বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ৯

0
1945

বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ৯
জামিয়া পারভীন তানি

“ সত্যি যাচাই ক্ষমতা তুমি হারিয়ে ফেলেছো নাইম। আজ তোমাকে কিছু কথা বলি, যেগুলো কেউ কখনো জানেনা। ”
নাইমের আম্মু নাইমের উদ্দেশ্যে কথা গুলো বলে।
“ বলে ফেলো, আমি শুনছি। ”
“ তূবা কে ভালোবাসতে আমি বুঝিনি, বিয়ে করেছিলে তাও বুঝিনি, কেনো বিদেশে গিয়েছিলে তাও বুঝিনি৷ আমি তো মা হবার ই যোগ্য নই। তবে কিছু গোপন কথা জানি, যা প্রকাশ করা জরুরী।
যখন তূবা তোমার ফুপির গর্ভে মাত্র একমাস তখন তূবার আব্বু গুলি খেয়ে মারা যায়। তোহা মানসিক আঘাতে ঘরবন্দী হয়ে গিয়েছিলো। কারণ ওরা বিয়েটাই করেছিলো লুকিয়ে। কারো কাছে বিয়ের কথা প্রকাশ করতে পারেনি, বাচ্চার কথা কিভাবে প্রকাশ করবে! তাও যখন হাজবেন্ড আর দুনিয়ায় নেই তখন!
আমি বুঝে গেলাম মেয়ে হিসেবে, লুকানোর চেষ্টা করে লাভ পাইনি। ৭ মাস পর ধরা পড়ে যায়, তোমার বাবা তোহা কে ইচ্ছে মতো পেটায়। তোহা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়, সাথে সাথে হসপিটালে নিয়ে যাই। তূবা কে অপরিপক্ক ভাবে জন্ম দিয়ে তোহার মৃত্যু হয় । তূবা তোমার ফুপির ই মেয়ে, তবে বড় ফুপি নয় ছোট ফুপির মেয়ে। যে ছোট ফুপিকে তুমি চিনোই না। তূবা কে তোমার বড় ফুপি নিজের মেয়ের মতই লালন করেছে, কখনো মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি। তবে তোমার বাবা কখনো তূবাকে মেনে নিতে পারেনি, তার ধারণা তূবার জন্যই নিজ বোন কে হত্যা করেছে সে। ”

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


“ তুমি এসব কি বলছো? একজন ভাই কিভাবে তার বোন কে হত্যা করেছে? ”
“ ঠিক যেভাবে তুমি তূবাকে পিটিয়েছো সেভাবেই। তূবা মরলে মরে যাক, অন্তত তূবার পেটের বাচ্চাকে তো আর কেউ জারজ বলবেনা!”

নাইম যেমন অবাক হয়ে যায়, তেমন খুশি ও হয়। হাজার হোক সে বাবা হতে চলেছে। তবুও মা কে জিজ্ঞেস করে,
“ তূবা এখন কেমন আছে?”
“ ওকে তুই যেভাবে মেরেছিস তাতে ওর যেমন থাকার কথা ও তেমনই আছে। ”
“ ও যেমন অন্যায় করেছে, ওর শাস্তি ই ওকে দিয়েছি আম্মু। এতে ওকে বড় করে দেখার মতো কি হয়েছে। ”
“ একবার ও কি যাচাই করেছিলি? সত্যিটা কি জানার চেষ্টা কি করেছিলি?”
“ সত্য কি? বলো? ”
“ তূবা কে তোমার বাবা অবৈধ মেয়ে ভাবে। তাই উনি কখনো চায়নি তূবা তোমার বউ হোক। যখন তোমার চাচ্চু বিয়ের কথা তোমার বাবা কে বলে, তখন ই তোমার বাবা তূবা কে সরানোর চেষ্টা করে।
যার ফলে তূবাকে এই মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে।
তূবাকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়, তূবা ঘুমিয়ে পড়লে ওর ঘরে একটা ছেলে কে ঢুকিয়ে দেয় । কিছু ছবি তোলে, আর মেয়েটাকে বানায় চরিত্রহীনা, শুধুমাত্র তোমার চোখে। অন্য কেউ এই ঘটনা জানেনা। বিনিময়ে শোভন নামের ছেলেটার সাথে তূবার বিয়ে ঠিক করে রাখে তোমার বাবা। কারণ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে সম্মান চলে যেতো উনার, তাই চুপেচাপে ঘটনা ধামাচাপা দেন উনি। তূবার বাবা মা ( মানে বড় খালা খালু) নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে বিয়েয়ে রাজি হয়ে যায়, বিয়েও ঠিক করে তূবার অনার্স শেষ করার পর। কারণ তূবা তখন অনেক ছোট ছিলো, ওত ছোট মেয়েকে বিয়ে দিলে কেস খেতে হতো তখন। তূবা ওই সব ঘটনার কিছুই জানতোনা, তোমার বাবাই বলতে নিষেধ করে দিয়েছিলো। তূবা কে বেশী ঘাটলে সব সত্য বেরিয়ে যেনো না যায়, সেটার ভয় এ। বিয়ে ঠিক করার কথাও তূবা জানতো না।
Jamia Pervin Tani

তূবার ঘুম ভাঙলে ওকে বলা হলো, তুমি লুসি নামের মেয়ের সাথে এনগেজডমেন্ট করেছো। এতেই ওর মনে তোমার জন্য ঘৃণা তৈরি হয়। সব কিছু ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে। তুমিও ভুল বুঝে বিদেশে চলে গেলে আর সে ভুল বুঝে এই বাসাতেই কখনো এলোনা। গ্রামেই পড়াশোনা শেষ করে। সাথে তোমাকেও কখনো দেখেনি এটা ভেবে মনে মনে শান্তনা দেয় নিজেকে।

গ্রামে এইএসসি দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা তে কপাল দোষে এই ভার্সিটি তেই চান্স পেলো । ভর্তি হলো ঠিকই, কিন্তু এখানে আসতো না আর। তানহা, মানে তোর বড় ফুপি মাঝে মাঝে আসতো বেড়াতে ।
আমি মাঝেমধ্যে ওদের বাসায় নূরা কে নিয়ে যেতাম। কথা হতো, সখ্যতা ও গড়ে নূরার সাথে। একটা বছর ভালোভাবে ই পার হয়ে গেলো। হটাৎ ওর বাবা মানে খালুর ট্রান্সফার এর জন্য ওকে কিছুদিন আমাদের বাসায় এনে রাখি। ও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হোস্টেল ঠিক করে ওখানে চলে যায়। বুঝতাম না কেনো গিয়েছিলো, এখন বুঝি তোর স্মৃতি ভুলে থাকার জন্য চলে গিয়েছিলো।

হটাৎ নূরার বিয়ে, তোর আগমন, তূবা কে তুই জোর করে বিয়ে করলি, আর আজ এই দিন দেখতে হচ্ছে। খুব ভালো করেছিস নাইম, তোর ভুলের জন্য আজ মেয়েটা মরতে বসেছে। ”
একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে নাইমের আম্মু।

এতো গুলো সত্য নাইম হজম করতে পারে না। নাইমের দুচোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। এতো টা পাষাণ সে কিভাবে হতে পারলো! তূবা ওকে কি কখনো ক্ষমা করতে পারবে! এক বুক শঙ্কা বুকের মাঝে নিয়ে তূবার কাছে রওনা হলো নাইম।

চলবে……

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে