Monday, October 6, 2025







বর্ষণের সেই রাতে ❤ পর্ব- ৪৪

বর্ষণের সেই রাতে ❤
পর্ব- ৪৪
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

.
রিকের মেজাজ খুব বেশিই চটে আছে। সাহস কী করে হয় ঐ মেয়েটার ওভাবে খাবার ফেলে দেওয়ার? এতো বাড়াবাড়ির কী আছে? ও যতবার মনে মনে ঠিক করে যে অনিমাকে কষ্ট দেবেনা ঠিক ততবার মেয়েটা এমন কিছু করে যে ও বাধ্য হয় অনিমার সাথে মিস বিহেভ করতে। ওর কাছে থাকতে সমস্যা কোথায় ? ওর ভালোবাসাটা কী চোখে পরেনা ওর? সারাদিন শুধু আদ্রিয়ান নাম জপতে থাকে। কী এমন আছে আদ্রিয়ানের মধ্যে? এসব ভাবতে ভাবতে বেডে হেলান দিয়ে বসে ড্রিংক করছে রিক। কিছুই ভালো লাগছেনা। এখন তো অনিমা ওর কাছে আছে কিন্তু মনের দিক থেকে শান্তি তো পাচ্ছেই না আরো অশান্ত হয়ে উঠছে ওর মন। মেয়েটাকে নিজেই কাঁদায় কিন্তু মেয়েটা যখন কাঁদে তখন ওর নিজেরই খারাপ লাগে। আর তাই ওর কাছ থেকে দূরে চলে আসে। ভাবনার মাঝে হঠাৎই ওর ফোনে কল এলো, রিক ফোন রিসিভ করে কানে নিয়ে বলল,

— ” হ্যাঁ মামা বলো। ”

কবির শেখ আমোদিত গলায় বললেন,

— ” ওদিক‍ে সব ঠিক আছে তো? মানে কোনো সমস্যা নেই তো?”

রিক গ্লাসটা রেখে একটা শ্বাস ফেলে বলল,

— ” না সব ঠিকই আছে। কিন্তু অনি একটু অদ্ভুত ব্যবহার করছে। খুব এবনরমাল।”

এটা শুনে কবির শেখ বাঁকা হাসলেন। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন,

— ” আরে এতো ভেবোনা। আসলে হুট করেই এভাবে তুলে এনোছো তো তাই একটু হাইপার হয়ে গেছে। আর তোমাকে আগেই অনেক বার বলেছি যে ওর প্রতি প্রেমে গদগদ হয়ে যেওনা। তাহলেই হাতের বাইরে চলে যাবে। ও তোমাকে যেই ভয়টা পায় সেই ভয়টা বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাই প্রেম টা ভেতরেই চেপে রেখে রাফ হওয়ার চেষ্টা করো। জানি ব্যাপারটা তোমার জন্যে সহজ নয়। তবে যা বলছি তা তোমার ভালোর জন্যেই বলছি । বুঝছো তো?”

রিক নিচু কন্ঠে বলল,

— ” হুম।”

রিকের উত্তরে কবির শেখ একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন । তারপর বললেন,

— ” তা দেশে কবে আসছো?”

রিক একটু গলা ঝেড়ে বলল,

— ” না মামা এখন না। আদ্রিয়ান ছেলেটা খুব চালাক। কোনো চান্স নিতে চাইনা আমি। আগে তুমি ওকে পৃথিবী থেকে সরানোর ব্যবস্হা করো ”

কবির শেখ বললেন,

— ” তা তো করছিই। অনিমা নেই তাই এই মুহুর্তে মানসিকভাবে স্টেবেল নয় এখন। এটাই সেরা সুযোগ। রাখছি তাহলে?”

রিক সম্মতি জানিয়ে ফোন রেখে দিয়ে চোখ বন্ধ করে আবারও হেলান দিলো। ও জানেনা কোনটা ঠিক কোনটা ভুল। ও আদোও যা করছে তা কতোটা ঠিক। ও শুধু এটুকুই জানে যে ওর অনিমাকে চাই সেটা যেকোনো কিছুর মূল্যে। তার জন্যে ওকে যা করতে হয় করবে।
আর রিকের সেই ভাবনার কারণেই হয়তো কবির শেখ এর মন্ত্রণা কতোটা ঠিক বা ভুল সেটা বিবেচনা করার ইচ্ছেটাও ওর মধ্যে নেই।

______________________

রাতে অনেক চেষ্টা করেও একটুও ঘুমোতে পারেনি আদ্রিয়ান। শেষ রাতের দিকে একটু ঘুমিয়েছে। সকাল সকাল উঠে বেড়িয়ে গেছে আবার অনিমার খোজে। আদিব আশিস তো আছেই তীব্র, অরুমিতা,স্নেহাও যার যার সাধ্যমতোই কাজ করছে। আদ্রিয়ান রিকের সব গাড়ির নাম্বার নিয়ে চেক পোস্টে চেকিং করছে যে কোথাকার রোডে দিয়ে গেছে ও। তাহলে আদ্রিয়ান এটা জানতে পারবে যে কোন এয়ারপোর্ট থেকে গেছে ওরা আর কোথায় গেছে। আদ্রিয়ান একহাতে ফোনে কথা বলছে আরেকহাতে ল্যাপটপে কাজ করছে। আশিস আর আদিব ওর দুপাশে বসে ফোনে কথা বলছে। হঠাৎ করেই তীব্র, স্নেহা আর অরুমিতা এলো। অরুমিতা আর আশিসের চোখাচোখি হলো একবার। দুদিন ধরেই আশিস অরুমিতাকে একটু ইগনোর করছে, অরুমিতার খারাপ লাগলেও এটা ভেবে নিজের মনকে বোঝাচ্ছে যে অনিমা কে খুজতে এতো ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে সেইজন্যেই হয়তো সময় কম দিতে পারছে। ওরা আদ্রিয়ান কে কাজ করতে দেখে দরজা থেকেই বলল,

— ” ভাইয়া আসবো?”

আদ্রিয়ান ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” হ্যাঁ এসো।”

বলে আবার ল্যাপটপের দিকে তাকালো। ওরা ভেতরে এসে টেবিলের কাছে দাড়ালো। আদ্রিয়ান ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই বলল,

— ” বসো।”

ওরা দুজন বসল। তীব্র বলল,

— ” ভাইয়া অনিমার কোনো খবর পান নি?”

আদ্রিয়ান ল্যাপটপে থেকে হাত সরিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে বলল,

— ” এখনো না।”

অরুমিতা কাঁদোকাঁদো কন্ঠে বলল,

— ” ভাইয়া প্লিজ যতোটা তাড়াতাড়ি সম্ভব ওকে খুজে বার করুণ। আপনি তো শুনেছেন যে রিক কতোটা ভয়ংকর। ও মেয়েটাকে মেরেই ফেলবে। আপনি…”

আর কিছু বলার আগেই আদ্রিয়ান শক্ত কন্ঠে বলল,

— ” শাট আপ অরুমিতা। তোমার কী মনে হয়? ওর জন্যে আমার চিন্তা হচ্ছেনা? তিন দিন যাবত আমার মনের ওপর দিয়ে কী চলছে একমাত্র আমিই জানি। ও তোমাদের বন্ধু হতে পারে কিন্তু আমার জন্যে ও কী সেটা মুখে বলে তোমাদেরকে বোঝাতে পারবোনা আমি।”

অরুমিতা মাথা নিচু করে ফেলল। আর নিজের কাছে নিজেই লজ্জা পেলো। এতোটাই ইমোশনাল হয়ে গেছিলো ও যে কার কাছে কী বলছে সেটাই মাথায় ছিলোনা ওর। ও নিচু কন্ঠে বলল,

— ” সরি ভাইয়া আসলে..”

আদ্রিয়ান নিজেকে শান্ত করে একটা শ্বাস নিয়ে বলল,

— ” ইটস অলরাইট। আর চিন্তা করোনা খুব তাড়াতাড়ি খুজে পেয়ে যাবো ওকে।”

তীব্র অবাক হয়ে বলল,

— ” কিন্তু কীভাবে?”

আদ্রিয়ান এবার সবার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” এইজন্যেই তোমাদের সবাইকে এক জায়গায় ডেকেছি। এবার আমি যেটা বলছি সেটা খুব ভালো করে শোনো।”

এরপর আদ্রিয়ান সবাইকে কী করতে হবে সব খুব ভালোভাবে বলে দিলো। সকলেই যার যার কাজ বুজে নিলো। ওদের বিদায় দিয়ে নিজের দুহাতে মুখ চেপেধরে একটা লম্বা শ্বাস নিলো আদ্রিয়ান। তিনদিন হয়ে গেছে। সামনে লাঞ্চ পরে আছে কিন্তু খাওয়ার মিনিমাম ইচ্ছেও নেই ওর। আনিমাকে খাইয়ে তারপরেই খেতো আদ্রিয়ান। এটা একটা অভ্যেসে পরিণত হয়ে গেছে ওর। কিন্তু এখন? মেয়েটা কিছু খেয়েছে কী না? আদোও সুস্হ আছে কী না? কিছুই বুঝতে পারছেনা ও। তাহলে কীকরে শান্তিতে গিলবে ও? তবুও জোর করেই খানিকটা খেয়ে নিলো ও। কারণ এই মুহূর্তে ওকে সুস্হ থাকতে হবে। ওকে ওর জানপাখিকে খুজে পেতেই হবে যেকোনো মূল্যে।

_____________________

গভীর রাত। অনিমা খাটে উপর হয়ে শুয়ে আছে। চোখ দিয়ে নিরব ধারায় জল পরছে। রিক তার কথাই রেখেছে কাল রাত থেকে খাবার তো দূর একফোটা পানিও দেয়নি ওকে। রুমের ওয়াসরুমের পানির লাইনটাও বন্ধ করা। ওয়াসরুমে যাওয়ার দরকার পরলে বাইরেরটায় নিয়ে গেছে ওকে। খিদে পেলেও তেমন খাওয়ার ইচ্ছে নেই, দীর্ঘসময় না খেয়েও হার ভাঙ্গা খাটুনি খাটার অভ্যেস ওর মামার বাড়ি থেকেই হয়ে গেছে, কিন্তু পানি পিপাসাতে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে ওর, বেশ কষ্ট হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে রিক ভেতরে ঢুকলো, অনিমা সেটা বুঝতে পেরেও কোনো প্রতিক্রিয়া করেনি যেভাবে ছিলো ওভাবেই চুপচাপ শুয়ে আছে। রিক এসে খাটে বসলো, অনিমার দিকে ভালোভাবে তাকিয়ে বুঝতে পারলো অনেক্ষণ যাবত কাঁদছে। রিক অনিমার মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে বলল,

—- ” কেনো জেদ করছো। জাস্ট একবার চাও আমার কাছে। আমি এক্ষুনি খাবার আনার ব্যবস্থা করছি।”

কিন্তু অনিমা কোনোরকম কোনো রিঅ‍্যাক্ট করলোনা। রিক বিরক্ত হয়ে বলল,

— ” দেখো বেশি করছো কিন্তু এবার ? এরকম করার মানে কী?”

অনিমা এবারেও কোনো রিঅ‍্যাক্ট না করে স্হির ভাবে ভাঙ্গা গলায় টেনে টেনে বলল,

— ” একটু একা থাকতে দিন আমাকে।”

রিক এবার রেগে গেলো। রাগী কন্ঠে বলল,

— ” আচ্ছা? এখনো তেজ দেখাবে? ফাইন। আমিও দেখি তুমি কতোক্ষণ এভাবে না খেয়ে থাকতে পারো।”

বলে উঠে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো রিক। রিকের মনে এখন অন্য চিন্তা বাসা বাধছে যে অনিমার এক্সাক্টলি হয়েছেটা কী? হঠাৎ করেই ওভার রিঅ্যাক্ট করছে আবার হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে যাচ্ছে। এটা কী আদোও শুধু আমি ওকে জোর করে আটকে রেখেছি এই কারণে নাকি এর পেছনেও অন্যকোনো কাহিনী আছে? আর অনিমা নিরবে কাঁদতে কাঁদতে এক পর্যায়ে ওভাবেই ঘুমিয়ে পরেছে।

আর অপরদিকে আদ্রিয়ান ছাদের দেয়ালে হেলান দিয়ে আজকেও দুঃখ বিলাশ করছে। সারাদিন অনিমাকে খোজার কাছে নিজেকে ব্যাস্ত রাখলেও এই নিরব রাতে আর নিজেকে শক্ত করে রাখতে পারেনা ও। এই নিস্তব্ধ রাতে অনিমার কথা আরো বেশি করে মনে পরে ওর। খুব ইচ্ছে করছে সিগারেটের ধোয়ায় নিজের বুকের অসহ্যকর আগুন নেভানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে কিন্তু অনিমা একদিন বলেছিলো যে ও স্মোকিং আর স্মোকার দুটোর একটাকেও পছন্দ করে না। তাই আগে মাসে দুই এক টা খেলেও ঐ দিনের পর সেটাও ছেড়ে দিয়েছে ও। কিন্তু ওর ভেতরের যন্ত্রণা তো ও কিছুতেই কমছে না। কিছু দিয়েই না।

_______________________

সকালবেলা রিক ঘুম ভাঙ্গার পর ফ্রেশ হয়ে অনিমার রুমের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো। কারণ ঠিক করে নিয়েছে এখন যদি অনিমা খেতে নাও চায় তবুও জোর করেই খাওয়াবে। অনেক দেখে নিয়েছে, এই মেয়ের জেদ খুব বেশি। মরে গেলেও নিজে থেকে খাবার চাইবে না। ওরই ভুল ছিলো এরকম একটা শাস্তি দেওয়া ঠিক হয়নি। এসব চিন্তা করে অনিমার রুমে গিয়ে সামনে তাকিয়ে রিক অবাক হয়ে গেলো কারণ অনিমা ফ্লোরে পরে আছে। সেটা দেখে রিক দৌড়ে গেলো অনিমার কাছে। ওকে তুলে বেডে শুইয়ে বেশ কয়েকবার গালে হালকা করে চাপড় মারতে মারতে ডাকতে শুরু করলো ওকে। কিন্তু সারা না পেয়ে চেষ্টা ‍চিৎকার করে কাউকে পানি আনতে বলল, ওর চোখে মুখে পানির ছেটা দেওয়ার পর অাস্তে আস্তে ওর চোখ খুলে তাকালো। কিন্তু পুরোপুরি না। ও ঘোরের মধ্যেই ‘আদ্রিয়ান আদ্রিয়ান’ বলে ডাকতে শুরু করলো। রিক এবার চরম অবাক হলো। কতোটা ভালোবাসলে ঘোরের মধ্যেও একটা মানুষের নাম নেওয়া যায়। এটাই ভাবছে ও। আচ্ছা ও কোনো ভুল করছে না তো? এটা কী সত্যিই ঠিক হচ্ছে? না না কীসব উল্টাপাল্টা ভাবছে ও? অনিমা ওর আর কারোর না। এসব ভেবে নিজেকে সামলে খাবার অানিয়ে সবার আগে অনিমাকে পানি খাওয়ালো। তারপর খাবারটাও খাইয়ে দিলো। অনিমা জ্ঞানে নেই তাই কোনো ঝামেলা না করেই খেয়ে নিলো। রিক ওকে শুইয়ে দিয়ে নিচে চলে গেলো।

রিক নিচের থেকে ওর কাজকর্ম সেড়ে প্রায় এক ঘন্টা পর অনিমার রুমে আরেক দফা অবাক হলো। অনিমা রুমের সবকিছু ভাঙচুর করছে আর চিৎকার করছে। প্রচন্ড হাইপার হয়ে গেছে ও। রিক চিৎকার করে অনি বলে ডাকতেই অনিমা পেছনে ঘুরলো। রিক অনিমার দিকে এগোতে নিলো কিন্তু অনিমা থামিয়ে দিয়ে বলল,

—- ” একদম নাহ। একদম আমার কাছে আসার চেষ্টাও করবেন না। তাহলে সব শেষ করে দেবো আমি।”

বলেই একটা শো পিছ ভেঙ্গে ফেললো। রিক বলল,

— ” ওকে কুল। আমার কথাটা শোনো।’

বলে আবার এগোতে নিলে অনিমা আবারো চিৎকার করে বলল,

— ” বললাম না আমার থেকে দূরে থাকুন? জাস্ট গেট লস্ট।”

রিক স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছে অনিমার দিকে। কী হলো কিছুই বুঝতে পারছেনা রিক। হঠাৎ এতো হাইপার কেনো হয়ে গেলো? রিক নরম গলায় বলল,

— ” ওকে আমি আসছিনা কাছে। তুমি একটু শান্ত হয়ে বসো?”

অনিমা এবারেও চেঁচিয়ে বলল,

— ” নাহ আপনি যান এখান থেকে। যান!”

বলেই আবার সবকিছু ভাঙ্গতে শুরু করলো। রিক ও কাছে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেনা। অনিমা ওসব ভাঙ্গতে ভাঙ্গতেই জ্ঞান হারিয়ে পরে যেতে নিলেই রিক দৌড়ে গিয়ে ধরে ফেললো। ওকে কোনোমতে শুইয়ে দিয়ে লোক ডাকিয়ে রুমটা পরিষ্কার করালো। বেশ অবাক হয়েই দেখছে রিক অনিমাকে। অনিমার পাশে বসে ওর টুকটাক চেকআপ করলো। প্রেশার লো সেটা না মেপেই বোঝার ক্ষমতা আছে ওর। তবে একটু আগে যেটা হলো সাধারণ কোনো ঘটনা ছিলোনা।

_____________________

সোফায় বসে মুখে হয় হাত দিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন রিক । এতোদিন ও সন্দেহ করতো কিন্তু আজ ও সিউর যে অনিমার সাইকোলজিক্যাল কোনো প্রবলেম আছে। আজকের আচরণে ও পুরো সিউর হয়ে গেছে সেটা। কিন্তু কী প্রবলেম সেটাই বুঝতে পারছেনা ও। মামা যাই বলুক ও অনিমাকে কালকেই একজন ভালো ডক্টরকে দেখাবে। এসব নানা কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ওর ফোন বেজে উঠলো। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আওয়াজ এলো,

— ” কেমন আছো রিক দা?”

রিকের ভ্রু জোরা কুচকে গেলো। অবাক হয়ে বলল,

— ” তুই? এই নাম্বার কোথায় পেলি?”

স্নিগ্ধা একটু হেসে বলল,

— ” মামা দিয়েছে। ফোন করে ডিস্টার্ব করলাম?”

রিক বিরক্ত হয়ে বলল,

— ” এই কাজের কথা বলবি? ফোন কেনো করেছিস?”

স্নিগ্ধা স্হির কন্ঠে বলল,

— ” অনিমা তোমার কাছে আছে তাইনা?”

রিক শক্ত গলায় বলল,

— ” হ্যাঁ তো?”

স্নিগ্ধা নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
— ” নাহ মানে একটা কথা বলবো?”

রিক এবারেও বিরক্তি ঝেড়ে বলল,

— ” ড্রামা না করে বলে ফেল।”

স্নিগ্ধা ইতস্তত কন্ঠে বলল,

— ” আসলে ওখানে তো কোনো মেয়ে নেই। মাত্র একজন মেয়ে সেইফ আছে। সেও বিজি থাকে। অনিমার ওখানে থাকতে কষ্ট হয় আবার আনইজি লাগে নিশ্চই? তো বলছিলাম কী আমাকে ওখানে নিয়ে চলো না। আমারও ঘোরা হবে মেয়েটারও একটা সঙ্গী হবে।”

রিক অবাক হয়ে বলল,

— ” পাগল হয়ে গেছিস নাকি? কীসব ভাট বকে যাচ্ছিস? তোকে এখানে আনবো কেনো?”

স্নিগ্ধা মিনতির সুরে বলল,

— ” বোঝার চেষ্টা করো রিক দা মেয়েটার একা ওখানে বেশ কষ্ট হচ্ছে । আমি গেলে ওর ভালো লাগবে। প্লিজ।”

রিকের এবার অনিমার সিচিউশন টা মাথায় এলো। মেয়েটার কনডিশন এমনিতেই ভালো না। স্নিগ্ধা এলে সত্যিই ভালোই হবে। কিছুক্ষণ এসব ভেবে রিক বলল,

— ” তোর হসপিটালে যেতে হবে না?”

স্নিগ্ধা তাড়াতাড়ি জবাব দিলো,

— ” না না সেটা নিয়ে ভেবোনা আমি ম্যানেজ করে নেবো।”

রিক কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,

— ” আমি কানট্রি বললে এখানকার এয়ারপোর্ট পর্যন্ত একা আসতে পারবিনা?”

স্নিগ্ধা খুশি হয়ে বলল,

— ” হ্যাঁ পারব। তুমি বলে দাও জায়গাটা।”

রিক বলল,

— ” আমি টেক্সট করে দিচ্ছি। রাখ এখন।”

স্নিগ্ধা নিচু কন্ঠে বলল,

— ” ওকে।”

ফোনটা রেখে একটা শান্তির নিশ্বাস নিলো স্নিগ্ধা তারপর বলল,

— ” আমি তোমাকে খুব ভালো করে চিনি রিক দা। আর তোমার রাগকেও। আমি জানি মেয়েটা তোমার কাছে ওখানে একা থাকলে শেষই হয়ে যাবে। তুমি তোমার ভূলটা একদিন ঠিকি বূঝবে। কিন্তু বুঝতে যাতে খুব দেরী না হয়ে যায় তাই আমি ওখানে যাচ্ছি। আমি সাথে থাকলে মেয়েটা একটু হলেও ভালো থাকবে।”

#চলবে…

( আচ্ছা? পাঠকরা এতো অধৈর্য কেনো? যেখানে রিয়েল লাইফই কখনো কারো স্মুথভাবে এগোয় না হাজারটা বিপদ ঝামেলা লেগেই থাকে, সেখানে গল্পে কোনো ক্রাইসিস মুমেন্ট থাকবেনা সেটা কীভাবে আশা করেন আপনারা? অনিমাকে যাতে আদ্রিয়ান তাড়াতাড়ি পেয়ে যায় সেটা অনেকেরই দাবী। তবে গল্পে প্রত্যেকটা ঘটনা ঘটার একটা বিশেষ কারণ থাকে। এই ঘটনা টারও আছে। সেটা একটা নির্দিষ্ট সময় অবধি রাখা লাগে গল্পেরই স্বার্থে। অনিমাকে পেতে আরো দুটো পার্ট বেশি লাগলেও। অনিমাকে আদ্রিয়ান পেয়ে যাবে তার সাথে বোনাস হিসেবে আরো ভালো কিছুও আপনাদর জন্যে অপেক্ষা করতে পারে। তাই সবাই একটু ধৈর্য নিয়ে পড়ুন।)

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ