Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রেয়সীর শব্দপ্রেমপ্রেয়সীর শব্দপ্রেম পর্ব-১৫

প্রেয়সীর শব্দপ্রেম পর্ব-১৫

#প্রেয়সীর_শব্দপ্রেম (দ্বিতীয় খন্ড)
#ফারজানা_মুমু
[১৫]

রাত বারোটা। থালার মত চাঁদ উঠছে বৃহৎ আকাশে। ছোট-ছোট নক্ষত্রের ভিড়ে রাজার সিংহাসনে ঝকঝক কর চাঁদের সৌন্দর্য আরোপ করছে দুজন নর-নারী। এক তলা বাড়িটার ছাদে হাঁটু ভাঁজ করা আষাঢ়, ঝুমঝুমি’র মন-প্রাণ তখন ওই সৌন্দর্য উপভোগ করাতে ব্যাস্ত। ঝুমঝুমি’র গায়ে গোল্ডেন পাড়ের সাদা শাড়ি। শাড়িতে করা বুটিকসের কারুকাজ। ব্লাউজের হাতা কনুই পর্যন্ত সেখানে লাভের আকৃতিতে স্টোন লাগানো। সাদা-গোল্ডেন মিক্সড চুড়ি দু’হাতে। সামনে সিঁথি করা চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া। গানে ঝুমকো,চোখে গাঢ় কাজল,ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। চাঁদের দেশ হতে চন্দ্র কন্যা জমিনে নেমেছে উপছে পড়া সৌন্দর্য সঙ্গে নিয়ে। চোখের দৃষ্টি নিভু-নিভু হচ্ছে সৌন্দর্য্যের উত্তাপে। চাঁদের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে চাঁদ কন্যার মুখের পানে তাকালো আষাঢ়। ওর গায়ের শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে সাদা-গোল্ডেন মিক্সড করা পাঞ্জাবি। বড়-বড় গাছের পাতাগুলো দুলে উঠলো, মুহুর্তেই বয়ে গেলো প্রশান্তির ঢেউ খেলা মৃদুমন্দ বাতাস। মনোমুগ্ধকর মুখশ্রী জুড়ে উত্তেজনা ভর করেছে তখন। ঝুমঝুমি আড়চোখে তাকালো পাশে বসে থাকা প্রেমিক পুরুষটির পানে। লজ্জায় আপেলের রূপ ধারণ করেছে সে। খানিক আগে অগোচরে ঝুমঝুমিকে ডেকে শাড়ি ও কসমেটিকস ধরিয়ে দিয়ে আবদার করা কণ্ঠে বলে আষাঢ়,
-” একটু সাজবে প্লিজ। আজ পূর্ণিমা আকাশে অনেক বড় চাঁদ উঠেছে। দু’জনে আজ চাঁদের আলো গায়ে মাখবো। অনেক-অনেক গল্প করব। আমার অনেক না বলা কথা তোমায় বলতে চাই তেজপাতা। প্লিজ না করো না।

ঝুমঝুমি মুখে কিছু না বললেও জিনিসগুলো হাতে নিয়ে রুমে গিয়ে তৈরি হয়ে আসে। আষাঢ় আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল। ঝুমঝুমিকে আসতে দেখে কয়েক মুহূর্ত হারিয়ে গেছিল কল্পনার রাজ্যেয়। প্রতিবার প্রতি মুহূর্তে প্রেমে পড়ে নতুন করে। গাঢ় প্রেম, গাঢ় আকর্ষণ,মাদকিয় অনুভুতি, প্রণয়ের সৃষ্টি।

চাঁদনি রাত আলােকময় প্রকৃতির এক বৈচিত্র্যময় উপহার। প্রেমের সূচনা, কপোত-কপোতীর দীর্ঘ আলোচনা। ভরা পূর্ণিমার রাতে নিটোল চাঁদ তার ঝলমলে আলাের পসরা নিয়ে প্রেমীক হৃদয়ে প্রণয়ের বিচিত্র ভাব ও উদ্দাম আনন্দের সঞ্চার করে, দৃষ্টিনন্দন,চিত্তাকর্ষক উপভোগ্য করায়। আলো আঁধারের স্নিগ্ধ মিতালিতে ঝলমল করে ওই নক্ষত্রের রাজ, বাতাসে থাকে তখন ফুলের গন্ধ,অস্পষ্ট মায়াজগতে ঘুমিয়ে থাকে পৃথিবী ঠিক তখন জেগে থাকে প্রেমী মনের অদ্ভুদ মানুষের দল। চাঁদের সৌন্দর্য-সুধা পান করে বপন করে সৌরভ স্নিগ্ধতার বীজ।

দীর্ঘ সময় ধরে নীরবতা চলে দুজনের মধ্যে। নীরবতা ভেঙে আষাঢ় প্রথমে বলে,
-” তুমি চমৎকার একজন মেয়ে তেজপাতা।

খিলখিলিয়ে হাসে ঝুমঝুমি। হাসির শব্দ নূপুরের ছন্দের মতন কানে বাজে আষাঢ়ের। সেই হাসিটুকু হৃদয়ে লালন করে ঝুমঝুমির চোয়ালে হাত রেখে বলে,
-” তোমার ঐ হাসিটুকু তোমার চাদঁখানা মুখে ভ’য়’ঙ্ক’র সুন্দর লাগে ঝুমি। আফিম মেশানো হাসি আমি যে নে’শা’গ্র’স্ত হয়ে পড়ি।
-” তাই! তখন কি ইচ্ছে হয় জনাবের?
-” দ্বিধায় বলব নাকি নির্দ্বিধায়?
-” নির্দ্বিধায়।

ঝুমঝুমির দু’গালে আলতো করে চেপে ধরে ঠোঁটের দিকে ইশারা করে বলে উঠল, ডুবতে চাই ওখানে?
-” বারণ করেছে কে?

হকচকিয়ে উঠে আষাঢ়। সন্দিহান কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করে,
-” সত্যি বলছো?
-” ঝুমঝুমি মিথ্যা বলে?

আষাঢ় প্রশ্ন করল না আর মুহূর্তেই লোপে নিলো সুযোগ। ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে পান করতে থাকলো অমৃতের স্বাদ। যে স্বাদের কাছে হার মানে সবকিছু। পেট না ভরা স্বাদের খাবারে মন ভরে পরিপূর্ণ। ঝুমঝুমির ঠোঁট ছেড়ে এবার গলদেশের স্বাদ গ্রহণ করার আগ মুহূর্তে এলার্ম বেজে উঠল আষাঢ়ের। ক্রিং-ক্রিং কর্কশ শব্দে তড়িৎ ঘুম থেকে জেগে উঠে চতুর্দিক মনযোগ দিয়ে বুঝার চেষ্টা করে কি হয়েছিল এতক্ষণ। স্বপ্ন সব? মিষ্টিময় অনুভুতি এখনও লেপ্টে আছে হৃদয়ে কিন্তু মিষ্টি মেয়েটি নেই কেন?

শহরে গিয়েও রাতে ফিরে আসে এখানে আষাঢ়। তিন-তিনজন মেয়ে মানুষকে এখানে একা রাখা ঠিক হবে না। শুনশান জায়গা, জঙ্গলের ভিতর, মানুষজনের আনাগোনা নেই বললেই চলে তাই আষাঢ় থেকে গেছে। হালিমা খালা,ঝুমঝুমি ও ঝিনুক ঘুমিয়েছে পাশের রুমে। আচম্বিতে সুন্দর স্বপ্নের মাঝে ঘুমটা ভেঙে যাওয়ায় আষাঢ় বিরক্ত হয় নিজের প্রতি। কত সুন্দর একটি স্বপ্ন দেখছিল কিন্তু বজ্জাত ফোনটা সব উগড়ে দিয়েছে। বালিশের নিচ থেকে ফোনটা ছুঁড়ে মারতে গিয়েও মারলো না, নিজেকে ধাতস্থ করার সময় নিয়ে ফোনটার দিকে তাকালো। চারটা বাজে তখন। কয়েক ঘণ্টা পর ভোরের আলো ফুটবে। ফোনটা অফ করে বিছানা থেকে নেমে জানালার ধারে গিয়ে জানালা খুলে দিতেই হনহন করে বাতাস ঢুকলো রুমে। শীতল রুমটি শীতল করে দিলো আবারও। আষাঢ় তাকালো আকাশের দিকে কিন্তু বড়-বড় গাছের কারণে স্পষ্ট কিছু দেখা যাচ্ছে না। তবে ডালের ফাঁকে-ফাঁকে থালার মত বড় চাঁদটির তেরছা অংশ চোখে পড়ল। জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বিড়বিড় করে বলে উঠল, ভ’য়ং’ক’র সুন্দর স্বপ্ন ঠিক আমার মনের মানুষটির মত।

____________________

রান্না করতে ব্যাস্ত ঝুমঝুমি। রান্নার কাজে হেল্প করছে হালিমা খালা। আষাঢ় তখন চেয়ার টেনে বসে ঝিনুকের চুল আঁচড়িয়ে জুটি বাঁধতে শুরু করেছে। ঝিনুক ফোনের স্ক্রিনে নিজেকে দেখছে আর বলে দিচ্ছে কোথায় জুটি বাঁধতে হবে,সামনে ডিজাইন কীভাবে করবে। বাপ-মেয়ের ছেলে মানুষে দেখে হালিমা খালা খুশিতে চোখের পানি আঁচলে মুছে সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করল মনে-মনে।

মাছ ভাজি নামিয়ে তরকারি বসালো ঝুমঝুমি। পিছনে একবার তাকিয়ে আবারও কাজে মনোযোগ দিয়ে বলতে থাকলো,
-” কী-কী প্ল্যান করেছেন?

ঝুমঝুমির প্রশ্নে আষাঢ় বিব্রতবোধ করল। গতকাল রাতের স্বপ্নের জন্য ওর লজ্জা পাচ্ছে ভীষন। জলজ্যান্ত ঝুমঝুমিকে স্বপ্নে চুমু খেয়ে ফেলেছে আচ্ছা এ কথা যদি ঝুমঝুমি জানে তাহলে সেও লজ্জা পাবে? না রাগ করবে। বেহায়া-বেশরমও ভাবতে পারে তাতে কী! স্বপ্নে তো কারো হাত নেই। সে তো ইচ্ছে করে দেখিনি। হঠাৎ দেখেছে। তারপরও মেয়েদের মতন লজ্জা। আষাঢ়কে চুপ থাকতে দেখে ধমকে উঠল ঝুমঝুমি,
-” কথা বলছেন না কেন? জিজ্ঞাসা করেছি কিছু।
-” প্ল্যান আর কি? চলে যাব জাপান,জার্মান,কানাডা যে কোনো একটায়।

বিরক্ত ভঙ্গিতে তাকালো ঝুমঝুমি। জিনিসপত্র ধুমধাম শব্দ করে রাগের আভাস চারদিকে ছড়িয়ে দিল। হালিমা খালা টের পেয়ে মুচকি-মুচকি হাসলো। আষাঢ় কথা বলতে যাবে তখনই ফোনের শব্দ শুনে ঝিনুকের হাতের দিকে তাকালো। ঝিনুক ফোন এগিয়ে দিয়ে বলল,
-” বাবা, তোমার ফোন এসেছে।

স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে ‘ড্যাড’ নামটি। ঝিনুকের হাত থেকে ফোন নিয়ে অন্যদিকে হাঁটলো আষাঢ়। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ভেসে আসলো গম্ভীর কণ্ঠ,
-” ওখানে কী করছো তুমি?
-” নিরাপত্তার জন্য থাকছি।
-” একজন খু’নী’কে কীসের নিরাপত্তা দিচ্ছ তুমি? পুলিশ খোঁজছে।
-” মানুষ খু’ন করলে খু’নি হয় ড্যাড পশু খু’ন করলে নয়।
-” তুমি পাগল হয়ে গেছ আষাঢ়। অন্ধ প্রেমে মেতেছ। ভালোই-ভালো সরে আসো। আমি কোনো খু’নী’কে ছেলের বউ হিসেবে মানব না। তোমার মা-ও মেনে নিবে না।
-” ওকে ফাইন। তাহলে আজ থেকে আষাঢ় তোমাদের কাছে মৃ’ত।

চিল্লিয়ে উঠলেন এমপি সাহেব।
-” তোমরা যেখানে আছো আমি যদি পুলিশকে বলে দিই তখন কীভাবে বাঁচাবে ওই মেয়েকে?

হাসলো আষাঢ়। ঠোঁট কামড়ে বলল, কেউ কখনও নিজের পা’য়ে কুড়াল মা’রে ড্যাড? পুলিশ এখানে আসলে তোমার সব কুকীর্তি প্রকাশ হয়ে যাবে তুমি এমপি হয়ে নিশ্চয় মান-সম্মান ডুবাতে চাও না?

-” বড্ড বেশি কথা শিখেছ তুমি। নেও নিজের মায়ের সাথে কথা বলো।

আষাঢ়ের মা ফাতেমা জেওয়াদ চৌধুরী ফোনটা হাতে নিয়ে শব্দ করে কেঁদে উঠলেন।
-” চলে আয় ওই মেয়েকে ছেড়ে। তোকে ছাড়া ভালো লাগছে না বাবা।
-” আমারও যে ঝুমঝুমিকে ছাড়া ভালো লাগেনা মা। ও ছাড়া আমার সব শুন্য লাগে,নিজেকে মৃ’ত মনে হয়। তুমি নিশ্চয় চাও না তোমার ছেলে মা’রা যাক।

ফাতেমা জেওয়াদ চৌধুরী আহত হলেন। ছোট ছেলের কাছ থেকে এরূপ উত্তর আশা করেননি। আষাঢ় মা’কে চুপ থাকতে দেখে গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠল,
-” মা, তোমাকে আমি কয়েকটি কথা বলছি ভালো করে শুনো ড্যাডকে বলো শুনতে।

কথাগুলো বলে আষাঢ় সবকথা মনে-মনে গুছিয়ে ঝুমঝুমির জীবনকাহিনী সংক্ষেপে বর্ণনা করল। অপরপাশে দুজন ব্যাক্তি কোনোরূপ বাক্য ব্যয় না করেই যাবতীয় ঘটনা শুনলো। আষাঢ় জানতে চাইলো এবার,
-” ঝুমঝুমির দোষ আদৌ আছে?

অপরপাশ হতে এপমি সাহেব শান্ত কণ্ঠে বললেন,
-” তুমি বাসায় আসো। তোমাকে নিয়ে ব্যাক্তিগত আলোচনায় বসবো। দেশের পরিস্থিতি ভালো নয় দেশ ছাড়তে হবে তাড়াতাড়ি। বাসায় আসো বিস্তারিত বলব।

আষাঢ় জানে এ কথার মানে। এমপি সাহেব কঠোর হলেও ভালোবাসার দিক দিয়ে ওনি খুব কোমল। শক্তপোক্ত মানুষটির হৃদয়ে তুলোর মত হয় তখন,যখন হৃদয়ে ভালোবাসার ঝড় বয়। ফোনটা পকেটে রেখে আষাঢ় ঝুমঝুমির উদ্দেশ্য বলে উঠে,

-” আমি বাসায় যাচ্ছি সন্ধ্যায় চলে আসবো। একা-একা বের হবে না বলে দিচ্ছি।
-” সাবধানে যাবেন।
-” হুম। আমি যে ফোনটা তোমাকে রাতে দিয়েছি ওইটা ইউজ কর। তৃষ্ণা-নীরা’র নতুন ফোনের নাম্বার সেভ আছে ওদের সাথে কথা বলো ভালো লাগবে।

আষাঢ় বাসা থেকে বের হলো। ঝুমঝুমি পিছন-পিছন দরজা পর্যন্ত গিয়ে আবারও চিৎকার করে বলল, সাবধানে যাবেন। আর শুনুন রাস্তায় কিছু খেয়ে নিবেন। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আসবেন আমি অপেক্ষায় থাকবো আপনার।

পাক্কা বউদের মতন কথা। আষাঢ় পিছু ঘুরে হাতে ইশারায় ভিতরে যেতে বলল। আষাঢ়ের ইশারা অনুযায়ী ঝুমঝুমি দরজা বন্ধ করে আবারও রান্নায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ল।

________________

বিকেল হয়ে আসলো। অলস সময় ভালো কাটে না ঝুমঝুমির। সারাদিন খেটেখুটে কাজ করা মেয়ে সে এখানে আসার পর থেকে কাজকর্ম ছাড়া থাকতে বিরক্ত লাগছে। হালিমা খালা ও ঝিনুক ঘুমিয়েছে সেই দুপুরে এখনও ঘুম থেকে উঠেনি। ঝুমঝুমির ঘুম আসছে না তাই বাধ্য হয়েই আষাঢ়ের কথা অমান্য করে ঘর থেকে বের হলো। এখানে দেখার মত আছে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। বড়-বড় গাছ,শুকনো পাতা ছড়ানো-ছিটানো রাস্তায়, মাটির বিস্তার রাস্তা। দূর-দূরান্তে দেখা যাচ্ছে ঘন-জঙ্গল। তবে মজা ব্যাপার এখানে বাঘ-সিংহ নেই। সাপ-টাপ থাকলে থাকতে পারে। বিকালের সোনালী আভায় সোনালী ছোঁয়া ছড়াচ্ছে গাছের ফাঁক-ফোঁকর গলে। শুকনো মচমচে পাতায় হাঁটার ফলে ঝনঝন শব্দ শোনা যাচ্ছে। ভালোই লাগছে ঝুমঝুমির কিন্তু হঠাৎ মনে হলো এখানে আরেকজন মানুষের অস্তিত্ব রয়েছে। সন্দিহান নজরে পিছনে ঘুরতেই যখন কাউকে দেখতে পেলো না তখন মনের ভ্রম ভেবে আবারও সামনে হাঁটা শুরু করল। না এখন একশো পার্সেন্ট নিশ্চিত ঝুমঝুমি। এখানে আরেকজন আছে। পাতার মচমচ ঝনঝন শব্দ কানে বাজতে শুরু করল। মানুষটি ওর খুব কাছে চলে আসছে। ভয়ে শীতল জল কপাল ছুঁয়ে নাকে ঠেকল। ভয়ে-ভয়ে পিছনে ঘুরতেই চেনা গন্ধ পুরুষটির বুকে মাথা ঠেকল হাস্যোজ্বল মুখে মুখ তুলে আষাঢ়কে দেখে হেসে দিল।
-” আপনি? ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন।
-” তোমাকে নিষেধ করেছি রুম থেকে বের হতে।
-” কি করব বলুন অলস বিকেল যে কাটছে না।

ভাবুক হয়ে বলল আষাঢ়, তাও ঠিক। তবে আজ বকা দিবো না কারণ কি জানো?
-” না বললে জানবো কীভাবে?
-” ঠিকই তো।

বাক্যটি বলেই ঝুমঝুমিকে হেঁচকা টানে উল্টো ঘুরিয়ে কোমরে দু’হাত রেখে মাথা কাঁধের কাছে নিয়ে কানের লতিতে ফিসফিসিয়ে বললো,
-” আমার পরিবার তোমাকে মেনে নিয়েছে তেজপাতা। ড্যাড আমাকে দেশ ছাড়ার জন্য যা সাহায্য করার ওনি করবেন। আমরা আপাতত জাপান যাব ওখানে কয়েকমাস থাকবো। ততদিনে এখানের সব ঠিক করবে ড্যাড যেন ফের দেশে আসলে আমাদের কোনো সমস্যা না হয়।

ঝুমঝুমির মনে হলো সে জেগে-জেগে স্বপ্ন দেখছে। বিস্ময়ে বারংবার পলক ফেলল।
-” সত্যি?
-” হান্ড্রেড পার্সেন্ট।
-” ওনি রাজি হলেন কীভাবে?
-” আষাঢ়ের খেল ডার্লিং।
-” অসভ্য।
-” প্রিয়তমা বললে সমস্যা নাই ডার্লিং বললে সমস্যা। হুহ
-” ছাড়ুন তো সুযোগ পেলেই শুধু টাচ্ করা।

ঝুমঝুমিকে ছেড়ে চিকন দেখে একটা গাছের নিচে দাঁড় করালো আষাঢ় তারপর চিকন গাছ নাড়াতেই শুকনো পাতার বর্ষণ হলো ঝুমঝুমির উপর।

-” এই খুশিতে ফুলের বর্ষণ দেওয়া উচিৎ কিন্তু ফুল নেই তাই শুকনো পাতার বর্ষণ সৃষ্টি করলাম। জানোই তো আষাঢ় হলো ইউনিক। সবসময় নতুনত্ব সৃষ্টি করা আমার কাজ।
-” সিনেমার ডায়লগ বন্ধ করুন সন্ধ্যা হয়ে আসছে বাসায় চলুন। হালিমা খালা কিংবা ঝিনুক ঘুম থেকে উঠে আমায় দেখতে না পেলে ভয় পাবে।

দু’পা একসাথে করে ডান হাত বুকে নিয়ে বাঁ হাত পিছনে নিয়ে আগের দিনের মন্ত্রী-প্রজাদের মত করে বলল,
-” যা হুকুম মহারাণী।

##চলবে,,

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ