Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রেয়সীর শব্দপ্রেমপ্রেয়সীর শব্দপ্রেম পর্ব-৭+৮

প্রেয়সীর শব্দপ্রেম পর্ব-৭+৮

#প্রেয়সীর_শব্দপ্রেম (দ্বিতীয় খন্ড)
#ফারজানা_মুমু
[৭] ও [৮]

স্টাডি রুমে তালা লাগিয়ে মাউথ অর্গানের সুর লক্ষ্য করে এগিয়ে যায় ঝুমঝুমি। সুরটা আবিষ্কার করে নিজের রুম থেকে আসছে। বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যায় ঝুমঝুমি। বেড রুমে এখন ঝিনুক ও হালিমা খালা ঘুমিয়ে আছে। কিছু একটা আন্দাজ করে রুমের ভিতরে ঢুকতেই ভিতর থেকে হৃদয় কেঁপে উঠে। ঝিনুক খাটের উপরে বসে মাউথ অর্গান বাজাচ্ছে। দৌঁড়ে গিয়ে মেয়ের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফ্লোরে ছুঁড়ে মারে ঝুমঝুমি। ধমক দিয়ে বলে, কোথায় পেয়েছ মাউথ অর্গান? ঘুমাও নি তুমি?

কাঁদো-কাঁদো স্বরে বলে ঝিনুক, হিসু করতে উঠে দেখি তুমি নেই। নানু নিয়ে গেছে। ঘুম আসোনা তাই ওইটা বাজাতে শুরু করি।

ঝিনুক তোতলিয়ে কথাগুলো বলল। কান্নার জন্য আটকে যাচ্ছে কথা। ঝুমঝুমি আবার জিজ্ঞাসা করে, কে কিনে দিয়েছে?
-” ওইদিন ঘুরাঘুরির সময় আমার পছন্দ হয় আষাঢ় আঙ্কেলকে বলার পর আজ নিয়ে আসছে।

আষাঢ়ের প্রতি তীব্র রাগ জমা হয় ঝুমঝুমির। মাথা ফে’টে দেওয়ার মতো রাগ। শরীর রাগে জ্বলে যাচ্ছে। এক গ্লাস পানি গলায় ঢেলে শান্ত হয়ে মেয়েকে বুঝিয়ে বলে, ঘুমিয়ে পড়। ওসব আর বাজাবে না। ভালো না। আর শুনো অন্যর কাছ থেকে এটাসেটা নিবে না লোকে মন্দ বলবে। যা দরকার আমায় বলবে আমি কিনে দিবো। বুঝেছ?

বাধ্য মেয়ের মতোই মাথা ঝাঁকায় ঝিনুক। রাগান্বিত মুখটা হাসির চেষ্টা করে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পড়ে। চোখ বুঝতেই ভেসে উঠে সেদিনের ঘটনা। বিয়ের দিনক্ষণ যখন আশার আলোর অপেক্ষায় বসে ছিল তখন আলো ঠিকই এসেছিল কিন্তু ঝকঝকে ফকফকা হয়ে নয় আঁধার রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে। কেড়ে নিয়েছিল প্রিয় মানুষটাকে।

ভাবতে পারছে না ঝুমঝুমি। মাথা ধরে যাচ্ছে। দু’চোখে অশ্রু ভর করেছে। কিন্তু ঝুমঝুমিদের কাঁদতে মানা। ওরা কাঁদলে যে মানুষরূপী পশুরা ঝাঁ’পি’য়ে পড়বে।

___________________________

দেখতে-দেখতে চলে গেল সপ্তাহ। নীরা-হিরণের বিয়ের তারিখ নিকটে চলে আসলো। বিয়ের নিমন্ত্রণ কার্ডের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে মেয়র হান্নান। একমাত্র ছেলের বিয়েতে কোনরকম কমতি রাখবে না। মেনু থেকে শুরু করে কতজন দাওয়াত দেওয়া হবে সবই হিসাব-নিকাশ করে ফেলেছে কিন্তু আজ বিয়ের কার্ড দশ হাজার ছাপানো দেখে ভিমড়ি খেয়ে উল্টো হয়ে যাবার জোগাড়। আত্মীয়-স্বজন,পাড়াপড়শি, রাজনীতির লোকেরা ছাড়া বেশ কিছুজন ঘনিষ্ট সম্পর্কের মানুষ নিয়ে কত হবে দেড় দুই হাজার লোক। তবুও মেয়র হান্নান আড়াই হাজার মানুষের ব্যাবস্থা করেছে কিন্তু ছেলের কার্ডের দিকে তাকিয়ে গলা ভিজিয়ে বলল, বাপজান, দশহাজার কার্ড দিয়ে কি করবেন আপনে?

কার্ডে নাম লিখতে-লিখতে হিরণ জবাব দিল, আব্বা,কার্ড মানুষ ছাপায় কেন? অবশ্যই দাওয়াত দেওয়ার জন্য।
-” তাই বলে দশ হাজার!
-” আব্বা আপনার দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র ছেলে তার উপর আপনি কিনা কিপটামি করছেন তাও ছেলের বিয়েতে? মানা যাচ্ছে না আব্বা। আপনার টাকা-পয়সা সব কার? আমার এবং আপনার নাতি-নাতনীদের তাই তো?

হকচকিয়ে উঠল মেয়র হান্নান। আমতা-আমতা করে বলল, হয়। তাই বলে দশহাজার! এত মানুষ পাইবেন কই?
-” আপনি চিন্তা করবেন না আব্বা। মানুষ আমি রাস্তায় খোঁজে নিবো। বড় রাস্তার মোড়ে কার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো যতজন পাব সবাইকে নিমন্ত্রণপত্র বিলাবো। আপনি বরং মেনি কার্ডের সব বাড়িয়ে দিন। বিশ হাজার মানুষের আইটেম বলবেন। আরো দশ হাজার কার্ড আগামী পরশু চলে আসবে।

ছেলের এহেন কথাতে ধপাস করে বিছানায় পড়ল মেয়র হান্নান। ছেলের মাথার তাঁর ছিঁড়ার সাথে সাথে নিজের মাথাটা নষ্ট হয়েছে বুঝা মাত্রই আপসোস হচ্ছে। মনেমনে নিজের প্রিয় বিবিকে স্মরণ করে বলতে লাগলো, বিবিজান তোমার পুত্রের মাথা বিগড়ে গিয়েছে। এটাকে ঠিক করার উপায় খোঁজে দাও।

কল্পনার মনসত্তা জানান দিল, আপনার পুত্র আপনার মতোই হয়েছে। পুত্রের মাথা ঠিক করতে পুত্রবধূর দরকার। অতি শীঘ্রই সে আপনার গুণধর পুত্রের মাথা ঠিক করে ফেলবে যেমন আমি ঠিক করেছিলাম।

_____________

গায়ে হলুদের জন্য ঠিক করা হয়েছে পার্টি সেন্টার বা কমিনিউটি সেন্টার যাই বলা হোক। ছেলে-মেয়ে দুজনের জন্যই একয় জায়গায় ব্যাবস্থা করা হয়েছে। বিশাল জায়গা জুড়ে আয়োজন আমেজ। নীরার গায়ে হলুদ শাড়ি, ফুলের গহনা। স্টেজে বসে ফ্রেন্ডের সাথে আড্ডায় মত্ত। হিরণ পড়েছে গোল্ডেন কালারের পাঞ্জাবি। বর-বউয়ের সাজার থিম ভিন্ন রেখে বাকিদের থিম একই। আষাঢ়ের আসতে দেরি হবে। ফ্যামিলির ব্যাক্তিগত কারণে দুদিন আগে যেতে হয়েছে ইন্ডিয়া। আজ দু-তিন ঘন্টার মধ্যেই চলে আসবে।

-” নীরু পাখি একটু এদিকে আসো প্লিজ।

নীরা লজ্জার মুখ তুলতে পারছে না। হিরণকে সে লজ্জা পাচ্ছে। ইশ আগামীকাল তার বিয়ে। লজ্জায় লাল মুখশ্রী। তৃষ্ণা লজ্জাটা আরো তিনগুণ বাড়িয়ে দিল। বলল, আপেলের মত হচ্ছিস ভাইয়া কিন্তু খেয়ে ফেলতে পারে।
-” লজ্জা দিচ্ছিস কেন?
-” তুই লজ্জা ই বা পাচ্ছিস কেন? যা কথা বলে আয়।

শাড়ি উঁচু করে ধরে নীরা হিরণের পিছন-পিছন গেল। মিরাজ তখন তৃষ্ণাকে ঠেস মেরে বলল, সবাই তো বুকিং। তুমি কবে হবে?
-” আপনাকে বলব কেন?
-” বুড়ি হয়ে যাচ্ছ তাই চিন্তা হচ্ছে।
-” চিন্তা করতে হবে না। নাজিম ভাইয়ের কথা বাসায় বলব ভাবছি। তাহলে আমরা বান্ধবীরা একসাথে থাকতে পারবো।

মিরাজের রাগ উঠল হঠাৎ করেই। আচমকা তৃষ্ণার হাত চেপে ধরে এক সাইডে গিয়ে দাঁড়িয়ে দু’গালে হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলল, আমার সাথে প্রেম করে এখন নাজিমকে বিয়ের কথা ভাবছিস। খু’ন করে ফেলব।
-” আমাদের ব্রেকআপ হয়ে গেছে।
-” ব্রেকআপের গুল্লি। আমি প্যাচ‌আপ করলাম।
-” মামার বাড়ির আবদার।
-” মিরাজের আবদার। প্রেম করবে আমার সাথে বিয়ে করবে অন্যজনকে। সাহস হয় কী করে তোমার।
-” আমার ইচ্ছে।
-” রাগ উঠাবে না। ফল ভালো হবে না।
-” কেন আমায় না আপনার অসহ্য লাগে তাহলে কিসের প্রেম।

মিরাজ হুট করেই তৃষ্ণার হাতে চুমু দিল। বলল, মজা করে বলেছিলাম কিন্তু তুমি সত্যি ভেবে ব্রেকআপ করেছ।

ঘটনাটা হলো ঝুমঝুমি চলে যাবার পরের কাহিনী। ঝুমঝুমির যখন কোনো খোঁজ-খবর পাওয়া যাচ্ছিল না তখন তারা যোগাযোগ করে হিরণ,মিরাজ ও নাজিমের সাথে। আষাঢ় তখন দূর দেশে পাড়ি দিয়েছে। এমন একটি খবর শুনে সকলের মাথায় হাত। কি করবে বুঝতে পারছে না এ অবস্থায় আষাঢ়কে কিছু বলাও যাচ্ছে না। ঝুমঝুমির বাসার ঠিকানা জানতো না তৃষ্ণা-নীরা। কোনোদিন প্রয়োজন পড়েনি ওদের। ভার্সিটির ডিটেলস থেকে তো সব জানা যায় না তারউপর ফোন নাম্বার অফ। হাতে কিছুই ছিল না ওদের। আষাঢ় আসলো মাস তিনেক পরে। ঝুমঝুমির কথা শুনে অসুস্থ হলো। তখন আষাঢ়ের খোঁজ খবর,দেখতে যাওয়া নিত্য দিনের রুটিন ছিল তৃষ্ণা-নীরার। হিরণ তখন আষাঢ়ের এই অবস্থার জন্য দায়ী করে নীরাকে। কথা বলা বন্ধ করে,ইগনোর করে। সবকিছু সামাল দেওয়ার জন্যই তৃষ্ণা মিরাজের সাথে কথা বলতো। কথা বলতে-বলতে ওদের মধ্য বন্ধুত্ব বেশি সম্পর্ক তৈরি হলো। দেখা করা,কথা বলা,হিরণকে বুঝানো সবই করতো তৃষ্ণা। এমন চলতে-চলতে প্রেম হয় তৃষ্ণা-মিরাজের। কিন্তু ছয় মাস আগে ব্রেকআপ হয় ওদের। সেদিন মিরাজ কিছু একটা নিয়ে বিজি ছিল,মাথাও তখন খুব গরম। ও আবার হট টেম্পার মাথা হুটহাট গরম হয়। সেদিনের রাগের বশে মিসবিহেভ করে বসে তৃষ্ণার সাথে। তৃষ্ণার মাথাও অলয়েজ গরম, কথার হেরফের হলেই রেগে যায়। কথার আছে না , বিষে বিষে বিষক্ষয় তেমনি রাগে রাগে জ্বলন্ত। দুজনে ব্রেকআপ করে সেদিন। তৃষ্ণা তো ভুলেও কথা বলে না, ঝ’গড়া করে অন্যদিকে মিরাজের ইগো। এই নিয়েই চলছিল দিন। আজ যখন তৃষ্ণা নাজিমকে বিয়ের কথা বলে হট টেম্পার মিরাজ রেগে তৃষ্ণার হাত ধরে নিরিবিলি নিয়ে যায়।
-” সরি আর রাগ করব না।
-” তাহলে কানে ধরুন।
-” ছি মানুষ দেখলে কি বলবে।
-” ব্রেকআপ আবারও।

বাধ্য হলো মিরাজ। আশপাশ চোখ বুলিয়ে কানে ধরে উটবস করতে শুরু করল। কোমরে হাত রেখে হেসে যাচ্ছে তৃষ্ণা কিছুতেই সেই হাসি বন্ধ হচ্ছে না। তৃষ্ণার হাসি দেখে নিজের ঠোঁটেও হাসি ফুটিয়ে বলল মিরাজ,তোমার ওই হাসিতে আমার জীবন ধন্য হোক।

#পর্ব [৮]

নীরার কোমরে আলতো হাতে স্পর্শ করেছে হিরণ। শীতল স্পর্শে কেঁপে উঠল নীরা। চোখজোড়া বন্ধ করে বিড়বিড় করল, কি কি করছেন?
-” কিছু তো করিনি এখনও।
-” ছাড়ুন। লোকে দেখবে।
-” তো? নিজের হবু বউকে ছুঁয়েছি লোকে দেখলে কী হবে?
-” আপনার লাজ-লজ্জা কিছু নেই।
-” থেকে কী লাভ? বরং লস প্রজেক্টের আরেক নাম লাজ-লজ্জা। লজ্জা থাকলে তুমি আমার সংসার করবে? বাসর রাতের পরেরদিন গিয়ে বাসায় জানাবে ছেলের গোপনীয় সমস্যা আছে। এ ছেলের সাথে সংসার করা যাবে না।

লজ্জায় শাড়ির আঁচল আঙ্গুলে পেছালো নীরা। লোকটা লাগাম ছাড়া কথা বলে সে জানতো তাই বলে এসব। তবে শুনতে ভালোই লাগছে ওর। অন্যরকম অনুভূতি অনুভব করছে প্রখর ভাবে।

হিরণ চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখল কেউ আছে কিনা। কাউকে দেখতে না পেয়ে নীরাকে নিজের দিকে আরেকটু চেপে ধরল। নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পারছে দুজন। দুহাতে শক্ত করে নীরাকে জড়িয়ে ধরে আবেদনময়ী কণ্ঠে আবদার করে বসল হিরণ।
-” প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড নীরু পাখি। আমি এখন যা করতে চাইছি তারজন্য আগেই সরি বলে রাখলাম।

নীরা প্রশ্ন করতে যাবে তার পূর্বেই হিরণ দখল করে ফেলল ওষ্ঠাধর। অমৃতের স্বাদ নিতে লাগলো। নীরার দুহাত হিরণের পাঞ্জাবি চেপে ধরেছে। দীর্ঘ সময় নিজেদের মধ্যে মত্ত থাকলো দুজনা। নীরাকে ছাড়তেই লজ্জায় মুখ নিচু করে রাখল নীরা। হিরণের চোখে তাকানোর ফুরসৎ নেই তার। সম্বিত ফিরে আসতে হিরণকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে স্টেজ বরাবর দৌড় লাগালো। নীরাকে দৌড়াতে দেখে ঠোঁট চেপে হাসলো হিরণ। রাগ নিয়ে প্রণয় শুরু লজ্জাতে ইতি টানল। প্রেয়সীর লজ্জামাখা মুখটি আরো বাড়িয়ে তুলল অনুভুতি। শিউরে-শিউরে কেঁপে উঠল হৃদ পিঞ্জর। এ অনুভুতি বলে কয়ে বুঝানো যাবে না,অনুভবে বুঝতে হবে। ভাষাহীন অনুভূতির কথা বুঝানোর একমাত্র অ’স্ত্র ভালোবাসা।

__________________________

ঝিনুক গোল্ডেন পারের হলুদ শাড়ি পরেছে। ফুলের মালায় ছোট্ট অপ্সরী দেখাচ্ছে ও’কে। মাথায় ফুলের ব্যান্ড দেওয়াতে মনে হচ্ছে ফুল দেশের ছোট্ট টুকটুকে ফুলপরী। রেডিমেট ফুলের বড় বড় টিপ কানের দুল পড়াতে খুব খুশি সে। জুতো পরে বাইরে এসে বারবার উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে ঝিনুক। বিয়েতে যাবে বলে খুশি যেন কমছে না ওর। মেয়ের তাড়াহুড়োয় হালিমা খালাকে নিয়ে বাইরে বের হলো ঝুমঝুমি। মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে বাইরে আসতেই মা’কে বোরখা পরে আসতে থেকে মুখ ফুলিয়ে রাখল ঝিনুক।
-” কি হয়েছে মুখ ভার কেন?
-” তুমি সাজোনি কেন মাম্মা?
-” তুমি সেজেছ আমি এতেই খুশি মা। তুমি জানো না আমার সাজতে ভালো লাগে না।
-” আমি যাবো না মাম্মা।

অবাক হলো ঝুমঝুমি। জানতে চাইলো, কেন? কি হয়েছে আমার মায়ের?
-” সবাই ওখানে সেজেগুজে থাকবে কিন্তু আমার মাম্মা সাজবে না। আমার ভালো লাগছে না মাম্মা। খুব কান্না পাচ্ছে।

মেঘের দলেরা হানা ছিল ঝিনুকের মুখশ্রী জুড়ে একটু পরেই বৃষ্টি ঝরবে। মেয়েটা একদম ওর মতোই হয়েছে। সব যেন বুঝে ফেলে। ওর বয়সে অন্য বাচ্চারা এসব খেয়াল করবে না কিন্তু ঠিকই মেয়েটা খেয়াল রেখেছে। গর্ব হলো ঝুমঝুমির। মেয়েটাকে সঠিক ভাবেই মানুষ করতে পারছে।

হালিমা খালা ঝিনুকের চোখের পানি মুছে বলল, দেখছো আগেই কইছি যাও শাড়ি পর। বিধবা হইলে কী হলুদ শাড়ি পিন্দন যায়না? আমারে দেখো আমি তো ঠিকই পড়ছি। অমানুষটা ম’রা’র পর থেইক্ষা আমার জীবনডা ভালা যাইতেছে। বাইচ্চা থাকতে তো আমারে এক মিনিটও শান্তিতে থাকতে দেয় নাই। আইচ্ছা ঝিনুকের বাপ কেমন আছিল, মা? আমার জামাইয়ের মতন অমানুষ নাকি ভালা?

ঝুমঝুমি ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকালো। হাত পা কাঁপছে রীতিমতো। ঢোক গিলে আমতা-আমতা করে বলল, আমার দেখা পৃথিবীর সব চাইতে খারাপ পুরুষ। এতটাই খারাপ যে কিনা নিজের মেয়েটাকেও……!

বলতে পারলো না ঝুমঝুমি। গলা ধরে আসলো। হালিমা খালা না বুঝতে পেরে আবারও বলল, কি কও মা?

-” কিছুনা খালা। চলো তাড়াতাড়ি নীরা এবার রেগে যাবে। দেখা যাবে রেগে বোম হয়ে আমাকে বকা দিবে। হাহাহা।

যেতে চাইলেও ঝিনুক একরোখার মত দাঁড়িয়ে রইল সে কিছুতেই যাবে না। মেয়ের তেজ দেখে ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ছাড়লো ঝুমঝুমি। একদম বাপের মত বলতে গিয়েও বলল না। আশ্বস্ত গলায় বলল, ওখানে গিয়ে চেঞ্জ করব। তোমার পছন্দ মতোই সাজবো। চলো তাড়াতাড়ি।
-” কথা দাও।
মুখ ফুলিয়ে দম ছেড়ে বলল ঝুমঝুমি, দিলাম কথা। চলো এখন।

খুশি হয়ে মায়ের একহাত চেপে ধরে সামনে এগুলো তিনজন। রিক্সা ঠিক করে যাত্রা দিল গন্তব্য স্থলে।

__________________

বর-কনেকে একত্রে বসিয়ে হলুদ দেওয়া হচ্ছে। হিন্দি গানের তালেতালে ড্যান্স করছে অনেকে। চারদিকে খুশির রশ্মি ছড়িয়ে পড়েছে। ঝুমঝুমির চোখ তখন খোঁজতে ব্যাস্ত একজনকে। এখানে আসার পর থেকে দেখা মিলেনি আষাঢ়ের। শুনেছে ইন্ডিয়া থেকে আসবে আজ তাহলে কি এখনও আসেনি।

হাতে ফুলের থালা ঝুমঝুমির। ঝিনুক নাজিমদের সাথে খেলা করছে। একমনে কাজ শেষ করে স্টেজে যাওয়ার পথে ফুলের মালায় আটকে গিয়ে পিছনে ঘুরে আষাঢ়কে দেখে বিস্মিত হলো। হলুদ পাঞ্জাবি পড়ুয়া আষাঢ়কে দেখে চোখ ফেরানো দায় হলো। বেয়ারার মত তাকিয়ে থেকে মনে মনে নিজেকে বলল ঝুমঝুমি, ছি ঝুমঝুমি তুই তো এমন ছিলি না। তোর মতন মেয়ের লাজশরম খোয়া যাচ্ছে, এমুখ মানুষকে কীভাবে দেখাবি। ছেলেরা তাকাবে মেয়েদের পানে আর তুই কি না।

দৃষ্টি সরাতে গিয়েও পারছে না ঝুমঝুমি। মন বলছে আরো কয়েক যুগ তাকিয়ে থাকতে।
-” নজর লেগে যাবে।
-” আমার নজর লাগে না।

হেসে দিল আষাঢ়। দুষ্টুমি করে হালকা ধাক্কা দিয়ে চোখ টিপে বলল, তোমার নজরের কথা বলেনি। বলেছি আমার নজর লেগে যাবে তোমাকে দেখে। কী সুন্দর লাগছে। এক্ষুনি বিয়ে-বিয়ে ফিল আসছে আমার।

লজ্জা পেল ঝুমঝুমি। মনেমনে নিজের প্রতি রাগ হলো কেন যে সব কথা না শুনে কথা বলে ফেলে। ঝুমঝুমিকে চুপ থাকতে দেখে থালা থেকে ফুলগুলো ছিটিয়ে দিল মাথার উপর। ফুলের বর্ষণ হলো ঝুমঝুমির উপর। চিল্লিয়ে উঠল ঝুমঝুমি, এই এই কি করলেন আবার নতুন করে সাজাতে হবে।
-” আমায় দেখছিলে কেন? ঝিনুকের বাবার মতো লাগছে না আমায়? মেয়েটাকে বলেছি আজ থেকে আমায় বাবা ডাকতে।
-” বাজে না বকে কাজ করুন। আমার কাজ বাড়িয়ে দিলেন।

ফুলের বড় মালা দিয়ে ঝুমঝুমিকে টেনে নিজের সাথে লেপ্টে ধরল আষাঢ়। কপট রাগ দেখিয়ে বলল, সবসময় এমন কর কেন তুমি? একটু রোমান্টিক হতে ইচ্ছে করে না। মনে চায় না এই হতভাগাকে একটু ভালোবাসতে। তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমার কি সন্ন্যাসী হতে হবে?
-” হ্যাঁ তো। ঝুমঝুমিকে পাওয়া এত সহজ নয়।
-” কি করলে আমার এই অসাধ্য সাধন হবে?

মুখে হাত দিয়ে ভাবুক হয়ে বলল ঝুমঝুমি, বেয়াইয়াপনা কমাতে হবে।
-” পারব না। তোমার জন্য আমি আজীবন বেয়াইয়া হতে চাই। শুনছো মেয়ে?
এই যে রংধনুর এই প্রেমের দেশে, প্রেম জেগেছে এই মন মাঝারে,জমছে কত ফুলের রেণু চুলের ভাঁজে।
দখিন হাওয়া হঠাৎ এসে, আঁচল উড়ে অঙ্গ জুড়ে,
ফুলের কলিরা আলতো করে গাল ছুঁয়ে যায়।
ছুতে পারো, তুমিও আমায়।
ভালোবাসতে পারো একটু খানিক।”
-” আবোলতাবোল বকছেন কেন? আপনার থেকে নাজিম ভাইয়ের কবিতা দারুণ হয়।
-” যাই হোক। এখন বলো আমায় তুমি ভালবাস?

ঝুমঝুমির ইচ্ছে হলো বলতে হ্যাঁ আপনায় আমি ভালোবাসি। প্রচণ্ড ভালোবাসি। কিন্তু বিবেক বারবার নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। আষাঢ়ের কাতর দৃষ্টি এখনো চেয়ে আছে উত্তরের অপেক্ষায়। ঝুমঝুমি মানলো না নিষেধাজ্ঞা। আজ বিবেকের কথা ভুলে গিয়ে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলো, ভীষন ভালোবাসি।

আষাঢ় দুকদম পিছু হটলো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ঝুমঝুমি তাকে ভালোবাসে? সত্যিই শুনছে নাকি কল্পনা। জেগে-জেগে স্বপ্ন নয়তো? আবারও ঘোর লাগা কণ্ঠে বলল, আবার বলো?
-” ভালোবাসি।
-” কাকে?
-” আষাঢ় নামক একজন বোকা ছেলেকে।

আষাঢ় দাঁড়াল না আর দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরল ঝুমঝুমিকে। বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে রাখলো যেন ছেড়ে দিলেই পালিয়ে যাবে। আষাঢ়ের বুকে মাথা ঠেকিয়ে ঝুমঝুমি ভাবছে অন্যকিছু। সত্য কথা তো বলে দিল কিন্তু তার লক্ষ্য। এখনো দুজন শি’কা’র বেঁচে আছে। ওদের না শে’ষ করা পর্যন্ত শান্তি নেই। ওরা বেঁ’চে থাকলে ঝুমঝুমি মনের শান্তি পাবে না। আচ্ছা ধ’র্ষি’তা,এক মেয়ের মাকে আষাঢ় মেনে নিয়েছে কিন্তু একজন খু’নি’কে আষাঢ় স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবে? বুক ধড়ফড় করে উঠল নিমিষে। আষাঢ় যদি তখন ফিরিয়ে দেয়? তাছাড়া যদি কেউ জেনে যায় ঝুমঝুমি খু’নি তখন কি হবে? ঘূর্ণিঝড়ের প্রখর হাওয়া বইতে লাগলো ঝুমঝুমির হৃদয়ে। আষাঢ়ের কাছ থেকে দূরত্ব রেখে বলল, ঝিনুকের কাছে যেতে হবে।
-” বাসায় বিয়ের কথা বলব।

ঠোঁট দিয়ে জিহ্বা ভিজিয়ে বলল ঝুমঝুমি, এখন নয়। আমি সময় হলে বলব। প্লিজ বাড়াবাড়ি করবেন না।

আশাহত হলো আষাঢ়। বাচ্চাদের মত মুখ ফুলিয়ে নিজেকে নিজেই বলল, বুড়ো বয়সে ফুটবে তোর বিয়ের ফুল।

_________________________

বিয়ে সম্পূর্ণ হলো হিরণ-নীরার। প্রত্যেকে খুব খুশি। আমোদে উল্লাসে কাটলো মুহুর্ত। মিরাজ তৃষ্ণাকে পৌঁছে দিবে জানিয়েছে। আষাঢ় গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছে ঝুমঝুমির জন্য। পিছন সিটে হালিমা খালা ঝিনুককে নিয়ে বসে আছে। ড্রাইভিং সিটের পাশে ঝুমঝুমি। হালিমা খালার জন্য আষাঢ় কিছু বলতে পারছে না। ঝিনুককে এটা সেটা বলে বারবার ঝুমঝুমিকে ইশারায় এটাসেটা ইঙ্গিত দিচ্ছে। আষাঢ়ের বেহাল অবস্থা দেখে হেসে কুটিপাটি ঝুমঝুমি। গাড়ি থামলো মোড়ে। এদিকটায় গাড়ি ঢুকে না। হালিমা খালা গাড়ি থেকে নেমে ঝিনুককে নিয়ে জোরে হাঁটতে লাগলো। হয়তো বুঝেছে কিছু। আষাঢ় ওদের থামিয়ে ঝিনুকের কপালে চুমু দিয়ে বিদায় জানালো। ওরা যেতেই ঝুমঝুমি বলল, এবার চলে যান।
-” যেতে ইচ্ছে করছে না।
-” ওকে তাহলে দাঁড়িয়ে থাকুন। আমি গেলাম।
-” এই দাঁড়াও ,দাঁড়াও।

গাড়ি থেকে সুন্দর দেখতে একটা শোপিস ঝুমঝুমির হাতে ধরিয়ে দিল। পুরুষ পুতুল ও নারী পুতুলের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে ছোট্ট একটা বাচ্চা মেয়ে পুতুল। সুইস অন করলে ইংলিশ টউন বেজে উঠে।

মুগ্ধ হয়ে দেখল ঝুমঝুমি। আষাঢ় তখন বলল, যাও এখন।

ঝুমঝুমি চলে আসলো। যতক্ষণ পর্যন্ত ঝুমঝুমির ছায়া দেখা গেল ততক্ষণ পর্যন্ত মোড়ে দাঁড়িয়ে রইল আষাঢ়।

___________________
রাত তিনটে, চারদিকে নিস্তব্দতা। শহরেও আজকাল ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যায়। মিটিমিটি তারারা হেসে খেলে বেড়াচ্ছে আকাশ জুড়ে। চারদিক থেকে সুখ সুখ অনুভূতি আসলেই ঝুমঝুমির মন সুখ নেই। অস্বস্তিতে ভুগছে বারবার। আষাঢ়কে মনের কথা বলে দেওয়ার পর থেকেই বিষাদের সুর বেজে চলেছে হৃদয়ে। কোনপ্রকার উপায়ের দেখা মিলছে না।

স্টাডি রুমে বসে আছে ঝুমঝুমি। ভেবেছিল তৃতীয় শি’কা’র আরো পড়ে ধরবে কিন্তু না এখন ভাবছে কাজগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করা প্রয়োজন। মাত্র দুটো শি’কা’র। যদি ধরা না পরে তাহলে ওর ভবিষ্যত্ ফুলের মত সুন্দর হবে কিন্তু যদি ধরা পরে তাহলে ফুলের কাঁটার ন্যায়। অনেক চিন্তা-ভাবনা করে পরের প্ল্যান কষলো সে। অজ্ঞাতসারে ভুল একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলো ঝুমঝুমি। প্রেমেতে মরিয়া হয়ে ভুলে গেল লক্ষ্যভেদ। ওর এই একটি ভুল সিদ্ধান্ত ওর জীবনের নতুন মোড় তৈরি করতে প্রস্তুত হলো।

##চলবে,,

{ভুলক্রুটি ক্ষমা মার্জনীয়}

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ