তুমি রবে ৩৩

0
1891
তুমি রবে ৩৩ . . দিয়া খুব শক্ত করে দিশানের হাতটা ধরল। নির্মল দৃষ্টি মেলে চেয়ে আছে সে দিশানের দিকে৷ এই দৃষ্টির সঙ্গে দিশান আগে কখনো পরিচিত হয়নি। অসংখ্য নারীর সংস্পর্শে সে সময় কাটিয়েছে। কিন্তু এভাবে কখনো কেউ তার হাতটা ধরেনি, এত অমলিন চাহনিতে কেউ দেখেনি তাকে। – “কী দিয়া?” দিশানের প্রশ্নে দিয়া হাসলো শুধু। দিশান বলল, – “তুমি ভেতরে কিছু পুষে রেখো না প্লিজ। যা জানার তা আমার কাছে জানতে চেয়ে নিজেকে প্লিজ সংকোচ মুক্ত করো।” – “তোমার যা জানানোর তা আমাকে জানাও দিশান। আমি শুনব।” – “পালিয়ে যাবে না তো আবার?” – “ইস! পালাব কেন?” – “আচ্ছা তখন ওইভাবে তাকিয়েছিলে কেন?” দিয়া দিশানের হাতটা ছেড়ে বসতে চাইলে দিশান হাতটা ধরে বলল, – “উঁহু, হাত ছাড়তে হবে না। এভাবেই বলো।” – “আমি যেদিন তোমার অফিসে গিয়েছিলাম সেদিন আমার মনের অবস্থা কেমন ছিল তুমি জানো?” – “হ্যাঁ জানি, বিক্ষিপ্ত ছিলে তুমি।” দিশানের ঠোঁটের কোণে ঈষৎ হাসি। দিয়া খুব আড়ষ্টভাবে বলল, – “সেদিন আচমকা যে কাজটা তুমি করেছিলে…” দিশান মিটিমিটি হাসছে। দিয়াকে আর একটু অপ্রতিভ করতে দিশান জিজ্ঞেস করল, – “কী করেছিলাম?” – “উহ্! কী করে বলি? তোমার তো মনে আছে না?” – “না মনে নেই।” দিয়ার আমতা-আমতা ভাব দেখে দিশান তৃতীয়বারের মতো টুপ করে দিয়ার অধরে তার ওষ্ঠদ্বয় ছোঁয়াল। বিস্ময় চোখে তাকাল দিয়া। মুচকি মুচকি হাসছে দিশান। – “এটার কথায় তো বলতে চাইছো?” সেই লজ্জামাখা মুখে দিয়া বলল, – “ওইদিন আমি এমন কিছুর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না।” – “হ্যাঁ এর জন্য ঝুঁকে পড়েছিলে আমার বুকের ওপর। আমার কাছে আমার ওই টিক্যালের থেকে তোমার ওই স্তব্ধ হয়ে ঝুঁকে পড়াটা আমার এখানে বেশি লেগেছিল দিয়া।” বুকের বাঁপাশটা দেখিয়ে বলল দিশান। – “যেন আর ছাড়তেই ইচ্ছা করছিল না।” – “ছাড়োওনি তো।” – “কী করে ছাড়তাম? পড়ে যেতে তো। আজ এভাবে তাকিয়ে থাকার সঙ্গে ওই দিনের ঘটনার কী সম্পর্ক এখন সেটা বলো।” দিয়া বলল, – “আসলে তুমি যখন তোমার প্রথম চুমুর কথা বলছিলে তখন আমাকে করা তোমার প্রথম চুমুর কথা মনে পড়ছিল।” – “আমি বুঝতে পারছি তুমি এখানে কীসের পার্থক্য করছো। আমি তাকে প্রথমবার চুমু খেয়েছিলাম একটা পাবে বসে। বিয়ারের ক্যানে চুমুক দেওয়ার পর তার ওষ্ঠে চুমুক দিয়েছিলাম। আর তোমার আমার সেদিনের ব্যাপারটা ছিল একদমই ভিন্ন। তুমি নিজেই জানো কতটা আলতোভাবে তোমার অধর ছুঁয়েছিলাম সেদিন। আজও শুধু স্পর্শ করেছি। আমি যদি তাকে আর তোমাকে একই জায়গাতে রাখতাম, তো সেদিন তোমার অধর স্পর্শ করার ধাপটা হতো খুব গভীর। দিয়া তুমি আমাকে না দেখতে পেয়ে, আমার খোঁজ না পেয়ে যতটা বিক্ষিপ্ত হয়ে ছিলে, আমিও ততটা ব্যাকুল ছিলাম এটা ভেবে যে সেই সময়টা কখন আসবে, যে দিনটাতে এই মেয়েটা আমার কাছে এসে তার অপ্রকাশিত অনুভূতি ব্যক্ত করবে। তোমার চোখের দৃষ্টি আমি পড়ে নিয়েছিলাম। তাই আমি নিশ্চিত ছিলাম তুমি আসবে। আর যখন এলেও, তুমি বুঝতে পারোনি আমি কতটা আনন্দিত ছিলাম তোমাকে দেখার পর। আর তোমার অনুভূতিগুলো আমাকে বোঝাতে না পারার কষ্টে তোমার নাক টেনে কান্না করাটা আমাকে কী পরিমাণ সুখ দিচ্ছিল তাও তুমি বোঝোনি৷ আই ওয়াজ সাবমার্জ্ড ইন অ্যা ফাইয়াহরি প্যাশন্স (প্রচন্ড আবেগে ডুবে গিয়েছিলাম)। দিয়া হেসে উঠল। দিশান এতটুকু সময়ের মাঝে প্রচন্ড আবেগপূর্ণ হয়ে গেছে। যা দিশান নিজেও এখন উপলব্ধি করতে পারছে। – “হাসছো যে? আমার কথাগুলো নাটকীয় মনে হচ্ছে না?” – “উঁহু। একটা ড্রামা দেখেছিলাম এক বছর আগে। যেখানে উইলিয়াম মানে হিরোটা প্রথম অবস্থায় ছিল তোমার মতো। বহুপ্রেমী ছিল সে। নুরা মানে হিরোইন, তার বেস্ট ফ্রেন্ডকেও সে ডাম্পড্ করে। মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু সে আন্ডার এইটটিন ছিল তাই তাকে গর্ভপাত করতে হয়। একটা ব্যাপারে উইলিয়াম আর নুরা মুখোমুখি হয়। সেখানে নুরা খুব করে উইলিয়ামকে অপমান করে স্কুলে। তারপর উইমিয়ামের চাহিদা হয় নুরার প্রতি। বিভিন্ন উপায়ের পর সে নুরাকে তার সঙ্গে ডেট করতে রাজি করে। এরপর শুরু হয় তাদের লাভ মোমেন্ট। যেখানে প্রথম অবস্থায় নুরা দূরত্ব বজায় রাখলেও উইলিয়াম একদিন তাকে বোঝায় যে সে কতটা চায় নুরাকে। উইলিয়াম পিওর লাভ খুঁজে পায় নুরার মাঝে। উইলিয়ামের বিছানা সঙ্গীদের নিয়ে নুরার কোনো অভিযোগই ছিল না কখনো। একদিন নুরা নিজে চায় উইলিয়ামের বাহুডোরে আসতে। যেদিন তারা মিলিত হয় সেদিন নুরা জানায় সে যখন ফিফটিন তখন সে তার ভার্জিনিটি খুইয়েছে তার বয়ফ্রেন্ডের কাছে। কিন্তু তার বয়ফ্রেন্ড তাকে ডাম্পড্ করেছিল। এটা জানার পর উইলিয়ামের সত্যি খারাপ লেগেছিল, কিন্তু নুরাকে সে ছেড়ে দেয়নি। আমি কিন্তু ভীষণভাবে উইলিয়ামের প্রতি আসক্ত হয়েছিলাম।” – “তাই?” – “খুব চাইতাম এরকম একজন শ্বেতাঙ্গকে বয়ফ্রেন্ড হিসেবে।” – “আফসোস, আমি শ্বেতাঙ্গ নই।” – “এজন্যই তো এত বেশি খুশি আমি। আমি আমার দেশের একজন উইলিয়ামকে পেয়েছি।” – “তুমি সত্যিই খুশি?” – “আমার কোনো আপত্তি নেই যে তুমি ভার্জিন নও বা তুমি একজন বহুপ্রেমী পুরুষ ছিলে। কারণ আমার তোমার ভার্জিনিটি প্রয়োজন নয়, আমার তোমার সমুদ্রের মতো এই বিশাল হৃদয়টাকে প্রয়োজন। যেটা তোমার আছে। আর বৃটিশদের এই হুটটাট চট করে চুমু খাওয়ার ব্যাপারটা আমি সত্যিই খুব…” কথাটা বলার পূর্বেই দিয়া চোখদুটো বড় বড় করে মুখটা আঁটকে ফেলল। ইস! কী পরিমাণ বেহায়াপনা কথা বলতে গিয়েছিল সে! এদিকে দিশান হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে। .
“আমার সারাটা দিন মেঘলা আকাশ বৃষ্টি তোমাকে দিলাম -২।। শুধু শ্রাবন সন্ধাটুকু তোমার কাছে চেয়ে নিলাম আমার সারাটা দিন মেঘলা আকাশ বৃষ্টি তোমাকে দিলাম…..” অনেকটা রাস্তা বাকি। নিস্তব্ধ জায়গা হতে বেরিয়ে আশফি মেইন রাস্তায় উঠেছে। বাহিরের বর্ষণ ধারা আর সেই সঙ্গে শৃকান্ত আচার্য্যের জনপ্রিয় একটি বৃষ্টির গান। সিটে হেলে বসে ঘুমিয়ে গেছে মাহি। বাহিরের বৃষ্টি ভেজা শীতল আমেজে মাহির চোখদুটো যেন কখন লেগে গেছে। একটা ব্যাপার ভেবে আশফি মৃদু হাসছে। এই মেয়েটার সঙ্গে সে যখনই একান্ত মুহূর্ত পার করে, তার অধিকাংশ মুহূর্তগুলোই থাকে বৃষ্টিস্নাত পরিবেশ। আশফির ইচ্ছে করে না এই মেয়েটাকে ছাড়তে, যখন বৃষ্টির তোড়ে চারপাশটা মায়া মুগ্ধকর হয়ে থাকে। তার ইচ্ছে করে সারাটা সময় এই মেয়েটাকে বুকের মাঝখানটাতে ধরে রাখতে। যখন এই মেয়েটাকে বিদায় জানিয়ে সে চলে আসে, তখন যেন মনে হয় তার খুব প্রয়োজনীয় কিছু সে ফেলে যাচ্ছে। খুব ধীরে ধীরে আশফি গাড়ি চালাচ্ছে। কেননা যত দ্রুত সে পৌঁছাবে তত দ্রুত এই মেয়েটার সান্নিধ্য সে হারাবে। মাহি অতল ঘুমে আচ্ছন্ন। তার মাথাটা বারবার হেলে পড়ছে আর আশফি বারবার তার মাথাটা সোজা করছে। এক সময় আশফি নিজের কাঁধের ওপর তার মাথাটা এলিয়ে দিলো। এবার যেন খুব স্বস্তি। প্রচন্ড স্বস্তি অনুভব করছে সে। এক অফুরন্ত শান্তি বিদ্যমান এই মেয়েটার মাঝে। মেয়েটি তার কাছে থাকলেই সে এই শান্তি অনুভব করে। তাই তো সে এই শান্তিটাকে একদম নিজের করে রাখার ব্যবস্থা করবে খুব দ্রুত। আশফির ওষ্ঠকোণে আবার মৃদু হাসি দোল খেলো। পুরোটা পথ খুব আরামে আশফির কাঁধে মাথা রেখে ঘুমাল মাহি। তার বাসার সামনে আসতে আশফি তাকে ডাকল, – “শেহজাদী ঘুমকুমারী শুনছেন আপনি?” একটু উঁচু স্বরেই ডেকেছে আশফি। এক ডাকেই মাহি চোখটা মেলল। সে এখন কারো বুকের খুব কাছাকাছি। ঘুমের রেশটা যেতেই সে টের পেলো আশফির কাঁধে মাথা রেখে সে ঘুমিয়ে ছিল। তাড়াহুড়া করে উঠতে যেয়ে আশফি তার বাহু চেপে ধরে শুইয়ে রাখল। বলল, – “এভাবে ঘুম থেকে ধড়ফড়িয়ে ওঠা কতটা ক্ষতিকর তা কি জানেন?” মাহির মাথা তখনো আশফির কাঁধে। মাহি মাথা উঁচু করে তাকাল আশফির দিকে। আশফি তখন মুচকি হাসছে। বেশ কিছুক্ষণ তারা দুজন একে অপরের চোখের দিকে চেয়ে থেকে দুজনে এক সঙ্গেই মৃদু হাসলো। মাহি ধীরে ধীরে উঠে বসে বলল, – “দুঃখিত। কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছি!” – “ভালোই তো লাগছিল।” – “কী?” – “ঘুম রাজ্যের শেহজাদীকে।” মাহি হাসলো। তারপর আশফিকে বিদায় জানিয়ে ঢুকে পড়ল বাড়ির সীমানার ওপারে। আশফির ঠোঁটে তখনো লেগে আছে সেই মৃদু হাসি। চেয়ে আছে সে মাহির যাত্রা পথে। সিঁড়ির কিছুটা কাছে এসে মাহি একবার ফিরে তাকাল পিছে। মানুষটা কত স্পর্শকাতর চাহনি মেলে তাকিয়ে আছে। দূর থেকে মাহি হালকা হেসে মাথা নাড়িয়ে ইশারা করে জানাল, – “আসি?” আশফি তার হাসিটা আর একটু প্রশস্ত করল। যার অর্থ ‘এসো’। মাহি চলে গেল তার দৃষ্টির আড়ালে। সিটে মাথা এলিয়ে দিয়ে আশফি তাকিয়ে আছে এই বাসার ব্যালকনিতে। কখনো সে দেখেনি মাহিকে এই ব্যালকনিতে। কিন্ত আজ তার মনে হচ্ছে মেয়েটা হয়তোবা রাতের অবসরে এই ব্যালকনিতে এসে বসে। আর একটু সময় থাকলে হয়তো সেই মেয়েটিকে আরও কয়েক পলক দেখে যেতে পারবে। আশফি ড্রাইভিং সিট ছেড়ে পাশের সিটে চলে এলো। জানালার জায়গাটাতে হাত রেখে হাতের ওপর থুঁতনি ভর করে চেয়ে রইল সেই ব্যালকনিতে। . শাড়িটা পাল্টে মাহি চট করে গোসল সেড়ে গোলাপি আর সাদা বর্ণের একটা সেলোয়ার-কামিজ পরে চুল মুছতে মুছতে জানালার কাছে এলো জানালা বন্ধ করতে। কিন্তু এক অপ্রত্যাশিত দৃশ্য দেখে সে থমকে গেল। এক ছুটে সে ব্যালকনিতে চলে আসে। মানুষটা কী আকুল দৃষ্টি মেলে বসে আছে। মাহিকে দেখতে পেয়ে আশফি মুহূর্তেই মাথাটা উঁচু করে মাহির দিকে তাকাল। দীর্ঘ ভেজা চুল আর তার স্নিগ্ধ মুখ, আশফি নির্বাক দৃষ্টি মেলে কতসময় চেয়ে রইল তা অবিদিত। মাহি ইশারায় কিছু জিজ্ঞেস করে তাকে। আশফির সেদিকে চেতনা নেই যেন। মাহি দ্রুত রুমে গিয়ে ফোনটা নিয়ে আবার ব্যালকনিতে এলো। আশফির ফোনে কল বাজতে সে দেখল মাহি কল করছে। ফোনটা কেটে দিয়ে ফোনের ক্যামেরা অন করে অনেক দূর থেকেই মাহির একটা ছবি তুলে নিলো সে। তারপর সে টেক্সট করে মাহিকে জানাল, – “স্বপ্নগুলো স্বপ্ন দেখা মানুষটার মতোই সুন্দর হোক। শুভ হোক রাতের প্রহরগুলো। আসছি।” আশফি চলে গেছে। বিছানায় বসে মাহি কতবার আশফির দেওয়া মেসেজটা রিপিট করেছে তা হিসাবহীন। . আশার ভাইয়ের বিয়ে। তার বাবার বাড়ি থেকে সবাই এসে আলহাজকে অনুরোধ করে গেছে যেন তার বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে তারা সবাই যেন চলে আসে আশাকে নিয়ে। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে না যেতে পারলেও তিনদিন আগে মমিন তার পরিবারকে পাঠিয়ে দেয় আশার বাবার বাড়িতে। শুধু থেকে যায় মমিন, মাহি আর আলহাজ। মমিনকে ব্যবসায় সম্পর্কিত এক কাজে ঢাকার বাহিরে যেতে হবে বলে সে যেতে পারেনি। আর মাহি তার অফিসের জন্য আঁটকে যায়। আলহাজের শরীরটা বেশি ভালো যাচ্ছে না ইদানিং। তাই সে থেকে গেল। আজ সকালে মমিন নাশতা করে বেরিয়ে যায়। ফিরতে ফিরতে তার আগামীকাল। মাহি তার দাদুর জন্য গোসলের পানি গরম করে তার খাওয়ার ব্যবস্থা করে, ওষুধপত্র খাইয়ে দিয়ে তারপর অফিসে আসলো। অফিসের সবাই আজ খুব দারুণ মেজাজে। এ কোম্পানির নতুন কিছু কালেকশন বর্তমান বাজারে বেশ ভালো সাড়া ফেলেছে। চাহিদা এখন দ্বিগুণ থেকে চারগুণ। আর এর পেছনে অফুরন্ত পরীশ্রম দিয়েছে ঐন্দ্রী সহ আরও কিছু এমপ্লয়ি। তাদের জন্য আর তাদেরই আবদারে এ সপ্তাহের ফ্রাই ডে তে আশফি কোম্পানির খরচে তিনদিনের ট্যুরে নিয়ে যাবে বান্দরবন। মাহি তার কেবিনে এসে বসতেই দিশান এসে হাজির। – “ডিয়ারিং তুমি বসে পড়েছো?” মাহি বলল, – “কেন উঠতে হবে?” – “হ্যাঁ হ্যাঁ উঠতে হবে।” মাহি উঠতে গিয়েও আবার বসে রইল। বলল, – “এটা আমার কেবিন স্যার। আমি কেন উঠব?” – “উফ্! স্যার ট্যার বাদ দাও। আমাদের বেরোতে হবে। জলদি করো।” – “কোথায় বেরোতে হবে?” – “প্রশ্ন করো না। ভাইয়া আসার আগেই আমাদের বেরিয়ে পড়তে হবে। নয়তো আজ পাঁচটার আগে আর বের হতে পারব না।” – “কিন্তু যাব কোথায়?” – “শপিংয়ে। এবার প্রশ্ন করো না কার জন্য। তাকে কোনোভাবেই আমি রাজি করাতে পারিনি। তাই তোমাকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে।” – “তুমি বলতে চাইছো তোমার আইডিয়া নেই আমাদের ড্রেসআপ সম্পর্কে?” – “একদমই নয়। কিন্তু তবুও আমি রিস্ক নিতে চাই না। প্লিজ চলো।” . আশফি অফিসে আসে সাড়ে নয়টাতে। কাল একবার তার গাজীপুরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্ত আবহাওয়ার জন্য তার একদমই যেতে ইচ্ছা করেনি। অফিসে আসার আধা ঘন্টা পর সে মাহিকে কল করে। কিন্তু রিসিভ হয় না। আশফি ভাবল হয়তো এখনো আসেনি অফিস। এরপর কাজের ব্যস্ততায় সে বেলা এগারোটার সময় আবার কল করে। তখনো রিসিভ হলো না। এবার আশফি মাহির সেলফোনে কল করে। – “দিশান! তোমার ভাই কল করছে?” – “তোমার ফোনে?” – “তো অফিসে নাকি?” দিশান মনে মনে ভাইকে একটা ছোটখাটো গালাগালি দিয়ে বিড়বিড় করে বলল, – “উহ্! বিয়েটা করার পর একদম পকেটে পকেটে রাখবে নির্ঘাৎ।” স্পষ্টভাবেই কথাগুলো মাহির কানে এলো। সে জিজ্ঞেস করল, – “কে কী পকেটে পকেটে রাখবে?” দিশান জোর করে হেসে বলল, – “বউ।” – “কী?” – “কিছু না। অ্যাটেন্ড করো কলটা।” কল রিসিভ করতেই কোনো সম্বোধন ছাড়া ওপাশের ব্যক্তি বলল, – “বেলা সাড়ে এগারোটার সময়ও আপনি অনুপস্থিত। কখন আসবেন জানতে পারি?” মাহি দিশানের দিকে তাকিয়ে অগোছালোভাবে কথার জবাব দিলো। – “আ…আমি তো, এসেছিলাম অফিসে। এখন…?” মাহি থেমে যেতেই আশফি চকিতে প্রশ্ন করল, – “এখন? আপনি কোথায় এখন? আর কেন বেরিয়েছেন অফিস থেকে?” মাহির উত্তর দেওয়ার আগেই দিশান তার থেকে ফোনটা নিয়ে বলল, – “এখন সে আমার সঙ্গে। আমরা একটা বিশেষ কাজে বাইরে এসেছি।” আশফি হেলে বসা অবস্থা থেকে সোজা হয়ে বসে জিজ্ঞেস করল, – “বিশেষ কাজ মানে? কী বিশেষ কাজ? আর কোথায় তোরা?” – “বিশেষ কাজটা আমার ভাই। কিন্তু মাহির হেল্প ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। তাই ওকে নিয়ে এসেছি আমি।” – “কী বিশেষ কাজ যার জন্য ওকে প্রয়োজন পড়ল? আর তোরা কোথায় বল তো?” – “ভাই! আমি মোটেও ছিনিয়ে নেওয়া টাইপ রোমিও নই।” – “দিশান!” দিশান হেসে বলল, – “আমরা শপিংয়ে এসেছি। আমার বিশেষ কারো জন্য কিছু কেনার ছিল আমার। তাই ওকে নিয়ে এসেছি।” কথা শেষ হওয়ার পর মাহি দিশানের কথা অনুযায়ী দিয়াকে কল করে। দিয়া কল রিসিভ করলে মাহি তাকে জানায় শপিংমল আসতে। কিন্তু দিয়া তখন হিমু আর অনিকের সঙ্গে অলরেডি শপিংয়ে ঢুকে পড়েছে। তার কিছুক্ষণের মাঝেই ওদের তিনজনের সঙ্গে মাহি আর দিশানের দেখা হয়ে যায়। পাঁচজন এক সঙ্গে কিছু কেনাকাটা করে একটা কফিশপের ভেতর এসে বসে। এর মাঝে প্রায় সবাই-ই কমে বেশি কিছু না কিছু কিনেছে। সেগুলো নিয়েই সব আলোচনা করছে নিজেদের মাঝে। তবে মাহি শুধু এক জোড়া কানের দুল আর একটা খুব সুন্দর ব্রেসলেট কিনেছে। তখন হিমু মাহিকে বলল, – “আর কতদিন রে মাহি?” – “কী কতদিন?” – “কী মানে? বুঝতে পারছিস না? আমার আর দিয়ার পাশে একবার তাকা আর তোর নিজের পাশে একবার তাকা।” সবাই হিমুর কথার ইঙ্গিত ধরতে পেরে হাসছে। মাহি ব্যাপারটা না বুঝে সে সত্যিই একবার হিমুর পাশে তাকাল তারপর দিয়ার পাশে। এবার নিজের পাশে তাকাতেই সে লক্ষ্য করল তার পাশের চেয়ারটা খালি। কিন্তু ওদের দুজনের পাশে অনিক আর দিশান। মাহি কপট রেগে বলল, – “শোন, আমাকে এভাবে পিঞ্চ করা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। আজ নেই তে কী হয়েছে? আগামীতে তো হবে।” – “হ্যাঁ তখন হবে যখন আমরা দুই তিনটার মা হবো।” দিয়া এরপর বলল, – “ঠিক। এই চেয়ারটা পূরণ হতে হতে আমরা জননী হয়ে যাব আর তুই তখন সদ্য বিবাহিতা নারী থাকবি।” দিশান দিয়ার কথার প্রেক্ষিতে তাকে বলল, – “একা একা প্ল্যানিং করে নিয়েছো? কীভাবে সম্ভব? আমাকে ছাড়া এ কাজ তো সম্পূর্ণ করতে পারবে না তুমি।” দিয়া তার হাতের একটা শপিং ব্যাগ দিয়ে দিশানের গায়ে মারল৷ অনেক মজা করা হলো তাদের মাঝে এ ব্যাপারে। অনিক বলল, – “আমার সত্যিই আফসোস হচ্ছে তোর জন্য মাহি।” – “আফসোস হওয়ার মতো কী দেখছিস তুই?” – “তোর পাশের চেয়ারটা ফাঁকা। বন্ধু হিসেবে আমাদের একটা দায়িত্ব আছে না কি? ওয়েট।” অনিক চারপাশ তাকিয়ে বেশ লম্বা আর অতিরিক্ত চিকনা গড়নের কোঁকড়া চুলওয়ালা একটা ছেলেকে দেখিয়ে বলল, – “আমি লক্ষ্য করেছি তাকে। সে বেশ কয়েকবার তোকে দেখছিল। ওকে বলি শূন্য স্থানটা পূরণ করতে?” মাহি কফি মগ থেকে স্পুনটা উঠিয়ে অনিকের উদ্দেশে ওঠালে দিশান তখন সামনে তাকিয়ে হেসে বলে, – “শূন্য স্থান পূরণ হতে চলেছে।” কথাটা শেষ হতেই গাম্ভীর্যের অধিকারী, মার্জিত ব্যক্তিত্বের একজন সুদর্শন পুরুষ এসে মাহির পাশে এসে বসলো। কাউকে কোনো সম্বোধন ছাড়াই সে বলল, – “অফিস আওয়ারে বন্ধু সমাগম। বাহ্ দারুণ!” দিশান বলল, – “আমরা তো এমনই। কিন্তু আপনি এখানে কেন স্যার?” আশফি মাহির দিকে একবার তাকাল। মাহি চেয়ে আছে তার দিকে। দিশানের কথার উত্তর দিলো না সে। সবাই আশফির উপস্থিতিতে প্রচন্ড খুশিই হয়েছে। তবে মাহি খুশির সঙ্গে অনেক বড় চমকও পেয়েছে। তার এখানে আসার একমাত্র কারণ যে মাহি। তা মাহি নিজেই উপলব্ধি করতে পেরেই খুব খুশি। দিশান নিজের জন্য কী কিনেছে আর দিয়াকে সে কিছু গিফ্ট করেছে তা আশফির কাছে গল্প করল। এর কারণ যেন আশফিও মাহিকে কিছু গিফ্ট করতে আগ্রহী হয়। কিন্তু তা গুড়ে বালি। আশফি মুখের ওপর তাকে বলে দিলো, – “সময়গুলো আমার কাছে ভীষণ দামি। তাই অযথা সময়গুলো ব্যায় করার মতো নিষ্ঠুর মানুষ আমি নই।” দিশান ভাইয়ের কথাতে ক্ষেপে গিয়ে বলল, – “আমি কখনোই কাজ চোর নই ভাইয়া। তুমি আমাকে মিথ্যা ব্লেম দিতে পারো না।” – “হ্যাঁ খুবই অ্যাক্টিভ তুমি কাজ চুরিতে। এখন থামো তুমি। আমি আমার খুব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত থেকে সময় বের করে কিছু বিশেষ মুহূর্ত কাটাতে এসেছি।” খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত সময় কাটানোর মাঝে আজ আশফি সরাসরি সবার সামনে বলল, – “আমার কিছু মুহূর্ত একান্তভাবে মাহিকে প্রয়োজন।” নির্বিকারভাবে সে তার কথা জানালো সবার সামনে। দিশান মুখ টিপে হাসলেও সবাই মূল ব্যাপারটা তখনো বুঝেনি। দিয়া বলল, – “আপনি এখানেও অফিস সংক্রান্ত কথাবার্তা বলবেন?” আশফি বিস্মিত চাহনিতে তাকাল দিয়ার দিকে। দিশান দিয়ার এমন বোকামিটা আশা করেনি। সে দিয়াকে বলল, – “আমার ভাই মোটেও পাগল নয় দিয়া। তাদেরকে আমরা যেতে দিই।” মাহি ভীষণ লজ্জামুখ করে বসে ছিল। আশফি আর কারো কোনো কথা শোনার অপেক্ষা না করে উঠে দাঁড়িয়ে মাহির দিকে হাত বাড়াল। মাহি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে আশফির চোখের দিকে তাকিয়ে থাকার পর তার হাতটা ধরে বেরিয়ে এলো কফিশপ থেকে। . – “ওরা কী ভাবল বলুন তো?” – “কী বিষয়ে?” ড্রাইভ করতে করতে জবাব দিলো আশফি। ‘সবাই কী ভাবল’ এমন একটা কথা মাহির থেকে শোনার পর সে কী বোঝাতে চাইছে তা বোঝার পরও আশফির চেহারা পরিবর্তনশূন্য। – “যা আমার তা আমি চাইতে কেন লজ্জাবোধ করব? বলুন মাহি।” মাহির মুখে এক রাশ খুশির আভাস। তার প্রতি আশফির এই অদৃশ্য অধিকারবোধ জিনিসটা যেন খুব সুখ দিচ্ছে মাহিকে। তবে বেশি সময় এই সুখের মুহূর্ত তারা কাটাতে পারল না। মাহির ফোনে একটা কল আসার পর মাহি তড়িঘড়ি করে আশফি তার বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলল। আশফি অনেকবার মাহির সঙ্গে আসতে চাইল কিন্তু মাহি বারণ করে দিয়ে চলে এলো। বাসায় এসে দেখল তার পাশের বাসার একজন মহিলা আলহাজের পাশে বসে আছে। সে বলল, – “বাইরে থেকে ফিরছিল। তখন আমি আর আমার ছেলে বাজার থেকে ফিরছি। চাচার হাঁটার ভাবই যেন কেমন লাগছিল। এ কথা ভাবতে ভাবতেই উনি পড়ে যাচ্ছিলেন। আমি আর আমার ছেলে দৌঁড়ে এসে ওনাকে ধরে ফেলি। তারপর বহু কষ্টে ওপরে উঠিয়ে নিয়ে আসি।” মাহি দেখল পালস্ খুব স্লো। ডাক্তার বাসায় আনা তো সম্ভব নয়। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেই মাহি তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে। কিন্তু দুপুর হতেই আলহাজের প্রেশার খুব বেড়ে গেল। মাহি তার জীবনে তার দাদুকে হঠাৎ এত অসুস্থ হতে দেখেনি। প্রচন্ড ঘাবড়ে গেল সে। পাশের বাড়ি থেকে একজনকে ডেকে এনে তার সহায়তায় আলহাজকে হসপিটাল নিয়ে এলো। আলহাজের অবস্থা দেখে তারা অ্যাডমিট করতে বলল ওনাকে। মিনি স্ট্রোক করেছে সে। মাহি তাকে হসপিটাল অ্যাডমিট করলেও ভয় পেয়ে কাঁদতে থাকল। মমিনকে অনেকবার কল করল কিন্তু রিসিভ হলো না। সন্ধ্যা পর্যন্ত মাহি একাই থাকল সেখানে৷ এর মাঝে আশফি কয়েকবার ফোন করেছে তাকে, কিন্তু সে ফোনটা ব্যাগে রাখার কারণে খেয়াল করেনি। সন্ধ্যা পার হতেই প্রায় ছুটে আসার মতো করে সোম এসে উপস্থিত হলো। – “আমাকে একটাবার ফোন করিসনি কেন?” সোমের চেঁচানো কণ্ঠস্বর শুনে মাহি মাথা তুলে তাকাল। তার যেন সত্যিই কাউকে পাশে প্রয়োজন ছিল। সোমের কাছে দাঁড়িয়ে হাউমাউ শুরে কান্না করে দিলো সে। সোম মাহির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, – “আমি আসছি তো? টেনশন নিস না।” আলহাজকে কেবিনে রাখা হয়েছে। রাতে মাহি তাকে ফেলে বাড়িতে ফিরতে পারবে না। সে কেবিনেই থাকবে। এদিকে সোমও মাহিকে একা রেখে যেতে পারছে না। বাধ্য হয়ে সে কেবিনের বাইরে বসে রইল। হালকা শীত পড়েছে। মাহি কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে সোমকে বলল, – “তুমি ভেতরে এসে বসো সোম ভাই। আমার আপত্তি নেই।” সোম না জানালেও মাহির অনুরোধে সে ভেতরে এসে বসল। এর মাঝে আলহাজের ঘুম ভেঙে ছিল। তাকে খাইয়ে আবার ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছে। রাত ভালোই ভারী। মাহি বসে থাকতে থাকতে কখন যেন ঘুমিয়ে গেছে। শীতে গুটিসুটি হয়ে আছে সে। সোম বাইরে থেকে একটা কম্বলের ব্যবস্থা করে মাহির গায়ে জড়িয়ে দিয়ে ওর পাশের চেয়ারে বসল। এর মাঝে সে আলহাজকেও কয়েকবার দেখল। সারাটা রাত সে জেগেই রইল। খুব ভোরে মাহির ঘুম ভাঙে। সোমকে সে কেবিনে পেল না। উঠে দেখল আলহাজ জেগে আছেন। মাহিকে দেখে ওকে ইশারায় পাশে বসতে বলল। – “কেমন লাগছে দাদু?” ভাঙা কণ্ঠে সে বলল, – “এত কাঁদছিস কেন? মরতে হবে না আমাকে?” – “আমি মরে যাব দাদু। এমন কথা বলবেন না।” এবার মাহি ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল। সোম কেবিনে ঢুকল এক ফ্লাস্ক চা হাতে নিয়ে। মাহিকে কাঁদতে দেখে দ্রুত এগিয়ে এলো তার কাছে। – “দাদু আপনি ঠিক আছেন?” – “আমার এ পাশে এসে বস তো সোম।” সোম আলহাজের পাশে এসে বসতেই আলহাজ বলতে শুরু করল, – “জীবনের বহু মূল্যবান সম্পদ হারিয়েছি। নিজেকে শক্ত করতে করতে আমার আর সামর্থ্য নেই।” মাহি বুঝতে পারল তার দাদু কোনো বিষয়ে অনেক বড় আঘাত পেয়েছে। যা সে সহ্য করতে না পেরে নিজে নিজে চিন্তা করে এই হাল। আলহাজ আবার বলল, – “তোদের মুখটা দেখে আমার আবার বেঁচে থাকার আগ্রহ হচ্ছে। সোম?” – “জি দাদু?” – “কাল সারাটা রাত তুই যেভাবে আমার সোনার টুকরাকে আগলে রেখেছিস, এই সোনার টুকরাকে আমি আজ অবধি এভাবেই আগলে রেখেছি।” কাল সারারাত সোম না ঘুমিয়ে যেভাবে মাহির খেয়াল রেখেছে ঠিক এভাবেই তার বড় নাতিটা তার বোনকে আগলে রাখতো। সোমকে কাল রাতে দেখার পর আলহাজ তার মাঝে তার বড় নাতির প্রতিচ্ছবি দেখতে পেয়েছে। সোম খুব যত্নে রাখবে তার নাতনিকে, তাকে সব আপদ বিপদ থেকে আগলে রাখবে। এটাই তার বিশ্বাস। মাহির হাতটা আলহাজের বুকের ওপর ছিল। সোমের হাতটা টেনে মাহির হাতের ওপর রেখে সে বলল, – “আর দেরি করব না আমি। আমার সোনার টুকরাকে যথা স্থানে প্রদান করব এবার। যেখানে এই সোনার টুকরা মূল্যায়ন পাবে। সোম, তুই খবর পাঠা। আসতে বল তোর মাকে।” মাহি স্তব্ধ হয়ে চেয়ে রইল সোমের হাতের মাঝে রাখা নিজের হাতটার দিকে। যে স্বপ্ন সে নতুন করে বুঁনেছিল আজ তা সম্পূর্ণ রূপে সাজানোর পূর্বেই ভেঙে ফেলতে হবে। এমনটা তো সে চাইনি। ………………………….. (চলবে) – Israt Jahan Sobrin আমি আমার পড়াশোনা নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। সামনের মাসেই আমার পরীক্ষা। তাই গল্প অনিয়মিত হওয়ার জন্য দুঃখিত। তবে আপনাদের মাঝে একটা চমক ফেলে যায়। অভাবনীয় কিছু ঘটতে যাচ্ছে সামনে। এডিট করার সময় নেই। ভুলগুলো কষ্ট করে বুঝে নেবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে