Sunday, October 5, 2025







তুমি রবে ৪৩

তুমি রবে ৪৩ . . কনকনে শীতের রাত। ব্যালকনিতে বসলে গা হীম হয়ে উঠছে এই শহুরে শীতের আবহাওয়াতেও। আকাশটা বেশ স্বচ্ছ। রাতের নিস্তব্ধতা আর স্বচ্ছ আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা মাঝে মধ্যে, বেশ চমৎকার লাগছে দিয়ার কাছে। নিচের দিকটাতে তার নজর নেই। গত চার ঘন্টা যাবৎ সে কোনো চাদর ছাড়াই বসে আছে ব্যালকনিতে। আর নজর পড়ে আছে আকাশ সীমানায়। আজ দু’দিন হলো সে মাহির সাথেও কোনো যোগাযোগ করে না। আর দিশান! সে মানুষটাও নিজেই ফোন মেসেজ করা বন্ধ করা দিয়েছে। ভালোই হয়েছে এতে অবশ্য। মাঝখান থেকে শুধু শুধু পুরোনো ঘা তাজা করা। রাত প্রায় সাড়ে বারোটার বেশি। দিলরুবা একবার ডাইনিংয়ে এসে মেয়ের রুমের লাইট অন দেখে রুমে আসলো। ব্যালকনি থেকে বাতাস আসছে রুমে। একটু ঠান্ডায় কেঁপে উঠল সে। ব্যালকনিতে মেয়ের আবছায়া দেখতে পেয়ে সেখানে এসে দাঁড়াল। – “রাতগুলো এভাবেই পার করবি?” দিয়া চমকে ফিরে তাকাল মায়ের দিকে। কোনো উত্তর এলো না তার থেকে। দিলরুবা খেয়াল করল মেয়ে নাক টানছে। একটু চুপ থেকে আবার বলল, – “যা ওঠ, গিয়ে শুয়ে পড়। শীতের মধ্যে বসে বসে ঠান্ডা লাগিয়ে নিয়েছিস।” দিয়া এবার হাসলো। দিলরুবা বোধহয় মেয়ের হাসির কারণটা বুঝতে পারল। – “মা আমাকে তুমি আবার সেই আগের মতো অসামাজিক, মাইন্ডলেস বলবে তাই না?” – “এসব কেন বলতে যাব?” – “এই যে দিশানকে আমি…” দিয়া কথা শেষ করল না। দিলরুবা বলল, – “না। আমি মা হয়েও নিজের মেয়ের পছন্দ অপছন্দ কখনো জানতে চাইনি, বুঝতে পারিনি, দাম দিইনি। সেখানে ওই ছেলেটা আমাকে আমার মেয়েকে নতুন করে চিনিয়েছে। আমার মেয়ে কতটা অমূল্য তা ও আমাকে বুঝিয়েছে। আমিই সত্যিই চেয়েছিলাম ওর মতো ছেলেকে আমার মেয়ের স্বামী হিসেবে। ও খাঁটি সোনা ছিল। আর তুই কাচ কাটা হীরা। নিজেকে তুই যে এভাবে শক্ত করতে পারবি তা আমি ভাবিনি।” – “মাহির ওপর তোমার খুব রাগ, না? মা ও অনেক কিছু হারিয়েছে। আর আশফি ভাইয়া ছাড়া আমি জানি ওকে এত বেশি ভালোবেসে আগলে কেউ রাখতে পারবে না। তুমি ওর ওপর রাগ করে থেকো না। ওর দোষ কোথায় বলো?” – “দোষ তো কারোরই নেই। দোষ তোদেরও ছিল না। মাঝখান থেকে সেই তোরা দুজনই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলি। একটু রাগ ছিল ওর ওপর আমার। এখন আর নেই। আমার মেয়ে যেখানে এত বড় মনের পরিচয় দিয়েছে। সেখানে আমি তার মা হয়ে অবুঝ থাকি কী করে?” মায়ের কথা শুনে দিয়া একটু হাসলো। তারপর বলল, – “শীতের মধ্যে বসে আমার ঠান্ডা লাগেনি মা।” – “জানি তো।” দুজনের কণ্ঠস্বরই এবার কিছুটা কম্পন মিশ্রিত।
দিশানকে রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে আশফি। রুমে এসে ঐন্দ্রীকে বিছানায় শুয়ে নীরবে কাঁদতে দেখল সে। কিছু না বলে রুমের মৃদু আলো জ্বেলে টিউবলাইট অফ করে দিলো। এরপর সে একটা মোটা চাদর নিয়ে ব্যালকনিতে কাউচে গিয়ে শুয়ে পড়ল। আশফি কোনো কথা ছাড়াই রুমে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে বিছানার এক পাশে ধপ করে বসে পড়ল। আর ঠিক উল্টো পাশটাতে মাহি মাথা ঝুঁকিয়ে বসে কাঁদছে। সে বুঝতে পেরেছে আশফির উপস্থিতি। আশফি শুনতে পাচ্ছে মাহির নীরব কান্নার আওয়াজও। কিন্ত সব থেকে কষ্টের বিষয় সে নিজে এভাবে কাঁদতে পারছে না। এভাবে সে ভাইয়ের কষ্ট দেখতে পারবে না। তাকে খুব দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হয় সে ভাইয়ের জীবন সুন্দর করে দেবে আর তা না পারলে সে সব ছেড়ে সবার থেকে দূরে কোথাও চলে যাবে। কারণ সে হেরে যাচ্ছে নিজের জীবনের সাথে নিজেই। কাঁদতে কাঁদতে মাহি বিছানার এক পাশটাতে শুয়ে পড়ল। তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও তার নেওয়া হয়ে গেছে। শরীরটা তার ভেঙে আসছে। আর এক ফোঁটাও শক্তি পাচ্ছে না সে বসে থাকার মতো। কিছুক্ষণ পর আশফিও শুয়ে পড়ল বিছানার এক পাশটাতে। দুটো মানুষ আজ চিরজীবনের জন্য পাশাপাশি থাকার সুযোগ পেয়েছে। আজ এত কাছে থেকেও সব থেকে দূরে তারা। কেউ কারো দিকে একবার ফিরেও তাকাল না। উল্টো পাশ হয়ে শুধু শুয়ে রইল দুজনে। প্রায় ঘন্টাখানেক এভাবে পার হলো তাদের মাঝে৷ মাহি ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘন নিঃশ্বাস পড়ছে তার। ঘুমাতে পারেনি আশফি। উঠে এসে রুমটা অন্ধকার করে দিলো। শুধু মাহির পাশে সেন্টার টেবিলে ওয়াক্স লাইট জ্বলছে। ব্যালকনিতে এসে বসলো সে কিছু সময়। চিন্তাভাবনা অনেক। কিন্তু নজর পড়ে আছে মৃদু হলুদ আভাতে জ্বলজ্বল করা মাহির মুখটাতে। অনেকক্ষণ ভাবনার পর একটা সিদ্ধান্তে এসে তারপর রুমে ফিরে এলো সে। বিছানা থেকে ব্ল্যাঙ্কেটটা টেনে মাহির গায়ে উঠিয়ে দিয়ে নিজের পাশটাতে এসে শুয়ে পড়ল। . . – “আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি দিশান।” আচমকা কারো কণ্ঠস্বর পেয়ে দিশান ফোনের স্ক্রিন থেকে চোখ উঠিয়ে পিছে তাকাল। এক সতেজ বেশে লাল আর ফোলা দুটো চোখে তাকিয়ে আছে ঐন্দ্রী। ঘুম থেকে জেগেই সে গোসল করেছে প্রায় এক ঘন্টা যাবৎ। আর দিশান রাতের শেষ ভাগ থেকে ভোর হওয়া অবধি তার আর দিয়ার কথপোকথনের ফোনের কল রেকর্ডস শুনে আর তাদের এক সঙ্গে তোলা কিছু ফটো দেখে সময় পার করে দিয়েছে। ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখল ছয়টা বাজে। চারপাশ আলোকিত। দিশান চাদরটা গায়ে মুড়ে উঠে বসলো। – “তুমি একটু রেস্ট নাও ঐন্দ্রী। একটু পর চা বা কফি যা লাগবে চাচি ওপরে এসে দিয়ে যাবে।” – “আমি রেস্ট নিয়েছি।” দিশান উঠে দাঁড়িয়ে ভীষণ স্বাভাবিক সুরে বলল, – “শুধু আমার ভাইয়াকে হ্যাপি হওয়ার সুযোগটা দাও। আমার ভাইটার জীবনে সুখের মুহূর্তের চেয়ে তোমার জীবনে সুখের মুহূর্ত অনেক। হয়তো হিসাব করলে আমি নিজেও অনেক হ্যাপি মোমেন্ট স্পেন্ড করেছি ভাইয়ার তুলনায়। আমি যে বয়সে উড়ে বেরিয়েছি ভাইয়া সেই বয়সে তার শৈশবের জঘন্য সময়গুলো ভেতরে চেপে রেখে পড়াশোনার পাশাপাশি একটু একটু করে এই পরিবারের সব থেকে বড় দায়িত্বগুলো কাঁধে নিতে শিখেছে। যখন সে একেবারেই বিষিয়ে উঠে তখন সে হঠাৎ সব ছেড়ে ছুড়ে কোথায় যে চলে যায় তা কেউই জানে না। প্রতিটাবার ভাইয়া যখনই এমন করেছে তখন এমন কেউ নেই যে ভয়ে থাকে না। ভয়টা কীসের জানো? যদি আমার ভাইটা আর ফিরে না আসে? আমার ভাইটাকে বুকের কাছের মানুষ করা এত সোজা নয়। তোমার যা প্রাপ্য এ বাড়ির বউ হিসেবে তুমি তার সবই পাবে। শুধু ওদের দুজনকে ভালো থাকতে দাও।” দিশান কথাগুলো বলে রুমের ভেতর হেঁটে চলে এলো। ঐন্দ্রী বলল, – “মাফ করে দিও আমাকে দিশান।” দিশান শুধু শুনল। তবুও কোনো জবাব দিলো না। . অ্যালার্মে ঘুম ভাঙল আশফির। কখন যে চোখদুটো লেগে গিয়েছিল টের পায়নি। বিছানা ছাড়ার আগেই তার মনে পড়ল বিছানার ওপাশটাতে আরও একজন ছিল। পাশ ফিরে তাকাতে দেখল সে নেই। নজর গেল ব্যালকনিতে। সেখানেই এখন অবস্থান সেই একজনের। আশফি সোজা গোসল করে আটটার মধ্যে অফিসের জন্য রেডি হয়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। মাহি টেরও পেলো না ঘরের মানুষটা এখন ঘরে নেই। নিচে নামতেই জেবা তাকে দেখলে জিজ্ঞেস করল, – “আশফি! কোথায় যাচ্ছিস তুই?” – “যেখানে যাই। অনুষ্ঠানের কাজ বোধহয় সব কমপ্লিট রাতের মধ্যেই। এর মাঝে দরকার পড়লে শায়খকে বলবেন চাচি। আমি কিছুটা ব্যস্ত থাকব আজ।” আর কোনো কথা না বাড়িয়ে আশফি অফিস চলে গেল। এদিকে ব্যালকনি থেকে বেরিয়ে রুমে এসে মাহি আশফিকে না পেয়ে বুঝতে পারল সে হয়তো নিচে। গোসল করে বাইরে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে এলো সে। হীরার মুখোমুখি হলেই সে বলল তাঁকে, – “একটু কথা ছিল দাদীবু।” – “সে তো বুঝতেই পারছি। কিন্তু তুমি নিচে নেমেছো কেন দাদীবু? কিছু প্রয়োজন হলে শাওনকে ডাকতে। আজ তো তোমাদের সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি অনেক ব্যস্ত থাকতে হবে। তাই রুমে গিয়ে রেস্ট নাও যাও।” – “আসলে দাদীবু আমার একটু বাইরে যাওয়া প্রয়োজন ছিল। বুঝতে পারছি না কীভাবে নেবেন ব্যাপারটা। আমার খুব ভালো একজন বন্ধু ও আমার বিয়েতে আসতে পারেনি। ওর সাথে একটু দেখা করতে যেতে চাইছিলাম। যদি কোনো সমস্যা না হয়।” – “ও আচ্ছা। যদি খুব দরকার পড়ে তো যেও। এসো আগে নাস্তা করে নেবে।” – “দাদীবু মাফ চাইছি। আসলে এখন একদমই কিছু খেতে ইচ্ছা করছে না।” – “তা বললে কী হয়? রাতেও তো কিছু খেতে পারোনি। কোনো কথা শুনব না চলো তো।” মাহি বিব্রতবোধ করে বলল, – “আমি আমার বান্ধবীর সঙ্গে বসে নাস্তা করতে চাইছি মূলত।” – “ও, আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে আর কী বলব? কিন্তু একটু দ্রুত ফিরে আসার চেষ্টা করো। আশফি তো একটু আগেই বেরিয়ে গেল অফিসে। তো তুমি বলতে ওকে। তোমাকে নামিয়ে দিয়ে যেতো। আমি দেখি কোনো গাড়ি আছে কিনা নিচে।” – “কোনো সমস্যা নেই। আমি যেতে পারব। গাড়ি লাগবে না। আসি আমি।” – “আচ্ছা তো সাবধানে যেও। আর জলদি ফিরে এসো।” . বাসা থেকে সে বেরিয়ে আসলো ঠিকই। কিন্তু ফিরে আসার পরিকল্পনা তার একেবারেই নেই। নিজের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছাও নেই। তবে এদের সবার থেকেই সে খুব দূরে কোথাও যাবে কিছুদিনের জন্য। তার আগে একবার দিয়ার সাথে কথা বলাটা খুবই দরকার। সকাল সাড়ে দশটার সময় সে দিয়ার বাড়িতে এসে হাজির হলো। দরজাটাও দিয়াই খুলেছে। অনেকটা বিস্মিত হলো সে মাহিকে দেখে। মাহি কোনো কথা ছাড়াই দিয়াকে জড়িয়ে ধরল। হাউমাউ করে সে কেঁদে উঠল তাকে ধরে। দিয়াও এবার পারল না নিজেকে ধরে রাখতে। অনেকক্ষণ দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিয়া কিছুটা সামলে উঠে মাহিকে ভেতরে নিয়ে এলো। এখন বাড়িতে শুধু দিয়া একাই। দিহান স্কুলে, আর দিয়ার বাবা-মা তাদের কর্মস্থলে চলে গেছে। রুমে আসার পর মাহি শুধু বলল, – “খুব ভালো দেখতে চেয়েছিলি আমাকে তাই না? এখন দেখতে পাচ্ছিস তো কত ভালো আছি?” – “কী করেছিস নিজেকে? ভাইয়া কি তোর সঙ্গে এখনো সহজ নয়? কিন্তু আমি তো জানি ভাইয়া তোকে কতটা ভালোবাসে।” – “যে ভালোবাসা আমার সুখকে বিষাদে পরিণত করে সে ভালোবাসা আমার কাছে বিষের চেয়েও তিক্ত। তুই আর দিশান এমন বোকামি কী করে করতে পারলি? এখন তো ঐন্দ্রীর প্রতি আমার যতটুকু সহানুভূতি ছিল তার বিন্দু পরিমাণও নেই। আশফিকে ও যে কোনো বিনিময়ে আদায় করে নিতো তবুও আমি মনে করতাম ও যা করেছে সবই ঠিক। আমি সত্যিই ওকে ঘৃণা ছাড়া আর কিছু করতে পারছি না।” – “তুই ভুলে যাচ্ছিস কেন? ও মরতে বসেছিল।” – “তাই বলে আমি তোকে এভাবে দেখতে পারব না।” মাহি আবারও কান্না করে দিলো। কাঁদতে কাঁদতে বলল, – “আমি চলে এসেছি দিয়া। একেবারে চলে এসেছি।” . . বিকাল গড়িয়ে গেছে। মাহিকে ফোন করে কেউ পাচ্ছে না। কারো ফোনই মাহি ধরছে না। এদিকে আশফিও অফিস যাওয়ার পর এখনো ফিরে আসেনি। প্রচন্ড অস্বাভাবিক লাগছে সব কিছু দিশানের কাছে। ঐন্দ্রীও সকাল থেকে পুরো চুপচাপ। সবকিছু এত অতিষ্ট লাগছে যা সহ্যের বাইরে খুব। দিশান শুধু ভাইকে বারবার কল করছে। কিন্তু সেও লাপাত্তা। ইচ্ছা করেই রিসিভ করছে না। শেষমেশ সন্ধ্যার সময় মাহির বাসা থেকে সবাই এসে হাজির। আসার পর তারাও এ খবর শুনে চিন্তাতে পড়ল। দিয়ার কাছে কল গেল তাদের থেকেই। দিয়া রিসিভ করে মাহির শেখানো কথা বলতে বাধ্য হলো সে আসেনি তার বাসায়। প্রায় সন্ধ্যার পর আশফি ফোনটা হাতে নিলো। বাড়ি থেকে একগাদা মিসড কল আর দিশানের কয়েকটা মেসেজ। যার মাঝে শেষ মেসেজ মাহিকে কোথাও কেউ খুঁজে পাচ্ছে না। হঠাৎ বুকের মাঝে কেমন ব্যথা অনুভব হলো আশফির। দ্রুত অফিস থেকে বেরিয়ে গেল সে। দিয়া মাহিকে কোনোভাবেই বোঝাতে পারছে না তাকে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য। দিলরুবাও এসে অনেক বুঝিয়েছে। কিন্ত কারো কথায় সে কানে তুলছে না। এর মাঝে সোমের নাম্বার থেকে কল এলো মাহির কাছে। তার ফোন দেখেই মাহির মাথা আরও গরম হয়ে গেল। সোমও বেশ কয়েকবার কল করল কিন্তু ধরল না সে। হঠাৎ সোম তাকে অডিও মেসেজ সেন্ড করল। পুরুষ লোকের কান্না আটকানো ভাঙা সুরে তার কথাগুলো ছিল, – “আমার ভুল, আমার দোষ কি তার থেকেও বেশি ছিল মাহি? ঠিক আছে মেনে নিয়েছি আমি দোষী। একটা কথা জানার ছিল তোর থেকে। যদি পারিস তো রিসিভ করিস কলটা। শেষবার।” এরপরই কল এলো সোমের। মাহি ধরবে না ধরবে না করেও শেষমেশ রিসিভ করে বসলো। – “এত ঘৃণা কবে থেকে হলো রে?” – “আমি কাউকেই ঘৃণা করি না।” – “যার সংসার করবিই না তাহলে এই নাটকটা কেন করলি?” – “করব না কে বলেছে তোমাকে?” – “সব জায়গায় তোর খোঁজ চলছে। লিমনের থেকে জানতে পারলাম। এখন কোথায় তুই?” – “তুমি কী জিজ্ঞেস করতে চাইছিলে বলো।” – “আমাকে কি বলা যায় না? এত পর হয়ে গেলাম যে তোর দুঃসময়েও তোকে সাহায্য করতে পারব না?” দিয়া সব কথায় শুনতে পাচ্ছে সোমের। সে চাপা কণ্ঠে রেগে উঠে বলল মাহিকে, – “কিচ্ছু বলবি না ওকে। ফোন কাট তুই। মাহি ফোন কাট।” দিয়া এক রকম মাহির হাত থেকে ফোনটা নিয়ে কেটে দিলো সে। ওদিকে সোম দিয়ার কণ্ঠ শুনে আন্দাজ করে নিলো মাহি এখন তার বাসাতেই। সোমের সঙ্গে কথা বলার মাঝে আশফির কল এসেছিল। কল কাটতেই আশফি আবারও কল করে। মাহি এবার ফোন একদম বন্ধ করে ফেলল। – “কাজটা ভালো করছিস না মাহি। একটা প্রোগ্রাম আজ। কত বড় সম্মানের ব্যাপার তোর ওখানে না থাকাটা তা বুঝতে পারছিস? দুই পরিবারের জন্যই এটা খারাপ।” মাহি কোনো উত্তর দিলো না। মাথাটা নিচু করে বসে রইল। আশফি এবার দিয়ার ফোনে কল করল। দিয়া বলল, – “আমাকে কল করছে ভাইয়া।” – “প্লিজ ধরবি না।” – “না ধরলে তো আরও ক্লিয়ার হবে যে তুই এখানেই।” – “তাহলে কিছু বলবি না আমার ব্যাপারে।” দিয়া ফোনটা রিসিভ করতেই আশফি তাকে বলল, – “দিয়া আমাকে একদম মিথ্যা বলার চেষ্টা করো না প্লিজ। ওকে বলো নিচে নামতে। আমি চলে আসছি।” – “ভাইয়া ও তো….” – “আমি জানি ও তোমার কাছেই। কারণ এখানে ওর যাওয়ার মতো জায়গা কোথায় কোথায় তা আমিও জানি। আমি খুব কাছেই। ওকে নিচে নামতে বলো।” – “আচ্ছা।” ফোনটা কাটতেই মাহি জিজ্ঞেস করল, – “তুই আচ্ছা বললি কেন? কী বলেছে ও?” – “আমার বাসার খুব কাছেই এখন তিনি। তোকে নিচে নামতে বলছে। প্লিজ বোন আর পাগলামি করিস না। এমন করিস না ভাইয়ার সঙ্গে। তোর মনে হয় ভাইয়া তোকে এভাবে যেতে দেবে?” – “আমি ওখানে থাকলে পাগল হয়ে যাব। তোরা সেটা বুঝতে পারছিস না। থাক, কারো কাছেই থাকব না আমি।” কথাগুলো বলতে বলতে মাহি ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে এলো রুম থেকে। দিয়া পেছন থেকে কয়েকবার ডেকেও তাকে দাঁড় করাতে পারল না। হাত টেনে ধরেও আটকাতে পারেনি। মাহি নিচে এসে দ্রুত হাঁটতে শুরু করল৷ আশফির মুখোমুখি সে কোনোভাবেই হবে না। . – “মাহি?” কিছুদূর আসতেই পরিচিত এক কণ্ঠস্বর শুনল সে। পিছু ঘুরেই অনাকাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে দেখল এবার। সোম এগিয়ে এসে মাহির সামনে দাঁড়াল। – “তুমি এখানে?” – “তুই যে এখানে তা আমি বুঝতে পেরেছি। এভাবে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর জন্য তাকে বিয়ে করেছিস? নিজের পরিণতি জেনেও কীভাবে তাকে বিয়ে করতে পারলি?” – “আমার এখন কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। পরে কখনো কথা বলব তোমার সাথে।” আমি যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই সোম আবার তার সামনে এসে দাঁড়াল। বলল, – “যাওয়ার মতো অনেক জায়গা আছে তোর, না?” – “তোমার তা না জানলেও চলবে।” – “বেরিয়ে যখন এসেছিস তাহলে এত রাতে আর কোথাও যেতে হবে না। চল আমার সঙ্গে। আমার বাসায় চল।” মাহি এবার প্রায় রেগে উঠল সোমের ওপর। চেঁচিয়ে বলে উঠল, – “কী ভাবো বলো তো তুমি আমাকে? বাচ্চা আমি? আত্মসম্মানবোধ নেই আমার? শ্বশুড়বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি মানে কি তোমার বাড়িতে গিয়ে উঠব বলে? সস্তা ভাবো খুব আমাকে? যখন যে যেভাবে পারবে তখন সে সেভাবে আমাকে ট্রিট করবে? আমার রাস্তা ছাড়ো। আর আমার সম্পর্কে নিজের চিন্তাভাবনাগুলো বদলাও। প্লিজ যাও।” মাহির চেঁচিয়ে ওঠার ফলে রাস্তার মাঝে কিছু লোক তাদের লক্ষ্য করতে করতে গেল। সোম পরিস্থিতি বুঝে নিলো কিছুটা। এই পরিস্থিতিতে বেশি কথা বলা যাবে না। খুব নিচু কণ্ঠে সে মাহিকে বলল, – “আত্মসম্মানবোধ খুব দেখিয়েছিস, না?” সোম আর কিছু না বলে বাইকটা টেনে চলে গেল সোজা। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পিছু ফিরে নিজের যাত্রাপথে রওনা হতেই মুখোমুখি হলো আশফির। গাড়ির কাচটা নামিয়ে বসে আছে সে ভেতরে। হয়তো তাদের কথাও শুনেছে। গাড়ি থেকে নেমে এসে মাহির সামনে দাঁড়িয়ে বলল, – “আমি বারণ করেছিলাম।” – “আমিও বলেছিলাম থাকব না আমি।” – “তুমি কি নিশ্চিত?” – “জোর করতে চাইছেন?” – “কিছুক্ষণ আগেও চেয়েছিলাম। এখন শুধু সিদ্ধান্ত জানতে চাইছি।” – “যাব না ফিরে আমি।” আশফি খুব শান্ত দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। এরপর বলল, – “রাত আটটার মাঝে যদি ফিরে না আসো তবে এটাই জানিয়ে দেবো সবাইকে, ভরসা আর নিজস্ব জায়গা পাওয়ার মতো মানুষটাকে পেয়ে গেছে সে। এরপর আর খোঁজার কোনো চেষ্টাই করব না।” আশফি উঠে এলো গাড়িতে। তারপর গাড়ি ব্যাক করে চলে গেল সে। মাহি কিছুক্ষণ চেয়ে রইল তার যাওয়ার পথে। হঠাৎ ফোনটার দিকে নজর এলো তার৷ কী মনে করে ফোনটা সে ওপেন করল আবার। ফোনটা হাতে নিয়েই নীরবে কেঁদে উঠল সে। রাস্তার বায়পাসে এসে সে বসে পড়ল। এত কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি তাকে কোনোদিন হতে হবে তা সে কোনোদিনও ভাবেনি। দিশানের থেকে এবার কল এলো তার। চোখটা মুছে রিসিভ করল সে। ওপাশ থেকে দিশান বেশ উতলা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল, – “ডিয়ার তুমি কোথায়? তুমি ঠিক আছো তো?” মাহি কান্নার জন্য কথা বলতে পারল না। তার কান্নার আওয়াজটা দিশানের কানে এলো ঠিকই। সে উদ্বিগ্নতা নিয়েই বলল, – “আমাকে বলো তুমি কোথায়? আমি তোমাকে নিতে আসছি।” – “আমি আর ফিরে আসতে পারব না দিশান।” – “কী বলছো? কেন ফিরে আসতে পারবে না? সবাইকে ম্যানেজ করব আমি। কেউ কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ পাবে না তোমাকে। তুমি শুধু বলো কোথায় তুমি?” মাহি কাঁদতে থাকল শুধু। . এদিকে রাত আটটা বেজে দশ মিনিট। লন সাইডে প্রত্যেকেই প্রোগ্রামে এসে উপস্থিত হয়েছে। ঐন্দ্রীর সঙ্গেও সবাই সাক্ষাৎ করে নিয়েছে। মাহির খোঁজ চলছে সবার মাঝে। এখানে বেশিরভাগই সবার মাহিকে দেখার জন্য বেশি কৌতূহল বেশি। তার আর আশফির বিয়ে হওয়ার কাহিনীটা মোটামুটি সবাই জানে। আশফি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে এটাই, আজ রাতের মধ্যেই সে দেশ ছাড়বে। ছোট ভাইটার সুখের জন্য যা কিছু করার সে করেছে। কিন্তু আর কারো জন্য সে আর এক ফোঁটাও ভাববে না। তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সুন্দর মুহূর্তগুলো আজ তার মনে পড়ছে খুব। আর সেই মুহূর্তগুলোর মাঝে আছে তার মা, দাদা-দাদী, ভাইয়ের সাথে কাটানো কিছু সময় আর মাহির সাথে কাটানো স্বল্প মুহূর্তগুলো। তবে ভালো সময়গুলো তার জীবনে সবসময়ই ক্ষণস্থায়ী। কখনোই সে দীর্ঘস্থায়ীরূপে ভালো মুহূর্তগুলো জীবনে ধরে রাখতে পারেনি। খুব আপন ভেবে নিয়েছে সে মাহিকে। যার মাঝে সে তার জীবনের সর্বোচ্চ সুখ খুঁজে পায়। যাকে দেখলেই ভেতরে এক প্রশান্তির অনুভূতি হয়। কিন্তু তাই বলে সেই মানুষটাকে সে জোর করে ধরে রাখতে চায় না। আশফি দেখেছে, তার চোখে মুখে তার প্রতি এক তীব্র ক্ষোভ আর ঘৃণা। তার সঙ্গে থেকে তার এই ঘৃণা সে কোনোদিনও নিতে পারবে না। তবে যদি এই মুহূর্তে মাহি ফিরে আসে তাহলে তার বুকের ওপর থেকে অনেক বড় এক ভার নেমে যাবে। এটাই পরিষ্কার হবে, মাহি পারবে না কখনো আশফিকে ত্যাগ করতে। আর এরপর যত রাগ, যত জিদই দেখাক মাহি; আশফি কোনোভাবেই ছাড়বে না তাকে। সবকিছু গুছিয়ে আশফি সময়টা দেখে নিলো। রাত আটটা বেজে পঁচিশ মিনিট। বুকের মাঝে ব্যথাটা ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে তার৷ আর এক মুহূর্ত সে থাকতে পারছে না এখানে। যত দ্রুত সম্ভব তাকে বের হতে হবে এখান থেকে। সবাই এখন লন সাইডে ব্যস্ত। অবশ্য কাউকে জানিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা তার নেই। তবুও শেষবারের মতো সে দাদা, দাদীবু আর তার ছোট ভাইটার মুখটা দেখে যেতে চায়। আজ থেকে হয়তো তার বাবার মতোই তার নামেও রটিয়ে পড়বে একটা মেয়ের জীবন শেষ করে সে চিরকালের জন্য বিদেশে কোথাও পারি জমিয়েছে। তাতে তার কোনো আফসোস নেই। গায়ে স্যুটটা ঢুকিয়ে সে লন সাইডের এক কোণে এসে দাঁড়াল। সবার দৃষ্টি সে মুহূর্তে এক দিকেই। বোধহয় কেউ মধ্য স্থানে প্রবেশ করছে। আশফি কিছুটা আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে এলো সামনে তাকে দেখার জন্য। কারণ মনের একটা জায়গাতে আশার আলো নিভু নিভুভাবে জ্বলছে এখনো। সবার ফাঁক থেকে চোখ পড়ল তার শুভ্র বর্ণের ঝলমলিত শাড়ি পরিহিতার দিকে। ধীরে ধীরে মুখটাও দেখতে পেলো সে। টানটান হাসি তার ওষ্ঠে। এই তো সেই হাসি যে হাসি সে হেসেছিল এক পূর্ণিমার রাতে তার ট্যারেসে বসে। সেদিনও সে শুভ্রতার মাঝেই ছিল। সেদিন ছিল সে অতি সাধারণ রূপে এক অপরূপা। আর আজ যেন সে পৃথিবীর সব শুভ্রতায় ঘেরা নির্মল, নিষ্পাপ এক চাদরে মোড়ানো তার জীবনের এক টুকরো খুশি। যে খুশি সে আজ থেকে আর কোনোভাবেই হারাতে চায় না আর হারাতে দেবেও না। তার সেই খুশি আর সুখ তার জীবনে আবার ফিরে এসেছে। . . হিসেবে গতকাল তাদের জীবনের বিশেষ রাত হলেও তা কারো কাছেই বিশেষ ছিল না। তাই আজ বাড়ির লোকগুলো তাদের না জানিয়েই তাদের ঘরে সেই বিশেষ রাত উপলক্ষ্যে সাজিয়ে দিয়েছে। তবে সেই ঘরে পৌঁছানোর পূর্বে একটি বিশেষ কাজ ঐন্দ্রী আর মাহিকে সম্পূর্ণ করতে হবে। লিভিংরুমে সোফায় বসে আছেন আবরার, হীরা। আর তাদের মুখোমুখি বসে আছে দিশান আর আশফি। মাহি আর ঐন্দ্রী এসে দাঁড়াল তখন। তাদের দুজনের সামনে দুটো কাগজ এগিয়ে দিলেন আবরার। আবরার মাহিকে বললেন, – “কাগজটা পড়ো মাহি। তারপর তোমাকে সেখানে সাইন করতে হবে।” মাহি ভ্রুকুটি করে একবার তাকাল কাগজটার দিকে। তারপর তাকাল আশফির দিকে। আশফি গম্ভীর মুখ করে বসে আছে। কাগজটা তুলে মাহি দু’পাতাতে খুব ভালোভাবে চোখ বুলিয়ে নিলো। পুরো শরীর হঠাৎ ঘেমে উঠেছে তার। কাগজটা দ্রুত টি টেবিলের ওপর রেখে দিয়ে বলল, – “মাফ করবেন দাদা। আমি কোনোদিনও এই কাগজে সই করতে পারব না।” হীরা জিজ্ঞেস করল, – “কোনো সমস্যা?” – “হ্যাঁ অবশ্যই দাদীবু।” আশফি এবার চোখ মুখ শক্ত করে তাকাল মাহির দিকে। সে উঠে এসে সরাসরি মাহির দিকে তাকিয়ে বলল, – “দাদা তোমাকে কোনো অনুরোধ করেননি। আদেশ করেছেন।” মাহি দৃঢ়ভাবে বলল, – “মাফ চাইছি। আমি করব না এই কাগজে সই।” …………………………… (চলবে) – Israt Jahan Sobrin আমার পাঠকের যে ধৈর্য কম তার প্রমাণ তা আমার পাঠকেরা সবসময়ই দিয়ে এসেছে। তাই আর বলার ইচ্ছা নেই তাদের যে ধৈর্য রাখুন। যাদের গল্পের কাহিনী বিস্তারকে প্যাঁচ মনে হয় আর যারা গল্পের ভবিষ্যৎ বা আগাম চিন্তা করে নিয়েছেন তারা চাইলে আমার লেখা ত্যাগ করতে পারেন। সামনে পরীক্ষা তাই ভালোভাবে গল্পটাকে সাজাতেও পারছি না। ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখার অনুরোধ রইল।
পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ