Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রেয়সীর শব্দপ্রেমপ্রেয়সীর শব্দপ্রেম পর্ব-১৩+১৪

প্রেয়সীর শব্দপ্রেম পর্ব-১৩+১৪

#প্রেয়সীর_শব্দপ্রেম (দ্বিতীয় খন্ড)
#ফারজানা_মুমু
[১৩]

ঝর্ণার তখন নয়মাস চলছে। হাত-পায়ে পানি এসেছে। না পারে হাঁটতে, না পারে বসতে। শরীরের তুলনায় পেট ভারী বেশি। মাঝে-মধ্যে কান্নাকাটি করে। ঝুমঝুমি নিজেও এ সম্পর্কে অবুঝ। গুগল সার্চ করে বোনের কোন মুভমেন্টে কি করার দরকার দেখে সে। একদিন রাতে ঘুম থেকে চিল্লিয়ে উঠে ঝর্ণা। বিছানায় র’ক্তে’র ছোপ-ছোপ দাগ। ঝুমঝুমি ভয় পেয়ে যায় তখন। তাড়াতাড়ি করে রিক্সা ডেকে বোনকে নিয়ে ছুটে হসপিটালে। রাতের মধ্যেই সিজার করতে হয়। বাচ্চা একটি মেয়ের গর্ভে আরেকটি ছোট্ট বাচ্চা জন্ম নেয় এই পৃথিবীতে। ঝুমঝুমি কোলে নেয় বাচ্চাটাকে। গালের সাথে মিশিয়ে চুমু খাও সহস্রবার। ঝুমঝুমির মনে তখন আরেকটি কথা চিন্তা করে। ওর মনে হয় এই বাচ্চা মেয়েটা ওর মা জেসমিন বেগম। মৃ’ত্যু’র পর আবারও ফিরে এসেছেন মেয়েদের মাঝে। হঠাৎ করেই কুসংস্কারে বিশ্বাস করে উঠে মন। মিলে মনের শান্তি। একদিন,দুদিন করে সময় অতিবাহিত হয়। ঝর্ণার তখন মানসিক অবস্থা খুব ভালো নয়। সারাদিন মেয়েকে নিয়ে রুমের এক কোনে বসে থাকে, ফিডিং করা না ঠিকমত। ঝিনুক তখন কান্না করে খুব তবুও ঝর্ণার মন গলেনা। ঝুমঝুমি খেয়াল করে এসব। ঝর্ণাকে বুঝিয়ে বলে কিন্তু ঝর্ণার এক কথা,
-” মেঘের বাচ্চাকে আমি মেনে নিবো না আপু। তুমি হয় ও’কে মে’রে ফেলো নয়তো অনাথ-আশ্রমে দিয়ে আসো। ও’কে দেখলে আমার সেই রাতগুলোর কথা মনে পড়ে। আমার শরীরে আ’ঘা’ত করা চিহ্ন ভেসে উঠে। তুমি প্লিজ ও’কে নিয়ে যাও।

ঝুমঝুমি বাধ্য হয়ে ডক্টর দেখাতে শুরু করে ঝর্ণাকে কিন্তু লাভের লাভ কিচ্ছু হয় না। ঝিনুককে তখন ডক্টরের পরামর্শে তোলা খাবার খাওয়ানো শুরু করে। সারাদিন ছুটাছুটি করে রাতের মধ্য প্রহর পর্যন্ত ঝিনুককে কোলে নিয়ে ঘুম পাড়ানো ছিল ঝুমঝুমির রোজকার রুটিন। ঝিনুকের বয়স তখন সাতমাস চলছে। সময়টা ছিল শুক্রবার। আজ ঝুমঝুমির ছুটির দিন। সকালে রান্না-বান্না করে ঝর্ণাকে খাইয়ে-দাইয়ে ঝিনুককে নিয়ে বসেছে ফ্লোরে। ঝিনুক তখন বসতে শিখে গেছে,হামাগুড়ি দেয়। ঝুমঝুমি একটা পুতুল দূরে রেখে ঝিনুককে বলে পুতুল আনতে ঝিনুক তখন হামাগুড়ি দিয়ে পুতুল ধরে নিজে-নিজেই হাততালি দেয়। ঝুমঝুমি তখন খুব হাসে। মাঝে-মধ্যে ঝর্ণাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
-” দেখ আমাদের মা-ও। তুই কেনো যে বুঝিস না। মেয়েটাকে একটু আদর কর না।

ঝর্ণা শুধু তাকিয়ে থাকে, কথা বলে না। ঝিনুক ঝর্ণার মুখে হাত রাখে চুমু খায় তবুও কথা বলে না ঝর্ণা। সরিয়েও দেয়না। নিজের মতো একা থাকে সে।

কলিং বেলের শব্দ শোনে ঝুমঝুমি অবাক হয়। ওদের বাসায় কেউ আসেনা। লোকে ওদের অহংকারী হিসেবে জানে। কারণ কোনো ভাড়াটিয়া কথা বলতে আসলে ঝুমঝুমি এড়িয়ে যায়। কথা বলে না। যার কারণে কেউ আসেনা ঝুমঝুমিদের সাথে কথা বলতে। সকাল এগারোটা এসময়ে কে আসবে জানা নেই ঝুমঝুমির তাই সন্দিহান মনে দরজা খুলে রুজিনা বেগমকে দেখে চমকে উঠে। রুজিনা বেগম সম্পর্কে ওদের ফুপু।

ফিচেল হাসি রুজিনা বেগমের ঠোঁটের কোণায়। ঝুমঝুমিকে ঠেলে আরো দুই তিনজন মহিলাকে নিয়ে ভিতরে ঢুকে অশ্লীল ভাষায় বলতে থাকেন,
-” কি রে ব্যাবসা কেমন চলছে তোদের? ঢাকাতে তো থাকতে পারলি না। ছোট বোনকে ব্যাবহার করবি ভালো কথা প্রটেকশন নিতে বলবি না দেখেছিস এই বয়সেই একটা বাচ্চা হয়ে গেছে। তা তোর খবর কী? ভালো বড় বাসা নিয়েছিস তো। ইনকাম ভালো ই হচ্ছে দেখছি।

ধৈর্যের সীমা অতিক্রম হলো ঝুমঝুমির। রাগ দেখিয়েই বলল, মুখ সামলে কথা বলো ফুপু। তুমি ভুলে গেছ আমরা তোমার কী হই? নিজের আপন ভাতিজিদের উপরে মিথ্যাচার করতে খারাপ লাগে না।

তেড়ে আসেন রুজিনা বেগম। ঝুমঝুমির গালে সজোরে থা’প্প’ড় মে’রে বলেন,
-” তোরা যে আমার ভাইয়ের মেয়ে ভাবলেই আমার কষ্ট হয়। একদম মায়ের মত হয়েছিস দু’শ্চ’রি’ত্র। আমার ভাইকে খে’য়ে’ছি’স তোরা। এখন খা’চ্ছি’স আমাদের মান-সম্মান।
-” আমার মুখ খুলতে বাধ্য কর না ফুপু। চলে যাও বলছি। বাবা বেঁচে থাকতে তো খুবই সুনাম ছিল আমাদের যেই না ওনি মা’রা গেছেন ওমনিই বদনাম ছড়াচ্ছ। তোমাকে ফুপু বলতেও আমার লজ্জা করে।
-” লজ্জা তো করবেই। আমি তো তোদের কু’কীর্তির কথা বলে দিচ্ছি। এখন থেকে তো আর নাগর পাবি না বাসায় তাইতো গায়ে লাগছে।
-” মুখ সামলে কথা বলো। আশেপাশের মানুষের সামনে আমাদের নিয়ে বানিয়ে-বানিয়ে কথা বলবে না।
-” বানিয়ে বলছি তাই না? তাহলে বল ঝর্ণার মেয়ের বাপ কে? বিদেশে থাকে এটাই বলবি তো তাহলে ওর জামাইয়ের সাথে কথা বলিয়ে দে। দেখি পারিস কিনা।

ঝুমঝুমি নিশ্চুপ থাকে। বানোয়াট এডিট ছবি দেখাতে পারলেও কথা বলিয়ে দেওয়ার উপায় নেই। দিবে ই বা কাকে। কেউ নেই।

রুজিনা বেগম ফিচেল হাসলেন। তারপর আর তাকে কিছু করতে হয়নি যা করার সব প্রতিবেশীরাই করেছে। মানুষ বলে না, অন্তরে বি’ষ মুখে হাসি তারই নাম প্রতিবেশী। পুরো পাড়া রটিয়ে গেলো ঝুমঝুমি ও ঝর্ণা প’তি’তা’ল’য়ে’র কাজ করে ওদের ওই কাজের ফল ঝিনুক। পাড়া থেকে বের করে দেওয়ার হু’ম’কি দেওয়া হয়। মাসের শেষেই বাসা পরিবর্তন করতে হবে জানিয়েছে বাড়ির মালিক। ঝুমঝুমির কোচিংয়ের চাকরিটা চলে যায়, যে বাসায় পড়াতে যেত তারাও বারণ করে দেয়, রাস্তায় বেরুলে ছোট থেকে বৃদ্ধ সবাই রে’ট জানতে চায়। সিদ্ধান্ত নেয় এখান থেকে মাসের আগেই চলে যাবে। ঝুমঝুমি তখন ওই পাড়া থেকে অনেক দূরে আরেকটা বাসায় থাকা শুরু করে। বাহিরে বের হওয়ার সময় বোরখা পরে। আজ বোরখা না পড়ার কারনেই রুজিনা বেগমের চোখে পড়তে হয়েছে ওদের। নতুন বাসায় আসার পর আরেকবার সত্যর মুখোমুখি হতে হয় ঝুমঝুমিকে। ঝর্ণার অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল আবার ঐদিনের ঘটনায় আরো কাবু করে ও’কে। রাতের মধ্য‌ই ব্রেইন-স্ট্রো’ক করে মা’রা যায় ঝর্ণা। ঝুমঝুমির অবস্থা তখন আরো ভয়াবহ। বোনকে সরকারি কবরস্থানে সমাহিত করে ঘরের কোণে কোনঠাসা হয়ে বসে থাকে। জমানো কিছু টাকা ছিল ওই টাকা দিয়েই একমাস পার করল ও। আবারও সিদ্ধান্ত নিলো বস্তি এলাকায় বাসা নিবে ওখানকার বাসা ভাড়া কম। আজকাল কোচিং সেন্টার,কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের অভাব নেই। ওর রেজাল্ট ও খুব ভালো তাই সমস্যা হয়না জব নিতে। আজকাল ইংলিশ আর ম্যাথ টিচারদের কদর বেড়েছে দ্বিগুণ। একমাস ঝিনুককে কোলে নিয়ে খোঁজে বেরিয়েছে নিজেকে আড়ালে রাখার সুব্যবস্থা। পেয়েও যায় মনমতন একটি বাসা। ভাড়া সাতশো টাকা। উপরে টিন, বাঁশের বেড়ার একটি ছোট্ট ঘর। মাস শেষ করার আগেই ও বাসা ছেড়ে এখানে চলে আসে।

এই এলাকায় বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। হাতে থাকা জমানো টাকা খরচ করে গ্যাসের চুলো ও মেয়ের জন্য চার্জার ফ্যান কিনে ঝুমঝুমি। নতুন জব খোঁজতে বের হবে দুদিন পর। গরমে সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে তাই মেয়েকে নিয়ে রুমের বাহিরে আসতেই শুনতে পেলো চিৎকার। কেউ কাউকে মা’র’ছে। দেখতে পেলো তারই ঘরের সামনের ঘরে একটা লোক তার বউয়ের গ’লা’য় চেপে সমানে থা’প্প’ড় বসাচ্ছে। হঠাৎ কি হলো জানা নেই ঝুমঝুমির। মেয়েকে ঘরে শুইয়ে দিয়ে এসে লোকটির সামনে দাঁড়িয়ে দুগালে দুটো চ’ড় মা’র’তে’ই মাতাল লোকটি বাঁশের বেড়ায় ধাক্কায় খেয়ে কপাল কেটে গেল। লোকটি তেড়ে আসলো ঝুমঝুমিকে মা’র’তে। ঝুমঝুমি দেখল ওর পায়ের কাছেই রয়েছে বঁ’টি সে বঁ’টি হাতে তুলে চিল্লিয়ে উঠে বলল, আরেকবার আয় তোর মা’থা’টা ঘা’ড় থেকে সরিয়ে ফেলব।

লোকটি ভয় পেলো। অশ্রাব্য ভাষা গালিগালাজ করে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ল। ঝুমঝুমি দেখল মায়ের বয়সী এক মহিলা র’ক্তা’ক্ত অবস্থায় মাটিতে পরে আছে। মহিলাটির গায়ে ময়লা শাড়ি। ঘর থেকে পানি এনে মাথায় ঢেলে শরীর মুছে দিলো। ঝিনুক তখন একা ঘরে। মহিলাটি তখন ঝুমঝুমিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠল। বিলাপ করতে-করতে বলল, আমার বাচ্চা হয়না দেইখ্যা আমারে খুব মা’রে মা। মাইনসের বাসায় কাম কইরা যা টেহা পাই সবই এক লোক লইয়া যায়। কিছু কইলেই আমারে মা’রে। বাঁচাও আমারে মা।
-” আপনার নাম কি খালা?
-” হালিমা।

সেদিন রাতে হালিমা খালাকে নিজের রুমে নিয়ে আসে ঝুমঝুমি। খাবার খাইয়ে দিয়ে নিজেদের রুমেই থাকতে বলে। হালিমা খালা সেরাত আর ঘুমায়নি। নিজের জীবনের দুঃখের কথা বলে গিয়েছে শুধু। তবে হালিমা খালাকে সে শুধু বলেছে ঝিনুক ওর মেয়ে, স্বামী গাড়ি এক্সিডেন্ট করে মা’রা গেছে, বাবা-মা-ও মা’রা গেছে। ব্যাস এইটুকু।

হালিমা খালা বহুযুগ পর নিজের মনের কথাগুলো বলতে পেরে শান্তি পায়। সকালে ভোরের সূর্য উঁকি দেওয়ার সাথে সাথেই খবর আসে মা’তা’ল স্বামী রাতে দিক-বেদিশা হয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকের নি’চে পড়ে সাথে সাথেই মা’রা যায়। হালিমা খালার কানে সেই বাক্য কি যে মধুর মত লেগেছে অনুমান করা দায়। মৃ’ত স্বামীর লা’শ পর্যন্ত দেখতে যায়নি। এরপর থেকে হালিমা খালা ঝুমঝুমির সাথে থেকে গিয়েছে। ঝুমঝুমিকে মেয়ে বানিয়ে ঝিনুক নাতনী বানিয়ে। জীবনে তো একটু সুখেই খোঁজতে চেয়েছিল সেটা পেয়ে গেছে ঝুমঝুমি,ঝিনুককে পেয়ে।

একজন মেয়ের বাবা মায়ের পর আপন যে হয় সে স্বামী। স্বামীর মত আপন কেউ হতে পারে না। সেই আপন মানুষটার মৃ’ত্যু’তে হালিমা খালাকে খুশি দেখে তারও মনে খুশি হওয়ার ইচ্ছে জাগলো। সেদিনের পর থেকেই নিজের মনকে খুশি করার জন্য উঠেপড়ে লাগলো যাদের কারণে তার জীবন দুর্নিবার তাদের সে ভালো থাকতে দিবে না। সময় নিয়ে নিজেকে তৈরি করল। ঝিনুকের বয়স যখন তিন বছর তখন বস্তি বাসাটা ছেড়ে ভালো একটা বাসা নিলো হাই স্কুলের পাশে। তিনমাস ধরে হাই স্কুলে গেস্ট টিচার হিসেবে আছে সে।

তিন চারমাস পর একদিন মার্কেটে গিয়ে রুজিনা বেগমকে দেখে আড়ালে থাকলো। সেদিন থেকেই পিছু নেওয়া শুরু। কোথায় থাকে? কি করে সবকিছু জেনে নিলো।

পৌষ মাস তখন। ভোরে চারদিকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা জাল, সাদা সাদা ধোঁয়া, হাড় কাঁপানো শীত। রুজিনা বেগমের ডায়েবেটিস ধরা পড়েছে। প্রতিদিন সকালে এক ঘণ্টা হাঁটার পরামর্শ ডক্টরের। শীতের সকাল সাতটার সময়ে তখন চারদিকে কুয়াশা। পার্কের ধারে সরু রাস্তায় রোজ একা-একা হাঁটেন ওনি। ঝুমঝুমি সাড়ে ছয়টায় রেডি হয়ে ওঁৎ পেতে আছে শি’কা’রে’র জন্য। ঝুমঝুমি সেদিন পড়েছিল কালো বোরখা, হাত পায়ে মোজা, চোখে চশমা, সামনে ঝুলানো স্কুল ব্যাগ। একমনে ধীরে-ধীরে রাস্তায় হাঁটছে সে। রুজিনা বেগম ঝুমঝুমিকে চিনতে পারলো না। ভেবেছিল হয়তো কলেজের স্টুডেন্ট কোচিং করতে যাচ্ছে। এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল,
-” নাম কি? কোথাও পড়াশোনা করো?

যতটা সম্ভব কণ্ঠ নিচু করেই বানিয়ে-বানিয়ে অনেক কথা বলতে লাগলো ঝুমঝুমি। দশ মিনিট আলাপ-আলোচনা করে দুজন বসলো বেঞ্চে। শীতকাল তখন‌ও অব্দি জায়গা ফাঁকা। রুজিনা বেগমের মুখ খোলা তখন। আবদারের কণ্ঠে ঝুমঝুমি বলল,
-” আন্টি আমি একটা জিনিষ বানিয়েছি দেখবেন?

রুজিনা বেগম খুশি হয়ে দেখতে চাইলো। ঝুমঝুমি তখন সুন্দর একটি রুমাল বের করল যার মধ্য খুব সুন্দর করে হাতের কাজ। রুজিনা বেগম রুমালটা হাতে নিয়ে ওলটপালট করে দেখলেন।
-” তুমি নিজে করেছ? খুব সুন্দর তো। আমায় একটা জামায় এভাবে কাজ করে দিবে। যা খরচ হবে দিয়ে দিবো।
-” আপনি যে কি বলেন আন্টি। টাকা লাগবে কেন? এক কাজ করুন এইটা আপনি নিয়ে নিন। জানেন এটার ঘ্রাণ খুব সুন্দর। শুকে দেখুন।

রুজিনা বেগম নাকে ঠেকানো মাত্রই চোখের সামনে সব ঝাপসা হতে দেখলেন তারপর আর কিছুই মনে নেই ওনার। জীবনের প্রথম খু’ন। হাত কাঁপছিল খুব তবুও চোখ বুজে ছু’রি চালালো রুজিনা বেগমের দে’হে। সেদিন এত র’ক্ত দেখে বমি পর্যন্ত করেছিল ঝুমঝুমি। কাজ শেষ করে এক মুহুর্ত সময় নষ্ট না করেই নিজের ঠিকানায় চলে আসে। এখানে থাকে ছয়মাস তারপর পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে আসে ঢাকায়। ঢাকায় এসে বাকি দুটো খু’ন করে।

সবাই তখন বিস্ময়,অবাক,আহত দৃষ্টিতে দেখে ঝুমঝুমিকে। জীবনে মেয়েটা অনেক কিছু সয়েছে। সে তো বাঁচতে চেয়েছিল কিন্তু পিছুটান,অতীত তাকে সুখে বাঁচতে দিল না। সুখের সংসারে নজর পড়েছিল বদ লোকের। এ নজর খুবই ভয়ংকর। একরাশ ঘৃনা, প্রতিশোধের নেশায় বুদ হওয়া ঝুমঝুমি আচমকা আবার কেঁদে উঠল। আষাঢ় তখন ঝুমঝুমিকে বুকের সাথে মিশিয়ে চোখ বন্ধ করে গম্ভীর কন্ঠে বলল, তুমি কেঁদো না তেজপাতা। বিশ্বাস রাখো তোমাকে আমি আর কাঁদতে দিবো না। তোমার জীবনের অতীত তো আমি মুছে দিতে পারবো না কিন্তু তোমার ভবিষ্যত হবে উজ্জ্বল, আলোকিত সেখানে থাকবে না কষ্ট,বিরহ,প্রতিশোধ।
-” আপনি আমায় ছেড়ে যাবেন না তো।

কাতর কণ্ঠ তীরের বি’ধ’লো আষাঢ়ের বু’কে। আরো শক্ত করে চেপে ধরে বলল, তোমার ছেড়ে দিলে যে আমি ম’রে যাব প্রিয়। তোমার ছাড়া আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তুমিই তো আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন। আমার প্রেম বাগানের একমাত্র প্রেম ফুল তুমি। তুমি না থাকলে আমার বাগান যে ভরে যাবে আগাছায়।

রুমে থাকা প্রতিটি সদস্য দেখল সেই দৃষ্টি। প্রত্যেকটি মানুষের চোখে তখন অশ্রু। তারাও চায় দুঃখবিলাসি মেয়েটার মনের ভেতরে প্রেমের বাগান হোক। সেই বাগানের একমাত্র মালি শুধুই আষাঢ়।

##চলবে,,

#প্রেয়সীর_শব্দপ্রেম (দ্বিতীয় খন্ড)
#ফারজানা_মুমু
[১৪]

সকাল-সকাল সবাই মিলে পুরো বাড়ি পরিষ্কার করতে শুরু করল। কাজের ফাঁকে-ফাঁকে নাজিমের কবিতা বলায় জমে উঠেছে দারুণ আড্ডা। ভুলে বসেছে রাতের কথা। ধুলোবালি পরিষ্কার করার ফাঁকে নাজিমের বেলেহাজ কবিতা শোনে হিরণের চোখে দুষ্টুমির খেলা অন্যদিকে তৃষ্ণা লজ্জায় ম’রি-ম’রি। ঝুমঝুমি তো কানে তুলো দিয়ে কাজ করছে যেন। হালিমা খালা অবশ্য ঝিনুককে নিয়ে পরিষ্কার রুমে শুয়ে আছে। নাজিম আগেই ওনাকে আলাদা রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখানে চলছে সব এডাল্ট কথাবার্তা। ঝুমঝুমি শুনেও না শোনার ভান ধরে আছে। চারদিকে জোড়া-জোড়া শালিকের দল দেখে নাজিমের মুখটা বেলনের মত ফুলে আছে। বাচ্চাদের মতন করে আকুতি ভরা কণ্ঠে দেওয়াল ঝার দিতে দিতে ই বলে উঠল,
-“মাঝে-মাঝে মন চায় থেমে থাকা গাড়ির নি’চে পরে ম’রে যাই কি দরকার এমন একটা জীবনের যেখানে বন্ধুরা প্রেমিকা, বউ নিয়ে ঘুরে সেখানে এখনও প্রেমিকার ‘প’ জুটাতে পারলাম না।

শুনো হে প্রিয়তমা ,
তোমারে নিয়ে আমার কত যাতনা।
যেও না গো তুমি অন্য কারো হয়ে,
অকালে হারাবে সুখ আমায় না পেয়ে।

নাজিমের বিরহী কবিতা শোনে সবাই হাসলো। তারপর শান্তনা বানিয়ে শুনিয়ে নিজেরা নিজেদের মতো কাজ করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর আষাঢ় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাসায় এনে হাঁক ছাড়লো।
-” তৃষ্ণা,নীরা তোমরা বাসায় চলে যাও। পুলিশ পৌঁছে গেছে ঝুমঝুমিদের বাসায় ওখানে কাউকে দেখতে না পেয়ে ওর পুরনো রেকর্ড বার করছে। তোমাদের দুজনের কাছে পৌঁছানো শুধু সময়ের অপেক্ষা।

নীরা ভীতু দৃষ্টিতে তাকালো। পুলিশের নাম শোনে রীতিমত হাত কাঁপছে ওর। কণ্ঠে তীব্র ভয় রেখেই বলল,
-” তাহলে আমরা কী করব এখন? পুলিশকে কী বলব?
-” বলবে ঝুমঝুমির সাথে পাঁচ বছর ধরে যোগাযোগ নেই। কোথায় আছে কি করে কিছুই জানো না তোমরা।

আশ্বস্ত হলো নীরা তাৎক্ষণিক মুখ খুললো তৃষ্ণা।
-” আমাদের ভার্সিটির প্রধান ওনি তো জানেন ঝুমঝুমির সাথে আপনার সম্পর্ক আছে। পুলিশ যদি ওনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাহলে তো জেনে যাবে আপনার কথা।

মুখ বাঁকালো আষাঢ়। পুলিশ-টুলিশ ওর কিচ্ছু করতে পারবে না। এমপির ছেলে সে, ক্ষমতা অনেক কিন্তু সমস্যা হলো এ-বিষয়ে ওর বাবার কাছ থেকে কিঞ্চিৎ পরিমাণ সাহায্য পাবে না সে। যেহেতু এমপি সাহেব বিয়েতে রাজি নন সেক্ষেত্রে দেখা যাবে ঝুমঝুমিকে ধরিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা ওনি করবেন। সেজন্যই তো এমপির গোপন জায়গায় মাথা গুঁজেছে। এমপি সাহেব আর যাই করুক কখনই এই জায়গার কথা বলবে না। তবুও নিজের একটা এক্সট্রা ক্ষমতা আছে আষাঢ়ের।
-” ভার্সিটির প্রধান আপাতত কানাডায় আছেন ওনার সাথে যোগাযোগ করবে না যদিও বা করে তাহলে স্যার আমাদের কথা বলবেন না। আর শুনো আমাদের দেশের পুলিশ কতদূর যেতে পারে সে সম্পর্কে আমি জানি। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত বুঝেছ। তোমাদের ওসব নিয়ে ভাবতে হবে না শুধু পুলিশ আসলে বলবে যোগাযোগ নেই।

হিরণ জানতে চাইলো, তাহলে এখন কী করবি তুই? পরের প্ল্যান?
-” দেশ ছাড়বো। আমি কাগজপত্র রেডি করার প্ল্যান করছি।

আবারও অবাক হলো সকলে। ভয়ার্ত দৃষ্টিতে প্রশ্ন ছুঁড়লো মিরাজ, কাগজপত্র রেডি করার সময় যদি ওরা ধরে ফেলে ঝুমঝুমিকে ত‌খন কী হবে!

আষাঢ়ের রাগ হলো খুব। তীব্র রাগ। স্ল্যাং শব্দ উচ্চারণ করতে গিয়েও থেমে গেলো। সকলের সামনে এ-ধরনের শব্দ উচ্চারণ করা ঠিক হবে না বলে গিলে ফেলল কথাগুলো। ধীরে সুস্থে বলল,
-” আমারে তোদের ফেলনা মনে হয়? ভুলে যাস না আমি এমপির ছেলে। টাকা কথা বলবে। টাকায় সব হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে সব কাগজপত্র রেডি করে দেশের বাইরে পাড়ি জমাবো। আমার পরিবারের কথা জিজ্ঞাসা করলে বলব আমি পরোয়া করি না। মাঝে-মধ্যে নিজের খুশির জন্য বেপরোয়া হওয়া অন্যায় নয়। ড্যাডকে সামলানো আমার বাঁ হাতের কাজ। তবে তাকে সামলানোর জন্য আমার দরকার সঠিক সিদ্ধান্ত। সবার আগে ঝুমঝুমিকে নিরাপদ জায়গায় রাখা জরুরি তারপর আসি পরিবারকে মানানো। এমপি আসাদুল্লাহ জেওয়াদ চৌধুরীর ছোট ছেলে আষাঢ় জেওয়াদ চৌধুরী আমি ভুলে যাস না। যে মেয়ের জন্য আমার জীবন শে’ষ হতে চলেছিল মৃ’ত্যু’র মুখ থেকে ফিরে এসেছি সেই মেয়েকে আমার পরিবার সাদরে গ্রহণ করবে। ওনাদের কাছে ছেলের জীবনের মূল্য অনেক বেশি।

শেষের কথাগুলো আষাঢ় ফিচেল হাসি দিয়ে বলল। ওর সেই হাসির অর্থ সকলেই বুঝল। তাদের মুখেও চমৎকার হাসি শুধু হাসি নেই ঝুমঝুমির মুখে। আষাঢ়ের শেষ বাক্যর অর্থ সে বুঝেছে। ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল। আষাঢ় এইটাই করবে ওর পরিবারের সাথে। মনে-মনে খুব দুঃখ পেয়েও মুখে টু শব্দটি করল না। কারণ এছাড়া যে উপায়ও নেই।

তৃষ্ণা,নীরা,হিরণ,মিরাজ ও নাজিম চলে যায় থেকে যায় শুধু আষাঢ়,ঝুমঝুমি,হালিমা খালা ও ঝিনুক। ঝুমঝুমির মন,মেজাজ কিছুই ভালো নেই। প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা। বিছানায় গুটিশুটি মে’রে শুয়ে আছে। হালিমা খালা রান্না করছে। ঝিনুক ভয়ানক জঙ্গলে থাকবে না বলে কান্নাকাটি করে এখন আষাঢ়ের সাথে খেলছে।

________

দুপুরের তীব্র আবহাওয়ার এখানে নেই। বড়-বড় গাছের ফাঁকে একটু করে দেখা যাচ্ছে সূর্য মামাকে। তেরছা হয়ে গাছের ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে বিন্দু পরিমাণ রোদ জানালা বেদ করে রুমে ঢুকেছে। সাথে রয়েছে মৃদু মন্দ বাতাস। টাফনিল খেয়ে সকাল থেকে ঘুমানোর পর ঘুম ভাঙ্গে ঝুমঝুমির। অলস ভঙ্গিমায় পিটপিট করে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে কোথায় আছে সে। অনেকক্ষণ ধরে ঘুমানোর পর মস্তিষ্ক গেঁথে থাকা অতীত স্মরণে আসতে মিনিট খানেক সময় লাগলো ওর। তারপর আস্তে করে বিছানা থেকে নেমে জানালার কাছে দাঁড়াতেই তেরছা রোদটুকু মুখে এসে লাগলো। আরামদায়ক প্রাকৃতিক বাতাসের সাথে রোদটুকু ভালোই লাগছে গায়ে। দুহাত উপরে তুলে হাই তুলে পিছন ঘুরতেই কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে স্মিথ চোখে তাকিয়ে আষাঢ়কে দেখে মিষ্টি হেসে বলল, জনাব আপনি এখানে? এখনও যাননি?

নিস্পলক চোখজোড়া মুগ্ধ নয়নে দেখল সেই মধুময় হাসি। কণ্ঠের মাধুর্যে হারিয়ে গেলো স্বর্গসুখে। দু’হাতে ঝুমঝুমির দু’কাঁধে হাত রেখে আবেদনময়ী কণ্ঠে বলে উঠল,
তুমি আমার সবচেয়ে
আপন দুখ___
যত্ন করে পুষে রাখা
অতিপ্রিয় অসুখ।(কালেক্টেড)

ঝুমঝুমি শান্ত গভীর চোখজোড়া চেয়ে রইল সামনে থাকা অদ্ভুদ পাগলাটে প্রেমিকের চোখ পানে। এ দৃষ্টি যেন সরবার নয়। দুজন-দুজনকে দেখার তৃষ্ণাতে মত্ত। কাঁ’টা প্রেম,প্রেমিকের না পাওয়া গোলাপ ফুল নিজ থেকেই কাঁ’টা ছাড়িয়ে ধরা দিল হৃদয়ে।

তখনই দৌঁড়ে আসলো ঝিনুক। এসেই আষাঢ়ের কোমড় জড়িয়ে আদুরী বেড়ালের মত মুখ চেপে বলল, বাবা, আমরা বিদেশে যাব কেন? নানু বলেছে আমরা সবাই বিদেশ যাব। বিদেশে কি হয় বাবা? ওখানে স্কুল আছে? ফ্রেন্ড আছে? পার্ক আছে? আচ্ছা ওখানে গিয়ে কী হবে?

আষাঢ় দুহাতে ঝিনুককে কোলে তুলে নিলো। ঝুমঝুমির দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি বজায় রেখে বলল, ওখানে তোমার ভাই আছে,বোন আছে মা। ওখানে সব আছে।

ছোট্ট মুখটি খুশিতে ঝলমল করল। ঝুমঝুমি রাগী চোখে তাকালো আষাঢ় সেটা পাত্তা না দিয়ে আরো অনেক কিছু বলতে লাগলো ঝিনুককে। সে তো আষাঢ়ের গলা জড়িয়ে ধরে একটু মন খারাপের ভান ধরে বলল, আচ্ছা বাবা তুমি আগে আসো নি কেন? মাম্মা কেন বলেছে তুমি ম রে গেছ?

আষাঢ় তখন এক হাতে ঝুমঝুমির নাকে টান দিয়ে বলল, তোমার মাম্মা খুব বোকা তো তাই। আসো আমরা বাবা মেয়ে খেতে বসি। তোমার নানু মজার মজার কিসব রান্না করেছে চলো খেয়ে আসি।

ঝিনুককে কোলে নিয়ে যেতে-যেতে ঝুমঝুমির উদ্দেশ্য বলে উঠল, বোকা তেজপাতা, ফ্রেশ হয়ে চলে আসো। দেরি করলে খাবার পাবে না।

ঝুমঝুমির হঠাৎ মন ভালো হয়ে গেলো। সুন্দর একটি দৃশ্য যেন সত্যিই ওরা বাবা-মেয়ে। হ্যাঁ তো সত্যিই তো ওরা বাবা মেয়ে। কেন র’ক্তে’র সম্পর্ক ছাড়া বুঝি বাবা-মেয়ে হতে পারে না। আত্মিক টান র’ক্তে’র টানের মতোই তো মজবুত। তবে ওর মনে এখনও গেঁথে আছে মেঘকে নিয়ে। মেঘের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত নয় সে। তাছাড়া মেঘ কী খোঁজে পাবে আষাঢ়ের গোপনীয় জায়গার কথা। অন্যদেশে চলে গেলে মেঘকে কী শাস্তি দিতে পারবে না-ও। আবারও তরতর করে খু’নে’র নেশা মাথায় চাপলো। মেঘ তো আসলো কালপ্রিট তাহলে ওর শাস্তি হবে না কেন? মেঘের শাস্তি হবে ভ য় ঙ্ক র। সবথেকে ভ’য়া’ন’ক শাস্তি দরকার মেঘের কিন্তু এখান থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই ওর হাতে। র’ক্ত নিয়ে খেলা করা অভ্যাস হয়ে গেছে ঝুমঝুমির। মেঘের মৃ’ত্যু না দেওয়া পর্যন্ত তো ম’রে গিয়েও শান্তি পাবে না ও। দুটনায় পড়ল ঝুমঝুমি। বুদ্ধি কাজ করছে না কোনো। তরতর করে বেড়ে গেল মাথা ব্যাথা। দুহাত চেপে বিছানায় শুইয়ে পড়তেই আবারও ঘুমেরা চলে আসলো দ্বারে।

আষাঢ় ঝিনুককে হালিমা খালার সাথে রেখে আসলো ঝুমঝুমিকে নিতে এসে দেখলো আবারও ঘুমাচ্ছে ঝুমঝুমি। ডাকলো না আর। পরম যত্নে কপালে হাত রেখে বলে উঠল,
শুনো হে বিশ্বজগৎ,
শুনো হে আকাশ,
আমার ভালোবাসার মুগ্ধতায়,
প্রেয়সীর শব্দপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ।

##চলবে,

রি চেইক করা হয়নি

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ