বেইমানীvsলাভ♥ পার্ট_১০ ( শেষ)

3
3707

বেইমানীvsলাভ♥ পার্ট_১০ ( শেষ)
#জামিয়া_পারভীন

রুমেসা রাত পর্যন্ত অনেক কাদে ?সৌরভের এমন ব্যবহার এ।
রাত্রে খাবার সময় আম্মা সবাই কে নিচে ডাকে, রুমেসাও গেলো।

…. কি ব্যাপার রঙিন শাড়ি পড়েছো কেনো।
এখুনি গিয়ে চেঞ্জ করে আসো।

…. বাচ্চা মেয়ে থাক না আম্মা ( নিরা)

…. না থাকবে না, এই কুলক্ষী মেয়ে আবার কাকে খাবে।
ওর কি রঙ লেগেছে, রঙিন পোশাকে যেন আর না দেখি।

…. রুমেসা কাঁদছে, কিছুই বলার নাই তার।

…. আম্মা এসব বাদ দাও ভালো লাগেনা, ও যেমন ইচ্ছা থাকুক ( সৌরভ)

…. যা ভালো লাগে কর তোরা।

এভাবে দিন যাচ্ছে পার হয়ে, রুমেসা শুধু রান্না করে আর সবাই কে সার্ভ করে।
অন্যরা নিজেদের মতো চলছে।
সৌরভ মাঝে মাঝে রুমেসার কাছে যায়, কিন্তু রুমেসা আর সৌরভের সাথে কথা বলে না।
সৌরভ কে এটা খুব কাদায়।

কিছুদিন পর দুপুরে খাবার পরিবেশন করার সময় খাবারের পাত্র সহই রুমেসা অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যায়।

সৌরভ দৌড়ে এসে তোলে কিন্তু জ্ঞান ফিরে আসেনা।

ওকে নিজ ঘরে শুইয়ে ডাঃ ডাকে সৌরভ।

বাসার সবাই পেরেশান হয়ে যায়, কি হলো সেটা নিয়ে।

রুমেসা কে এক্সাম করে ডাঃ বলে রুমেসা প্রেগন্যান্ট।

এতে সৌরভ মনে মনে খুশি হলেও আম্মা চটে যায় ।

…. আমার ছেলে মরার এতো পরে কার পাপ মাথায় নিছে বলে কপাল চাপড়াতে থাকে আম্মা।

…. আম্মা এসব বলছেন কেনো, পাপ কেনো হবে।

…. ছেলে মরার দুই মাস পর বউ এক মাসের প্রেগন্যান্ট।
ওর উপর গজব পড়ুক।

…. আম্মা আপনাকে অনেক কিছু বলা লাগবে, কিছুই জানেন না।

…. কি জানিনা, আর কি দেখবো আমি। এর চেয়ে আল্লাহ তুলে নাও।
আর সহ্য করতে পারছিনা আমি এইসব।

…. আম্মা, রুমেসার সাথে আসিফ ভাইয়ের কখনো বিয়ে হয়নি।

…. কি যা তা বলছিস এইসব, তাহলে আমার মরা ছেলে এই মেয়ের সাথে এক ঘরে পাপ করেছে।

…. না রুমেসা ওমন মেয়ে না।

…. আজ মুখে চুনকালি মাখিয়ে বলিস রুমেসা ওমন না।
লোক সমাজে মুখ দেখাবো কেমন করে।

…. রুমেসা কে ভাই বিয়ে করেনি, কখনো স্পর্শ ও করেনি।

…. তাহলে বাচ্চা?

…. বলতে দাও, অনেক কথা বলার আছে।

সবাই শুনছে সব কথা, রুমেসাও মাথা নিচু করে বসে আছে।

আসলে ও আমার স্ত্রী , ওকে আমি বিয়ে করেছিলাম ১ মাস আগে, ভাই মরার পর।

আমি ওকে প্রথম দেখা থেকেই ভালোবাসি।

এরপর ওর রোজ রাতে কান্না আমাকে পেরেশান করতো।

তখন খোজ নিয়ে জানি সে ভাইয়ের বউ না।

ভাই ওকে কন্টাক্ট এ নিয়ে এসেছিলো এই বাসায়।

আলাদা থাকতো ওরা, সেটাও লক্ষ করেছিলাম অনেকবার।

ওর বাবা মা ওকে ভুল বুঝে বের করে দিছে বাসা থেকে সব ভাইয়ের মিথ্যা নাটকের জন্য।

ওর এই দুনিয়ায় আমি ছাড়া কেউ নাই।

ও আমাকে ভালোবাসতো কিনা জানিনা।

কিন্তু ওকে আমার কাছে আমি সব সময় চাইতাম।

সেদিন ও আমার সাথে হোটেলে ছিলো গাড়ি খারাপ হয়েছিলো তাই। ওর কোন দোষ ছিলোনা, আমি ওকে কাছে পাবার জন্য এমন করেছিলাম ইচ্ছা করেই।

ওকে কাছে পেলেও ওর সাথে মিলামিশা করিনি।

সেদিনের এই কথা ভাই জেনে গেছিলো, তাই রুমেসা কে আঘাত করে বেড়িয়ে যায় ঘর থেকে।

হয়ত পছন্দ করতে শুরু করেছিলো রুমেসা কে।

কিন্তু এই ভাবে রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যাবে সেটা বুঝিনি।

ভাইয়ের মৃত্যুর এক মাস পর ওর কাছে কিছু পেপারে সাইন নিই।

সেখানে বিয়ের কাগজ ও ছিলো।

ওকে আমি অনেক ভালোবাসি, ওকে ছাড়া আমি বাচতে পারবোনা।

গতকাল অর বাসায় গেছিলাম আমি, ওর বাবা মা কে বুঝিয়ে সব বলেছি।

ওরা ভুল বুঝে কান্নায় ভেঙে পড়েছে।

আমি রুমেসা কে আবার বিয়ে করতে চাই।

এতো ঘটনা কেউ জানবে না, শুধু পরিবারের সবাই জানবে রুমেসা পবিত্র মেয়ে।

আর সবাই জানবে ভাইয়ের বিধবা বউ কে বিয়ে করেছি।

এতে পরিবার এর সম্মান বাচবে, সবাই ভালো থাকবে।

সবাই এইসব শুনে থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, মেনে নিতেই হলো সবাই কে।

পরের দিন রুমেসার বাবা মা আসে, বিয়ের সব ঠিক করতে।

রুমেসাও বাবা মা কে পেয়ে যেন সৌরভের উপর ভালোবাসা আবার জন্ম নিলো।

অনেক আয়োজন করে দুইজনের বিয়ে হয়।

বাসর রাত থেকে রুমেসা সৌরভ কে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করে সব রাগ অভিমান ভুলে।

3 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে