Sunday, October 5, 2025







তুমি রবে ২৮

তুমি রবে ২৮
.
.
প্রচন্ড রাগে আশফি উঠে দাঁড়িয়ে সামনের ব্যক্তিটিকে বলল,
– “এ কেমন অসভ্যতা! কে আপনি? আর কীভাবে আমার রুমে এলেন?”
সামনের ব্যক্তিটি কিছু বলার পূর্বে আনোয়ার থতমত সুরে বলল,
– “স্যার উনি মানতেই চাইছিলেন না আমার নিষেধ।”
আনোয়ারের কণ্ঠ পেয়ে তাকে চোখে পড়ল আশফির। চেঁচিয়ে বলল,
– “আপনাকে বলেছিলাম এক ঘন্টার মধ্যে আমাকে যেন কেউ নক না করে।”
– “আমি অনেক বলেছি উনি শুনতে চাইনি। জোর করে ঢুকে পড়েছেন।”
এবার সেই ব্যক্তিটি আকুতি মিনতির সুরে আশফির কাছে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
– “প্লিজ আশফি মাহবুব! আমার কথাগুলো শুনতে হবে আপনাকে। আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিন।”
সেই ব্যক্তিটি একজন নারী। যাকে দেখে আশফি না চিনতে পারলেও মাহি ঠিকই চিনে নিয়েছে কয়েক মুহূর্ত পরই। তার জন্য প্রথম চেয়ারটা ফাঁকা রেখে মাহি চুপচাপ দ্বিতীয় চেয়ার টেনে বসলো। কারণ সে এখনকার এই দুর্দান্ত রকমের তামাশা না দেখে এখান থেকে সরতে চায় না। আশফির রাগটা তখনো নামেনি। এভাবে কোনো ভদ্র মহিলা কারো রুমে ঢুকে পড়ে না। আশফি তার কথা শুনতেই নারাজ। মাহিকে বসতে দেখে আশফি তার দিকে মুহূর্তের জন্য তাকালে মাহি চোখের ইশারায় তাকে ঠান্ডা হতে বলল। আশফি দেখল মাহির ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি। ঠিক বুঝতে পারল না সে, মাহির এই আচরণের কারণ। সে বসে সামনের মেয়েটাকেও বসতে বলল। হড়বড় করে সে বলতে শুরু করল,
– “আপনি প্লিজ আমার ক্যারিয়ারটা সেফ করুন। আমি ভুল করেছিলাম সেদিন। অ্যাম স্যরি মিঃ মাহবুব।”
– “ওয়েট অ্যা সেকেন্ড। আপনার ক্যারিয়ার সেফ করব আমি? কেন? আপনার পরিচয়টা কী বলুন তো?”
সে প্রচন্ড বিস্ময়ের চোখে তাকিয়ে রইল আশফির দিকে। চোখের পানিটুকু মুছে একটা ঢোক গিলে খুব শান্তকণ্ঠে সে বলল,
– “আমি তনুজা হাসান। আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না? না কি ইচ্ছে করেই চিনতে চাইছেন না? প্লিজ এত বেশি অপমান করবেন না আমায়।”
আশফি তার পরিচয়ে নিজেও যেন হতবাক হলো। তার বিস্ময়পূর্ণ চোখগুলো তনুজার অবস্থা দেখছে। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো সে এবার। হাতের পেনটা দ্বারা কানের ওপরের চুলের মাঝে চুলকাতে চুলকাতে সে তনুজাকে বলল,
– “মানে সত্যি এটা আপনি!”
তনুজা উত্তর দিলো না। মাথাটা নুইয়ে ফেলল শুধু। মাহিও চেয়ারে হেলান দিয়ে আড়চোখে তনুজার অবস্থা দেখতে ব্যস্ত। চেহারার জৌলুস খুইয়ে, স্লিম ফিটনেস খুইয়ে তাকে চেনা বড় কষ্টকর। পরনে তার সর্বোচ্চ হাজার দুইয়ের একটি লং টপস। মাত্র দেড় বছরে তার এই হাল! কী করে সম্ভব? আশফিকে চুপ থাকতে দেখে তনুজা আবার মিনতির সুরে বলল,
– “আমার ক্যারিয়ারটা ধ্বংসের পথে। সেদিনের কেসে আমি হারার পর আমার যে পানিশমেন্ট হয় তারপর নিউজ চ্যানেল, পত্রিকাতে সবাই সত্য মিথ্যা এক সঙ্গে করে নিউজ করেছে। জেল থেকে দ্রুত বেরিয়ে এলেও আমি আমার অবস্থান হারাই। এই দেড় বছরের মাঝে কোনো ফেমাস ব্র্যান্ড আমাকে অফার করেনি, বড় কোনো কোম্পানির অ্যাম্বাসিডর হতে পারিনি। আমার আইকনের বদলে সব জায়গায় নতুন মুখ। পরিচিতি ধরে রাখার জন্য ছোটখাটো নিম্নমানের বিজ্ঞাপনগুলোতে কাজ করি। এখন আমার ক্যারিয়ারের অবস্থা ডুবু ডুবু।”
আশফি মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,
– “আচ্ছা বুঝলাম। আমি আপনাকে কীভাবে হেল্প করতে পারি?”
তনুজার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে আশফি। আশফি খুব ভালোভাবেই জানে তনুজা তার কাছে কীসের সাহায্য কামনা করছে। তবুও সে তনুজার মুখ থেকেই শুনতে চায়। তনুজা দ্বিধান্বিত সুরে বলল,
– “আমাকে আর একটাবার সুযোগ দিন মিঃ মাহবুব। নয়তো আমি শেষ হয়ে যাব।”
মাহি তাকিয়ে আছে এবার আশফির দিকে। তার কী সিদ্ধান্ত তা শোনার আশায়। আশফি একটু হাসলো দৃষ্টি নিচু করে। সে চাইলেই তনুজাকে ফিরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু দেড় বছর আগে তাদের মাঝে যে ব্যাপারটা হয়েছিল তারপর যদি সেই তাকেই আশফি ফিরিয়ে নেয়, তবে এ নিয়ে মিডিয়া প্রেস যা সব নিউজ করবে তাতে আশফিকে বিশাল সমালোচনার মাঝে আসতে হবে। সেটা অবশ্য আশফি গায়ে মাখে না কখনোই। তবুও সে এই মেয়ের সাথে নিজের নাম জড়াতে চাই না। আশফি তাকে বলল,
– “আমি আপনাকে সুযোগ দিতে পারব না মিস তনুজা। তবে আমি আপনার হেল্প অবশ্যই করব। তার জন্য অবশ্য আপনাকে শুরু থেকে শুরু করার মতো করে শুরু করতে হবে। মানে আপনি এই মডেল আর মিডিয়া জগতে নতুন, ঠিক সেভাবে কাজ আর পরিশ্রম করতে হবে আপনাকে।”
– “আমি সব করতে প্রস্তুত। শুধু বলুন আমাকে কী করতে হবে?”
– “আমি আপনাকে বোরহান আহমেদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেবো। যা বলার আমি আগে থেকে সব তাকে বলে রাখব। বোরহান আহমেদকে চেনেন তো?”
– “হ্যাঁ হ্যাঁ, কে না চেনে তাকে। বর্তমান জনপ্রিয় প্রডিউসারদের মাঝে একজন।”
– “জি হ্যাঁ। আপনি যান এখন। আমার তার সঙ্গে কথা বলার পর আপনাকে তার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দেবো।”
তনুজা উঠে এসে আশফির হাতটা ধরতে গেলে সে মুহূর্তে আশফি চেয়ার সমেত দূরে সরে গেল। এবং তাকে বলল,
– “এসবের প্রয়োজন নেই। যা করছি শুধু মানবিকতার খাতিরে।”
এ কথা বলে আশফি মাহির দিকে তাকাল। মাহির মুখে তখন হালকা হাসি। তনুজা বলল,
– “আমার নাম্বারটা রাখেন আশফি। না হলে তো…”
আশফি এবার বেশ দৃঢ় আর শীতল দৃষ্টিতে তাকাল তনুজার দিকে।
– “আপনার কী করে মনে হলো আমি আপনাকে ডিরেক্ট কল করব? শুভকামনা রইল আপনার জন্য। আসুন আপনি।”
– “আসুন আপনি।”
– “আনোয়ার আপনাকে ওনাকে এগিয়ে দিতে হবে না। উনি পথ চিনে যেতে পারবেন। আপনি আপনার কাজে ফিরুন।”
– “ওকে স্যার।
তনুজা বিদায় নিতেই আশফি মাহিকে বলল,
– “এত মানবিকতা কোথায় পুষে রাখেন? তার ধূর্ত চোখদুটো দেখেছেন? আর তার সুবিধাবাদী আচরণের কথা নাই বা বললাম।”
মাহি হেসে বলল,
– “পিঠে মেরেছেন। পেটে না হয় নাই মারলেন।”
– “আপনার অবজেকশন সঠিক নয় নুসরাত মা….হি।”
বেশ টেনেই বলল আশফি। এরপর বলল,
– “আমি কাউকে ভাতে মারি না।”
– “সেজন্যই তো।”
আশফি তাকিয়ে দেখছে মাহির ঠোঁটের হাসিটুকু। মাহি আশফির তাকিয়ে থাকার ব্যাপারটা লক্ষ্য করে কিছুটা অপ্রস্তুত হলেও নিজেকে তখনই সামলে নিলো। এরপর সে চাপা মজার সুরে আশফিকে বলল,
– “তবে তাকে সুযোগ দিলেও কিন্তু পারতেন। মিঃ মাহবুব!”
মাহির দুষ্টুমিভরা হাসিটা সে আড়াল রাখতে চাইলেও আশফির চোখ এড়াল না।
– “ও স্যরি। মিঃ মাহবুব থেকে আশফি হয়েছিল তো।”
মাহির কথার ইঙ্গিত ধরতে পেরে আশফিও চাপা হাসি হাসলো। সে উঠে দাঁড়িয়ে মাহির দিকে এগিয়ে এসে মাহির চেয়ারের হাতলে ভর করে মাহির দিকে ঝুঁকে পড়ে খুব মৃদুস্বরে বলল,
– “তো সুযোগটা তো আমি এখান থেকেও পেতে পারি।”
আজকাল আশফির আচরণের মাঝে অনেকটা বেহায়াপনা মাহি লক্ষ্য করে। এবারে আশফি মাহির এত কাছে কীসের ধান্দায় এসেছে তা মাহির বুঝতে দেরি হলো না। এদিকে উঠে দাঁড়ানোর উপক্রমও নেই। আশফির দুই হাতের বেড়াতে প্রায় আটকা সে। কিন্তু মাহি ঘাবড়ল না। কারণ সে যখনই ঘাবড়ে যায় আশফি তখনই বেশি কাছে ঘেষতে থাকে। ধাতস্থ হয়ে মাহি এক চিলতে হাসি ঠোঁটে ধরে রেখে বলল,
– “চাহিদাপূর্ণ জায়গাগুলোতে বেশ মার্কেট পাবেন। মাশাআল্লাহ চেহারা দিয়েছেন আল্লাহ পাক। কোনো কিছুর কমতিও নেই। সুযোগটা ওখানেই ভালো পাবেন। এসব ছ্যাঁচড়ামো নিজের কোম্পানির এমপ্লয়িদের সঙ্গে করাটা একটু বেশিই ন্যাস্টি টাইপ হয়ে যায় না?”
আশফি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল মাহির দিকে। চোখে মুখের হাসিটা ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেছে তার। মাহির তিক্ত আচরণের কারণও তার অজানা নয়। তবে চুপ থাকাটাও সম্ভব হচ্ছে না তার। চাইলে তো জবাব দেওয়ায় যায়। তাতে লাভের ক্ষতি ছাড়া কিছুই হবে না। এই যে মেয়েটি আজ গাঢ় নীল রঙের শাড়ি পরে তার সামনে এসেছে। তাতে যে মূল ব্যক্তিত্বের আশফি এখন বাছবিচারশূন্য আশফিতে পরিণত হয়ে গেছে, তা কি এই মেয়ে জানে? আশফি নিজেই তো জানে না এ ব্যাপারে। সে ভুলেই গেছে এটা তার অফিস, তার কর্মস্থল। এখানে কিছু রুলস আছে। যা সে সবাইকে মানতে বাধ্য করে। আজ সে নিজেই ধীরে ধীরে সেই রুলসের কাঁথায় ব্রেক কষছে এটাও সে জানে না, বোঝে না। তবে তার বর্তমান ধারণা, এই মেয়ে শুধু মেয়ে নয় তার জীবনে। এক প্রকার তন্ত্র মন্ত্র জানা ডাকিনী। যে ডাকিনীবিদ্যা দ্বারা এই মেয়ে তাকে হঁশ মাতালে রাখে। তার সব বিবেক, বিবেচনা উবে যায়। সে গৃহপালিত পশুর মতো এক বলদের পরিণত হয়ে যায়। তবুও এই ডাকিনীকেই তার চায়।
.
.
প্রচন্ড ক্লান্ত যেন দিয়া। সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে চুপচাপ বসে আছে। দিশান বুঝতে পারছে না সে আদৌ জেগে আছে নাকি ঘুমিয়েছে। তবে তার এই মায়ামুখর মুখটা দেখে মনে হচ্ছে সে সত্যিই বড্ড ক্লান্ত। ড্রাইভিং স্টিয়ারিংয়ে হাতটা রেখে দিশান আলগোছে দিয়ার চোখ থেকে চশমাটা খুলে নিলো। দিয়া তাকে বাঁধা না দিয়ে শুধু বলল,
– “চশমা পরে ঘুমানোর অভ্যাসটা ভালোই আমার।”
– “আপনি জেগে আছেন তাহলে?”
– “জেগে থেকেও ঘুমিয়ে।”
– “এত হতাশা এই বয়সে ভালো নয়। দিন সকাল বুড়ি হয়ে যাবেন তো।”
– “তাহলে বৃদ্ধাশ্রম যেতে পারব তো?”
– “এত শখ?”
– “শখ নেই আমার।”
– “তো কী আছে?”
– “বাধ্যবাধকতা।”
– “কীসের?”
– “আছে।”
– “সে তো আমিও জানি।”
– “এত কথা বলেন কেন?”
– “আপনি চুপ থাকেন তাই। হতাশা মানুষকে পিছিয়ে দেওয়া ছাড়া সুপ্রসন্ন ভাগ্য দিতে পারে না। সফলতা ছিনিয়ে নেয়। উঠে দাঁড়াবার সামর্থ্য কেড়ে নেয়।”
– “সমস্যা কী? হুইলচেয়ার আছে তো।”
– “এত পছন্দ হতাশা?”
– “আমি থাকছিই তো তার মাঝে।”
– “খারাপ অ্যাডভাইজার নই। বেস্ট সলিউশন দিতেও পারি।”
– “সাদা আকাশটার মাঝে এক টুকরো কালো মেঘ তো আমি। তাই বৃষ্টি আমাকে ছাড়ে না।”
দিশান গাড়িটা মাঝ পথে হঠাৎ ব্রেক করল। খুব বিস্ময়ের চোখে সে দিয়ার উপর থেকে নিচ দেখতে আছে। দিয়া সিটে হেলান দিয়ে আগের মতো করেই বসে ছিল। গাড়ি থামাতে দেখে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখল দিশান যেন তাকে কীভাবে দেখছে। দিশানের চাউনিতে সে প্রচন্ড আড়ষ্ট হয়ে পড়ল।
ঝাঁঝিয়ে উঠে বলল,
– “কী সমস্যা? এভাবে কী দেখছেন?”
– “না মানে মেঘটা কোথায় সেটাই দেখছি।”
– “আপনি প্রচন্ড বেয়াদব।”
দিশান হেসে বলল,
– “এ আমার জানা। আচ্ছা আপনাকে একটা কাজ করতে বলব আপনি করবেন?”
– “কী?”
– “বাসায় ফিরবেন না।”
– “আজ সত্যিই ফিরতে ইচ্ছে করছে না।”
– “শুধু আজ নয়। টানা এক সপ্তাহ ফিরবেন না। আপনার সব থেকে বেস্ট ফ্রেন্ডের কাছে থাকবেন এই কিছুদিন। এরপর তার সাথে তো অবশ্যই শেয়ার করবেন এই সাদা কালো ব্যাপারগুলো নিয়ে। তার পরিবার যদি খুব বিচক্ষণ হয় তবে তাদের সাথেও শেয়ার করবেন। এরপর আপনারা বাবা কিংবা মা যখন আপনাকে ফিরিয়ে নিতে আসবে, তাদেরকে অবশ্যই আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড আর তার পরিবার বোঝাবে যে তারা কতটা অজ্ঞের মতো আচরণ করছে এখনো। আসলে কিছু কিছু ব্যাপারে বাবা মায়েদের ভুলটা ভাঙিয়ে দেওয়া উচিত। আপনার চুপ থাকা উচিত নয়। আর এসব ধরনের কিছু ব্যাপারে বাবা মায়েরা ঘরের লোকের চেয়ে বাহিরের লোকের জ্ঞানটা বেশি কাজে নেয়। তারা কিছুটা লজ্জা পেলেও তাদের নিচু চিন্তাধারা সম্পর্কে জানতে পারবে। যে তারা যেটা ভাবে, সমাজের আর পাঁচটা মানুষ সেটা ভাবে না। এইযে ন্যালসন ম্যান্ডেলা, ফুটবল ইতিহাসের কিংবদন্তি পেলে তাঁদের সাফল্য অর্জনের পিছে কিন্তু সাদা কালো কোনো ফ্যাক্ট ছিল না। আজ তাঁদের কে না চেনে, রেসপেক্ট কে না করে। এমন বহু জ্বলন্ত উদাহরণ দেওয়াই যায়। কিন্তু তার আগে নিজেদের মন পরিষ্কার জরুরি। আসলে আমাদের দেশের প্রথম শ্রেণীর পেশাজীবি মানুষগুলোই এখনো এমন নিচু চিন্তাধারা করে। তাহলে সাধারণ মানুষের চিন্তাধারায় বা কী করে উঁচু হবে?”
– “আমি কখনোই তাদের মুখে মুখে কথা বলতে পারব না।”
– “মুখে মুখে কথা বলা আর প্রতিবাদ করা ভিন্ন।”
– “হয়তো। আর আমি তাদেরকে বাহিরের মানুষের কাছে কখনোই ছোট করতে পারব না। আপনার চিন্তাগুলো সঠিক। কিন্তু আমার দ্বারা সম্ভব নয়। আপনি আমাকে বাসায় নামিয়ে দিন তো।”
– “আপনাকেও কিন্তু একদিন সবাই চিনবে অ্যাস অ্যা ফ্রিল্যান্সার, বেস্ট গ্রাফিক্স ডিজাইনার।”
দিয়া পুরো অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল দিশানকে,
– “আপনি কী করে জানলেন আমি এগুলোর কাজ শিখি? আপনি আমাকে ফলো করেন?”
– “আহ্! ফলো করার প্রয়োজন কখনোই পড়ে না আমার। ফলোই বরং আমাকে ফলো করে।”
দিশান কিছুটা দিয়ার কাছে এগিয়ে এসে দুষ্টু হাসি হেসে বলল,
– “আর আমি এও জানি, আমার সামনে আসলে কারো নজর ঠিক থাকে না। বারবার চশমা ঠিক করার বাহানায় আমাকে সে দেখে।”
প্রচন্ড লজ্জা। যা দিয়া প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর কোনো পুরুষের থেকেই পায়নি। দিয়ার লজ্জা মাখা চেহারা দেখে দিশান এবার মিটিমিটি করে হাসে। ক্ষেপে গিয়ে দিয়া তাকে বলল,
– “প্রচন্ড অভদ্র আপনি। এত অভদ্র কেন আপনি?”
দিশান মুখে কিছু বলল না। টুপ করে একটা গান প্লে করে বসলো। এ যুগের বর্তমান আপডেট জেনারেশনদের একটি পপুলার গান,
“অভদ্র হয়েছি আমি তোমারই প্রেমে তাই…”
পুরো গানটা বাজতে চলল গাড়িতে। দিশান মুচকি হাসতে হাসতে ড্রাইভ করছে। মাঝে মাঝে আড়চোখে দিয়ার আরও বেশি লজ্জায় ফেলে দেওয়া মুখটা দেখছে। কানদুটো চেপে ধরে আছে দিয়া। এর মাঝে সে বলেই ফেলল দিশানকে,
– “যেমন মানুষ তার তেমন গান। ছিঃ!”
.
খুবই খারাপ লাগল মাহির। সে চায়নি এভাবে আশফিকে আঘাত দিয়ে কথা বলতে। এত বেশি ছোট মন যে তার নয়। একটা মানুষকে প্রাপ্য সম্মান সে দিতে না পারলেও অসম্মান সে কখনোই করে না। কিন্তু আজ যা সে করেছে, প্রচন্ড খারাপই করেছে। কিন্তু এই ব্যবহারের পরেও মানুষটা তাকে ফুলের স্তবক থেকে একটা ফুল ছিঁড়ে মাহির খোঁপায় গুঁজে দিয়েছিল। সেখানেও মাহি তাকে আঘাত করে বসলো। ফুলটা মাটিতে ফেলেই চলে এলো সে। আশফি তখনো নিশ্চুপ ছিল।
ছুটির আগ মুহূর্তে মাহি আশফির কেবিনে ঢুকল বেশ দোনোমনা করে। তার খোঁপার ফুলটা এখন আশফির টেবিলের ওপর। কিন্তু সেই মানুষটা কেবিনে অনুপস্থিত। ওয়াশরুমে গেছে নিশ্চয়। বেশ ভালোই হলো তাতে। এই মানুষটার মুখোমুখি হওয়াটা কত বেশি পীড়াদায়ক তা কি কেউ বুঝবে? ছোট্ট একটা কাগজে মাহি লিখেছে,
– “খোঁপার ফুলটা আমার প্রাপ্য। আর আপনাকে স্যরি বলাটাও আপনার প্রাপ্য। একটা নিয়ে গেলাম আর একটা রেখে গেলাম।”
ফুলটা মাহি টেবিল থেকে উঠিয়ে নিয়ে কাগজের উল্টোপাশে বড় করে স্যরি লিখে বেরিয়ে এলো।
.
দিশান আজ উত্তরা ফিরেনি। দিলরুবার সঙ্গে আজ বেশ আড্ডা দিয়েছে সে। অফিসেও যেতে পারেনি। তবে মনটা খারাপ তার। যার জন্য এত সময় তার ঘরে বসলো তার টিকিটাও আর দেখা পায়নি সে। বাসায় নিয়ে আসার পর সেইযে ঘরে ঢুকল সে আর একটাবারও বেরিয়ে এসে দেখলও না। বিকালের মধ্যেই আশফি বাসায় ফিরেছে। ভাইকে তার ঘরে দেখবে সেটা সে আশা করেনি। তবে কিছু বলল না তাকে। সোজা রুমে চলে গেল। এদিকে মাহিও কিছু সময় পরই দিয়ার বাসায় এলো। এসে দেখল নিচের ফ্ল্যাটের তানিয়া নামের মেয়েটা তার মায়ের সঙ্গে এসে দিয়া আর দিয়ার মায়ের সঙ্গে গল্প করছে। মাহি দিয়াকে জানিয়ে আসেনি। দিয়া তাকে দেখে লাফিয়ে উঠে ওর কাছে গেল।
– “তোকে আজ সত্যি খুব মিস করছিলাম দোস্ত। আয়।”
মাহি সবার সঙ্গে এসে বসলো। জানতে পারল তানিয়ার আগামীকাল হলুদ সন্ধ্যা। আর তার পরের দিন বিয়ে। নিমন্ত্রণ করতে এসেছে দিয়ার পরিবারকে। তানিয়া মাঝে মাঝে এসেই দিয়ার সঙ্গে গল্প করতো। সেই ফাঁকে একদিন মাহির সাথেও তার আলাপ হয়ে যায়। এরপর মাহির সঙ্গেও প্রায় দিন গল্প হতো তার। তানিয়া মাহিকে ভীষণ পছন্দ করে। মাহিও সেটা জানে। কিন্তু কে জানে তার এত পছন্দ হওয়ার কারণ কী। তানিয়া ওর মাকে বলল,
– “মা এই আপুটাই দিয়া আপুর বন্ধু। ওনার কথায় তোমাকে বলতাম।”
তানিয়ার মা আফিয়া এসে মাহির পাশে বসে মাহির সাথে কিছু সময় কথা বলল। তারপর সে দারুণ করে হেসে মাহির হাতদুটো তার মুঠোর মাঝে নিয়ে আদর করে বলল,
– “কাল আর পরশু কিন্তু তুমিও অবশ্যই আসবে মা। তানিয়া খুব গল্প করতো তোমার কথা। আমার তোমাকে দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। যাক, অবশেষে আল্লাহ পাক সে ইচ্ছা আমার পূরণ করেছে।”
মাহির অপ্রস্তুত মুখটা দেখে আর ওর না আসতে পারার সমস্যা শুনে তানিয়া বলল,
– “আপু তুমি কিন্তু এমনিতেও ইনভাইট পেতে। আপুর থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে আমি নিজে তোমাকে ইনভাইট করতাম। প্লিজ আর না কোরো না আপুটা। প্লিজ এসো।”
তানিয়া আর তার মায়ের অনুরোধ মাহি একেবারে ফেলতে পারল না। সে জানাল কাল না এলেও পরশু সে আসবেই। মাহি আর দিয়া উঠে রুমে চলে গেল। আফিয়া দিলরুবাকে জিজ্ঞেস করল,
– “নয় তলাতে দুটো ছেলে থাকত না? ওরা কি আছে আপা?”
– “হ্যাঁ আছে তো। ভীষণ ভালো ছেলেদুটো। দুই ভাই ওরা। দুটোই হীরার টুকরো যেন।”
আফিয়া তানিয়াকে নিয়ে ওদের দুজনকেও ইনভাইট করে এলো। দিশান বেশ খুশিই হলো ইনভাইটটা পেয়ে। সে যাবে বলেও জানাল। কিন্তু আশফি যে যাবে না তা তো সে ভালো করেই জানে।
.
পরের দিন অফিসে মাহির দিশানের সাথে দেখা হলেও দেখা হলো না আশফির সাথে। কেবিন থেকে বেরিয়ে বহুবার সে আশফির কেবিনের দিকে তাকাল, কিন্তু তার খোঁজ নেই আজ। প্রচন্ড হতাশাজনক চেহারা নিয়ে ফিরল সে নিজের কেবিনে। এক অসহ্যরকম পরিস্থিতি। এই মানুষটা থাকলেও তাকে পীড়া দেয় আবার না থাকলেও পীড়া দেয়। বরং না থাকলেই বেশি অস্থিরতা কাজ করে মাহির। সেদিন আশফি অফিসে আসেইনি। মাহি ছুটির সময় বেরিয়ে দেখল ঐন্দ্রী দিশানকে জিজ্ঞেস করছে,
– “আজ ওকে খুব প্রয়োজন ছিল দিশান। ও কোথায়? আজ এলো না কেন?”
মাহি ওদের থেকে কিছুটা দূরে তখন। মাহিকে দেখে দিশান একটু হাসলো। তারপর ঐন্দ্রীকে জবাব দিলো,
– “জানি না ঠিক। কাল প্রচন্ড উদাস ছিল ভাইয়া। আর প্রচন্ড চিন্তিতও মনে হলো৷ আমার সঙ্গে বিশেষ কোনো কথা হয়নি তার। খুব সকালে সে আবার বাড়িতে গিয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম ওখান থেকে হয়তো অফিস আসবে।”
দিশানের কথাগুলো শুনে মাহি আর দাঁড়াল না। ঐন্দ্রী বিশেষ কিছু একান্ত কথা বলছে দিশানের সাথে। মাহি ফিরে এলো বাসায়। আশফির ব্যাপারটা নিয়ে একটু বেশিই ভাবাচ্ছে তাকে। মাহি যেন এই মানুষটাকে চিনতেই পারে না। এই মানুষটা প্রচন্ড বেশি ইউনিক। এত বেশি ইউনিক যে তাকে বোঝা দায়। রাতে ফোন এলো দিয়ার নাম্বার থেকে। মাহিকে জানাল যেন সে খুব তাড়াতাড়ি চলে আসে বিকালেই। তারপর দুজন এক সঙ্গে তৈরি হবে। আর বাসায় যেন জানিয়ে আসে কাল রাতে সে দিয়ার বাড়িতে থাকবে।
.
.
দিশানের পায়ে জুতোটা পরতে পরতে ভাইকে ফোনে বলল,
– “কবে ফিরবে বলো তো তুমি?”
– “দেখি দাদার কাজ কবে শেষ হয়। তবে আমি সত্যি এখনো বুঝি না, এই গ্রামের জায়গা জমি নিয়ে দাদা এত কেন ভাবেন? কী আছে এগুলোতে?”
– “আসলে শৈশব জড়িয়ে আছে না ওই সব জায়গায়। মায়া ছাড়তে পারে না।”
– “হ্যাঁ আমারও ভালোই লাগে কিশোরগঞ্জের এই মায়াভরা জায়গাগুলো। বড্ড শান্তি লাগে।”
– “মায়াভরা?”
– “মায়ের অংশ তো। তাই এখানে এলে মনে হয় মায়ের শরীরের ঘ্রাণ পাচ্ছি।”
– “বাদ দাও ভাই। আমার কেন যেন এই মানুষগুলোর কথা শুনতে প্রচন্ড বিরক্ত লাগে। তো তুমি কিন্তু ইচ্ছা করলে এখনই ফিরতে পারো।”
– “আজই ফিরবেন বোধহয় দাদা। আচ্ছা রাখছি, পরে কথা হবে।”
আশফি ফোনটা কেটে দিলেও দিশান জানে ভাইয়ের মন ঠিক নেই। দিশান চাইলেই ভাইয়ের কথাগুলো বাড়াতে পারতো। কিন্তু দিশান দেখেছে, এই কথাগুলো যত বাড়ে তার ভাইটা আরও বেশি নিজেকে একা করে ফেলে। যে সময়গুলো ভাই কাটিয়েছে, সেই সময়গুলো সে কাটায়নি বলে হয়তো ভাইয়ের মতো করে এই ব্যাপারগুলো অনুভব করতে পারে না সে। তবে তার মাঝেও কেন যেন একটা চাপা কষ্ট অনুভব হয় যেন।
.
বিয়েটা বেশ বড় একটা কমিউনিটি সেন্টারে হচ্ছে। হাটাঁচলা ঘোরা ফেরার মতো বেশ লং স্পেস আছে ভেতরে। মাহি আর দিয়া সন্ধ্যার পরই চলে এসেছে। তার কিছুক্ষণ বাদে দিশানও এলো। সবার আগে চোখে পড়ল তাকে দিয়ারই। কিন্ত আজ সে একেবারেই তাকাবে না তার দিকে। লুকিয়েও নয়। দিশানকে দেখে দিলরুবা আর আফিয়া খুব খুশিই হলো। তারা এসে ওর সাথে কিছু কথা বলে জিজ্ঞেস করল আশফির কথা।
– “না আন্টি আসলে আমার ভাই এমন মনের মানুষ নয়। ও যত উঁচু পদের মানুষ হোক না কেন, ও কখনোই মানুষের সঙ্গে ছোট বড় দেখে মিশে না। ও ছোট থেকে আজ অবধি কোনো বিয়ে অ্যাটেন্ড করেনি। ওর ঠিক ভালো লাগে না এগুলো।”
আফিয়া বলল,
– “ওমা! এ আবার কেমন কথা! কোনোদিন সে বিয়ে অ্যাটেন্ড করেনি?”
– “বিয়ের পরের পার্টিগুলো সে অ্যাটেন্ড করে কিন্তু এই বিয়ের বিষয়গুলো আসলে…কী বলব!”
– “থাক বুঝতে পেরেছি। তোমাকে বিব্রত করলাম বোধহয়।”
– “না না ঠিক আছে।”
দিশান মাহিকে দেখে বেশ চমকে গেল। তার কাছে এগিয়ে এসে বলল,
– “ও গড! না এলে কী মিসটাই না করতাম। তোমার দেখা পাবো আমি ভাবতেই পারিনি। কী যে লাগছে তোমাকে!”
মাহি হেসে বলল,
– “আমিও আশা করিনি তুমি আসবে এখানে। তোমাকেও খুব ভালো লাগছে।”
দিশান দিয়ার দিকে তাকিয়ে হাসলো। কারণ দিয়া তখন ফোন চাপতে ব্যস্ত হলেও আড়চোখে সে দিশানকে লক্ষ্য করছে। দিশান দিয়ার দিকে এগিয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
– “সত্যিই খুব ভালো লাগছে।”
কানের কাছে এত জোরে আওয়াজ পেয়ে দিয়া চমকে উঠল। দিশানের ঠোঁটে মিটিমিটি হাসি। ওদের সাথে কিছু সময় কথা বলে দিশান একটু দূরে এসে আশফিকে কল করল। আশফি মাত্র রুমে ঢুকেছে তখন।
– “বলো।”
– “পরে আফসোস হলে কিন্তু আমার দোষ নেই।”
– “কীসের আফসোস?”
আশফি সোফায় বসতে গেলে দিশান তখন বলল,
– “বোসো না। সোজা বাথরুমে ঢুকে হট শাওয়ার নিয়ে লুকিং হট দিয়ে চলে এসো। কথা দিচ্ছি, যা পাবে তা আজ তোমার সারাদিনের মন খারাপ দূর করে দেবে।”
– “ফোনটা রাখো তো তুমি। আমার ওসব জায়গা কখনোই ভালো লাগে না।”
এ কথা বলেই আশফি ফোন কেটে দিলো। দিশানের পুরো কথা সে শুনলোই না। দিশান হাসতে হাসতে একটা মেসেজ করল ভাইকে। মেসেজটা সিনও করল আশফি। কিন্তু সেটাকে দিশানের মজা করার অংশ ভেবে সে আর সিরিয়াস নিলো না।

……………………………..
(চলবে)
– Isrst Jahan Sobrin

ইস! মেয়েগুলো রোমান্স দেখার জন্য কেমন ছটফট করতেছে। এত ফাজিল কেন মেয়েগুলো?☺ বিশেষ কিছু পেলে তো আবার লজ্জায় লাল হবে কাল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

3 মন্তব্য

  1. পরের গল্পের জন্য অপেক্ষা করে আছি। একটু তাড়াতাড়ি পোস্ট করবেন প্লিজ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ