Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমাপ্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা পর্ব-১৯+২০

প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা পর্ব-১৯+২০

#প্রণয়াসক্ত_পূর্ণিমা
#Writer_Mahfuza_Akter
পর্ব-১৯

-“তোর বিয়ে তো আমার সাথে হওয়ার কথা ছিল! এসব কী থেকে কী হয়ে গেল? আ’ম টোটালি সারপ্রাইজড্!”

তরী ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করলো,

-“দেখো! যা হওয়ার হয়ে গেছে। তুমি তো আর আমায় ভালোবাসো না! আমি চাই, আমাদের সম্পর্কটা আগের মতোই থাকুক। তুমি তো জানো, তুমি আমার কতটা কাছের!”

ছেলেটা কিছু বলার জন্য নড়েচড়ে বসতেই মেইন ডোরের দিকে নজর গেল তার। সৌহার্দ্য ওদের দুজনের দিকে বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে। অচেনা কাউকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ছেলেটা ভ্রু কুঁচকে তাকালো। বললো,

-“আপনি? আপনি কে? চেনা নেই, জানা নেই! হুট করেই একজনের বাড়িতে এতো রাতে ঢুকে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?”

ছেলেটার দৃষ্টি অনুসরণ করে তরীও সেদিকে তাকিয়ে সৌহার্দ্যকে দেখে চমকে উঠলো। অক্ষি গোলকে অবাকতা ফুটে উঠলো মুহূর্তেই! সৌহার্দ্য দ্রুত গতিতে তরীর দিকে এগিয়ে গেল। ওর হাত ধরে টেনে তুলে নিজের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাগী কন্ঠে বললো,

-“তোমার পড়াশোনা নেই? এখানে কেন এসেছ আমাকে না জানিয়ে? এমনিতেই মেডিক্যালে চান্স পাওনি সেটা নিয়ে আমি কিন্তু কিছু বলিনি। তার মানে এই না যে, তুমি যা করবে, আমি তাই মেনে নিবো।”

সৌহার্দ্যের কথা শুনে তরী অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে। ওকে এভাবে বকাবকি করার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না সে। আর সৌহার্দ্য এতো রেগে আছে কেন সেটাও বুঝতে পারছো না। সৌহার্দ্যের চেচামেচি শুনে তরীর মা মিসেস মোহনা বেরিয়ে এলেন ভেতর থেকে। সৌহার্দ্যকে দেখে মুখে কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে বললেন,

-“আরে, বাবা! তুমি এতো রাতে? এখানে?”

-“হ্যাঁ, আন্টি! আসলে আমি আবার আমার বউকে ছাড়া থাকতে পারি না। দিনশেষে ঘরে ফিরে মুখটা না দেখলে আমার চলেই না। কিন্তু আজ ও এখানে চলে এলো আমাকে না জানিয়ে। তাই ওর টানে আমিও চলে এলাম।”

কথাগুলো সৌহার্দ্য এমনভাবে বলছিল, যেন পাশের অপরিচওত ছেলেটাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলছিল। তরীর কান গরম হয়ে গেল, সে প্রচন্ড লজ্জিত হলো সৌহার্দ্যের এমন কথায়। নিভু নিভু দৃষ্টিতে আশেপাশে তাকাতে লাগলো বারবার। মোহনা তরীর দিকে রাগী চোখে একবার তাকিয়ে মুখে পুনরায় হাসির রেখা টানার চেষ্টা করলেন। সৌহার্দ্য বিষয়টা দেখেও না দেখার ভান করলো। সে ভালো করেই জানে যে, তরীর সৎ মা তরীকে পছন্দ করেন না। এতে তার কিছু যায়-আসেও না। এতোদিন ওর চাঁদ ওর থেকে দূরে ছিল, অনেক কষ্ট সহ্য করেছে এখানে থেকে। সে কিছু জানতে পারেনি, তাই কিছু করতেও পারেনি। কিন্তু এখন যখন তার চাঁদ, তার প্রিয় সম্পদটা তার জীবনে আবার ফিরে এসেছে, তাহলে সেটাকে নিজের সর্বস্ব দিয়ে আগলে রাখার দায়িত্ব তারই।

মিসেস মোহনা সেই অপরিচিত ছেলেটাকে দেখিয়ে সৌহার্দ্যকে বললেন,

-“এসো, তোমাকে পরিচয় করিয়ে দেই! এটা হচ্ছে অর্ণব। আমার একমাত্র ভাগ্নে। আসলে তরীকে এখানে ডাকা হয়েছে, কারণ ওর খুব প্রিয় একটা মানুষ আজ বিদেশ থেকে ফিরে এসেছে। আর সেই মানুষটা হলো এই অর্ণব নিজে-ই!”

সৌহার্দ্য তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে অর্ণবের দিকে তাকালো। এই ছেলেটাকে প্রথম দেখায় একটুও পছন্দ হয়নি সৌহার্দ্যের। সৌহার্দ্যের নির্বিকার ভাবভঙ্গি দেখে অর্ণব নিজেই এগিয়ে এলো। হাত বাড়িয়ে দিয়ে হাসিমুখে বললো,

-“হাই! আমি অর্ণব। তরীর ছোটবেলার সঙ্গী প্লাস ওর সবচেয়ে কাছের বন্ধু। ওর থেকে বয়সে বেশ বড় হলেও তরীর কাছে আমি বন্ধুর মতোই। আপনার কথা শুনে বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছি যে, আপনিই তরীর হাসবেন্ড। নাইস টু মিট ইউ!”

সৌহার্দ্য তেমন হাসলো না। অনিচ্ছুক ভঙ্গিতে অর্ণবের হাতে হাত মিলিয়ে বললো,

-“আমি সৌহার্দ্য। কার্ডিওলজিস্ট ড. সৌহার্দ্য রায়হান।”

-ভালো লাগলো জেনে যে, তরীর বর ডাক্তার। তরীর নিজেরও অনেক স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। ওর পছন্দ-অপছন্দ থেকে শুরু করে আগাগোড়া সবটা আমার জানা। পাঁচ বছর পর সিডনি থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরলাম আজ। এয়ারপোর্ট থেকে ডিরেক্ট এখানে এসেছি ওর সাথে দেখা করবো বলে। কিন্তু ভাবতেই পারিনি, এতো বড় সারপ্রাইজ আমার জন্য ওয়েট করছে। তরীকে এভাবে বিবাহিত অবস্থায় দেখবো, আমি কল্পনাও করিনি। যাইহোক, তরী হ্যাপি থাকুক, এটাই আমি চাই।”

অর্ণবের কথা শুনে সৌহার্দ্য বেশ বড়সড় একটা হাসি দিয়ে বললো,

-“তরী শুধু আমার সাথেই সুখী হবে। ওকে নিজের সর্বস্ব দিয়ে আগলে রাখার দায়িত্ব আমার।”

অর্ণব মলিন মুখে হাসলো। সৌহার্দ্যের কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে বেশ শান্ত গলায় বললো,

-“আগলে রাখুন ওকে, এটাই আমি চাই। তবে মনে রাখবেন, যদি আপনার কারণে তরীর চোখ থেকে কোনোদিন এক বিন্দু পানিও ঝরে, সেদিন আপনি তরীকে আজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলবেন।”

সৌহার্দ্য কড়া দৃষ্টিতে অর্ণবের দিকে তাকিয়ে বললো,

-“আমিও দেখবো কে তরীকে আমার থেকে আলাদা করে!”

৩০.
মিস্টার আফনাদ, অর্ণব, সৌহার্দ্য, তরী ও তরীর ছোট ভাই আফিফ এক টেবিলেই খেতে বসেছে। সৌহার্দ্য তরীকে নিয়ে চলে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু মিস্টার আফনাদ যেতে দিলেন না। এতোদিন পর তার মেয়ে এ বাড়িতে পা রাখলো! একটা দিন না থাকলে তিনি সেটা কীভাবে মেনে নিবেন? অগত্যা সৌহার্দ্যও তরীকে ফেলে রেখে না যেতে পেরে সেখানে থেকে গেল। মিসেস মোহনা তরীর এখানে থাকটা একটুও ভালো চোখে দেখছেন না৷ কেন থাকবে এই মেয়ে এবাড়িতে? অনেক কষ্টে তরীকে নিজের ঘাড় থেকে নামিয়েছেন তিনি। তরীকে দেখলেই মিসেস মোহনার মনে পড়ে যায়, তার স্বামীর প্রথম পক্ষে একটা স্ত্রী ছিল আর তরী সেই স্ত্রীর অংশ। তরীর প্রতি তার রাগ, ক্ষো*ভ ও অসহ্য অনুভূতির একমাত্র কারণ এটাই!

মিসেস মোহনা সবার প্লেটে খাবার দিতেই অর্ণব বললো,

-“তরী, তুই এই চিকেন কারি-টা খাস না। দেখেই মনে হচ্ছে ভীষণ ঝাল! তুই তো আবার ঝাল খেতেই পারিস না!”

তরী অবাক হয়ে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। মিস্টার আফনাদ হেসে বললেন,

-“এখনো মনে আছে তোর? এতো বছরেও ভুলিসনি কিছু দেখছি। আগের মতোই আছিস একদম!”

অর্ণব শুকনো হাসি দিয়ে বললো,

-“এসব কি ভোলার মতো জিনিস নাকি! আমার ব্রেইন এতো খারাপ না যে, সব ভুলে খেয়ে বসে থাকবো।”

সৌহার্দ্য বাদে সবাই হাসলো। অর্ণবের এতো কেয়ারিং ভাব সৌহার্দ্যের কাছে একদমই ভালো লাগছে না। তবুও কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে চুপচাপ খেতে লাগলো সে।

মিসেস মোহনা তরীর প্লেটে ভেজিটেবল দিতে গেলে অর্ণব তড়িঘড়ি করে বাঁধা দিয়ে বললো,

-“আরো, মনি! কী করছো এটা? এই ভাজিতে বেগুন আছে। তুমি কি ভুলে গেছ যে তরীর বেগুনে এলার্জি? আর তরী, তুইও বারণ করছিস না কেন এটা দিতে? স্ট্রেঞ্জ!!”

তরী ঠোঁট ফুলিয়ে হাতের ইশারায় বোঝালো, সে ভুলে গিয়েছিল। সৌহার্দ্য প্রচন্ড বিরক্তি ও রাগে ফোসফোস করতে লাগলো। কিন্তু কিছু বলতে পারলো না। দাঁতে দাঁত চেপে খাওয়া শেষ করে রুমে চলে এলো। আজই সে একটা লিস্ট করবে, তরীর কী পছন্দ, কী অপছন্দ আর তরী সম্পর্কিত যা যা আছে সবকিছুর!

৩১.
সৌহার্দ্য নিজের চেম্বারে বসে আনমনে অনেক কিছু ভাবছে। একসাথে অনেকগুলো প্যাঁ*চ লেগে আছে। কিন্তু একটাও খোলার কোনো পথ সে পায়নি আদৌ। তারওপর অর্ণব নামক এই ছেলেটার আগমন আরো বেশি চিন্তায় ফেলেছে ওকে। ছেলেটা দেখতে ভীষণ সুদর্শন, শিক্ষিত। ওর কথাগুলো শুনে সৌহার্দ্য বেশ ভালো করে বুঝতে পেরেছে যে, ওর মনে তরীর প্রতি কোনো দূর্বলতা আছে। আর এই বিষয়টা-ই ভাবাচ্ছে ওকে।

ঘড়ির কাটায় আড়াইটা বাজতেই সৌহার্দ্য বেরিয়ে গেল চেম্বার থেকে। আজ তিনটায় একটা সার্জারী আছে। বাইরের সকল চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে আপাতত নিজের দায়িত্বে মন দিতে হবে তাকে। হ্যান্ড গ্লাভস পরতে পরতে ওটিতে প্রবেশ করলো সে।

সব কাজ শেষে সৌহার্দ্য হসপিটাল থেকে বেরিয়ে এলো সন্ধ্যা লর আগ মুহুর্তে। গাড়িতে ওঠার জন্য ডোরে হাত বাড়াতেই পাশে কারো উপস্থিতি বুঝতে পারলো। পাশ ফিরে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো,

-“অরুণী, তুমি?”

অরুণী দুর্বোধ্য হাসি দিলো। কিন্তু সেই হাসিতে কোনো প্রাণ নেই। অরুণীকে দেখে একদম অচেনা লাগছে আজ সৌহার্দ্যের কাছে। একদম নির্জীব, প্রাণহীন মনে হচ্ছে ওকে। এতোটা পরিবর্তন কীভাবে এলো মেয়েটার মধ্যে?

-“তুমি কি অসুস্থ? এমন দেখাচ্ছে কেন তোমায়? আর এতোদিন পর দেখা হলো কেন তোমার সাথে? হসপিটালে আসা-যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছো নাকি?”

-“একটু অসুস্থ ছিলাম। তাই কয়েকদিন রেস্ট নিয়ে আবার জয়েন করলাম আজকে। আমার কথা বাদ দাও না-হয়! তুমি কেমন আছো? আর তোমার বউ?”

-“আছি, ভালোই আছি। তরীও ভালো আছে।”

অরুণী কিছু বলতে নিবে তখনই সৌহার্দ্যের ফোন বেজে উঠলো। স্ক্রিনে প্রহরের নাম দেখে সৌহার্দ্য কালবিলম্ব না করেই ফোন রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে প্রহর বললো,

-“ব্যস্ত আছিস এখন?”

-“না, হসপিটাল থেকে বের হলাম মাত্র।”

-“আজ সন্ধ্যার পর তো তোর কোনো কাজ নেই, না? কোনো এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে থাকলে ক্যান্সেল করে দে।”

-“না, ফ্রী-ই আছি।”

-“আচ্ছা, তাহলে পার্কের সামনে আয় তোর গাড়ি নিয়েই। আমি ওখানে গিয়ে দাঁড়াবো না-হয়! এক জায়গায় যাবো। আজ অনেক প্রশ্নের উত্তর পাবো আমরা হয়তো!”

-“আচ্ছা, আমি আসছি।”

সৌহার্দ্য ফোন কেটে অরুণীর দিকে তাকিয়ে বললো,

-“আচ্ছা, ভালো থেকো, অরুণী। আমার এখন যেতে হবে। আসি।”

সৌহার্দ্য গাড়িতে উঠে দ্রুত চলে গেল। অরুণী ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। চোখের পানি গাল স্পর্শ করতে-ই ও হাত দিয়ে সেটা মুছে নিলো। র*ক্তি*ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

-“তুমি তো তোমার জীবন নিয়ে ভালোই আছো, সৌহার্দ্য! কিন্তু আমি তো ভালো নেই। কেন ভালো নেই আমি? কেন?”

সৌহার্দ্য আর প্রহর একটা ডুপ্লেক্স বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। জায়গাটা শহর থেকে অনেক দূরে। প্রহর অনেক অনুসন্ধান চালিয়ে জায়গাটার ঠিকানা পেয়েছে। এখানে পৌঁছাতে-ই অনেক রাত হয়ে গেছে। সৌহার্দ্য হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললো,

-“সাড়ে নয়টা বেজে গেছে, প্রহর! এখানে পৌঁছাতে-ই তো তিন ঘন্টার বেশি সময় লেগে গেল। কিন্তু এখানে এলাম কেন আমরা?”

-“এটাই সেই দারোয়ানের বাড়ি, যেই দারোয়ানকে আমরা খুঁজছি। এখন ওর সাথে দেখা করতে পারলেই হয়! দেখা হয়ে গেলে ওর মুখ থেকে সবটা শোনার ব্যবস্থা আমিই করবো। চল।”

প্রহর বাড়ির গেইটের দিকে এগিয়ে গেল। সৌহার্দ্যও ওর পিছু পিছু গেল। প্রহর বাড়ির গেইটে থাকা দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলো,

-“আচ্ছা, আমরা আজাদ নামের একজনকে খুঁজছি। খুব সম্ভবত উনি এ বাড়িতে-ই থাকেন। ওনার সাথে কি দেখা করা যাবে?”

দারোয়ান বেশ বয়স্ক। চুল-দাড়িতে পাক লেগেছে। তিনি যে প্রচন্ড অবাক হলো, তা তার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। তিনি অবাক কন্ঠে বললেন,

-“আপনারা কারা? আজাদের সাথে আপনাদের কী দরকার?”

সৌহার্দ্য বললো,

-“দেখুন, আমরা অনেক বি*প*দে পড়েছি। এই মুহুর্তে আজাদ সাহেবের সাহায্য আমাদের খুব দরকার!”

দারোয়ান নরম হলেন। ফোঁস করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,

-“আমি-ই আজাদ। বলুন, আপনাদের কীভাবে সাহায্য করতে পারি?”

প্রহর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো বৃদ্ধ লোকটার দিকে। তার বুকপকেটের ওপরে থাকা নেইম-প্লেটে লেখা নামটা দেখে সে নিশ্চিত হলো, এটাই আজাদ। প্রহর আর সৌহার্দ্য ওনাকে নিয়ে একটা চায়ের দোকানে বসলো। সৌহার্দ্য তার দিকে সরু চোখে তাকিয়ে বললো,

-“আমি সৌহার্দ্য। রায়হান আহমেদ-এর ছেলে, আর আরমান আহমেদ-এর ভাতিজা। আমাকে চিনতে পেরেছেন, দারোয়ান চাচা?”

-চলবে….

#প্রণয়াসক্ত_পূর্ণিমা
#Writer_Mahfuza_Akter
পর্ব-২০

রাতের নিস্তব্ধতা আজ প্রখরভাবে অনুভূত হচ্ছে। আকাশ আজ নিকষ, চাঁদ-তারার আনাগোনা অনুপস্থিত; তবে পুঞ্জীভূত মেঘের ছুটোছুটি দৃশ্যমান। ঝি ঝি পোকার ডাকের পাশাপাশি খড়কুটো পো*ড়ার শব্দ কানে বাজছে। এগুলো দিয়ে জ্বা*লা*নো আ*গু*নের আলোয় চারপাশ হলদেটে বর্ণধারণ করেছে। চারপাশের মতো দারোয়ান আজাদের অবয়বটাও হলদেটে লাগছে। মাটিতে পড়ে থাকা আজাদের সেই মৃ*ত দে*হ*টার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো সৌহার্দ্য। শুধু কানে বাজছে মৃত্যুর আগ-মুহুর্তে আজাদের কা*ত*রা*নো কন্ঠে বলা শেষ কথাটা,

-“এই চাবিটা আমার সিন্দুকের। ওখানে তোমার অজানা সবকিছু জানতে পারবে। আর আমাকে… আমাকে ক্ষমা করে দিও!”

চাবিটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে আজাদ শে*ষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো। সৌহার্দ্য চাবিটার দিকে তাকিয়ে রইলো অপলক। সে ভাবতেও পারেনি, তাদের আজাদের কাছে আসার কারণে আজাদের প্রাণটা-ই যাবে। আজাদের জানা সত্যিটা কাউকে জানতে দিতে না পারার জন্যই তাকে মে*রে ফেলা হলো।

পনের মিনিটের মাথায় প্রহর জঙ্গলের বাহিরে এসে সৌহার্দ্যের কাছাকাছি এলো ছুটন্ত পায়ে। হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, “পারিনি ধরতে। গু*লি করেই ছুটে পালিয়েছে। দূর থেকে ছুটে যেতে দেখেছি। কিন্তু কাছাকাছি গিয়ে দেখি, গায়েব হয়ে গেছে। তবে যে গু*লি*টা করেছে, সে একটা মেয়ে। ”

সৌহার্দ্য অবাক চোখে তাকিয়ে বললো, “মেয়ে? আর ইউ শিয়র? তুই কিভাবে বুঝলি?”

প্রহর সৌহার্দ্যের চোখের সামনে একটা ব্রেসলেট ঝুলিয়ে দেখালো। হলুদ আলোয় চিকচিক করছে সেটা। প্রহর বললো, “এটা দেখেছিস? মেয়েদের ব্রেসলেট! এটা ঐ খু*নি*র হাত থেকে পড়েছে। অন্ধকারেও চকচক করছিল এটা।”

সৌহার্দ্য ব্রেসলেটটা হাতে নিয়ে চমকে উঠলো। মনে মনে বললো, ” এটা… এটা তো তরীর হাতের ব্রেসলেট! এটা কীভাবে এখানে? তারমানে তরী-ই এখানে এসেছিল! তরী আজাদকে খু*ন করলো? কিন্তু তরী এমনটা কেন করলো? আমরা তো এখানে আজাদের কাছ থেকে জানতে এসেছিলাম, কে তরীকে পুঁ*তে দিয়েছিল! তাহলে কি তরী চায় না যে, আমরা সত্যিটা জানতে পারি? তারমানে তরী নিজেও সবটা জানে!”

সৌহার্দ্যের ভাবনা ভাঙলো প্রহরের কথা শুনে, “দূর শা*লার! চা খেয়ে এই নির্জনে এসে বসাটা-ই ভুল হয়েছে। সবটা জানতে গিয়ে অজানা রয়ে গেল আর মাঝ থেকে একজন মানুষের প্রাণ গেল!”

সৌহার্দ্য সবটা প্রহরের কাছ থেকে চেপে গেল। আজাদের দেওয়া চাবিটাও দেখালো না আর ব্রেসলেটটা যে তরীর, সেটাও বললো না! প্রহর দীর্ঘশ্বাস ফেলে পুলিশ ফোর্স ডাকলো।

সৌহার্দ্য বাড়ি ফিরলো মাঝরাতে। ফিরে দেখলো তরী জেগেই আছে। সৌহার্দ্য বেশ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তরীকে পরখ করলো। আর প্রচন্ড অবাক হলো তখন, যখন দেখলো তরীর হাতে ব্রেসলেট-টা ঠিকমতই আছে। সৌহার্দ্য নিজের পকেটে হাত দিয়ে একবার দেখলো। না, তার পকেটে তো ব্রেসলেট-টা আছেই! তাহলে তরীর হাতে সেটা আবার গেল কীভাবে? তাহলে কি এটা অন্য কারো? নাকি তরীর-ই দুটো ব্রেসলেট ছিল, যার একটা হারিয়ে যাওয়ায় আরেকটা সে পরেছে যেন সৌহার্দ্য তাকে সন্দেহ করতে না পারে? অদ্ভুত গোলকধাঁধায় ফেঁ*সে গেছে সৌহার্দ্য। এটা থেকে হওয়া অসাধ্য না হলেও দুঃসাধ্য ব্যাপার বটেই!

৩২.
তরী আজ অনেকটা খুশী মনেই পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে এলো। জাহাঙ্গীরনগরে এই নিয়ে দুটো ইউনিটে পরীক্ষা দিলো সে। এই দুটো ইউনিটের জন্যই সে ফর্ম তুলেছিল। কালকের পরীক্ষাটা তেমন ভালো না হলেও আজকেরটা কালকের তুলনায় ভালোই হয়েছে।

তরীকে হাসিমুখে বের হতে দেখে সৌহার্দ্য ঠোঁট প্রসারিত করে হাসলো। তরীর মাথায় হাত রেখে বললো, “পরীক্ষা ভালো হয়েছে?”

তরী মাথা নাড়িয়ে বোঝালো, “হ্যাঁ, ভালো হয়েছে।”

তরী ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই অদূরে মধুকে দেখতে পেল। মধু এখানে কেন এসেছে? তারমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মধু পরীক্ষা দিয়েছে। তরী ভীষণ খুশি হলো ভেবে।

সৌহার্দ্য তরীর দিকে তেমন খেয়াল না করে প্রহরকে ফোন দেওয়ার জন্য গাড়ির পেছনের দিকটায় এগুতেই দেখলো, অর্ণব গাড়ি থেকে নামছে। এই ছেলে নিশ্চয়ই তরীর সাথে দেখা করার জন্যই এখানে এসেছে। ভেবেই সৌহার্দ্যের প্রচন্ড বিরক্ত লাগলো। তরী মধুর দিকে পা বাড়াবে এমন সময় হুট করে সৌহার্দ্য এসে ওকে ঠেলে গাড়িতে ঢুকিয়ে দিলো। নিজে গাড়িতে উঠে বললো,

-“খাবার কিনে রেখেছি আমি তোমার জন্য। এখন এখানে অহেতুক সময় নষ্ট না করে চলো তোমায় বাসায় পৌঁছে দেই। আমার হসপিটালে এমারজেন্সি আছে।”

সৌহার্দ্যের তাড়া আছে দেখে তরী আর কিছু বললো না। মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো শুধু।

সৌহার্দ্য তরীকে বাসার সামনে নামিয়ে আবার গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেল। সেই ডুপ্লেক্স বাড়িটায় আজ সে একাই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেখানে আজাদ দারোয়ান হিসেবে কাজ করতো। সিন্দুকের চাবিটা নিয়ে এতোদিন ঘুরলেও অবশেষে এই রহস্য উদঘাটনের জন্য সবটা জানা ছাড়া আর কোনো পথ পেল না সে।

গন্তব্যে পৌঁছাতে পৌঁছাতে বিকেল হয়ে গেল। সৌহার্দ্য বাড়িটার গেইটের কাছাকাছি যেতেই নতুন দারোয়ানকে দেখতে পেল। সৌহার্দ্য বললো, “আচ্ছা, এই বাড়ির মালিকের সাথে আমি একটু দেখা করতে চাই।”

“আপনি কে?”

“এই বাড়ির পুরনো দারোয়ান যিনি কয়েকদিন আগে মারা গেছে, তার আত্নীয় আমি।”

“আচ্ছা, আসুন। ভেতরে আসুন!”

সৌহার্দ্য লোকটার সাথে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো। বাগান পেরিয়ে যেতে যেতে নতুন দারোয়ান সৌহার্দ্যকে বললো, “বাড়ির মেইন ডোরের ভেতরে তো প্রবেশ করা যাবে না! আমি বরং আপনাকে পুরনো দারোয়ানের বউয়ের সাথে দেখা করিয়ে দেই। উনি এখন এখানেই আছেন।”

সৌহার্দ্য হাঁটা থামিয়ে দিলো। ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো, “কেন? এই বাড়ির মালিক কোথায়? তার সাথে দেখা করা যাবে না?”

“ম্যাডাম তো এখন বাসায় নাই! আজকে না-ও আসতে পারে!”

“ম্যাডাম? মানে এই বাড়িতে একটা মেয়ে থাকে! আর কেউ থাকে না?”

“না! এ বাড়িতে কেউ-ই থাকে না। ম্যাডাম মাঝে মাঝে আসেন। তাও খুব কম!”

সৌহার্দ্যের মনে সন্দেহ ক্রমশ ঘনীভূত হলো। কিন্তু এখন যেই কাজে এসেছে, সেই কাজটাই সেরে ফেলা উচিত আগে। তারপর এই বাড়ির মালিককে নিয়ে ভাবা যাবে।

আজাদের স্ত্রী সৌহার্দ্যকে দেখে প্রথমে চিনতে না পারলেও পরিচয় দেওয়ার পর ভীষণ খুশি হলো। সৌহার্দ্যের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার পর বললো, “কত বছর কেটে গেল! তোদের দেখি না আমি। আজ এতো বড় হয়ে গেছিস!”

“চাচার সাথে এতো বছর পর দেখা হলো। আবার হারিয়ে ফেললাম ওনাকে। আচ্ছা, আমি মূলত এই চাবিটার জন্য এসেছি। মৃত্যুর আগে চাচা এটা আমাকে দিয়েছিল৷ এটা নাকি কোন সিন্দুকের চাবি? তুমি কি কিছু জানো?”

আজাদের স্ত্রী চাবিটা দেখে বললো, “হ্যাঁ, এটা তো ঐ সিন্দুকের চাবি! এই সিন্দুকে তোর চাচা কিছু কাগজপত্র রেখেছিল। এর বেশি কিছু তো জানি না।”

সৌহার্দ্য সিন্দুকটার দিকে তাকালো। এগিয়ে গিয়ে চাবি দিয়ে সেটা খুলতেই ভেতরে শুধু কিছু কাগজ ও খাতাপত্র পেল। সৌহার্দ্য ওগুলো ঘেঁটে না দেখে পুরো সিন্দুকে যা যা পেল, সব কাগজ নিয়ে নিল একটা ব্যাগে। বললো, “আজ আমি আসি, চাচী। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। এমনি অনেক দূরের পথ।”

সৌহার্দ্যকে খেয়ে যাওয়ার জন্য জোর করলেও সৌহার্দ্য শুনলো না। তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিলো। অন্ধকার নেমে এসেছে। ফাঁকা রাস্তা পেরিয়ে শহরের কাছাকাছি চলে এসেছে সৌহার্দ্য। তার পাশ কে*টে কয়েকটা গাড়ি মাঝে মাঝে যাওয়া আসা করছে। সৌহার্দ্যের ফোন বেজে উঠতেই সে গাড়ির ব্রেক ক*ষে গাড়িটা থামাতে চাইলো। কিন্তু গাড়ির ব্রেক কাজ করছে না সেই মুহুর্তেই সে বুঝতে পারলো, তার গাড়ি ব্রেক ফেইল করেছে। সৌহার্দ্য অনেক চেষ্টা করেও গাড়ি থামাতে পারছে না। উপায় না পেয়ে সে চলন্ত গাড়িটা বামি ঘুরিয়ে একটা গাছের সাথে আঘাত করালো। সৌহার্দ্যের মাথাটা স্টিয়ারিং-এ লেগে কপাল ও কান বেয়ে গ*ল*গ*ল করে র*ক্ত*স্রোত বইতে লাগলো।

তরী ফোনে মধুর সাথে অনেকক্ষণ চ্যাটিং করলো। হঠাৎ অর্ণবের টেক্সট এলো, “কী রে? আজকে আমি তোর সাথে দেখা করতে গেলাম হলে! তোকে তো পেলাম না!”

তরী লিখলো, “ডক্টর সৌহার্দ্যের কাজ ছিল। তাই তাড়াতাড়ি ফিরে এসেছি।”

“ডক্টর সৌহার্দ্য? ওয়াও! এতো আদুরে ভঙ্গিতে ডাকিস?”

“মানে? এখানে আদুরের কী দেখলে?”

“নাহ্! কিছু না। ওনাকে অনেক ভালোবাসিস তুই, তাই না?”

তরী বিব্রত হলো। কী বলবে ভেবে না পেয়ে বললো, “তোমাকে আমি পরে নক করছি। এখন একটু ব্যস্ত আছি।”

অর্ণব নিজের রকিং চেয়ারে মাথা এলিয়ে দিয়ে মলিন হাসলো। আনমনে বললো, “তোকে আমি আজীবনের জন্য হারিয়ে ফেললাম, তরী! আজীবনের জন্য!”

তরীকে ফোনে মগ্ন থাকতে দেখে দাদী বললেন, “তোরে না বলসি? আমার নাতি আসার আগে আগে ওর যত্নআত্তির সব ব্যবস্থা করে রাখবি? তোরে কি এখন আমি ঘাড় ধইরা শিখাইয়া দিবো কেমনে তুই আমার নাতির মনে জায়গা কইরা নিবি?”

তরী হকচকিয়ে গেল। দ্রুত হাত থেকে ফোন রেখে উঠে দাঁড়াতেই ওর ফোন বাজতে শুরু করলো। তরীকে কেউ কখনো কল করে না তেমন! তাই এমন সময়ে কল পেয়ে তরী কিছুটা অবাক হলো। দাদীও ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। তরী ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে প্রহরের গলার আওয়াজ ভেসে এলো,

“জানি কথা বলবেন না। কিন্তু আজ আপনার অভিনয়ে ইতি ঘটাবো আমি!”

তরী প্রচন্ড বিরক্ত হলো। এই ছেলেটা ওর পেছনে এমনভাবে পড়েছে যে, শেষ দেখা না পর্যন্ত ওকে ছাড়বেই না। তরী ফোন রাখতে যাবে, এমনসময় প্রহর বললো,

“ওয়েট! ফোন রাখার এতো তাড়া কিসের? সৌহার্দ্যের গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে। ও আপাতত ওর হসপিটালেই ভর্তি। এসে দেখা করে যান, মিসেস অরিত্রী সেহরীশ!”

-চলবে….

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ