Sunday, October 5, 2025







তোকে চাই❤(সিজন-২)part: 61+62

তোকে চাই❤(সিজন-২)part: 61+62
#writer: নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤

?
রাত ১ টা। আমি বই কোলে নিয়ে মুখ ফুলিয়ে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর পর করুণ চোখে সোফার দিকে তাকাচ্ছি। আমার করুণ চাহনীকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করে চলেছেন শুভ্র। ল্যাপটপের পাশেই কাঠের স্কেল! আমি শুয়ে পড়ার কথা বললেই সেই কাঠের স্কেল দিয়ে মারতে উদ্যত হন উনি।৷ আমার একটাই অপরাধ উনার দেওয়া পড়াগুলো কমপ্লিট করি নি আমি। যে পড়াগুলো এক্সাম শুরু হওয়ার আগে একঘন্টায় মুখস্থ করে ফেলি সেই পড়াটায় আজ সারাদিন ধরে পড়েও আয়ত্ত করতে পারি নি। আয়ত্ত তো দূরের কথা ইংলিশ ওয়ার্ডগুলোই মাথায় ঢুকাতে পারি নি আমি। এটা কি আমার দোষ? কখনোই আমার দোষ নয়। এই কথাটায় সেই কখন থেকে বুঝানোর চেষ্টা করছি আমি। অফিস থেকে ফিরে আমার পড়া নিতে গিয়ে আমার আগেই ফটফট করে বলে দিয়েছেন উনি,
— পড়াটা পারবে কিভাবে? শিটটা টাচ করেছিলে?(আমি কিছু বলতে চাইলে) স্টপ রোদ, তোমাকে কষ্ট করে বলতে হবে না আমিই বলছি। আমি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর ৪ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত মালিকাকার সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে কদম ফুল, হিজল ফুল পেড়েছো। ৫ টায় ভাইয়া আর বউমনির সাথে হাঁটতে বেরিয়ে হাবিজাবি খেয়ে ফিরেছো ঠিক ৭ টায়। ৭ টা – ৮ টা দিদার সাথে গল্প করছো। ৮ থেকে ৮ টা ২০ এই বিশ মিনিট শীটের পাতা উল্টিয়েছো,, আমি শিউর একটা সেনটেন্সও মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখো নি তুমি। তারপর ৯ টা পর্যন্ত চিত্রার সাথে ফোনে কথা বলেছো। ৯ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত টিভিতে গান ছেড়ে নাচানাচি করেছো। ১০ টা থেকে ১১ টা ৩০ পর্যন্ত ফোনে ব্যস্ত থেকেছো। আর আমি বাসায় ফিরার পর আমার সাথে খাওয়া-দাওয়া করে এখন এখানে দাঁড়িয়ে আছো। কি ঠিক বললাম না?(ভ্রু নাঁচিয়ে)
আমি শুধু অবাক চোখে তাকিয়েই ছিলাম তখন। এতো টাইম মেইনটেইন করে তো আমারই মনে নেই তাহলে উনি কিভাবে? কিছুক্ষণ চিন্তাভাবনা করে উনার দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে কিছু একটা বলতে যাবো ঠিক তখনই গম্ভীর স্বরে বলে উঠেছিলেন,
— নো ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল রোদপাখি। আই এম অলওয়েজ আ স্ট্রিক্ট টিচার। সো, চুপচাপ গিয়ে পড়তে বসো। পড়া কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত ঘুমের নাম মুখে নিবে না। গো…
উনার সেই কথার ফলশ্রুতিতেই এখন আমি বই কোলে বসে আছি। কিন্তু পড়া নামক জিনিসটা মাথায় ঢুকছেই না। কিছুক্ষণ থম ধরে বসে থেকেই বই আর শীটগুলো পাশে রেখে উঠে দাঁড়ালাম আমি। উনি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই দৌঁড়ে গিয়ে উনার কোলে বসে পড়লাম আমি। আমার বিহেভিয়ারে উনি যেনো আকাশ থেকে পড়লেন। অবাক চোখে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলেন,
— এসব কি রোদ? উঠো!
আমি উনার বুকে মুখ গুঁজে আরাম করে বসে ধীর কন্ঠে বলে উঠলাম,
— না।
— না মানে? রোদ তোমার পড়া কমপ্লিট হয় নি।
— না হোক। আমি এখন ঘুমাবো। একদম ডিস্টার্ব করবেন না।
— রোদ। কোল থেকে উঠে গিয়ে পড়তে বসো।
— না। পড়বো না। আর আপনার কোল থেকেও উঠবো না। বিছানায় বসলে ভয় লাগে।
আমার কথায় ভ্রু কুঁচকালেন উনি। কপাল কুঁচকে বলে উঠলেন,
— কিসের ভয়?
— আপনার ভয়।
— আমাকে ভয় পাচ্ছিলে? তো এখন যে একদম কোলে উঠে বসে আছো। এখন ভয় লাগছে না?
— না লাগছে না। যে জিনিসটা দূর থেকে ভয় লাগে সেটা কাছ থেকে ভয়ঙ্কর লাগে না। যেমন দূর থেকে মনে হচ্ছিলো এই বুঝি আপনি রেগে গিয়ে চড় বসাবেন গালে। কিন্তু এইযে আমি আপনার এতো কাছে অথচ এখন আপনি তেমন কিছুই করবেন না। কারণ আমি জানি আমি যদি আপনার খুব কাছে থাকি তাহলে আপনি রেগে থাকতে পারেন না।
আমার কথায় হেসে উঠলেন শুভ্র। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলেন,
— ভালোবাসি পিচ্চি।
আমিও হাসলাম। উনার কথার উত্তরে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ উনার বুকের সাথে মিশে গেলাম। উনি কানের কাছে ফিসফিসয়ে বলে উঠলেন,
— যাও, বিছানায় গিয়ে ঘুমাও। আমার কাজ আছে।
— উহু।
— কি উহু?
— এখানেই ভালো লাগছে। এখানেই ঘুমাবো। সরবো না।
উনি সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ আমার দিকে তাকিয়ে থেকেই ল্যাপটপটা বন্ধ করে দিলেন। কপালে গভীরভাবে চুমু দিয়ে বলে উঠলেন,
— ওকে ঘুমাও।
দেখতে দেখতে কেটে গেলো আরো ছয় ছয়টি মাস। এই ছয় মাসে বিবাহিত জীবন হিসেবে শুভ্রর পড়াশুনো নিয়ে প্যারা ছাড়া আর কোনো কিছুই তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। তবে হ্যাঁ ছয়মাস আগের রুহি আপু আর এখনকার রুহি আপুর মাঝে বিরাট তফাৎ। আগে ছিলো শুকনো বাচ্চা টাইপের মেয়ে আর এখন একদম মোটো গুলুমুলু টাইপ মেয়ে। এখন আটমাস চলছে ওর। মামানি তো এখনই শপিং করা শুরু করে দিয়েছেন। খেলনায় খেলনায় পুরো ঘর বাড়ি ভরিয়ে তুলছেন সবাই। শুভ্রর উৎসাহও কম নয়। সবার মাঝে অভ্র ভাইয়ার মনটাই বেশ খারাপ। বেচারা টেনশনে টেনশনে শুকিয়ে গিয়েছেন একদম। আপুর হাতে-পায়ে পানি এসে অবস্থা বেশ খারাপ। একা হাঁটাটাও তার জন্য দুঃসহ হয়ে উঠেছে আজকাল। ব্যাপারটায় আমিও বেশ চিন্তিত। কখন কি হয়ে যায় কে জানে? দু’দিন আগেই সিমিস্টার ফাইনাল শেষ হলো আমার। এবার থার্ড ইয়ারে উঠবো। শুভ্রর ছয় মাসের যন্ত্রণা যে কতোটুকু কাজে লাগবে আল্লাহ মালুম। বিকেলে আপুর সাথে খানিকক্ষণ গল্প করে রুম গোছাচ্ছিলাম। হঠাৎ কোথা থেকে শুভ্র এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন আমায়। ঘাড়ে মুখ গুঁজে ধীর কন্ঠে বলে উঠলেন,
— সাহেল আসছে।
আমি উনার শার্ট ভাঁজ করতে করতে বললাম,
— তাই নাকি? দারুন তো। আপনার জন্য তো ঈদ লেগে গেলো মাষ্টার মশাই।
উনি হাসলেন। ঘাড়ে একটা চুমু দিয়ে টি-শার্টটা হালকা উঠিয়ে শক্ত করে কোমর চেপে ধরে বলে উঠলেন,
— সাথে ওর বউও আসছে।
আবার হাতটা থেমে গেলো আমার। উনার স্পর্শে শিহরিত হয়ে কিছুটা অবাক হয়েই বলে উঠলাম,
— বিয়ে করেছেন নাকি? বাহ্ শেষমেশ কথাটা রাখলেন উনি। না জানিয়ে হুট করেই বিয়ে করে নিলেন। তো? কবে করলেন বিয়ে?
শুভ্র আমার ঘাড়ে আরেকটা চুমু দিয়ে আমাকে ছেঁড়ে দিয়ে ড্রেসিন টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। টাইয়ের নাটটা ঢিল করতে করতে বলে উঠলেন,
— ওর বউ প্রেগনেন্ট রোদপাখি।
শুভ্রর বলা কথাটা কানে বাজতে লাগলো আমার। আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। মুখটা যেনো অটোমেটিকলি “হা” হয়ে গেছে আমার। মাথায় শুধু একটা প্রশ্নই ঘুরছে, “কেমনে কি? ”
#চলবে…
(পার্ট ছোট হওয়ার জন্য সরি!)
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


#তোকে চাই❤
……. (সিজন-২)
#writer: নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part: 62
?
— প্রেগনেন্ট মানে? এতো তাড়াতাড়ি? মানে,, আসলে,,, কেমনে কি?
আমি কৌতূহলে সোজা দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না অথচ শুভ্রর মুখ ভাবলেশহীন। উনি শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে আমার দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে বলে উঠলেন,
— দেখছো? আমার পরে বিয়ে করে বাচ্চার বাবা হয়ে যাচ্ছে সবাই। আর আমি?
উনার কথায় মেজাজটায় খারাপ হয়ে গেলো আমার৷ আমি কি জিগ্যেস করছি আর উনি বলছেন টা কি? অদ্ভুত! দু তিনবার জোড়ে জোড়ে শ্বাস টেনে নিয়ে নিজেকে শান্ত করে বলে উঠলাম,
— একদম কথা পেঁচাবেন না। যা জিগ্যেস করেছি তার উত্তর দিন। বিয়ে কবে করলেন? আর প্রেগনেন্ট কিভাবে!
উনি অবাক হওয়ার চেষ্টা করে চোখ বড় বড় করে তাকালেন। ঠোঁটের কোণে দুষ্ট হাসি ঝুলিয়ে বলে উঠলেন,
— প্রেগনেন্ট কিভাবে সেটা মুখে কিভাবে বলবো রোদপাখি? তুমি যদি চাও তো..
এটুকু বলতেই বিছানা থেকে বালিশ নিয়ে উনার মুখের উপর ছুঁড়ে মারলাম আমি৷ চোখ রাঙিয়ে বলে উঠলাম,
— চুপপপপ! একদম চুপ। ফালতু কথা না বলে, আসল কথাটা বলুন কবে করলো বিয়ে?
উনি বালিশ হাতে নিয়ে হাসতে হাসতে বিছানায় গিয়ে শুলেন৷ আমার হাতটা টেনে পাশে বসিয়ে মিষ্টি হেসে বলে উঠলেন,
— আগে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে একফালি স্বর্গ এনে দাও আমায়। তারপর বলছি।
আমি ধীরে ধীরে উনার চুলে হাত বুলাতেই চোখদুটো বন্ধ করে নিলেন উনি। আমার দৃষ্টি উনার মুখটাতে স্থির। যতবার উনার দিকে তাকাই ততবারই কেনো জানি বুকটা কেঁপে উঠে খুব। মনে হয় এই বুঝি হারিয়ে ফেললাম৷ এই বুঝি শেষ হলাম আমি! উনি কিছুক্ষণ চুপচাপ শুয়ে থেকে চোখ বন্ধ করেই বলে উঠলেন,
— চিত্রার বিয়ের কিছুদিন পরই বিয়ে করে নিয়েছে ও। প্রায় সাড়ে পাঁচমাস কি ছয়মাস তো হবেই। বউ কেমন দেখতে জানি না। তবে, সাহেল যেহেতু পছন্দ করেছে স্পেশাল কিছু নিশ্চয় আছে। মেয়েটার নাম সরি ভাবির নাম হলো নাবিলা। সাহেল বলেছে, বউ দেখলে নাকি সারপ্রাইজড হয়ে যাবো আমি তাই ছবি পাঠানো চলবে না তাছাড়া, ছবি দেখার ইন্টারেস্টও আমার ছিলো না। আর প্রেগনেন্সির বিষয়টি ওরা প্ল্যানিং করে করে নি। ইউ নো, এক্সিডেন্টলি। তবে সাহেল অনেক হ্যাপি সাথে আমিও হ্যাপি। দু দুটো চ্যাম্প আসছে বলে কথা। আমি তো ডাবল চাচ্চু হয়ে গেলাম রোদু।
কথাটা বলেই উল্টো হয়ে শুয়ে শক্ত করে কোমর জড়িয়ে ধরলেন উনি। পেটে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে উঠলেন,
— তোমার বিশ বছর চলছে তাই না, রোদু? কিছুদিন পর আমাদের ঘরেও ছোট্ট প্রিন্সেস আসবে দেখো। একদম আধো আধো গলায় ‘”বাবা” বলে ডাকবে আমায়। ছোট ছোট হাতে গলা জড়িয়ে ধরবে। এখন তো তোমার এই ছোট্ট পেটে জায়গায় হবে না। আমার প্রিন্সেসের কষ্ট হবে তো। তাই আগে ঝটপট আরেকটু বড় হয়ে নাও…কেমন?
আমি কিছু বললাম না। চুপ করে বসে আছি। মাথায় ঘুরছে সাহেল ভাইয়ের বউয়ের কথা। আচ্ছা দেখতে কেমন হবে মেয়েটা? অনেক সুন্দরী? নাকি মোটামুটি সুন্দরী? অহংকারী ধরনের হবে কি? বিদেশে থাকে নিশ্চয় সবার সাথে কথা বলতেই বিরক্ত হবে সে!! কথাটা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আমি। উনি পেটে নাক ঘষতে ঘষতে বলে উঠলেন,
— এতো চিন্তা করতে হবে না। ওরা আজকেই আসছে। দু’দিন আমাদের বাড়ি থাকবে তারপর সাহেলদের বাড়ি যাবে। সাহেল তো পার্মানেন্টলি চলে আসছে এবার। এখানেই একটা ব্যবসা শুরু করবে ভাবছে। বিদেশে আর ভালো লাগে না ওর। দেশের মাটির গন্ধটা বড্ড টানে।
কথাগুলো বলে মাথা তুলে তাকিয়েই বলে উঠলেন উনি,
— এই? তুমি ভার্সিটি যাবে না?
— হুম যাবো। কিন্তু আপনি এসময় ফিরলেন কেন?
— এমনি চলে এলাম। ভালো লাগছিলো না। তুমি ভার্সিটি যাও…গো!
?
পলাশ স্যারের ক্লাসে পাশাপাশি বসে আছি আমি আর চিত্রা। স্যার লেকচার দিচ্ছেন আর আমরা দু’জন ফিসফাস করছি। আমাদের ফিসফাসের প্রধান কারণ হলো সাহেল ভাইয়ার প্রেগনেন্ট বউ।৷ আমরা যখন সাহেল ভাইয়ের অনাগত সন্তানকে নিয়ে ব্যস্ত ঠিক তখনই পলাশ স্যার গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন,
— রোদেলা, চিত্রা স্ট্যান্ট আপ!
স্যারের ধমকে ভয়ে ভয়ে উঠে দাঁড়ালাম দু’জনেই। স্যার একটু হেসে বলে উঠলেন,
— কি ব্যাপার? আমাদের ভার্সিটির সবচেয়ে স্ট্রিক্ট দুজন স্যারের ওয়াইফরা ক্লাসে বসে গল্প করছে। ডিসিপ্লিন ব্রেক করছে….স্যারদের কি ব্যাপারটা জানানো উচিত?
কথাটা শুনেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো আমার। সামনে রাখা বইটা নিয়ে স্যারের মাথায় বাড়ি দেওয়ার ইচ্ছেটাও প্রবল হয়ে উঠলো মুহূর্তেই। আরে, আমরা কি প্রাইমারি তে পড়ি নাকি যে বাসায় বিচার দিবে? আজব! কিন্তু রাগটাকে প্রশ্রয় না দিয়ে চিত্রার পায়ে জোড়ে একটা পাড়া দিয়ে অসহায় ফেইস নিয়ে বলে উঠলাম,
— এক্চুয়েলি স্যার, চিত্রার প্রচুর পেট ব্যাথা করছে। ভয়ানক ব্যাথা। সেটাই বলছিলো আমাকে। ওকে নিয়ে আমি বাইরে যাই স্যার? প্লিজ?
আমার কথায় চিত্রা অবাক চোখে তাকালো। নিজের পেটে হাত রেখে একবার পেটের দিকে তাকিয়ে মুখ তুলে আমার দিকে তাকালো। তারপর আবারও মুখ ঘুরিয়ে স্যারের দিকে তাকালো সে,
— বলো কি? শিশির স্যারকে ফোন দিতে হবে? দিবো?
— নাহ। একদম না। আই মিন আমাদের কাছে ফোন আছে। আপনি কেন শুধু শুধু কষ্ট করবেন? উই উইল ম্যানেজ স্যার। আসি?
— আচ্ছা, আচ্ছা। জলদি যাও…
— থেংকিউ স্যার।
ক্লাস থেকে বেরিয়ে মাঠের একপাশে বটতলায় বসেই দু’জনে ফিক করে হেসে উঠলাম। হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাই টাইপ অবস্থা। চিত্রা কোনোরকম হাসি থামিয়ে বলে উঠলো,
— আজ নিয়ে চতুর্থ বার পলাশ স্যারকে বোকা বানালাম আমরা। এনিওয়ে সাহেল ভাইয়াকে নিয়ে কি জানি বলছিলি? বিয়ে করেছেন মানে কি? তা নাহয় করলো। বিয়ে করতেই পারেন। আজকাল বিয়ে করাটা কোনো ব্যাপার না। স্বাভাবিক। কিন্তু বাচ্চা!! এটা কেমনে দোস্ত? তোর বিয়ের তো একবছরের বেশি হয়ে গেলো তাও তো বাচ্চার “ব” ও কানে এলো না আর সাহেল ভাইয়া এতো পরে বিয়ে করে সরাসরি বাচ্চা?? মাই গড। বউ দেখতে কেমন রে?
— আমি দেখেছি নাকি?
— দেখিস নি? আমার তো এখনই দেখে ফেলতে ইচ্ছে করছে রে রোদ। কেমন হবে কে জানে?
— আজ সন্ধ্যায় আসছে। চল না আমাদের বাড়ি। দারুন হবে…
আমার কথায় মুখ ফুলালো চিত্রা। মুখটা কালো করে বলে উঠলো,
— যেতে দিবে না আমায়। দিনে হলে সমস্যা নেই বাট সন্ধ্যার পর কোথাও যেতে দেয় না আমায়। শাশুড়ীমাকে যদিও রাজি করাই ও কিছুতেই রাজি হবে না।
— ওওওওওওওওও বাহ ‘ও”? তোরা সব কটায় দেখি সো ফাস্ট। আমি এতোদিনেও উনাকে তুমি করে বলতে পারলাম না। আর তোরা ওগো শুরু করে দিছিস।
চিত্রা আমার কথার উত্তর না দিয়েই নিজের মনে বলে উঠলো,
— শুভ্র ভাইয়া তোকে কিছুতেই মানা করে না। আমার তো ধারনা উনি তোর সব কিছুতেই ‘ওকে, ওকে’ বলতে থাকেন। ভার্সিটির সবাই বলে উনি বিশাল রাগী অথচ তোকে একটা ধমকও দেয় না। অদ্ভুত!
— অদ্ভুতের কি দেখলি?উনি না করতে পারেন এমন কোনো কাজ আমি করিই না তো না করবে কিভাবে? উনাকে ছাড়া কোথাও যেতে আমার নিজেরই ভালো লাগে না। যেখানে যাওয়ার হয় উনাকে বলি উনিই নিয়ে যান সেটা সকাল হোক, দুপুর হোক বা মধ্যরাত। এছাড়া নিষেধ করার আর কিছু আছে নাকি?
— তবুও। তুই মানিস আর না মানিস শুভ্র ভাইয়া তোর সব কথায় মেনে নেন। এব্রিথিং। আমি খেয়াল করে দেখেছি। এজ লাইক, তুই যদি এখন একটু মুখ ফুলিয়ে উনাকে বলিস “ভার্সিটির জব ছেড়ে দেন। মেয়েরা তাকিয়ে থাকে আমার ভালো লাগে না। ” দেখবি কালই রেজিগনেশন লেটার জমা দেওয়া শেষ।৷ আর আমার হাজবেন্ড!! পুরোই উল্টো।
— এসব ফাউল চিন্তা তোর মাথাতেই আসতে পারে চিত্রা। কিন্তু আমা…
এটুকু বলতেই ফোন বেজে উঠলো আমার৷ কে ফোন দিয়েছে দেখার আগেই ফোনটা খপ করে কেড়ে নিলো চিত্রা। ফোনটা রিসিভ করে লাউড স্পিকারে দিয়ে মুখ টিপে হাসলো। আমি ফোনটা নেওয়ার বৃথা চেষ্টা করে রাগী চোখে তাকালাম।
ঠিক তখনই ওপাশ থেকে ভরাট কন্ঠে বলে উঠলেন শুভ্র,
— ক্লাস শেষ হয় নি তোমার রোদ? না শেষ হলেও চলে আসো। ভালো লাগছে না। আমি কি তোমায় নিতে আসবো?
— ন নাহ লাগবে না। আমি আসছি।
— ওকে। তাড়াতাড়ি এসো। মিস করছি।৷ আচ্ছা? কিছু লাগবে তোমার? আমি মার্কেটে আছি তোমার কিছু লাগলে বলো নিয়ে আসি। কিছু খাবে? আইসক্রিম, চকলেট, চিপস বা অন্যকিছু?
আমি কিছু বলার আগেই চিত্রা ফট করে বলে উঠলো,
— আমার জন্যও আনবেন ভাইয়য়য়য়য়য়য়া। চকলেট, চিপস, আইসক্রিমমমমম…(হালকা হেসে)
— আরে, শালি সাহেবা নাকি?তোমার জন্য চকলেট, আইসক্রিম না এনে একগুচ্ছ ঘাস আনবো বুঝলে? প্রতিদিন সেই ঘাসে শিশির জমাবে।
— ধেৎ! এটা কি হলো ভাইয়া? কই ভাবলাম ফোন দিয়ে রোমান্টিক রোমান্টিক কথা বলবেন আমি একটু মজা নিবো তা না উল্টো আমাকেই ফাঁসাচ্ছেন? এনিওয়ে, আপনি তো হেরে গেলেন।
— কি রকম?
— সাহেল ভাই বাচ্চার বাপ হয়ে যাচ্ছেন আর আপনি আগে বিয়ে করেও এখনও নতুন জামাইয়ের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন এসব কিছু হলো?
— আমিও সেটাই ভাবছি৷ চিত্রার শিশির যে অন্যের নদীতে ভেসে গেলো, এসব কিছু হলো?
— মানে কি?(অবাক হয়ে)
— মানে তোমার হাজবেন্ড নীল রঙের শার্ট পড়ে আমার ঠিক সামনে নদী নামের একটা মেয়ের হাত ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ইশশ! কি সাংঘাতিক।
— কিহ! সত্যি? ওকে আমি খুন করবো। ( কাঁদো কাঁদো হয়ে)
কথাটা বলতেই হুহা করে হেসে উঠলেন উনি। হাসিমুখেই বলে উঠলেন,
— মজা করছিলাম রে বাবা। বরের প্রতি বিশ্বাস নাই? আমার বউয়ের আন্সার কিন্তু অন্যরকম হতো।এনিওয়ে, রাখছি শালিকা। আমার বউটাকে একটু সেইফলি বাসায় পৌঁছে দিও। একটা মাত্র বউ বলে কথা।
কথাটা বলেই ফোনটা কেটে দিলেন উনি। সাথে সাথেই ব্যাগ নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম আমি। ওর হাত থেকে ফোনটা নিয়েই বললাম,
— বাই দোস্ত। পেছনে দেখ তোর প্যারা আসছে। ইনজয়….
কথাটা বলে বাম চোখটা টিপে দিয়ে উল্টো রাস্তায় হাঁটা দিলাম আমি। পেছন থেকে কানে এলো শিশির স্যারের উদ্ধিগ্ন কন্ঠস্বর,
— চিত্রা? তোমার পেট ব্যাথা? আমাকে বলো নি কেনো? পলাশ স্যার না বললে তো জানতামই না। বেশি ব্যাথা করছে? চলো ডক্টরের কাছে যাই।
কথাগুলো কানে যেতেই মুচকি হাসলাম আমি।৷আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। আকাশে হালকা সাদা মেঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্রমাগত। মনটা বলে উঠলো,
— বেঁচে থাকুক ভালোবাসা। পৃথিবীর প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ুক ভালোবাসার উষ্ণ পরশ। সেই ভালোবাসায় উষ্ণ হয়ে উঠুক আমাদের মানবতা। আবারও শিখি, হিংস্রতাকে দূরে ঠেলে আবারও ভালোবাসতে শিখি আমরা।
?
সন্ধ্যা ৭ টা। উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে থাকায় সম্ভব হয়ে উঠছে না আমার। ক্রমাগত পায়চারী করে চলেছি।শুভ্র সোফায় বসে বসে হাসছেন। উনার হাসি দেখে হাঁটা বন্ধ করে চুপ করে দাঁড়ালাম আমি। চোখ রাঙিয়ে উনাকে কিছু বলবো তার আগেই পেছন থেকে ভেসে এলো পরিচিত এক কন্ঠস্বর,
— হেই সানশাইন? কেমন আছো?
#চলবে…

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


#তোকে চাই❤
……. (সিজন-২)
#writer: নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part: 63
?
সাহেল ভাইয়ার কন্ঠে ঘাড় ফিরিয়ে দরজার দিকে ফিরে তাকালাম আমি। আমি তাকাতেই মুচকি হাসলেন উনি। উনার পেছন থেকে বেরিয়ে এলেন একটি মেয়ে। নিঃসন্দেহে অসম্ভব সুন্দরী একটি মেয়ে। মেয়েটির সাথে চেহারায় কোনো মিল নেই আমার কিন্তু কোথায় একটা খুব মিল। আমি অবাক চোখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি। মেয়েটি ধীর পায়ে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েই বলে উঠলো,
— রোদ! রাইট?
আমি মাথা নাড়লাম। মেয়েটি মিষ্টি করে হাসলো। মাথা দুলিয়ে বলে উঠলো,
— সাহেল না বললেও আমি চিনে ফেলতাম তোমায়। এই কয়েকমাস সাহেলের থেকে তোমার এতো ডেসক্রিপশন শুনেছি যে “রোদ” নামক মানুষটা এখন পুরো মুখস্ত আমার। এর পরেও যদি না চিনতে পারি তাহলে সেটা আমার ব্যার্থতা। (একটু থেমে) তুমি আসলেই অনেক কিউট। সাহেল যেমনটা বলেছিলো তার থেকেও বেশি কিউট!
আমি হাসলাম। হাসিমুখেই বলে উঠলাম,
— আপনি আমার থেকে আরো বেশি কিউট আপু।
আমার কথায় আবারও হাসলেন উনি। শুভ্রর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন,
— শুভ্র? তোর বউয়ের কথাগুলোও কি মিষ্টি রে।
শুভ্রকে “তুই” করে সম্বোধন করায় অবাক হলাম আমি। চোখ বড় বড় করে শুভ্রর দিকে তাকাতেই মুচকি হাসলেন উনি। হাসিমুখেই বলে উঠলেন,
— আমি কিন্তু খুব অবাক হয়েছি। তুই এতোদিন পর? হঠাৎ হারিয়ে গিয়েছিলি আবার হঠাৎই উদয় হলি। তাও এক্কেবারে এই ছাগলটার বউ হয়ে। তারমানে তুই আমার ভাবি? ওহ মাই গড।
আবারও হাসলো মেয়েটি।৷ এই মেয়ে কি হাসি ছাড়া কথা বলতে পারে না নাকি? মেয়েটা হাসিমুখেই বলে উঠলেন,
— হুট করে বাবার পোষ্টিং হয় কোলকাতায় তাই হুট করেই ওখানে চলে যাই। কাউকে বলার সুযোগ হয়ে ওঠে নি। এতোবছর পর দেখা হবে ভাবতেও পারি নি। একদিন হঠাৎ করেই এয়ারপোর্টে এই হিরোর সাথে দেখা হলো। বিয়ের বয়সটাও হয়ে গেছে ছেলেও মাশআল্লাহ ফিট খাওয়ার মতো তাই ভাবলাম বিয়েটা করেই নিই।
ওদের কথা শুনে বুঝতে পারলাম উনাদের পুরোনো পরিচিতি। শুভ্র হয়তো আরো কিছু বলতেন তার আগেই সাহেল ভাইয়া আপুটাকে এক হাতে জড়িয়ে নিয়ে বলে উঠলেন,,
— হয়েছে ম্যাডাম। বাকি গল্প করার জন্য অনেক সময় আছে এখন ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিন। শরীরের নাই ঠিক আর এসেই গল্প শুরু করে দিয়েছে।সানশাইন? আমাদের জন্য কোন রুম? আসলে এতো লম্বা জার্নি করে এসেছি।৷আমারটা বাদ দিলেও নাবিলার রেস্ট দরকার খুব।
— জি ভাইয়া। ওপরের তলায় আমাদের পাশের রুমটায়।
— ওহ থেংক্স। কিন্তু বাকি সবাই কোথায়?
— ভাইয়া আর মামু অফিসে। আপু রুমে রেস্ট নিচ্ছে। দিদা আর মামানি একটু বাইরে গেছেন।(এক নিঃশ্বাস)
আমার কথা শেষ হতেই হেসে উঠলেন সবাই। শুভ্র আমার দু’কাঁধে হাত রেখে মুখে হাসি টেনে বলে উঠলেন,
— একটু নিঃশ্বাস নাও মহারানী। দম ফুরিয়ে যাবে তো। এই সাহেল? তোরা যা…রেস্ট নে।
— ওকে।
?
রুমে বসে টিভি দেখছিলাম। ঠিক তখনই ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলেন শুভ্র। হাত থেকে রিমোটটা ছিনিয়ে নিয়ে টিভিটা অফ করে দিলেন উনি। আমি রাগী চোখে তাকাতেই মিষ্টি হেসে বিছানায় শুয়ে পড়লেন । ডানহাতে আমাকে টেনে বুকের উপর ফেলে শক্ত করে চেপে ধরে বলে উঠলেন,
— টিভিতে কি দেখো? এতো সুন্দর একটা হাজবেন্ড থাকতে কেউ টিভি দেখে? তার থেকে আমাকে দেখো।
আমি নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা চালালাম। উনি আমাকে আরো জোড়ে শক্ত করে চেপে ধরলেন। কিছুক্ষণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে চুপ করে শুয়ে রইলাম আমি। ধীর কন্ঠে বলে উঠলাম,
— সাহেল ভাইয়ার বউকে কেমন লাগলো আপনার?
— ভালো।
— শুধু ভালো? আর কিছু না?
— বলার মতো আর কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। তবে তুমি আর নাবিলা একদম বিপরীত দুটো ক্যারেক্টার তবুও অদ্ভুতভাবে তোমাদের দু’জনের মধ্যে বেশ মিল আছে।
উনার কথায় ভ্রু কুঁচকালাম আমি।
— যেমন?
— তোমাদের স্কিনটোন সেইম। গায়ের রঙের সাথে আরেকটা জিনিস মিলে তা হলো গলায় ওই তিল। আর সবচেয়ে মিল যে জায়গাটা তা হলো হাসি। একদম একরকমভাবে হাসো তোমরা দু’জন। চেহারা মিল না থাকলেও হাসলে কেমন যেন একরকম লাগে দু’জনকে।
— আর অমিল কোনগুলো?
— নাবিলা আমার রোদপাখির মতো এতো রাগী না। একদমই চুপচাপ। আমার বউয়ের মতো এতো বকবক আর শয়তানী বুদ্ধি ওর মাথায় নেই। আমার জানা মতে, আজ যেটুকু কথা বললো সেটাই ওর জন্য সবচেয়ে বেশি কথা বলা। আর আমার বউয়ের ক্ষেত্রে আজকেই তার সর্বনিম্ন কথা বলা। নাবিলা খুবই বুদ্ধিমতি একজন মেয়ে। ভাবনা-চিন্তা এবং ঠান্ডা মাথার মানুষ সে। আর তুমি তো…
— থাক! আর বলতে হবে না। দিন দিন আপনার ঝুলিতে আমাকে নিয়ে প্রবলেমগুলো বেড়ে যাচ্ছে। আমি সত্যিই ফাউল একটা মেয়ে। সেদিক এক্সিডেন্টলি বিয়েটা হওয়ার ফলে লাইফটায় নষ্ট হয়ে গেছে আপনার। ছাড়ুন প্লিজ…!
— কি বলছো এসব রোদ?
— ছাড়ুন আমায়।
— আরে বাবা! হঠাৎ করে কি হলো বলবে তো।
— কিছুই হয় নি। ছাড়ুন আমায়। আসলেই আপনার নাবিলা আপুর মতো বউ দরকার ছিলো। ব্যাপার না, আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি সেটা গ্রেন্টেড বলে আমার পর ওমন গোছালো টাইপ মেয়ে বিয়ে করে নিয়েন। এবার আমি তাড়াতাড়ি মরে…
এটুকু বলতেই আবারও গালে পড়লো শক্ত হাতের এক চড়। আমাকে বুক থেকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে পাশের টেবিল ল্যাম্পটা ছুঁড়ে মারলেন দেয়ালে। মুহূর্তেই ঝনঝন শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে গেলো আমার। আমি স্তব্ধ হয়ে বসে আছি। ল্যাম্পের পাশে রাখা কাঁচের জগটাও ফ্লোরে ছুঁড়ে ফেললেন উনি। ঠিক তখনই দরজার ওপাশ থেকে সাহেল ভাইয়ার কন্ঠ ভেসে এলো,
— শুভ্র? কি হয়েছে?
সাহেল ভাইয়ার কন্ঠ কানে আসতেই জোড়ে নিঃশ্বাস ফেললেন শুভ্র। নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে বলে উঠলেন,
— নাথিং ইয়ার। হাত লেগে ল্যাম্পটা পড়ে গেছে। তোরা রেস্ট নে।
— সিউর?
— ইয়াহ!
সাহেল ভাইয়া দরজা থেকে সরে যেতেই আমার দিকে ফিরে তাকালো শুভ্র। আমি মাথা নিচু করে বসে আছি চুপচাপ। উনি আবারও আমার কাছে এসে বসলেন। হাত টেনে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে বললেন,
— মেরেছি বলে রাগ করেছো?
আমি মাথা নাড়লাম। যার অর্থ, আমি রাগ করি নি। উনি অবাক হয়ে বললেন,
— তবে কি মন খারাপ করেছো?
— উহুম।
— সত্যি রাগ করো নি? কেন রাগ করো নি?কতো জোড়ে মারলাম তোমায়। সরি!
— ইটস ওকে। আমি রাগ করি নি তবে গালে ব্যাথা লাগছে খুব। এতো জোড়ে কেউ মারে? একটু আস্তে মারলেই তো হতো।
আমার কথায় হেসে উঠলেন শুভ্র। হাসি মুখটা হঠাৎই গম্ভীর করে বলে উঠলেন,
— এমন কথা কেনো বলো যে কথায় হার্ট হই আমি। এই কথাটা যদি আমি বলতাম তাহলে কি তোমার ভালো লাগতো বলো? তুমি জানো আমি তোমায় কতোটা ভালোবাসি। তারপরও এমন কথা কেন বলো। তোমার চঞ্চলতা, রাগ,অভিমান এই সব মিলিয়েই তুমি আর এই তুমিটাকেই ভালোবাসি আমি রোদপাখি । আমার ভালোবাসায় কোনো সেকেন্ড অপশন নেই । ফাস্ট এন্ড লাস্ট অপশন দুটোই তুমি। আর আসছে নাবিলার কথা আমি তো জাস্ট তোমাদের মধ্যেকার পার্থক্যটা বলছিলাম রোদপাখি। আর কিছুই না। এখন গাল দেখি…ইশশ একদম লাল হয়ে গেছে। সো সরি! আর হবে না।
কথাটা বলে আমার গালে চুমু দিতে নিতেই সরে গেলাম আমি। শুভ্র অবাক চোখে তাকিয়ে বললেন,
— কি হলো?
— আমি আপনার সাথে রেগে আছি।
— কিন্তু মাত্রই তো বললে যে রেগে নেই।
— এই রাগ চড়ের জন্য নয়। ওটা তো চাইলে আবারও মারতে পারেন। আমাকে চড় মারার অধিকার আপনারই সবচেয়ে বেশি বাট রাগ আমার সে জায়গায় নয় অন্য জায়গায়। সো দূরে থাকুন। আপনার সাথে কথা বন্ধ।
— আরেহ্! কারণটা তো বলবে। নয়তো বুঝবো কিভাবে?
— বুঝতে হবে না।
কথাটা বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম আমি। পেছন থেকে শুভ্রর কন্ঠ কানে এলো,
— রোদ? এই রোদ? শুনো না….
রুম থেকে বেরুতেই সাহেল ভাইয়ার সাথে দেখা। আমাকে দেখেই মুচকি হাসলেন উনি। হাসিমুখেই বললেন,
— শুভ্র কোথায়? ওকে একটু দরকা…
এটুকু বলতেই হুড়মুড় করে বেরিয়ে এলেন শুভ্র। দরজার সামনে সাহেল ভাইয়াকে দেখে খানিকটা অপ্রস্তুত হলেন উনি। জোরপূর্বক একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,
— আরে, সাহেল? তুই এখানে?
— তোর কাছেই এসেছিলাম। চল বাইরে যাবো। সাব্বিররা ক্যাম্পাসে এসেছে দেখা করে আসি।
— আচ্ছা বাট…
— কোনো কিন্তু নয় চল (আমার দিকে তাকিয়ে) আর সানশাইন? নাবিলার দিকে একটু খেয়াল রেখো প্লিজ। এসেও দু’বার বমি করেছে শরীরটা খুবই দুর্বল। রুমে একা আছে অপরিচিত জায়গা একটু চেইক করো, কেমন?
— ওকে ভাইয়া। চিন্তা করবেন না। খেয়াল রাখবো।
সাহেল ভাইয়া শুভ্রকে টেনেটুনে বের করে নিয়ে যেতেই নাবিলা আপুর ঘরে উঁকি দিলাম আমি। আপু বই পড়ছিলেন। আমাকে উঁকি দিতে দেখেই বলে উঠলেন,
— ভেতরে চলে এসো রোদ।
আমি কিছুটা অপ্রস্তুত হলাম। মুখ কাঁচুমাচু করে ভেতরে ঢুকে গেলাম আমি। আমার দৃষ্টি উনার গলায়। শুভ্র উনার গলার তিলটাও খেয়াল করেছে? কথাটা ভেবেই শুভ্রর সবকটা চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে আমার। নিজের রাগ কন্ট্রোল করে বিছানায় গিয়ে বসলাম আমি। আপু বইটা পাশে রেখে সোজা হয়ে বসলেন। বালিশটা কোলে নিয়ে হাসিমুখে বলে উঠলেন,
— এসেছো বেশ করেছো। একা একা বোর হচ্ছিলাম খুব। সাহেল বলেছিলো তুমি নাকি খুব বেশি কথা বলো। কই আমার সাথে তো বলছো না। আমাকে পছন্দ হয় নি তোমার?
— ছি ছি। কি বলছেন আপু? পছন্দ হবে না কেন? আপনি তো অনেক কিউট।
আমার কথায় হাসলেন উনি। আমি আমতা আমতা করে বলে উঠলাম,
— আপু? আপনি প্রেগনেন্ট? কতদিন হলো?
— প্রায় চারমাস।
— ওহ! গ্রেট। আমার মনে হয় মেয়ে হবে। আপনার কি মনে হয় আপু?
— জানি না। তবে আমি আর সাহেল চাই ছেলে হোক। তাহলে তোমার মেয়েকে নিয়ে যেতে পারবো আমাদের বাসায়।
কথাটা শুনেই হেসে উঠলাম আমি।
— আমার যদি ছেলে হয় তখন?
— তাহলে এক বালতি আফসোস তবে আমার মনে হয় তোমার মেয়েই হবে।
কথাটা বলেই থামলেন উনি। কিছুক্ষণ চুপচাপ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলেন,
— শুভ্রকে কতোটুকু ভালোবাসো রোদ?
উনার প্রশ্নে খানিকটা অপ্রস্তুত হলাম আমি।
— জানি না। তবে এটুকু জানি উনাকে ছাড়া শ্বাস নিতে পারবো না।
আমার কথায় হালকা হাসলেন নাবিলা আপু। আমার ডান হাতটা নিজের হাতে নিয়ে একটু চাপ দিয়ে ধরে বলে উঠলেন,
— শুভ্রকে ভালোবাসার জন্য থেংক্স রোদ।
আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাকালাম।বিস্মিত গলায় বললাম,
— মানে?
— তুমি শুভ্রকে ভালোবাসো বলেই সাহেলকে পেয়েছি আমি। তুমি হয়তো জানো না সাহেল তোমাকে কতোটা ভালোবাসে । হয়তো এখনও বাসে। এতে কোনো অভিযোগ নেই আমার কারণ আমি জানি ও আমাকেও প্রচন্ডরকম ভালোবাসে। একটা ছেলে তখনই কাউকে হারানোর ভয় পায় যখন সে কাউকে প্রচন্ডরকম ভালোবাসে আর সাহেলের মনে আমাকে হারানোর ভয়টা প্রবল। তবু আমার কষ্ট হয়,ভীষণ কষ্ট হয়। এই কষ্টটা আমার জন্য নয় কষ্টটা সাহেলের জন্য।আমাদের বিয়ের আগের দিন ওর বলা প্রতিটি কথায় আমার কানে বাজে রোদ। ও বলেছিলো,
” নাবু? পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কষ্টটা কি জানো? পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কষ্টটা হলো কাঁদতে না পারার কষ্ট। আর এই কষ্টটাকে হাসির পেছনে ঢেকে রাখাটা আরো বেশি কষ্টের। এই পৃথিবীতে তারাই সবচেয়ে বেশি অসহায় যারা কাঁদতে পারে না আর আমার তো কাঁদার অধিকারটুকুও নেই নাবু। কিভাবে কাঁদবো বলো? নিজের বেস্টফ্রেন্ডের সুখের পরিবর্তে কি কাঁদা যায়? ওর সামনে ভেজা চোখে কিভাবে দাঁড়াবো আমি? কিন্তু বিশ্বাস করো নাবু, আমারও কাঁদতে ইচ্ছে করে, চিৎকার করে কেঁদে পুরো পৃথিবীকে বলতে ইচ্ছে করে আমারও কষ্ট হচ্ছে, আমিও পুড়ছি, জ্বলছি,শেষ হয়ে যাচ্ছি। জানো নাবু? সানশাইন আর শুভ্রকে একসাথে দেখলে মাঝেমাঝে সানশাইনকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করতো। নয়তো নিজে মরে যেতে ইচ্ছে করতো। কিন্তু তা কি সম্ভব বলো? নিজেকে শেষ করার ক্ষমতা আমার নেই আর সানশাইনকে শেষ করার ক্ষমতা আমার আরো নেই। যে মেয়ের চোখের একফোঁটা জলেই শরীর অস্থির করে আসে তাকে কি করে মারা যায় বলো? আমি তোমাকে ভালোবাসি এই কথাটা যেমন সত্য ঠিক তেমনই সত্য হলো আমি সানশাইনকেও ভালোবাসি। তোমাদের দুজনকে এক পাল্লায় মাপতে পারবো না আমি। তুমি তো তুমিই নাবু। আমার সবটা জুড়েই আছো কিন্তু ওকেই ভুলে যেতে পারছি না আমি। ভুলে যাওয়া কি এতো সহজ বলো? আমি চেষ্টা করছি নাবু, আমাকে একটু সময় দাও। জানি না পারবো কিনা তবু… চেষ্টা করছি। জীবনের প্রথম ভালোবাসা ছিলো ও।প্রথম অনুভূতি। সে যদি আমার স্মৃতি হিসেবে থেকে যায় তোমার কি খুব কষ্ট হবে নাবু? আমার সবটা তো তোমারই….তবু…”
সেদিন আমি বলেছিলাম, না, হবে না। ও আমাকে ভালোবাসে এটাই আমার জন্য বেশি ইম্পোর্টেন্ট। মানুষ যে বলে,ভুল বলে রোদ। সত্যিটা হলো, ভালোবাসা ভুলা যায় না। মনের কোথাও না কোথাও থেকেই যায় সেই অনুভূতি। আমি হ্যাপি যে সাহেল তার জীবনটাকেই আমার সামনে তুলে ধরেছে। কিচ্ছু লুকাইনি। কিচ্ছু না।
নাবিলা আপুর কথায় আমি চরম অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম। কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আমার অস্বস্তি হয়তো বুঝতে পারছিলেন উনি। তাই একটু হালকা হেসে বলে উঠলেন,
— এই যা, তোমাকে অস্বস্তিতে ফেলে দিলাম। সরি বোন। তবে তোমার সাথে কিন্তু আমার বেশ মিল আছে। সেটা কি খেয়াল করেছো?
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই সাহেল ভাইয়া রুমে ঢুকলেন। হাসিমুখে বলে উঠলেন,
— হেই গার্লস, কি করা হয়?
আমরা দু’জনেই মুচকি হাসলাম। নাবিলা আপু বললেন,
— গল্প করা হয়।
সাহেল ভাইয়া হেসে নাবিলা আপুর কপালে হাত রেখে জ্বর চেক করতে করতে বলে উঠলেন,
— বাহ! এখানে এসে সানশাইনের হাওয়া লেগেছে তোমার। বোবার মুখে কথা ফুটেছে।
উনার কথায় হেসে উঠলাম আমি। নাবিলা আপু রাগী চোখে তাকালেন। সাহেল ভাইয়া সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বললেন,
— বমি হয়েছে আরো? শরীর খারাপ লাগছে?
— উহুম। রোদের সাথে গল্প করতে করতে শরীর খারাপের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। এনিওয়ে, তুমি এতো তাড়াতাড়ি ফিরলে যে?
— বউয়ের আদেশ শিরধার্য। বউ যখন বলেছে দশটার আগে রুমে থাকা চাই তো বাইরে কি করে থাকি? এনিওয়ে থেংক্স সানশাইন, নাবিলার…
সাহেল ভাইয়ার কথার মাঝেই দরজায় টোকা পড়লো। তিনজনেই ঘাড় ঘুরিয়ে দরজায় তাকাতেই শুভ্রকে চোখে পড়লো।উনার মুখে মিষ্টি হাসি। আমরা তাকাতেই বলে উঠলেন,
— আসতে পারি?
— আয়। তুই জীবনে নক দিয়ে রুমে ঢুকেছিলি?
— তখন আর এখনের মাঝে পার্থক্য আছে না? এখন আমাদের নাব্বু বেবি আমার ভাবি বলে কথা…প্রাইভেসি আছে না?
শুভ্রর কথায় চোখ গরম করে তাকালেন নাবিলা আপু। রাগী গলায় বললেন,
— চড় না খেতে চাইলে চুপ কর। তুই আমার দেবর সো সাবধানে কথা বল নয়তো কান মলা।
উনার কথার মাঝেই উঠে দাঁড়ালাম আমি। দরজার দিকে হাঁটা দিতেই আমার হাত ধরে ফেললেন শুভ্র। অবাক হয়ে বললেন,
— কোথায় যাও?
আমি হাত ছাড়িয়ে চলে যেতে নিলে আবারও হাত চেপে ধরলেন উনি। সাহেল ভাইয়াদের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,
— তোরা রেস্ট নে। পিচ্চিটা রাগ করেছে আগে রাগ ভাঙাই। বাই গাইস।
কথাটা বলে উনাদের সামনেই কোলে তুলে নিলেন আমায়। পাশাপাশি রুম হওয়ায় দ্রুত ঢুকে গেলেন রুমে। বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বললেন,
— এখনো রেগে আছো?
আমি কিছু না বলে বিছানা থেকে বালিশটা নিয়ে সোফায় শুয়ে পড়লাম চুপচাপ। উনি অবাক চোখে তাকিয়ে আছেন। কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে বলে উঠলেন,
— আজব! এটা কি হলো? আরে এতো রাগ কেনো? কি করেছি আমি? না বললে বুঝবো কিভাবে?
#চলবে…

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ