তোমায় আমি দেখেছিলেম বলে পর্ব-১০

0
867

#তোমায় আমি দেখেছিলেম বলে
মৌলী আখন্দ
পর্ব-১০

লিকুইড নাইট্রোজেনের কোয়ালিটিতে কোনো ফাঁক পায়নি এলিনার টিম। ডিল ফাইনাল হয়েছে।
অবশেষে প্রোডাকশন কস্ট ঠিক রেখেই সময়মতই মার্কেটে আসতে যাচ্ছে তাদের মসলিন। একই সাথে আরিয়ান কেমিক্যালসের সাথে কম খরচে ডিলটা পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রমোশন হয়েছে এলিনার।
এখন থেকে তার পোস্ট সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, আলাদা রুম পাবে সে। কয়েকজনের সাথে কিউবিকলে বসতে হবে না।
আজকের রাতটা তাই সেলিব্রেট করছে তারা দুজন। রাতের খাবার বাইরে থেকে কিনে এনেছে আজকে।
স্লিভলেস ব্লাউজের সাথে স্বচ্ছ গা পিচ্ছিল টকটকে এক রঙা আগুন লাল শাড়ি পরেছে এলিনা। আগুনের স্ফুলিঙ্গের মতই দেখতে লাগছে ওকে।
বহুদিন ধরে কোনো স্পেশাল পুরস্কার দেওয়া হয় না রাইয়ানকে। আসলেই একটা বিশেষ রাত উপহার পাওনা হয়েছে ওর।
স্বচ্ছ শাড়ির ফাঁকে উঁকি দিতে থাকা নাভিতে অতল সমুদ্রের আমন্ত্রণ। রাইয়ান ওর দিকে তাকাল চকচকে চোখে।
বহু বহু দিনের অভ্যাসে এই নারীর শরীরের প্রতিটি খাঁজ ভাঁজ তার মুখস্থ। তবুও এখনো নেশা জাগায়, প্রথম দিনের মতই।
অথচ আর কোনো মেয়ের জন্য এরকম অনুভূতি হয় না। হয়ত এটাকেই ভালোবাসা বলে।
পরনের টি শার্ট খুলে ফেলল রাইয়ান। হাসিমুখে ওর দিকে এগিয়ে গেল এলিনা।
এলিনাকে সরিয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়াল রাইয়ান। অবাক হলো এলিনা। “কী ব্যাপার?’
“কি যে দারুণ জিনিস এনেছি তোমার জন্য সখী, ইউ জাস্ট ক্যান্ট ইমাজিন!”
“কী?”
ওদের ছোট্ট সংসারের জন্য কেনা ছোট্ট লাল টুকটুকে সাড়ে সাত সিএফটির ফ্রিজের ডালা খুলল রাইয়ান। হাসিমুখে বের করে আনল বোতলটা।
“শিভাস রিগ্যাল!”
“ইয়েস! অরিজিনাল! ম্যানেজ করেছি এক জায়গা থেকে। টু মেক দ্যা নাইট স্পেশাল!”
কিন্তু রাইয়ানের প্রত্যাশা অনুযায়ী ওর হাসিটা ছড়িয়ে পড়ল না এলিনার মুখেও। বরং ঠোঁটে লেগে থাকা ওর নিজস্ব হাসিটুকুও ধীরে ধীরে মুছে গেল।
এলিনার মধ্যে কোনো উচ্ছ্বাস না দেখতে পেয়ে রাইয়ান নামিয়ে রাখল বোতলটা। সিরিয়াস গলায় বলল, “কী হয়েছে, এলি? এনিথিং রঙ?”
“আই ক্যান্ট ড্রিংক, রাইয়ান! আমি এখন ড্রিংক করতে পারব না।“
“বাট হোয়াই? কী এমন হয়ে গেল আচমকা?”
“বিকজ…” চোখ নামিয়ে নিল এলিনা। “আয়াম এক্সপেক্টিং!”
“হোয়াট?”
“আমি সাইকেল মিস করেছি পনের দিন হয়ে গেল। স্ট্রিপ টেস্টে পজিটিভ এসেছে।“
“তুমি খুশি হওনি?”
নিজেকে তাড়াতাড়ি সামলে নিল রাইয়ান। “খুশি হব না কেন? নিশ্চয়ই হয়েছি!”
উৎকণ্ঠিত মুখে ওর দিকে এগিয়ে গেল এলিনা। দুই হাতে রাইয়ানের হাত চেপে ধরে বলল, “তাহলে হাসছ না কেন?”
“না মানে, এমন হুট করে খবরটা পেলাম…আমরা আরেকটু গুছিয়ে নিলে ভালো হতো না? আমরা দুজন তো এখনো প্রিপেয়ার্ড না! আম্মু আব্বুকেও এখনো বলা হয়নি যে আমরা বিয়ে করেছি কিংবা একসাথে থাকছি…”
“তোমার আম্মু আব্বুকে তুমি বলবে! আমার অফিসে আমি বলব। অফিসেও তো ট্রিট দিতে হবে!”
এলিনার খুশি দেখে রাইয়ানও হাসল। তবে কেমন যেন প্রাণহীন দেখাল হাসিটা।
তীক্ষ্ণ চোখে রাইয়ানকে লক্ষ্য করতে লাগল এলিনা।
চলবে,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে