Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তোমায় ছোঁয়ার ইচ্ছেতোমায় ছোঁয়ার ইচ্ছে পর্ব-২৭+২৮

তোমায় ছোঁয়ার ইচ্ছে পর্ব-২৭+২৮

#তোমায়_ছোঁয়ার_ইচ্ছে
#পর্ব_২৭
#সুমাইয়া_মনি

সেন্টারের পরিবেশ থমথমে সৃষ্টি হয়েছে। কিছুক্ষণ আগে সিমাকে বিদায় জানিয়েছে সকলে। মেয়েকে বিধায় জানানোর সময় আবেগে কেঁদে ফেললেন সুরভী খাতুন ও লিয়াকত আলী। মানিকের চোখেও জল জমেছিল। ইসানা তাদেকে সান্ত্বনা দেওয়ার বশে নিজের চোখের জলকে লুকায়িত রেখেছে। সিমার বিদায়ের সমকালীন কিছু আত্মীদেরও বিদায় হয়। রয়ে যায় কিছু কাছের আত্মীয় স্বজনরা। মুরাদ রেহানা আনসারীকে তার ছেলের দুঃসাহসের কথা জানায়। তিনি ছেলের ওপর ক্ষিপ্ত। এবং তৎক্ষনাৎ বিষয়টি সুরভী খাতুন ও তার স্বামী লিয়াকত আলীকে জানান। এক কান দু কান হতে হতে খবর ছড়িয়ে পড়ে সবার কাছে। ব্লাকমেইল করিয়ে ইসানার বিয়ে হয়েছে কানাখোষা আরম্ভ হয়। সঙ্গে ছেলে ওর থেকে বয়সে বড়ো এই বিষয়টি তো আছেই!
ইসানা সেন্টার ত্যাগ করে। কেননা তার দ্বারা এসব শোনা বড্ড পীড়াদায়ক! আগে থেকেই মানুষের কম খোঁটা শুনেনি। এখন আবার নতুন করে শুনতে হবে। রাদ দৃষ্টি নত রেখে শক্ত আদলে দাঁড়িয়ে আছে। থমথমে পরিবেশকে উপেক্ষা করে লিয়াকত আলী বললেন,
‘আমরা এই বিয়েতে আপত্তি করতাম না। কিন্তু রাদ যেটা করেছে ইসানা সহজে মেনে নিবে নাকি জানি না।’
‘এ ঘটনা ছাড়াও আপনার ভাগ্নি আমাকে সহজে মেনে নিতো না। তাই বাধ্য হয়ে আমাকে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।’ চোয়াল শক্ত করে বলল রাদ।
রেহানা আনসারী গমগম আওয়াজে ছেলেকে বললেন,
‘চুপ করো। তোমার সাফাই শুনতে চাইনি। আমার তোমার রিলেশনে কোনো আপত্তি ছিল না জেনেও, এমন বোকার মতো কাজ তোমার দ্বারা আশা করিনি আমি।’
‘বোকামি করার জন্য স্যরি মামনি। তবে, আমার কাছে যেটা ভালো মনে হয়েছে আমি সেটাই করেছি।’ তেজি কণ্ঠে বলল।
‘মুরাদ ওঁকে এখান থেকে চলে যেতে বলো।’ কাঠ কাঠ কন্ঠে বললেন।
রাদ মায়ের কথা শোনা মাত্রই প্রস্থান করল। রয়ে গেলো শুধু তারা। সুরভী খাতুন মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখন নিজের মেয়ের জন্য নয়। বরং বাবা-মা হারানো এতিম ইসানার জন্য মন পুঁড়ছে। ইসানাকে যতটুকু চিনে, একবার মনে দাগ লাগলে সেটা কখনোই তাকে সুখ দেয় না। বিষে বিষিয়ে দেয়!
রেহানা আনসারী সুরভী খাতুনের নিকট এগিয়ে গিয়ে বলল,
‘মাফ করিস সুরভী। আমার ছেলে এমনটা করবে আমি ঘুনাক্ষরেও জানতাম না।’
তিনি চোখ তুলে তার ছোট বেলার বান্ধবী রেহানা আনসারীর দিকে তাকায়। আহত কণ্ঠে বলে,
‘তোর ছেলে যেটা করেছে ওর দিক থেকে ঠিক হলেও, ইসানার দিক থেকে ঘোর অন্যায়। আমি জানি ইসানা রাদকে কক্ষণো মেনে নিতো না। কিন্তু এখন? জানি না ইসানার কি করবে? কি চলছে ওর মনে।’
‘আমি ইসানাকে বুঝাবো। একটা সুযোগ তো পেতে পারি।’
সুরভী চোখের পলক ফেলে মাথা মৃদু ঝাঁকাল। হালকা হাসলেন রেহানা। তিনি আশ্বাস দিলেন সব ঠিক হয়ে যাবে। দু’জনকে পুনরায় বিয়ে দিবে।
.
বিছানার ওপর হাঁটু ভাজ করে বসে আছে ইসানা। চোখের কাজল অতিরিক্ত কান্নার ফলে লেপ্টে গেছে। খোঁপা করা চুলগুলো এলোমেলো হয়ে পিঠ ছুঁয়েছে। ওড়না পড়ে আছে ফ্লোরে। বাঁধভাঙা কান্না থামছে না। বাবা-মায়ের কথা, প্রতিটা কষ্টের কথা অনুভব করে কাঁদছে। বুকের মধ্যে একটাই ভ’য় ধীরেধীরে জাগ্রত হচ্ছে, সমাজ কী বলবে? কীভাবে মেনে নিবে এ সম্পর্ক?
নিরব পায়ে এগিয়ে আসলেন রেহানা। ইসানাকে অনেক অজানা কথা বলার আছে তার। যা আজ বলবেন তিনি। সেসময় আজ এসেছে। তিনি পাশে বসে মাথায় হাত রাখলেন। ইসানা চোখ তুলে তাকায়। রেহানা আনসারীকে দেখে ওড়না খুঁজতে ব্যস্ততা দেখায়। তিনি বাঁধা দিয়ে বলল,
‘খুঁজতে হবে না। আমি তো আর পরপুরুষ নই।’
ইসানা ফুঁপানো থামিয়ে হাঁটু বুকের কাছে রেখে বসল। রেহানা তার ফোনের মধ্যে একটি ছবি বের করে ইসানাকে দেখালো।
‘এই ছবিটি নিশ্চয় তুমি চিনো?’
ইসানা চোখ মুছে ফোনটি হাতে নিয়ে পর্যবেক্ষণ করল। তারপর উৎকণ্ঠে শুধালো,
‘হ্যাঁ! এই ছবিটি আপনার কাছে কেন?’
রেহানা ইসানার মুখোমুখি বসে মৃদু হেসে বলল,
‘আমার এবং আমার বান্ধবীদের ছবি আমার কাছে থাকবে না, এটা হয় নাকি।’
কপালে চিকন ভাজ পড়লো ইসানার। সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে মুখ খোলার আগেই রেহানা বলল,
‘প্রথমটি তোমার আম্মু। দ্বিতীয়টি তোমার মামি। তৃতীয় জন আমি। মিলিয়ে দেখো আমার যুবতী বয়সী ছবির সঙ্গে আমাকে।’
ইসানা কপাল কুঁচকে ফোনের পানে পলক ফেলে তৎক্ষনাৎ রেহানার পানে তাকায়। চেহারায় অমায়িক মিল রয়েছে। এটা যে তিনি সেটা নিশ্চিত! ইসানা জিজ্ঞেস করল,
‘আপনি আমার আম্মু ও মামির বান্ধবী ছিলেন?’
‘ছিলাম না। এখনো আছি। হয়তো তোমার আম্মু আমার সঙ্গে নেই। কিন্তু ও আমার প্রিয় বান্ধবী ছিল এবং চিরজীবন থাকবে।’
ইসানা থতমত খেলো। ছোট থেকে তার নাম জানতো। কিন্তু ঘুনাক্ষরেও জানত না এই রেহানা তার মায়ের প্রিয় বান্ধবী ছিল। জীবন যুদ্ধে, ডিপ্রেশনে মাথা থেকে এই বিষয়টি বেরিয়ে গিয়েছে। খেয়ালই করেনি সে তার অতি কাছের কেউ। রেহানা ইসানাকে নিরুত্তর দেখে বলল,
‘ছোট বেলায় আমাদের তিন বান্ধবীর একটা ইচ্ছে ছিল। আমাদের যদি ছেলেমেয়ে হয়, তাহলে তাদের একে অপরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করব। কিন্তু দিন শেষে সেটা হয়ে ওঠেনি। স্বামী মারা যাওয়ার পর তার এতবড় বিজনেস আমাকে সামলাতে হয়। ব্যস্ততায়, পরিশ্রমে দিন কাঁটছিল আমার। এক সময় সুরভীর মাধ্যমে জানতে পারি তোমার বাবা-মা দু’জনই পৃথিবীতে নেই। আফসোস হয় খুব। এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে তোমাদের খোঁজখবরও নিতে পারিনি আমি। যখন জেনেছি তখন তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। তখন থেকেই সুরভী সঙ্গে রোজ কথা হতো। সুরভী আমার কাছে তার গোপনীয়তা জানাত না। বলতো না তোমার মামার জোয়া খেলার বিষয়টি। ফোনালাপে নিজেকে যথেষ্ট হাসিখুশি ভাবে উপস্থাপন করতো। একদিন সব নিজ থেকে বলে। তখন তোমাদের মামার পরিবারকে সাহায্য করতাম আমি। চার বছর পর তোমার যখন ডিভোর্স হলো। তুমি চাকরি নিতে আমারই কোম্পানিতে গেলে। আমি এটা জানতাম না। যদি না সেদিন মুরাদকে কল দিতাম। তোমার নাম আমি আগে থেকেই জানতাম। মুরাদ যখন সার্টিফিকেটের ছবি আমাকে পাঠালো, তোমার বাবা-মায়ের নাম দেখে আমি জানতে পারি তোমার আসল পরিচয়। সিলেট থেকে দ্রুত ঢাকায় ব্যাক করি। রাদকে মানিয়ে তোমাকে রাদের পি.এ ও সার্ভেন্ট বানাই। এটা সুরভীই আমাকে বলেছিল। তোমাকে যেন যেভাবেই হোক আমাদের কোম্পানিতে জব দেই। তোমায় জব দিয়ে আমি নিশ্চিতে থাকি। রাদকে নিয়ে বার্তি টেনশনে পোহাতে হয় না। তুমি ঘরোয়া মেয়ে ছিলে। ভালো-খারাপ সবই বুঝতে।’ বলতে বলতে ইসানার মাথায় হাত বুলালেন। ইসানা নিরব স্রোতার মতো রেহানার কথা শুনছে। সে ফের বলে,
‘আমি কিন্তু সিমার বিয়ের দাওয়াতে এসেছি। তোমার মামি আমাকে আগেই দাওয়াত দিয়েছে। আমি চেয়েছিলাম তোমার সঙ্গে রাদের বিয়ে দিতে। এটা সুরভীকে জানাই। সে প্রথমে আপত্তি করলেও পরে আমার জোরাজোরিতে রাজি হয়। তারপর থেকে মুরাদ আমাকে তোমাদের বিষয়ে সব খবরা-খবর জানাতো। মুরাদ আগে থেকেই বিয়ের বিষয়টি জানতো। তবে তোমাদের বলেনি। মুরাদ যখন জানায় তোমাকে ভালোবাসে রাদ তখন আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম। আর সেদিন প্রপোজাল রিজেক্ট করেছো শুনে আমারও খারাপ লেগেছিল। তবে তুমি তোমার মনের কথা বলেছো। যেটা তোমার কাছে ঠিক মনে হয়েছে। রাদের অনেক অভিমান জমে আছে আমার ওপর। ছোট বেলা থেকে ওঁকে সময় দিতে পারিনি। তাই একরোখা, উগ্র মেজাজি স্বভাবে বেড়ে উঠে। কিন্তু তুমি আসার পর ওর স্বভাবে পরিবর্তন এসেছে। আমার সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে শুরু করেছে। এর মূল উৎস তুমি। আমি চাই না রাদ আগের মতো হয়ে যাক। জেদের বশে তোমাকে বিয়ে করলেও ও তোমাকে মন থেকে ভালোবাসে। জানি মেনে নিতে তোমার কষ্ট হবে।’
ইসানা দৃষ্টি সরিয় নেয় একথা শুনে। তার বলারই বা আছে কি? তিনি চোখ বুঁজে বড়ো নিশ্বাস নিয়ে বললেন,
‘আজকাল যুগের ভালোবাসা বয়স, জাত-ধর্ম দেখে হয় না। সমাজের কিছু নিচু শ্রেণীর লোক এসবকে নিন্দাসূচক দৃষ্টিতে দেখে। দেখো ইসানা, জন্ম, মৃ’ত্যু, বিয়ে। এই তিনটি আল্লাহর হাতে। অন্যভাবেও হয়তো তোমাদের বিয়ে হতে পারতো। কিন্তু আল্লাহ যা লিখে রেখেছে সেটা তো আর খণ্ডানো যায় না।’
ইসানা আধো স্বরে বলল,
‘আমি তাকে কীভাবে মেনে নিবো ম্যাম?’
‘মানুষ অভ্যাসের দাস! একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। তুমি শুধু আমার ছেলেটিকে আগলে রেখো অধিক পরিমাণ ভালোবাসা দিয়ে। সমাজের কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো। বিপদে পড়লে পরিবার ব্যতীত সমাজের লোকজন এগিয়ে আসবে না সাহায্যের জন্য। এটা মনে রাখবে। আর হ্যাঁ! রাদ যেটা করেছে তার জন্য আমি নিজেও অনুশোচনায় ভুগছি। ওঁকে ক্ষমা করে দিও। দিবে তো ইসানা?’ কথাটা বলে ইসানার থুতনিতে হাত রেখে উঁচু করে আদল। ইসানা ঘনঘন পলক ফেলে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে। ওঁকে নিরুত্তর দেখে রেহানা বললেন,
‘আমি তোমার আর রাদের বিয়ে দিবো নতুন করে। আমাদের বান্ধবীদের বন্ধন মজবুত করব। আশা করছি এতে তোমার কোনো আপত্তি থাকবে না?’
ইসানা নজর নিচু করে ফেলে। তার নিরবতায় ‘হ্যাঁ ‘সম্মতি পেয়ে খুশি হয় রেহানা। শেষ বারের মতো মাথায় হাত চালিয়ে বলে,
‘কে কি বলল তাতে কান দিবে না। তুমি তোমার মতো থাকবে। অনেক শুনেছো এবং দেখেছো সমাজের রীতি। এখন থেকে নিজের মতো বাঁচবে। আর হ্যাঁ! আমাকে মামনি বলে ডাকবে। ম্যাম বলবে না।’ পুরো কথা বলে তিনি চলে গেলেন। ইসানা আলতোভাবে বালিশে মাথা রাখলো। হাজার চিন্তাভাবনা তাকে ঘিরে ধরেছে। ক’বার বড়ো বড়ো নিশ্বাস টেনে মনে মনে বলল,
‘আপনি যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম মি. রাদ আনসারী। তবে কষ্টে ভুগিয়ে দখল করেছেন আমাকে। এর শাস্তি আপনাকে পেতে হবে।’

জানালার সামনে দাঁড়িয়ে মৌন হয়ে ইসানার কথা ভাবছে রাদ। জেদ রক্ষার্থে ইসানাকে আপন করে নিলেও তার কষ্টে পীড়িত সে নিজেও! এক পর্যায়ে বিড়বিড় করে আওড়ায়,
‘নিজের জেদের কাছে হারতে পারিনি আমি। আই এম স্যরি সানা।’
_
‘আমাদের গাড়ি মাঝ রাস্তায় পুলিশ আঁটকে দেয়। প্রায় এক ঘন্টা যাবত বিনাকারণে আমাদের গাড়ি আঁটকে রেখেছে। আব্বু ত্যক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলেও তারা কারণ বলতে নারাজ ছিল। বুঝোই তো পুলিশের সঙ্গে তর্কবিতর্কে গেলে ক্ষতি আমাদেরই হবে। চারটার দিকে হঠাৎ আমাদের যেতে দেয় তারা। এতটা রাগ হচ্ছিল তখন। বলার বাহিরে।’ পুরো ঘটনাটি বাসর ঘরে তার নতুন বউ সিমাকে বর্ননা করল মনজু। সিমা পুরো কথা শুনে বলল,
‘আমাদের পরিবারের সবাই অনেক চিন্তিত ছিল। ভেবেছিল হয়তো তোমরা আসবে না।’
‘আরে এমন কারণ ছিল না। ঐ শা’লা’রা কারণবিহীন আমাদের আঁটকে রেখেছিল।’
‘আমার তো দম বন্ধ হয়ে আসছিল। তুমি আমার ফোনটাও ধরছিলে না। খুব চিন্তা হচ্ছিল।’
‘যাক বাদ দেও। অবশেষে আমরা এক হলাম। এর চেয়ে খুশি আর কী আছে বলো?’
‘হুম।’ মুচকি হেসে জবাব দিলো।
‘তারপর?’ দুষ্টু হাসি ঠোঁটে এঁকে বলল মনজু।
‘তারপর আমাদের নতুন জীবনের সূচনা হবে আজ।’ কথাটা বলে সিমা লজ্জায় পড়ে যায়। মনজু তার বউকে বুকে টেনে নেয়। তাদের জীবনের নতুন এক অধ্যায় উদ্ভোদন হবে আজ থেকে।
.
.
.
.
#চলবে?

#তোমায়_ছোঁয়ার_ইচ্ছে
#পর্ব_২৮
#সুমাইয়া_মনি

‘আপনাদের একত্রে ডাকার কারণটি আমি বুঝিয়ে বলছি। আপনারা জানেন ইসানা আমার ছেলে রাদের পি.এ। রাদ ইসানাকে পছন্দ করে। তাদের বিয়ে ঠিক হয়েছে এই সপ্তাহে। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে হয়তো। সামান্য পি.এ হয়ে কোম্পানির মালিককে ইসানা পটিয়ে নিয়েছে। এমন অখাদ্য প্রশ্ন আপনাদের মাথা থেকে সরিয়ে ফেলুন। ইসানা আমার প্রিয় বান্ধবীর একমাত্র মেয়ে। হয়তো ওরা এক দেড় বছরের বড়ো-ছোট। এটা কোনো মেটার না। পারিবারিক ভাবেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। আপনারা এতদিন আমাকে এবং রাদেকে যে নজরে দেখেছেন, সম্মান-শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ইসানাও একই ভাবে দেখবেন। যেহেতু ইসানাও এই কোম্পানির দ্বিতীয় ওনার। আশা করছি আপনাদের মনে কোনো প্রশ্ন রইলো না। আপনারা এখন নিজ নিজ কাজে যেতে পারেন।’ বক্তব্য শেষ করে রেহানা আনসারী স্টেজ থেকে নেমে গেলেন। স্টাফরা নিজ নিজ স্থানে ফিরতে আরম্ভ করে। মুরাদ রেহানার সঙ্গে পা মিলিয়ে রাদের কেবিনের দিকে এগোয়। রাদের পরামর্শে সে এই মিটিংয়ের আয়োজন করেছিল। যাতে বিয়ের বিষয়টি উল্লেখ হয় এবং ইসানাকে নিয়ে কোনো প্রকার সন্দেহ না থাকে কারো অন্তরে।
‘মুরাদ কার্ড ছাপানোর ব্যবস্থা করো। আমি কোনো প্রকার হেলামি চাই না। হাতে সময় খুম কম।’ ব্যস্ততা দেখিনে বললেন তিনি। চেহারে বসার পর পরই মুরাদ মিনমিন স্বরে বলল,
‘একটা কথা বলার ছিল আন্টি।’
‘কী কথা?’ তিনি কিছুটা ভ্রু কোঁচকালেন।
মুরাদ রাদের পানে তাকিয়ে ইশারা করলেন। রাদ গম্ভীরতা ভাব ফেলে বললেন,
‘মুরাদ চাইছে আপনি ওর বাবার সঙ্গে আলাপ করে আমার বিয়ের মধ্যেই ওর আর সোহানার বিয়ে কথা জানান তাকে।’
‘মানে এক অনুষ্ঠানে দু’টি বিয়ে?’
‘হ্যাঁ!’ মাথা চুলকিয়ে হ্যাঁ সম্মতি জানালো মুরাদ।
‘অতি উত্তম প্রস্তাব। মুরাদ তোমার বাড়িতে চলো এক্ষুণি। এক দিনেই দু’টি বিয়ে হবে।’ খুশি হয়ে বললেন তিনি।
মুরাদ আগ্রহ প্রকাশ করে বলল,
‘চলুন আন্টি। আর শুনুন। আব্বু রাজি না হলে আপনি জোর করে রাজি করাবেন।’
‘অবশ্যই!’
মুরাদ খুশিতে আত্মহারা। তার এ খুশি ভাষায় প্রকাশ করা বড্ড দায়। দ্রুত পায়ে তারা কেবিন ত্যাগ করলেন। রাদ তার ফোনটি টেবিলের ওপর রেখে নাড়াচাড়া করছে। কাল রাতে কয়েকবার ইসানাকে টেক্সট করতে চেয়েছিল। কিন্তু সাহসে কুলোয় নি। হয়তো ভীষণ রেগে আছে। এজন্যই তার মনের সুপ্ত অনুভূতিকে বুকের মাঝে দমিয়ে রেখেছে। বিয়ের আগে সে কিছুতেই তার সম্মুখীন হবে না। যদি হতে হয় বিয়ের পরই হবে বলে ঠিক করে।
_
বিকেলের দিকে সিমাকে ঐ বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যায় মজলিস শুরু হয়েছে ড্রইংরুমে। ইসানাও ছিল। সিমা তাকে টেনেটুনে বসিয়েছে। বাড়িতে আসার পর ইসানার বিয়ের খবর শুনে সিমা বেশ খুশি। তারা বিভিন্ন আলোচনায় রাদকে নিয়ে কথা উল্লেখ করে। ইসানা মৃদু হাসি প্রধান করে চুপচাপ শুনে। শেষে মনজু সকলের উদ্দেশ্য বলল,
‘আমি যদি ভুল না হই রাদ ভাইয়াই পুলিশের মাধ্যমে কাল আমাদের গাড়ি আঁটকে ছিল।’
‘হতে পারে। এটা রাদ ভাইয়াই করেছে।’
‘তুই ঠিক বলেছিস সিমা। এটা আমার গুনধর ছেলের কাজ ছিল।’ রেহানা আওড়াতে আওড়াতে এগিয়ে এলো তাদের নিকট। চকিত চোখে তাকাল ইসানা। পরক্ষণে নজর সরিয়ে নিলো। বড়োলোক মানুষরা চাইলেই সব পারে। এটা তার বুঝতে সময় লাগে না। রেহানা সুরভীর কাছে এগিয়ে গিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে বলল,
‘বিয়ে একটি নয়, সঙ্গে আরেকটি হবে। মুরাদ ও সোহানার।’
‘একই দিনে হবে?’ সিমা জিজ্ঞেস করল।
‘হ্যাঁ! দু বন্ধুর বিয়ে এক দিনে হবে।’
সিমা সহ বাকিরাও খুশি হয়। এ দু দিনে সোহানা ও মুরাদ সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছে। বিভিন্নভাবে তাদের সাহায্য করেছিল কাজে। তাই তাদের নাম বলা মাত্রই চিনে ফেলে। ইসানা নিজেও খুশি হয় বান্ধবীর বিয়ের কথা শুনে। মজলিস ছেড়ে রুমে এসে বান্ধবীর ফোনে কল দেয়। সোহানা ইসানার সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে কথা বলে। নিজের বিয়ের কথা শুনে সে মহা খুশি। সোহানার খুশিতে ইসানাও খুশি। মুহূর্তেই তার বিষণ্ণ মনে সুখের আভা ছড়িয়ে পড়ে।
_
পরদিন।
‘মা তোমার পেশারের ওষুধ শেষ হয়েছে আরো একদিন আগে। ইভান ভাইয়াকে বলোনি?’ শালিনী ঔষধ নাড়াচাড়া করে মায়ের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়লেন।
‘না রে। ইভান সবে মাত্র চাকরি পেলো। টাকা হাতে আসেনি। তাই বলিনি।’
‘তাহলে আমাকে তো বলতে পারতে। আমি না হয় তোমার জামাইয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কিনে আনতাম।’
‘আর কত দেখবি আমাদের। তোর নিজের ভবিষ্যতের কথা ভাব।’
‘ফালতু কথা বোলো না তো। আমি তোমার জামাইকে বলছি ঔষধের কথা।’
‘আমাকে যতটা খেয়াল রাখিস। এমন নিজের শ্বাশুড়িরও যত্ন নিস।’
শালিনী কিছু বলতে উদ্যত হতেই ইভাবের আগমন ঘটে। ভাইকে দেখে শালিনী কথা বাড়ায় না। ইভান মায়ের কাছাকাছি বসলেন। চেহারায় তার ক্লান্তিভাব জড়িত।
তিনি তার ছেলের বাহুতে হাত বুলিয়ে বললেন,
‘আজ কাজ একটু বেশি হয়েছে?’
মায়ের মুখের দিকে এক পলক চেয়ে বলল,
‘একটু তো কাজ থাকবেই।’
শুনে তিনি চুপ করে রইলো। ইভান মুখমণ্ডলে হাত বুলিয়ে বলল,
‘ইসানার বিয়ে ঠিক হয়েছে।’
তার মায়ের মুখে ঘোর অন্ধকার নেমে এলো সংবাদটি শুনে। পিছন থেকে শালিনী কান খাঁড়া করলো বাকি কথোপকথন শুনতে।
‘কার সঙ্গে?’
‘রাদ টেক্সটাইল কোম্পানির মালিকের ছেলের সঙ্গে।’
‘অনেক বড়ো ঘরে বিয়ে হচ্ছে তাই না?’
‘হ্যাঁ! রাদ বিয়ের প্রথম কার্ড আমাকে দিয়েছে। আমি বলেছি বিয়েতে যাব। ইসানার কাছে মাফ চাওয়ার সুবর্ণসুযোগ এটা।’
‘তাই করিস। আমার হয়েও মাফ চেয়ে নিস। অনেক কষ্ট দিয়েছি মেয়েটাকে।’
ইভান প্রতিত্তোরে কিছু বলল না। তার বুক হাহাকার করছে তীব্র বেদনায়। নেই কাউকে দেখানোর সুযোগ!
_
ঘন্টার পর ঘন্টা পেরিয়ে সময় অতিবাহিত হয়। দেখতে দেখতে ঘনিয়ে আসে বিয়ের দিন। আজ রাদ, ইসানা ও মুরাদ, সোহানার গায়ে হলুদ। দুই বিয়ে একই সেন্টারে হলুদ সহ বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বড়ো স্টেজে চারজন কপোত-কপোতী বসে আছে। আত্মীয়রা একে একে তাদের হলুদ দিচ্ছে। দূরে লাউডস্পিকারে গান বাচ্ছে। সবাই ধুমছে এনজয় করছে। রাদ সুযোগ খুঁজছে ইসানার সঙ্গে কথা বলার। কিন্তু সেই ওয়ে’টা খুঁজে পাচ্ছে না। যারা স্টেজে আসছে। হলুদ দেওয়ার সঙ্গে দশ-বিশ এরও বেশি সেলফি তুলছে। ইসানা সবার সামনে নিজেকে স্বাভাবিক ভাবে উপস্থাপন করেছে। রাগ-ক্ষোভ সব ভেতরে দাবিয়ে রেখেছে।
রাদ ও ইসানার সঙ্গে কথা না হলেও। মুরাদ, সোহানা একে অপরে একটু পর পর কানে কানে ফিসফিস করে কথা বলছে আর খিলখিল করে হাসছে। ওদের দেখে রাদের খুব ইচ্ছে জাগে ইসানার সঙ্গে কথা বলার। কিন্তু তার এই ইচ্ছে বাস্তবে রূপ নেয় না। রাত তিনটা নাগাদ হলুদের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। সেন্টারের পাশের হোটেলেই উঠেছে সকলে। হারিসে চড়ে সবাই সেখানে পৌঁছায়। ইসানা ত্যক্ত হয়ে সব খুলে ফেলে। সোহানার নিষেধাজ্ঞা শুনে না। তারা দু’জন এক কামরায় অবস্থান করছে।
‘আমাকে নিষেধ করবি না। তুই পড়ে থাক সারারাত।’
‘এমন করছিস কেন?’
‘বোইন আমি বিরক্ত!’
‘যা যা!’
ইসানা লেহেঙ্গা পরিবর্তন করে পাতলা থ্রিপিস পড়ে। আদলে চওড়া মেকআপ ধুয়ে প্রচুর স্বস্তি পাচ্ছে। সোজা বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়। মেহেদী কাল দিয়েছে তারা দু’জন। তাই আজ ঝামেলা নেই। গায়ে কম্বল দেওয়ার সময় মেহেদী রাঙা হাতে নজর পড়ে। মুঠোবন্দী করা হাত মেলে তালুর পানে তাকায়। সেখানে ছোট অক্ষরে রাদ লিখা ছিল। পার্লারের মেয়েটিকে না করা সত্বেও নামটি জোরপূর্বক ভাবে লিখেছে।
ইসানা কিছুক্ষণের জন্য রাদের সঙ্গে পুরোনো স্মৃতিতে হারিয়ে যায়। প্রথম দেখা, তার সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করা। এক নির্জন রাতে আমেরিকার সুনশান রাস্তায় পথচলা সব স্মৃতিতে ঘুরে আসে ইসানা। আজ সেই রাদ তার বর! জীবনের এক অংশে পরিনত হয়েছে। সরু নিশ্বাস নিয়ে হাত মুঠোবন্দী করে ফেলে।
.
এ ক’দিনে দু’জনের মাঝে কথা হয় নি। রাদের তীব্র আগ্রহ থাকলেও ওয়ে ছিল না। ইসানা ভারী মুখ ফিরিয়ে রেখেছিল কথা বলবে না দেখে। বুক আনচান করছে ইসানার সঙ্গে করা বলার জন্য তার। এরূপ ছটফটানি মুরাদ বুঝতে পারে। পাশে বসে পিঠ চাপড়ে বলল,
‘আর কয়েক ঘন্টা মাত্র। কাল রাতেই তাকে পুরোপুরি ভাবে পেয়ে যাবি। একটু ধৈর্য রাখ দোস্ত!’
‘তাই তো করছি। তবে আমি জানি ওনি আমাকে এত সহজে মেনে নিবে না।’
‘দেখ দোস্ত, এমনিতেই তুই তাকে ব্লাকমেইল করে বিয়ে করেছিল। এখন সে তোর। আগে তার মনে নিজের জন্য সফটলি কর্নার তৈরী কর। তার মনে যদি তোর প্রতি ভালোবাসা জন্মায় তবেই তুই তাকে স্পর্শ করতে পারবি। এভেন, সে তখন তোকে স্ত্রীর অধিকার নিজ থেকে দিবে। তবে, এর আগে তাকে জোরপূর্বক ছোঁয়ার চেষ্টা করিস না।’
রাদ মুরাদের কথা গুলো মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করে। এবং সে বুঝতে পারে কাউকে হাসিল করতে হলে প্রথমে তার মন দখল করতে হয়। তবেই তাকে পরিপূর্ণ ভাবে পাওয়া যাবে।
.
.
.
.
#চলবে?

কার্টেসী ছাড়া কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ।

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ