Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রিয় অর্ধাঙ্গীনিপ্রিয় অর্ধাঙ্গীনি পর্ব-৪৪+৪৫

প্রিয় অর্ধাঙ্গীনি পর্ব-৪৪+৪৫

#প্রিয়_অর্ধাঙ্গীনি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব_৪৪
,
সমুদ্রের যাওয়ার দুইদিন পেরিয়ে গেছে। এই দুইদিনে একটা বারও কোনো রকম যোগাযোগ হয়নি। মূলত ওখানে যাওয়ার পর থেকেই সব যোগাযোগ যেনো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সকাল থেকে বেশ করেকবার বমি হয়েছে। এই অবস্থায় এমন বমি খাবারে অনিয়ম করলে মা এবং বাচ্চা দুজন এরই ক্ষতি। জানালার পাশে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে শশী। সমুদ্র যাওয়ার পরদিন থেকেই ওদের বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে একটা কালো গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। প্রথমে ওতোটা খেয়াল না করলেও এই দুইদিন বেশ চোখে পড়ছে। শশী ভাবলো হয়ত সমুদ্র ওদের পাহাড়ার জন্য কাউকে রেখে গেছে এই জন্য বেশী মাথা ঘামালো নাহ। পেটের নিচের দিকটাই বেশ বেথ্যা করছে। এই জন্য নরম বালিশটা রেখে তাতে ভর দিয়ে বসে আছে। এবার একটু কম লাগছে। হাতের ফোনটায় চোখ বুলিয়ে পুনরায় সমুদ্রের নাম্বারে কল দিলো। প্রতিবারের মতো এবারেও বন্ধ আসছে। চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু ও যদি ভেঙে পড়ে তাহলে বাচ্চাটার ও ক্ষতি হবে সাথে শাহানারা কেউ সামলানো যাবে নাহ। চিন্তায় চিন্তায় অসুস্থ শরীর টা যেনো বিছানার সাথে মিলিয়ে গিয়েছে। শশীর ভাবনার মাঝেই দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ হল। শশী ঘাড় ঘুরিয়ে দরজার ওপাশে থাকা লোকটাকে ভিতরে আসতে বলতেই রোদ্র হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে ভিতরে আসলো। রোদ্রের হাতে খাবারের প্লেট দেখতেই শশী নাক সিটকে বলল।

“রোদ্র ভাইয়া প্লিজ এটা নিয়ে চলে যান। আমি খাবো নাহ৷ এসবের গন্ধ নাকে লাগলেই কেমন বমি পাচ্ছে।

শশীর কথায় রোদ্র গেলো নাহ। বরং মুচকি হেসে প্লেটটা টেবিলে রেখে শশীর থেকে বেশ দুরত্ব নিয়ে বসে বলল।

” না না এমন করলে তো চলবে নাহ। দেখো তুমি এটা ভেবো নাহ যে আমি তোমাকে খাওয়াতে এসেছি। আমিতো আমাদের ওই যে কী বলে যেনো হ্যাঁ বংশের বাতি। আমিতো আমাদের বংশের বাতির জন্য খাবারটা এনেছি। এখন তুমি যদি না খাও তাহলে তারও খাওয়া হবে নাহ। আর আমি থাকতে এমনটা কখনোই হতে দেবো নাহ।

কথাটা বলে রোদ্র হাসি মুখে শশীর দিকে তাকালো। শশী করুণ চোখে রোদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। যেনো এমন তাকানোই রোদ্রের একটু মায়া হয় আর ওকেও খাবারটা খেতে না হয়। শশীর এভাবে তাকানো দেখে রোদ্র শশীকে বোঝানোর স্বরে বলল।

“দেখো শশী তুমিতো সবটাই বুঝতেছো তারপরেও এমন করলে চলবে? এখানে তুৃমি খাচ্ছো নাহ৷ ওদিকে মাও খাচ্ছে নাহ৷ আমি একা কয়দিকটা সামলাবো বলো? আবার তোমাদের এমন বিষণ্ণ দেখে জয়টাও মনমরা হয়ে বসে আছে। লুকিয়ে লুকিয়ে কান্নাও করছে৷ হয়েছে তো একদম ভাইয়ার মতো কাউকে কিছু বলবে নাহ৷ একা একা কষ্ট পাবে।

রোদ্রের থেকে জয়ের কথাটা শুনতেই শশীর মনটা খারাপ হয়ে গেলো। এই কয়দিনের জয়ের কথাটা বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলো। সমুদ্র ওকে যে দায়িত্ব দিয়ে গেছে সেটার কিছুই পালন করতে পারছে নাহ। না জানি ছোট ছেলেটা কোথায় গিয়ে বসে আছে। মাও অসুস্থ ওকে তো আমি ছাড়া দেখার ও কেউ নেই। আর সেই আমি কিনা। এসব ভেবে শশী তড়িঘড়ি করে বিছানা থেকে নামতে গেলে রোদ্র থামিয়ে দিয়ে বলল।

” একি এভাবে কোথায় যাচ্ছো?

“জয়ের কাছে। ও খেয়েছে কিনা তাওতো জানি নাহ৷ বড় ভুল হয়ে গেলো। আপনি প্লিজ সরে যান ভাইয়া আমি গিয়ে দেখি ও কোথায় আছে।

” কোথাও যেতে হবে নাহ তোমায়। আগে খাবারটা শেষ করো৷ আর আমি জয়কে খাইয়ে দিয়েছি ও ওর ঘরে ঘুমিয়ে আছে। তুৃমি এখন কথা না বলে খেয়ে নাও তো।

শশীও আর কথা বাড়ালো নাহ। চুপচাপ হাতটা ধুয়ে টেবিলের উপর থেকে প্লেটটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো৷ রোদ্র অপলকভাবে শশীর দিকে তাকিয়ে আছে। পরক্ষণেই কিছু একটা মনে আসতেই মাথা ঝাঁকিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে নিজের মনে বিরবির করে বলল।

“না না এভাবে ওর দিকে তাকানো অন্যায়। কোনো অনুভূতি নেই আমার মনে ওর জন্য৷ আমি শুধু ভাইয়ার দেওয়া দায়িত্ব পালন করছি আর কিছু নাহ।

কথাগুলো বলতেই ভিতর থেকে অন্য একটা সত্তা যেনো বলে উঠল। সত্যি কি তাই? কোনো অনুভূতি নেই? এটাও সম্ভব?
,,,,,,,,,,,

পরপর দুটোরাত না ঘুমানোর দরুন চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। পেশী বহুল লম্বা চওড়া শরীরে জংলী ছাপার পোশাকটা বেশ আঁটোসাটো হয়ে চেপে গাঁয়ের সাথে মিশে আছে। ছোপ ছোপ কাঁদায় মোড়ানো পুরো শরীর। নিচু হয়ে নিঃশব্দে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সে। শুকনো পাতার উপর পা পড়তেই মড়মড় শব্দে নিস্তব্ধতা ভেঙে আওয়াজ করে উঠতেই পিছনে ঘুরে আঙুলের সাহায্যে চুপ থাকতে বলল। রাত তখন কত সেটাও জানা নেই ঘন জঙ্গলের গাছ পাতার ফাঁক গলে চাঁদের আলো মাটিতে স্পর্শ করতে অক্ষম। দলনেতার পিছনে পিছনে সর্তক চোখে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে সৈনিকেরা। চলতে চলতে হঠাৎ থেমে গিয়ে সমুদ্র পিছনে ফিরে চোখের ইশারায় মাটির দিকে তাকিয়ে যথেষ্ট নিচু স্বরে বলল।

” এটার থেকে সাবধান।

কথাটা বলে মাটিতে পুঁতে রাখা জিনিটা এড়িয়ে সামনের দিকে গেলো। কারো জানা নেই আরো কোথায় কোথায় এগুলো রাখা আছে। সামনের অন্ধকার ভেদ করে আগুনের ফুলকি দেখা যাচ্ছে সমুদ্র হাতের ইশারায় সবাইকে থামতে বলল। সবাই থেমে যেতেই পিছন থেকে কাঁপা স্বরে কেউ ডেকে উঠল।

“স্যার।

সমুদ্র পিছনে ঘুরে তাকাতেই দেখলো তাদের মাঝে একজন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোনো নড়াচড়া নেই। সমুদ্র ভ্রু কুঁচকে নিচের দিকে তাকাতেই সর্তক কন্ঠে বলে উঠল।

“নড়ো নাহ। একদম নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকো।

কথাটা বলতে দেরি কিন্তু ছেলেটি সেটা শোনতে দেরি করলো নাহ। ভয়ে সমুদ্রের কথা না শুনেই পা উঠিয়ে পিছাতে গেলেই বিকট শব্দে আগুন জ্বলে উঠল। ছেলেটির পাশে যারা ছিলো তারাও ছিটকে কিছুটা দূরে পড়ে গেলো। সমুদ্র সেদিকে একবার তাকিয়ে আবার সামনের দিকে ফিরলো। সামনের তাবু গেরে ওসমান তার ঘাটি বসিয়েছিলো। সেখান থেকে বেশ গোরগোল আসছে। সমুদ্র পুনরায় পিছনে ফিরে বলে উঠল।

” ওহ শিট। সবাই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ো ফাস্ট। হাতে সময় খুবি কম, গো।

কথা অনুযায়ী সবাই যার যার মতো নিজের জায়গা প্রস্হান করলো। কিন্তু সেখানে পড়ে রইলো দুটো পুড়ে যাওয়া সৈনিক এর নিথর প্রাণহীন দেহ।
,,,,,,,,,,,,

ডয়িং রুমের সোফায় মননরা হয়ে বসে আছে শশী। সারাদিন রুমের মধ্যে থাকতে থাকতে কেমন দমবন্ধ লাগছে। শাহানারা নিজের রুমে ঘুমিয়ে আছে। বাড়িতে আপাতত কেউ নেই। জয় রোদ্রের সাথে বাইরে গিয়েছে। একা একা ভালো লাগছে নাহ। তাই জন্য শশী ঘরের সদর দরজা খুলে বাইরে গেলো। হাঁটাচলা করতে খুব বেশিই কষ্ট হয়। তবুও একটু আধটু না হাঁটলে পা ফুলে যায়। যদিও সমুদ্র বাইরে যেতে নিষেধ করেছিলো। কিন্তু ওতো বেশিদূর যাবে নাহ। বাড়ি আঙ্গিনায় একটু হাঁটবে গেটের বাইরে যাবে নাহ। ঘর থেকে বেরিয়ে তিনটা সিঁড়ি পাড় করে বাইরে আসলো শশী। সামনে তাকিয়ে দেখে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে দারোয়ান ঝিমুচ্ছে। শশীর আসার শব্দ পেয়ে সেদিকে তাকাতেই সেই ঝিমুনি ভাবটা কেটে গিয়ে সটান করে দাঁড়িয়ে রইলো। শশী সেদিক থেকে নিজের চোখ সরিয়ে বাড়ির পিছন দিকটায় গেলো। প্রাচীরটা বেশ উঁচু করে দেওয়া যার দরুন বাইরের কিছু দেখা যাচ্ছে নাহ। বেশ কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে শশী পুনরায় সামনের গেটের দিকটায় গেলো। রেলিং এর ফাঁক দিয়ে রাস্তার দিকে তাকালো। হ্যাঁ ওইতো সেই কালো গাড়িটা দেখা যাচ্ছে। সমুদ্র যাওয়ার পর থেকে গাড়িটা এখানে দাঁড়ানো । কিছু একটা মনে হতেই শশী গেটের কাছে চলে গেলো। শশীকে দেখে দারোয়ান নম্র ভাবে জিগাস করলো।

“ম্যাম কিছু লাগবে?

” না কিছু নাহ।

কেনো জানি নিজের সন্দেহের কথাটা দারোয়ানকে বলল নাহ। খানিকক্ষণ সেদিকে চেয়ে থেকে যখন ফিরে আসতে যাবে তখনি চোখে কিছু একটা পড়লো। সেই কালো গাড়িটার ডিকি খুলে সেটার মধ্যে প্রবেশ করছে জয়। নিজেকে ডিকির মধ্যে সেট করা হতেই আস্তে করে সেটা বন্ধ করে দিলো। শশী বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে। আশেপাশে কোথাও রোদ্র নেই। কিন্তু জয়তো রোদ্রের সাথেই ছিলো তাহলে রোদ্র কোথায় গেলো। আর জয়ই বা কেনো গাড়িতে উঠে গেলো। অস্থির হয়ে শশী গেট দিয়ে বের হতে গেলে দারোয়ান আটকে দিলো।

“ম্যাম আপনি কোথায় যাচ্ছেন? বড় স্যার কড়া ভাবে নিষেধ করে দিয়েছেন আপনাকে যেনো বাইরে যেতে না দিই।

” আরে তুমি দেখোনি জয়। ওই গাড়িতে জয় আছে তুমি যাও আর ওকে বের করো ওখান থেকে।

শশীর কথায় দারোয়ান আশে পাশে দেখলো ততক্ষণে শশী বেশ করেক বার রোদ্রকে ফোন দিয়েছে কিন্তু ওপাশ থেকে কেউ ফোনটা রিসিভ করেনি। শশী উপায় না পেয়ে ইমরান কে কল দিলো। ইমরান আসছি বলে কলটা কেটে দিলো৷ শশী দারোয়ানকে পুনরায় তাড়া দিতেই দারোয়ান গাড়িটার দিকে গেলো। কিন্তু ততক্ষণে গাড়ি চলতে শুরু করেছে। শশী দ্রুত পা চালিয়ে গেটের বাইরে এসে রাস্তায় দাঁড়ালো। এর মধ্যেই শরীর ঘেমে একাকার। এইটুকু আসতেই হাঁপিয়ে গেছে। গাড়িটা এখন আর দেখা যাচ্ছে নাহ বেশ খানিকটা দূর চলে গেছে। দারোয়ান হাঁপাতে হাঁপাতে শশীর সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল।

“ম্যাম একটুর জন্য গাড়িটা ধরতে পারিনি। আপনি প্লিজ বাসার মধ্যে যান।

কিন্তু শশী কোনো কথা শুনলো নাহ। বার-বার রোদ্রের নাম্বারে ডায়াল করছে। এতোক্ষণ ফোন গেলেও এবার বন্ধ আসছে৷ শশী অস্হির হয়ে এদিক ওদিক দেখছে। কিছুক্ষণ পর ওর সামনে ইমরান গাড়ি নিয়ে এসে থামালো। ইমরান গাড়ি থেকে নামতে গেলে শশী ওকে থাকিয়ে দিয়ে বলল।

” আপনি নামবেন নাহ ইমরান ভাইয়া জলদি গাড়ি স্টার্ট করুন। ওই গাড়িটা এদিকে গিয়েছে। এতোক্ষণে হয়ত অনেকটা দূর চলে গিয়েছে৷ প্লিজ আপনি গাড়িটার পিছু করুন।

কথাটা বলে শশী গাড়িতে উঠে বসলো। ইমরান পিছনে তাকিয়ে শশীর দিকে তাকিয়ে বলল।

“কিন্তু আপনি কোথায় যাচ্ছেন। আপনি বাসায় যান আমি দেখছি।

” আমিতো বললাম আমি যাবো আপনি গাড়ি স্টার্ট করুন ইমরান ভাইয়া।

“কিন্তু ম্যাম। স্যার?

” সেটা আমি বুঝে নেবো আপনাকে যেটা বললাম সেটা করুন এটা আমার আদেশ। প্লিজ জলদি গাড়ি স্টার্ট দিন নয়ত আমরা ওই গাড়িটা আর ধরতে পারবো নাহ।

শশীর গম্ভীর কন্ঠস্বর শুনে ইমরান আর না করতে পারলো নাহ। চুপচাপ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে সামনের দিকে গেলো। শশী বারবার রোদ্রের নাম্বারে কল দিচ্ছে কিন্তু বারবারই বন্ধ আসছে। শশীর মাথায় একটা কথায় বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। গাড়িটা কার? গাড়িতে কে এমন ছিলো যার জন্য জয় এভাবে নিজে থেকে গাড়িতে উঠে বসল। যদি চেনা কেউই থাকবে তাহলে ও ডিকিতে লুকালো কেনো? আর রোদ্রই বা কোথায়? ওনার ফোন কেনো বন্ধ?

#চলবে?

#প্রিয়_অর্ধাঙ্গীনি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব_৪৫
,
সকাল সকাল রৌদ্রের মধ্যমা আঙুল ধরে সাদা স্কুল ড্রেসটা পরে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলো জয়। সদর দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে যখনি গাড়িতে উঠতে যাবে তখনি জয় বায়না ধরলো আইসক্রিম খাওয়ার।

“এখন নয় তোদের স্কুলের সামনে থেকে কিনে দিবো। এখন দেরি হয়ে যাবে জলদি গাড়িতে গিয়ে বস।

” না না মেজো ভাইয়া তুমি এখনি কিনে দিবে। যদি না দেও তাহলে আমি এখানে বাবু হয়ে বসে পড়বো তখন তো আরো দেরি হয়ে যাবে তখন কি করবে?

জয়ের কথাশুনে রৌদ্র কমরে হাত রেখে জয় এর দিকে তাকালো৷ কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে অগত্যা রাজি হয়ে গেলো। জয় কে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে নিজে আইসক্রিম আনতে গেলো। কিন্তু জয় তো নাছোড়বান্দা সেও যাবে। জয় এর পিছু পিছু সেও গেলো। রাস্তা পাড় হয়ে দোকান থেকে আইসক্রিম কিনে জয়ের হাতে দিতেই জয় খুলে খাওয়া শুরু করলো। রোদ্র তার মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে যখনি দিতে যাবে তখনি রোদ্রের পাশে আরেকটা হাত দেখতে পেলো। সেও একশো টাকার একটা নোট বাড়িয়ে দিয়ে বলল।

“আইসক্রিম এর টাকাটা এখান থেকে রাখুন।

পরিচিত কন্ঠ পেয়ে রৌদ্র ঘাড় ঘুড়িয়ে পাশে তাকিয়ে জোসেফ কে দেখে অনেকটাই অবাক হয়ে গেলো। জোসেফ মুচকি হেসে বাকি টাকাটা নিয়ে পকেটে রেখে বলল।

” কিরে ওমন হ্যাঁ করে আছিস কেনো?

“তুই এখন এখানে?

রৌদ্র অবাক হয়ে কথাটা বলতেই জোসেফ হেসে ফেলল। জয়ের দিকে তাকিয়ে হাই দিয়ে পুনরায় রোদ্রের দিকে তাকালো।

“কেনো এখানে থাকলে কি কোনো সম্যসা? আরে হঠাৎ করে বাবা অসুস্থ হয়ে গেলো। তাই আমাকেও তড়িঘড়ি করে চলে আসতে হলো৷ এই কয়দিন এতো ব্যাস্ত ছিলাম যে তোর সাথে যোগাযোগ এর সময়ই পায়নি। আজকে এই দিকটায় একটা কাজ ছিলো এই জন্য আসছিলাম। আর দেখ তোর সাথে দেখাও হয়ে গেলো। তা তোর বাসা কি এখানেই?

” হ্যাঁ ওইতো আমার বাসা চল তোকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো৷

“কার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবি তোর প্রিয় মানুষটার সাথে? আচ্ছা তুই কি দিয়ে তৈরি বলতো? চোখের সামনে তাকে দেখেও এতোটা শক্ত কীভাবে আছিস?

জোসেফ এর কথায় রৌদ্রের হাসি মুখটা কিছুক্ষণের জন্য মলিন হয়ে গেলো৷ কিন্তু পরক্ষণেই আবার একটা হাসি দিয়ে বলল।

” ওসব বাদদে চল তোকে সবার সাথে পরিচয় করায়ে দিই।

“নাহ আজকে নয় অন্যদিন। তবে তুই এখন আমার সাথে যাবি। না আমি কোনো কথা শুনবো নাহ।

” আরে কিন্তু এখন কীভাবে। আমিতো জয়কে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলাম।

“একদিন স্কুলে না গেলে কিছু হবে নাহ। আর বন্ধু হই তোর আমি আমার জন্য একটাদিন বার করতে পারবি নাহ? এই তোর বন্ধুত্ব?

জোসেফ এর চতুর কথায় রৌদ্র দমে গেলো। মুচকি হেসে সায় জানিয়ে জোসেফ এর দিকে তাকালো। রৌদ্র কে কথাটা বলে জোসেফ জয় এর দিকে তাকালো। ততক্ষণে জয় এর আইসক্রিম খাওয়া শেষ হয়ে গেছে। আর ওদের দিকে হা করে তাকিয়ে ওদের কথা শুনছে। জোসেফ জয় এর দিকে তাকিয়ে বলল।

” যাও আজকে তোমার ছুটি আজকে আর স্কুলে যাওয়া লাগবে নাহ৷ বাসায় যাও।

জয় খুবি তীক্ষ্ণ চোখে জোসেফ এর দিকে তাকিয়ে আছে৷ কেনো জানি ওর খুব চেনা চেনা লাগছে লোকটাকে। মনে হচ্ছে সামনে দাঁড়ালো লোকটাকে সে আগেও দেখেছে৷ কিন্তু কোথায়? ছোট্ট মাথায় একটু চাপ দিতেই মনে পড়ল হ্যাঁ অনেকদিন আগে এই লোকটিকে সে শশীর সাথে কথা বলতে দেখেছিলো৷ কিন্তু এই লোক মেজো ভাইয়াই বন্ধু হলো কীভাবে? কথাটা ভেবে যখনি রৌদ্রকে বলতে যাবে দেখলো জোসেফ ততক্ষণে রৌদ্রকে টেনে গাড়িতে বসিয়ে দিয়েছে। রৌদ্র বার বার নিষেধ করা সত্বেও শুনলো নাহ৷ জয় বাইরে থেকে ডাকলেও ভিতরে শোনা যায়নি। গাড়িও ততক্ষণে স্টার্ট দিয়ে দিয়েছে। জয় আর কিছু না ভেবে গাড়ির পিছনের ডিকিতে উঠে বসল। যে করেই হোক মেজো ভাইয়াকে জানানো লাগবে যে এই লোকটাকে সে চেনে।

“ওই যে সামনের ওই কালো গাড়িটাই। ইমরান ভাইয়া আপনি আর একটু জোরে চালান।

শশীর কথাটা শুনতেই ইমরান গাড়ির স্পীড বাড়িয়ে দিলো। গাড়িটা বেশ দূরে আছে। মাঝে আরো গাড়ি। একটু এদিক সেদিক হলেই গাড়িটা হারিয়ে যেতে পারে। পেটের বাম পাশটায় বেশ খানিকটা বেথ্যা করছে। তবে সেদিকে ওতোটা গুরুত্ব দিচ্ছে নাহ শশী৷ দাঁতে দাঁত চেপে সয্য করে নিচ্ছে। ইমরান গাড়ির গতি বাড়িয়ে বেশ খানিকটা কাছে নিয়ে আসলো। সামনের আয়নায় শশীকে একবার দেখে নিয়ে শশীর উদ্দেশ্য বলল।

” ম্যাম আপনার আসা মোটেও উচিত হয়নি। আমি এতোবার নিষেধ করলাম আপনি শুনলেন নাহ। এখন যদি কিছু হয়ে যায় আমি স্যারকে কি জবাব দেবো।

ইমরান এর কথা শুনে শশী সোজা হয়ে বসলো। বাম হাতে বেথ্যা করা জায়গাটায় চেপে ধরে জোরে শ্বাস নিয়ে বলল।

“এতো বেশি কথা বলেন কেনো ভাইয়া। আপনি গাড়িটার দিকে নজর রাখেন। আমি ঠিক আছি। গাড়িটাকে কিছুতেই আড়াল করা যাবে নাহ৷

কথাটা বলে শশী পুনরায় রোদ্রের নাম্বারে কল দিলো কিন্তু ফোন বরাবরের মতোই বন্ধ। এতোবার কল দেওয়ার পর বন্ধ পাওয়ায় রেগে হাতের ফোনটা নিচে আছাড় মারলো শশী। সাথে সাথে ফোনের স্কিনটা ফেঁটে লম্বা আঁড়াআঁড়িভাবে একটা দাগ পড়ে গেলো।
,,,,,,,,,,,,,

মাথাটা কালো কাপড়ে মোড়ানো। হাতদুটো মোটা দড়ি দিয়ে বেশ শক্ত ভাবে বেঁধে টানতে টানতে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওসমান কে। কপালের কোন থেকে তাড়া রক্ত গড়িয়ে পড়তে পড়তে শুকিয়ে গাড়ো খয়েরি আকার ধারণ করেছে। দুই দলের মধ্যে বেশ বড়সর একটা গুলাগুলি হয়েছে। বেশ কয়েকজন সৈনিক নিহত, আহত হয়েছে। আর সকালেই বেশ আঘাত পেয়েছে। তবে শেষ মেষ ওসমান কে ধরতে পেরেছে এটাই বড় কথা। সমুদ্রের পায়ে গুলি লেগেছে বিধায় হাঁটতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। তবুও হেঁটে সামনের দিকে যাচ্ছে। জঙ্গল পাড় হলেই বর্ডারের কাছে ওদের হেড অফিসের সবাই আছে। যোগাযোগের কোনো মাধ্যম না থাকায় কাউকে ইনফরম করতে পারছে নাহ। দিনের আলো ফুঁটে গিয়েছে তবুও জঙ্গলের মধ্যে কেমন একটা গুমোট ভাব। ওসমান ও বেশ আঘাত পেয়েছে। সামনের সৈনিক দড়ি ধরে হেঁচকা টানতেই নিচে পড়ে গেলো। সমুদ্র চোখের ইশারায় ওসমান কে তুলতে বলল৷ অন্য একজন পিছন থেকে জামার কলার ধরে টেনে দাঁড় করায়ে দিলো। বেশ খানিক দূর যাওয়ার পর আচমকায় সমুদ্র থেমে গেলো। কেমন শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দলনেতা কে দাঁড়িয়ে যেতে দেখে সকলেই দাঁড়িয়ে পড়লো। পিছনে তাকিয়ে সমুদ্রের পায়ের দিকে সকলে আতংকিত চোখে তাকালো। বাম পায়ের নিচে যেনো সাক্ষাৎ মরণ। সমুদ্র কেমন শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যে প্রথম থেকে সবাইকে সর্তক করছিলো এটার থেকে সাবধান থাকতে শেষে কিনা সেই বিপদে পড়লো। সামনে থেকে একজন নরম কন্ঠে বলল।

“স্যার এটা?

সমুদ্র শক্ত কাটকাট গলায় বলে উঠল।

” কিচ্ছু হয়নি তোমরা সামনে এগিয়ে যাও। ওকে সাবধানে স্যার এর হাতে তুলে দিবে। তারপর বাংলাদেশ আর্মি ওকে পাকিস্তান পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবে। মনে রেখো এটা তোমাদের দায়িত্ব। আর হ্যাঁ আমার চিন্তা করো নাহ দেশ থেকে এমন জংজাল দূর করতে কিছু প্রাণের আহুতি দিতেই হয়।

“কিন্তু স্যার আপনি?

” বললাম তো আমার কিচ্ছু হয়নি তোমরা এগিয়ে যাও। তোমাদের দায়িত্ব পালন করো।

“ইয়েস স্যার।

সকলে সমুদ্র কে স্যালুট দিয়ে ওসমানকে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেলো। চোখে পানি টলটল করলেও উপরে সেটা প্রকাশ করলো নাহ। সমুদ্র ওদের দিকে তাকিয়ে একটা প্রাপ্তির হাসি দিয়ে ওদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলো। ওসমান কে নিয়ে সকলে সামনের দিকে চলে গেলো। শুধু দাঁড়িয়ে থাকলো এক সমুদ্র। কেননা ওখান থেকে একচুল নড়লেও মৃত্যু অবধারিত। নিস্তব্ধ এই ঘন জঙ্গলে পশুপাখি আর কিছু মৃত্যু দেহ ছাড়া কেউ নেই। এতোক্ষণে হয়ত কিছু ক্ষত বিক্ষত দেহ গুলো কারো খাবারে পরিনত হয়েছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে লম্বা একটা শ্বাস নিলো সমুদ্র। চোখটা বন্ধ করে মাথাটা নিচু করে নিলো৷ চোখের কোণে পানি জমেছে তবে এটা মৃত্যু ভয়ে নয়। কাউকে দেওয়া কথা না রাখতে পারার ভয়৷ কারো থেকে ক্ষমা না পাওয়ার ভয়। নিজেকে ভীষণ রকম অসহায় লাগছে। বীর সাহসী একজন সৈনিক ও নিজেকে অসহায় ভাবছে। হ্যাঁ আজকে সমুদ্র অসহায় ভীষণ রকম অসহায়। অপারগ সে, আশা ভরা চোখে সামনের দিকে তাকালো শুধু মাত্র একটা প্রাণের আশায়। কিন্তু না কেউ নেই সবটা শূন্য। চোখটা বন্ধ রেখেই বিরবির করে বলল।

” আমায় ক্ষমা করো নাহ শশী। আমি তোমায় দেওয়া কথা রাখতে পারলাম নাহ। কথা দিয়েছিলাম মৃত্যু কে হারিয়ে ঠিক তোমার কাছে ফিরে আসব। কিন্তু মৃত্যু কে হারানো যে বড়ই কঠিন৷ মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্যি যেটা মেনে নিতেই হবে৷ অপেক্ষা করো নাহ৷ নিজেকে সামলে নিও।

কথাগুলো বলেই আস্তে করেই পা টা সরিয়ে নিলো সমুদ্র। বিকট শব্দে জঙ্গলটা যেনো কেঁপে উঠল। জঙ্গলের মাঝ থেকে সাদা কালো ধোঁয়ায় চারিদিকে ছেঁয়ে গেলো। সাথে বিদঘুটে গন্ধ।
,,,,,,,,,,,,

বিধস্ত অবস্থায় হসপিটালের চেয়ারে বসে আছে শশী। হাতের কনুই থেকে তাজা রক্ত বেঁয়ে পড়ছে। কপালের কোণে কাঁটা জায়গা থেকে রক্ত ঝড়তে ঝড়তে শুকিয়ে গেছে। ফোলা পেটটার মধ্যে থাকা ছোট্ট প্রাণটাও বোধহয় মায়ের বেথ্যা সয্য করতে না পেরে তুলকালাম কান্ড বাঁধিয়ে ফেলেছে। এতো এতো যন্ত্রণার মাঝেও শক্ত হয়ে নড়াচড়া বিহীন স্তব্ধ হয়ে বসে আছে৷ যেনো কোনো বেথ্যায় তাকে কাবু করতে পারছে নাহ। চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়তেও যেনো তার কাছে অনুমতি চাইছে। ঠিক তখনি হসপিটালে লাগানো মাঝারি সাইজের টিভির মধ্যে চলতে থাকা খবরের চ্যালেনের মেয়েটা সমস্ত নিরবতা ভেঙে বলে উঠল।

“পাকিস্তান এর পলাতক টেরোরিস্ট ওসমান বাংলাদেশ বর্ডারের কাছ থেকে আর্মিদের কাছে ধরা পড়েছে। এতে অনেক সৈনিক নিহত এবং আহত হয়েছে। এইমাত্র পাওয়া খবরে জানা গেছে উচ্চ পদস্থ অফিসার এবং এই মিশনের লিডার সমুদ্র বোমা হামলায় নিহত হয়েছে। তার পুড়ে যাওয়া ক্ষত বিক্ষত বডি আর্মিরা উদ্ধার করেছে।

এইটুকুই কানে গেলো। মেয়েটা হয়ত আরো কিছু বলল তবে সেগুলোর কিছুই শশীর কানে গেলো নাহ। মাথার মধ্যে বন বন করে ঘুরছে। কানের মধ্যে কেমন শোঁ শোঁ আওয়াজ করছে। পেটের বেথ্যাটাও এবার সয্যের সীমানা পাড় করে ফেলল। তবে একটুও শব্দ করলো নাহ। ক্লান্ত চোখের পাতাটা ফেলতেই একফোঁটা পানি গড়িয়ে গাল বেঁয়ে নিচে পড়ল। উফ এতো যন্ত্রণা সয্য করতে যে দম বন্ধ হয়ে আসছে। চোখটা বন্ধ করে বিরবির করে একটা ব্যাক্য আওড়াল শশী।

” আপনি আমায় কথা দিয়েছেন সমুদ্র। ক্ষমা করবো নাহ আপনাকে।

#চলবে?

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ