Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রাণের পুষ্পকুঞ্জপ্রাণের পুষ্পকুঞ্জ পর্ব-১২ এবং শেষ পর্ব

প্রাণের পুষ্পকুঞ্জ পর্ব-১২ এবং শেষ পর্ব

#প্রাণের_পুষ্পকুঞ্জ
লেখনীতে : তামান্না বিনতে সোবহান
শেষপর্ব

মন খারাপ ভাবটা তখনও প্রাণেশার চোখেমুখে লেপটে আছে একেবারে। বার দু’য়েক সেই মুখ দেখে অনির্বাণ বলল,
‘আবার কী সমস্যা? চাচ্চু তো কথা বলেছে। এখন একটু স্মাইল দে প্লিজ।’

প্রাণেশা বাইরের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বলল,
‘তোমার কী ধারণা, বাবা সত্যিই আমাকে মন থেকে ক্ষমা করেছে? এত বছরে যে মানুষ আমার দিকে ফিরে তাকায়নি, আমার কোনো কথা ও কাজকে সাপোর্ট করেনি, আজ এক নিমিষেই সব সহজ হয়ে গেছে?’

গন্তব্যের আর অল্প বাকি। অনির্বাণ চায় না নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছানোর পর প্রাণেশার আর মন খারাপ থাকুক। এত বড়ো একটা সারপ্রাইজ অথচ এই মেয়ে গালমুখ ফুলিয়ে আছে, মানা যায়? তাই সে নিজের যুক্তি তুলে ধরতে বলল,

‘মানুষ কি সবসময় এক থাকে? পরিবর্তন তো আসে তাই না?’

‘হুম… আসে। কিন্তু এই পরিবর্তনটা এতটাও সহজ মনে হচ্ছে না।’

‘কেন?’

প্রাণেশা চুপ থেকে বাবার কথাগুলো ভেবে নিয়ে আস্তেধীরে বলল,
‘বাবার কণ্ঠস্বরে এতটাও জোর ছিল না, অনি। বাবা খুশি হয়েছেন, আমাকে বাড়ি যেতেও বলেছেন, কিন্তু আমার চলাফেরা নিয়ে নেগেটিভ-পজেটিভ কিছু বলেননি। আমার ধারণা বাড়ি গেলে উনি আগের মতোই বলবেন, ‘এখন অন্তত সবার কথা মতো চলো। নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনো। বাড়ির আট-দশজন যেভাবে নিজের উন্নতি করছে, সেভাবে উন্নতি করার চেষ্টা করো।’ এই কথাগুলো বলবেন, এটা আমি নিশ্চিত।’

‘ছাড়। এসব নিয়ে এত ভাবতে হবে না। ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা পছন্দ করি না আমি। এই কারণেই আমি বলব না, তুই বদলে যা। বরং এটা বলব, যেমন আছিস, তেমন থেকে যা। এখন তোর পরিবর্তন হলে আমি-ই কষ্ট পাব।’

অনির্বাণের এই কথায় যারপরনাই চমকাল প্রাণেশা। বিস্মিত চোখজোড়া নিয়ে তাকিয়ে রইল। অনির্বাণ হাত বাড়িয়ে বউয়ের গাল টেনে দিল। প্রাণেশা সেভাবেই বলে উঠল,

‘পরে আফসোস করবে না তো?’

ভ্রু কুঁচকে গেল অনির্বাণের। বলল,
‘কেন? এখানে আফসোসের কী আছে?’

প্রাণেশা ঢোক গিলে বাইরের দিকে দৃষ্টি রেখে বলল,
‘আমি তিনবেলা রান্না করতে পারব না। তবে তুমি চাইলে মাঝেমধ্যে চেষ্টা করব। শাড়ি পরে সাজুগুজু করে থাকতে পারব না। নিয়ম করে তোমাকে ‘ভালোবাসি’ বলতে পারব না। টিপিক্যাল বউদের মতো, এটা-ওটা নিয়ে আবদার করতে পারব না। কিংবা এখানে-ওখানে ঘুরতে যাওয়া নিয়ে বায়না করতে পারব না। শাড়ি নেই কেন, মেকাপ নেই কেন, জুয়েলারি নেই কেন, ঘরে বাজার নেই কেন, তোমার ফিরতে দেরী হচ্ছে কেন, এমন সব উদ্ভট প্রশ্ন নিয়ে কোনোপ্রকার অভিমান ও জেদ দেখাতে পারব না। সারাক্ষণ গিন্নী গিন্নী ভাব দেখাতে পারব না। হবে না আমাকে দিয়ে এসব।’

অনির্বাণ ঠোঁট চেপে হেসে বলল,
‘এতে আমার আফসোস হবে, এটা তোর কেন মনে হলো প্রাণ?’

‘স্বামীরা তো বউয়ের হাতের রান্না খেতে পছন্দ করে। বউদের আবদার মেটাতে পছন্দ করে। একসাথে ঘুরতে যেতে পছন্দ করে। বউকে সাজুগুজু করে বউ বউ সাজে দেখতে পছন্দ করে। তাই। যদি পরে কোনোদিন তোমার মনে হয়, আমি তোমার মনমতো নই, কিংবা তোমার সাথে আমার ঠিক মানাচ্ছে না, তখন তো তোমার আফসোস হবে, কষ্ট হবে। প্রতিটা মানুষেরই বিয়ে নিয়ে, বউ নিয়ে অনেক স্বপ্ন, অনেক ইচ্ছে থাকে। তুমিই তো বলেছ, বউকে নিয়ে তোমারও অনেক স্বপ্ন আছে। আমি টোটালি সাধারণ মেয়েদের থেকে বিপরীত স্বভাবের মেয়ে। যে ঘর বুঝে না, সংসার বুঝে না, দায়িত্ব বুঝে না। তাকে বিয়ে করে জোরপূর্বক ঘর-সংসার করা তো আফসোসের শিকার হওয়া তাই না?’

সব কথা বুঝে, বিজ্ঞের মতো উপরনিচ মাথা ঝাঁকাল অনির্বাণ। ড্রাইভে মনোযোগ রেখে বলল,
‘আচ্ছা, একটা কথা বল তো। আমার জন্য তুই ঠিক কী পারবি?’

প্রাণেশা স্পষ্ট স্বীকারোক্তির সাথে বলল,
‘কিছু পারি আর না পারি, উপরের সবগুলো বাদে তোমার সব প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আমি তোমার পাশে থাকব। আমি হয়তো অন্যসবার মতো নিজের সব চাওয়া-পাওয়া মেলে ধরব না, কোনোকিছুর কমতি দেখলে ঝগড়াঝাটি করব না, তবে তোমার সব ইচ্ছেদের প্রাধান্য দিব, আমার মতো করে। এই কথার গ্যারান্টি দিতে পারি।’

‘ওকে। আমি এতেই সন্তুষ্ট। আমার বউকে অন্যসব বউদের মতো হতে হবে না। নিয়ম করে সাজুগুজু করতে হবে না। শাড়ি ও হিল পরে বউ সাজতে হবে না। ঘুরতে যাওয়ার বায়নাও ধরতে হবে না। ঘর বুঝতে হবে না, সংসার বুঝতে হবে না। শুধু আমাকে বুঝলেই হবে। পারবি তো?’

‘খুব পারব।’

‘আমি তোর মধ্যে কোনোপ্রকার পরিবর্তন দেখতে চাই না। তুই যেমন আছিস, আমি তোকে সেভাবেই ভালোবাসব প্রাণ। তবে, একটা ব্যাপারে আমার কথার যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। নয়তো, সুনামি হয়ে যেতে পারে।’

প্রাণেশা চেহারার ভাবভঙ্গি পালটিয়ে বলল,
‘কোন ব্যাপারে?’

চোখের ইশারায় প্রাণেশাকে কাছে ডাকল অনির্বাণ। প্রাণেশা এগোলো। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে ভেসে এলো,
‘যখন তোকে আদর করব, তখন কোনোপ্রকার অজুহাত শুনব না। তবে কিছু কিছু সময় আমি নিজেই ছাড় দিব।’

ধুম করে অনির্বাণের পিঠের মধ্যে একটা বসিয়ে দিল প্রাণেশা। কটমট চোখে চেয়ে থেকে বলল,
‘নির্লজ্জ কোথাকার।’

হো হো শব্দে হেসে উঠল অনির্বাণ। হাসতে হাসতে সিরিয়াস কণ্ঠে বলল,
‘আমার জন্য তুই নিজের মধ্যে কোনো পরিবর্তনের সুত্রপাত ঘটাবি না। এটা আমি মানতে পারব না। তোকে নিয়ে সবার মাথাব্যথা থাকলেও আমার নেই। চাচ্চু যা-ই বলুন, এসব কথা কানে নেয়ার দরকার নেই। তোর জীবনটা যেহেতু আমার সাথে জড়িয়ে গেছে, তা-ই তোকে নিয়ে পজেটিভ-নেগেটিভ সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার অন্য সবার চেয়ে আমারই বেশি। আমি বলব, নিজেকে বদলানোর দরকার নেই। তোকে আমি এভাবেই গ্রহণ করেছি, মেনে নিয়েছি, ভালোবেসেছি। অন্যদের কাছে এই চলাফেরাটা কেমন আমি জানি না, তবে আমার কাছে প্রাণ মানেই সদা নিজেকে ভালোবাসতে জানা এক নারী। যে সবার আগে নিজেকে ভালোবাসে, নিজের সিদ্ধান্ত ও স্বাধীনতায় বাঁচতে ভালোবাসে। পরিবর্তনের কারণে যদি প্রাণের মধ্যকার প্রাণ যদি হারিয়ে যায়, প্রাণকে যদি নিষ্প্রাণ হয়ে যেতে হয়, তাহলে প্রাণের পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। আমি তোকে নিষ্প্রাণ দেখতে পারব না।’

প্রাণেশা শুধু মুগ্ধ চোখে তাকাল একবার। এরপরই শব্দ করে হেসে ফেলল। কখন যে গাড়িটা অচেনা গন্তব্যে এসে পৌঁছাল, সে তা টের পেল না। গেটের কাছে গাড়ি পার্কিং-এ রেখে ইট সোলিংয়ের রাস্তায় নামল অনির্বাণ। অন্যপাশের ডোর খুলে দিয়ে বলল,

‘নেমে আয়।’

গেটের সামনে নেমেই বিস্ময়ে মুখটা হা হয়ে গেল প্রাণেশার। সে স্তম্ভিত, অনড় শরীর নিয়ে সাইনবোর্ডের দিকে তাকিয়ে রইল। সবুজ সাইনবোর্ডে হলুদ রং দিয়ে কী সুন্দর লেখা, ‘প্রাণের পুষ্পকুঞ্জ’। দৃষ্টি ফিরে অনির্বাণের দিকে তাকাতেই অনির্বাণ চমৎকার হেসে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে হাত বাড়িয়ে রেখে বলল,

‘প্রাণের পুষ্পকুঞ্জে আমার ব্যক্তিগত প্রাণকে স্বাগত।’

সন্ধ্যার টিমটিমে আলোয় আলতোস্পর্শে অনির্বাণের হাত ধরল প্রাণেশা। গেটের ভেতরে পা ফেলে দেখল, দু’জন প্রৌঢ়বয়সী দম্পতি তাদের দিকে তাকিয়ে হাসছেন। অবাক দৃষ্টিতে সব দেখল। ডানে-বামে অসংখ্য ফুলগাছ ও নাম না জানা ফুলেদের ঘ্রাণে চোখেমুখে মুগ্ধতা ও আনন্দ নেমে এলো। সে দু’পা এগোতে গিয়ে শক্ত করে অনির্বাণের হাতটা ধরে বলল,

‘এটাই সেই জায়গা?’

অনির্বাণ স্পষ্টকণ্ঠে বলল,
‘হ্যাঁ, এটাই। লাস্ট ইয়ারে আমার কিছু জমানো টাকা দিয়ে এই জায়গাটা কিনেছিলাম। যদিও ইচ্ছেটা অন্য ছিল!’

কথা শেষ করার আগেই প্রাণেশা বলল,
‘অন্য কী ইচ্ছে?’

‘আমি তো ঢাকাতেই সেটেল্ড হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, বিয়ের পর এখানে একটা বাড়ি বানাব। বউ নিয়ে এখানেই থাকব। দেশের বাড়িতে আর যাব না।’

‘তাই? হঠাৎ করে জমি কিনতে গেলে কেন?’

‘জমির মালিক, এই জায়গাটা নিজের স্ত্রীর জন্য সাজিয়ে ছিলেন। গতবছরেই ভদ্রলোকের স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি এটা স্মৃতি হিসেবে রাখতে পারতেন, কিন্তু নিজের দুর্বল জায়গা ছিল বলেই, বিক্রি করে দিতে চাইলেন। আরিফ জায়গাটার সন্ধান দেয়াতে দেখতে এসে আমারও পছন্দ হয়ে গেল। তাই কিনে ফেললাম। খুব বেশি দাম না। মাত্র পনেরো লাখ।’

হাঁটতে হাঁটতে ওরা পর্ণকুটিরের সামনে গেল। দেখেই মনে হচ্ছে নতুন করে সাজানো। চারপাশ কেমন ঝিকিমিকি আলোয় উজ্জ্বল হয়ে আছে। সে ছোটো সাইজের পর্ণকুটির দেখে বলল,

‘সেদিন আমি তোমাকে এরকম একটা ঘরের কথা বলেছিলাম। তুমি মনে রেখেছ?’

‘হ্যাঁ, এটা ভাঙা ছিল। ঝড়তুফানে ভেঙে গিয়েছিল। তুই বলার পর, রহমত চাচাকে দিয়ে আবার এটার কাজ ধরিয়েছি। কিছু চারাগাছ লাগিয়েছি। সবকিছু নতুনভাবে সাজিয়েছি। পছন্দ হয়েছে?’

আনন্দে কোনো কথাই বলতে পারল না প্রাণেশা। শহর থেকে দূরে, একদম লোকসমাগমের আড়ালে সবুজ-শ্যামল পরিবেশে এমন একটা পর্ণকুটির সাজানোর খুব ইচ্ছে ছিল তার। রব যে তার ইচ্ছে এইভাবে পূরণ করে দিবেন, ভাবেনি। সে খুশিমনে সামনে থাকা দম্পতির দিকে এগিয়ে গেল। তাদের থেকেই জেনে নিল, এখানকার মালিকের যাবতীয় খবরাখবর ও পর্ণকুটির নিয়ে অনির্বাণের হুলস্থুল কাণ্ড। সব শোনে নিজেকে তার ভীষণ সৌভাগ্যবতী মনে হলো। এই প্রথমই মনে হয়, তার কোনো ইচ্ছেকে মুখফুটে বলা মাত্রই দু’হাতের মুঠোয় এনে দিল কেউ। সুখের এক দমকা হাওয়া ছুঁয়ে গেল তাকে। নিশ্চুপে নিজের সৌভাগ্যকে উপভোগ করতে লাগল প্রাণেশা।

অনির্বাণ ওই দম্পতির সাথে কথাবার্তা এগোলো। এরপর ওনারা খাবার-দাবারের বন্দোবস্ত করে চলে গেলেন। প্রাণেশা ধীরপায়ে হেঁটে হেঁটে সম্পূর্ণ বাগান দেখল। একটু একটু করে ছুঁয়ে দিল প্রত্যেকটা ফুলের গাছেদের। দু’হাতে ফুলেদের গাছ জড়িয়ে ধরে চুমু খেল। লাল টুকটুকে একটা রক্তজবা হাতে এনে কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে বলল,

‘বউ বউ লাগছে?’

ভাবুক চেহারায় প্রাণেশার সামনে এসে দাঁড়াল অনির্বাণ। কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে নিজের গালে আঙুল ঠেকিয়ে কৌতুকের সুরে বলল,
‘কিছু একটা মিসিং মনে হচ্ছে।’

‘কী?’

‘বাসর।’

প্রাণেশা মুখ বাঁকিয়ে বলল,
‘ধুর… ফাজিল।’

আর কিছু বলার আগেই শূণ্যে ভেসে উঠল প্রাণেশা। প্রথমে চমক ও ভয় দুটোই পেল। পরক্ষণেই নিজেকে নিরাপদ আশ্রয়ে দেখে দু’হাতে অনির্বাণের গলা পেঁচিয়ে ধরে বলল,

‘ভাব-ভালোবাসা বেড়ে গেছে দেখছি।’

অনির্বাণ সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ল,
‘কম ছিল?’

প্রাণেশা উত্তর দিল না। মুখ নামিয়ে হাসল শুধু। সেই হাসিটা মুহূর্তেই ঠোঁট ছুঁইয়ে বন্ধ করে দিল অনির্বাণ। বলল,
‘পর্ণকুটিরটা তোর মনের মতোই সাজিয়েছি। এখানে বাসর সারতে আপত্তি আছে, বউ?’

লজ্জায় মিইয়ে গেল প্রাণেশা। মুখ থেকে কোনো কথা বের হতে চাইল না। তবুও সব লজ্জাকে ঝাঁটা দিয়ে ঝাঁটিয়ে শক্ত হাতে অনির্বাণকে আঁকড়ে ধরল। চোখের চশমা সরিয়ে দুটো চোখের পাতায়, গালে ও কণ্ঠমণিতে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল,

‘ইউ আর দ্য বেস্ট হাসব্যান্ড ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। থ্যাংক ইউ সো মাচ্ অনি ফোর কামিং ইনটু মাই লাইফ।’

***

পরিশিষ্ট –

প্রতি বছর দুটো করে জমজ সন্তান নেয়ার বড্ড আশা ছিল অনির্বাণের। একগাদা বাচ্চাকাচ্চা না হলে সংসারটা ঠিক পরিপূর্ণ হবে না, এমনটাই ধারণা ছিল তার। কিন্তু, একসাথে তিনটে সন্তানকে পেয়ে তার সব ধারণা পালটে গেছে। এই তিনটে বাচ্চার জ্বালায় ও যন্ত্রণায় চোখে অন্ধকার দেখে সে। প্রথম তো সে খুব খুশি ছিল, একসাথে তিনটে বাচ্চাকে ছুঁয়ে। আস্তেধীরে বুঝতে পারল, মানুষ বাচ্চাদের জ্বালায় কীভাবে অতিষ্ঠ হয়। একসাথে তিনজনে সামলানো কী যে কষ্ট, সেটা দু’চোখে দেখার পর তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আর জীবনে বাচ্চাকাচ্চা নিবে না। দশ-বিশটা কেন, চতুর্থ বাচ্চা আনারই প্লান নেই তার। এরমধ্যে প্রাণেশার যাই যাই অবস্থা। মনে পড়লেই বুকের কাছে ব্যথারা ভীড় জমায়। দুটো মেয়ে ও একটা ছেলেই তাকে বিশটা সন্তানের জ্বালা দিচ্ছে রোজ। একা হাতে বাচ্চাকাচ্চা সামলানো কষ্ট দেখে, আইশা ও মাইশা ওদের সাথে ঢাকাতেই থাকত। ওরা দু’জনেই বাচ্চাদের দেখাশোনা করে বেশি। খাওয়ায়, ঘুম পাড়ায়, খেলাধুলা করে। বাইরের ব্যস্ততা সামলে ঘরে এসে একটু বিশ্রাম নিতে গেলে তিন বিচ্ছু তার হাত-পা ধরে লটকে গিয়ে কাঁধে চড়ে বসতে চায়। মাঝেমধ্যে এমন হয় যে, ওরা ওয়াশরুমে গিয়ে প্রাণেশাকে না ডেকে অনির্বাণকে ডাকে। চুপসানো মুখ নিয়ে বাচ্চার সামনে যায় অনির্বাণ। কটমট চোখে চেয়ে থেকে ধমকে উঠে। একটু ধমক খেলে ওরাও কেঁদেকেটে গাল ভাসিয়ে ফেলে।

আজ সকালেও একটা অঘটন ঘটে গেল। আইশা-মাইশা ক’দিনের জন্য বাড়িতে গেছে। ছেলেপক্ষ এসেছিল, কনে দেখতে। দু’জনকেই পছন্দ করেছে। একইদিনে দু’জনের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তা-ও একই বাড়িতে। আজ রাতেই ঘরোয়াভাবে আকদ হবে।

বাচ্চারা রাতে দুই ফুপির সাথেই থাকে। কিন্তু ওরা কেউ নেই দেখে তিনজনকে সাথে নিয়ে ঘুমাতে হয়েছে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে, রান্নাঘরে এলো প্রাণেশা। সে খেয়ালও করল না, বাচ্চাদের এলোমেলোভাবে ঘুমানো ও বারেবারে হাত-পা ছড়িয়ে-ছিঁটিয়ে রাখার কারণে বেশ কয়েকবার লাথি খেল অনির্বাণ। ওদের ঘুমানোর অসুবিধা হচ্ছে ভেবে, সে একপাশে একটুখানি জায়গায় ঘুমাল। তাতেও হলো না। অঙ্কুরের পায়ের লাথিতে শেষমেশ সে ধপাস করে ফ্লোরে পড়ে গেল। পড়ে গিয়ে ব্যথা পেলেও আধোঘুমে বাচ্চাকে সামান্য সরিয়ে আবারও বিছানায় শুয়ে পড়ল অনির্বাণ। বিড়বিড়াল,

‘বিচ্ছুর দল। তোমাদের জন্য মোটা সাইজের খাটেও আমার জায়গা হবে না দেখছি।’

মেয়ে দুটো ততক্ষণে জেগে গিয়ে অনির্বাণের পিঠের ওপর বসে দুলদুলুনি খেলছে। আর ছেলেটা বাপের সবগুলো চুল টানছে, দাঁত দিয়ে পিঠে কামড়ে দিচ্ছে। বিরক্ত অনির্বাণ সহ্য করতে না পেরে চিৎকার দিয়ে প্রাণেশাকে ডাকল,

‘এই প্রাণ, তোর ডিমডাম সরাবি। আমাকে ঘুমাতে দিচ্ছে না। গুলুমুলু শরীর নিয়ে আমার সাথে জোর দেখায়। কত পাজি। এদেরকে কোন গ্রহ থেকে আবিষ্কার করলি? ভেবে পাই না আমি, এত মোটা খাটে যাদের জায়গা হয় না, তারা আমার বউয়ের এইটুকুন পেটে একসাথে কীভাবে ছিল?’

হনুফার হাতে নাশতার কাজ গছিয়ে দিয়ে প্রাণেশা রুমে এসে দেখল, ওরা খেলনাবাটির মতো বাপকে নিয়ে খেলছে। যেভাবে মেয়ে দুটো পিঠে দুলছে, মনে হচ্ছে দোলনায় দোল খাচ্ছে। আর অন্যজনকে এক মাসের উপোষী মনে হচ্ছে। খেতে না পেয়ে বাপের পেট-পিঠ খাচ্ছে। সে হাত বাড়িয়ে মেয়ে দুটোকে সরিয়ে ছেলেকেও কোলে টেনে নিল। গালে চুমু খেয়ে বলল,

‘ছিঃ বাবা, কী খাচ্ছ তুমি? তুমি জানো না, তোমার বাবার শরীরে ভোঁটকা গন্ধ। এখন তো তোমার মুখেও গন্ধ চলে এসেছে। ইশ, আসো আসো, মুখ পরিষ্কার করে দিই।’

কথাটা কানে গেল অনির্বাণের। লাফ দিয়ে বিছানায় বসল। রাগতস্বরে বলল,
‘কী বললি? আমার গায়ে কীসের গন্ধ?’

প্রাণেশা একইভাবে বলল,
‘কানে কম শোনো না কি?’

যেভাবে বিছানায় বসেছিল, সেভাবেই আবার বালিশে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল অনির্বাণ। ব্রাশে টুথপেস্ট লাগিয়ে তিনজনকে নিয়ে ওয়াশরুমে প্রবেশ করল প্রাণেশা। বাচ্চাদের হাত-মুখ ধুইয়ে দিল। পরনের জামা পালটে দিতে গিয়ে বিপদে পড়ল। মেয়ে টিউলিপ জেদী কণ্ঠে বলল,

‘আমি এটা পরব না, মাম।’

‘কেন?’

‘আমি তোমার মতো জামা পরব।’

মায়ের পরনের টি’শার্ট দেখিয়ে বলল টিউলিপ। প্রায়ই এমন করে। প্রাণেশা যদি গোল জামা বা টপস পরাতে যায়, মেয়ে টি’শার্ট ও শার্টের বায়না ধরে। সাড়ে তিন বছর বয়স হলেও ওদের প্রত্যেকের কথাবার্তা স্পষ্ট। শুনতে এত ভালো লাগে। মেয়ের জেদ শোনে প্রাণেশা বলল,

‘একজীবনে আমি অনেক কথা শুনেছি। তুমিও শুনবে?’

টিউলিপ এই কথার মানে বুঝল না। সে মায়ের টি’শার্ট ধরে টানাটানি শুরু করে দিল। অনির্বাণ বিছানায় থেকেই ঘুমঘুম কণ্ঠে বলল,

‘ও যেটা পরতে চাইছে সেটাই পরিয়ে দে না, প্রাণ। কেন ওকে এসব কথা বলছিস?’

প্রাণেশা আর দ্বিমত করল না। মেয়ের পছন্দের পোশাকই পরিয়ে দিল। এরপর টিউলিপ ও জিনিয়ার চুল বেঁধে দিয়ে, ছেলে অঙ্কুরকে পরিপাটি করে, রুম থেকে বেরিয়ে স্টাডিরুমে এসে, একেকজনকে ছোটো সাইজের স্টাডিটেবিলের সামনে বসিয়ে সব ধরনের রংপেন্সিল ও আঁকিবুঁকির জিনিসপত্র বের করে দিয়ে বলল,

‘আর কোনো দুষ্টুমি নয়। নাশতা তৈরী হলে আমি এসে ডাকব। পাপাকে বিরক্ত করো না। এখানেই থাকো।’

ওদেরকে একসাথে বসিয়ে রান্নাঘরের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল প্রাণেশা। টুকিটাকি যে কয়টা পদ রান্না করা শিখেছে, মাঝেমধ্যে সেসব নিজেই রাঁধে। হনুফা প্রত্যেকটা কাজে হাত লাগিয়ে দেয়। নাশতা তৈরী করে, টেবিলে খাবার সাজিয়ে যেই না রুমে এলো, অমনি তার চোখদুটো চড়কগাছ হয়ে গেল। বিছানায় অনির্বাণ নেই। এদিকে আলমারি খোলা। ভেতরের সব কাপড়চোপড় ফ্লোরে। তিনজনে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে লুকোচুরি খেলছে আর সারা ঘরে ছোটাছুটি করছে। প্রাণেশা ওখানে দাঁড়িয়ে থেকেই চিৎকার দিল,

‘এ্যাই বিচ্ছুর দল, তোমরা এত অকাজ করে কী শান্তি পাও?’

মায়ের চিৎকার শোনে পড়িমরি করে দৌড় শুরু করল বাচ্চাগুলো। এরমধ্যেই অনির্বাণ ওয়াশরুম থেকে বের হলো। দুটো বেরিয়ে গেলেও দৌড় দিতে পারল না জিনিয়া। সে প্রাণেশার হাতের ফাঁকে আটকে গেল। সবে মেয়েকে বকতে যাবে, সেই মুহূর্তেই অনির্বাণ মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে বউয়ের দিকে তাকিয়ে কড়া শাসনের সুরে বলল,

‘খবরদার, ভুল করেও আমার বাচ্চাদের বকাবকি করবি না। ওরা তোর কী ক্ষতি করেছে শুনি?’

প্রাণেশা শক্তকণ্ঠে বলল,
‘ওরা এমনিতে কোনো ক্ষতি করেনি। শুধু আমার দিনরাতের সবটুকু শান্তির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।’

অনির্বাণ মেয়ের চোখে হাত রেখে টুপ করে প্রাণেশার গালে চুমু খেয়ে আহ্লাদী কণ্ঠে বলল,
‘আহারে, সোনা বউটা আমার। কষ্ট হয়ে যাচ্ছে না? অসুবিধা নেই। আরও তিনটে এলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

আশেপাশে তাকিয়ে কিছু একটা খুঁজতে শুরু করল প্রাণেশা। অনির্বাণ বলল,
‘খুঁজে লাভ নেই। শান্তির মা এই ঘরে নেই। এই বিচ্ছুদের জন্মের পরপরই শান্তির মা এই ঘর থেকে বিদায় নিয়েছে।’

কোমরে হাত রেখে নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে প্রাণেশা বলল,
‘আমি শান্তির মাকে খুঁজছি না। খুঁজছি ঝাড়ুকে। যে মাথা থেকে আরও তিনটে বিচ্ছুর কথা বেরিয়েছে, সেই মাথাকে আজ চ্যাপ্টা করব। তাই…।’

‘এসব কী ধরনের কথাবার্তা? আদবকায়দা শিখিসনি? স্বামীর সাথে কেউ এইভাবে কথা বলে? দিনদিন তুই কেমন বেয়াদব হয়ে যাচ্ছিস রে, প্রাণ।’

ফোঁসফোঁস করতে করতে বাকি দুটোকে খুঁজে বের করে ডাইনিংয়ে বসাল প্রাণেশা। এক হাতে আর কয়জনকে খাওয়ানো যায়? প্রাণেশা দু’জনকে খাওয়াল আর অনির্বাণ একজনকে। নাশতা শেষে বাচ্চাদের নিয়ে নিচে নেমে এলো। গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করে টিউলিপ ও জিনিয়াকে পিছনে বসিয়ে অঙ্কুরকে সামনের সিটে বসিয়ে রাখল। অঙ্কুর বলল,

‘আমরা কোথায় যাচ্ছি, পাপা?’

‘দাদাবাড়ি।’

উত্তর দিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসার আগেই বাচ্চাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু পিছনে তুলে রাখল প্রাণেশা। সন্দিহান মনে বলল,
‘সামাল দিতে পারবে?’

দুই মেয়ে এরমধ্যেই একটার সাথে আরেকটা দ্বন্দ বাঁধিয়ে দিয়েছে। ওদের দিকে তাকিয়ে অসহায় কণ্ঠে অনির্বাণ বলল,
‘তুইও চলে আয়, বউ। প্লিজ…। একটা হলে সামাল দেয়া কঠিন ছিল না। কিন্তু একসাথে তিনটে…। ওরা এমনভাবে হাত-পা ছুঁড়ে, কোনফাঁকে অঙ্কুর লাথি ছুঁড়বে, আমি ড্রাইভ রেখে সড়কে পড়ে যাব। এই তিনটাকে একসাথে দেখেশুনে রাখা অসম্ভব।’

হ্যান্ডিক্রাফটের বেশকিছু কাজ জমানো। কয়েকটা পুঁতির পার্স ডেলিভারির কথা ছিল আজ। তাই প্রাণেশা যেতে চায়নি। কিন্তু ননদদের বিয়ে। না গিয়েও উপায় নেই। এজন্য শেষবেলা সিদ্ধান্ত নিল, বিয়েতেই যাবে। ডেলিভারি আগামী সপ্তাহে করবে।

অনির্বাণের এই কথা শোনে ভীষণ হাসি পেল প্রাণেশার। সে কণ্ঠে কৌতুক ধরে রেখে বলল,

‘এখুনি অধৈর্য্য হয়ে গেলে? একগাদা বাচ্চাকাচ্চা হলে তুমি তো মনে হয় মঙ্গলে পালানোর পথ খুঁজবে।’

অনির্বাণ নিজেও হাসলো। বলল,
‘তিনটাই ইনাফ। আর দরকার নেই। এখন তাড়াতাড়ি আয়। দেরী হচ্ছে। বাড়ির সবাই অপেক্ষা করছে।’

‘যদি না যাই?’

‘এমন করিস না। তুই কাস্টমারকে বল, ডেলিভারি পরে হবে। ইমার্জেন্সি পড়ে গেছে। প্লিজ, সোনা… তোকে একশোটা চুম্মাহ দিব।’

‘আহা… ঢং। আমি যেন তোমার থেকে চুম্মা নেয়ার জন্য বসে রয়েছি।’

ভেংচি কেটে পিছনের সিটে এসে, মেয়েদের আগলে নিয়ে বসলো প্রাণেশা। অনিবার্ণ সামনে বসে গাড়ি স্টার্ট করে হাইওয়ে ধরে মেহেরপুরের পথে রওনা হলো। চলতে চলতে লুকিং গ্লাসের দিকে তাকিয়ে গান ধরল,

ভালোবাসি তাই তোকে চাই,
আমার পৃথিবী জুড়ে।
ভালো লাগে তাই চলে যাই,
আমি হাওয়াতে উড়ে।
যেন… বেপরোয়া ডানা, পেয়েছে ঠিকানা…
চোখে চোখে হলো পরিচয়।
এই পথ যদি না শেষ হয়…
ওওও এই পথ যদি না শেষ হয়…।

***

সমাপ্ত…

ওপাশ থেকে জবাব এলো না। মাশকুরার বুক কাঁপছে। শেষ পর্যন্ত যৌতুক দিয়েই মা তাকে বিদায় করবেন বলে বন্দোবস্ত করলেন! চরম আফসোস নিয়ে কপাল চাপড়ানো শুরু করল সে। ফোনের ওপাশ থেকে প্রথমে দীর্ঘশ্বাস এলো। পরক্ষণেই শোনা গেল,

-‘মাশকুরা আমি তোমারে ভালোবাসি। এই ভালোবাসার সীমা-পরিসীমা হিসাব কইরা বুঝাইতে পারুম না। আমি জানি না তোমার আম্মা তোমারে কী বুঝাইছেন! ক্যান তোমার মাথায় এই টাকার হিসাব ধরাইয়া দিছেন, এ-ও বুঝবার পারতেছি না। তয় এইটুক বুঝতাছি, ওই টাকার সংখ্যা দিয়া উনি বুঝাইয়া দিছেন, তুমি ওই ঘরের বোঝা হইয়া গেছ। তোমারে বিদায় করতে এহন টাকা লাগে।’

মাশকুরা কথা বলল না। শুধু নীরবে শোনে গেল। এরপর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। ফাহাদ বলল,
-‘তুমি আমার কাছে একবার চইল্যা আসো, আমি সারাজীবন তোমারে মাথায় তুইলা রাখুম। সত্য কইতাছি, একটুও মিছা না। ভরসা করবা না আমারে?’

কান্নার কারণে গলা দিয়ে আওয়াজ আসলো না মাশকুরার। ফাহাদও কী বুঝল কে জানে। ম্লানমুখে বলল,
-‘তুমি না চাইলে তোমারে জোর করার সাধ্য কারও নাই মাশকুরা। তুমি-ই সিদ্ধান্ত নাও, কী চাও। তয় একটা সত্য কথা কী জানো, তুমি আমার না হইলে, পাগল হইতে আমার একদিনও লাগব না।’

-‘কিন্তু আমি যে অন্য কাউরে ভালোবাসি।’

অনেকক্ষণ পর মুখ খুলল মাশকুরা। ওপাশে ফাহাদ নিঃশব্দে হাসল। বলল,
-‘মন তোমার, ভালোবাসতেই পারো। আমি জোর করে আটকানোর কে?’

-‘মনে একজনরে নিয়া আপনার সাথে সংসার করুম ক্যামনে? জিন্দা লাশ হইয়া যামু না?’

ফাহাদ কথা খুঁজে পেল না। এড়িয়ে যাওয়ার বাহানায় বলল,
-‘নম্বর কি আনব্লক কইরা কল দিছিলা?’

-‘হ। ক্যান?’

-‘আবার ব্লক কইরা দাও। আমি চাই না কেউ আমার লাইগ্যা জিন্দা লাশ হইয়া বাঁইচা থাকুক। ভালা থাইকো। আর কথা না হওয়াই মঙ্গল।’

-‘কিন্তু…?’

-‘চিন্তা কইরো না। আমি তোমারে বিয়া করুম না। তুমি আমার ভাগ্যে নাই, এইডা এহন নিশ্চিত হইয়া গেলাম। ফোন কইরা আমারে আর দুর্বল কইরো না।’

মাশকুরা হতভম্ব ফাহাদের এরূপ আচরণে। ছেলেটার আচরণ কেমন যেন। একটু পাগলাটে স্বভাবের মানুষ বলেই হয়তো। একদিকে একজন তাকে ভালোবেসে পুড়ছে, অন্যদিকে সে একজনকে ভালোবেসে পুড়ছে। চারিদিকে শুধু মন পুড়ছে তো পুড়ছেই। এই পোড়াপুড়ি কবে থামবে?

***

চলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ