এসেছে। তার মুখ হাসি-হাসি। বাড়ির সবাইকে চমকে দিয়েছে ভেবে মনে মনে খুব মজা পাচ্ছে।

শেষ পর্যন্ত আমার ধারণাই ঠিক হলো। মনিরা আপু বের হয়ে যাওয়ার পরপরই তিশা আপু বাড়ি ঢুকল। হাসি-হাসি মুখ করে বলল, “সবার জন্য ডালপুরি নিয়ে এসেছি। দোকানদার বেশ ভালো মানুষ। পুরির সাথে চাটনিও দিয়েছে। মা একটু চা বানিয়ে দেবে? ডালপুরির সাথে চা। চমৎকার কম্বিনেশন!”

ফুফু বিস্মিত গলায় বলল, “তুই এখানে কেন এসেছিস?”

আপু স্বাভাবিক গলায় বলল, “এখানে আসব না তো কোথায় যাব?”

“যে ছেলের হাত ধরে চলে পালিয়ে গিয়েছিলি তার কাছে যাবি। এ বাড়িতে তোর কোন জায়গা নেই।”

“অদ্ভুত কথা বলো না তো মা। আমি কেন কোন ছেলের সাথে পালাতে যাব?”

“মনিরা যে বলল- তুই পালিয়ে গেছিস? ছেলেটা তোর সাথে একই ক্লাসে পড়ে।”

“আচ্ছা মা! মনিরা বলল আর তোমরা মেনে নিলে? আমার ওপর কি তোমাদের একটুও বিশ্বাস নেই?”

ফুফা চেয়ারে বসে পা নাড়াচ্ছিলেন। তিনি স্বাভাবিক ভঙ্গিতে উঠে দাঁড়ালেন। কোমল গলায় বললেন, “আমার বিশ্বাস ছিল। মনিরাকে যা বলার বলে দিয়েছি। চিন্তা করিস না। তোর মা একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল আর কি! পা’প থাকলে তো শা’স্তির ভয় পেতেই হবে। যাইহোক তুই ঘরে যা। ফ্রেশ হয়ে কিছু মুখে দে।”

তিশা আপু শান্ত ভঙ্গিতে ডালপুরির প্যাকেট দাদির হাতে দিল। তারপর স্বাভাবিক পায়ে নিজের ঘরের চলে গেল। দাদি বললেন, “আজকালকার ছেলে-মেয়েরা হয়েছে বটে। এক নম্বরের বে’য়া’দ’ব।”

িহপওহহিজহডিাফুফু কিছু বলল না। চোখের পানি মুছে কঠিন মুখে তাকিয়ে রইল।

সূর্য ডুবছে অনেকক্ষণ। এখনও সন্ধ্যার নাস্তা হাতে পৌঁছায়নি। আপু ডালপুরি নিয়ে এসেছিল। বেশি না হলেও একটা অন্তত আমার পাওয়ার কথা। পাইনি। বাড়ির পরিবেশ থমথম হয়ে আছে। ফুফু আপুকে অনেক কথা শুনিয়েছে। গায়ে হাত তুলেছ পর্যন্ত। আমার কাছে ব্যাপারটা একটুও ভালো লাগেনি। বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। তবে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে যাইনি। এ বাড়িতে আমার মতামতের গুরুত্ব নেই বললেই চলে। তাছাড়া এমনিতেও ফুফু মেজাজ তেঁতো হয়ে আছে৷ আমি কিছু বললে আর রক্ষে থাকত না।

দাদি দু-কাপ চা হাতে নিয়ে আমার ঘরে আসলেন। অসম্ভব কোমল গলায় বললেন, “পড়াশোনা করছিস নাকি?”

“না। এমনি শুয়ে আছি। ভালো লাগছে না।”

“চা নিয়ে এসেছি। চা খেয়ে দেখ। ভালো লাগবে।”

“আচ্ছা দাও।”

বিছানায় উঠে বসলাম। হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিতে নিতে বললাম, “দাদি তোমার শরীর ভালো?”

“বুড়ো বয়সে শরীর ভালো থাকে না। তোর পড়াশোনা কেমন চলছে? ক্লাস হয়?”

“পরীক্ষা হচ্ছে। মূল্যায়ন যাকে বলে। বই দেখে লেখালেখি।”

“কেমন হচ্ছে?”

“খুব বেশি ভালো হচ্ছে না। সবাই আগে আগে প্রশ্ন পেয়ে যাচ্ছে। উত্তরও পাচ্ছে। আমি কিছু পাচ্ছি না।”

“এসব কোথায় পাওয়া যায়?”

“ওইতো অনলাইনে পাওয়া যায়। ইউটিউবে পরীক্ষার আগের দিন রাত নয়টায় উত্তরসহ প্রশ্ন পাওয়া যায়।”

দাদি আৎকে উঠলেন। হয়তো তার কিছু বলার ছিল। বলতে দিলাম না। প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে বললাম, “তুমি কি কিছু বলবে?”

“হ্যাঁ বলব। বলব বলেই তোর কাছে আসা। দরজা খোলা। দরজা ভেজিয়ে দিয়ে এসে বোস। অনেক কথা আছে।”

উঠে গিয়ে দরজা ভেজিয়ে দিলাম। দাদি শীতল গলায় বললেন, “চেকে সই করেছিস কেন?”

“ফুফু টাকা চাইছিল। ফুফা নাকি কার কাছে দেনা আছে। আমাকে সই করতে বলল তাই করেছি।”

“ফুফার দেনার ব্যাপার ফুফা বুঝবে। তোকে ভাবতে হবে না। তুই সই করলি কেন?”

“চিন্তা করো না। আমি সব জেনে-বুঝেই সই করেছি। অল্পবয়সী ছেলের সই নিয়ে ওরা টাকা তুলতে পারবে না। ব্যাংক বাচ্চাদের সইয়ের গুরুত্ব দেয় না। সাথে একজন অভিভাবক লাগবে। আর ফুফু তো তোমাকে সই করতে বলতে পারবে না।”

দাদি চমকে উঠলেন। নিজেকে সামলে নিতে নিতে বললেন, “তুই এতো চালাক হলি কবে? দেখে তো হাঁ’দা মনে হয়।”

“সব জিনিস দেখা দিয়ে বিচার করা যায় না দাদি। চোখে দেখা সত্যও কখনও কখনও মিথ্যে হয়ে যায়।”

“ভালোই বলেছিস। শোন দাদু ভাই, লাভের গুড় খাওয়া পিঁপড়কে কখনও বিশ্বাস করতে নেই। ওরা তোকে একদম নিঃস্ব করে দিতেও দু’বার ভাববে না।”

“আচ্ছা দাদি! আমি ওদের কি ক্ষ’তি করেছি? ওরা কেন আমার সাথে এমন করে? বাবা থাকতে ফুফু আমায় কত ভালোবাসত আর এখন চোখেই দেখতে পারে না। সবসময় আমাকে দু চোখের বি’ষ মনে করে।”

“এই পৃথিবীর মানুষ এতিমদের গুরুত্ব দেয় না দাদু ভাই। চিন্তা করিস না। আল্লাহ আছেন। তিনি সব ঠিক করে দিবেন। ভরসা রাখ।”

“এসব ভাবতে ভালো লাগে না।”

দাদি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। অসম্ভব কোমল গলায় বললেন, “আমি বেঁচে থাকতে ওরা কেউ তোর কোন ক্ষ’তি করতে পারবে না। চিন্তা করিস না দাদু ভাই।”

“ফুফু সেদিন জামদানী শাড়ির ব্যাপারে কি বলছিল? তুমি সত্যিই ওই শাড়ি কিনতে চেয়েছিল?”

“হ্যাঁ। আগামী শুক্রবার আমার মামাতো ভাইয়ের নাতির বিয়ে। দাওয়াত করেছে। ওকেই দিতে চেয়েছিলাম।”

“তাহলে তোমার কথা বলল কেন?”

“কাকে দেবো সে কথা বলেছিলাম না। তাই হয়তো ভেবে নিয়েছে আমার জন্য বলেছি।”

“আচ্ছা ফুফুদের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল কি নিয়ে?”

“কিসব টাকা পয়সা নিয়ে। তুই ওদিকে খেয়াল দিস না। মন দিয়ে পড়াশোনা কর। সবসময় মনে রাখবি দুনিয়ার বুকে তুই একদম একা। অন্ধকারে তোর ছায়াও তোকে ছেড়ে চলে যাবে।”

“মনে রাখব।”

“শিমুল আর তালেবের থেকে দূরে থাকবি। ওদেরও খুব একটা সুবিধার মনে হয় না।”

“আচ্ছা থাকব।”

“তুলি বলছিল তোকে নিয়ে কার জন্মদিনে যাবে। যাবি না। ওদের কারো সাথে কোথাও যাবি না। আমায় না বলে মোশারফের সাথে মাছ ধরতে গিয়েছিস কিছু বলছি না। এরপর থেকে আর যাবি না।”

দাদিকে চিঠির ব্যাপারে বলে দিতে ইচ্ছে করল। কিন্তু বললাম না। দাদি শুনলে অযথা চিন্তা করবে। বুড়ো বয়সে অতিরিক্ত টেনশন নেওয়ার কোন মানে নেই। দাদি কিছু বলতে যাচ্ছিলেন- ফুফু এসে দরজা খুলল। খটখটে গলায় বলল, “রাত হয়েছে। খেতে আসো।”

দাদি উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললেন, ” আমার খাওয়ার দেরি আছে। গ্যাসের ওষুধ খাওয়া হয়নি। ফয়সাল তুই খেতে যা। বেশি রাত করিস না।”

উঠে দাঁড়ালাম। হঠাৎই খেয়াল হলো আমি খুব সাবধানে হাঁটছি। বেড়ালের মতো নিঃশব্দে পা ফেলার চেষ্টা করছি। যেন পায়ের নিচের মাটি নরম। একটু জোরে পা ফেললে ভেতরে ঢুকে যাব। রান্নার আয়োজন ভালো হয়নি। দু’দিনের বাসি ডালের সাথে পাটশাক ভাজি। ডালটা কেমন টকটক হয়ে গেছে৷ মুখে দেওয়া যাচ্ছে না। সবচেয়ে কোণার চেয়ারটা আমার জন্য বরাদ্দ। ফুফা আমার সামনের চেয়ারে খেতে বসেন। আজও বসেছেন। তার খাবার জন্য আলাদা ব্যবস্থা হয়েছে। যবের আটার রুটির সাথে আলুভাজা আর ডিম। ফুফা খুব তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছেন। খাওয়ার মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকাচ্ছেন। তাকানোর ধরণটা অদ্ভুত। বিরক্ত লাগে দেখতে।

ফুফু বলল, “শিমুল তোর ভাত খাওয়ার দরকার নেই। রুটি খা। ভাত বেশি নেই। সবার হবে না।”

শিমুল ভাত খেলো না। তিনটে রুটি সাথের একটা ডিম নিয়ে খেতে বসল। তালেবও অত্যন্ত সাবধানে খাবার খাচ্ছে। চো’রেরা চু’রি করার সময় এমন সাবধানতা অবলম্বন করে। খাওয়া প্রায় শেষের দিকে তখন দাদি এলেন। আমার থালার দিকে তাকিয়ে বললেন, “কি দিয়ে খাচ্ছিস?”

“ডাল আর পাটশাক।”

“তোকে ডিম ভাজা দেয়নি?”

আমি শুকনো মুখে ফুফুর দিকে তাকালাম। ফুফু চোখ গরম করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। দাদি বললেন, “কাল থেকে তোমরা আলাদা রান্না করবে। আমি আর ফয়সাল তোমাদের হাঁড়িতে খাব না।”

ছোট দাদি বিস্মিত হওয়ার ভান করে বললেন, “কেন বেয়ান? আমাদের সাথে খেতে কি সমস্যা?”

দাদি কঠিন মুখে বললেন, “কি সমস্যা তা আপনি ঠিকই বুঝতে পারছেন। শুধুশুধু ভান করবেন না।”

ফুফু রেগে গিয়ে বলল, “মা তুমি কিসব কথা বলছ?”

“কি বলছি তা কি তুই বুঝতে পারছিস না? সবার জন্য ডিম ভাজা হয়েছে। ফয়সালের ডিমভাজা কোথায়?”

“সবার জন্য ডিম ভাজা হয়নি মা। তোমার জামাইকে রুটির সাথে ডিম দেওয়া হয়েছে। ভাত কম বলে শিমুল রুটি খাচ্ছে।”

দাদি বরফ শীতল গলায় বললেন, “বয়স বাড়লেও চোখ ঠিক আছে৷ তালেবের ভাতের নিচের ডিম ভাজা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। হলফ করে বলতে পারি বাকিদের জন্যও ডিম ভাজা হয়েছে।”

ফুফু আমতা আমতা করে বলল, ” একটা দিন ঝামেলার মধ্যে রান্না হয়নি বিধায় তুমি হাঁড়ি আলাদা করতে চাইছ? আমরা কি খুব বেশি খাই? তোমার জামাই কি বাজার করে না?”

“আমার মনে হয় না জামাই নিজের টাকায় বাজার করে। প্রতি মাসে দু’জনের খাওয়া বাবদ বিশ হাজার টাকা করে নিলে নিজের পকেট থেকে এক পয়সাও খরচ হওয়ার কথা না।”

ফুফা বললেন, “আম্মা, আপনি ভুল ভাবছেন। আজ-কাল জিনিসপাতির দাম অনেক বেড়ে গেছে। তাছাড়া আপনার ওষুধের পিছনেই পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়।”

“দু’পাতা গ্যাসের ওষুধের দাম পাঁচ হাজার টাকা? কোন কোম্পানির ওষুধ কেনা হয়?”

ফুফা মিইয়ে গেলেন। ফুফু তেঁতো গলায় গা’লা’গা’ল করতে করতে নানান কথা বলতে লাগল। অশ্রাব্য কুৎসিত ধরনের কথা। সেসব কথায় দাদির কোন হেলদোল দেখা গেল না। তিনি স্বাভাবিক ভঙ্গিতে খাওয়া শেষ করে উঠে গেলেন। যাওয়ার আগে বললেন, “শোনো জামাই। আমাদের জন্য একটা রান্নার লোক ঠিক করবে। আর নিচতলার দু’টো ঘর খালি করে দেবে। বাসাভাড়া দেব।”

ফুফা মাথা নাড়লেন। এর অর্থ হ্যাঁ হতে পারে আবার না-ও হতে পারে। মুখে কিছু বললেন না। বাকি সদস্যদের খুব বিচলিত মনে হতে লাগল। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে রাতেও ফুফু সাথে ফুফার ঝগড়া হবে। চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুমানোর জো থাকবে না। অশান্তি!

রাত এগারোটার দিকে তিশা আপু আমার ঘরে এলো। হাতের ইশারায় চুপ থাকতে বলে বিছানার পাশে এসে বসল। নিচু গলায় বলল, “তোকে আমার হয়ে একটা কাজ করতে হবে।”

“কি কাজ করতে হবে?”

“একটা চিঠি দেখে দেখে নকল করে দিবি। বদলে তোকে কিছু পারিশ্রমিক দেব।”

“কার চিঠি? কিসের চিঠি? প্রেমপত্র?”

আপু আমার মাথায় গাট্টা মে’রে বলল, “এসব কথা কোথা থেকে শিখেছিস? প্রেমপত্রের তুই কি বুঝিস?”

“ইসসস! আমি কি এখনও বাচ্চা আছি নাকি? তুমি জানো আমাদের ক্লাসে কতজন প্রেম করে? বাথরুমের দরজার, দেওয়ালে কিসব বাজে বাজে কথা লেখা থাকে। পড়লে তোমার হাত পা অবশ হয়ে যাবে।”

“কি বলছিস তুই?”

“সত্যি কথা বলছি। ক্লাসের ফাঁকে এ ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। হাসার ভঙ্গিটা অ’শ্লী’ল মনে হয়।”

আপু বিব্রত মুখে এদিক-ওদিক তাকাতে লাগল। খানিকটা সময় নিয়ে স্বাভাবিক হয়ে বলল, “এসব কথা বাদ দে। কাজের কথা শোন।”

“বলো।”

“বলব। তার আগে বল কাউকে বলবি না।”

“আচ্ছা বলব না।”

“আমায় কথা দিচ্ছিস তো?”

“হু, দিচ্ছি।”

“আজকে সব বন্ধু-বান্ধব মিলে ট্রুথ আর ডেয়ার খেলছিলাম। আমি ডেয়ার নিয়েছি। ওরা বলেছে কালকের মধ্যে কেন ছেলের কাছ থেকে প্রেমপত্র লিখে আনতে হবে। এখন তুইই আমার ভরসা।”

ছোট সরু করে বললাম, “মনিরা আপু কি ডেয়ার কমপ্লিট করতে এসেছিল?”

“হ্যাঁ রে। কাউকে বলবি না তো?”

“না বলব না।”

“ডেয়ার পূরণ করতে না পারলে ওদের ট্রিট দিতে হবে। আমার হাতে কোন টাকা-পয়সা নেই। প্লিজ ভাই একটু লিখে দে না!”

“আচ্ছা দাও। লিখে দিচ্ছি। কাগজ এনেছ?”

আপু মুখ টিপে হাসল। এই বাড়িতে একমাত্র তিশা আপুর সাথেই আমার একটা সহজ সম্পর্ক আছে। কখনও কিছু প্রয়োজন হলে আপুকে বলতে পারি। ইসস! আপু যদি আমার নিজের বোন হতো!
দু’পাতা প্রেমপত্র লিখতে গিয়ে আমার হাত ব্যাথা গেছে। চিঠির ভেতর কিসব কঠিন কঠিন ভাষা। চুম্বন, আলিঙ্গন, প্রিয়তমাষু আরও কত কি!
ভোর রাতের দিকে একটা স্বপ্নে ঘুম ভেঙে গেল। বি’ভৎ’স ভ’য়ংক’র স্বপ্ন। লাফিয়ে বিছানায় উঠে বসলাম। সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে। বুকের ভেতর ধড়ফড় করছে। স্বপ্নে সেই অচেনা লোকটা দেখলাম। যার একটা হাত কা’টা। লোকটা আমায় নৌকায় করে মাঝ নদীতে নিয়ে গেল। একটা ধা’রা’লো ছু’রি দিয়ে পেটের এফোড় ওফোড় করে দিলো। বুকে খুব ব্যাথা করছে। কেমন যেন দম আঁটকে আসছে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে মনে হয়।

চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ