Sunday, October 5, 2025







তোমায় ছোঁয়ার ইচ্ছে পর্ব-৩+৪

#তোমায়_ছোঁয়ার_ইচ্ছে
#পর্ব_৩
#সুমাইয়া মনি

বিধ্বস্ত শরীর নিয়ে রুমে ফিরলো ইসানা। দরজার নিকটে দাঁড়িয়ে ক্লান্তিতে পা যেন আগে বাড়াতে ইচ্ছে করছে না। হাত বাড়িয়ে কলিং বেল বাজানো কষ্টকর। দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে হাত বাড়িয়ে কোনমতে কলিং বেল বাজাতে সক্ষম হয়। দরজা খোলার সময়টাতে পিঠের সঙ্গে মাথাও ঠেকিয়ে রাখে দেয়ালে। এক মিনিট অতিবাহিত হতেই সোহানা দরজা খুলে। ইসানাকে ক্লান্তিকর চোখেমুখে দেখে বিস্ময় কণ্ঠে বলে,
‘তোর এই অবস্থা কেন? তাড়াতাড়ি ভেতরে আয়।’ মুখ থেকে কোনো বার্তা না চালিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে ইসানা। কয়েক পা এগিয়ে সঙ্গে সঙ্গে সোফায় আধশোয়া হয়ে ঢলে পড়ে। সোহানা বিনাবাক্যে রান্না ঘরে গিয়ে গ্লুকোজ গুলে দ্রুত ফিরে আসে। ইসানাকে খেতে দিয়ে পাশে এসে বসে। মৃদুস্বরে জিজ্ঞেস করে,
‘আজ বেশি পরিশ্রম হয়েছে ইসা?’
ইসানা অস্ফুট স্বরে উত্তর দিলো,
‘এটা তো হবারই ছিল।’
‘হঠাৎ করে কল কেটে দিলি কেন?’
‘স্যার ডেকেছিল।’
‘স্যার বলিস না। রাদ বল। ও তোর ছোট ইয়ার।’
‘ব্যাপার না। আজ প্রচুর ঘাটিয়েছে।’
‘তোকে দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। তোর কপালে কি সুখপাখিটা কখনো ধরা দিবে না রে?’
‘বহু আগে মা*রা গিয়েছে। গোসল করে আসি। তারপর বাকি জিনিস গুলো গুছাতে হবে।’
‘আমি গুছিয়ে রেখেছি। তুই কি সত্যি চলে যাবি?’ মুখ মলিন করে বলল সোহানা।
‘হ্যাঁ! তোকে এ ক’দিন জ্বা*লি*য়ে*ছি। আর জ্বা*লা*তে চাই না রে। তোর ও তো একটা ভবিষ্যত আছে।’
‘চুপ থাক! মাঝেমধ্যে আসবি না?’
‘তা আসবো।’ বলতে বলতে ওয়াশরুমের দিকে এগোয় ইসানা। দু বান্ধবী গল্প করতে করতে প্রায় দশটা বাজিয়ে দেয়। ইসানা তখনই বাড়ি থেকে বের হয়। রাদ যে তাড়াতাড়ি যেতে বলেছিল সেই বিষয়টি একদমই মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে তার। বাড়ি থেকে বের হবার পর রিকশার দেখা মিলছে না। যাও পাচ্ছে ভাড়া দ্বিগুণ চাইছে। ইসানা ব্যাগ হাতে হাঁটতে শুরু করে। মেইন রাস্তায় এসে রিকশা নিবে বলে ভাবে। হাতে কেবল পাঁচশো টাকা আছে। সেটাও সোহানা দিয়েছে। এ টাকা দিয়ে বেতন পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই মাসটা কোনমতে চলতে হবে। তাই এরা-দেড়া ভাড়া দিয়ে রিকশায় যাবে না।
পাঁচ মিনিট হাঁটার পর রিকশা আর পাচ্ছে না। যা দেখা যাচ্ছে সব টেক্সি । তাতে ইসানা যাবে না। দোকানপাট অনেকেই বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছে। শুধু এক-দুটি দোকান খোলা রয়েছে কেবল। আরেকটু পথ এগোয় ইসানা। হঠাৎ একটি হলুদ রঙের টেক্সি ইসানার সামনে এসে থামে। গাড়ির কাঁচ নামিয়ে একটি লোক ইসানার উদ্দেশ্য করে বল,
‘মেডাম কোথায় যাইবেন। আহেন নামায় দিয়া আহি।’
ইসানা লোকটিকে এক পলকে দেখে নিলো। হ্যাংলা-পাতলা মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি রয়েছে। ইসানা জবাব দিলো,
‘বনানী যাব, যাবেন?’
‘আহেন।’
‘ভাড়া কিন্তু পঞ্চাশ টাকা দিবো।’
‘আইচ্ছা।’
এত দ্রুত রাজি হওয়াতে ইসানা দেরি করে না। দ্রুত গাড়িতে ওঠে বসল। গাড়ি ছুঁটতে লাগলো। বিশ মিনিট চলার পর বনানীর কিছুটা কাছে আসার পূর্বে আরেকজন লোক এসে গাড়িতে ঠিক ইসানার সঙ্গে পিছনের সিটে বসল। ইসানা এ পাশে চেপে বসল। লোকটি সিগারেট ফুঁকছিল। ইসানার সমস্যা হচ্ছে এতে। তবুও কিছু বলল না। ইসানার কাছে এই ব্যক্তিকে দেখে সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না। সে চালাকি করে ব্যাগের চেইন খুলে ভেতরে এক হাত ঢুকিয়ে রাখে। হঠাৎ পিছনের লোকটি সিগারেট ফেলেই সামনের ব্যক্তির উদ্দেশ্যে চিল্লিয়ে বলল,
‘রুস্তম বাঁ-য়ে মোচড় মা*র।’ কথাটা শেষ করতেই ইসানাকে ধরতে আসতে যাবে এমতাবস্থায় ইসানা ব্যাগের ভেতর থেকে পেপার স্প্রে বের করে লোকটির চোখে নিক্ষেপ করল। লোকটি চেঁচিয়ে উঠে দু হাত দিয়ে চোখ ঢেকে ফেলল। সামনের লোকটি গাড়ি জোরে ব্রেক কষিয়ে ইসানাকে পিছনে ঝুঁকে ধরতে চাইলে তার চোখেও নিক্ষেপ করে স্প্রে। দু’জনে চিৎকার করে ছ*ট*ফ*ট করতে থাকে। ইসানা চটজলদি গাড়ি থেকে বেরিয়ে ব্যাগ রাস্তায় রেখে দু পায়ের জুতো খু*লে হাতে নেয়। তারপর গাড়ির দরজা খু*লে দু’জনকে কলার ধরে টেনে বের করে হাতের জুতো দিয়ে ইচ্ছেমতো পিটাতে থাকে। একে তো তারা চোখের য*ন্ত্র*ণা*য় কাবু। তার ওপর ইসানার জুতোর পি*টা*নি খে*য়ে নাস্তানাবুদ!
ইশানা ক্ষি*প্ত কণ্ঠে তাদের উদ্দেশ্যে বলছে,
‘ভেবেছিলি কি আমি অবলা নারী? সুযোগ নিতে চেয়েছিলি। আয় নে, নে না! নারীদের এতটাও অবলা-অসহায় মনে করিস না৷ তারা ক্ষেপে গেলে আ*গু*নে*র গোলাতে পরিনত হয়।’ আচ্ছামতো আরো কয়েক গা দিয়ে ব্যাগ থেকে পঞ্চাশ টাকার নোট টি ড্রাইভারের মুখের ওপর ছুঁড়ে ফেলে বলল,
‘নে তোর টাকা। ফ্রী-তে চলার অভ্যেস আমার নেই।’ বলেই দ্রুত বেগে এগিয়ে যাচ্ছে ইসানা। বাকিটুকু পথ সে হেঁটেই যেতে পারবে। ইসানা চলে যাওয়ার পরপরই রাস্তার অপর পাশে মুরাদের গাড়ি দেখা যায়। গাড়ির ড্রাইভিং সিটে ছিল মুরাদ, পাশে ছিল রাদ। ফাইল গুলো চেক করার দরুণ তার অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে লেট হয়। মুরাদও শেষ অব্দি তাকে সাহায্য করতে বাধ্য হয়। ড্রাইভারকে পাঠিয়ে দিয়ে মুরাদের গাড়িতে চড়ে তার বাড়িতে যাবার জন্য রওনা হয়। তাদের বাড়ি একদম পাশাপাশি। মাঝ রাস্তায় এসে প্রথম লোকটির চিৎকার শুনে মুরাদ গাড়ি ব্রেক কষে। তড়িঘড়ি করে ইসানাকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে চুপ করে তারা পর্যবেক্ষণ করে পুরো বিষয়টি। ইসানার সাহসীকতা দেখে বিস্ময়ে বিহ্বল তারা। বিষেশ করে রাদ! তাকে রাদ সহজ-সরলা স্বভাবের অবলা বাঙালী নারী মনে করেছিল। কিন্তু তার ধারণায় পরিবর্তন ঘটেছে এমন চমৎকৃত ঘটনা দেখে। ইসানার সাহসীকতার সদৃশ রাদ কিছুটা বিমুগ্ধ।
মুরাদ স্মিত হেসে বলল,
‘কী বুঝছি?’
‘ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টর!’
‘নিঃসন্দেহে সে একজন বাঘিনীর পরিচয় দিয়েছে।’
রাদ সেকেন্ড কয়েক চুপ থেকে মুরাদকে বলল,
‘পুলিশকে ইনফর্ম কর। এই কালপিট দু’টোকে গ্রেফতার করা উচিত।’
‘রাইট!’ বলেই মুরাদ পুলিশকে কল দিয়ে ঘটনাস্থলের এড্রেস জানায়। দু বন্ধু চলে আসে বাড়িতে। সকালে রেহানা আনসারী যাওয়ার পূর্বে ইসানাকে বাড়ির অপর চাবিটি দিয়ে যায়। তাই বাড়িতে প্রবেশ করতে তার অসুবিধা হয় না। রাদ এসেছে বুঝতে পেরে দরজা খুলে দেয় ইসানা। রাদ রাস্তার ঘটনাটি লুকায়িত রেখে গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
‘আপনাকে দ্রুত আসতে বলা হয়েছে। এখন ক’টা বাজে দেখেছেন?’
‘স্যরি স্যার। আসলে চলে যাচ্ছি দেখে সোহানা লেট করে যেতে বলেছিল।’
‘এত রাত করে এসেছেন বাইচান্স রাস্তায় যদি কোনো সমস্যা হতো, তার দায়ভার কে নিতো?’
ইসানা দৃষ্টি নত রেখে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। রাদ সরু চোখে তাকায়। ইসানা এখন নিজেকে যতোটা শান্তশিষ্ট উপস্থাপনা করছে সে মোটেও শান্তিপ্রিয় মেয়ে নয়। তার মধ্যে অ*গ্নি*শ*র্মা বিদ্যমান। রাদ স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল,
‘খাবার সার্ভ করুন।’ বলেই অগ্রসর হয় রুমের দিকে।
ইসানা খাবার সার্ভ করে। কিছুক্ষণ বাদে রাদ ফিরে। ইসানা দৃষ্টি নত রেখে দাঁড়ায়। রাদ খাবার খাওয়ার পর্যন্ত সেভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে। চলে যাওয়ার পর সব এঁটো থালাবাটি ধুয়ে মুছে গুছিয়ে রুমে ফিরে। কাল শুক্রবার ছিল। হয়তো তার অফিসে না যাওয়া হতে পারে। নরম বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। আগের কিছু স্মৃতি ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যায় ইসানা।
____
সুরভী খাতুন পুরনো একটি ছবির এলবামের ওপর হাত ভোলাচ্ছেন। সেখানে রয়েছে ইসানার মা, সে নিজে, আরো একটি অচেনা মেয়ে। এটি তার প্রিয় দু’জন বান্ধবীদের সঙ্গে তোলা বেশ পুরনো ছবি। শেষ স্মৃতি হিসাবে এটিই রয়েছে। সুরভী খাতুন ইসানার মামা’কে পছন্দ করে বিয়ে করেছিল। ইসানার জন্মের আগে বাবা মারা যায় ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে। ইসানাকে জন্ম দেওয়ার পর মৃত্যু হয় তার। রয়ে যায় শুধু ইসানা। একমাত্র মামা ইসানাকে অ*ভি*শ*প্ত বলে মনে করে। ছোট থেকে মামার অনাদরে বড়ো হয়েছে ইসানা। তবে সে ইসানাকে পরিপূর্ণ আদর দিয়েছে ঠিক তার সন্তানের মতো। স্বামীর কাশির শব্দ শুনে তিনি ফ্রেমটি ঢয়ারে রেখে দিলেন। লাইট অফ করে শু*তে এলেন। কিন্তু চোখের পাতায় ঘুমের দেখা নেই। তার ভাবনা জুড়ে রয়েছে ইশানা। অভাগিনী যেখানে আছে ভালো থাকে, তৎক্ষনাৎ দোয়া করেন তিনি।
_
‘বে*র হ বাড়ি থেকে, বে*র হ কু*ত্তা।’ দুরদুর করে বাদামি রঙের কু*কু*রে*র ছানাটিকে বের করে দিলো ইসানা।
দরজা লাগিয়ে পিছনে ফিরতেই রাদের সঙ্গে চোখাচোখি হয়। সে চোখ নামিয়ে নেয়। রাদ গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,
‘টাইসনকে কোথাও দেখেছেন?’
ইসানা একবার তাকিয়ে চোখ পুনরায় সরিয়ে মৃদু স্বরে জবাব দিলো,
‘মানে কু*কু*রে*র বা*চ্চা?’
‘ওর নাম টাইসন। ওই নামেই ওঁকে ডাকবেন।’ বিমর্ষ কণ্ঠে বলল।
‘তবুও তো কু*ত্তা*র বা*চ্চা*ই। নাম রাখলেই তো আর জাত পরিবর্তন হয় না।’ বিড়বিড় করে বলল ইসানা।
‘কিছু জিজ্ঞেস করেছিলাম।’
ইসানা নিরুত্তর থেকে দরজা খুলে। টাইসন বাহির থেকে রাদকে দেখে দৌড়ে ভেতরে আসে। টাইসনকে রাদ কোলে উঠিয়ে এক গাদা আদর-আদিখ্যেতা দেখানো শুরু করে। পাশে দাঁড়িয়ে ইসানা আঁড়চোখে দেখে নেয়। শেষ হলে ইসানার উদ্দেশ্যে করে বলে,
‘আমার সঙ্গে টাইসনের যত্ন নিবেন আপনি।’
‘ঠে*কা!’ মনে মনে বলল। তবে মনের কথা বাহিরে প্রকাশ না করে হ্যাঁ সম্মতি জানায়। রাদ টাইসনকে নিয়ে রুমের দিকে এগোয়। বড়ো লোক দের একটাই স*ম*স্যা। কু*কু*র নয়তো বিড়াল পালতেই হবে। নয়তো জাত-পাত থাকবে না। বিড়বিড় করতে করতে ইসানা রান্না ঘরের দিকে অগ্রসর হয়।
.
.
.
.
#চলবে?

#তোমায়_ছোঁয়ার_ইচ্ছে
#পর্ব_৪
#সুমাইয়া মনি

‘কুত..নাহ! টাইসন, এই টাইসন। কোথায় তুমি। আরে বা*ল*ডা*য় কই গেলো? ডাকতে ডাকতে হয়রান আমি।’ টাইসনের খাবার হাতে বিড়বিড় করছে ইসানা। তার ধারণা সঠিক হয়েছে। ইসানাকে আজ অফিসে যেতে হয়নি। রাদ সাফ মানা করে দিয়েছে। ঘরের সব কাজ তাকে আজ করতে হয়েছে। ফার্নিচার মোছা থেকে শুরু করে বাদবাকি যাবতীয় সব কাজ করেছে ইসানা। তার মধ্যে রান্নাও করেছে। বাকি সার্ভেন্টদের ছুটি দিয়েছে রাদ এক সপ্তাহের।
এখন ঘড়িতে দুইটা ছুঁই ছুঁই। রাদ দুপুরে আসবে কি-না বলে যায় নি। টাইসনের খাবার হাতে সোফায় বসে। তখনই বিদঘুটে আওয়াজ শোনা যায় ফোনের। আপাতত ইসানার কাছে বিদঘুটেই মনে হচ্ছে। টাইসনের খাবার ফ্লোরে রেখে ফোন রিসিভ করতে রুমে আসে। সোহানা কল দিয়েছে। কিছুটা স্বস্তি নিয়ে কথা বলে ইসানা।
‘বল দোস্ত?’
‘কী করছিস?’
‘কু*ত্তা ডাকি।’
‘কু*ত্তা?’ বিস্ময়কর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল।
‘হ্যাঁ! তার নাম নাকি আবার টাইসন।’ ব্যাঙ্গ করে বলল।
‘টাইসন?’
‘হুম, রাদের টাইসন।’
‘মানে রাদ কু*ত্তা পালে।’
‘আরে হ।’
‘তোকে তার দায়িত্ব দিয়েছে?’
‘হ রে বোইন।’
সোহানা হেসে ফেলে। ইসানা মেকি রাগ নিয়ে বলল,
‘হাসিস না। এমনিতেই প্রচুর কাজ করায়। তার ওপর টাইসনের দায়িত্ব দিয়েছে।’
‘তুই তো শেষ ইসা।’
‘জানা আছে।’
‘আচ্ছা শোন। বিকেলে ফুট গার্ডেনে আসতে পারবি?’
‘কেন? কাজ ছিল নাকি?’
‘আমি চাকরি পেয়েছি।’
‘কংগ্রেস! পার্টি দিবি তাই তো।’
‘হুম! তুই ছাড়া আছেই বা কে আমার খুশি মুহূর্ত উৎযাপন করার।’
‘সেইম!’ দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল ইসানা।
‘তাহলে চলে আসিস সাতটায়।’
‘এখনো শিওর না। রাদকে বলি। দেখি সে কি বলে।’
‘আচ্ছা। রাখছি।’
‘হুম।’
উভয়ে ফোন রেখে দেয়। ইসানা টাইসনকে খুঁজতে বের হয়। বাহিরে এসে গলা ফাটিয়ে চিল্লিয়ে ডাকছে। প্রতিটা রুম চেক করেছে। শুধু বাকি আছে রাদের রুম। সেই রুমে যাওয়ার সাহস তার হচ্ছে না। কারণ সকালে কতগুলো রুলস দিয়েছে এ বাড়িতে থাকার। রুল ভঙ্গ করলে ফাইন দিতে হবে তিন হাজার টাকা করে। আপাতত সে ফকির। তাই সেই রুমে যাবে কি, যাবে না ভাবছে। টাইসনকে ঠিকমতো তিন বেলা খাবার খাওয়াতে হবে। এটাও রুলসের এক অংশ। দু’টি মিলিয়ে ইসানা দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে যায়। তবে সে যাওয়ার জন্য উদ্যত হয়। সিটকাটি অল্প খুলে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। খাটের এক কোণায় টাইসনের আরামদায়ক বেড রাখা ছিল। সেটার ওপর আয়েশ করে ঘুমোচ্ছে সে। ইসানার চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। সে বাহিরে গলা ফাটিয়ে ডাকছে। ভেতরে সে আরাম করে ঘুমোচ্ছে। এক প্রকার চিল্লিয়ে বলল,
‘টাইসনের বা*চ্চা এদিকে আয়। তোকে কতক্ষণ ধরে ডাকতেছি। বয়রা? শুনিস না।’
টাইসন ইসানার খেঁকানি শুনে মুখ তুলে একবার তাকিয়ে পুনরায় সেভাবেই শুয়ে রইলো। ইসানার মুখ কিছুটা হা হয়ে গেল। কু*কু*র*দেরও যে এত ভাব থাকে আজ সে প্রথম দেখলো। ইসানা গমগম গলায় ফের বলল,
‘তুই আসবি নাকি আমি ভেতরে আসবো?’ চাইলেও সে ভেতরে যেতে পারবে না। তবুও বলে দেখলো, যদি টাইসন নিজে থেকে আসে এই ভেবে। কিন্তু এবারও টাইসনের ভাবমূর্তি পরিবর্তন হলো না। সেভাবেই শুয়ে আছে। রাগে ইসানার দাঁতমুখ খিঁচে আসে। পিছনে একবার তাকিয়ে চট করে ভেতরের দিকে পা চালায়। টাইসনের ঘাড় ধরে উঁচু করে খেঁকিয়ে বলল,
‘অলস কু*ত্তা, বয়রা কু*ত্তা। ভাব দেখাস। ফাটাইয়া থুক্কু পিটাইয়া খেদাইয়া দিবো বাড়ি থেকে। কয়বার ডাকছি তোকে। গিলে আমাকে উদ্ধার কর। নয়তো…’
বাকিটা বলার পূর্বে রাদের গলা খাঁকারি শুনে দরজার দিকে তাকায়। ইসানার চোখ কোটায় থেকে বেরিয়ে আসার জোগাড়। টাইসন রাদকে থেকে ইসানার হাত থেকে ছুঁটে পালিয়ে ওর পায়ের কাছে আসে। কোলে তুলে নিয়ে ইসানাকে ক্ষোভিত চোখে দেখতে থাকে। ইসানা দৃষ্টি নত রেখে কাচুমাচু ভঙ্গিতে বলল,
‘আমি টাইসনকে খাবার খাওয়ার জন্য এই রুমে এসেছিলাম।’
‘দেখে মনে হচ্ছে না সেটি।’ গম্ভীর কণ্ঠে বলল রাদ।
‘সত্যি বলছি স্যার।’
‘তাহলে ওঁকে বকছিলেন কেন? আর কি যেন বলেছিলেন..ওহ! বাড়ি থেকে বের করে দিবেন।’
‘স্যরি স্যার।’
‘নট এক্সেপ্টেট! আপনি রুলস অমান্য করেছেন। প্রথমত, আমার রুমে এসেছেন। দ্বিতীয়, টাইসনকে কু*কু*র বলেছেন। তৃতীয় ওর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। নয় হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে।’
ইসানা থতমত চেহারায় তাকায়। ত্বরান্বিত হয়ে বলল,
‘আমি সত্যি ওঁকে নিতে আপনার রুমে এসেছিলাম।’
‘ওকে ফাইন্! ছয় হাজার দিবেন।’ দু কাঁধ উঁচু করে বলল রাদ।
চোখ কুঁচকে মাথা নত করে ফেলে ইসানা। তারপর কোমল স্বরে বলল,
‘এবাবের মতো…’
‘নো ওয়ে!’ বাকি অংশটুকু শেষ করার পূর্বেই রাদ ভারী কণ্ঠে শুধায়।
‘আমার কাছে এত টাকা নেই।’
‘আপনার স্যালারি থেকে ছয় হাজার টাকা বাদ পড়বে।’
কোনো উপায়ন্তর নেই দেখে ইসানা নিরাশ হয়। সেভাবেই দাঁড়িয়ে থেকে চলে যাওয়ার ধরলে রাদ বলে,
‘আমার এবং টাইসনের খাবার সার্ভ করুন।’
‘জি।’ উত্তর দিয়ে ইসানা প্রস্থান করল।
বাহিরে এসে কপালে হাত বুলাতে থাকে। কিছুটা অবসন্ন দেখায় তাকে। সামনের মাসের স্যালারিটা তার ভীষণ প্রয়োজন ছিল। তবে সে ভেবে রাখে আগে থেকে এমন কোনো কাজ করবে না যাতে করে তার ফাইন দিতে হয়। সে দ্রুত খাবার টেবিলে রাখতে আরম্ভ করে। কিছুক্ষণ বাদে রাদ টাইসনকে কোলে নিয়ে বের হয়। খাবার খেতে বসে টাইসনকে সঙ্গে নিয়ে। টাইসন খাবার খাচ্ছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। ইসানা দেখে রাগে ফুঁসছে। পারছে না শুধু কিছু বলতে, নয়তো লাথি দিয়ে বের করে দিতো। নিজেকে ভেতরে ভেতরে শান্ত রাখে।
রাদের খাওয়া শেষ হবার পর চলে যাওয়ার সময় ইসানা বলল,
‘স্যার আমার সন্ধ্যার সময় একটু ছুটি লাগবে।’
‘কেন?’
‘সোহানার সঙ্গে দেখা করতে যাব।’
রাদের কপালে দু’টি চিকন ভাঁজ দেখা যায়। কালকে তার বাড়ি থেকে এসেছে। সোহানার জন্যই কাল এক্সিডেন্ট হতে হতে রক্ষা পেয়েছে। এসব ভেবে সেকেন্ড কয়েক পর জবাব দিলো,
‘যাবার প্রয়োজন নেই।’
‘স্যার..’
‘সেট-আপ!’ বলে রুমে এসে মুখের ওপর দরজা লাগিয়ে দেয় রাদ। ক্রোধান্বিত চোখে তাকায় রাদের দরজার পানে। তারপর সব কিছু গুছিয়ে রাগ নিয়ে খেতে বসে।
.
সন্ধ্যার সময়..

আকাশের রং এখন ডিমের কুসুমের ন্যায় রূপ ধারণ করেছে। কিছুক্ষণ বাদে চারদিকে আঁধার নেমে আসে। আকাশে ভেসে উঠে হাজারো তাঁরার মেলা। দু’দিন বৃষ্টি বর্ষনের ফলে শীতের রেশ চলে এসেছে। বাহিরে হালকা শীত শীত অনুভব হচ্ছে। ইসানা মাগরিবের নামাজ পড়ে রাদকে কফি বানিয়ে দিয়ে বেলকনিতে আসে। তার মন প্রচণ্ডভাবে খারাপ। সোহানার বলা কথাটি বার বার মনে পড়ছে। ঢাকায় সে ব্যতীত আপন বলতে তেমন কেউ নেই। সোহানার এমন খুশির মুহূর্তে পাশে থাকতে পারবে না ভেবে খারাপ লাগছে। ছোট্ট আবদারটুকু রাখা হলো না। সোহানার কল আসে। ইসানার মন আরো খারাপ হয়ে যায়। কি করবে উপায়ন্তর না পেয়ে সে ভেবেই নেয় সোহানার সঙ্গে দেখা করতে যাবে। তবে সেটা রাদের আড়ালে রাতের অন্ধকারে। ফোন বন্ধ করে রাখে ইসানা।
অন্যপ্রান্তে সোহানা রেস্টুরেন্টে এসে অপেক্ষা করছে। ইসানাকে কল দিতে গিয়ে ফোন সুইচড অফ পাচ্ছে। মন খারাপ হয়ে যায় তার। সঙ্গে রাগও হয় কিছুটা। এক ঘন্টা অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে আসে সোহানা। তখনো কল দিয়ে ফোন অফ পেয়েছে সে। পথিমধ্যে আনমনা হয়ে ফোনের স্ক্রিনের দিকে নজর তাক করে হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতে নিলে কোনমতে সামলে নেয়। বিরক্ত বোধ নিয়ে ঘুরে তাকিয়ে দেখে একটি লোক হাঁটু ভে ঙে নিচে বসে কিছু একটা করছে। সোহানার মনমেজাজ এমনিতেই খারাপ ছিল। তাই সে চুপ থাকতে পারে না। কাঠিন্য স্বরে লোকটির উদ্দেশ্যে বলল,
‘রাস্তার মাঝখানে বসে কি যাত্রা দেখছেন?’
সোহানার কণ্ঠের স্বর শুনে উঠে দাঁড়িয়ে ঘুরে তাকায় মুরাদ। কানের ব্লুটুথ খুলে পকেটে রেখে স্বাভাবিক স্বরে বলল,
‘আমাকে বলছেন মিস?’
সোহানা চোখ বন্ধ করে বিরক্ত প্রকাশ করে বলল,
‘হ্যাঁ!’
‘কী বলছেন মিস?’
‘নিচে বসে কী যাত্রা দেখছেন?’
‘এখানে বসে কী যাত্রা দেখা সম্ভব?’ মুরাদ নিজেই প্রশ্ন করে বসল সোহানাকে।
সোহানা বিরক্ত নিয়ে গমগম গলায় ধমক দিয়ে আওড়াল,
‘চুপ করুন! একটুর জন্য আপনার ওপরে পড়া থেকে রক্ষা পেয়েছি।’
‘পড়ে তো যাননি মিস?’ বিনয়ী স্বরে জিজ্ঞেস করল মুরাদ।
‘নাহ!’
‘আমি আমার কেডসের ফিতা বাঁধছিলাম। আই এম স্যরি মিস।’
‘রাস্তার পাশে বসে বাঁধলে কি বেশি অসুবিধা হতো?’
‘আমি বুঝতে পারিনি আপনি অন্ধের মতো হেঁটে আমার গায়ের ওপর পড়তে যাবেন মিস।’ স্মিত হেসে বলল মুরাদ। চেহারায় তার দুষ্টু হাসির ছাপ।
‘অন্ধ বলছেন কাকে। একে তো ভুল করেছেন, তার ওপর তর্ক করছেন।’
‘ভুলটি কি আপনার নয় মিস?’
‘নাহ! আমি ভুল করিনি।’
‘চমৎকার মিথ্যা কথা বলতে পারেন আপনি।’
‘আমি কি মিথ্যা বললাম।’ রেগেমেগে বলল।
‘আপনি দূর থেকে ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে হেঁটে আসছিলেন। এটা কি সত্যি নয় মিস।’
সোহানা বুঝতে পারে বিষয়টি সত্যি। ইসানাকে কল দেওয়ার ফেসাদে এমনটা হয়েছে। আর সেটা মুরাদও দূর থেকে লক্ষ্য করেছে। তবে সে দমবে না। দোষ স্বীকার করতে নারাজ। বলল,
‘একদম না।’
‘মিথ্যে বলা মেয়েদের কি স্বভাব মিস?’
‘জানি না।’ ঝাড়ি দিয়ে বলে হাঁটতে নিলে আচমকা মুরাদ হাত ধরে আঁটকে দেয়। সোহানা চমকিত চোখেমুখে মুখ সামনে তাক করে রেখেছে। একটুর জন্য মুখ থুতড়ে যায় নি খাম্বার সংঘর্ষে। মুরাদ বাঁচিয়ে নিয়েছে বলে রক্ষে হয়েছে। লজ্জায় মুখ ফিরাতে পারছে তার দিকে। মুরাদকে বিষয়টি বুঝতে দিতে চায় না সে। তার হাত থেকে হাত সরিয়ে নাকমুখ কুঁচকিয়ে বলল,
‘আমি দেখেছি খাম্বাটি। হাত না ধরলেও হতো।’
মুরাদ নজর সরিয়ে নিচের ঠোঁট কামড়ে হেসে ফেলে। সে জানে এটি তার মিথ্যা বয়ান। মেয়েরা বুঝি এমনই হয়, হেরে যাবে তবুও হার মানতে প্রস্তুত নয়! সোহানা মুরাদের হাসি মাখা মুখশ্রী দেখে দ্রুত পায়ে প্রস্থান করতে চাইলে এবার আর শেষ রক্ষা হলো না। ইটের টুকরোর সঙ্গে বাঁ পা লেগে ধপাস করে কাত হয়ে পড়ে যায়। মুরাদ সহ কিছু লোকদের নজরে দৃশ্যটি পড়েছে। তারা সোহানার অসহায়ত্ব দুর্দিনে দাঁত বের করে হাসছে। রাগে-দুঃখে সোহানার কাঁদতে ইচ্ছে করছে। মুরাদ চটপট পায়ে এগিয়ে আসতে আসতে বলল,
‘আমি আপনাকে উঠতে সাহায্য করব মিস?’
সোহানা ‘দরকার নেই’ বাক্যটি ছুঁড়ে দিয়ে হন্তদন্ত হয়ে উঠে এক প্রকার দৌড়িয়ে জায়গা প্রস্থান করল। মুরাদের ঠোঁটের হাসি এবার আরো চওড়া হয়ে এলো। টোল পড়া গাল দুটো তার শোভনীয় ভাব ফুটে উঠেছে সোহানার কার্যক্রম দেখে।
.
.
.
.
#চলবে?

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ