Sunday, October 5, 2025







তোকে চাই❤(সিজন-২)part:29+30+31

তোকে চাই❤(সিজন-২)part:29+30+31
#writer : নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤

.
.
?
.
ছাদের দরজায় ঠেস দিয়ে হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছেন শুভ্র ভাই।।ঠোঁটে শয়তানি হাসির রেখা।আমি দ্বিধাদ্বন্দে হয়রান…রাগ পাবো নাকি ভয়??উনি আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আপুকে ডেকে উঠলাম কয়েকবার কিন্তু ফলাফল জিরো কারো সাড়াশব্দ নেই মোটে…আমার ডাকাডাকিতে হেসে উঠলেন উনি।হাসিমুখে বলে উঠলেন-
.
এখানে কেউ নেই রোদপাখি।আমার হবু বউমনি নিজের রুমে আরাম করে তার হবু বরের সাথে প্রেম করছে।
.
ম ম মানে কি?অভ্র ভাইয়া কোথায়?উনি আমায় ম্যাসেজ করেছিলো মাত্র!!
.
ভাইয়ের যে নাম্বারটা তোমার কাছে আছে সেই সিমটা এখন আমার ফোনে।বুঝতে পারলে শ্যামবতী?
.
এএএসবের মমমমানে কি?আআপনি এখানে কি করররছেন??
.
এখনও তো কিছু করছি না।বাট করবো।
.
কথাটা বলেই ছাদের রেলিং পা ঝুলিয়ে বসলেন উনি।একটা শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলে উঠলেন-
.
আই এম সো কনফিউজড রোদপাখি….
.
কনফিউজড? কককেন?
.
এইযে তোমার সাথে আমি শাকিব-বুবলি টাইপ রোমান্স করবো নাকি সানিলিয়ন-ইমরান হাসমি টাইপ রোমান্স করবো ঠিক বুঝতে পারছি না…. ইটস আ বিগ কনফিউশান। আই থিংক সানিলয়ন-ইমরান হাসমিই ব্যাটার রাইট??
.
কথাটা বলেই ডানচোখটা টিপে দিয়ে রেলিং থেকে লাফিয়ে নামলেন উনি।আমার তো কাঁপা-কাঁপি অবস্থা…ব্যাটায় বলে কি?? রোমান্স!! উনি আমার দিকে এগুচ্ছেন আর আমি নিজের সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি রেগে যাওয়ার…. কিন্তু হায় নিয়তি!!এই রাগটাও আমায় পাত্তা দিলো না আজ।।গলা শুকিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত।।কোনো কিছু না ভেবেই পেছন ফিরে দিলাম এক দৌড়….কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না…লম্বা লম্বা পা ফেলে শক্ত হাতে চেপে ধরলেন আমার ডান হাতটা।আমি কাঁদো কাঁদো চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি…উনি রাগমাখা চোখে মিষ্টি হাসি দিয়ে ছাদের দরজার সাথেই চেপে ধরলেন আমায়।।চোখদুটো টলমল করছে…. কান্নাদেবী যেকোনো সময় ভর করতে পারে আমার চোখে।উনি হিসহিসিয়ে বলে উঠলেন-
.
কি? এখন কান্না কেন?আমি ধরলেই ব্যাথা লাগে,, না??আর ওই হারের ডাক্তার যখন ধরলো তোমায় তখন তো মুখে হাসি যেন ধরছিলোই না।।
.
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি।।”” যতো দোষ নন্দ ঘোষ… “” এই প্রবাদ বাক্যটি হয়তো কোনো এক কালে উনাকে ডেডিকেট করেই তৈরি করা হয়েছিলো।নিজে যে ওই হাতাকাটা মেয়ের সাথে রংঢং করে বেড়াচ্ছেন….তাতে কিছু না হুহ।
.
কি হলো?মুখে কথা নেই?
.
আমার বাম হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে চোখের সামনে এনেই বলে উঠলেন-
.
এই হাতটাই তো ধরেছিলো তাই না?
.
কথাটা বলেই বামহাতের কনুইয়ের একটু নিচে কামড়ে ধরলেন তিনি।ব্যাথায় চেঁচিয়ে উঠতেই ছেড়ে দিলেন হাত।এবার আমি কেঁদেই দিলাম…চোখ দিয়ে পানি পড়ছে অনবরত।রাক্ষস কোথাকার!!হাত ধরলেই কামরে দিতে হবে?ওই মাইয়া যে উনির উপর আছড়ে পড়ছিলো… ওই হিসেবে আমার তো উচিত উনার সারা শরীরে কামড়ে দেওয়া….সাদা বিলাই কোথাকার…তোর বউ মরে যাবে দেখে নিস।।গালে উনার হাতের ছোঁয়ায় ঘোর ভাঙলো আমার…. রাগী চোখে তাকালাম তার দিকে।কিন্তু সেদিক তার খেয়াল কই?তিনি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আমার চোখে…বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে করুন স্বরে বলে উঠলেন উনি-
.
খুব লেগেছে? সরি….আর করবো না এমন।।তোমারই তো দোষ…ধরতে দিলে কেন হাত?ওর বাপের সম্পত্তি নাকি তোমার হাত…যখন ইচ্ছে ধরবে…চুলেও তো হাত দিয়েছিলো।
.
উনার কথায় মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো আমার।ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে।ডানহাতে বাম হাতটা চেপে ধরে বলে উঠলাম-
.
আহানের বাপের সম্পত্তি যেমন নয় আমার হাত আপনার বাপের সম্পত্তিও তো নয়।সে তো শুধু ধরেছিলো… আপনি তো ক্ষতবিক্ষতই করে দিলেন…
.
উনি একটু এগিয়ে এসে ফু দিয়ে সামনের চুল গুলো উড়িয়ে দিয়ে বলে উঠলেন-
.
রেগো না গো ললনা…মরে যাই আমি।।তোমার রাগী ফেইসটা না একককদমমমম….
.
লুচু ছেলে….সব ছেলেরাই এক রকম হয়।।মেয়েদের উপর ঢলে ঢলে পড়ে আর যখন কথা মেয়েদের উপর আসে তখন হাইপার…হুহ!
.
আমার কথায় উনি ভ্রু কুঁচকে তাকালেন…কাঁধের কাছে ঝুলে থাকা চুলগুলো টেনে ধরে হাতে পেচাতে লাগলেন…ব্যাথায় কুঁকিয়ে উঠে বাধ্য হয়েই উনার দিকে এগিয়ে গেলাম।।লম্বা চুলের ভয়াবহতা আজ বুঝতে পারছি আমি।চুলগুলো হাতে পেচিয়ে নিয়ে ঘাড়ে হাত রেখে মাথাটা আরেকটু টেনে এনে কপালে কপাল ছোঁয়ালেন উনি….ফিসফিসিয়ে বলে উঠলেন-
.
কেশবতী?আমি মেয়েদের উপর ঢলে ঢলে পড়ি?
.
অবশ্যই ঢলে পড়েন।শুধু ঢলে পড়েন না।আরো অনেক কিছু করেন….মেয়ে পাশে দেখলে তো দুনিয়ার আর কাউকে মনে থাকে না।কথাও তো বের হয় না মুখ থেকে।।মেয়েবাজ কোথাকার!! ছাড়ুন আমায়…
.
আমি মেয়েবাজ….??(দাঁতে দাঁত চেপে)
.
হ্যা মেয়েবাজ!!ছাড়ুন আমায়…কিছুদিন পর ডক্টর আহানের সাথে আমার বিয়ে।।অন্যের বউকে মাঝরাতে হ্যারেজ করতে লজ্জা করছে না??ছাড়ুন বলছি….জাস্ট লিভ মি…
.
আমার কথায় চোখদুটো লাল হয়ে এলো তার।।আরো জোরে চেপে ধরে বলে উঠলেন উনি…
.
অন্যের বউ?ওই ডক্টরকে বিয়ে করার খুব শখ জেগেছে না?এতো শখ বিয়ে করার??
.
আশ্চর্য? শখ না জাগার কি আছে?বিয়ের বয়স হয়েছে বিয়ে করবো না?তাছাড়া ডক্টর আহানের মতো ছেলেরা স্বামী হিসেবে দারুণ হবে।।আমি তো খুব এক্সাইটেড…
.
কথাটা শুনার সাথে সাথেই একরকম ধাক্কা দিয়ে ছুঁড়ে ফেললেন আমায়… পড়তে পড়তেও নিজেকে সামলে নিলাম আমি।উনি দুহাতে নিজের চুল টেনে ধরে পাশে থাকা টবটা এক লাথিতেই ভেঙে টুকরো করলেন মুহূর্তেই। দেয়ালে দু একবার ঘুষি দিয়ে একটানে নিজের কাছে এনে দাঁড় করালেন আমায়…আলতো হাতে চুলগুলো কানে গুঁজতে গুঁজতে বলে উঠলেন- “ডোন্ট ওয়ারি রোদপাখি…আই উইল কিল হিম।”
.
?
.
রুমময় পায়চারী করে চলেছি। অস্থিরতায় বসে থাকাও দায়।এ পর্যন্ত দুই লিটার পানি শেষ করেছি আমি..তবু তেষ্টা যেনো মিটছেই না।পানি খাওয়া মাত্রই গলা শুকিয়ে কাঠ।ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে আমার।।উনি কথাগুলো বলার জন্য বলেন নি….উনার প্রতিটি কথায় সত্য ছিলো।।উনাকে এই মুহূর্তে আস্ত সাইকো মনে হচ্ছে আমার।।ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে একটা মানুষকে খুন করে ফেলতে হবে।নিজের উপরই রাগ লাগছে আমার কেনো যে বিয়ের কথাটা বলতে গেলাম!!শুভ্র ভাইয়াকে ফেইস করার সাহসও আমার নেই….আর সাহেল ভাইয়াকে যে বলবো তার ফোন নাম্বারটাই তো আমার কাছে নেই।।টেনশনে মাথা ফেটে যাচ্ছে আমার।কিছুক্ষণ পরই কানে এলো আজানের ধ্বনি…রাতটা তাহলে আজ নির্ঘুমই কেটে গেলো আমার!!নামায পড়ে এক কাপ কফি হাতে ছাদে গিয়ে বসলাম।।চারদিকের অন্ধকার ভাবটা এখনো কাটে নি….ঠান্ডা স্নিগ্ধ বাতাসে শরীর কাঁপানো আবেশ।।কফিতে চুমুক দিয়ে ফোন লাগালাম চিত্রাকে….চারবারের মাথায় ফোন ধরলো সে…
.
হ্যা..লো??এতো রাতে ফোন দিয়েছিস কেন রোদু?
.
এতো রাত?এই কানা চশমা পড়ে ঘড়িটা দেখ ডাফার…এখন রাত নয় ইটস আ টেনশনযুক্ত মর্নিং।
.
কি বলছিস এসব?মাত্র তো ৫ঃ৪০ বাজে।ঘুমুতে দে তো….এমনিতে রাতে ঘুমুতে দেরী হয়ে গেছে… প্লিজজ রোদু লেট মি স্লিপ।
.
চুপ ফাজিল।এখন ঘুমাবি কেন তুই?সারারাত করলি টা কি?ওই পেট মোটা ব্যাটার সাথে প্রেম করছিস নাকি?বাহ্ বা শুধু পেট দেখেই প্রেম?বাকি জিনিস দেখলে কি করবি তাহলে?
.
কি সব বলিস রোদ…. ওই ব্যাটার ফোন নাম্বারই তো নেই আমার কাছে।প্রেম করবো কিভাবে??বাট ব্যাটার শার্টের কালারটা সুন্দর ছিলো…ক্রিমমি ক্রিমি…
.
ওহহো… এজন্যই তো বলি..চিতা বাঘ স্বপ্নে এতো ক্রিম দেখে কেন?ক্যান্টিনেও দেখি সব খাবারের সাথে ক্রিম মাখাচ্ছিস।।কাহিনী তাহলে এইটা??
.
ইশশ রোদু…প্লিজ ইয়ার কই থেকে কই নিয়ে যাচ্ছিস কথা!!এখন রাখ না ফোনটা…ঘুমাবো..
.
তোর ঘুম বের করছি আমি….জাস্ট ১৫ মিনিটে বাসায় এসে হাজির হ।।দেয়ার ইজ আ ইম্পোর্টেন্ট ফিংক টু ডিসকাস।।আমার জীবন মরন সমস্যা….
.
এতো সকালে??
.
হ্যা..এতো সকালেই…কাম ফাস্ট…নয়তো ওই চিপকু মফিসকে তোর নাম্বার দিয়ে দিবো বাই গডড…
.
কথাটা বলেই ফোন কেটে দিলাম।।আমি জানি ও আসবে।ধীরে সুস্থে কফিটা শেষ করে ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়ালাম।মনে মনে ছক কষছি…কিন্তু সব ছকই এলোমেলো লাগছে আজ….প্রায় ২০ মিনিট পর চিত্রাকে গেইটের সামনে এসে দাঁড়াতে দেখলাম…সবুজ জামার সাথে হলুদ ধুতি পায়জামা পড়নে…গলায় কালো ওড়না পেঁচানো…অগোছালো চুলগুলো কোনোরকম খোঁচায় আটকানো…দেখেই বুঝা যাচ্চে যেমন ছিলো ঠিক সেভাবেই চলে এসেছে সে।।নিচে গিয়ে গেইট খুলে নিজের রুমে আনলাম ওকে।ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে উঠলো –
.
এবার তো বল হয়েছেটা কি?
.
তুই একটু সাহেল ভাইয়াকে কল কর না প্লিজ?
.
কেনো?কেনো?(ভ্রু কুঁচকে)
.
শুভ্র ভাইয়া ডক্টরের জন্য রিস্কি রে…আমার হাত ধরার দায়ে তাকে শাস্তি দিবেন উনি।।তুই একটু সাহেল ভাইয়াকে ফোন দিয়ে ব্যাপারটা ম্যানেজ করতে বল না প্লিজ!!
.
তার থেকে আমি বরং হসপিটালে একটা ফোন দিই বুঝলি?ওই হারের ডক্টরের জন্য একটা ওটি বুক করে রাখি…কি বলিস?(খুশি হয়ে)
.
চুপপ..বেয়াদপ মেয়ে…তোকে ফোন দিতে বলছি ফোন দে ব্যস…
.
চিত্রা চরম অনিচ্ছায় ফোন হাতে নিয়ে ডায়াল করলো।খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো চিত্রার কাছে কিভাবে যেনো সবার নাম্বারই থাকে…শত্রু হোক বা বন্ধু.. ওর কাছে ক্যাফিটেরিয়ার মামার নাম্বার থাকলেও আমি অবাক হবো না মোটে।।ভেবেছিলাম ফোন রিসিভ হবে না…এতো সকালে আর যায় হোক ছেলেরা ঘুম থেকে উঠে না।কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে প্রথম রিং-এ ফোনটা রিসিভ হয়ে গেলো।।ওপাশ থেকে ক্লান্ত গলায় বলে উঠলো কেউ-
.
হ্যালো? কে বলছেন?
.
ভাইয়া আমি চিত্রা। আইআর ডিপার্টমেন্টের চিত্রা।ওইযে আপনার সানশাইন আছে না? ওর বেস্টু…অন্যভাবেও চিনতে..
.
শাট আপ চিত্রা।আমি তোমাকে চিনি এতো বিশ্লেষণ করার কিছু নেই…কি বলবে তাই বলো।
.
ভাইয়া…বলছিলাম কি?ওই ডক্টরকে নাকি শুভ্র ভাইয়া দুলাই দেবে??ওয়াও..আই এম সো হ্যাপি ফর দেট…আমি বলি কি?আমার পক্ষ থেকেও দশ বারোটা ঘুষি দিয়ে দিয়েন ভাইয়া…আই উইল পে ফর দেট…
.
তাই পে করবা?তাও আমাকে?গ্রেট তো কি পে করবে শুনি?একটা চুয়িংগাম?
.
নাহ ভাইয়া…একটা নয় যতোটা ঘুষি দিবেন,,প্রতিটি ঘুষির জন্য একটা করে চুয়িংগাম।দারুন না?
.
ওয়াও…এতো ভালো পেমেন্টের কথা আমি আমার লাইফেও শুনি নি।।তোমার নামটা তো স্বর্ণাক্ষরে খুদাই করে রাখা উচিত।এনিওয়ে?তুমি ডক্টরকে মারতে চাও কেন?সে তোমাকে প্রেগনেন্ট টেগনেন্ট করে পালায় নি তো??হা হা হা
.
ছিহ ভাইয়া!! আপনি এতো বাজে কথা বলতে পারেন আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না।।আর ইউ সাহেল ভাইয়া??রিয়েলি??আই কান্ট বিলেভ!!
.
তুমি বিলিভ না করতে পারলেও কিছু করার নেই।এতো সকালে যে ঘুম ভাঙিয়ে ডিসটার্ব করেছো তার জন্য ওই কথাটা খুবই সামান্য…
.
ও হ্যালো?আমি নিজের জন্য নয় আপনার সানশাইনের জন্য ফোন দিয়েছি ওকে??
.
তাহলে আমার সানশাইনকেই ফোনটা দাও না গো সুন্দরী… প্লিজজ!!
.
সাহেল ভাইয়ার কথায় চিত্রা রেগে আগুন হয়ে ফোনটা কোনোরকম ছুড়ে মারলো আমার উপর..
.
আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া..
.
ওয়ালাইকুমুস সালাম সানশাইন…আই নো তুমি কেন ফোন দিয়েছো।বাট এখন আর ফোন দিয়ে লাভ নেই…শুভ্রর যা করার ও করে দিয়েছে….সারারাত ওকে আটকানোর প্রচেষ্টায় জীবন শেষ… মাত্রই বাসায় ফিরলাম…শাওয়ার নিয়েই ঘুম দেবো…
.
মানে কি?আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাবেন?ডক্টর আহানের সাথে করেছেটা কি উনি??
.
সিটি হসপিটালে গিয়ে নিজের চোখেই দেখে আসো সানশাইন।থার্ড ফ্লোর.. রুম নম্বর ৩৩৬…. আমি এখন ঘুমোবো সুইট লেডি…হেভ আ নাইস ডে..
.
আমি ফোন হাতে নিয়ে থম মেরে বসে আছি।যা করার করে দিয়েছে মানে কি?মেরে টেরে ফেলেছে নাকি?আবারও গলা শুকিয়ে আসছে আমার..!!উফফ মানুষ এমন পাগল হয় কি করে?হাও?
.
#চলবে…

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


#তোকে চাই❤
………(সিজন -২)
#writer : নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part: 30
.
.
?
.
দরজাটা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই ডক্টর আহানের করুণ অবস্থা চোখে পড়লো।হাতে-পায়ে প্লাস্টার আর ব্যান্ডেজের ছড়াছড়ি।ইশশ….আমার জন্য উনার এতোটা ক্ষতি হয়ে গেলো। এই মুহূর্তে শুভ্র ভাইয়ার প্রতি চরম রাগ লাগছে আমার…..একটা মানুষকে এভাবে মারতে পারে কেউ??একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভেতরে ঢুকতেই ডক্টর আহান চোখ মেলে তাকালেন।আমাকে দেখেই মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে উঠলেন-
.
কেমন আছেন লিটল বেবি?
.
আমি তো ভালো আছি বাট আপনার অবস্থা তো করুন।।আই এম সো সরি….সবকিছু আমার জন্য…
.
আরে না না…আপনার জন্য কেনো হবে?কাল রাত ১টার দিকে একটা প্রেংক কল এলো….ক্লিনিকে নাকি ইমার্জেন্সি পেশেন্ট আছে…হসপিটালে এসে দেখি কিছুই না…ফেরার সময় কোথা থেকে একদল ছেলে এসে গাড়ি থেকে জোড় করে বের করে পেটালো…মরেই হয়তো যেতাম থেংক গড আপনার ভাইয়া চলে এসেছিলো নয়তো…
.
উনার কথায় আমি অবাক…ভাইয়া মানে?ভাইয়া তো রাতে নাক ঢেকে ঘুমোচ্ছিলো,, ভাইয়া কখন গেলো সেখানে??আমি কৌতূহলী হয়ে বললাম –
.
ভাইয়া??
.
হ্যা,, আপনার কাজিন…নামটা যেনো কি?ওহ হ্যা শুভ্র!!সাথে উনার বন্ধুও ছিলো উনার নাম মে বি সাহেল হবে।
.
আমি কিছু বলতে যাবো ঠিক তখনই দরজা ঠেলে ভেতরে এলো শুভ্র ভাইয়া….অমায়িক হাসি দিয়ে বলে উঠলেন-
.
ওহ গুড মর্নিং ডক্টর। কেমন আছেন এখন?
.
জি ভালো!!থেংক্স এগেইন ম্যান।
.
ইটস অলরাইট!!
.
কথাটা বলেই আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মারলেন উনি।।আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না…নিজে মার খাইয়ে নিজেই সেবা? বাহ্…”সাপও মরলো লাঠিও ভাঙলো না” এই প্রবাদটার সঠিক প্রয়োগ করেছেন উনি।।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চিত্রা আর শুভ্র ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলাম-
.
আমার ডক্টর আহানের সাথে কিছু কথা আছে।একটু বাইরে যাবেন প্লিজ?চিত্রা?তুইও যা!!
.
কেনো?কি এমন বলবি এই ডক্টরকে যে আমার সামনে বলা যাবে না?এই একদিনের ডক্টর তোর আপন হয়ে গেলো আর আমি পর??
.
এইযে বিউটিফুল লেডি! আপনি কি অলওয়েজ ঝগড়ায় করেন নাকি?(মুচকি হেসে)
.
কিহ?রোদ?দেখ এই ডাক্তার কি বলে…আমি নাকি ঝগড়ুটে!! বেশ হয়েছে ভাইয়া মেরেছে একে…আরো মারা উচিত ছিলো…হুহ
.
ভাইয়া মেরেছে মানে?(কনফিউজড হয়ে)
.
নাথিং ডক্টর…. এই তোরা যা না প্লিজ!!
.
আমার কথায় কেভিন থেকে বেরিয়ে গেলো শুভ্র-চিত্রা।আমি আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বেডের পাশের টোলে গিয়ে বসলাম।মাথা নিচু করে বলে উঠলাম-
.
মিষ্টার আহান? আই এম সো সরি।আপনার এই অবস্থার জন্য আলটিমেটলি আমিই দায়ী।(কিছু বলতে নিলে) প্লিজ ডক্টর আহান…লেট মি ফিনিশ।সেদিন শপিং মলে চুরি দেখতে গিয়ে আচমকাই হাত ধরেছিলেন আমায়।বিষয়টায় আমিও চমকে গিয়েছিলাম… সাথে সাথে ছেড়েও দিয়েছিলেন কিন্তু…. এনিওয়ে… আমি একজনকে পছন্দ করি।আর যাকে পছন্দ করি তার মাথায় একটু গন্ডগোল আছে বলেই মনে করি আমি।এমনিতে সব ঠিকঠাক শুধু আমার ব্যাপারেই যতো পাগলামো তার।আপনি আমার হাত ধরায় রাগের মাথায় আপনার এই অবস্থা করেছে সে।। তাই বলছিলাম কি?একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করে নিন প্লিজ।আমাকে নিয়ে ভাবা বন্ধ করুন নয়তো আবারও মার খেতে হতে পারে….হয়তো মেরেই ফেলবে।।সো প্লিজ..এই বিষয়টা নিয়ে আর না এগোলেই বেটার।
.
বাট আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইউ।।ইটস নট এবাউট মাই ফিলিংস…আমার মায়ের ফিলিংসও জড়িয়ে আছে এতে…মা অনেক পছন্দ করেন আপনাকে।।তাছাড়া এখন আমিও তাই চাই…
.
দেখুন…আগে জীবন তো বাঁচান তারপর বিয়ে।।আমার জন্য কারো ক্ষতি হোক তা মোটেও চাই না আমি।।তাছাড়া উনি আপনাকে না মারলেও বিয়েটা করা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না।।আই রিয়েলি লাভ হিম।প্লিজ বোঝার চেষ্টা করুন।আপনার মা কে বলে দিবেন যে আমি ফালতু একটা মেয়ে।।তাহলে দেখবেন উনি নিজেই সরে যাবেন।আসছি!!
.
কথাটা বলে উঠে দাঁড়িয়ে দরজার দিকে হাঁটা দিতেই পেছন থেকে ডেকে উঠলো আহান-
.
হেই লিটল বেবি!!
.
হু?(পেছনে তাকিয়ে)
.
আপনার কথায় রাখবো…মাকে বলবো বিয়েটা করছি না কিন্তু একটা রিকুয়েষ্ট আছে…রাখবেন??
.
রিকুয়েষ্ট??কি রিকুয়েষ্ট??(ভ্রু কুঁচকে)
.
চলে তো যাচ্ছেনই…মাথাটা ব্যাথা করছে খুব একটু হাত রাখবেন মাথায়??প্লিজ!!
.
আমি অবাক চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।কি বলবো বুঝতেই পারছি না।।কি একটা অদ্ভুত অস্বস্তি হচ্ছে আমার!!ঠিক তখনই দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুৃকলো শুভ্র…আমার হাতটা টেনে ধরে বলে উঠলো..
.
কাম রোদ…ভিজিটিং টাইম শেষ আমাদের যেতে হবে।হেই ডক্টর…আজ আসি কেমন?তাড়াতাড়ি সেড়ে উঠুন…(মুচকি হেসে)
.
আহানকে কিছু বলতে না দিয়েই আমার হাতটা টেনে বেরিয়ে এলো শুভ্র।।মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম আমি।।চিত্রা আর আমাকে নিয়ে গাড়িতে উঠতে উঠতে বলে উঠলেন উনি-
.
আজকেই লাস্ট টাইম।।এই হারের ডক্টরের সামনে আর যেনো না পড়ো তুমি।
.
আপনিই আপনার চেলাদের দিয়ে এভাবে মেরেছেন উনাকে,,,তাই না?
.
হুম…মেরেছি তো??
.
তো মানে?মারলে নিজে মারবেন…অন্যকে দিয়ে মার খাইয়ে ভালো সাজার মানেটা কি??
.
আমি মারলে পুলিশ কেইস হতো….পোলাপানগুলো যেভাবে মেরেছে তাতে ব্যাপারটা রাস্তাঘাটে ছিনতাইকারীর আক্রমন হিসেবে শো করছে… পুলিশ কেইস হলেও কোনো এ্যাকশন হবে না।।নিজেই মারতে চেয়েছিলাম বাট সাহেলের জন্য পারি নি।।তাই বাধ্য হয়েই…
.
উনাকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়েই চিত্রা বলে উঠলো…
.
ওহহো শুভ্র ভাইয়া…এই সাহেল ভাইয়াটা না অলওয়েজ ওভার করে..উনাকেও দু’চারটা চড় থাপড়া দেওয়া উচিত ছিলো ভাইয়া!!আপনার বউয়ের হাত ধরে…
.
আমি রাগী চোখে তাকাতেই থেমে গেলো চিত্রা।।আমতা আমতা করে বলে উঠলো সে..
.
না ম..মানে আমি তো এমনি বলছিলাম…হে হে
.
মাইরটা সাহেল ভাইয়াকে না দিয়ে তোর ওই পেট মোটা “হতে হতে না হওয়া” জামাইকে দেওয়া উচিত।(দাঁতে দাঁত চেপে)
.
কেন?সে কি করলো তোকে?(মুখ ফুলিয়ে)
.
তোকে বিয়ে করে যে আমাদের উদ্ধার করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলো সেটা তো ভেঙে টুকরো করে দিলো…. এটা কি কম বড় অন্যায়??আমি কতো ভেবেছিলাম তোর মতো সিন্দাবাদের ভূত থেকে রেহাই হয়তো পাবো এবার…কিন্তু ব্যাটা লাস্ট স্টেজে এসে ভেগে গেলো??
.
আমাদের কথায় শুভ্র ভাইয়া হুহা করে হেসে উঠলেন।আমি উনার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছি আর চিত্রা অসহায়!!
.
?
.
সবাই মিলে গ্রামের বাড়ি পাড়ি জমিয়েছি।আপুদের বিয়েটা গ্রামেই হবে।গ্রামের বাড়ি বলতে আমার নানু বাড়ি আর শুভ্র ভাইয়ার দাদু বাড়ি।।মামু প্রায় ২৮ বছর পর বাড়ি ফিরছেন….চিত্রাসহ শুভ্র ভাইয়ার সব ফ্রেন্ড আর কিছু জুনিয়ররাও যাচ্ছে আমাদের সাথে….এরমধ্যে অনেকেরই এই প্রথম গ্রামে যাওয়া।চারদিকে হৈ-হুল্লোড় আর গান বাজনায় মাথা নষ্ট অবস্থা।।আমরাও প্রায় ৬ মাস পরে গ্রামে যাচ্ছি…নানু মারা যাওয়ার পর এদিকে আসায় হয় না তেমন। বাস থেকে নেমেই মনটা শান্ত হয়ে গেলো একদম….বিভিন্ন ধরনের গাছপালার মাঝে ছিমছাম পুরাতন দু’তলা বাড়ি।সবার জন্য রুম বরাদ্দ হয়ে গেছে….কিন্তু সমস্যা হলো আমার বেলায়..শুভ্র ভাইয়া আর আমার একই রুমই পছন্দ হয়েছে।এই নিয়ে কি তুমুল ঝগড়া… অবশেষে মামুর ধমকে দমে গেছে শুভ্র…বিনা বাক্য ব্যয়ে দুটো গ্রুপে ভাগ হয়ে গিছে আমরা….একটা সিনিয়র সিনিজেন অর্থাৎ মামুদের গ্রুপ আরেকটা জুনিয়র সিটিজেন..অর্থাৎ আমাদের গ্রুপ।।ছাদে তুমুল গতিতে পাটি বিছানো হচ্ছে আজ সারারাত গল্প আর পিঠা খাওয়া হবে।।রহিমা খালা আর মজিদ চাচা দুজনে নিজ ইচ্ছেই আমাদের গ্রুপে নাম লিখিয়েছেন তার নাকি ওইসব বুইড়াদের সাথে মিশ খায় না।রহিমা খালা এই বাড়ির কাজের লোক আর মজিদ চাচা কেয়ারটেকার…এদের দুজনের মধ্যে মাখো মাখো ভাব…প্রেমের দ্বিতীয় এপিসোড চলছে তাদের।।রাত আটটা বাজতেই সবাই গিয়ে বসলাম ছাদে…রাতুল ভাইয়া এখনও শুভ্রকে বারবার দুলাভাই বলে চলেছেন…সাথে দু’একটা থাপ্পড়ও খাচ্ছেন কিন্তু তাতে তার কোনো ভাবোদয় হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না….বরং বেশ মজা পাচ্ছেন বলেই মনে হচ্ছে….সাকিব ভাইয়া চিত্রাকে ইমপ্রেস করার বহুত চেষ্টায় আছে কিন্তু সিনিয়রদের সামনে নিজেকে ঠিক প্রকাশ করতে পারছেন না বেচারা।।নীলিমা আপু আর রোহন ভাইয়া তাদের ননস্টপ ঝগড়া চালিয়ে যাচ্ছে।।রাহি আপু সাব্বির ভাইয়ার সাথে কি এতো ফুসুরফুসুর গল্প করছেন আল্লাহ মালুম….আমাদের সাহেল ভাইয়া ক্যামেরা হাতে ছুটেছেন…সবারই বিভিন্ন এ্যাংগেলের ছবি তোলে মেমোরি ভরে চলেছেন….তার ক্যামেরায় রহিমা খালা আর মজিদ চাচার সিঁড়ি তলের রোমান্সও ধরা পড়েছে চরম ভাবে।।
.
#চলবে…
.
(#একমুঠো রোদ ও সে….নতুন গল্প আসছে…)

#তোকে চাই❤
………(সিজন -২)
#writer : নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part: 31
.
.
?
.
সারারাত গল্প মত্ত থেকে এখন সবার চোখই ঘুমে ঢুলুঢুলু। আমি ছাদের কার্নিশ ধরে দাঁড়িয়ে আছি আর আমার ঠিক পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন রহিমা খালা।অজানা কিছু কারণে রহিমা খালা আমায় খুব পছন্দ করেন।এ বাড়িতে এলো আমার আশেপাশে রহিমা খালার থাকা চাই-ই চাই এমনকি আমি ওয়াশরুমে গেলেও উনি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন।অনেক ধমকেও উনাকে আমার পিছু ছাঁড়াতে পারি নি।। খেতে বসলে সবচেয়ে বড় মাছটা আমার প্লেটে এলো কি না তা নিয়ে তার ব্যাপক চিন্তা।এমন কিছু আনএক্সপেক্টেড ভালোবাসা বিরক্তিকর হলেও তৃপ্তিকর!!নিচে সাহেল ভাইয়া বিভিন্ন ফুলের ঢালি,, গ্রামের বাচ্চা মেয়ে এসবের ছবি তুলছেন।কি এতো মজা পাচ্ছেন কে জানে??শুভ্র ভাইয়াকেও এক কোণে বসে থাকতে দেখা গেলো… কাগজ হাতে বাজারের হিসাব দেখছেন হয়তো…মেরুন পাঞ্জাবিতে অসাধারণ লাগছে তাকে। আশেপাশে বেশকিছু মেয়ে আর বাচ্চারা কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে আছে উনার দিকে।ব্যাপারটায় যেনো উনি চরম বিরক্ত….চোখ মুখ লাল করে সাকিব ভাইয়াকে কিছু একটা বললেন উনি। কথাটা শুনেই সাকিব ভাইয়া মেয়েদের দিকে এগিয়ে এলো…কিছু একটা বললো কিন্তু কাজ হলো না মোটে।শুভ্র ভাইয়ার এই বিষয়টায় ব্যাপক হাসি পায় আমার…কোনো মেয়ে উনার দিকে তাকালেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায় উনার…যেনো সাত রাজার ধন নিয়ে যাচ্ছে তার!! হঠাৎই পেন্সিলটা ঠোঁটে চেপে ধরে পাশে দাঁড়ানো রাতুল ভাইয়ার গালে চড় বসিয়ে দিলেন উনি। রাতুল ভাইয়ার তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই বললেই চলে।।এক দুইবার গালে হাত ঘষে সাহেল ভাইয়া দিকে তাকিয়ে ৩২ দাঁত বের করে ছবির মডেল হয়ে গেলেন তিনি…নীলি আপু,রাহি আপু আর চিত্রা আলপনা আকঁছে… চিত্রার পিঠ থেকে শাড়ি সরে গেছে সেদিকে খেয়ালই নেই তার।মেয়েটা এতো বেখেয়ালি কেনো?? নীলি আপুর ছোট চুলগুলো আটকে দেওয়ার দায়িত্ব রোহন ভাইয়ার…বেচারা পাশে চুলের কাটা হাতে বসে আছে… কিভাবে লাগাবে বুঝতে পারছে না নয়তো বা লজ্জা পাচ্ছে খুব।।আমিও খুশি মনে নিচের দিকে হাঁটা দিলাম…..আল্পনা আঁকতে ইচ্ছে করছে খুব!!সিড়ি শেষ করে আঙ্গিনায় পা রাখতেই সাহেল ভাইয়াকে চোখে পড়লো…উনার দিকে এগোতে নিতেই দেখি চিত্রা উনার পেছন ছুঁটছে আর তুমুল গতিতে ঢেকে চলেছে। সাহেল ভাইয়া তুমুল বিরক্তি নিয়ে পেছন ফিরে তাকালেন-
.
কি সমস্যা তোমার?? অলওয়েজ চেঁচাও কেন??
.
চেঁচালাম কই?? আমি তো আপনাকে ডাকলাম।(মুখ গোমড়া করে)
.
ডেকে উদ্ধার করেছেন আমায়!! এখন দয়া করে বলবেন?এই অনুগ্রহ করার কারণ?(হাত জোড় করে)
.
ভাইয়া দেখুন না সাকিব ভাইয়া আমাকে কাল থেকে ডিস্টার্ব করছে।।
.
চিত্রার কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালো সাহেল ভাইয়া তারপর বিরক্ত মুখে সাকিব ভাইয়াকে ডেকে উঠলেন।।সাকিব ভাইয়া পাশে এসে দাঁড়াতেই মুখ বাঁকালো চিত্রা।সাকিব ভাইয়া সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বলে উঠলেন-
.
জি ভাই?কোনো দরকার?
.
তুই নাকি চিত্রাকে কাল থেকে ডিস্টার্ব করছিস?কেনো রে?প্রেমে টেমে পড়েছিস?(ভ্রু কুচঁকে)
.
না মানে আসলে ভাই…(মাথা চুলকে)
.
এতো তুতলানোর কিছু নেই। চিত্রা?(চিত্রার দিকে তাকিয়ে) ও তো তোমাকে পছন্দ করে…তোমাকে ইম্প্রেস করার চেষ্টা করছে এটাকে ডিস্টার্ব বলতে পারো না।।বেচারা এতো ট্রাই করছে ইম্প্রেস হয়ে গেলেই তো পারো বোন…এই সাকিব?ওকে প্রোপোজ কর…মানা করে দিলে আর ট্রাই মারিস না…বুঝিসই তো সানশাইনের বান্ধবী…আর যদি রাজি হয়ে যা তো একটা ঠান্ডা কোক খাওয়াস তো আমায়….বড্ড গরম পড়েছে রে…
.
কথাটা বলেই ক্যামেরা চেইক করতে করতে উল্টো পথে হাঁটা দিলেন উনি।সাকিব ভাই মুচকি হাসছেন আর চিত্রা হতবাক।তাকে দেখে মনে হচ্ছে হৃদয়ভঙ্গ হয়েছে তার…এমটা আশা করে নি সে।।আমি একটু এগিয়ে গিয়ে গলা খাকারি দিয়ে ডেকে উঠলাম-
.
এই যে মিষ্টার..
.
সাহেল ভাইয়া পাশে তাকালেন। আমায় দেখে মুচকি হেসে পাশে দাঁড়িয়েই বলে উঠলেন-
.
হ্যালো সানশাইন।তোমার প্রকোপে আমি ঘেমে হয়রান….আজ এতো রোদ কেন গো??
.
উনার কথায় হালকা হাসলাম আমি।।উনি পাঞ্জাবির কলার ঝেড়ে আমার দিকে তাকিয়েই বলে উঠলেন-
.
মাথা ব্যাথা নাকি তোমার সানশাইন??মুখটা শুকনো লাগছে!!
.
হ্যা হালকা!!
.
শুভ্রকে ডাকবো নাকি??সারিয়ে দিবে একদম(দুষ্টু হাসি দিয়ে)
.
উনার হাসিতে লজ্জা পেয়ে গেলাম আমি। কোনোরকমে বলে উঠলাম-
.
আমার মাথা ব্যাথায় উনার কি কাজ??
.
উনি হাসলেন।আমি আবারও বলে উঠলাম..
.
কাল থেকে দেখছি ছবি তুলছেন।এতো কিসের ছবি তুলছেন শুনি??
.
সবকিছুর ছবিই তো তুলছি।তোমার ছবিও তুলবো.?(কিছু একটা ভেবে) নাহ্ থাক।
.
কেনো??
.
উনি আমার কথার জবাব না দিয়েই বলে উঠলেন-
.
কয়েকবছরের জন্য দেশের বাইরে চলে যাচ্ছি তাই দেশটাকে আর কাছের মানুষগুলোকে ক্যামেরা বন্ধী করে নিয়ে চলেছি।।তাছাড়া আমি এমনিতেও ছবি তুলতে পছন্দ করি।ভার্সিটিতেও তো আমার হাতে,কাঁধে, ব্যাগে সবসময়ই ক্যামেরা থাকে…তুমি হয়তো খেয়াল করো নি।।শুভ্রকে রেখে আর আশেপাশের দিকে তাকানোর সময় আছে তোমার?(মুচকি হেসে)
.
ছি ভাইয়া!!আমি উনাকে দেখতে যাবো কেন??আর আপনি দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন মানে??
.
স্কলারশিপের জন্য এপ্লাই করেছিলাম হয়ে গেছে।তাই যাচ্ছি ঘুরে আসি।।তোমার জন্য একটা গিফ্ট আছে সানশাইন যাওয়ার দিন দিয়ে যাবো।নিবে তো??
.
জ..জি অবশ্যই।কিন্তু আমার জন্য কেনো?(অস্বস্তি নিয়ে)
.
উনি হাসলেন।প্রসঙ্গটা পাল্টে দিয়ে বলে উঠলেন-
.
পুকুরের পাশের ছবিগুলো অস্থির হয়েছে বুঝলে সানশাইন??সকালের প্রথম রোদের প্রতিফলন…ওদিকটায় ছবি তোলা হয় নি।।আমি যাচ্ছি তুমি থাকো!!
.
?
.
চারদিকে রমরমা পরিবেশ।আজ আপুর বিয়ে ভাবতেই ফুরফুরে লাগছে।লাল রঙের শাড়ি পড়েছি আজ…হাতে লাল চুড়ি। ঢালা ভর্তি ফুল নিয়ে আঙ্গিনায় বের হতেই থমকে গেলাম আমি।আমার সাথে সাথে দাঁড়িয়ে পড়লো রহিমা খালাও।কৌতূহল নিয়ে বলে উঠলেন-
.
কি হইছে ছুডু আম্মা?খাড়ায় পড়লেন ক্যান?
.
সামনে দেখো ওই রাজপুত্র ছেলেটি…বুকটা ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে আমার।
.
রহিমাখালার হাতে ফুলের টুকরিটা দিয়েই বুকে হাত দিয়ে জোড়ে শ্বাস নিতে লাগলাম আমি।শুভ্র ও লাল শেরওয়ানি আর ঘিয়া ধুতি পড়েছেন আজ।সিল্কি স্ট্রেট চুলগুলো পড়ে আছে কপালে…হাতে ব্র্যান্ডেড ঘড়ি।।এই অল্পতেই কি অসম্ভব সুন্দর লাগছে আমার।বুকে চিনচিন ব্যাথা করছে যেনো।।মাথাটা ঝিমঝিম করছে।।রহিমা খালা ভয়ার্ত কন্ঠে বলে উঠলেন-
.
কি হয়ছে আম্মা? ঠিক আছেন গো?
.
নাহ..রহিমা খালা। একদম ঠিক নেই আমি।এই লাল পাঞ্জাবী পড়া ছেলেটি(বুকে হাত দিয়ে) আমার এখানটায় খুব ব্যাথা দিয়েছে গো।।
.
আমার কথায় আটকে উঠলেন রহিমা খালা…ফিসফিস করে বলে উঠলেন –
.
কন কি আম্মা?কাউরে কইছুন?
.
আমি উত্তর না দিয়ো বললাম। আমায় রুমে দিয়ে আসো তো রহিমা খালা।একটু শান্তিতে নিঃশ্বাস ফেলবো।রহিমা খালা আমায় রুমে দিয়ে আসতেই দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম আমি।।মাথাটা ভনভন করছে আমার…. সবকিছু কেমন ফাঁকাফাঁকা লাগছে আমার।আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেই পারি নি।যখন ঘুম ভাঙলো তখন চারদিকে নিস্তব্ধতা…. বিয়ে বাড়িও কি এতো নিস্তাব্ধ হতে পারে??বিয়ে পর্ব কি তাহলে শেষ?সবাই কি ঘুমিয়ে পড়েছে?কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?ইশশ…একটা ঘড়ি দেখতে পেলে বেশ হতো।।এসব ভাবতে ভাবতে দরজা খুলে বাইরে বের হতেই আমি হতবাক।।বাড়ির আঙিনায় সবাই বসে আছে চুপচাপ।সবার চোখ-মুখে গম্ভীরতার ছাপ।শুভ্র ভাইয়ার মুখটায় শুধু রাগের চিন্হ আর এলাকাবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা।।আমাকে দেখতে পেয়েই সবাই গুঞ্জন শুরু করলো।।মা এসে টেনে মামুর পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন।মামু গম্ভীর শান্ত মুখে বলে উঠলেন-
.
রোদ মা?শুভ্র কি সত্যি তোমার সাথে অসভ্যতামো করেছে?রহিমা আর মজিদ আমাদেরকে ব্যাপারটা বলেছে তবু আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাইছি।
.
মামুর কথায় আমি হতবাক।শুভ্র ভাই অসভ্যতামো করেছে আর আমার সাথে?? কখন?? আমি কনফিউসড হয়ে বলে উঠলাম-
.
মামু?শুভ্র ভাইয়া আমার সাথে অসভ্যতামো করে….
.
এটুকু বলতেই রহিমা খালা হুংকার দিয়ে বলে উঠলেন-
.
কি কন সাহেব?মাইয়া মানুষ কি এসব মুখে কইবো?তাও এত্তোগুলান মানুষের সামনে?আমি আর মজিদ ভাই নিজে দেখছে এই পোলা রে ছুডু আম্মার বুকে হাত দিতে…ছুডু আম্মায় তো দুক্কুও পাইছে এইজন্যই তো এত্তোক্ষন দরজা বন্ধ কইরা বইসা আছিলো।শুধু আমরা ক্যান?এই কমলার মা তুমিও দেখছো না??(চোখ রাঙিয়ে)
.
হ আমিও দেখছি…
.
এরপরও আমাগো কথা বিশ্বাস হইতেছে না?? মাইয়ারে সবার সামনে এসব জিগানো কি ঠিক?
.
সাথে সাথে গ্রামের লোকদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা দেখা দিলো।কেউ কেউ বলেও ফেললেন-“না ঠিক না।এইসব অইতো না।।সরকার বাড়ির মাইয়ার লগে পুন্টামী করবো আর ছাইড়া দিমু তা হয়তো না”
.
এদের কথায় আমি স্তব্ধ।কোথা থেকে কোথায় চলে গেছে এরা?আমার বুকে ব্যাথার কথাটাকে এতোটা বিশ্রীভাবে সবার সামনে আনা হবে জানলে…. আড়চোখে শুভ্র ভাইয়ার দিকে তাকালাম উনার চোখে পানি টলমল করছে…রাগে চোখমুখ লাল….আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন উনি-
.
রোদ?তুমি কিছু বলবে না?
.
উনার এই একটা কথায় চোখ ফেটে কান্না পেয়ে গেলো আমার।।কতোটা চাপা অপমান,,কষ্ট আর রাগ নিয়ে কথাটা বলেছেন উনি!! আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছিলো…”উনাকে ঘিরে এসব কথা বলো না প্লিজ!! উনি ওমন নন” কিন্তু গলা দিয়ে স্বরই বের হচ্ছে না আমার।এই সাডেন শকটা শরীরে ঝিম ধরিয়ে দিয়েছে আমার।।চোখ দিয়ে পড়ে চলেছে কিন্তু গলা স্তব্ধ…. বড্ড তেষ্টা পেয়েছে আমার।ঠিক তখনই পাশ থেকে বলে উঠলেন রহিমা খালা-
.
সাহেব?ছুডু আম্মায় কানতাছে এইডা দেইখাও বিশ্বাস হইতাছে না আপনার??
.
আমি এবার সাহস নিয়ে কিছু বলতে যাবো তার আগেই আম্মু আমার হাত ধরে টেনে ঘরে নিয়ে এলো।।ঘরে এনে বিছানায় ছুঁড়ে মারলো আমায়…আমি উঠে বসতেই গালে জোড়ে সোড়ে চড় বসিয়ে দিলো।আমি গালে হাত দিয়ে মার দিকে তাকাতেই প্রচন্ড রাগ নিয়ে বলে উঠলেন উনি-
.
শুভ্র এমন ছেলে নয় রোদ এটা আমি জানি।ও এমন কিছু করতেই পারে না…তবুও যদি কিছু করে থাকে তাতে তোর দোষই আছে নিশ্চয়।সুযোগ না দিলে সে এমনটা করবে কিভাবে শুনি??নির্লজ্জ মেয়ে…
.
কথাটা বলেই বেরিয়ে গেলো মা।এবারও কিছু বলার সুযোগ পেলাম না আমি।।মা কি বাইরে থেকে দরজাটা লাগিয়ে দিলো??প্রায় একঘন্টা পর বাবার সাথে একজন বৃদ্ধ করে লোক এলেন…গায়ে সাদা পাঞ্জাবী… মাথায় টুপি।।তার কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারলাম লোকটি কাজি।।কি অদ্ভুত ভাবে কিছু বুঝে উঠার আগেই বিয়ে হয়ো গেলো আমার!! সামন্য ভুল বোঝাবুঝিতেই জীবনটা কোথায় গিয়ে আটকে গেলো আমার।।চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ক্রমাগত।।একবার আপু আর চিত্রা রুমে ঢুকার চেষ্টা করেছিলো…তাদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে মা।।নিজেকে কোন নাটকীয় উপন্যাসের পটভূমি মনে হচ্ছে আমার!!এভাবেও বিয়ে হয়??এটা কি বাস্তব নাকি স্বপ্ন??
.
#চলবে…

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ